উড়ে উড়ে ফুলে ফুলে মধু খাওয়াই মৌমাছির কাজ। মৌমাছির ধর্ম। শীত, বসন্ত, শরৎ, হেমন্তে কত বিচিত্র ফুলের মেলায় মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু যার মধু নেই, যার মধুর ভাণ্ডার শূন্য হয়েছে, সেখানে মৌমাছি নেই।
অনেক মানুষও উড়ে উড়ে মধু খায়। শীতের মরসুমী ফুলের মেলায় বসেও এদের নজর থাকে বসন্তের প্রতি। স্মৃতির ভাণ্ডারে এদের জমা হয় না কিছু। এদের হৃৎপিণ্ড আছে কিন্তু হৃদয় নেই, মন আছে কিন্তু অন্তর নেই।
ভালোবাসাই তো জীবনের ধর্ম। যৌবনে তার প্রথম পূর্ণ অনুভূতি। জীবন সন্ধিক্ষণের সেই অপূর্ব মুহূর্তে মানুষ ভালোবাসবেই। তাই তো যৌবনে কতজনই প্রেমে পড়ে, কিন্তু ভালোবাসা? সবাই কি ভালোবাসতে পারে? দেহ-মনের প্রতিটি গ্রন্থিতে কি সবাই অনুভব করে অব্যক্ত বেদনা?
না। তাই তো প্রেমে পড়লেই ভালোবাসা হয় না। প্রেম একটা রোগ। আসল না হলেও জল বসন্তে সবাই একবার ভুগবেই। সারা অঙ্গে কিছু ক্ষত রেখে যায়, কিন্তু তার স্থায়িত্ব নেই। একদিন মুছে যায় সে ক্ষতের চিহ্ন। আর ভালোবাসা? সে হচ্ছে অন্তরের ধর্ম, মনের বিশ্বাস। সে স্থায়ী, চিরস্থায়ী, চিরন্তন। সে অনন্ত।
দুনিয়ার মানুষ বার্লিনে এসে ভুলে যায় তার সুখ-দুঃখ ব্যথাবেদনা। গোল্ডেন সিটি বার, এল প্যানোরামা বা বলহাউস রেসিতে ক্ষণস্থায়ী বসতে অনেকে আরো কিছু ভুলে যায়। হাঙ্গা। কোয়ার্টারে থেকেও ভোলা যায় অনেক কিছু। কিন্তু তরুণ ভুলতে পারে না ইন্দ্রাণীর কথা।
অফিস থেকে ফিরে লিভিং রুমে চুপচাপ বসে বসে পরপর কতকগুলো সিগারেট খেতে খেতে তরুণ কি যেন ভাবছিল। বিভোর হয়ে ভাবছিল। অন্যদিন গাড়ি থেকে নেমেই প্রতিবেশী ডাঃ রিটারের ছোট ছেলেটিকে খোঁজে। তরুণকে দেখলে ছোট্ট রিটারও টলতে টলতে এগিয়ে আসে একটা মিল্ক চকোলেটের লোভে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও পকেটে চকোলেট ছিল কিন্তু গাড়ি থেকে অন্যমনস্কভাবে সোজা চলে এসেছে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে। অন্যদিনের মতো সোজা প্যানট্রিতে গিয়ে চা তৈরি করতেও যায়নি। যাবে কেন? রোজ রোজ কি ভালো লাগে? শুধু নিজের জন্য এত ঝামেলা পোহাতে কার ইচ্ছে করে?
বিভোর হয়ে তাই তো ভাবছিল, যখন সবাই ছিল; সব কিছু ছিল, তখন সে কাছে ছিল। সুখে-দুঃখে অহরহ পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। সেবার ঠিক পুজোর আগে আগে যখন তরুণের মার ডবল নিউমোনিয়া হলো তখন তরুণের বাবা গিয়েছিলেন কলকাতা। তরুণের সে কি ভয়। হাজার হোক একমাত্র ছেলে। সংসারের ঝুট-ঝামেলা বলতে যা বোঝায়, তা কোনোদিনই সহ্য করতে হয়নি। তাইতো বাবার অনুপস্থিতিতে মার অসুখে ভীষণ ঘাবড়ে গিয়েছিল। এপাড়া ওপাড়া থেকে অনেকেই এসেছিলেন। চিকিৎসা বা সেবাযত্নের কোনো ত্রুটি হয়নি ওদের সাহায্য সহযোগিতায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাঃ ঘোষালও বলেছিলেন, ভয় নেই। কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবেন।
মার অসুখের জন্য প্রত্যক্ষভাবে তরুণকে খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছিল না। মহুরী মদনবাবুই ডাক্তারের কাছে দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন। ঔষধ-পত্র দেবার জন্য ও-বাড়ির জ্যাঠাইমা সারাদিনই থাকতেন এ-বাড়িতে। এছাড়াও ঘোষালবাড়ির পিসিমা কতবার যে আসা-যাওয়া করতেন তার ঠিক-ঠিকানা নেই।
ইন্দ্রাণী তো ছিলই। মাসিমার বিছানার একপাশে বসে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিত সারাদিন। সন্ধ্যার পর সংসারের কাজকর্ম সেরে ইন্দ্রাণীর মা আসতেন। রাত্রি নটা-সাড়ে নটা নাগাদ ইন্দ্রাণীর বাবাও আসতেন। তিনজনে মিলে ফিরে যেতেন সাড়ে দশটা-এগারটার পরে।
তবু তরুণ ভয় পেয়েছিল। বাবাকে টেলিগ্রাম করেছিল, কাজ হলেই তাড়াতাড়ি চলে আসবেন।
বাবার লাইব্রেরি ঘরে টেবিলের উপর মাথা রেখে তরুণ আকাশ-পাতাল ভাবছিল। হঠাৎ কে যেন এসে আস্তে মাথায় হাত দিল। অন্য সময় হলে চমকে উঠত, কিন্তু মনটা বড়ই ভারাক্রান্ত ছিল। একটুও নড়া-চড়া করল না। তবে বড় ভালো লাগল। সমস্ত অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করল
আরেকজনের সমবেদনা। অনুভব করল ভালোবাসার নির্ভরযোগ্য স্পর্শ।
কি এত ভাবছ? মৃদু গলায় ইন্দ্রাণী জানতে চাইল।
তরুণ কিছু উত্তর দিল না। আগের মতোই টেবিলের উপর মাথা রেখে ভাবছিল কত কি।
বল না কি এত ভাবছ?
না, তেমন কিছু না। এবার তরুণ ছোট্ট উত্তর দেয়।
তবে এমন করে একলা একলা বসে আছ কেন?
এমনি-
আমাকেও সত্যি কথা বলবে না?
তরুণ টেবিলের উপর থেকে মুখ তুলে একবার ইন্দ্রাণীকে দেখে। মুখে একটু হাসির রেখা ফোঁটাবার চেষ্টা করে বলে, এমনি চুপচাপ বসেছিলাম।
এবার ইন্দ্রাণীও হাসে। তুমি কি মনে কর আজও তোমাকে আমি বুঝতে পারলাম না?
কথায় কথায় কত কথা হয়।
আচ্ছা, আমার যদি ভীষণ অসুখ করে? ইন্দ্রাণী মজা করেই প্রশ্ন করে।
ভালো ডাক্তার দেখাবার ব্যবস্থা হবে।
কিন্তু তুমি কি কিছু করবে? নাকি এমনি করে বসে বসে ভাববে?
কয়েকদিনের মধ্যেই মা ভালো হলেন। বাবাও কলকাতা থেকে ফিরে এলেন। মাঝখান থেকে তরুণের একটা নতুন উপলব্ধি হলো।
সেটা হলো ইন্দ্রাণীর ভালোবাসা। দুঃখের দিনে, বিষাদের দিনে একটা নিশ্চিত নির্ভয় আশ্রয়ের স্থির ইঙ্গিত।
অনেক দিন বাদে তরুণের মনে পড়েছিল সেদিনের স্মৃতি। ঘরবাড়ি থেকে অনেক দূরে মার মৃত্যু হলে তরুণ ইন্দ্রাণীর অনুপস্থিতি নিদারুণভাবে অনুভব করেছিল। বহুদিন পরে সেদিন। হালা কোয়ার্টারে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে একলা বসে থাকতে থাকতে ইন্দ্রাণীর অভাব নতুন করে বড় বেশি মনে পড়ল।
ডিপ্লোম্যাটের নিজের জীবনের কথা ভাবার অবকাশ বড় কম। ডিপ্লোম্যাট অনেক কিছু পায়, পায় না শুধু নিজের কাছে নিজেকে পাবার সুযোগ। কখনও কখনও প্রকাশ্যে, নিভৃতে, তাকে। নিরন্তর রাজনৈতিক সংবাদ সংগ্রহে ব্যস্ত থাকতে হয়। দিন অফিস, রাতে পার্টি। সেখানেও ছুটি নেই। মদ খেতে হয় গেলাস গেলাস। কখনও নিজের ইচ্ছায়, কখনও অন্যের আগ্রহে। তবুও মাতাল হতে পারে না ওরা। ভুলতে পারে না নিজের দেশের স্বার্থ।
তাই তো মুহূর্তের জন্যও মুক্তি নেই। কিন্তু যদি কদাচিৎ কখনও কর্তব্যের বেড়াজাল থেকে মুক্তি পায় ডিপ্লোম্যাট, তখন তার বড় বেশি মনে পড়ে নিজের কথা। অধুনা বিশ্ব রাজনীতির প্রতিটি পাতায় বার্লিনের উল্লেখ হলেও লন্ডন-নিউইয়র্ক-ওয়াশিংটন-মস্কোর মতো কূটনৈতিক চাঞ্চল্য নেই এখানে। মাঝে মাঝে একটা দমকা হাওয়া আসে অবশ্য, তবে সে মাঝে মাঝেই। তাই তো বার্লিনে এসে তরুণ একটু বেশি যেন নিজেকে দেখার সুযোগ পেয়েছে। অতীতের স্মৃতি, বর্তমানের বেদনা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার এমন কোরাস শোনার অবকাশ যেন এই প্রথম এল তার জীবনে।
ঘরের চারপাশে দৃষ্টিটা একটু ঘুরিয়ে নিতেই রাইটিং ডেস্কের পাশে মিঃ মিশ্রের একটা ছবি নজরে পড়ল। তরুণ বড় ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে এই মাতাল লোকটিকে। দেশে দেশে কত মানুষ দেখেছে তরুণ, কিন্তু গ্লানিহীন, কালিমামুক্ত এমন স্বচ্ছ অন্তঃকরণ আর কারুর দেখেনি। ওই একই ডেস্কের আরেক পাশে ছিল ইন্দ্রাণীর একটি ছবি। ছবি দুটো অমন করে পাশাপাশি রাখার একটা কাহিনি ছিল।
ইউনাইটেড নেশনস-এ থাকার সময় তরুণের ফ্ল্যাটে এসে মিশ্র যেদিন প্রথম ইন্দ্রাণীর ফটোটা দেখলেন, সেদিন উনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ইজ দিস দি ইনোসেন্ট গার্ল ইউ লাভ?
ও যে ইনোসেন্ট তা আপনি জানলেন কি করে?
মিশ্র সাহেবের কথা বলার ঢং-ই ছিল আলাদা।…লুক হিয়ার ইডিয়ট ইয়ংম্যান! চোখ দুটো ভালো করে দেখ!
একটু হাসতে হাসতেই তরুণ এক ঝলক দেখে নেয় ইন্দ্রাণীর চোখ দুটো। …কিন্তু কই, ইনোসেন্স তো দেখতে পাচ্ছি না।
পাবে কোথা থেকে? মনটা বোধহয় পুরোপুরি বিষাক্ত হয়ে গেছে।
তরুণ আরো কি যেন বলতে গিয়েছিল কিন্তু পারেনি। মিশ্র চিৎকার করে বলেছিলেন, আর বাজে বকালে পুরো এক বোতল স্কচ খাওয়ালেও আমাকে ঠান্ডা করতে পারবে না!
দু এক রাউন্ড ড্রিংক আর কিছু গল্প-গুজবের পর মিঃ মিশ্র বলেছিলেন, দেখ তরুণ, আই অ্যাম এ ফাদার, বাট আই হ্যাভ মাদার্স মাইন্ড। মাদার্স ফিলিংস!
ঢক করে প্রায় আধ গেলাস হুইস্কী গলায় ঢেলে দিয়ে বললেন, তাছাড়া ওই হতচ্ছাড়ি মেয়েটা লুকিয়ে পড়বার পর আমি যেন ওদের মতো মেয়েদের সব কিছু জানতে পারি, অনুভব করতে পারি। ওই হোপলেস মেয়েটা আমাকে ঠকালেও আর কোনো মেয়ে তা পারবে না।
তরুণ গেলাসটা হাতে নিয়ে চুপ করে বসে থাকে।
অনেক দিন পর আজ হান্স কোয়ার্টারের অ্যাপার্টমেন্টে নিঃসঙ্গ তরুণের বড় বেশি মনে পড়ছে সে রাত্রির কথা।
…চোখ দুটো দেখেই আমি বুঝতে পারছি এ মেয়ে কাউকে ফাঁকি দেবে না, দিতে পারে না। সী মাস্ট বী ওয়েটিং ফর ইউ।
নিজের একমাত্র মেয়েকে হারাবার স্মৃতিতে, ব্যথায়-বেদনায় সে রাত্রে বিভোর হয়েছিলেন মিঃ মিশ্র…আমার ওই হোপলেস মেয়েটার মতো এই দুনিয়ায় কিছু কিছু মেয়ে আছে যারা শুধু দপ করে জ্বলে উঠেই নিভে যায়। তোমার এই ইন্দ্রাণী, আমার এই ইন্দ্রাণী মা সে জাতের নয়। ও বহুদিন ধরে বহু অন্ধকার মনে আলো ছড়াবে।
রাইটিং ডেস্কের দুপাশে ওই দুটো ছবি দেখে তরুণের মনে ছোট ছোট টুকরো টুকরো স্বপ্নের মেঘ জমতে আরম্ভ করে। মেঘে মেঘে মেঘালয়ের প্রাসাদ গড়ে ওঠে মনের মধ্যে। একটা দমকা হাওয়া ঘরে ঢুকে পড়ে। তরুণ যেন হঠাৎ ইন্দ্রাণীকে দেখতে পায়। কটি মুহূর্তের জন্য অসহ্য নিঃসঙ্গতার যবনিকাপাত হয়।…
…কি এত ভাবছ?
চমকে ওঠে তরুণ। কে? ইন্দ্রাণী!
ইন্দ্রাণী মুখে কিছু বলে না। কোনো কালেই তো ও বেশি কথা বলে না। কৃষ্ণচূড়ার মতো মাথা উঁচু করে নিজের প্রচার সে চায় না, সূর্যমুখীর ঔদ্ধত্যও নেই তার। রজনীগন্ধার বিনম্র মাধুর্য দিয়েই তো সে তরুণকে মুগ্ধ করেছে। আজও সে ধীর পায়ে এগিয়ে এসে আলতো করে তরুণের হাত দুটো জড়িয়ে ধরল। মুখে কোনো জবাব দিল না, তবে যে চোখ দুটো হালা কোয়ার্টার ছাড়িয়ে, রেডিও টাওয়ার পেরিয়ে ওই দূরের সীমাহীন আকাশের কোলে ঘোরাঘুরি করছিল, তাতে মিষ্টি তৃপ্তির ইঙ্গিত।
মন্ত্রমুগ্ধের মতো তরুণ কোনো কথা বলতে পারে না। কৃষ্ণপক্ষের দীর্ঘ অমাবস্যার পর এক টুকরো চাঁদের আলোয় ঝলসে ওঠে মনপ্রাণ।
আবার একটা দমকা হাওয়া কোথা থেকে উড়ে আসে। ইন্দ্রাণী লুকিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নিয়ে খেলা করার সুযোগও শেষ হয় ডিপ্লোম্যাট তরুণ সেনগুপ্তের।
কতক্ষণ ধরে টেলিফোনটা বাজছিল তা সে জানে না! খেয়াল হতেই উঠে গেল।…ইয়েস সেনগুপ্টা স্পীকিং।
অ্যাম্বাসেডর! বন থেকে? তবে কি ইন্দ্রাণীর কোনো হদিশ পাওয়া গেল? না। মাস তিনেকের জন্য বন-এ থাকতে হবে জার্মান ইলেকশন আসছে বলে। চ্যান্সেলার কোনার্দ আদ্যেনুরের জয়লাভ হবে কি? নাকি…। ইলেকশন সম্পর্কে স্পেশ্যাল পলিটিক্যাল রিপোর্ট পাঠাতে হবে। দিল্লিতে!
না বলবার কোনো অবকাশ নেই। অ্যাম্বাসেডর নিজে টেলিফোন করেছেন। সি-জিও তো রাজি। সুতরাং শুধু জানতে চাইল, হোয়েন সুড আই রিপোর্ট স্যার?
কাম বাই নেক্সট উইক-এন্ড।
ধন্যবাদ জানিয়ে তরুণ টেলিফোন নামিয়ে রাখল। কৌচে না বসে ঘরের মধ্যে ধীরে ধীরে পায়চারি করতে করতে ভাবল, ইন্দ্রাণীকে নির্বাসনে পাঠাতে হবে। চিন্তায় ভাবনায় ভাবতে হবে ওই বৃদ্ধ আদ্যেনুরের কথা। বাহাত্তর বছর বয়সে যাঁর জীবন-সূর্য পৃথিবীর মহাকাশে উঁকি দিয়েছে, যিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে ঠাণ্ডা জলে পা দুটো ডুবিয়ে রেখে মাথায় তাজা রক্ত পাঠান আর ক্যাবিনেট মিটিং-এ সভাপতিত্ব করার সময় ঘন-ঘন চকোলেট খান, দিবারাত্রি ভাবতে হবে তার কথা!
অতি দুঃখের মধ্যেও তরুণের হাসি পায় আদ্যেনুরের কথা ভেবে। ঘুরতে হবে ওই বিচিত্র বৃদ্ধের সভায় সভায়, যিনি তাঁর রোয়েনডুর্যের বাড়িতে সিঁড়ি ভেঙে উঠতে গিয়ে ক্লান্ত হলে এক বোতল রাইন ওয়াইন খেয়ে নিজেকে তাজা করে নেন!