১০. দুপুরের রোদ

দুপুরের রোদ সরে গেছে।

শীতের বিকেল বড্ড দ্রুত এসে যায়। বেলা তিনটে মোটে বাজে, এর মধ্যেই গাছের ছায়া হয়েছে দীর্ঘ, রোদ গিয়েছে নিভে। বৈকালিক চায়ের যোগাড়ে ব্যস্ত রয়েছেন জরীর মা। হাতে সময় খুব অল্প, সন্ধ্যা সাতটার আগেই বরযাত্রী এসে যাবে। তারা খবর পাঠিয়েছে, নটার মধ্যেই যেন সব শেষ করে কনে বিদায় দিয়ে দেওয়া হয়।

রান্নাবান্না হয়ে গিয়েছে। ছাদে টেবিল-চেয়ার সাজোনও শেষ। এক শ বরযাত্রীকে এক বৈঠকেই খাইয়ে দেবার ব্যবস্থা হয়েছে। বাড়ির সামনে ডেকোরেটররা চমৎকার গোট বানিয়েছে। সন্ধ্যার পরপরই ইলেকট্রিক বাল্বের আলোয় সেই গেট ঝলমল করবে।

জরীর বাবার অফিস সুপারিনটেনডেন্ট কি মনে করে যেন দুপুরবেলাতে এসে পড়েছেন। জরীর বাবা সারাক্ষণ তীর সঙ্গেই আছেন। জরীর মার হাতে যদিও কোনো কাজ নেই। তবু তিনি মুহূর্তের জন্যেও ফুরসত পাচ্ছেন না। আজ তাঁর গোসলও কর হয় নি, দুপুরের খাওয়াও হয় নি। সারাক্ষণই ব্যস্ত হয়ে ঘুরঘুর করছেন।

এখন তাঁর প্রচণ্ড মাথা ধরেছে। তবু এই মাথাধরা নিয়েই বিরাট এক কেৎলি চা বানিয়ে নিয়ে এসেছেন।

পাড়ার মেয়ে এবং জরীর বন্ধুরা জরীকে ঘিরে বসেছিল। চা আসতেই অকারণ একটা ব্যস্ততা শুরু হল। কনক বলল, জীরী, তুই চা খাবি এক কাপ?

না, আমার শরীর খারাপ লাগছে।

খা না এক ঢোক।

চায়ে প্রচুর চিনি ও এলাচ দেয়ায় পায়েসের মতো গন্ধ। তবু চমৎকার লাগছে। খেতে জরীর মা বললেন, চপ আনতে বলেছি। যে কয়টা পার খেয়ে নাও সবাই–রাতে খেতে দেরি হবে। আবার একটা হুল্লোড় উঠল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *