সপ্তাহখানেকের মধ্যেই প্রায় পাইকারি হারে অনেকের জমিই নীলামে ডাকা হল। যাদের মনে কিছুটা বা সংশয় ছিল নির্মমভাবে ঘটনার মধ্যে দিয়ে নিঃসংশয় হল তারা। আজ গত কয়েকবছর ধরে এ ব্যাপারটা তেমন অভিনব বা নতুন ছিল না। কিন্তু এবার সংখ্যাধিক্যে গোটা চাকলাটাতেই হাহাকার উঠল।
চাষযোগ্য জমি চাষীদের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়ে অনেকখানি মুষ্টিমেয় মহাজনের হাতে গিয়ে পড়ল। মহাজনেরা আবার সে সমস্ত জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য লোকের খোঁজ শুরু করল।
ঠিক এ-সময়েই সাংঘাতিক রোগ দেখা দিল ঘরে ঘরে। অবস্থাপন্ন লোকের ঘরেও বাদ গেল। তাদের ঘরে ফরাসডাঙা থেকে গোরা ডাক্তার সাহেব এল চিকিৎসা করতে। সময় অর্থে, সে রোগ এল আর গেল না। হাওয়ায় ভর করে চলার পথে যেন সে ডাইনি হঠাৎ হাঁটু ভেঙে বসে পড়ল এখানে। কেউ কেউ বলল, মা শীতলাকে তারা আকাশ পথে ঘোড়ায় চড়ে যেতে দেখেছে। কেউ বা বলল, গত সনে ওলাই ঠাকুরানীর সেবায় অনাচার হয়েছে। রোগ ছড়িয়ে পড়তে লাগল পাড়া থেকে পাড়ায়, গাঁয়ে থেকে গাঁয়ে এক দুরন্ত ঝড়ের বেগে সে তার দুই পক্ষ বিস্তার করে মইয়ে বেড়াতে লাগল সারা পরগনায়। …এক রোগ কাটে তো, অন্য রোগ এসে হাজির হয়। মহামারী, তার নানান রূপে এসে আলিঙ্গন করতে লাগল মানুষ ও জানোয়ারকে।
নানান আলোচনা, নানান সমস্যা। কার পাপে এ মারীলীলার খেলা চলেছে? রাজার না প্রজার, রক্ষকের না রক্ষিতের? এ-সমস্যার কোনও সমাধান নেই। … সবাই এক দারুণ ভয়ে ও সন্দেহে। আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবল, না জানি কোন্ কোপে মহামারী নব ভেঁড়েমুশে সাবড়ে নেবে! এবং পরস্পরের প্রতি পরস্পরের দোষারোপেও শেষ রইল না। …চলল দেবীপূজা ও আরাধনার ধুম।
আইনউদ্দীন হেকিম সাহেব গাদা গাদা সুজি খাওয়ালেন দাওয়াই মিশিয়ে, কবিরাজ বটিকা দিলেন সর্বরোগনাশক। হুগলি ব্যারাক ও ফরাসডাঙার সাহেব ডাক্তারের নির্দেশমতো বড়লোক ভদ্রলোকেরা কাঁটাতারের বেড়া না হলেও তার চেয়েও কঠিন হুকুমের বেড়া দিয়ে ছোটলোক পাড়াঘরগুলোকে ব্যারাক বেঁধে অবরোধ সৃষ্টি করলে। কারণ রোগটা ছোঁয়াচে ও শ্রেণী-অচেতন।
তারপর ভাঁটা পড়ে আসবার মুখে শুরু হল সর্বমঙ্গলময়ী শীতলা রক্ষেকালী ইত্যাদি দেবী পূজা ও আরাধনা।
সন্ধ্যা ঘনায়। অমাবস্যার দিন। অন্ধকার দল বেঁধে যেন আকাশ থেকে গলে গলে জগৎ ছেয়ে ফেলছে। অসময় পুব-দক্ষিণের এলোমেলো হাওয়ায় গাছে গাছে সরসরানি, মাথা দোলানি বাঁশঝাড়ের। তবুও যেন রুদ্ধ গুরানি, চাপা গরম। দশহরার দিনে বৃষ্টি হওয়ার দরুন যে সাপের ডিম ফুটতে পায়নি, আজকের এমন গুমসোনিতে বোধ করি সেই ডিম বন্ধ খোল ভেঙে অন্ধকার জগতের ছোঁয়া পেয়ে উদ্দাম হয়ে উঠতে চাইছে। আকাশে তারা ফুটছে একটা করে, জোনাকি জ্বলে উঠেছে দুচারটে।
কিছুক্ষণ থেমে-থাকা ঢাক-ঢোলের শব্দ আবার উঠল সুবী দুলে বাগদী পাড়ার মধ্যখানে অবস্থিত পূজামণ্ডপ থেকে।
মণ্ডপে টিমটিম করে দুটো প্রদীপ জ্বলছে রক্ষেকালীর দুই পাশে। নরনারী জমায়েত হয়েছে অনেক। ঢাকের তালে তালে নাচছে ছোট ছোট কালো ধুলোমাখা ন্যাংটো ছেলেমেয়ের দল।
কেউ কেউ শুধু তাড়িমত্ত অবস্থায় দুই হাঁটুতে মাথা পেতে বসেছিল হয় তো কালীর আরাধনা করছিল। কিন্তু কালো দুলে কালী সাক্ষী রেখে পবন চাঁড়াল লখাই অবাচীন বিধর্মীদের নামে ক্রুদ্ধ নালিশে ফুঁসছিল।
লখাই এখনও এখানে অনুপস্থিত। কিন্তু পবন অনেকক্ষণ থেকে কালো দুলের কালীসাক্ষী গালিম শুনছিল। জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে এমনিতেই তার মেজাজ কিছুদিন থেকে গরম হয়েছিল। এখানকার কথায় বাতায় যেটা বোঝা যাচ্ছে তা হল এই যে, নীলামের উচ্চহারবশত জমির পরিমাণ অনেককেই কিছুটা করে ছেড়ে দিতে হয়েছে। কারণ ভবিষ্যতে খাজনা দেবার বেলায় অনাদায়ী মামলার হাঁড়িকাঠে পড়ার চেয়েও এটাই সুবিধে বলে ধরে নিয়েছে অনেকে। তবে, আয় তো সকলের কমলই, উপরন্তু পূর্বে সমস্ত জমির যে খাজনা তাদের দিতে হত এবার এক ঠেলাতে অর্ধেকেও প্রায় তাই দাঁড়াল। কিন্তু প্রাণধরে অনেকেই জমির সব বা বেশি অংশটুকু ছেড়ে দিতে পারেনি। যারা ছেড়েছে তাদের জমির পরিমাণ নিতান্তই কম বলেই ছাড়তে হয়েছে। এই ছাড়ার দলের মধ্যে পবন একজন সর্বস্বহারা। ভিটেটুকু যে এখনও আছে, সেটুকুর অবস্থাও টলমল। ক্রমাগত খাজনা বৃদ্ধি এবং সেজন্য ঋণের দরুন নগিন ঘোষের কাছে তার যে হাত দুখানি বাঁধা আছে। চক্রবৃদ্ধিহারে তার মাথাসুদূ সবখানিই চক্রাকারে বাঁধা পড়েছে। এ বিপদের উপর আবার শনির দৃষ্টির মতো জমিদারের নায়েবদের কটাক্ষ পড়েছে, কারণ এ বেআইনি নীলামের সম্পর্কে সে স্পষ্টই ঘোষণা করে দিয়েছে, নরম মাটিতে বেড়াল বিষ্টা ছাড়ে। উপযুক্ত পাত্তর হলে একবার ওদের মহারানীর কোটকাচারি ঘেঁটে ঘষে নিতুম।
কথাটা শুধু ছোট নয়, বলেছেও ছোটলোক চাঁড়ালে। তা ছাড়াও, বিধর্মী যা বলে তার দুর্নাম চিরকালের।
জগতে যা হচ্ছে তা মা কালীর অভিপ্রায়েই, এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী কালো দুলে তাই লখাই পবনদের উপর এত রুষ্ট। তার নাতি বিষ্ণু যে নাকি রেলগাড়ি ছুঁয়ে প্রায়শ্চিত্ত করেছিল, কিছুদিন পূর্বে সে কোম্পানির রেলে চাকরি নিয়ে ঘর ছেড়ে চলে গেছে। এত বড় যে পাপ, তার সমস্ত দায় সে এদের উপর দিয়ে গালাগালির মাত্রা চড়িয়ে দিল।
কালী এবং কাঞ্চন, দুই জায়েও তারা পূজামণ্ডপে ছিল। কাঞ্চনের দিকে তাকিয়ে বনের ক্রোধের মাত্রা যদিও বা একটু কমে আসছিল, কাঞ্চন তাতে ঘৃতাহুতি দিয়ে দিল বাড়িয়ে। লখাইয়ের প্রতি গালাগাল সইতে না পেরে সে পবনকে বলল, বসে বসে শুনছ, বুড়োকে চুপ করাও না।
কালো দুলে খেপে উঠে কাঞ্চনকে বলল, ওলো দেওর-ভাতাড়ি বেবুশ্যে, বুড়ো মারা মরদখেপানি, মা কালী তার জিভ দিয়ে তোকে চেটেও নয় না।
পবন এতক্ষণে ধমকে উঠল, থামো, চুপ মারো মোড়ল, শুধু শুধু মুখ খারাপ করো না।
থামা তো দূরের কথা, বুড়ো তার হাড় কাঁপিয়ে চিৎকার শুরু করল। তার সঙ্গে যোগ দিল অধরা এবং কালো দুলের দুই ছেলের বউয়েরা।
কাঞ্চনের কাঞ্চনাক্ষি বাঘিনীর মতো জ্বলে উঠল। কালী ভল্লুকের মতো দ্রুত নিশ্বাসে হাত নিসপিস করে কাকে কামড়ে খামচে দেবে বোধ হয় তাই ভাবছিল।
সারা মণ্ডপে মেয়েপুরুষের দুটো দল, গালাগালি চিৎকার হল্লায় মেতে উঠল। ঢাকি রগড় বুঝে নেচে নেচে শুরু করল বাজাতে।
কাঁসি বাজাচ্ছিল যে মরণ তুলির ছেলে নয়ন ছোঁড়া, সেও তাড়ির নেশায় বেশ খানিকটা রসালো হয়ে উঠেছে। সে হঠাৎ কাঁসিতে কাঠির বেতাল ঘা মারতে মারতে একেবারে কাঞ্চনের কাছ ঘেঁষে এসে দাঁড়াল। তার ডিমও কিশোর চোখে বান ডাকল রক্তের, নিশ্বাস হঠাৎ দ্রুত হয়ে উঠল। কাঞ্চনের দিক থেকে পলকের জন্য চোখ ফিরল না তার। হাত থেকে কাঠি পড়ে গেল, শরীর তার অবশ হয়ে এসেছে বোধ হয় কাঞ্চনবর্ণের ধারে। আশ্চর্য বটে, আচমকা সে বাদলা পোকার মৃত্যুকামী দুই পাখার মতো দুহাত বাড়িয়ে কাঞ্চনের যৌবনোদ্ধত শরীর স্পর্শ করল।
কাঞ্চন প্রথমটা খেয়াল করেনি। হঠাৎ স্পর্শে সে চমকে ফিরে মুহূর্ত স্তব্ধ হয়ে রইল। পরমুহূর্তেই এ দারুণ বিবাদ ভুলে সে খিলখিল করে হেসে উঠল। বাঘিনীর চোখে ফুটল খেলার উল্লাস।
এদিকে বিবদমান দলটা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নরনারীদের ভুলে ক্রমাগত কাছাকাছি হতে লাগল আর পরস্পরের কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির কাহিনী কটুভাষায় সরবে জাহির করতে শুরু করল।
দল আগে বেড়ে গেল, লক্ষ নেই যে কাঞ্চন পেছিয়েই রইল। নয়নের কম্পিত হাত সরিয়ে না দিয়ে কাঞ্চন দুলে দুলে হেসে উঠল। সে হাসি আর থামতে চায় না। সাহস পেয়ে নয়ন দুহাতে জড়িয়ে ধরবার চেষ্টা করে কী যেন ফিসফিস করে উঠল।
কাতুকুতুর বেগে হাসির মতো হেসে কাঞ্চন বলল, আ মরণ ছোঁড়ার! কী চাস রে জালি ঢ্যামনা?
নয়ন তেমনি মুখ তুলে বলল, তোমাকে।
কী করবি আমাকে নে?
বে করব।
অ মাগো। কাঞ্চন আবার হেসে উঠল। বলল, তা’পর?
তোমাকে নে চলে যাব।
কোথায় রে?
তেলিনীপাড়ার চটুকলে। গোরাসাহেব বলেছে আমাকে যেতে।
কাঞ্চন চোখ তুলে বলল, যদি তোর গোরাসাহেব আমাকে পছন্দ করে?
নয়নের তাড়িমও চোখ দপ্ করে জ্বলে উঠল।—শালার চোখ উপড়ে লোব না?
সত্যি? আবার হাসতে গিয়ে হঠাৎ থেমে কাঞ্চন একেবারে নিস্তেজ হয়ে গেল। বলল, আমার যে বে হয়ে গেছে।
নিমিষে কাঞ্চনের গাম্ভীর্য ও নিস্তেজভাবে দেখে নয়নের হাত-পা শিথিল হয়ে এল। তারপর কাঞ্চন ভয় পেয়েছে ভেসে সে বলল, সেখেনে মেয়েমানুষও কাজ করে। কেউ জুলুম করতে গেলে সাহেব তাকে পুলশে ধরিয়ে দেবে।
তার সান্ত্বনার কথা শুনে আবার কাঞ্চন খিলখিল করে হেসে উঠতেই নয়ন সাহস ফিরে পেয়ে অন্ধের মতো তাকে জড়িয়ে ধরে ঠেলে ফেলতে চাইল মাটিতে। একরোখা জন্তুর মতো কাঞ্চনের কোমরের কাপড় ধরে ঘঁাচকা টান মারল। ক্ষিপ্ত উন্মত্ত দিগবিদিকজ্ঞানশূন্য শিকারপ্রাপ্ত শাপদের মতো ঢুলিশাবক খেপে উঠেছে।
মুহূর্তে ঘটনার গতি দেখে কাঞ্চনও ক্ষিপ্ত হয়ে এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে তার বলিষ্ঠ পায়ে এক লাথি কষাল নয়নকে। নয়ন একটা শব্দ করে মাটিতে পড়ে আর উঠল না। ওখানেই মুখ ঘষতে লাগল।
দেখে কাঞ্চন বলে উঠল, কেন্নো কমনেকার। বলে আবার সে হেসে উঠল, মরণ! চটকল দেখাতে এসেছে।
ইতিমধ্যে ওদিকে বিবাদটা একেবারে থেমে গেছে। কারণ, আকালী বাগদীর বউ মেীর ভর হয়েছে। অর্থাৎ রক্ষেকালীর ভর হয়েছে ক্ষেমীর উপর এবং এখন কালী তার মধ্যেই বিরাজ করছে।
অমাবস্যার অন্ধকার রাত্রির সমস্ত চেহারা মুহূর্তে এক অদৃশ্য প্রেত প্রেতিনীর লীলাস্থলের মতো বিকট হয়ে উঠল। থমথমিয়ে উঠল সমস্ত আবহাওয়া। সবাই নির্বাক সন্ত্রস্ত, আলো-আঁধারে একদল প্রেতাত্মারা যেন বড় বড় চোখে ক্ষেমীর দিকে তাকিয়ে রইল।
আছাড়-পড়া ক্ষেমীর শরীর পাকিয়ে উঠছে। সানুসানিক গলার স্বর হিহি শব্দে কম্পিত, নিষ্পেষিত আর চোখে ওই রক্ষেকালীর মতোই ভীষণ।
কে একজন বলে উঠল, মাগো, স্যানপাড়ার কী অপরাধ হয়েছে মা বলল।
ক্ষেমী মুখ তুলে আকাশের দিকে চেয়ে বলে উঠল, আঁমিঁ, বঁলঁছিঁ তেঁলেঁনিঁপাঁড়াঁরঁ চঁটঁকঁলঁ মাঁ-গঁঙ্গাঁয়ঁ খেঁয়েঁ নেঁবেঁ, ওঁ আঁনাঁচাঁরেঁরঁ কঁলঁ। যাঁরাঁ গেঁছেঁ, ফিঁরিঁয়েঁ নেঁ আঁয়ঁ শীঁগঁগিরঁ সঁব্বাঁইঁকেঁ।
অবিশ্বাস তো দূরের কথা, সকলে ঘন হয়ে এল আরও এবং মুখ চাওয়াচাওয়ি করে সকলেরই মনে পড়ল, ক্ষেমীর স্বামী আকালী জমির উপর ভরসা ছেড়ে তেলেনীপাড়ার চটকলে কাজ করতে চলে গিয়েছে। সম্প্রতি লোকাপবাদে শোনা যায়, ক্ষেমীর সঙ্গে নগিন ঘোষের কুসম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় ঋণ শোধ হয়ে কিছু জমি মুক্ত হয়েছে। এবং এও সকলেই জানে, সে অনেক চেষ্টা করেছে লোকজন দিয়ে তেলেনীপাড়া থেকে আকালীকে ডেকে নিয়ে আসার। আকালী আসেনি।
ক্ষেমী তেমনি করে আরও জোরে বলে উঠল, আঁমাঁরঁ হুঁকুঁমেঁরঁ কঁথাঁ বঁলঁবিঁ। যেঁ নাঁ আঁসঁবেঁ তাঁরঁ বঁংশঁ নিঁব্বঁংশঁ হঁবেঁ।
সকলেই বিস্ময়ে লক্ষ করে দেখল, ক্ষেমীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে মাটিতে পড়ছে।
কেবল ভিড়ের ভিতর থেকে পবন বলে উঠল, আকালী না এলেই ফ্যাসাদ। বলে খ্যাখ্যাল করে হেসে উঠল।
কালো দুলে হঠাৎ আবার চিৎকার করে উঠল, খবরদার চাঁড়ালের ব্যাটা, ধম্মা নে বিটুলেমি লয়। এতক্ষণের সমস্ত ব্যাপারটা ধ্বনকে বিরক্তই করেছে। সেও হঠাৎ দুপা এগিয়ে এসে বলল, তুই বুড়ো পালকিবওয়া দুলে আমাকে খবরদার বলিস?
তারপর সে হঠাৎ কলকে লক্ষ করে বলল, ক্ষেমীর কথায় যদি মা-গঙ্গা তেলেনীপাড়া চটকল ডোবায়, আমাকে যেন রক্ষেকালী সেদিনেতেই মুখে করে নেয়।
কাঞ্চন শিউরে উঠে অস্ফুটে ড়ুকরে উঠল, পবন ঠার-পো। হাঁ, চাঁড়ালের ব্যাটা হই তো কথা ফেরাব না বলে অন্ধকারে দুপদাপ শব্দ তুলে অদৃশ্য হয়ে গেল সে। কেবল ক্ষেমীর একটানা গোঙানির শব্দ এক বীভত্স আবহাওয়ার সৃষ্টি করতে লাগল।