১৫। নীলনদ
সেই ঘটনার পর একটি দিন কেটে গেছে। অগস্ত্য, ইরতেনসেনু এবং উপল তিনজনেই নিজেদের ঘরে বন্দি করে রেখেছিল। তিনজনের মনেই হতাশা চেপে বসেছে। ইরতেনসেনুর মনে অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তার বারবার মনে হচ্ছে সে পারল না ফারাও হাতসেপসুতকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে, পারল না তার দেশকে আগত অন্ধকার সময়ের হাত থেকে রক্ষা করতে।
পরের দিন বিকালের দিকে বাকারি এল তাদের সঙ্গে দেখা করতে। সে প্রায় জোর করেই তাদের প্রাসাদের বাইরে নিয়ে এল, যদি বাইরের হাওয়ায় ইরতেনসেনুদের অবসন্ন মন সামান্য হলেও স্বস্তি পায়। কার্নাকের মন্দির অগস্ত্য এবং উপল আগে দেখেনি, তাই সেই মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দিল বাকারিরা। ঠিক হল মন্দির দর্শন করে সন্ধ্যাবেলায় আবার তারা প্রাসাদে ফিরে আসবে।
একটি ছোট নৌকায় নীলনদ পার হল তারা। চওড়া নদীর উপর দিয়ে নৌকাটি যখন ধীরে ধীরে অন্য প্রান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল ততক্ষণে উপলের মন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে, নদীর ঠান্ডা হাওয়া তার চোখেমুখে এসে লাগছে। নদীর দুই তীরের শস্য ক্ষেত্রে যে ভুট্টার চাষ হয়েছে তার সোনালি আভায় এক অপরূপ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। ভুট্টার খেতের মাঝে মাঝে সবুজ উদ্ভিদের জঙ্গল, নদীর জল এই জঙ্গলের কিছুটা ভিতরে ঢুকে এসেছে। এই উদ্ভিদগুলি আকারে এক একটি সরু নলের মতো। জলের ভিতর থেকে কয়েক হাত উপরের দিকে উঠে গেছে এরা। এদের পাতাগুলি আবার ছড়ানো, তাদের প্রান্ত বেশ কয়েকটি সূঁচালো ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে।
ওইগুলি প্যাপিরাস গাছ। এই গাছ থেকে কীভাবে লেখার জন্য পুঁথি তৈরি হয় তার বর্ণনা উপলকে দিচ্ছিল বাকারি। অগস্ত্য আর ইরতেনসেনুর কানে কিন্তু সেই কথাগুলি পৌঁছচ্ছিল না। নদীর উপর দিয়ে এই যাত্রা যেন তাদের দুজনেরই অসহ্য লাগছিল। যেন নদীর স্রোতের কুলুকুলু শব্দ আসলে মৃদ্যহাস্যে তাদের বিদ্রুপ করে চলেছে। থীবসের এই শান্ত নদীই যে দক্ষিণে কিছু যোজন পরে বিরাট জলপ্রপাতের আকার ধারণ করেছে তা অনুমান করাই যায় না।
অগস্ত্য একটি বার ইরতেনসেনুর দিকে তাকাল, ইরতেনসেনুও তাকাল অগস্ত্যর দিকে। দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হলেও কেউ কোনও কথা বলল না, কিন্তু দুজনেই বুঝল যে তাদের মনের মধ্যে চলা ঝড়ের উৎস একই। এই নীলনদ।
নদীর অপর প্রান্তে পৌঁছে তীর বরাবর কিছুটা সময় হেঁটে তারা এসে পৌঁছল কার্নাকের মন্দিরে। কিছুদিন আগে যখন তারা থীবসের প্রাসাদে পৌঁছবার জন্য নদীর এই প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছিল তখন বহুদূরের এই মন্দিরটি দেখতে পেয়েছিল অগস্ত্য। আজ তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে সে। মন্দিরের প্রবেশদ্বারের কিছুটা সামনে দু’পাশে রয়েছে সেই সুউচ্চ দুটি স্তম্ভ, তাদের মাথা দুটি সূঁচালো। সেটি খাঁটি সোনার পাতে মোড়া।
সেদিন সূর্যের আলোয় এই চূড়া দুটিকেই উজ্জ্বল রূপে দেখেছিল অগস্ত্য। আজকে বিকালের নরম সূর্যের আলোয় যেন তাদের বেশ কিছুটা মলিন লাগছে। অগস্ত্যর মন ভালো নেই, কিন্তু সে ঠিক করল কার্নাকের মন্দিরটি খুঁটিয়ে দেখবে, যদি এতে মনের গতিপথ কিছুক্ষণের জন্য হলেও অন্যদিকে ধাবিত হয়। সে ইরতেনসেনুকে বলল, ‘তুমি আমাকে আর উপলকে এই মন্দিরটি ঘুরিয়ে দেখাও। এই মন্দিরের গল্প বলো। আজ তো আমাদের কোনও তাড়া নেই।’
ইরতেনসেনু অগস্ত্যকে চেনে। সে জানে তার স্বামী বাকারিকেও বলতে পারত মন্দির দেখাবার কথা। কিন্তু তাকে বলল কারণ সে চায় ইরতেনসেনু এখন ব্যস্ত হয়ে পড়ুক। ইরতেনসেনু নিজেও তাই চায়, সে চায় যেন এক্ষুণি তার ঘুম ভেঙে যাক এবং সে জানুক যে এতদিন অবধি হয়ে চলা সব কিছুই একটি দুঃস্বপ্ন মাত্র। কিন্তু হায়, তা তো আর হওয়ার নয়। কার্নাকের মন্দিরে নিজের মনকে ডুবিয়ে দিল ইরতেনসেনু।
মন্দিরে প্রবেশ করা মাত্র ফুল, গুগগুলের গন্ধে যেন এক লহমায় সবার মন শান্ত হয়ে গেল। হাসি মুখে ইরতেনসেনু অগস্ত্য এবং উপলকে কার্নাকের মন্দির ঘুরিয়ে দেখাতে লাগল। তাদের সঙ্গে চলল বাকারি।
কার্নাকের মন্দিরটি আকারে লাক্সরের মন্দিরের থেকেও কিছুটা বড়। চৌকো আকারের এই মন্দিরের বাইরের সূচিমুখ স্তম্ভদুটি মন্দিরের প্রবেশ পথকে নির্দেশ করে। মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করে অগস্ত্যরা একটি খোলা জায়গায় এসে পড়ল। বর্গাকার এই স্থানের চারটি বাহু বরাবর রয়েছে পাথরের আমুন-রা এর মূর্তি। বুকের উপরে দু’হাত জড়ো করে তিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
প্রায় সব কটি মূর্তির মুখ আগের কোনও না কোনও ফারাওয়ের মুখের আদলে তৈরি। কারণ এই পৃথিবীর মাটিতে দেবতা আমুন-রা এবং ফারাও তো একই। খোলা আকাশের নীচে এই জায়গাটি আমুন-রা এর উপাসনাক্ষেত্র। এখান থেকে উত্তরের দিকে গেলে পড়বে দেবতা মন্তুর পূজার ঘর, আর দক্ষিণে গেলে পড়বে ন্যায় এবং শান্তির দেবী মাত এর উপাসনাকক্ষ। অগস্ত্যরা প্রথমে মন্তু তারপরে মাত এর মন্দিরগুলি ঘুরে দেখল। দেবী মাতের মন্দিরের গা বেয়ে সিঁড়ি উঠে গিয়েছে উপরের দিকে। এই সিঁড়ি দিয়ে মন্দিরের ছাদে যাওয়া যায়। ইরতেনসেনুর পিছনে বাকি তিনজন সেই সিঁড়ি ভেঙে মাতের মন্দিরের ছাদে এসে দাঁড়াল।
খানিক আগে সূর্যাস্ত হয়েছে। পশ্চিম দিগন্তে এখনও রক্তিম আভা ছড়িয়ে আছে। ওদের সামনেই কিছুটা দূরে বয়ে চলেছে নীলনদ। এমন সময় এক অনির্বচনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হল তারা। আকাশ জুড়ে পাখির দল তাদের বাসায় ফিরে চলেছে। দলটি একটি তীরের ফলার মতো আকার ধারণ করেছে। পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠল মন্দির চত্বর। ওদের মাথার উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে তারা মিলিয়ে গেল নদীর দক্ষিণ অভিমুখে। যতক্ষণ পাখিগুলিকে দেখা গেল ততক্ষণ মুগ্ধ নয়নে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল ইরতেনসেনু। সহসাই যেন তার চমক ভাঙল। সে বাকারির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ফারাও হাতসেপসুত বলেছিলেন না যে নদী দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হলেও নদীর উপরের বায়ু প্রবাহিত হয় বিপরীত মুখে?’
‘হ্যাঁ তাই হয় তো। সেই কারণে থীবস থেকে দক্ষিণের আবিদোস নগরে যে নৌকাগুলি যায় তাদের মাঝি মাল্লাদের তেমন কাজ থাকে না, শুধু পাল তুলে দিলেই হয়। আবার আবিদোস থেকে ফেরার সময় বাতাসের সাহায্য পাওয়া যায় না কিন্তু নদীর স্রোতের অভিমুখে থাকার দরুণ দাঁড় টেনে থীবসে ফিরে আসা যায়।
বাকারি এই কথা বলার সময়ে উপল তার পায়ের কাছে পড়ে থাকা একটি পাখির পালককে তুলে নিল, তারপর ছাদের প্রান্তে এসে পালকটিকে শূন্যে ভাসিয়ে দিল। ইরতেনসেনুরা দেখল পালকটি বাতাসের মধ্যে হেলেদুলে দক্ষিণের দিকে এগিয়ে চলেছে। ইরতেনসেনু এবার উজ্জ্বল চোখে তাকাল অগস্ত্যর দিকে, অগস্ত্য ভ্রুকুটি করে কয়েক পলের জন্য ইরতেনসেনুর চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করল। তারপরেই যেন কোন কিছুর সন্ধান পেয়ে সোল্লাসে এগিয়ে গেল ইরতেনসের দিকে, জড়িয়ে ধরল তাকে।
অগস্ত্য ইরতেনসেনুর এহেন অকস্মাৎ মতি পরিবর্তনের কারণ বাকি দু’জনের বোধগম্য হল না। তারা অবাক হয়ে চেয়ে রইল। আলিঙ্গন মুক্ত হয়ে ইরতেনসেনু বলল, ‘নদীর দক্ষিণে যদি যেতে হয় তাহলে নদী বক্ষেই যে নৌকা ভাসাতে হবে তার প্রয়োজন নেই!’
উপল বলল, ‘মানে? শুনলে তো যে স্থলপথেও নদীর তীর ধরে চলাটা অসম্ভব কুশের রাজ্যের পরে।’
‘আমরা স্থলপথেও যাব না।’
এর কী অর্থ তা উপলের বোধগম্য হল না। এই প্রহেলিকায় বাকারি সামান্য বিরক্ত হয়েছে মনে হল, সে বলল, ‘স্থলপথেও যাবে না, জলপথেও নয়, তাহলে কি…
ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই অগস্ত্য বলে উঠল, ‘আকাশপথে! ওই পাখিদের মতো!
‘আপনার কি মতিভ্রম হয়েছে অগস্ত্য? আকাশপথে কীসের বলে যাবেন? জাদুমন্ত্র জানেন নাকি?’
অগস্ত্য এবং ইরতেনসেনু একে অপরের দিকে তাকাল। দুজনের মুখেই যেন প্রশান্তির হাসি ফুটে আছে, যেন অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ যাত্রা করার পর আলোর সন্ধান পেয়েছে তারা। ইরতেনসেনু বলল, ‘জাদুমন্ত্র নয়, বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের বলে আমরা এই পথ পাড়ি দিতে পারি।’
‘বাতাসে ভাসমান হয়ে? এও কি সম্ভব?’
‘আমাদের ধারণা তা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য চাই লোকবল এবং বেশ কিছু দ্রব্যাদি। কাজটি সমাধা করতে কিছুদিন সময় লাগবে। চলো আমরা এক্ষুণি ফারাওয়ের কাছে যাই। তার সাহায্যের একান্ত প্রয়োজন এখন।’
ফেরার সময় উপল এবং বাকারিকে অন্ধকারেই রেখে দিল অগস্ত্য এবং ইরতেনসেনু। তারা নিজেদের মধ্যে কোনও জটিল বৈজ্ঞানিক আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে রইল। প্রাসাদে পৌঁছেই ফারাওয়ের কক্ষে এল তারা। ফারাও কোনও নথি পরীক্ষা করছিলেন, তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একজন অমাত্য। আগাম সাক্ষাৎ প্রার্থী না হয়ে আচমকাই ইরতেনসেনুরা কক্ষে প্রবেশ করাতে সামান্য অবাক হলেন তিনি। অমাত্যটিকে বিদায় দিয়ে বললেন, ‘শুনেছিলাম তোমরা কার্নাকের মন্দির দর্শনে গেছ। কী হয়েছে? তোমাদের উত্তেজিত লাগছে কেন? আবার কোনও বিপদ হল নাকি?
ইরতেনসেনু সামনের দিকে এগিয়ে গেল, বলল, ‘না ফারাও। বিপদ নয়। একটি আশার ক্ষীণ আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমার এবং অগস্ত্যের মনে হয় পুন্তের নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করাটা সম্ভব। কীভাবে সেটি আপনাকে জানাতে চাই, পরিকল্পনাটি একেবারেই অবাস্তব বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আমাদের অনুরোধ আপনি দয়া করে শুনুন সবটা।
হাতসেপসুত শান্ত স্বরে বললেন, ‘অবশ্যই। তোমাদের বুদ্ধির বলে ছ’বছর আগে আমার হাতে সূর্যের আলো নেমে এসেছিল। এ কথা শুনতে অবাস্তব লাগলেও তা সত্য। তোমরা বলো, শুনছি।’
এবারে ইরতেনসেনু এক নিঃশ্বাসে বলে চলল, ‘ছ’বছর আগে অগস্ত্য যে যন্ত্রের মাধম্যে আমার তৈরি গোলকে আলোর উৎপাদন করে সেই যন্ত্রটিকেই আবার ব্যবহার করব আমরা, তবে এবারে অন্য ভাবে। সেই যন্ত্রের সাহায্যে জলকে বায়ুতে পরিণত করা যায়।
এখানে ইরতেনসেনুকে আর বলতে না দিয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে উপল বলতে আরম্ভ করল, ‘ঠিকই তো! অগস্ত্যের এক অলৌকিক কাণ্ড আছে জানেন! সমগ্র ভারতবাসীকে এক বিপদের মুখ থেকে বাঁচিয়েছিল অগস্ত্য! কালকেয় নামের এক অসুর এক সাগরের নীচে লুকিয়েছিল, অগস্ত্য তার শক্তিবলে সেই সাগরের সব জল পান করে নেয়! তারপর…’
অগস্ত্য এবারে উপল কাঁধে হাত রেখে তাকে থামাল, ‘এখন এই গল্পকথার সময় নয় উপল।’ তারপর ফারাও-এর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আমার এই বন্ধুটি সুযোগ পেলেই এই কাল্পনিক ঘটনার বর্ণনা শুরু করে দেয়। তবে বাস্তবে অন্য রকম কিছু ঘটেছিল। বেশ কিছু বছর আগের কথা, এই দেশে আসবারও আগে আমার তৈরি যন্ত্রটিকে নিয়ে আমি একটি পরীক্ষা করি। আমার যন্ত্রের সাহায্যে একটি বড় কুয়ার সমস্ত জলকে বায়ুতে পরিণত করা সম্ভব হয়েছিল। উপল কালক্রমে সেই ঘটনায় দেবতা, অসুর, সমুদ্রকে নিয়ে এসেছে। তবে আসল সত্যটি এটিই।
আমি যে কলসটিকে আমার বিজ্ঞানাগারে বানিয়েছিলাম তা থেকে উৎপাদিত শক্তি আমি জলের মধ্যে প্রবাহিত করি। তাতে দেখি যে জল বায়ুতে পরিণত হয়েছে এবং সেই বায়ু দু’প্রকার। একটি বায়ুতে প্রাণী শ্বাস নিতে পারে, তা আগুন জ্বলতে সাহায্য করে, এর নাম আমি দিয়েছিলাম প্রাণবায়ু। অপর বায়ুটি এই দুটির কোনটিই করে না, কিন্তু এর একটি অদ্ভুত ধর্মের পরিচয় আমি পেয়েছিলাম। এটি বাতাসের চেয়েও হালকা, তাই সদা ঊর্ধ্বমুখী। এই বায়ুর নাম আমি দিয়েছিলাম উড়ানবায়ু। গত কয়েক বছর ধরে এই বায়ুটিকে নিয়ে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা আমি এবং ইরতেনসেনু করেছিলাম। তার ফল স্বরূপ আমরা কাপড়ের তৈরি এমন একটি যন্ত্রের আবিষ্কার করি যার মধ্যে এই উড়ানবায়ুকে ধরে রাখলে যন্ত্রটি বাতাসে বেশ কিছুক্ষণ ভেসে থাকে।
এবার ইরতেনসেনু অগস্ত্যর কথার রেশ ধরে বলল, ‘আমরা এমন একটি বায়ুযান এবার তৈরি করতে চাই ফারাও। কিন্তু তা হবে আকারে অনেক বড়। আমাদের ধারণা সেই যন্ত্রের বলে আমরা বাতাসে ভেসে থাকতে পারব। নীলনদের উপরে বাতাস বয় নদীর উৎসের অভিমুখে, দক্ষিণে। বায়ুযানটিকে তৈরি করতে পারলে ওই বাতাসের বলেই বলিয়ান হয়ে আমরা যাত্রা করব দক্ষিণে, হারানো শহর পুন্তের উদ্দেশে!’
হাতসেপসুত চুপ করে রইলেন। ভাবনাটি তাঁর কাছে অলীকই বটে। কিন্তু বিজ্ঞানের ক্ষমতার পরিচয় তিনি আগে পেয়েছেন এবং এই দুই নারী এবং পুরুষের অসামান্য বুদ্ধির উপরে তাঁর ন্যূনতম সংশয় নেই। তিনি স্মিত হেসে বললেন, ‘বলো, এই কার্যে কী কী প্রয়োজন তোমাদের?’