১১
হা হা করে হেসে উঠল সারা চায়ের দোকান। লক্ষ করে দেখি দোকান ভর্তি লোক, দোকানের বাইরে লোক, রাস্তা উপচে পড়েছে লোকের ভিড়ে। সকলে ঠা ঠা করে হাসছে। তরুণ একজন আমার পাঁজরে খোচা দিয়ে বলল, আর সব না হয় বিশ্বাস করা যায়, এক মানুষ কখনো আরেক মানুষ হয়ে যেতে পারে?
পরান মাস্টার লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল।
ভিড়ের ভেতর থেকে কে একজন বলে উঠল, বুড়োকালে রসের ভীমরতি।
হাসির একটা এরাপ্লেন উড়ে গেল যেন মাথার ওপর দিয়ে। আমি পরান মাস্টারের হাত ধরে বললাম, চলুন আপনি চলুন তো এখান থেকে।
আমার হাত প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে ফেলে দিয়ে পরান মাস্টার বলল, না। যাব না। কেন যাব?
আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
আহ, কী করছেন।
চোপ।
আসুন তো আপনি। জনতার দিকে লক্ষ করে বললাম, আর আপনারাই বা কী? একটা মানুষকে নিয়ে হাসতে পারছেন?
কে একজন আমাকেই বলে বসল, পাগলের দেখি দোস্ত জুটেছে রে।
হা হা হা। ঠা ঠা ঠা।
চিৎকার করে উঠলাম, চুপ করুন।
হাসির তোড় আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল।
পরান মাস্টার তখন ভাঁটার মতো চোখ করে আমাকে বললো, এদের সঙ্গে তুই পারবি না। তুই চুপ করে থাক। বলে সে আমাকে ঠেসে বেঞ্চের ওপর বসিয়ে দিল আবার।
সত্যি কথা বলতে কী, আমি যে কোথায় আছি তাই এখন আর নিশ্চিত হতে পারছি না। সমস্ত কিছুই ধোঁয়ার মতো ঠেকছে। অন্য জগতের মতো বলে বোধ হচ্ছে। মাথার ভেতর একটি কেবল শব্দ ঘুরছে বোলতার মতো বীথিপৃ, বীথিপ্।
কী কারণে জানি না, আমি একবার প্রচণ্ড এক অব্যয় ধ্বনি করে উঠলাম এবং সঙ্গে সঙ্গে সমুখের টেবিলে মাথা রেখে এলিয়ে পড়লাম।
কানের কাছে শুনতে পেলাম কে যেন বলছে, এরও হয়ে গেছে রে।
না! আমি চিৎকার করে উঠলাম।
প্রায় আমারই প্রতিধ্বনি করে উঠল পরান মাস্টার— না! চিৎকার করে সে বেঞ্চের ওপর লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল; জনতার উদ্দেশে তারস্বরে বলতে লাগল, আমি পাগল? আমার ভাই
পাগল? না, দুনিয়া পাগল?
হা হা হা।
ঠিক শুনেছি কি না, মাথা তুলে দেখি পরান মাস্টারও জনতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হা হা করে হাসছে।
অচিরে পরান মাস্টার বলে উঠল, হাসুন ভাইসব, হাসুন, এই শেষ হাসি হেসে নিন, আর সুযোগ পাবেন না, আর চান্স পাবেন না, আর মওকা পাবেন না।
ফিরিওয়ালাদের মতো এক কথাই ভিন্ন ভিন্ন শব্দে সুর করে বলে চলল সে। এই শেষ সুযোগ, লাস্ট চান্স, আখেরি মওকা, হেসে নিন ভাইসব।
আমার কেমন সন্দেহ হলো। আমি পরান মাস্টারের হাঁটু ধরে টানলাম নামিয়ে আনবার জন্যে, সে হাঁটু সরিয়ে নিল জনতার উদ্দেশে বলতে বলতে, কেন শেষ হাসি হেসে নিতে বলছি জানেন? অনুমান করতে পারেন? ধারণা করতে পারেন?
জনতা হেসে গড়িয়ে পড়ল আরো একবার।
চায়ের দোকানদার সন্তস্ত্র হয়ে বলল, ভাই, হাত জোড় করি ভাই, আমার দোকানে না, আমার দোকানে না, দোকান খালি করুন, পায়ে ধরি ভাই।
জনতার চাপে দোকানি কোথায় তলিয়ে গেল, কেউ কেউ দোকানির ভঙ্গি দেখেই হেসে খুন।
পরান মাস্টার ধমক দিয়ে উঠল, চোপ, কেউ হাসবে না। সত্যি সত্যি এবার যেন সবাই চুপ করে যায়। খবরদার দোকানে ভিড় করবেন না। গরিব বেচারা চা বেচে খায়, তার বিজনেস নষ্ট করবেন না। বেরোন সব, বেরোন, বলতে বলতে পরান মাস্টার বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে নেমে হাত ধরে হাঁচকা টান দিল। আয় কাছারির মাঠে যাই, সেখানে আল্লার দেয়া মাঠ, জায়গার অভাব নেই। আল্লার বিজনেস সেখানে খারাপ হবার ভয় নেই।
তার কথা শুনে জনতা ভারি মজা পেয়ে যায়। আবার তারা হেসে উঠল। এবার পরান মাস্টার তাদের ধমক দিল না, হাসিটাকে সমেত আমাকে টানতে টানতে সে এগিয়ে চলল কাছারির মাঠের দিকে।
মাঠের একদিকে স্পোর্টসের বিজয়ীদের স্যালুট নেবার জন্যে তিন থাকের বাঁধান একটা সিঁড়ি, তারই ভেতরে উঁচুটাতে উঠে দাঁড়িয়ে পরান মাস্টার বলতে লাগল, এতকাল আমার কথায় অবিশ্বাস? আমাকে পাগল বলে হাসা? অবিশ্বাস করে অঙ্গভঙ্গি করা? সব এখন বের হবে। একটা কথা তো এখনো বলিই নি। সেইটে শোন দিকি বাবা সকল, তারপর দেখি অবিশ্বাস কর না বিশ্বাস কর।
কত লোক হবে মাঠে? একশ? দু’শ? দু’ হাজার? পাঁচ হাজার? আমার মনে হতে লাগল যেন পুরো জলেশ্বরী ভেঙে পড়েছে এখন কাছারির মাঠে।
আর কী বলবে পরান মাস্টার? আর কোন কথা এতকাল সে বলে নি ওদের? জনতাও যেন কান খাড়া করে ঘন হয়ে এল আস্তে আস্তে।
মনে আছে? মনে নেই? হুঙ্কার দিয়ে শুরু করল পরান মাস্টার। চোখ ঘুরিয়ে হাত নেড়ে নেড়ে বলতে লাগল, আমি বীথিপৃতে গিয়েছিলাম? তানেহাম আমাকে একটা অনুরোধ করেছিল? মনে নেই?
জনতা আবার হেসে উঠবার জন্যে তৈরি, কিন্তু হাসিটাকে চেপেচুপে রইল, যেন দেখাই যাক না কী বলে?
আর সেই কথা মনে আছে? তীবযু আমাকে বলেছিল, পুরস্কার দেবে?
হাঁ, হাঁ, মনে আছে, মাস্টার। জনতার ভেতর থেকে আওয়াজ ওঠে।
কী পুরস্কার? বল দেখি কী পুরস্কার?
বলুন, বলে যান। টানা একটা ধ্বনি বয়ে যায় কাছারি মাঠের ওপর দিয়ে।
বলব না।
পরান মাস্টার আকস্মিকভাবে ধাপের ওপর বসে পড়ে।
কী হলো মাস্টার কী হলো?
না বলব না।
কেন? কেন?
বললেই তো অবিশ্বাস করবে। পাগল বলবে। পেছন পেছন তাড়া করবে। ছোঁড়া লেলিয়ে দেবে।
না, না, না।
পরান মাস্টার আমাকে বলল, ওদের একটা কথা বিশ্বাস করিসনে। ঐ যে না না করছে, মনে মনে ঠিক তৈরি হয়ে আছে নতুন রগড়ের জন্যে, হাসবার জন্যে, অবিশ্বাস করবার জন্যে। কিন্তু জানে না যা বলব, বিশ্বাস ওদের করতেই হবে।
আমার মাথা ভোঁ ভোঁ করতে শুরু করে দিয়েছে।
হঠাৎ পরান মাস্টার আবার লাফ দিয়ে ধাপের ওপর দাঁড়িয়ে বলতেই লাগল, একটা মেশিন।
কী? কী? কী?
মেশিন, মেশিন যন্ত্র। আশ্চর্য এক যন্ত্র। সেই যন্ত্র আমাকে পুরস্কার দেয় তানেহাম। বড় সাহেবের কাজ করে দিয়েছি না? তারই পুরস্কার এক আশ্চর্য মেশিন।
হা হা হেসে উঠল জনতা।
হাসো ভাই, হেসে নাও। কী সে মেশিন? কী কাজ হয় সেই মেশিনে?
জনতা টিটকিরি দিয়ে উঠল, পাগল তৈরি হয়।
আমি চঞ্চল হয়ে পড়লাম। ‘পাগল’ শব্দটা না শুনে পরান মাস্টার ক্ষেপে ওঠে। কিন্তু না, সে নির্মল হেসে উঠল।
বলল, হাঁ পাগল চাইলে পাগলও সেই মেশিন তৈরি করে দিতে পারে। তবে কিছু সময়, লাগবে। আমাদের পৃথিবীর হিসেবে তিন বিপল। সেই মেশিনে এখনো প্রাণী তৈরির ব্যবস্থা নেই। বীথিপৃর বৈজ্ঞানিকেরা খুব খাটাখাটি করছে সেই মেশিনে প্রাণীও যাতে তৈরি হতে পারে। তিন বিপল সময় নিয়েছে তারা তানেহামের কাছ থেকে। হাজার হলেও পাগল একটা প্রাণী তো বটে?
তা বটে তা বটে। হি হি হি।
হাঁ খুব হেসে নাও। লাস্ট চান্স।
বলে যাও, মাস্টার বলে যাও। সেই মেশিনে এখন তবে কী তৈরি হয়?
প্রাণী ছাড়া সব কিছু।
সাইকেল তৈরি হয়?
হয়।
রেল গাড়ি?
খুব হয়।
দালানবাড়ি?
চোখের পলকে।
জনতা এখন পাল্লা দিয়ে একেকটি জিনিসের নাম বলে চলে, আর পরান মাস্টার সায় দিতে থাকে।
হয়, সব কিছু হয়, চোখের পলকে হয়। কীভাবে হয়? সরল একটি থিয়োরি। সবকিছুই অ্যাটমের সমষ্টি ছাড়া কিছু নয়; যেটাই তুমি দেখছো, ভাঙো, ভেঙে যাও, ভাঙতে ভাঙতে এক সময়ে অ্যাটমে গিয়ে ঠেকবে।
ভিড়ের ভেতরে কে একজন চেঁচিয়ে ওঠে, অ্যাটম বোমার থিয়োরি নাকি?
পরান মাস্টার ধমক দিয়ে ওঠে, চোপ মুর্খের দল।
হা হা করে হেসে ভেঙে পড়ে সকলে।
হাসো ভাই, হাসো, শেষ হাসি হেসে নাও অবিশ্বাসীর দল! সেই অ্যাটম হচ্ছে সবকিছুর মূলে, আর সেই অ্যাটম সব ক্ষেত্রে এক। দালানের অ্যাটমও যা, সাইকেলের অ্যাটমও তাই তোমার দাদির পুরনো ছেঁড়া লেপের মধ্যেও একই অ্যাটম।
হা হা হা।
সেই অ্যাটম ভুলে যেও না, বাবা সকল। বীথিপৃর বৈজ্ঞানিকেরা এমন এক মেশিন বানিয়েছে, তার কাজই হচ্ছে অ্যাটম পেলেই অ্যাটম তৈরি করা, হুবহু কপি করা, আসল নকল চেনার উপায় নেই, যতবার চাও ততবার অ্যাটমের কপি উগরে দেবে সেই যন্ত্র। জনতা একটু মজা পেয়ে যায় মনে হলো। ধ্বনি শোনা যায় তারপর?
যন্ত্রটির আবার এমন বাহাদুরি অ্যাটম পেলে শুধু অ্যাটম কপি করছে তাই নয়। যন্ত্রের সম্মুখে যে জিনিস ধরে দেবে নিজের ভিতরে তৎক্ষণাৎ সেটা বিশ্লেষণ করে অ্যাটমের অনুবাদ করে ঝপাঝপ অ্যাটম বানিয়ে অবিকল সেই রকম আর একটা জিনিস হাজির করে ফেলবে চোখের পলকে। সমুখে জিনিস, পেছনেও আরেকখানা সেই রকম জিনিস হাজির। মাথার ওপর চড়া রোদ, দর দর করে ঘাম পড়ছে পরান মাস্টারের খোলা গা বেয়ে; বীভৎস দেখাচ্ছে তাকে। চোখ লাল, ঠোঁটের দুপাশে গ্যাঁজ দেখা দিয়েছে, হাতের জিগার ডালখানা পর্যন্ত ভেঙটি সাপের মতো মনে হচ্ছে।
ঠা ঠা ঠা।
চোপ! কথা শেষ হয় নি। এখন চিন্তা করো সকলে। আশ্চর্য মেশিনের কথা চিন্তা করো।
তুমি চিন্তা করো মাস্টার।
দূর শালা পাগল।
একেবারে ক্ষেপে গিয়েছে।
পায়ে শিকল দিয়ে রাখতে হয়।
এই রকম মন্তব্য করতে করতে জনতা পাতলা হবার উদ্যোগ নেয়, সরে পড়তে শুরু করে দু একটা ছোড়া ঢিল ছোঁড়ে পরান মাস্টারের উদ্দেশে।
আমি বেগতিক দেখে পরান মাস্টারের হাত ধরে টান দিয়ে বলি, খুব হয়েছে আসুন।
না। আবার গর্জন করে ওঠে পরাণ মাস্টার। জনতার উদ্দেশে বলে, খুব হাসি না? বিশ্বাস হয় না? তবে শোনো, আমি নিজে সেই মেশিন পরীক্ষা করে দেখেছি। সেই মেশিনের সামনে ধান ধরে দিলে ধান হয়, চাল ধরে দিলে চাল হয়।
সচল জনতা হঠাৎ থেমে যায়।
একদানা চাল ধরে দাও সামনে, যতক্ষণ সুইচ টিপে রাখবে, পেছনে অনবরত চালের দানা বেরুতে থাকবে। পাহাড় হয়ে যাবে চালের পাহাড়।
জনতা ফিরে তাকায় পরান মাস্টারের দিকে।
ডাল ধরে দাও। অড়হরের ডাল, ছোলার ডাল, মুগ ডাল, পেছনে ডালের পাহাড়। স্তূপাকার। এত ডাল যে চণ্ডি বাবুর গুদামেও ধরবে না।
জনতা হা করে তাকিয়ে থাকে বক্তার দিকে।
নুন ধরে দাও, নুন বেরিয়ে পাহাড়, তেল ধরে দাও, খাঁটি সরষের তেল, তেলের প্রশান্ত মহাসাগর।
জনতা খোদিত মূর্তির মতো স্থির।
আমিও স্থির— পরান মাস্টারের মুখের দিকে তাকিয়ে।
পরান মাস্টার এই প্রথম টিটকিরি দিয়ে ওঠে জলেশ্বরীর মানুষদের— এতকাল যারা তাকে টিটকিরি দিয়েছে এখন সে তাদেরই খোঁচা দেয় নিষ্ঠুরভাবে, কি, হাস? পাছার কাপড় তুলে হাস ভাইসব। হাসি নাই? ফুরিয়ে গেছে? সব শেষ? কী হলো?
জনতা অপরাধীর মতো মাথা নামিয়ে নেয় এক সঙ্গে।
পরান মাস্টার আবার উদাহরণ হাজির করতে থাকে, আলেকজাণ্ডার নব্বুই সুতার পাবনার লুঙ্গি মেশিনের সামনে ধর, হাজার হাজার লুঙ্গি; টাঙ্গাইলের বাহারি পাছাপাড় শাড়ি, দ্রৌপদীর দেহ থেকে শালা দুঃশাসনের বাপও কোনোদিন সে শাড়ি টেনে শেষ করতে পারবে না। কী মিয়ারা? হাস না যে? বিশ্বাস হয়? এখন বিশ্বাস হয়?
জনতা যেন কাতর চোখে অনুনয় করে ওঠে পরান মাস্টারকে। কীসের অনুনয়, আমি শনাক্ত করতে পারি না।
আমার নিজের মাথার ভেতরটাই কেমন গোলমাল বোধ হচ্ছে এখন।
আর হাঁ, ঘি, মশলা, পোলাওয়ের চাল, জাফরান, ভালো জর্দা, পান, মুখ সেঁকা বিড়ি, কাঁচি মার্কা সিগারেট, পেটেন্ট লেদারের এক নম্বর পাম্পস্যু।
আমি কি নিজেই পাগল হয়ে যাচ্ছি?
পরান মাস্টারের কণ্ঠস্বর গমগম করতে থাকে।
রুপার হাঁসুলি, সোনার চন্দ্রহার, বোলাক নথ, কান পাশা, মাকড়ি, দুল, টু-ইন-ওয়ান, ক’টা টু-ইন-ওয়ান চাই? ক’হাতে ক’টা ঝোলাতে চান বাবা সকল?
আমি চোখের সমুখে সব ধোঁয়া দেখি।
উজির নাজিরকে ছুটে আসতে দেখি। ভিড় ভেঙে তারা ছুটে আসছে, মানুষগুলো যেন পাথর— তাদের সরাতে বড় কষ্ট হচ্ছে দুভাইয়ের, তারা চিৎকার করে ডাকতে ডাকতে আসছে, বাবা, বাবা।
পরান মাস্টার বলে চলেছে, সরু চাল, মোটা চাল, লাল চাল, আলো চাল, মুগ ডাল, মুশরি ডাল, পাটনাই বুট, মটর ডাল, সরষের তেল, লাল লংকা, পাঁচফোড়ন, আলু আলু, পাটল পটল, কপি কপি, ফুল কপি, বাঁধা কপি, ভিজে গজা, জিলিপি
উজির নাজির প্রায় কাছে এসে পড়েছে; আমিও এগিয়ে যাই; তিনজনে এক সঙ্গে নিশ্চয়ই জাপটে ধরে বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।
কিন্তু তার আগেই পরান মাস্টার হঠাৎ লুঙ্গির গেরো টান মেরে খুলে ফেলে লাফ দিয়ে নেচে উঠল।
হা হা। করো অবিশ্বাস, করো, আরো করো, আরো আমাকে বলো পাগল।
আমরা তাকে ধরে ফেলবার আগেই পরান মাস্টার হাতের লাঠি রাজদণ্ডের মতো বুকের ওপর আড় করে ধরে ছুট দেয়। তার বীথিপৃর ভাষায় সে চিৎকার করে বলতে বলতে সড়ক ভেঙে চলে যায়। রালাশা সশ্বাবি ছেরেক। তোইবেরক টেপে রোকা নাদা যেইনে। তথ্যবিভ লিঝুলিকা।
পুরো জলেশ্বরী জুড়ে ধ্বনিত হতে থাকে বীথিপৃর ভাষায়, তথ্যবিভ লিঝুলিকা, তথ্যবিভ লিঝুলিকা, তথ্যবিভ লিঝুলিকা।