১১. শ্রোতাদের কীভাবে আগ্রহী করে তোলা যায়
এখন যে পৃষ্ঠা আপনি পড়ছেন, যে কাগজ আপনি দেখছেন, তা নিতান্ত সাধারণ, তা নয় কি? আপনি এরূপ অগণিত পৃষ্ঠা দেখেছেন। এটা অত্যন্ত সাধারণ এবং আকর্ষণহীন, কিন্তু আমি যদি এসম্পর্কে কোনো অদ্ভুত গল্প বলি তা হলে আপনি নিশ্চিতভাবেই আগ্রহী হবেন। এই পৃষ্ঠাটি এখন দেখতে নিতান্ত রসকষহীন দেখাচ্ছে। প্রকৃতি বিজ্ঞানী জানেন, এটা এটম দিয়ে তৈরি। এবং অণু কিরূপ ছোট? দশম পরিচ্ছেদে আমরা শিখেছি, একবিন্দু পানিতে যত অণু আছে ভূমধ্যসাগরে আছে ততবিন্দু পানি। সুতরাং যে অণু দিয়ে তৈরি এই কাগজ তা কি দিয়ে তৈরি? ক্ষুদ্র জিনিসকে বলে ইলেকট্রন। ইলেকট্রন দিয়ে ঘেরা, যেমনি পৃথিবী ঘেরা চন্দ্র দিয়ে। ইলেকট্রন প্রতি সেকেন্ডে ১০ হাজার মাইল চলতে পারে। সুতরাং আপনি পড়তে শুরু করলে এই ইলেকট্রন নিউইয়র্ক থেকে টোকিও পৌঁছতে পারে।
মাত্র দুমিনিট আগেও এই কাগজের টুকরাকে আপনি প্রাণহীন নিশ্চল বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা নয়, এটি স্রষ্টার এক অদ্ভুত সৃষ্টি। এটা শক্তির এক সাইক্লোন।
এটা সম্পর্কে অদ্ভুত কথা শোনেছেন বলে আপনি এক্ষণে এর প্রতি আগ্রহী হবেন। এই অদ্ভুত বিষয়টিই আগ্রহ সৃষ্টির কারণ। এটা সত্য যে, আগ্রহ সৃষ্টি হলেই মানুষ সে বিষয়টি জানতে চাইবে। সম্পূর্ণ নূতন জিনিস আমাদের কাছে তেমন আকর্ষণীয় নয়, আবার সম্পূর্ণ পুরাতন জিনিস ও আমাদের আগ্রহ সৃষ্টি করে না। পুরাতন সম্পর্কে আপনারা নতুন কিছু শোনতে আগ্রহী। উদাহরণ স্বরূপ মোনালিসা সম্পর্কে কিছু বলে আপনি ইলিনয়স এর একজন কৃষকের বিষয় মনে আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারবেন না। এই বর্ণনা তার জন্যে হবে নতুন বিষয়। এটা তার পুরাতন আগ্রহের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। কিন্তু সমুদ্রসীমার নিচে অবস্থিত হল্যান্ডের কৃষক সম্পর্কে কিছু বলে সে আগ্রহী হবে। আপনি যখন বলবেন হল্যান্ডের কৃষকেরা শীতকালে বগবাদী পশুর সাথে একই ঘরে বাস করে, তখন ইলিনয়িসের কৃষক তা আগ্রহভরে শোনবে। শুধু শুনে যাবে না, সে তার বন্ধুদের কাছেও হল্যান্ডের কৃষকদের কাহিনী বলবে।
এক্ষেত্রে আরো একটি কাহিনী বলছি। দেখুন এটা আপনার আগ্রহ সৃষ্টি করে কিনা। যদি আগ্রহ সৃষ্টি করে তাহলে কেন?
আপনার উপর তরল সালফরিক এসিডের এ্যাফেক্ট কী :
অধিকাংশ তরল পদার্থ আমরা পাইন্ট, কোয়ার্ট, গ্যালন অথবা ব্যারেল হিসাবে পরিমাপ করি। আমরা সাধারণত মদের কোয়ার্ট, দুধের গ্যালন এবং গুড়ের ব্যারেলের কথা বলি। তেলের কথা আলোচনায় আমরা ব্যারেলের কথা বলি। তবে এমন তরল পদার্থও আছে যার পরিমাপ করি আমরা টনে। এই তরল পদার্থ হচ্ছে সালফরিক এসিড। বিভিন্নভাবে আপনার দৈনন্দিন জীবনের সাথে এটি সম্পর্কিত এটা কেরোসিনও গ্যাসোলিন পরিশোধনে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং এটি না হলে আপনার গাড়ির চাকা অচল হয়ে যায়। যে বৈদ্যুতিক বাতি আপনার অফিস আলোকিত করে, ঘর আলোকিত করে, রাতে আপনাকে চলার পথ দেখায় এটি ছাড়া সেই বাতিও জ্বলবে না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে হস্তমুখাদি প্রক্ষালনের জন্য আপনি যে পানি নেবেন তাও নির্গত হবে লৌহ ও নিকেল টিউব দিয়ে এবং এই টিউব তৈরিতেও এটি অপরিহার্য। এটা আপনার বালতি তৈরিতেও হয় ব্যবহৃত। আপনার নিত্য ব্যবহার্য সাবান তৈরিতে এই এসিড ব্যবহার করা হয়। আপনার চুলের ব্রাশ, সেলুলয়েডের চিরুনি, আপনার রেজার প্রভৃতি এই এসিডের সাহায্য ছাড়া তৈরি করা যায় না।
আপনি আন্ডার অয়ারের উপর প্যান্ট পরে তাতে বোতাম লাগান, প্যান্ট ইস্ত্রী করেন। বোম ও ইস্ত্রী তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়। আপনার জুতা তৈরিতে এবং তা পালিশেও এই এসিড ব্যবহৃত হয়।
প্রাতভোজের কথায় আসুন। এই কাজে ব্যবহৃত বাসনকোসন এই এসিডের সাহায্য ছাড়া তৈরি হয় নি। চামচ, ছুরি, কাটা কোনো কিছুই তৈরি হতে পারে নি এটি ছাড়া।
আপনার জন্যে যে রুটি তৈরি হয়েছে সেই রুটির বেসিন তৈরিতেও এই সালফরিক এসিড ব্যবহৃত হয়েছে। আপনার কেক, সিরাপ প্রভৃতিও তৈরি হয়েছে এই এসিড ব্যবহারের মাধ্যমে।
সুতরাং আপনার দিনের প্রতিটি কাজে এই এসিডের প্রভাব অনস্বীকার্য। যেখানে যান না কেন, এর প্রভাব থেকে আপনি মুক্ত হতে পারবেন না। সাধারণ মানুষ এর খবর না রাখলেও মানব সভ্যতার জন্য এটি অপরিহার্য।
বিশ্বের তিনটি আকর্ষণীয় বস্তু :
বিশ্বের তিনটি আকর্ষণীয় বস্তু কী? সেক্স, সম্পদ ও ধর্ম। প্রথমটি দিয়ে আমরা জীবন সৃষ্টি করি, দ্বিতীয়টি জীবন রক্ষা এবং তৃতীয়টি দিয়ে অনাগত ভবিষ্যতে আমরা বেঁচে থাকতে চাই।
আমাদের সেক্স, আমাদের সম্পদ এবং আমাদের ধর্মের প্রতি আমরা আগ্রহী হই এবং এই আগ্রহ জন্মে আমাদের নিজেরদেরই স্বার্থে।
পেরু সম্পর্কে কোনো কিছু জানতে আমরা তেমন আগ্রহী নই। কিন্তু আমাদের ইচ্ছা শক্তি সম্পর্কে জানতে আমরা আগ্রহী। হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে আমাদের কৌতূহল থাকলেও তেমন আগ্রহ নেই। কিন্তু যে ধর্ম আমাদের জন্য অনাগত বিশ্বে শান্তি আনবে বলে আমাদের বিশ্বাস সে ধর্ম সম্পর্কে আমরা জানতে আগ্রহী।
একদা প্রয়াত লর্ড নর্থক্লিফকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মানুষ কিসে আগ্রহী। তিনি এক শব্দে উত্তর দিয়েছিলেন নিজেদের সম্পর্কে। নর্থক্লিফ ছিলেন গ্রেট বৃটেনের সবচাইতে ধনী সংবাদপত্র মালিক।
আপনি কী ধরনের লোক তা কি আপনি জানতে চান? এটা একটা আকর্ষণীয় বিষয়। আমরা আপনার সম্পর্কে আলোচনা করছি। আমাদের আলোচনা আপনার সামনে দর্পণ হিসাবে কাজ করবে। এই আলোচনা সম্পর্কে অধ্যাপক জেমস হার্ভে রবিনসনের ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়, আলোচনায় মন-ই প্রতিফলিত।
আমরা যখন সজাগ থাকি তখন চিন্তা করি। ঘুমের মধ্যেও চিন্তা করি এবং ঘুম থেকে জেগেও চিন্তা করি। আমাদের চিন্তাকালে বাস্তব কিছু এলে তাকে ভিত্তি করেই আমাদের চিন্তা আবর্তিত হয়। এটাই আমাদের চিন্তার বাস্তব পথ। আমরা আমাদের চিন্তাকে নিজস্ব গতিতে আবর্তিত হতে দিই। ফলে এতে আমাদের পছন্দ অপছন্দ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভয়-ভীতি, প্রেম-প্রীতি, ভালবাসা ও ঘৃণা সবকিছুই আবর্তিত হয়। আমরা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে ছাড়া আর কোনো বিষয়ে এত অধিক আগ্রহী নই। অহংবোধ বা স্বার্থপরতার চাইতে বড় কিছু আমাদের নেই। আমরা প্রয়োজনে নিজেদের স্বার্থ সত্যকেও পরিহার করে চলি।
গোপন কথা, অব্যক্ত কথা আমাদের চরিত্রে প্রতিফলিত। এসব কথা এসব বেদনার প্রভাব আমাদের চরিত্রের অনস্বীকার্য।
সুতরাং স্মরণ রাখবেন যে, নির্দিষ্ট সময়ের কর্ম ব্যস্ততার পর প্রতিটি মানুষ শুধুমাত্র নিজের সম্পর্কে ভাবে, চিন্তা করে। স্মরণ রাখবেন যে, ইটালি কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দেনা শোধ করল সে কথা ভাবার চাইতে কে ভালো পাঁচক সেই কথাটাই সাধারণ মানুষ ভাবে বেশি। দক্ষিণ আমেরিকার বিল্পবের চাইতে ধারহীন ব্লেডের প্রভাবই একজন সাধারণের ওপর বেশি। ভূমিকম্পে এশিয়ার পাঁচ লাখ লোক মরেছে একথা বললে, একজন মহিলা যত কষ্ট পাবে, নিজের দাঁতের ব্যথায় কষ্ট তার জন্যে তার চাইতে বেশি। ইতিহাসের দশজন খ্যাতনামা ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি যা বলবেন তা শোনার চাইতে নিজের সম্পর্কে আপনাকে কিছু শোনাতে সে অধিক আগ্রহী।
কীভাবে সদালাপী হওয়া যায় :
অধিকাংশ ব্যক্তি নিজেরা যে বিষয়ে আগ্রহী শুধু সে বিষয়ে বলে, তাই তারা সদালাপী হতে পারে না। এরূপ আলাপ শ্রোতাদের জন্যে হয় অনাকর্ষণীয় ক্লান্তিকর। শ্রোতার বিষয়, তার ব্যবসা তার গলফ খেলার পদ্ধতি তার সাফল্য অথবা কোনো মাতার সাথে আলোচনা কালে তার শিশুদের সম্পর্কে আলোচনা করুন, আলোচনা আকর্ষণীয় হবে। এই ধরণের আলোচনায় আপনি শ্রোতাকে আনন্দ দানে সক্ষম হবেন, ফলে আপনি একজন সদালাপী বলে পরিগণিত হবেন।
বক্তৃতা কোর্সের এক সমাপনী ভোজে ফিলাডেলফিয়ার মি. হ্যারল্ড ডুইট অত্যন্ত সাফল্যজনক একটি বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন। বক্তৃতায় তিনি উপস্থিত প্রতিটি ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন। তিনি কোর্স শুরু করার দিন থেকে সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়, কার সাথে কীভাবে দেখা হয়েছে, আলাপ হয়েছে তা ব্যক্ত করেন। ব্যক্ত করেন প্রতিটি কথা রসাল করে, প্রাঞ্জল ভাষায়। তিনি বলেন কার সাথে কখন কী বিষয়ে আলোচনা করেছেন, ফলে তাঁর বক্তৃতা হয় অত্যন্ত আকর্ষণীয়, সবাই এতে আনন্দ পায়, সন্তোষ লাভ করে। এই ধরনের বিষয় নিয়ে বক্তৃতা করলে কারো ব্যর্থ হবার কারণ ঘটে না! এটা অত্যন্ত আদর্শ নিয়ম। নিজের সম্পর্কে শোনার জন্যে প্রতিটি মানুষই আগ্রহী হয়। মি. ডুইট জানতেন, কীভাবে মানব চরিত্র মোচড়ানো যায়। তাই তিনি সেদিন উপস্থিত সকলের কথা বলে সাফল্য লাভ করেন।
যে-আদর্শ বিশ লাখ পাঠক আকর্ষণ করে :
কয়েক বছর আগে আমেরিকান ম্যাগাজিনের প্রচার সংখ্যা খুব বেড়েছিল। এতো বেড়েছিল যে, প্রকাশনা জগতে তা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এর গোপন রহস্য কী? এই রহস্য হচ্ছে প্রয়াত জন, এম, সিডাল এবং তাঁর আদর্শ। যখন আমার সাথে পরিচয় হয় তখন মি. সিডাল ছিলেন পত্রিকাটির”আকর্ষণীয় ব্যক্তি বিভাগের প্রধান। আমি তার জন্যে কতিপয় নিবন্ধ লিখি। একদিন তিনি আমার সাথে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন।
“জনগণ স্বার্থপর” তিনি বলেন, “তারা শুধুমাত্র তাদের সম্পর্কেই আগ্রহী। সরকার রেল রোডের মালিকানা নিবে কিনা সে সম্পর্কে তারা মোটেই আগ্রহী নয়, তারা আগ্রহী কীভাবে উচ্চ পদ পাওয়া যায়, বেশি টাকা রোজগার করা যায় এবং কীভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। আমি যদি পত্রিকাটির সম্পাদক হতাম, তিনি বলেন, “আমি তাদের বলতাম কীভাবে দাঁতের যত্ন নিতে হয়। কীভাবে স্নান করতে হয়, কীভাবে গ্রীষ্মে ঠাণ্ডা থাকতে হয়, কীভাবে বাড়ি করা যায়, কীভাবে স্মরণ করা যায়, কীভাবে ব্যাকরণের ভুল পরিহার করা যায় এবং এরূপ অন্যান্য বিষয়। মানুষ সব সময় মানবিক কাহিনী শুনতে আগ্রহী। সুতরাং আমি ধনী হওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে ধনীব্যক্তি বর্ণিত কাহিনী প্রকাশ করতাম, খ্যাতনামা ব্যাংকারেরা কীভাবে খ্যাতির শীর্ষে উঠেছেন সে সম্পর্কে আমি কাহিনী প্রকাশ করতাম।”
এর কিছুদিন পর সিডাল সম্পাদক নিযুক্ত হন। এই সময় ম্যাগাজিনটির প্রচার সংখ্যা ছিল সীমিত। সম্পাদক হয়ে মি. সিডাল তার বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এর ফলে কী হয়? এর ফল অকল্পনীয়। প্রচার সংখ্যা দু’শ হাজার, তিনশ’ হাজার, পাঁচলাখ হয়ে যায় দ্রুত তালে। এতে জনগণ তাদের মনের খোরাক লাভ করে। এক মাসের মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা হয় ১০ লাখ, পরে পনের লাখ এবং পরিশেষে বিশ লাখ। ওখানে এটি থেমে থাকে নি, বছরের পর বছর প্রচার সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। সিডাল পাঠকের স্বার্থের কথা বলতে পেরেছিলেন বলেই এরূপ হয়েছিল।
যে বক্তব্য সব সময় দৃষ্টি আকর্ষণ করে :
আপনার বক্তব্য শুনে শ্রোতারা ক্লান্তি অনুভব করতে পারে, কিন্তু আপনি যদি শ্রোতাদের সম্পর্কে বলেন তা হলে তারা কখনো ক্লান্তি অনুভব করবে না বরং আকর্ষণ অনুভব করবে। চায়ের টেবিল বা ডিনার টেবিলে বসে ব্যক্তিত্বের কথা বলে কী রূপ হয়। যদি বলা হয় মি. এক্স এই করেছেন, মিস ওয়াই ওই করেছেন, মিসেস জেড এই করেছেন তাহলে কেহই ক্লান্ত বোধ করবে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বহু স্কুলে ছাত্র সমাবেশে আমি বক্তৃতা করেছি। অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি, কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করলে ছাত্ররা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। কেহ কেহ নানাভাবে বিরক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু বক্তৃতা কালে আমি যখন গল্প বলি, গল্পচ্ছলে আমার বক্তব্য ব্যাখ্যা করি তখন সকলেই মনোযোগী হয়।
অভিজ্ঞতা থেকে আমি দেখেছি যে বক্তৃতা কেহ শুনতে চায় না, শুনতে চায় গল্প, মানুষের গল্প, এইভাবে গল্পের ছলে বক্তৃতা করা গেলে তা হয় আকর্ষণীয়, অর্থবহ।
সুতরাং আমি ক্লাসে বক্তৃতা কালে বলতাম, আমরা কেউ বক্তৃতা শুনাতে চাই না। বক্তৃতায় আমাদের কোনো উপকার হয় না। আমরা সকলেই আনন্দ পেতে চাই সুতরাং আমাদের সবার আনন্দ পেতে হবে। স্মরণ রাখবেন যে, গল্প হচ্ছে বিশ্বের একটি শ্রেষ্ঠ আনন্দ। সুতরাং যাক আমরা আমাদের পরিচিত দুজন লোকের গল্প বলি। আলোচনা করি কেন একজন সফল হল, আর জন হল ব্যর্থ। এর পরে শ্রোতারা আমরা কথা শুনতে বিশেষ আগ্রহী হল!
একবার বক্তৃতা কোর্সে একজন ছাত্র নিজের বিষয় এবং শ্রোতাদের জন্য বিষয় নির্বাচনে ভয়ঙ্কর অসুবিধা অনুভব করল। বিষয়টি তিনি তার দুজন সহপাঠীর সাথে আলোচনা করল। তাদের মধ্যে একজন ছিল ইঞ্জিনিয়ার? সে নিজের পোশাক পরিচ্ছদ সম্পর্কে এবং নিজের শিক্ষা সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন ছিল, নিজেকে সে নিজের বাস্তব অবস্থার চাইতে বড় বলে ভাবত, সুতরাং সে গোড়া থেকে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত ছিল না। সে কোনো কিছুতে সন্তুষ্ট হত না। পরে দেখা গেল যে, যে অবস্থায় তার উন্নতি লাভ করার প্রয়োজন ছিল সে অবস্থা বা পদমর্যাদাও সে পায় নি। অপর জন কিন্তু যে কোনো অবস্থায় সন্তুষ্ট থাকত।
চিন্তা করে বক্তা পথ খুঁজে পান। তার এ দু’জন সহপাঠীকে কেন্দ্র করে এবং পরবর্তীকালে প্রথম ব্যক্তির চাইতে অনেক বেশি উন্নতিলাভ করেন। পরে তিনি লক্ষপতি হন।
বক্তা কী বললেন আমরা কি এখানে তার একটা রূপরেখা মাত্র দিচ্ছি। বক্তা তার নিজস্ব ভাষা এবং মানসিক কাহিনী দিয়ে তা আকর্ষণীয় করে তুলবেন। এভাবে চেষ্টা করলে যে ব্যক্তি তিন মিনিট বক্তৃতা করতে সক্ষম নন, তিনি একঘণ্টাও বক্তৃতা করতে পারেন যদি বিষয়টি তিনি নিজে বোঝেন। একঘণ্টা বক্তৃতা করার পরও, ভাষা যদি প্রাঞ্জল হয়, আকর্ষণীয় হয়, সুললিত হয়, শিক্ষনীয় হয়, শ্রোতারা মনে করবেন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হয়ে গেল?
এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সবাই লাভবান হতে পারেন। মানবিক কাহিনী হলে সকল বক্তৃতাই হয় আকর্ষণীয়। এই ধরনের বক্তৃতা কখনো ব্যর্থ হয় না।
সংগ্রামে ব্যর্থতাও বিজয়ের কাহিনী সকলে পছন্দ করে। সুতরাং ব্যর্থতা ও বিজয়ের কাহিনী সম্পর্কে বক্তৃতা শ্রোতার মনে আকর্ষণ করতে পারে।
ব্যবসায়ের কোনো ব্যক্তি কীভাবে সংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছে তা বললে শ্রোতার দৃষ্টি আকৃষ্ট হবে। একদা এক ম্যাগাজিন সম্পাদক আমাকে বলেছিলেন, সকল ব্যক্তির জীবনের অজানা কাহিনী অত্যন্ত আনন্দদায়ক। সঠিকভাবে তা প্রকাশ করা গেলে তা শ্রোতার মন জয় করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাস্তব হোন : একবার এক বক্তৃতা শিক্ষা কোর্সের ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হন। তিনি তার প্রথম জীবন কাটিয়েছেন নৌবাহিনীতে। অতঃপর তিনি পড়াশোনা করে ডক্টরেট ডিগ্রী নিয়ে অধ্যাপক হন। অপর একজন ক্ষুদ্র দোকানি, রাস্তার পাশের চলন্ত গাড়িতে ছিল যার দোকন, তিনিও এই কোর্সে অংশ নেন। কোর্স চলাকালে দেখা যায় যে, দোকানি জ্ঞানী না হওয়া সত্ত্বেও তার বক্তৃতায় ডক্টরেট চাইতে অনেক বেশি মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। ডক্টর অত্যন্ত সুন্দর ভাষায় বক্তৃতা করেন। তাঁর বক্তৃতায় সংস্কৃতিবান মনের প্রতিফলন হয়, বক্তৃতায় যুক্তি থাকে। স্পষ্টতা থাকে। কিন্তু অশিক্ষিত দোকানির বক্তৃতার ভাষা সরল সুন্দর না হলেও তিনি যা বলেন তা উদাহরণ সহ বলেন, অর্থাৎ তার বক্তৃতা হয় বাস্তব। তাই দোকানির বক্তৃতা পণ্ডিতের বক্তৃতার চাইতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়। তাই দোকানি সহজে শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
আমি এই উদাহরণটা তুলে ধরছি এই জন্য যে, আকর্ষণীয় বক্তৃতা করার জন্য উচ্চতর শিক্ষার প্রয়োজন হয় না, তা বোঝানোর জন্য যে ব্যক্তির বক্তৃতার বাস্তব উদাহরণ থাকে তার বক্তৃতার ভাষা উন্নতমানের না হলেও আকর্ষণীয় হয়।
এই নীতি সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বিধায় আমরা এই ক্ষেত্রে কতিপয় ব্যাখ্যা উল্লেখ করছি। আমরা আশা করব আপনারা কখনো তা ভুলবেন না, বিস্মৃত হবেন না।
বালক কালে মার্টিন লুথার অত্যন্ত একগুয়ে ও অবাধ্য ছিলেন। তাঁর শিক্ষকেরা বারবার চেষ্টা করেও চাবুক দিয়ে তাঁকে সংশোধন করতে না পেরে নিজেরাই হতবুদ্ধি হয়ে পড়তেন?
এখানে ব্যবহৃত ‘একগুয়ে ও অবাধ্য’ কারো দৃষ্টি তেমন আকর্ষণ করে না তবে বেত্রদণ্ড বা প্রহার শব্দ শুনলে সবাই একটু চঞ্চল হয়।
জীবনী লেখার পুরাতন পদ্ধতি এবং নতুন পদ্ধতি এক নয়। পুরাতন পদ্ধতির লেখক লেখেন, জন ডোর জন্ম হয় গরিব কিন্তু সৎ পরিবারে। নতুন পদ্ধতির লেখকের ভাষা হয়, জন ডোর পিতা পুত্রকে নরম জুতো কিনে দিতে পারেন না বিধায় শীতকালে পা গরম রাখার জন্যে তিনি ছালা দিয়ে জুতা মোড়ান, দারিদ্র্য সত্ত্বেও তিনি কিন্তু দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রি করেন না। ইহা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তার পিতামাতা ‘গরিব কিন্তু সৎ।‘ তা নয় কি? দ্বিতীয় পদ্ধতি কি প্রথম পদ্ধতির চাইতে বেশি আকর্ষণীয় নয়?
আধুনিক জীবনীকারদের এই পদ্ধতি আধুনিক বক্তারাও অনুসরণ করতে পারেন।
আরো ব্যাখ্যা দিচ্ছি। মনে করুন, আপনি বলতে চান যে নায়াগ্রায় প্রতিদিন যে সম্পদ নষ্ট হয় তা আতঙ্ক জনক। অতঃপর আপনি বলেন, এই সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগানো গেলে অনেক লোকের উপকার হত দেশের কল্যাণ হত, এই ধরনের বক্তব্য কি শ্রোতার আগ্রহ সৃষ্টি করে এবং আকর্ষণীয় হয়? না, না ‘ডেইলী সায়েন্স নিউজ বুলেটিনে এডুইন এস, সোলোমেন যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন তা কি অধিক আকর্ষণীয় নয়? সোলোমেন লিখেছেন :
আমাদিগকে বলা হয়েছে যে, এই দেশে লাখ-লাখ লোক দারিদ্র পীড়িত এবং অপুষ্টিতে ভুগছে, একই সময় প্রতিঘণ্টায় নায়াগ্রায় আড়াই লাখ করে রুটি নষ্ট হচ্ছে, মনশ্চক্ষে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, প্রতি ঘন্টায় উঁচু গিরিচূড়ায় ছয় লাখ ডিম পড়ছে এবং ঘূর্ণিস্রোত তা দিয়ে বিরাটকায় ওমলেট তৈরি করছে। এই ঘূর্ণিস্রোত যে কোনো সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম, সুতরাং জলপ্রপাতের এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের কল্যাণ সাধনের চেষ্টা করা প্রয়োজন।
ছবি সৃষ্টিকারী শব্দ :
যে শব্দ বললে চোখের সামনে ভেসে ওঠে ছবি তা স্মরণ রাখা সহজতর। সাধারণ বক্তারা তা জানেন না, যে বক্তা শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে শ্রোতার চোখের সামনে ছবি সৃষ্টি করতে পারবেন সে বক্তার বক্তব্য সহজে মনে থাকবে।
ছবি, ছবি, ছবি। এমনভাবে কথা বলুন যাতে শ্রোতা আপনার কথাকে ছবির সাথে মেলাতে পারে। তাতে আপনার বক্তব্য হবে আকর্ষণীয়, সহজ এবং তা মনে রাখা যাবে অত্যন্ত সহজে।
এই ক্ষেত্রে নায়াগ্রা সম্পর্কে ডেইলি সায়ন্স নিউজ বুলেটিন থেকে উদাহরণ দিচ্ছি। নায়াগ্রার উঁচু গিরিচূড়ায় প্রতি ঘণ্টায় পতিত ৬ লাখ ডিম ঘূর্ণিস্রোতে বিশালাকার ওমলেট তৈরি করছে। এটা বললে সবার চোখের সামনেই একটা ছবি ভেসে ওঠে।
ফলে এর প্রতি সকলের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। যেন –এটি একটি ঘূর্ণীয়মান ছবি।
‘স্টাইলের দর্শন’ শীর্ষক এক নিবন্ধে হারবার্ট স্পেনসার লিখেছেন :
“আমরা চিন্তা করি না,“ বলেছেন তিনি, “সাধারণ ভাবে, কিন্তু চিন্তা করি বিশেষ বা নির্দিষ্ট বিষয়ে।”
“যে জাতি যত বর্বর সে জাতির দণ্ডবিধি তত বেশি কঠোর।”
এটাকে আমরা এভাবে সাজাতে পারি, বর্বর জাতি অপরাধের সাজা দেন ফাঁসি দিয়ে, পুড়িয়ে মেরে।
বাইবেলে এবং শেক্সপিয়ারের লেখায় ছবি সৃষ্টিকারী শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। শেক্সপিয়ার তাই শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে অদৃশ্যকে দৃষ্টি গোচর করেছেন।
গিলটি করা স্বর্ণকে তিনি খাঁটি সোনা করেছেন। তিনি বলেছেন, চকচক করলেই সোনা হয় না।
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সে সব প্রবাদ বাক্য চলে আসছে তার কি প্রভাব নেই জন মনে? যেমন, হাতের একটি পাখি বনের দুটির চেয়ে মূল্যবান, সময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু, অসারের তর্জন গর্জনই সার, আগে তো ঘর তবে তো পর, আত্মবৎ মান্যতে জগৎ, অথবা সে রামও নাই, সে অযোধ্যা নাই। এসবের অবশ্যই স্থায়ী প্রভাব আছে।
লিংকন সাধারণত এসব প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করতেন। কোনো নথি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করে হোয়াইট হাউসে তার টেবিল এলে তিনি তাতে এসব প্রবাদ বাক্য প্রয়োগ করে নোট দিতেন, তাঁর ভাষা এরূপ জীবন্ত হত, ভাষা পাঠে চোখের সামনে ছবি ভেসে উঠত, তাই তা সব সময় স্মরণ থাকত। ”আমি যখন কোনো লোককে ঘোড়া কিনতে পাঠাই,“ তিনি বলেন, “আমি তখন জানতে চাই না ঘোড়াটির লেজে কয়টি চুল আছে। আমি একটি আস্ত ঘোড়াই চাই।”
বৈশাদৃশ্যের প্রতি আকর্ষণ :
মেকলে চার্লস -১এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। বৈসাদৃশ্য পূর্ণ দৃশ্য ছবি, বা শব্দ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই মেকলে তা ব্যবহার করেছেন।
মেকলে বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে সিংহাসনে আরোহণ কালে যে শপথ গ্রহণ করেছেন তা ভঙ্গ করার অভিযোগ আনলে আমাদের জানানো হয় যে, তিনি তাঁর বিবাহের শপথ রক্ষা করেছেন। জনগণের প্রতি অবজ্ঞা ও নিষ্ঠুরতার অভিযোগ আনলে আমাদের বলা হয় যে, তিনি তার শিশু সন্তানকে হাঁটুর ওপর রেখে চুমু দিচ্ছেন। জনগণের অধিকার লংঘনের অভিযোগ আনলে জানানো হয় যে, সকাল ৬টায় তিনি এসব অভিযোগ শ্রবণ করেন। তবে তাঁর সুন্দর চেহারা ও সুন্দর দাড়ির জন্যে অতঃপর আমরা ক্রুদ্ধ হতে পারি না।
সংক্রামকের প্রতি আকর্ষণ :
এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এমন সব দ্রব্যের কথা আলোচনা করেছি যার প্রতি শ্রোতাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। যে কেহ এসব উপদেশ অক্ষরে-অক্ষরে পালন করতে পারেন, তা হলেও কিন্তু সব সময় সফল হবেন না। মানুষের মন আকর্ষণ অত্যন্ত সূক্ষ ব্যাপার। এটা অনুভূতি নির্ভর। এটা যান্ত্রিক ইঞ্জিন চালনা নয়। এটার জন্যে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম বলা যায় না। আগ্রহ সৃষ্টি হলে তা স্মরণীয় হয়।
একদা বাল্টিমোরে আয়োজিত বক্তৃতা শেখার একটি ক্লাসে জনৈক ছাত্র একদিন হঠাৎ দাঁড়িয়ে চেপাসেক উপসাগরে রক মাছ ধরা বন্ধ করার দাবি জানান। তিনি বলেন যে, বর্তমান পদ্ধতিতে এই মাছ। ধরা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই মাছটি বিশ্বের বুক থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। এই উপসাগরের মাছ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না, আমি এটা জানতে আগ্রহীও ছিলাম না, কিন্তু আমার ছাত্রের বক্তব্য আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমি এবং অন্যান্য সকল শ্রোতা এই মাছটির বংশ রক্ষার জন্যে আগ্রহী হয়ে পড়ি এবং আমরা সম্মিলিত স্বাক্ষরে এটা রক্ষা করার দাবি পেশ করি কর্তৃপক্ষের। কাছে।
ইতালিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মি. রিচার্ড ওয়াশবর্ন চাইল্ডকে আমি একদা সাহিত্য ক্ষেত্রে তার সাফল্যের কারণ জিজ্ঞেস করি। প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, জীবন সম্পর্কে আমি এত বেশি উত্তেজিত যে আমি তা অন্যের কাছে প্রকাশ না করে পারি না। সুতরাং আমি জনগণের কাছে তা প্রকাশ করি। একজন বক্তাও সেরূপ হলে সাফল্য নিশ্চিত।
একদা এক বক্তৃতা শুনে খ্যাতনামা বৃটিশ ঔপন্যাসিক মি. ই এফ বেনসন বলেছিলেন, বক্তৃতার শেষ অংশ তাঁর কাছে অধিকতর আকর্ষণীয় হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বক্তা নিজেও শেষ অংশ সম্পর্কে বেশি আগ্রহী।
এটা সকলের স্মরণ রাখা প্রয়োজন।
সংক্ষিপ্ত সার :
১। সাধারণ বিষয়ের বিশেষ তথ্য সম্পর্কে আমরা আগ্রহী।
২। আমাদের প্রধান আগ্রহ আমাদের নিজেদের সম্পর্কে।
৩। যে ব্যক্তি অন্যদের সম্পর্কে কথা বলে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে পারেন তিনিই ভালো কথক।
৪। মানবিক কাহিনী সব সময় আকর্ষণীয় হয়। বক্তা সীমিত পয়েন্ট আলোচনা করবেন, তবে তাতে মানবিক কাহিনী যোগ করলে আকর্ষণীয় হবে।
৫। যা বলবেন সুস্পষ্ট ভাবে বলবেন, নির্দিষ্ট করে বলবেন। দরিদ্র কিন্তু সৎ না বলে ইতঃপূর্বে উল্লেখিত মার্টিন লুথারের কাহিনী স্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যা করুন।
৬। এমন শব্দ প্রয়োগ করুন যা শ্রোতার মনে ছবির সৃষ্টি করে।
৭। বৈসাদৃশ্যমূলক ধারণা তুলে ধরে কোন বিষয় প্রকাশের চেষ্টা করুন।
৮। বক্তা যার প্রতি আগ্রহী শ্রোতাও তার প্রতি আগ্রহী হবে। তবে এর জন্যে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম কানুন নেই।