১১. পরিচ্ছেদ

পরিচ্ছেদ

আল্লাহ্ তা’আলা যেসব উদ্দেশ্যে ফেরেশতাগণকে সৃষ্টি করেছেন সেদিক থেকে ফেরেশতাগণ। কয়েক ভাগে বিভক্ত। তন্মধ্যে একদল হলেন আরশ বহনকারী। উপরে তাদের সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। আরেক দল হলেন কারাবীয়ুন ফেরেশতাগণ। আরশের চতুর্পার্শ্বে এঁদের অবস্থান। আরশ বহনকারীদের মত এরাও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী এবং নৈকট্যপ্ৰাপ্ত ফেরেশতা। যেমন আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ

অর্থাৎ— (ঈসা) মাসীহ আল্লাহর বান্দা হওয়াকে হেয় জ্ঞান করে না এবং ঘনিষ্ঠ ফেরেশতাগণও নয়। (৪ : ১৭২)

জিবরাঈল এবং মীকাঈল (আ.)-ও তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাদের সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন যে, তারা অনুপস্থিতিতে মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থীনা করে থাকেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন;

অর্থাৎ-এবং তারা মু’মিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব, যারা তাওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে তুমি

তাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।

হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তাদেরকে দাখিল কর স্থায়ী জান্নাতে, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাদেরকে দিয়েছ এবং তাদের পিতা-মাতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করেছে তাদেরকেও। তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। এবং তুমি তাদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা কর, সেদিন তুমি যাকে শান্তি হতে রক্ষা করবে, তাকে তো অনুগ্রহই করবে। এটাই তো মহা সাফল্য। (৪০ : ৭-৯)

আর তারা এমন পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী হওয়ার কারণে তাঁরা তাদেরকে ভালো-বাসেন, যারা এ গুণে গুণান্বিত। যেমন হাদীসে মহানবী (সা) বলেছেন :

ऊाव्ल-विप्नांश ७शान निशशा (sभ थ७) s१

ՖDO

অর্থাৎ- কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দু’আ করলে ফেরেশতারা বলেন, আমীন, আর তোমার জন্যও তাই হোক।

আরেক দল হলেন সাত আকাশে বসবাসকারী ফেরেশতা। তারা রাত-দিন ও সকাল-সন্ধ্যা অবিরাম ইবাদত করে আকাশসমূহকে আবাদ রাখেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন :

অর্থাৎ-তারা রাত-দিন তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তারা শৈথিল্য করে না। (२S 8 S०)

ফেরেশতাদের কেউ কেউ সর্বদা রুকু অবস্থায় আছেন, কেউ কেউ আছেন দণ্ডায়মান আর কেউ কেউ সিজদারত। আরেক দল আছেন যারা দলে দলে পালাক্রমে প্রত্যহ সত্তর হাজার বায়তুল মামুরে গমনাগমন করেন। একবার যারা আসেন তারা পুনরায় আর সেখানে एकान् न |

আরেক দল আছেন যাঁরা জান্নাতসমূহের দায়িত্বে রয়েছেন। জান্নাতীদের সম্মান প্রদর্শনের ব্যবস্থাপনা, তাতে বসবাসকারীদের এমন পোশাক-পরিচ্ছদ, বাসস্থান ও খাদ্য-পানীয় ইত্যাদির আয়োজন করাও তাদের দায়িত্ব যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান যা শুনেনি এবং কোন মানুষের হৃদয়ে যার কল্পনাও আসেনি। উল্লেখ্য যে, জান্নাতের দায়িত্বে নিযুক্ত ফেরেশতার নাম রিদওয়ান। বিভিন্ন হাদীসে এর স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

আবার কতিপয় ফেরেশতা জাহান্নামের দায়িত্বেও নিযুক্ত রয়েছেন। তারা হলেন যাবানিয়া। এঁদের মধ্যে উনিশজন হলেন নেতৃস্থানীয়। আর জাহান্নামের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতার নাম মালিক। জাহান্নামের দায়িত্বে নিযুক্ত ফেরেশতাদের তিনিই প্ৰধান। নিচের আয়াতগুলোতে তাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থাৎ-জাহান্নামীরা তার প্রহরীদেরকে বলবে, তোমাদের প্রতিপালকের নিকট প্রার্থীনা কর, যেন তিনি আমাদের থেকে একদিনের শান্তি লাঘব করে দেন। (৪০ : ৪৯)

অর্থাৎ—তারা চিৎকার করে বলবে, হে মালিক! তোমার প্রতিপালক আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন! সে বলবে, তোমরা তো এভাবেই থাকবে।

আল্লাহ বলবেন, আমি তো তোমাদের নিকট সত্য পৌঁছিয়েছিলাম, কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই ছিল সত্য-বিমুখ। (৪৩ : ৭৭-৭৮)

অর্থাৎ-তাতে নিয়োজিত আছে নির্মম হৃদয়, কঠোর স্বভাবের ফেরেশতাগণ, যারা অমান্য করে না। আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন তা এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তাই করে।

অর্থাৎ—তার তত্ত্বাবধানে আছে। উনিশজন প্রহরী। আমি ফেরেশতাদেরকে করেছি জাহান্নামের প্রহরী। কাফিরদের পরীক্ষা স্বরূপই আমি তাদের এ সংখ্যা উল্লেখ করেছি- যাতে কিতাবীদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে, বিশ্বাসীদের বিশ্বাস বর্ধিত হয় এবং বিশ্বাসীগণ ও কিতাবিগণ সন্দেহ পোষণ না করে। এর ফলে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলবে, আল্লাহ এ অভিনব উক্তি দ্বারা কী বুঝাতে চেয়েছেন? এভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ-নির্দেশ করেন। তোমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন। (8 3 oo-oS)

আবার এদেরই উপর আদম সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব অর্পিত। যেমন আল্লাহ ऊ’ज्ञाव्ला (ब्लन् १

# অর্থাৎ- তোমাদের মধ্যে যে কথা গোপন রাখে অথবা যে তা প্ৰকাশ করে, রাত্ৰিতে যে আত্মগোপন করে এবং দিবসে যে প্রকাশ্যে বিচরণ করে, তারা সমভাবে আল্লাহর গোচরে

রয়েছে।

মানুষের জন্য তার সম্মুখে ও পশ্চাতে একের পর এক প্রহরী থাকে, তারা আল্লাহর আদেশে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে। কোন সম্প্রদায়ের সম্পর্কে যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা! করেন। তবে তা রদ করবার কেউ নেই এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন অভিভাবক নেই। (SV) 3 So-SS)

ওয়ালিবী (র) হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, ৬/ ১৮:৫৩, ৬ এ @Lak এ আয়াতে ঐ… দ্বারা ফেরেশতাগণকে বুঝানো হয়েছে।

УVOS

ইকরিম (র) হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেন যে, ৬-৩, ৩১t a — · ধ। — অর্থ ফেরেশতাগণ তাকে তার সম্মুখে ও পশ্চাতে রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। পরে আল্লাহর সিদ্ধান্ত এসে পড়লে তারা সরে পড়েন।

মুজাহিদ (র) বলেন, প্রতি বান্দার জন্যে তার নিদ্রায় ও জাগরণে জিন, মানব ও হিংস্ৰ জন্তু থেকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন করে ফেরেশতা নিয়োজিত আছেন। কেউ তার ক্ষতি করতে আসলে ফেরেশতা বলেন, সরে যাও। তবে কোন ক্ষেত্রে আল্লাহর অনুমতি থাকলে তার সে ক্ষতি হয়েই যায়।

আবু উসামা (রা) বলেন, প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে এমন একজন ফেরেশতা আছেন যিনি তার হেফাজতের দায়িত্ব পালন করেন। অবশেষে তিনি তাকে তাকদীরের হাতে সোপর্দ করেন।

আবু মিজলায (রা) বলেন, এক ব্যক্তি আলী (রা)-এর নিকট এসে বলল, মুরাদ গোত্রের কিছু লোক আপনাকে হত্যা করার উদ্যোগ নিয়েছে। একথা শুনে তিনি বললেন, নিশ্চয় প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে দু’জন করে ফেরেশতা আছেন; যারা এমন বিষয় থেকে তাকে রক্ষণাবেক্ষণ করেন, যা তার তাকদীরে নেই। পরে যখন তাকদীর এসে যায়। তখন তারা তার তাকদীরের হাতেই তাকে ছেড়ে দেন। নির্ধারিত আয়ু হচ্ছে এক সুরক্ষিত ঢালস্বরূপ।

আরেক দল ফেরেশতা আছেন, যারা বান্দার আমল সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন, :

অর্থাৎ-দক্ষিণে ও বামে বসে তারা কর্ম লিপিবদ্ধ করে। মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর ফেরেশতা তার নিকটেই রয়েছে। (৫০ : ১৭-১৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, :

وَإِنَّ عَلَيْكُمْ لَحَافظين. كرامًا كاتبينَ يَعْلَمُونَ مَا تَفعَلُونَ. অর্থাৎ— অবশ্যই আছে তোমাদের জন্য তত্ত্বাবধায়কগণ, সম্মানিত লিপিকরবৃন্দ; তারা জানে তোমরা যা কর। (৮২ : ১০-১২)

আবু হাতিম রাষী (র) তাঁর তাফসীরে বর্ণনা করেন যে, মুজাহিদ (র) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : তোমরা সম্মানিত লিপিকরবৃন্দকে সম্মান কর, যারা গোসল করতে থাকা অবস্থায় ও পেশাব-পায়খানা জনিত নাপাকী অবস্থা এ দু’টি অবস্থায় ব্যতীত তোমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হন না। অতএব, তোমাদের কেউ যখন গোসল করে তখন যেন সে দেয়াল কিংবা উট দ্বারা আড়াল করে নেয় অথবা তার কোন ভাই তাকে আড়াল করে রাখে।

এ সূত্রে হাদীসটি মুরসাল। বাযযার তাঁর মুসনাদে জাফর ইব্‌ন সুলায়মান সূত্রে মুত্তাসাল পদ্ধতিতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

‘আলকামা মুজাহিদ সূত্রে ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : আল্লাহ তোমাদেরকে বিবন্ত্র হতে নিষেধ করেন। অতএব, তোমরা লজ্জা করে চল আল্লাহকে এবং তোমাদের সঙ্গের সেসব সম্মানিত লিপিকরদেরকে যারা

SVVS)

পেশাব-পায়খানা, জানান্বত ও গোসলের সময় এ তিন অবস্থা ব্যতীত কখনো তোমাদের থেকে পৃথক হন না। তাই তোমাদের কেউ খোলা মাঠে গোসল করলে সে যেন তার কাপড় কিংবা দেয়াল বা তার উট দ্বারা আড়াল করে নেয়।

ফেরেশতাগণকে সম্মান করার অর্থ হলো, তাদের ব্যাপারে লজ্জা করে চলা। অর্থাৎ তাদের দ্বারা মন্দ আমল লিপিবদ্ধ করাবে না। কেননা, আল্লাহ তা’আলা তাদের সৃষ্টিতে এবং চারিত্রিক গুণাবলীতে তাদেরকে সম্মানিত করেছেন।

সিহাহ, সুনান ও মাসানীদের বিভিন্ন গ্রন্থে তাঁদের মর্যাদা সম্পর্কে কিছু সংখ্যক সাহাবা কর্তৃক বর্ণিত বিশুদ্ধ হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ‘ফেরেশতাগণ সে ঘরে প্রবেশ করেন না যে ঘরে ছবি, কুকুর ও জুনুবী (গোসল ফরজ হয়েছে এমন ব্যক্তি) রয়েছে।

হযরত আলী (রা) থেকে আসিম (রা) বর্ণিত রিওয়ায়তে অতিরিক্ত শব্দ আছে এবং যে ঘরে প্রশ্ৰাব রয়েছে।

আবু সাঈদ (রা) থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত রাফি-এর এক বর্ণনায় আছে : যে গৃহে ছবি কিংবা মূর্তি আছে সে গৃহে ফেরেশতা প্রবেশ করেন না।

* আবু হুরায়রা (রা) থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত মুজাহিদের এক বর্ণনায় আছে : ফেরেশতাগণ

সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যে গৃহে কুকুর বা মূর্তি আছে।

যাকওয়ান আবু সালিহ সাম্মাক-এর বর্ণনায় আছে যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ফেরেশতাগণ সে দলের সঙ্গে থাকেন না, যাদের সাথে কুকুর বা ঘণ্টা থাকে। যুরােরা ইব্‌ন আওফার বর্ণনায় কেবল ঘণ্টার কথা উল্লেখিত হয়েছে।

বাষযার (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : নিশ্চয় আল্লাহর ফেরেশতাগণ আদমের সন্তানদেরকে চিনেন (আমার ধারণা তিনি বলেছেন) এবং তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কেও তারা জ্ঞাত। তাই কোন বান্দাকে আল্লাহর আনুগত্যের কোন কাজ করতে দেখলে তাকে নিয়ে তারা পরস্পর আলোচনা করেন এবং তার নাম-ধাম উল্লেখ করে বলেন, আজ রাতে অমুক ব্যক্তি সফল হয়েছে, আজ রাতে অমুক ব্যক্তি মুক্তি লাভ করেছে। পক্ষান্তরে কাউকে আল্লাহর অবাধ্যতামূলক কোন কাজ করতে দেখলে তারা তাকে নিয়ে পরস্পরে আলোচনা করেন এবং তার নাম-ধাম উল্লেখ করে বলেন, অমুক ব্যক্তি আজ রাতে

ধ্বংস হয়েছে।

এ বর্ণনাটিতে একজন দুর্বল রাবী রয়েছেন। ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ‘ফেরেশতাগণ পালাক্রমে আগমন করে থাকেন। একদল আসেন রাতে, একদল আসেন দিনে এবং ফজর ও আসর নামাযে দুইদল একত্রিত হন। তারপর যারা তোমাদের মধ্যে রাত যাপন করলেন, তারা আল্লাহর নিকট চলে যান। তখন আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন— অথচ তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেনআমার বান্দাদেরকে তোমরা কী অবস্থায় রেখে এসেছ? জবাবে তারা বলেন, তাদেরকে রেখে এসেছি সালাতরত অবস্থায় আর তাদের নিকট যখন গিয়েছিলাম তখনও তারা সালাতরত অবস্থায় ছিল।

SV8

এ বর্ণনার শব্দমালা ঠিক এভাবেই ‘সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়ে ইমাম বুখারী (র) এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী ও মুসলিম (র) তাদের সহীহ গ্ৰন্থদ্বয়ে ‘সূচনা’ ভিন্ন অন্য সূত্রেও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

বাযযার বর্ণনা করেন যে, আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ‘সংরক্ষণকারী ফেরেশতাদ্বয় দৈনিকের সংরক্ষিত আমলনামা আল্লাহর দরবারে নিয়ে যাওয়ার পর তার শুরুতে ও শেষে ইসতিগফার (ক্ষমা প্রার্থীনা) দেখতে পেয়ে তিনি বলেন, : লিপির দুই প্রান্তের মধ্যখানে যা আছে আমার বান্দার জন্য আমি তা ক্ষমা করে দিলাম।

বাযযার বলেন, তাম্মাম ইব্‌ন নাজীহ এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর তার হাদীস সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসবেত্তার সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও তাঁর বর্ণিত হাদীস মোটামুটি গ্রহণযোগ্য।

মোটকথা, প্রত্যেক মানুষের জন্য দু’জন করে হেফাজতেয় ফেরেশতা আছেন। একজন তার সম্মুখ থেকে ও একজন তার পেছন থেকে আল্লাহর আদেশে তাকে হেফাজত করে থাকেন। আবার প্রত্যেকের সংগে দু’জন করে লিপিকর ফেরেশতা আছেন। একজন ডানে ও একজন বামে। ডানের জন্য বামের জনের উপর কর্তৃত্ব করে না।

এ আয়াতের (৫০ : ১৮) ব্যাখ্যায় আমরা এ বিষয়টি আলোচনা করেছি। ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ

ما منكم من أحد الا وقد وكل به قرينه من الجن وقرينه من الملائكة . অর্থাৎ— তােমাদের প্রত্যেকের জন্যই একজন করে জিন সহচর ও ফেরেশতা সহচর দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন।

একথা শুনে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আর আপনারও? বললেন :

وایای ولکن الله اعانانی علیه فلا یا مرنی الا بخیر .

অর্থাৎ—’হ্যা আমারও। কিন্তু আল্লাহ তার উপর আমাকে সাহায্য করেছেন। ফলে সে আমাকে মঙ্গল ছাড়া অন্য কিছুর আদেশ করে না। (মুসলিম শরীফ)

এ ফেরেশতা সহচর এবং মানুষের সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত সহচর অভিন্ন না হওয়া বিচিত্র নয়। আলোচ্য হাদীসে সে সহচরের কথা বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আল্লাহর আদেশে কল্যাণ ও হেদায়েতের পথে পরিচালিত করার জন্য তিনি নিযুক্ত। যেমন শয়তান সহচর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ধ্বংস ও বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় নিয়োজিত। এতে সে চেষ্টার ক্ৰটি করে না। আল্লাহ যাকে রক্ষা করেন, সে-ই রক্ষা পায়। আল্লাহরই সাহায্য কাম্য।

ইমাম বুখারী (র) আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

ধারাবাহিক তালিকা লিপিবদ্ধ করেন, তারপর ইমাম মিম্বরে বসে গেলে তারা লিপিসমূহ গুটিয়ে এসে খুতবা শুনতে থাকেন।

ՖՓ(ի

সহীহ বুখারী ও মুসলিমে হাদীসটি অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন :

অর্থাৎ—এবং ফজরের সালাত কায়েম করবে। ফজরের সালাত বিশেষভাবে পরিলক্ষিত

श। (S१ ६ abr)

কেননা, দিনের ও রাতের ফেরেশতাগণ তা লক্ষ্য করে থাকেন। ইব্‌ন মাসউদ (রা) ও আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) وَقُرُ أن الفجر النّ .1654… …< ১ %। ৬ics এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন : ‘ফজরের সালাত রাতের ফেরেশতাগণ ও দিনের ফেরেশতাগণ (একত্রে) প্রত্যক্ষ করে থাকেন।’

তিরমিয়ী, নাসাঈ ও ইব্‌ন মাজাহ (র) ও আসবাতের থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিরমিয়ী হাদীসটি হাসান সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। আমার মতে, হাদীসটি মুনকাতি পর্যায়ের। ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)

বলেছেন :

فصل صلاة الجمع على صلاة الواحد خمس وعشرون درجة ويجتمع

ملائكة الليل و ملائكة النهار فى صلاة الفجر . অর্থাৎ-’একাকী সালাতের চাইতে জামাতের সালাতের ফযীলত পচিশ গুণ বেশি এবং রাতের ফেরেশতাগণ ও দিনের ফেরেশতাগণ ফজরের সালাতে একত্রিত হয়ে থাকেন।’

м у І (. . . . . / আবু হুরায়রা (রা) বলেন, তােমাদের ইচ্ছে হলে ৯ %1161.57 60 * y%i_346 [64….. … ওঁর্ব আয়াতটি পাঠ করতে পার। ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

إذا دعا الرجل إمرأته الى فراشه فأبت فبات غضبان لعنتها الملائكة

・こす一今一 ܥܒܢ̈ܐ অর্থাৎ-’কেউ তার স্ত্রীকে তার শয্যায় আহবান করার পর যদি সে তা প্ৰত্যাখ্যান করে আর

স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত কাটায় তাহলে ভোর পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাকে অভিশাপ দিতে থাকেন।’

শু’বা, আবু হামযা, আবু দাউদ এবং আবু মু’আবিয়াও আমাশা (র) থেকে এর পরিপূরক হাদীস বর্ণনা করেছেন।

সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : إذا أمن الإمام فأمنوا فإن من وافيق تأمينه تأمين الملائكة غفر له ما

SVO

অর্থাৎ—’যখন ইমাম আমীন বলবে তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা, ফেরেশতাদের আমীন বলার সঙ্গে যার আমীন বলা একযোগে হয়; তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া श्श।’

সহীহ বুখারীতে ইসমাঈল (র) সূত্রে বর্ণিত হাদীসটির পাঠ হলো : إذا قال الإمام أمين فإن الملائكة

অর্থাৎ-ইমাম যখন আমীন বলেন তখন আকাশে ফেরেশতারাও আমীন বলে। অতএব,

ফেরেশতাদের আমীন বলার সঙ্গে যার আমীন বলা যোগ হয়; তার পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।

ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : إذا قال

– | SRPSG RTS SQ ফেরেশতাদের কথার সঙ্গে মিলে যাবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

ইব্‌ন মাজাহ (র) ব্যতীত হাদীসের মশহুর ছয় কিতাবের সংকলকগণের অন্য সকলে ইমাম মালিকের সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

* আবু হুরায়রা (রা) কিংবা আবু সাঈদ (রা) সূত্রে (সন্দেহটি রাবী আমাশ-এর) ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : লিপিকর ফেরেশতাদের অতিরিক্ত আল্লাহর কিছু ফেরেশতা আছেন যারা পৃথিবীময় ঘুরে বেড়ান। তারপর কোন জনগোষ্ঠীকে আল্লাহর যিকাররত অবস্থায় পেলে তাঁরা একে অপরকে ডেকে বলেন, এসো এখানেই তোমাদের বাঞ্ছিত বস্তু রয়েছে। তারপর তারা নিম্ন আকাশে চলে গেলে আল্লাহ তা’আলা জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদেরকে তোমরা কী কাজে রত। রেখে এসেছে? জবাবে তারা বলেন, তাদেরকে আমরা আপনার প্রশংসা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা এবং যিকাররত রেখে এসেছি। আল্লাহ বলেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? ফেরেশতাগণ বলেন, না। আল্লাহ বলেন, আমাকে তারা দেখলে কেমন হতো? জবাবে তারা বলেন, : তারা যদি আপনাকে দেখত; তাহলে তারা আপনার প্রশংসা জ্ঞাপন, সাহায্য প্রার্থীনা ও যিকর করায় আরো বেশি তৎপর হতো। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আল্লাহ বলেন, তারা কী চায়? ফেরেশতাগণ বলেন, : তারা জান্নাত চায়।

আল্লাহ বলেন, তা কি তারা দেখেছে? ফেরেশতাগণ বলেন, জী না. আল্লাহ বলেন, তা যদি তারা দেখত তাহলে কেমন হতো? তুল্লাবে ফেরেশতারা বলেন, : যদি তারা তা দেখত তাহলে জান্নাত কামনায় ও তার অন্বেষণে তারা আরো বেশি তৎপর হতো। তারপর আল্লাহ

বলবেন, তারা কোন বস্তু থেকে আশ্রয় চায়? ফেরেশতারা বলেন, : জাহান্নাম থেকে।

SVDԳ

আল্লাহ বলেন, তা কি তারা দেখেছে? ফেরেশতাগণ বলেন, : জী না। আল্লাহ বলেন, তা দেখলে কেমন হতো? জবাবে তাঁরা বুলেন : দেখলে তাঁরা তা থেকে আরো অধিক পলায়নপর এবং আরো অধিক সন্ত্রস্ত হতো। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আল্লাহ বলেন, তোমাদেরকে আমি সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তখন ফেরেশতারা বলেন, তাদের মধ্যে তো অমুক গুনাহগার ব্যক্তি আছে, যে এ উদ্দেশ্যে তাদের নিকট আসেনি, সে এসেছিল নিজের কোন প্রয়োজনে। জবাবে আল্লাহ বলেন, ওরা এমনই এক সম্প্রদায়, তাদের কাছে যেই বসে, সে বঞ্চিত হয় না। বুখারী, মুসলিম, আহমদ (র) (ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে)।

ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

অর্থাৎ—‘কেউ কোন মু’মিনের দুনিয়ার একটি সংকট দূর করে দিলে, আল্লাহ তার কিয়ামতের দিনের একটি সংকট দূর করে দেবেন। কেউ কোন মুসলমানের দোষ গোপন রাখলে আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সাহায্যার্থে তৎপর থাকে, আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাহায্য করতে থাকেন। কেউ ইলাম অন্বেষণের উদ্দেশ্যে পথ চললে তার উসিলায় আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সুগম করে দেন। কোন জনগোষ্ঠী যদি আল্লাহর কোন ঘরে বসে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে ও পরস্পরে তার দারস। দান করে, তাহলে তাদের উপর প্রশান্তি নেমে আসে, রহমত তাদেরকে আচ্ছাদিত করে নেয়। ফেরেশতাগণ তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখেন এবং আল্লাহ তার নিকটস্থ ফেরেশতাদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন। আর আমলে যে পিছিয়ে থাকবে; বংশের পরিচয় তাকে এগিয়ে নিতে পারবে না।’ মুসলিম (র) এ হাদীসটি রিওয়ায়ত করেছেন।

ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) ও আবু সাঈদ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

عليهم السكينة وذكرهم الله فيمن عنده .  (১ম খণ্ড) ১৮

ՖVՓԵր

অর্থাৎ- কোথাও একদল লোক একত্রিত হয়ে আল্লাহর যিকর করলে ফেরেশতাগণ তাদেরকে বেষ্টন করে নেন, রহমত তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হয় এবং আল্লাহ তার নিকটে যারা আছেন তাদের সাথে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন।

মুসলিম, তিরমিয়ী, ইব্‌ন মাজাহ (র) ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিয়ী (র) হাদীসটি হাসান সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। এ মর্মে আরো বহু হাদীস রয়েছে।

মুসনাদে ইমাম আহমদ ও সুনানের গ্রন্থ চতুষ্টয়ে আবুদদারদা (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

وإن الملائكة لتضع أجنحتها لطالب العلم رضا بما يصنع . অর্থাৎ—’ইলাম অন্বেষণকারীর কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশের জন্য ফেরেশতাগণ তাদের ডানা বিছিয়ে দেন।’ অর্থাৎ তারা তাদের প্রতি বিনয় প্ৰকাশ করেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন : و اخفض لهما جناح الذل من الرحمة . ‘মমতাবশে তাদের (পিতা-মাতার) জন্য নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করবে।’ (১৭ : ২৪)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, : w

و اخفض جَنَاحَك لمن اتبعك من المُؤمنين. যােৱা তােমার অনুসরণ করে সেসব মুমিনদের প্রতি তুমি বিনয়ী হও ‘ (SV 3 &SC) ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, ইব্‌ন মাসউদ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

ان لله ملنکة سیاحین فی الارض لیبلغونی عن آمتی السلام . অর্থাৎ— ‘আল্লাহর এমন কিছু ফেরেশতা আছেন যারা আমার নিকট আমার উম্মতের সালাম পৌছানোর জন্য পৃথিবীময় ঘুরে বেড়ান।’ ইমাম নাসাঈ (র) হাদীসটি ভিন্ন সূত্রে বর্ণনা <6द6छन्म।

ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : خلقت الملائكة من نور و خلق الجان من مارج من نار و خلق آدم مما و صف لکم . ‘ফেরেশতাগণকে সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে, জিন জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে ধোঁয়াবিহীন আগুন থেকে আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে তা দ্বারা যা তােমাদেরকে বলা হয়েছে।’ ইমাম মুসলিম (র) ও ভিন্ন সূত্ৰে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

বলা বাহুল্য যে, ফেরেশতাগণের আলোচনা সম্পর্কিত বিপুল সংখ্যক হাদীস রয়েছে।

এখানে আমরা ঠিক ততটুকু উল্লেখ করলাম, যতটুকুর আল্লাহ তাওফীক দান করেছেন। প্রশংসা সব তারই প্ৰাপ্য।

মানব জাতির উপর ফেরেশতাগণের শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে আলিমগণের মতভেদ রয়েছে। কালাম শাস্ত্রের বিভিন্ন কিতাবেই এ মাস আলাটি বেশি পাওয়া যায়। এ মাস আলায় মতবিরোধ

হলো, মুতাযিলা ও তাদের সমমনা লোকদের সঙ্গে।

এ ব্যাপারে সর্বপ্রাচীন আলোচনা হাফিজ ইব্‌ন আসাকির-এর ইতিহাস গ্রন্থে আমি লক্ষ্য করেছি। তিনি উমায়্যা ইব্‌ন আমর ইব্‌ন সাঈদ ইব্‌ন আস-এর জীবনীতে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি একদিন উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র)-এর কোন এক মজলিসে উপস্থিত হন। তার নিকট তখন একদল লোক উপস্থিত ছিল। কথা প্রসঙ্গে খলীফা উমর (রা) বললেন, সচ্চরিত্র আদিম সন্তান অপেক্ষা আল্লাহর নিকট সম্মানিত আর কেউ নেই এবং নিচের আয়াতটি দ্বারা তিনি

প্ৰমাণ পেশ করেন :

অর্থাৎ— যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। (৯৮ : ৭) উমায়্যা ইব্‌ন আমর ইব্‌ন সাঈদ (র) তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। শুনে ইরাক ইবন

উভয় জগতের সেবক এবং আল্লাহর নবীগণের নিকট প্রেরিত তার দূত। নিচের আয়াতটি দ্বারা তিনি এর দলীল প্ৰদান করেন : অর্থাৎ- পাছে তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাও কিংবা তোমরা স্থায়ী হও এ জন্যই তোমাদের প্রতিপালক এ বৃক্ষ সম্বন্ধে তোমাদেরকে নিষেধ করেছেন। (৭ : ২০)

তখন উমর ইব্‌ন আবদুল আখীয (র) মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব কুরায়ীকে বললেন, হে আবু হামযা! আপনি এ ব্যাপারে কী বলেন? জবাবে তিনি বললেন, : আল্লাহ আদম (আ)-কে সম্মানিত করেছেন। তাঁকে তিনি নিজ কুদরতী হাতে সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে রূহ সঞ্চার করেছেন, তার সামনে ফেরেশতাদেরকে সিজদাবনত করিয়েছেন এবং তার সন্তানদের থেকে নবী-রাসূল বানিয়েছেন এবং যাদের কাছে ফেরেশতাগণ সাক্ষাৎ মানসে উপস্থিত হন।

Σ8ο

মোটকথা, আবু হামযা (র) মূল বিষয়ে উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র)-এর সঙ্গে একমত হয়ে ভিন্ন দলীল পেশ করেন এবং আয়াত দ্বারা তিনি যে দলীল পেশ করেছেন তাকে দুর্বল আখ্যা দেন। তাহলো : . إن الذين آلمان و وعينوالضالكابت

এ আয়াতের মর্ম হলো, ঈমান ও সৎকর্ম শুধু মানুষেরই বৈশিষ্ট্য নয়। কারণ, আল্লাহ তা’আলা – 557.346 বলে ফেরেশতাগণকেও ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। তদুপজিন

জাতিও ঈমানের গুণে গুণান্বিত। যেমন তারা বলেছিল : .

অর্থাৎ-আমরা যখন পথ-নির্দেশক বাণী শুনলাম, তাতে ঈমান আনলাম। (৭২ : ১৩) .639-2i & 61% অর্থাৎ আমাদের কতক মুসলিম। (৭২ : ১৪)

আমার মতে, আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রা) থেকে উসমান ইব্‌ন সাঈদ দারেমী (র) কর্তৃক বর্ণিত মারফু হাদীসটি এ মাসআলার সর্বাপেক্ষা উত্তম দলীল এবং হাদীসটি সহীহও বটে। তাহলো রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : আল্লাহ তা’আলা জান্নাত সৃষ্টি করার পর ফেরেশতাগণ বললেন, : হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্যও এমনটি বানিয়ে দিন, তা থেকে আমরা পানাহার করব। কারণ, আদম সন্তানের জন্য আপনি দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন। জবাবে আল্লাহ তা’আলা বললেন, : আমি যাকে আমার নিজ কুদরতী হাতে সৃষ্টি করেছি। তার পুণ্যবান

সন্তানদেরকে কিছুতেই ওদের ন্যায় করব না, যাকে বলেছি, ‘হও আর সে হয়ে গেছে।’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *