বিএনআর প্রকাশনা
আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের পর পরই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েকটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, সেগুলোর অন্যান্য কাজের মধ্যে প্রধান ছিল প্রকাশনা। ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থেকে পাকিস্তানে আইয়ুব সরকার প্রকাশনার ওপর জোর দিয়ে থাকবে। যেসব প্রতিষ্ঠান গ্রন্থ প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছে, তার মধ্যে পাকিস্তান লেখক সংঘ, জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থা, কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড উল্লেখযোগ্য। বাংলা একাডেমির অন্যতম প্রধান কাজই ছিল বই প্রকাশ। আইয়ুব সরকার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক একাডেমিকেও (স্বাধীনতার পরে যার নাম হয় বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ইসলাম ও মুসলমান-সংক্রান্ত বই প্রকাশের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র– ন্যাশনাল বুক সেন্টার অব পাকিস্তান– সাময়িকী শুধু নয়, বই প্রকাশের প্রকল্প নিয়েছিল। এসবের বাইরে পাকিস্তান পাবলিকেশনস নামে ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরাট প্রকাশনা সংস্থা। এই সব সরকারি প্রকাশনা সংস্থা থেকে ষাটের দশকে বহু মূল্যবান বই প্রকাশিত হয়েছে। সেসব বইয়ের লেখকেরা ছিলেন অনেকেই খ্যাতিমান ও বিশেষজ্ঞ।
জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থা, ইংরেজিতে ব্যুরো অব ন্যাশনাল রিকনস্ট্রাকশন সংক্ষেপে বিএনআর পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে ধর্মীয় চেতনার দ্বারা জনগণের বন্ধন সুদৃঢ় করার উদ্যোগ নেয়। সে উদ্যোগ নির্দোষ ছিল না, তাতে সাম্প্রদায়িকতা ছিল।
সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভেতর দিয়ে পাকিস্তানের জন্ম, কিন্তু পাকিস্তান। প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলায় অসাম্প্রদায়িকীকরণ শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। সমগ্র সমাজ নয়, তরুণদের একটি অংশ উপলব্ধি করে সাম্প্রদায়িকতা সমাজ বিকাশের জন্য এবং প্রগতির পথে বড় বাধা। পঞ্চাশের দশকের শুরুতে ভাষা আন্দোলন এবং তার পরে ছাত্র-যুব আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন প্রভৃতি সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী চেতনা বিকাশে বিশাল ভূমিকা রেখেছে। তার ফলে মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করে, অন্যদিকে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি মূলধারায় পরিণত হয়।
সেই ধরনের একটি পরিবেশে বিএনআর যখন জাতীয় সংহতির নামে ইসলাম ও মুসলমানকে অতিরিক্ত প্রাধান্য দিতে থাকে, তা প্রগতিকামীদের ভালো লাগেনি। পুস্তিকা ও ছোট বই যেমন প্রকাশ করেছে বিএনআর, তেমনি প্রখ্যাত লেখকদের গুরুত্বপূর্ণ বইও বের করেছে। উদাহরণের জন্য একটি বইয়ের নাম করতে পারি, সেটি মুহম্মদ বরকতুল্লাহ সম্পাদিত দর্শনে মুসলমান।
দর্শনে মুসলমান গ্রন্থে আটজন বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিকের জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা ছিল এবং সে আলোচনা বর্ণনামূলক নয় পাণ্ডিত্যপূর্ণ। আল-কিন্দি সম্পর্কে লিখেছিলেন সাইয়েদ আবদুল হাই, মুহম্মদ বরকতুল্লাহ লিখেছিলেন দুজন সম্পর্কে দুটি মূল্যবান প্রবন্ধ, তারা হলেন আল ফারাবি ও ইবনে সিনা, শাইখ শরফুদ্দীন লিখেছিলেন আল-গাজ্জালী সম্পর্কে, শাইখ আবদুর রহিম লিখেছিলেন আর-রাযী সম্পর্কে, অধ্যক্ষ সাইঁদুর রহমান লিখেছিলেন ইবনে খলদুনের দর্শন ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে, এ এফ এম আবদুল আযীয লিখেছেন মুজাদ্দেদ আলফেসানী সম্পর্কে এবং মুহম্মদ এছহাক আলোচনা করেন শাহ অলীউল্লাহ দেহলভীর জীবন। তখন বিএনআরের পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক শাখার পরিচালক ছিলেন সিএসপি অফিসার কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। মুখবন্ধে তিনি লিখেছিলেন :
‘দর্শনের ইতিহাসে মুসলিম জাতির এক গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। দর্শনের ক্ষেত্রে মুসলমান মনীষীরা রেখে গেছেন এক বিস্ময়কর অবদান, যা মৌলিকতা, সর্বজনীনতা ও স্বকীয়তার দীপ্তিতে চির ভাস্বর, চির অম্লান। তাঁদের এই অবদানে সুসমৃদ্ধ হয়েছে মানুষের জ্ঞান-ভাণ্ডার।
‘দুঃখের বিষয়, মুসলিম দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের এই অমর অবদানের কথা বিধৃত করে বাঙলা ভাষায় কোন বই নেই বললেই চলে –অথচ আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে দেশবাসীর সম্মুখে তুলে ধরে আমাদের জাতীয় ভাবধারাকে সঠিক পথে বিকাশের জন্য এই ধরনের বইয়ের একান্ত প্রয়োজন।
‘তা ছাড়া, বর্তমানে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদও আমাদের জীবনে সৃষ্টি করেছে জটিলতা, বেড়ে চলেছে আমাদের মানসিক উদ্বেগ ও অশান্তি। আমাদের জীবনে যাতে শূন্যতার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আজ সর্বাগ্রে প্রয়োজন জাতিকে আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার সম্বন্ধে অবহিত করে সচেতন করে তোলা, যেন আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন এক স্থায়ী ভিত্তির উপর সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এই আধ্যাত্মিক বুনিয়াদ গঠনে আমরা মুসলমান দার্শনিক ও মনীষীদের ভাবধারা ও জীবন-সাধনা থেকে উৎসাহ ও উদ্দীপনা লাভ করতে পারি। এদিকে লক্ষ্য রেখেই পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থা দর্শনে মুসলমান পুস্তকটি প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছে।
দর্শনে মুসলমান বইটির যা বিষয়বস্তু, তাতে এটি কলকাতার কোনো হিন্দু প্রকাশক যদি ছাপতেন কারও কিছু বলার ছিল না। বিষয়টি সর্বজনীন, সাম্প্রদায়িক নয়, যেমন সাম্প্রদায়িক নয় শ্রীচৈতন্য ও বাংলার বৈষ্ণববাদ। এসব হতে পারে ধর্ম বর্ণনির্বিশেষে যেকোনো লেখকের আলোচনা ও গবেষণার বিষয়। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগে বাংলা ভাষার মূলধারার প্রধান লেখকদের কাছে ইসলাম ও মুসলমান ছিল অবহেলার জিনিস। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ দুটি কথা বলেছেন তা বিবেচনার বিষয়, তা হলো আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতেই এই বই প্রকাশ। এর অর্থ অতীতের যেকোনো দেশের যেকোনো মুসলমানের যা কিছু অর্জন তার উত্তরাধিকারী পাকিস্তানিরা। আরেকটি কথা বলেছেন, জাতিকে আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকার সম্বন্ধে অবহিত ও সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে এই বই প্রকাশ। এই বক্তব্যে অসাম্প্রদায়িক বাঙালির উত্তরাধিকারের চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ইসলাম ও মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে। বাঙালির আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম প্রভৃতি সব ধর্মের উপাদানই রয়েছে। সেই জিনিসটিকে পাকিস্তান সরকার অবহেলা করতে চায়। সেখানেই ছিল অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের আপত্তি।
‘পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদ প্রচারও ছিল বিএনআরের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এ বিষয়ে সংস্থাটি সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করেছে এবং তাতে বাঙালি লেখক বুদ্ধিজীবীরা অংশ নিয়েছেন। বিএনআর ১৯৬০-৬১ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি ছোট বই প্রকাশ করে তার নাম পাকিস্তানি ন্যাশনালিজম। তাতে ছিল তিনটি প্রবন্ধ, লিখেছিলেন তিনজন, পশ্চিম পাকিস্তানের শরিফ-আল-মুজাহিদ এবং পূর্ব বাংলার মুনীর চৌধুরী ও হাসান জামান। সম্পাদনা করেছিলেন শরিফ-আল-মুজাহিদ। পাকিস্তানের জাতীয় ভাবধারা এবং পুস্তিকাটির লেখকদের নিজস্ব চিন্তাধারা সম্পর্কে জানার জন্য বইটি বিশেষ সহায়ক। শরিফ-আল-মুজাহিদের প্রবন্ধে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটে। তাঁর প্রথম বাক্যটি এ রকম :
Pakistan was born as a result of the Indian Muslim’s claim to a separate nationhood in their own right.
শরিফ সাহেবের জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে ধারণাটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তার ভাষায় :
Pakistani nationalism is, thus, essentially an ideological nationalism, as against the territorial, linguistic or social nationalism of the West. Its roots go deep into history, …. (পৃ.৬)।
মুনীর চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধটি ছিল তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথমটির শিরোনাম ‘অন রিলিজিয়ন’ (ধর্ম সম্বন্ধে), তারপর ‘অন ল্যাঙ্গুয়েজ’ (ভাষা সম্বন্ধে) এবং ‘অন লাইফ’ (জীবন সম্বন্ধে)। প্রবন্ধটি সুলিখিত, কিন্তু তাঁর রচনাবলি বা আনিসুজ্জামানের মুনীর চৌধুরী জীবনীগ্রন্থে তার উল্লেখ নেই। অধ্যাপক চৌধুরী বলতে চেয়েছেন, পাকিস্তানিদের জাতীয় চেতনায় প্রাধান্য পাবে ইসলাম, কারণ পাকিস্তান মুসলমানদের বাসভূমি। মুনীর চৌধুরীর ভাষায় :
We are Pakistanis. We are, in Pakistan, overwhelmingly Muslims. The ideals of Islam formed a fundamental basis of our inspiration to build this separate homeland for the Muslims of Indo-Pakistan. It is only natural that the elements of our faith in Islam should now constitute the very backbone of our national consciousness. (9.36)
‘পাকিস্তানি ভাষা’ প্রসঙ্গে মুনীর চৌধুরীর যে পর্যবেক্ষণ, তা বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের সমর্থন পায়নি। তিনি বলতে চেয়েছিলেন, একদিন পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানে দুটি নতুন ধরনের উর্দু ও বাংলা ভাষা জন্ম নেবে। পশ্চিম পাকিস্তানের উর্দু ভাষায় ‘সিন্ধি, পাঞ্জাবি, পশতু প্রভৃতি ভাষার শব্দ ঢুকে যাবে এবং অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাও আর আগের মতো থাকবে না, সেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু প্রভৃতি ভাষার শব্দ যোগ হয়ে এক নতুন ‘পাকিস্তানি বাংলা ভাষার জন্ম হবে। তাঁর ভাষায় :
… It is hoped that if the previously mentioned process of mutual give and take strikes deep roots into the speech habits of all Pakistanis then in no time a single new national language will automatically emerge out of it. It will be neither Urdu nor Bengali, but a very acceptable amalgam of all the languages of Pakistan, East or West, (পৃ. ২১)
সাংঘাতিক বক্তব্য। হাজার মাইল দূরে দুটি দেশে (হোক এক রাষ্ট্র) একটি অভিন্ন জাতীয় ভাষা সৃষ্টি করা সম্ভব ছিল না ১০০ বছরেও। যেখানে দুটি দেশেই রয়েছে কয়েকটি সমৃদ্ধ ভাষা। এসব ছিল কেন্দ্রীয় শাসকশ্রেণির প্রণোদনায় একেবারেই অবাস্তব ও ভুল চিন্তা। বাঙালি মুসলমানের বিভ্রান্তি। কী করে পাকিস্তানের দুই অংশে একটি অভিন্ন ভাষার সৃষ্টি হতে পারে? পৃথিবীর সেই নতুন ভাষাটির নাম কী। হতে পারত?
হাসান জাহানের প্রবন্ধটি আরও প্রতিক্রিয়াশীল ও সাম্প্রদায়িকতার দোষে কলুষিত। তবে এ ধরনের বিভ্রান্ত চিন্তাই ছিল তখনকার বাঙালি লেখক, বুদ্ধিজীবীদের মাথায়। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় না ঘটলে এ-জাতীয় বিভ্রান্তির ঘূর্ণিপাকে পড়ে যেত বাঙালি জাতি। চরম ক্ষতি হতো বাঙালি সংস্কৃতির।
পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদ, মৌলিক গণতন্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে লেখা খ্যাতিমান লেখকদের প্রপাগান্ডামূলক পুস্তক-পুস্তিকা বিএনআর প্রকাশ করলেও, এই সংস্থা বহু গুরুত্বপূর্ণ বইও বের করেছে। যদিও অনেক বইয়ের বিষয়বস্তু ইসলাম ও মুসলমান, তবু সেগুলো সুলিখিত এবং প্রয়োজনীয় প্রকাশনা। কাজী মোতাহার হোসেনের কয়েকটি জীবন বইটি প্রকাশ করে বিএনআর। তাতে নবাব স্যার সলিমুল্লাহসহ কয়েকজন মুসলমান মনীষীর জীবনকথা আলোচিত হয়।
বিএনআর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশ করে। তার নাম সুফীবাদ ও আমাদের সমাজ। মনোটাইপে ছাপা ২২০ পৃষ্ঠার বইটিতে ছিল চারটি প্রবন্ধ। কাজী দীন মুহম্মদের প্রবন্ধের শিরোনাম ‘সুফীবাদের ভূমিকা’, আবদুল করিমের প্রবন্ধ ‘বাংলাদেশের সুফী-সম্প্রদায়’, মনির-উদ্-দীন ইউসুফের প্রবন্ধ ‘বাংলা সাহিত্যে সুফী প্রভাব’ এবং অধ্যক্ষ শইখ শরফউদ্দীনের প্রবন্ধ পূর্ব পাকিস্তানের সুফী প্রভাব। গ্রন্থে ভূখণ্ডকে ‘বাংলাদেশ’ বলাও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো এই যে, খ্যাতিমান লেখকদের যেসব বই বিএনআর থেকে বেরিয়েছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তাঁরা তাঁদের প্রকাশিত বইয়ের তালিকা থেকে ওই বইগুলোর নাম বাদ দেন। রাজনৈতিক সংকীর্ণতা ও মানসিক দীনতাবশত আমাদের শ্রদ্ধেয় লেখকেরা স্বীকার করতে কুণ্ঠিত হন যে তাঁরা বিএনআরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং যেখান থেকে রয়্যালটির টাকা পুরোটাই পেয়েছেন। যদিও সে টাকা বাংলাদেশের মানুষেরই টাকা, আইয়ুব বা মোনায়েম খানের ব্যক্তিগত টাকা নয়। তারা ভেবেছেন ওই সব বইয়ের মালিকানা স্বীকার করলে প্রমাণিত হবে তারা পাকিস্তানপন্থী। স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থী পরিচয় খুবই বিপজ্জনক ছিল। তবে কেউ স্বীকার করতে না চাইলেও বাস্তবতা হলো ২৫ মার্চ ‘৭১-এর আগে বাংলাদেশের বাঙালি-অবাঙালি সব নাগরিকই ছিল পাকিস্তানি।