একবার লিখছি ঈশ্বর, গৌরী, আজিজ, শান শায়েব, ফুলজান, মন্টা, সাধুদের কাহিনী। আবার আসছি প্রভাস, বনানী, ইভা, রবার্টসনদের কথায়।
ঈশ্বরের কাঁচা ঘর, লক্ষ্মণের খেয়াঘাট, উড়িয়া মালী আর অহল্যায় মিলেমিশে প্রভাসের বাগানটিকে এমন করার প্রাণপণ সাধনা যে কোনো সায়েবের বাগান তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না, ক্লাবে সন্ধ্যার দিকে নাচ, গান, হাসি, আনন্দ, তাস, বিলিয়ার্ড খেলা–বেশি রাত্রে হৈ-হুল্লোড়।
একেই কি বলে প্যারালাল মানে সমান্তরাল কাহিনী? বুদ্ধি খাঁটিয়ে চালাকি করে উচ্চ, মধ্য এবং নিম্ন অর্থাৎ চাষী মজুরদের হাজির করে ছককাটা গল্প রচনা করা?
এতকাল সাহিত্যচর্চা করে আমার কাণ্ডজ্ঞান তাহলে নিশ্চয় লোপ পেয়েছে বলতে হবে।
শ্ৰেণীবিভক্ত জীবন কোনো দেশে কস্মিনকালে প্যারালাল বা সমান্তরাল ছিল না, এখনো নেই, সোনার পাথরের বাটির মতোই সেটা অসম্ভব ব্যাপার।
কথাটা ভুল বোঝা সম্ভব–আরো স্পষ্ট করার চেষ্টা করি। আমি বলছি জীবনের কথা–শ্রেণীতে শ্রেণীতে ভাগ হয়ে হয়েও একত্র সংগঠিত সমগ্র সমাজের কথা। সমান্তরাল কাহিনী খুবই সম্ভব, একটু কায়দা করে বানিয়ে লিখলেই হল—কিন্তু সম্পর্কহীন সমান্তরাল জীবন?
ঈশ্বর, আজিজরা থাকে এক স্তরে, প্রভাস রবার্টসনরা আরেক স্তরে। তাই বলে জীবন কি। তাদের সম্পর্কহীন?
পরকে বাদ দিয়ে তাদের কারো জীবনযাত্রা সম্ভব?
সম্পর্ক কি শুধু প্রেমে হয়! সংঘাত সম্পৰ্ক নয়?