১২. সুটকেশ এবং হ্যান্ডব্যাগ হাতে

অয়ন একটা সুটকেশ এবং হ্যান্ডব্যাগ হাতে সন্ধ্যা থেকেই তার ছাত্রের বাসায় বসে আছে। ছাত্রের খোঁজ নেই। শুধু ছাত্র না, বাড়িতেই কেউ নেই, সবাই দলবেঁধে বিয়ে খেতে গেছে।

কাজের ছেলেটি বলল, বসেন মাস্টার সাব। চা খান। বাড়িতে লোকজন না থাকলে কাজের লোকরা খুব সামাজিক হয়ে উঠে। আগ্রহ করে চা-টা দেয়। অয়ন জিজ্ঞেস করল, কখন ফিরবে?

তার কি কোনো ঠিক আছে। বিয়া বাড়ি বইল্যা কথা। রাইত নয়টার আগে না।

রাত নটা হলে অপেক্ষা করা যায়। নটা, দশটা পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারে। একটা বেবীটেক্সি নিলে দশ মিনিটে স্টেশনে চলে আসবে। জিনিসপত্ৰতো সব সঙ্গেই আছে। অসুবিধা কিছু নেই।

অয়নের মনে হলো নটার আগেই তার ছাত্র চলে আসবে। স্যারের কথা নিশ্চয়ই তার মনে আছে। গতকালইতো সে বলেছে, চিন্তা করবেন না। স্যার আমি ব্যবস্থা করে রাখব। নিশ্চয়ই ব্যবস্থা করে রেখেছে।

অয়ন বলল, বিয়ে কোথায় জান না-কি করিম?

জ্বে না। কিছুই জানি না। চা দিমু?

আচ্ছা দাও। চা দাও।

রাত দশটার ভেতর সে সর্বমোট ছকাপ চা খেল। বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইল। তার ছাত্রের কালো গাড়ি যদি দেখা যায়।

রাত দশটা পাঁচে কাজের ছেলে এসে বলল, তারা আইজ আর আসব না। চইলা গেছে মীর্জাপুর।

তুমি বুঝলে কি করে?

আম্মা টেলিফোন করছিল।

আমি যে বসে আছি এটা বলেছ?

জ্বে না। ইয়াদ ছেল না।

অয়নের মনে আরেকটা সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। এমনতো হতে পারে তার ছাত্র ড্রাইভারকে দিয়ে স্টেশনে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কারণ সে জানে তার স্যার রাত সাড়ে দশটার ট্রেনে যাচ্ছে। বিয়ের তাড়াহুড়ায় মনে ছিল না। বিয়ে বাড়িতে গিয়ে মনে হয়েছে। সে কি চলে যাবে স্টেশনে?

করিম!

জ্বে মাস্টার সাব।

তারা কোত্থেকে টেলিফোন করেছে?

তাতো জানি না।

এই বাসায় কি কেউ নেই? সব চলে গেছে?

জ্বে। বড় সাবের এক ভাই আছেন। তুমি উনাকে একটু জিজ্ঞেস করে আসবে আমার কথা বাবু কিছু বলে গেছে। কের আমাকে কিছু টাকা দেয়ার কথা ছিল। বাৰু কি উনার কাছে দিয়ে গেল কি-না।

করিম খোজ নিয়ে এল। বাবু কিছুই বলে নি।

অয়ন পুরোপুরি নিঃসন্দেহ হলো বাবু ড্রাইভারকে দিয়ে স্টেশনেই টাকা পাঠিয়েছে। এতক্ষণ। এইখানে নষ্ট না করে তার উচিত ছিল স্টেশনে চলে যাওয়া। বিরাট ভুল হয়েছে।

অয়ন ঘর থেকে বের হয়েই বেবীটেক্সি নিল। হাতে সময় একেবারেই নেই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *