নমিতা এক-এক রাজ্যের লজ্জা লইয়া পুনরায় শ্বশুরালয়ে ফিরিয়া আসিল। গত্যন্তর ছিল না। গিরিশ বাবু এ-হেন কুস্বভাবা মেয়ের দায়িত্ব লইবেন কোন সাহসে? তাই একদিন অবনী বাবুকে আনুপূর্বিক সমস্ত ঘটনা উল্লেখ না করিয়া তিনি মোটামুটি বুঝাইয়া দিলেন যে মেয়েটার সত্যকার পুণ্য-সঞ্চয় হইবে শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করিয়াই; তাহার সংসার শ্বশুরবাড়ির উঠোনটুকুতেই। শেষকালে এইটুকুও টীকা দিলেন: মেয়ে বড় হইয়াছে, তাহার কাৰ্যকলাপ শাসনের চক্ষে অনুধাবন করিতে হইবে। কথাগুলি নমিতার সামনেই বলা হইয়াছিল; কিন্তু এত লজ্জাকর উপদেশ শুনিয়াও কেন যে তাহার মরিতে ইচ্ছা করিল না সে নিজেই বুঝিতে পারে নাই।
অবনী বাবু নমিতাকে লইয়া আসিলেন। একখানি ছোট ঘর ছাড়া তাহার জন্য সামান্য একটু বারান্দাও আর রহিল না। সেই ঘরেরই বাহিরে অপরিসর একটু জায়গায় একটা ভোলা-উনুনে তাহাকে রাধিতে হয়। সমস্ত সংসারযাত্রা হইতে বিচ্ছিন্ন নির্বাসিত নমিতা আর কি করিবে? বড় ঘর হইতে স্বামীর বৃহদায়তন ফোটোটা পাড়িয়া আনিয়া দুই বেলা তাহারই ধ্যান করে। স্বামীর মুখ সে প্রায় ভুলিয়া গেছে; মনে করাইয়া দিবার জন্য একটা প্রতীকের আবশ্যক আছে বৈকি। এক-এক সময় তাহার মনে হয় এ মুখ যেন অন্য কারুর, তাহার স্বামী এই ছবির চেয়েও জীবন্ত ও সুন্দর ছিল। কিন্তু মনে-মনে স্বামী-ধ্যান করিলে তাহার খ্যাতি বাড়িবে না বলিয়াই এমন একটা সর্বজনগ্রাহ লৌকিক উদাহরণকে সে প্রতিষ্ঠিত করিতে চায়।
আর কোনো কাজে সে মন বসাইতে দেয় না। অজয়ের দেওয়া বইগুলি সে কোথায় ফেলিয়া আসিত? কিন্তু উহাদের একটিররা পৃষ্ঠা উলটাইলে তাহার স্বামী-পূজার ব্যাঘাত হইবে বলিয়া সে উহাদের স্পর্শ পৰ্য্যন্ত করে না। মালী দরজার গোড়ায় ফুল রাখিয়া যায়, তাড়াতাড়ি স্নান সারিয়া সে সেই ফুল লইয়া খেলিতে বসে। পিঠের উপর ভিজা চুলগুলি বিপর্যস্ত হইয়া লুষ্ঠিত হয়, সিক্ত শীতল শরীর হইতে এমন একটি সুন্দর পবিত্রতা বিচ্ছুরিত হইতে থাকে যে নমিতার পর্যন্ত নিজের জন্য মায়া করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে সেই নির্জীব অন্ধ ও বধির ছবির সম্মুখে নিজের এই পরিপূর্ণ দেহ-পাত্রখানি আত্ম-নিবেদনের অর্ঘ্যস্বরূপ তুলিয়া ধরে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটে, দেবতা আসিয়া তাহাকে স্পর্শ করে না, না বা সম্ভাষণ! কে সেই দেবতা? চক্ষু বুজিয়া ভাবিতে ভাবিতে ভুল হইয়া যায়, স্বামীর স্মৃত মুখকে উজ্জ্বল করিবার জন্য তাকায়, কিন্তু কৃত্রিম ছবি সাহায্য করিতে পারে না। কোথা হইতে আরেকখানি মুখ অন্ধকার অন্তরে আসিয়া অনধিকার প্রবেশ করে। শত মনঃসংযোগ করিয়াও সে-মুখ নমিতা তাড়াইতে পারে না। তার দুই চোখে কি দুনিবার তেজ, ললাটে কি অহঙ্কার—কখনো কখনো ফুল নিবার জন্য সে এমন উৎসাহে হাত বাড়াইয়া দেয় যে ফুল তাহাকে দিতেই হয়। সেই দুরন্ত দেবতাকে প্রত্যাখ্যান করিবার উপায় কৈ? সেই দেবতা নমিতাকে ঘর ছাড়িবার জন্য একদিন শঙ্খ বাজাইয়াছিল। দেবতাকে সে ফিরাইয়া দিয়াছে, কিন্তু তাহার শঙ্খধ্বনি কবে হইতে আর শোনা যাইবে না?
মনের এই চাঞ্চল্য দমন করিতে হইবে। সংসার বলে, বিধবার পক্ষে এই চিত্তবিভ্রম পাপ—তথাস্তু, সংসারের আদেশ শিরোধার্য। নমিতা কৃচ্ছসাধনায় মন দিল। একবেলা আহার করিত, এখন আহারের সংখ্যাগুলি এত কমাইয়া ফেলিল যে অরুণা পৰ্যন্ত ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন। পুত্রবধুর এই স্বামীচৰ্যা তাহার খুব ভালো লাগিয়াছিল, কিন্তু এত বাড়াবাড়ি তাহার পছন্দ হইল না। তিনি বাধা দিতে চাহিলেন, কিন্তু নমিতা তাহাতে কান পাতিবে কোন লজ্জায়? সে নিরঙ্কু একাদশী করে, ব্ৰত-উপবাস তাহার লাগিয়াই আছে। গুরুঠাকুর মন্ত্র দিতে চাহিলে সে পরিষ্কার কণ্ঠে বলে : স্বামীর নামই আমার জপমন্ত্র। আপনারা যদি এক টুকৃররা পাথরে ভগবান পান, একটা ছবিতে তাকে পাওয়ায় আমার হানি কি? আমি স্বামী বুঝি, নারায়ণ বুঝি না।
সমস্ত সংসার নমিতার প্রশংসায় মুখর হইয়া উঠিল। সে তাহার কলঙ্কিত আচরণের প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছে! সমস্ত সাহসিক ক্রিয়ার বিরুদ্ধে এমনই একটি প্রতিক্রিয়া না পাইলে সংসার তাহার সামঞ্জস্য হারায়। সেই শান্তি ও সামঞ্জস্য রাখিতে নমিতা এমন করিয়া তাহার স্বভাবের প্রতিকূলতা করিতেছিল। কিন্তু ক্রমে-ক্রমে এই কৃত্রিম পূজায় তাহার নেশা লাগিয়া গেল। খুনী সাধু ছদ্মবেশে আত্মরক্ষা করিতে গিয়া সাধু বনিয়াছিল, বহুলাচরিত অভ্যাসে নমিতাও যে তপশ্চারিণী হইয়া উঠিবে তাহাতে বিচিত্রতা কোথায়? কিন্তু স্বামীকে মূর্তি দিতে গেলেই তাহার সমস্ত গোলমাল হইয়া যায়, তখন নিজেকে বৈধব্যচারিণী বঞ্চিতা বলিতে তাহার মন উঠে না। সংসারে তাহার এই আচরণটাই শোভন ও বাঞ্ছনীয়—এই ভাবিয়াই সে রোজ স্নান করিয়া চন্দন ঘষে, ফুল দিয়া ফোটা সাজায়, ভুলিয়াও একবার জানালার কাছে আসিয়া দাঁড়ায় না। সে এত করে, তবু তাহার মন ভরিয়া উঠে না কেন? না; মানুষের মন একটা ব্যাধি; পায়ের তলায় বিধিয়া-থাকা কাটার মত তাহাকে উপড়াইয়া ফেলিতে হইবে। মনের টু টি টিপিয়া ধরিবার জন্য নমিতা গীতার একটা বাক্ক-সংস্করণ খুলিয়া বসিল।
এত লোক-জন, তবু এ-বাড়িতে তাহার বড় একলা লাগে। মা কাছে থাকিলে তাহার এমন খারাপ লাগিত না। সে-দিন মা তাহাকে মরিবার জন্য এক বোতল কেরোসিন তেল সামনে ধরিয়াছিলেন; তবু সে মরিলে মা-ই বেশি কাঁদিবেন বলিয়া সে স্বচ্ছন্দে বোতলটা স্বস্থানে। রাখিয়া আসিয়াছিল। মাকে কাছে পাইলে তাহার বুকে মুখ গুঁজিয়া সে এই বলিয়াই কাদিত : মা গো, এত পূজা করিয়াও তৃপ্তি পাওয়া। যায় না। এমন একটা অকর্মণ্য আলস্যের মধ্যে ভগবানকে পাইয়াই বা আমি করিব কি? রাত্রে তাহার একা শুইতে বড় ভয় করে, খালি মনে হয়, কে যেন তাহাকে বাহিরে টানিয়া নিবার জন্য তাহার দৃঢ় ব্যর্থ হাত প্রসারিত করিয়া দিয়াছে। অরুণা প্রথম-প্রথম তাঁহার কাছে শুইবার জন্য অনুরোধ করিতেন বটে, কিন্তু পূজা-ঘর ছাড়িয়া সে দিনে-রাত্রে কোথাও বাহির হইবে না বলিয়া পণ করিয়াছে তাহাকে। টলায় কাহার সাধ্য। মেঝের উপর বিছানা করিয়া শুইয়া তাহার সহজে ঘুম আসে না; খোলা জানালা দিয়া বহুদূরের তারাগুলি চোখে পড়ে। ঐ একটি তারার মধ্যেই হয় ত’ তাহার স্বামীর সস্নেহ সঙ্কেত আছে—এমনি ভাবে সে এই প্রাকৃতিক আকর্ষণের একটা উদার ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করে। কিন্তু খানিকক্ষণ চাহিতেই তারাগুলি একত্র হইয়া একজনের মুখের মত প্রতিভাত হয়। সেই মুখের প্রত্যেকটি অবয়ব স্পষ্ট হইতে থাকে। নমিতা এমন বিভোর হইয়া পড়ে যে, সমস্ত আকাশ ব্যাপিয়া তাহার স্বামীর ইঙ্গিতের একটি কণাও আর কোথাও অবশিষ্ট থাকে না। কখন আবার জ্ঞান হয়; পরপুরুষের দৃষ্টি হইতে নিজেকে সম্বরণ করিতেছে এমনি ভাবে জানালাটা বন্ধ করিয়া দেয়; আলো জ্বালাইয়া গীতা পড়িতে বসে। এইবার শুইবার সময় স্বামীর ফটোটা সে পাশে লইয়া শোয়।
উমা ঠাট্টা করিয়া বলে : “তোমার স্বামী-পূজার এত ঘটা দেখে সন্দেহ হয়, বৌদি।”
নমিতা প্রশ্ন করে : “কিসের সন্দেহ?”
—“মনে হয় যে-কামনাকে তুমি জয় করছ বলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছ। সেটাতেই সপ্রমাণ হচ্ছে যে, কামনা তোমার অণুতে-অণুতে।”
নমিতা আঁৎকাইয়া উঠিল : “তার মানে?”
—“তার মানে স্বামী হারিয়েও তুমি স্বামী চাও। সে-যুগের সাবিত্রী এর চেয়েও কঠিন তপস্যা করেছিল কি না জানি না, কিন্তু যম সত্যবানকে ফিরিয়ে দিয়ে সাবিত্রীর মুখ রেখেছিল; নইলে স্বামী-বিহনে তার সেই কাঙালপনার লজ্জা সে সইতো কি করে? তোমার এই বাড়াবাড়ি দেখে মনে হয় পুরুষের সঙ্গ-কামনার উর্দ্ধে তুমি আজো ওঠনি।”
নমিতা প্রতিবাদ করিল : “পুরুষ কি বলছ, উমা? আমার স্বামী–দেবতা, ঈশ্বরের প্রতিভূ।”
উমা ঘাড় হেলাইয়া কহিল : “হোক। যে-দেবতার মূর্তি ভাঙে, সেই ভাঙা টুকরো পূজো না করে আরেকটা গোটা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করলেই তার পূজোর অর্থ হয়। সে-মূর্তি তোমার দেশাত্মবোধে হোক, প্রেমে হোক্, রোগীসেবায় হো—প্রতিষ্ঠিত কর। মৃত স্বামী-আরাধনায় নয়। এটা একটা তুচ্ছ আচরণ।”
নমিতা রাগিবার ভাণ করিল : “অমন ঈশ্বরনিন্দা করো না, উমা। স্বামী-পূজা আমার একটা আচরণ মাত্র নয়, আমার ধর্ম। বিরহবোধ মনের একটা পবিত্র প্রসাধন।”
—“ভালো করে ভেবে দেখ সে-বিরহবোধ কি মনের একটা দুৰ্বলতা নয়?”
—“আমি ভালো করে ভেবে দেখেছি।”
—“আমি হলে কিন্তু ফোটো পাশে না শুইয়ে একটা আস্ত জ্যান্ত লোক পাশে শোয়াতাম। সতীত্বের এমন অপমান করতাম না।”
নমিতা স্নিগ্ধ-কণ্ঠে উত্তর দিয়াছিল : “আমি হয় ত’ এতদিন তাই করে আসছিলাম।”
দুপুর বেলাটাই তাহার কাছে দুৰ্ব্বহ হইয়া উঠে। তখন রাস্তায় একটা ফিরিওলার ডাক, একটা মোটরের শব্দ কিম্বা পথচারীদের ছোট ছোট কোলাহল শুনিবার আশায় সে কান পাতিয়া থাকে। কোনো কাজেই মন বসে না, কি কাজই বা সে করিবে? তখন অবাধ্য চিত্ত লঘু একটি প্রজাপতির মত নবীন কুণ্ডুর লেইনের বাড়িতে ঘুরিতে থাকে। নীচের তলা ছাড়িয়া উপরে আর উঠিতে চাহে না। সেই অযত্নবিন্যস্ত অপরিষ্কার ছোট ঘরখানিকে সে পরম মমতায় স্পর্শ করে—সেই ছেড়া বিছানা, নোংরা মেঝেটা, দেয়াল হইতে চুণ-বালি খসিয়া পড়িয়াছেকাহারো ভ্রূক্ষেপ নাই। জানালার ও-পিঠে শার্টটা মেলিয়া দিয়াছে, কেহ যদি হাত বাড়াইয়া টানিয়া নেয় তাহাতে ত’ ভারি আসিয়া যাইবে! ছেড়া হাঁ-করা জুতা-জোড়া পর্যন্ত সেলাই করিয়া লইবার নাম। নাই। এমনি দুপুর বেলায় আসিয়া ভাত চাহিত। ঘরে যেন তাহার কে আছে, সযত্নে ভাত বাড়িয়া বসিয়া থাকিবে। পাছে স্নান করিতে আসিয়া জল না পায় এই জন্য নমিতা কত দিন চাকরটাকে চৌবাচ্চার জল ছাড়িয়া দিতে চুপি-চুপি বারণ করিয়াছে। তবু যদি তাহার হুস থাকিত!
এমনি এক দুপুর বেলায় অস্থির হইয়া নমিতা অবনী বাবুকে আর না বলিয়া পারিল না : “বাবা, আমাকে কোনো একটা ইস্কুলে ভর্তি করে দিন, আমার দিন আর কাটে না।”
অবনী বাবু মায়া করিয়া কহিলেন,—“ধর্মের মধ্যে এই ত’ ভালো পথ পেয়েছ মা, এর চেয়েও ভালো স্কুল কি কিছু আছে?”
নমিতা মাথা হেঁট করিয়া রহিল; অনেক কথা বলিবার ছিল, কিছুই বলিতে পারিল না। আঁচল খুটিতে খুঁটিতে অনেক পরে কহিল, “অন্তঃপুরে লেখা পড়া : শেখবার কোনো বন্দোবস্ত করা যায় না? যেমন সংস্কৃত, ইংরিজি।”
অরুণা বাধা দিলেন : “না, ও-সবে কাজ নেই। দিন না কাটে ঘরের কাজ-কৰ্ম্মও ত’ করতে পার। রাত-দিন ধৰ্ম্ম আবার চোখে ভাল দেখায় না।”
কতটুকু ধর্মাচরণ যে ভালো দেখায় তাহারই হিসাব করিতে করিতে নমিতা তাহার ঘরে ফিরিয়া আসিল। ঘরের কাজ-কর্ম সে আর কত করিবে? করিবার আছেই বা কি? তবু তাহার অবসরযাপনের ক্লান্তির আর সীমা নাই। এখন দুপুরেও সে স্বামী-পূজা শুরু করিয়াছে।
এতদিনে নির্বাক দেবতা বুঝি কথা কহিলেন। কাল রাতে সুধীকে নমিতা স্বপ্ন দেখিয়াছে—কি নিশ্রী স্বপ্ন! স্বামী তাহাকে বলিতেছেন। “এ-সব তুমি কি ছেলেখেলা করছ, নমিতা? আমাকে তুমি এমন করে বেঁধে না।”
যে দিন নমিতা কাকার বাড়ি ছাড়িয়া প্রথম এখানে আসে সেদিনও সুধী স্বপ্নে তাহাকে এই কথা বলিয়াছিল। কিন্তু কাল রাতের স্বর যেন অনেক স্পষ্ট, দৃঢ়। নমিতা বলিল : “তবে আমি কি নিয়ে থাকব?”
উত্তর হইয়াছিল : “যে তোমাকে ভালবাসে তাকে নিয়ে।”
—“তুমি আমাকে ভালবাস না?”
—“না।”
কে তবে তাহাকে ভালবাসে এমন একটা প্রশ্ন অপ্রয়োজনীয় জ্ঞানেই নমিতা আর উত্থাপন করে নাই। সে বুঝি মনে-মনে তাহার নাম জানিত। তবু গায়ে পড়িয়া সুধী কহিল,—“তোমার প্রদীপকে মনে পড়ে? সে।”
লজ্জায় অরুণবর্ণা উষার মত নমিতা কাঁপিয়া উঠিল। তখন পূৰ্বদিকে প্রভাত হইতেছে। জাগিয়া উঠিয়া নমিতার ইচ্ছা হইল স্বামীর ফটোটা ছুড়িয়া ভাঙিয়া ফেলে।