এ কি মায়া এ কি মায়া কর মহামায়া। সংসারে যে কিছু দেখি তব মায়াচ্ছায়া।।
নিগম আগমে তুমি নিরুপমকায়া। ত্রিগুণ-জননী পুনঃ ত্রিদেবের জায়া।।
ইহলোকে পরলোকে তুমি যে সহায়া। ভারত কহিছে মোরে দেহ পদচ্ছায়া।।
পলাইতে না পেয়ে ফাপর হৈলা হর। কহিতে লাগিলা কম্পমান কলেবর।।
তোমরা কে মোরে কহ পাইয়াছি ভয়। কোথা গেল মোর সতী বলহ নিশ্চয়।।
কালীমূর্ত্তি কহিতে লাগিলা মহাদেবে। পূর্ব্ব সর্ব্ব জান কেন পাসরিলা এবে।।
পরমা প্রকৃতি আমি ভেবে দেখ মনে। প্রসবিনু তুমি বিষ্ণু বিধি তিন জনে।।
তিন জনে তোমরা কারণজলে ছিলা। তপ তপ তপ বাক্য কহিনু শুনিলা।।
তিনজনে পরস্পরে লাগিলা জপিতে। শবরূপে আইলাম ভাসিতে ভাসিতে।।
পচাগন্ধে উঠি গেলা বিষ্ণু ভাবি দুখ। বিধি হৈলা চতুর্মুখ ফিরি ফিরি মুখ।।
তুমি ঘৃণা না করিয়া করিলা আসন। প্রকৃতি রূপেতে তোমা করিনু ভজন।।
পুরুষ হইলে তুমি আমার ভজনে। সেই আমি সেই তুমি ভেবে দেখ মনে।।
এত শুনি শিবের হৈল চমৎকার। প্রকাশ করিলা তন্ত্র মন্ত্র সবাকার।।
লুকাইয়া দশ মূর্ত্তি সতী হৈলা সতী। গৌরবর্ণ ছাড়ি হৈলা কালীর মূরতি।।
মোহিত মহেশ মহামায়ার মায়ায়। যে ইচ্ছা করহ বলি দিলেন বিদায়।।
রথ আনি দিতে তবে কহিবা নন্দীরে। রথে চড়ি গেলা সতী দক্ষের মন্দিরে।।
প্রসূতি সতীরে দেখি কালীর বরণ। কহিলা দেখিয়াছিলা স্বপন যেমন।।
আহা মরি বাছা সতী কালী হইয়াছ। ছাড়িবে আমারে বুঝি মনে করিয়াছ।।
স্বপনে দেখেছি দক্ষ শিবেরে নিন্দিবে। শিবনিন্দা শুনি তুমি শরীর ছাড়িবে।।
শিব করিবেন দক্ষে যজ্ঞ সহ নাশ। তোমা দেখে স্বপ্নে মোর হইল বিশ্বাস।।
জগন্মাতা হয়ে মাতা বলেছ আমায়। জন্মশোধ খাও কিছু চাহিয়া আমায়।।
মার বাক্যে মাতা কিছু আহার করিয়া। যজ্ঞ দেখিবারে গেল সত্ত্বর হইয়া।।
কৃষ্ণবর্ণা দেখি সতী দক্ষ কোপে জ্বলে। শিবনিন্দা করিয়া সভায় আগে বলে।।
ভারত শিবের নিন্দা কেমনে বর্ণিবে। নিন্দাচ্ছলে স্তুতি করি শঙ্কর বুঝিবে।।