১২. কূটকৌশল অধ্যায় – হাদিস ৬৪৮৩-৬৫১০

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৩ | 6483 | ٦٤۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৯১৪. কূটকৌশল পরিত্যাগ করা। এবং কসম ইত্যাদিতে যে যা নিয়ত করবে তা-ই তার ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে
৬৪৮৩। আবূ নু’মান (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, হে জনতা, সকল আমলই নিয়তের সাতে সম্পৃক্ত। যে যা নিয়ত করবে সে তা-ই পাবে। যার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্য হবে তার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্যই হবে। আর যার হিজরত দুনিয়া পাওয়ার জন্য বা কোন রমণীকে বিয়ে করার জন্য হবে, তার হিজরত সে জন্যই হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৪ | 6484 | ٦٤۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৯১৫. নামায
৬৪৮৪। ইসহাক ইবনু নাযর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বায়ু নির্গত হওয়ার পর উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের কারো সালাত (নামায/নামাজ) কবুল করবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৫ | 6485 | ٦٤۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৫। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নির্ধারিত সাদাকা সম্পর্কে আবূ বকর (রাঃ) তার কাছে একটি ফরমান পাঠান। এতে লিখেন যে, সাদাকা প্রদানের আশংকায় যেন বিচ্ছিন্ন মালকে একত্রিত করা না হয় এবং একাত্রিত মালকে যেন বিচ্ছিন্ন করা না হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৬ | 6486 | ٦٤۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৬। কুতায়বা (রহঃ) … তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক অবিন্যাস্ত কেশধারী বেদুঈন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ আমার উপর সালাত (নামায/নামাজ) থেকে কি ফরয করেছেন, তা বাতলে দিন। তিনি বললেনঃ পাঞ্ছেগানা সালাত (নামায/নামাজ), তবে তুমি কিছু নফল পড়তে পার। সে বলল, আল্লাহ আমার উপর রোযা থেকে কি ফরয করেছেন তা আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ রমযান মাসের রোযা। তবে তুমি কিছু নফল আদায় করতে পার। সে বলল, আল্লাহ্ আমার উপর যাকাত থেকে কি ফরয করেছেন সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইসলামী হুকুম আহকাম সম্পর্কে অবহিত করলেন। সে বলল, ঐ সত্তার কসম! যে আপনাকে সম্মানিত করেছে। আমি নফল কিছু করব না এবং আল্লাহ্ আমার উপর যা ফরয করেছেন তা থেকে কমবেও না। তা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি লোকটি এর উপর স্থিত থাকে, তাহলে সফলকাম হয়েছে। যদি এ সত্যের উপর স্থিত থাকে তাহলে তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে।

কোন কোন মনীষী বলেন, একশ বিশটি উটের যাকাত হল দুটি হিক্কা। যদি যাকাত এড়ানোর জন্য সে এগুলো স্বেচ্ছায় ধ্বংস করে ফেলে অথবা দান করে দেয় অথবা অন্য কোন কৌশল অবলম্বন করে যাকাত থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাহলে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৭ | 6487 | ٦٤۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৭। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সঞ্চিত ধন, যার যাকাত আদায় করা হয়নি, কিয়ামতের দিন টাকাপড়া হিংস্র সাপে পরিণত হবে। সম্পদের মালিক তা থেকে পালাতে থাকবে। কিন্তু সাপ তার পিছু লেগে থাকবে। আর বলবে, আমি তোমার সঞ্চিত সম্পদ। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! সাপ তার পিছু ধাওয়া করতেই থাকবে। পরিশেষে সে বাধ্য হয়ে তার হাত প্রসারিত করে দেবে। ফলে সাপ তার মুখ গ্রাস করে নেবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ পশুর মালিক যদি তার হক যাকাত আদায় না করে তাহলে পশুকে তার পিছে লাগিয়ে দেয়া হবে। পশু তার মুখমন্ডল পায়ের ক্ষুর দ্বারা আঁচড়ে ফেলবে।

কোন কোন মনীষী বলেন, কোন ব্যাক্তির কয়েকটি উট ছিল, এগুলোতে যাকাত ওয়াজি হয়ে যাবার আশংকায় যাকাত এড়াবার নিমিত্ত কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বছর পূর্ণ হওয়ার একদিন আগে সমপরিমাণ উটের বদলে বা ছাগল বা গরুর বা মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি করে ফেলল, তাহলে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। অথচ ইনি বলেন, যদি বছর পূর্ণ হওয়ার একদিন অথবা এক বছর আগেই উটের যাকাত দিয়ে দেয় তাহলে তার পক্ষে আদায় হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৮ | 6488 | ٦٤۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ইবনু উবাদা আনসারী (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর মায়ের মানত সম্পর্কে ফতোয়া চাইলেন, যে মানত তার মায়ের যিম্মায় ছিল। কিন্তু তা আদায় করার পূর্বে তার মৃত্যু হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার পক্ষ থেকে আদায় করে দাও।

কোন কোন মনীষী বলেন, যখন উটের সংখ্যা বিশে পৌঁছে তখন তার যাকাত হবে চারটি ছাগল। কিন্তু যদি সে যাকাত থেকে রেহাই পাওয়ার উদ্দেশ্যে অথবা যাকাত এড়াবার কৌশল হিসেবে বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ঐগুলো দান করে দেয় অথবা বিক্রি করে ফেলে, তাহলে তার উপর কিছু ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ যদি সে ঐগুলো ধ্বংস করে দেয় তারপর সে মারা যায় তাহলেও তার মালের উপর কোন যাকাত ওয়াজিব হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৯ | 6489 | ٦٤۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৯১৭. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৮৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিগার থেকে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি নাফি (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম শিগার কি? তিনি বললেন, কেউ এক ব্যাক্তির মেয়ে বিয়ে করবে এবং সে তার মেয়ে ঐ ব্যাক্তির কাছে বিনা মহরে বিয়ে দেবে।

কোন কোন আলিম বলেন, যদি কেউ কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে শিগারের ভিত্তিতে বিয়ে করে নেয়, তাহলে বিয়ে বলবৎ হয়ে যাবে। তবে শর্তটি বাতিল বলে গণ্য হবে। আর মুতআ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিয়ে ফাসিদ ও শর্ত বাতিল। আবার কেউ কেউ বলেন মুত্আ ও শিগার উভয়টি জায়েয হবে। আর শর্ত বাতিল হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯০ | 6490 | ٦٤۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৯১৭. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৯০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু আলী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আলী (রাঃ) কে বলা হল- ইবনু আব্বাস (রাঃ) নারীদের মুত্আ বিয়েতে কোন আপত্তি মনে করেন না। তখন তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের দিন মুত্আ ও গৃহপালিত গাধার গোশত (আহার) থেকে নিষেধ করেছেন।

কোন কোন লোক বলেন, যদি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে মুতআ বিয়ের চুক্তি করে নেয় তাহলে বিয়ে ফাসিদ বলে গণ্য হবে। আর কেউ কেউ বলেন, বিয়ে বৈধ হবে আর শর্ত বাতিল হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯১ | 6491 | ٦٤۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৯১৮. ক্রয়-বিক্রয়ে যে কূটকৌশল অপছন্দনীয়। প্রয়োজনাতিরিক্ত ঘাস উৎপাদনে বাধা প্রদানের নিমিত্ত প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি সরবরাহে বাধা দেওয়া যাবে না
৬৪৯১। ইসমাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ প্রয়োজনাতিরিক্ত ঘাস উৎপাদনের বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি সরবরাহে বাধা দেয়া যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯২ | 6492 | ٦٤۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৯১৯. দালালী করা অশোভনীয় হওয়া প্রসঙ্গে
৬৪৯২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দালালী করা থেকে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৩ | 6493 | ٦٤۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৯২০. ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকাবাজি নিষেধ হওয়া প্রসঙ্গে। আইয়ুব (রহঃ) বলেন, লোকেরা আল্লাহকে ধোঁকা দিতে চায়, যেন তারা মানুষকে ধোঁকা দেয়। তারা যদি প্রকাশ্যে কাজটি করত তবে তা আমার নিকট অধিক সহজ মনে হত।
৬৪৯৩। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করল যে, সে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় প্রতারিত হয়ে যায়। তিনি বললেনঃ যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলবে (কোন প্রকার) ধোঁকাবাজি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৪ | 6494 | ٦٤۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৯২১. অভিভাবকের পক্ষে বাঞ্ছিতা ইয়াতীম বালিকার পুরা মোহর না দেয়ার ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন করা হওয়া প্রসঙ্গে
৬৪৯৪। আবুল ইয়ামন (রহঃ) … উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ) কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, ‏وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে। (৪ঃ ৩) তিনি বললেন, এ আয়াত এমন ইয়াতীম মেয়ে প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে, যে তার অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে আছে। আর অভিভাবক তার সম্পদ ও সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং তার সগোত্রীয় মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রচলিত মহরের চেয়ে কম মহর দিয়ে বিয়ে করে নেয়ার মনস্থ করে। তাই তাদেরকে এমন ইয়াতীম মেয়েদেরকে বিয়ে করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তবে যদি পুরোপুরি মহর প্রদান করে তাদের সুবিচার করে। এরপর লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সম্পর্কে ফতোয়া চাইলে আল্লাহ্ এ আয়াত নাযিল করেনঃ এবং লোকেরা তোমার নিকট নাদীদের বিয়ে পরিস্কারভাবে জানতে চায় (৪ঃ ১২৭)। তারপর হাদীসের (বাকী অংশ) বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৫ | 6495 | ٦٤۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৯২২. যদি কেউ কোন বাঁদী অপহরণ করার পর বলে, সে মারা গেছে এবং বিচারকও মৃত বাঁদীর মূল্যের ফয়সালা করে দেন। এরপর যদি সে বাঁদী মালিকের হস্তগত হয়ে যায়, তখন সে মালিকেরই হবে। তবে মালিক মূল্য ফেরত দেবে। এ মূল্য (বাঁদীর) দাম বলে গণ্য হবে না। কোন কোন মনিষী বলেন, বাঁদীটি অপহরণকারীরই থাকবে, কারণ মালিক মূল্য গ্রহণ করে নিয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ লোকের জন্য একটা কূটকৌশল অবলম্বনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেওয়া হল। যে লোকের কারো দাসী পছন্দ হয়, কিন্তু মালিক তা বিক্রয় করে না, তখন সে তা অপহরণ করে বাহানা করে বলল যে সে মরে গেছে, যাতে করে মালিক মূল্য গ্রহণ করে নেয়। আর অন্যের দাসী অপহরণকারীর জন্য হালাল হয়ে যায়।অথচ নবী (সাঃ) বলেনঃ একে অন্যের মাল হরণ করা তোমাদের জন্য হারাম। প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য ক্বিয়ামতের দিন একটা পতাকা থাকবে।
৬৪৯৫। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য কিয়ামতের দিন একটা পতাকা থাকবে, এর মাধ্যমে তাকে চেনা যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৬ | 6496 | ٦٤۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৯২৩. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৯৬। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি তো একজন মানুষ। আর তোমরা আমার কাছে বিবাদ মীমাংসার জন্য এসে থাক। তোমাদের এক পক্ষ অপর পক্ষ হতে দলীর প্রমাণ পেশ করার ব্যাপারে অধিকতর পারদর্শী হতে পারে। ফলে আমি আমার শোনা মতে যদি কাউকে তা অন্য ভাইয়ের হক দিয়ে দেই, তাহলে যেন সে তা গ্রহণ না করে। কেননা, আমি তার জন্য জাহান্নামের একটা অংশই পৃথক করে দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৭ | 6497 | ٦٤۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৭। মুসলিম ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কুমারী নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অনুমতি গ্রহণ করা হবে। আর বিধবা নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার মত গ্রহণ করা হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তার অনুমতি কিরূপে? তিনি বললেনঃ যখন সে নীরব থাকে। কোন কোন লোক বলেন, যদি কুমারীর অনুমতি নেয়া না হয় এবং তাকে বিয়ে দেয়া না হয়। অতঃপর কোন ব্যাক্তি কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে দু’জন মিথ্যা সাক্ষী এ মর্মে দাঁড় করায় যে, ঐ ব্যাক্তি উক্ত মহিলাকে তার সম্মতি নিয়ে বিয়ে করেছে এবং বিচারকও তার বিয়ে বলবৎ করে দেন, অথচ স্বামী পরিজ্ঞাত যে, স্বাক্ষীটি মিথ্যা, তখন তার জন্য উক্ত মহিলার সাথে সহবাস করতে কোন আপত্তি নেই এবং এটি শুদ্ধ বিয়েতে পরিণত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৮ | 6498 | ٦٤۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাফর (রাঃ) এর বংশের জনৈকা মহিলা আশঙ্কা পোষণ করল যে, তার অভিভাবকরা তার অসম্মতিতে বিয়ে দিতে যাচ্ছে তাই সে আনসারী দু’জন মুরব্বী জারিয়ার দুই পুত্র আবদুর রহমান (রাঃ) ও মুজাম্মি (রাঃ) কে এ কথা বলে পাঠাল। তারা বললেন, তোমার ভয়ের কারণ নেই। কেননা, খানসা বিনত খিযাম (রাঃ) কে তার পিতা তার অসম্মতিতে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিয়ে রদ (বাতিল) করে দেন। সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেন যে, আমি আবদুর রহমান (রহঃ) কে তাঁর পিতা থেকে إِنَّ خَنْسَاءَ বলতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৯ | 6499 | ٦٤۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৯। আবূ নু’আযম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবাকে তার মতামত ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না। তারা বললেন, তার অনুমতি কি রূপে? তিনি বললেনঃ তার নীরব থাকা। কেউ কেউ বলেন, যদি কোন লোক কোন বিধবা নারীর মতানুসারে বিয়ে সম্পাদনের ওপর দু’জন মিথ্যা স্বাক্ষীর মাধ্যমে কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। আর বিচারকও তাদের এ বিয়েকে বলবৎ করে দেন। অথচ স্বামী পরিজ্ঞাত যে, সে তাকে এর পূর্বে বিয়ে করেনি। তাহলে তার জন্য এ বিয়ে বৈধ ও কার্যকর হয়ে যাবে এবং তার জন্য উক্ত মহিলার সাথে বৈবাহিক জীবন যাপনে কোন বাধা নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০০ | 6500 | ٦۵۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৫০০। আবূ আসিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুমারীর অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। আমি বললাম, কুমারী তো লজ্জাবোধ করবে। তিনি বললেনঃ তবে অনুমতি হল তার নীরবতা। কেউ কেউ বলেন, যদি কোন ইয়াতীম বাঁদী অথবা কোন কুমারী কারো পছন্দ হয়। কিন্তু সে অসম্মতি জানায়, তখন ঐ ব্যাক্তি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে দু’জন মিথ্যা সাক্ষ্য এ মর্মে পেশ করে যে, সে তাকে বিয়ে করেছে এবং সে প্রাপ্ত বয়স্কা হবার পর সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। আর বিচারকও মিথ্যা সাক্ষ্য কবুল করে নেন। অথচ স্বামী তা মিথ্যা হওয়ার ব্যাপারে অবগত। এ ক্ষেত্রে তার জন্য সহবাস করা বৈধ হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০১ | 6501 | ٦۵۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৯২৫. কোন মহিলার জন্য স্বামী ও সতীনের বিরুদ্ধে কৌশল করা অপছন্দনীয় এবং এ ক্ষেত্রে নবী (সাঃ) এর ওপর যা নাযিল হয়েছে
৬৫০১। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন এবং যখন আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিতেন তখন তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে ঘুরে বেড়াতেন এবং তাঁদের কাছে উপস্থিত হতেন। একদা তিনি হাফসা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করলেন এবং সাধারণত যত সময় তাঁর কাছে অবস্থান করতেন এর চেয়ে অধিক সময় তাঁর কাছে অবস্থান করলেন। তাই আমি এর কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আমাকে বলা হল যে, তার স্বগোত্রীয় এক মহিলা এক কৌটা মধু হাদিয়া পাঠিয়েছে। এ থেকে তিনি আল্লাহর রাসূলকে কিছু পান করিয়েছেন। আমি মনে মনে বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই একটা কৌশল অবলম্বন করব।

এরপর আমি এ ব্যাপারে সাওদা (রাঃ) এর সাথে আলোচনা করলাম। আমি বললাম, যখন তিনি তোমার ঘরে আসবেন, তখন তিনি অবশ্যই তোমার সন্নিকটে যাবেন। এ সময় তুমি তাঁকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি অবশ্য না-ই বলবেন। তখন তুমি বলবে, তাহলে এ দুর্গন্ধ কিসের? আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর থেকে দুর্গন্ধ পাওয়া যাওয়াটা খুবই গুরুতর মনে হত। তখণ তিনি বলবেনঃ হাফসা আমাকে মধুর শরবত পান করিয়েছে। তখন তুমি তাঁকে বলবে, তাহলে ঐ মধুর পোকা “উরফুত” গাছের রস আহরণ করেছে। আর আমিও একই কথা বলব। হে সাফিয়া! তুমিও তাঁকে এ কথা বলবে।

যখন তিনি সাওদা (রাঃ) এর ঘরে এলেন, তখন সাওদা (রাঃ) বললেন, কসম ঐ সত্তার, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। যখনই তিনি দরজার কাছে এলেন তখনই আমি তোমার ভয়ে তোমার শিখানো কথাগুলো বলতে উদ্যত হলাম। এরপর তিনি যখন সন্নিকটে এলন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ‘মাগাফীর’ খেয়েছেন। তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এ দুর্গন্ধ কিসের? তিনি বললেন, হাফসা আমাকে মধুর শরবত পান করিয়েছে। আমি বললাম, তাহলে এ মধুর পোকা “উরফুত” (বৃক্ষের) রস আহরণ করেছে।

আয়িশা (রাঃ) বললেন, এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমার ঘরে এলেন, তখন আমিও তাঁকে অনুরূপ কথা বললাম। এরপর তিনি সাফিয়া (রাঃ) এর ঘরে গেলেন, সেও তাঁকে অনুরূপ কথা বলল। পুনরায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হাফসা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করলেন তখন তিনি তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে মধু পান করতে দিব কি? তিনি বললেনঃ এর কোন প্রয়োজন নেই। আয়িশা (রাঃ) বলেন, সাওদা (রাঃ) বললঃ সুবহানাল্লাহ্! আমরা তা হারাম করে দিলাম। আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি সাওদা (রাঃ) কে বললামঃ চুপ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০২ | 6502 | ٦۵۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৯২৬. প্লেগ মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল গ্রহণ করা নিষিদ্ধ
৬৫০২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলাম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমির ইবনু রাবী’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়া অভিমুখে রওনা দিলেন। তিনি যখন ‘সারাগ’ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন তাঁর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, সিরিয়ায় প্লেগ মহমারী আকারে দেখা দিয়েছে। এ সময় আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তাঁকে অবহিত করলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন এলাকায় মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে শুনতে পাবে তখন তোমরা সেখানে যেও না। আর যখন কোন এলাকায় মহামারী ছড়িয়ে পড়ে আর তোমরা সেখানে উপস্থিত থাক, তখন সেখান থেকে পলায়ন করে বেরিয়ে এসো না। এ কথা শুনে উমর (রাঃ) “সারাগ” থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, উমর (রাঃ) আবদুর রহমানের হাদীসের কারণে ফিরে এসেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৩ | 6503 | ٦۵۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৯২৬. প্লেগ মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল গ্রহণ করা নিষিদ্ধ
৬৫০৩। আবুল ইয়ামন (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি সা’দ (রাঃ) কে বলেন। একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহামারী প্রসঙ্গে আলোচনাকালে বললেন, এ একটি শাস্তি, কতক জাতিকে এ দ্বারা শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারপর এর কিছু অংশ বাকী রয়ে গেছে। তাই কখনো এ চলে যায় আবার কখনো তা ফিরে আসে। যখন কেউ কোন এলাকায় মহামারীর কথা শুনবে তখন যেন সে তথায় না যায়। আর যে কেউ এমন এলাকায় অবস্থান করে যেখানে এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, তখন সে যেন সেখান থেকে পলায়ন করে বেরিয়ে না আসে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৪ | 6504 | ٦۵۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৪। আবু নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হেবা করে আবার তাকে ফেরত নেয়া ব্যাক্তির তুলনা যেন এমন একটি কুকুর যে বমি করে তা আবার গলাধঃকরণ করে। এরূপ খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন আমাদের জন্য কিছুতেই ঠিক নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৫ | 6505 | ٦۵۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল ঐ সব ভূমিতে শুফআর অধিকার সাব্যস্ত করেছেন, যেগুলো এখনো বন্টিত হয়নি। আর যখন সীমানা নির্দিষ্ট হয়ে যায় এবং রাস্তা নির্ধারিত হয়ে যায় তখন আর শুফআর (অধিকার) থাকে না। কোন কোন লোক বলেন, প্রতিবেশী হওয়ার দরুনও শুফআর অধিকার সাব্যস্ত হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে যা দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করলেন তা আবার বাতিল করে দিলেন এবং বললেন, যদি কেউ কোন বাড়ী ক্রয় করার পর আশংকা করে যে, প্রতিবেশী শুফআর অধিকারের ভিত্তিতে নিয়ে যাবে তাই সে শত অংশের এক অংশ প্রথমে ক্রয় করে নেয়, তারপর বাকী অংশ ক্রয় করে। অথচ প্রতিবেশীর জন্য শুফআর অধিকার কেবল প্রথম অংশে ছিল। তাহলে বাড়ীর বাকী অংশে প্রতিবেশীর জন্য শুফআর অধিকার প্রতিষ্ঠিত থাকে না। এক্ষেত্রে সে এ কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৬ | 6506 | ٦۵۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর ইবনু শারীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসওয়ার ইবনু মাখারামা (রাঃ) এসে তাঁর হাত আমার কাঁধে রাখলেন। তারপর আমি তাঁর সাথে সা’দ (রাঃ) এর কাছে গেলাম। তখন আবূ রাফি (রাঃ) মিসওয়ার (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি ওকে এ কথা বলছেন যে, সে আমার ঐ ঘরটি ক্রয় করে নেবে, যে ঘরটি তাঁর বাড়ীতে রয়েছে। সা’দ (রাঃ) বললেন, আমি চারশ থেকে বেশী দেব না। তাও আবার কিস্তিতে কিস্তিতে দেব। আবূ রাফি (রাঃ) বললেন, আমাকে নগদ পাঁচশত দেয়া হচ্ছে, অথচ আমি তাকে দিচ্ছি না। আমি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে না শুনতাম যে, প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমি ক্রয়ের ব্যাপারে সবচে বেশী হকদার, তাহলে আমি তা তোমার কাছে বিক্রি করতাম না। অথবা বলেছেন, তোমাকে আমি তা দিতাম না।

আমি সুফয়ান (রহঃ) কে বললাম যে, মা’মার তো এমনটি বলেননি। তিনি বললেন, কিন্তু তিনি আমাকে এমনটি বলেছেন। কিছু সংখ্যক লোক বলেন, কেউ যদি কোন ভূমি বিক্রি করে, তাহলে কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে শুফ্আর অধিকার বাতির করে দিতে পারে। যেমন বিক্রেতা ক্রেতাকে বাড়িটি দান করে দেবে এবং তার সীমানা বর্ণনা করে ক্রেতার কাছে সোপর্দ করে দেবে। এরপর ক্রেতা বিক্রেতাকে এক হাজার দিরহাম দিয়ে দেবে। এমতাবস্থায়, শাফী’র জন্য তাতে শুফ্আর অধিকার থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৭ | 6507 | ٦۵۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সা’দ (রাঃ) তার কাছ থেকে চারশ মিছকালের বিনিময়ে একটি ঘর ক্রয় করার জন্য দর করেন। তখন তিনি বলেন, যদি আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে না শুনতাম যে, “প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমি ক্রয়ের ব্যাপারে সবচে বেশী হকদার” তাহলে তোমাকে আমি দিতাম না। কেউ কেউ বলেন, যদি কেউ বাড়ীর কোন অংশ ক্রয় করে এবং শুফ্আর অধিকার বাতিল করে দিতে চায়, তাহলে তার ছোট ছেলেকে তা দান করে দেবে। আর যখন তার ওপর কোন কসমও আসবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৮ | 6508 | ٦۵۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫০৮। উবায়াদ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লুতাবিয়্যা নামে এক ব্যাক্তিকে বণী সুলায়ম গোত্রের যাকাত আদায়কারী নিয়োগ করলেন। যখন সে ফিরে এলো তখন তিনি তার কাছ থেকে হিসাব-নিকাশ গ্রহণ করলেন। সে বলল, এগুলো আপনাদের মাল, আর এগুলো (আমাকে দেয়া) উপঢৌকন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক তাহলে তোমার মা-বাবার ঘরে বসে থাকলে না কেন? সেখানেই তোমার কাছে উপঢৌকন এসে যেত। এরপর তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের কাউকে এমন কোন কাজে নিয়োগ করি, যার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আল্লাহ্ আমাকে মনোনীত করেছেন। কিন্তু সে কাজ সম্পাদন করে এসে বলে, এ হল তোমাদের মাল। আর এ হল আমাকে দেয়া উপঢৌকন। তাহলে সে কোন তার মা-বাবার ঘরেই বসে রইল না, সেখানে এমনিতেই তার কাছে তার উপঢৌকন এসে যেত?

আল্লাহর কসম! তোমরা যে কেউ অবৈধভাবে কোন কিছু গ্রহণ করবে, সে কিয়ামতের দিন তা বয়ে নিয়ে আল্লাহর সামনে হাযির হবে। আমি তোমাদের কাউকে ভালভাবেই চিনব যে, সে আল্লাহর কাছে হাজির হবে উট বহন করে, আর উট আওয়াজ দিতে থাকবে। অথবা গাভী বহন করে, আর সেটা ডাকতে থাকবে। অথবা বকরি বহন করে, আর সেটা ডাকতে থাকবে। এরপর তিনি আপন হাতে দু’টি এতদূরে উত্তোলন করলেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যাচ্ছিল। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? আমার চক্ষুযুগল সে অবস্থা অবলোকন করেছে এবং আমার কান শুনেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৯ | 6509 | ٦۵۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫০৯। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … আবূ রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমির ব্যাপারে সর্বাধিক হকদার। কেউ কেউ বলেন, কেউ যদি কোন একটি বাড়ী বিশ হাজার দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করে, ঐ বিশ হাজার দিরহাম পরিশোধ করার সময় এ কৌশল গ্রহণ করাতে কোন দোষ নেই যে, ক্রেতা বিক্রেতাকে ন’হাজার ন’শ নিরানব্বই দিরহাম ও বিশ হাজারের বাকী দিরহামের পরিবর্তে এক দ্বীনার নগদ প্রদান করবে। এখন যদি শুফ্আর অধিকারী শুফ্আর দাবি করে, তাহলে এই বাড়ী বিশ হাজার দিরহামের বিনিময়ে নিতে হবে। এছাড়া তার এ বাড়ী পাওয়ার আর কোন পন্থা নেই। আর যদি এ বাড়ীর কোন মালিক বের হয়ে যায়, তাহলে ক্রেতা বিক্রেতাকে দেয়া দামই ফেরত দেবে। আর তা হল ন’হাজার ন’শ নিরানব্বই দিরহাম ও এক দ্বীনার। কেননা, যখন বিক্রিত বস্তুর মূল মালিক বের হয়ে গেছে তখন দ্বীনারের “রায়এ-সারফ” বাতিল হয়ে গেছে। আর যদি ক্রেতা বাড়ীতে কোন দোষ পায়, তার কোন মালিক বের না হয়, তাহলে ক্রেতা বাড়ী ফেরত দেবে ও বিক্রেতা ক্রেতাকে বিশ হাজার দিরহাম দেবে।

আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ মূলত এরূপ করা মুসলমানদের মধ্যে ধোকাবাজিকে বৈধতা দেওয়ার নামান্তর। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানদের ক্রয়-বিক্রয়ে কোন রোগব্যাধি, অপবিত্রতা ও ধোঁকাবাজি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫১০ | 6510 | ٦۵۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫১০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আমর ইবনু শারীফ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ রাফি (রাঃ) একটি ঘর ক্রয় করার নিমিত্ত সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) এর সাথে চারশ মিছকাল মূল্য ঠিক করেন। আর বলেন, যদি আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে না শুনতাম যে, প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমির ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচে বেশী হকদার, তাহলে তোমাকে আমি প্রদান করতাম না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *