পঞ্চম অনুবাক
প্রথম সূক্ত : শতৌদনা গৌঃ
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : শতৌদনা। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ, পংক্তি, জগতী, শক্করী]
মপি নহ্যাঁ মুখানি সপত্নে বজ্ৰমৰ্পয়ৈতম। ইন্দ্রেণ দত্তা প্রথমা শতৌদনা ভ্রাতৃব্যয়ী যজমানস্য গাতুঃ ॥১॥ বেদিষ্টে চর্ম ভবতু বৰ্হি ললামানি যানি তে। এষা ত্বা রশনাভীদ গ্রাবা দ্বৈমোহধি নৃত্যতু। ২৷৷ বালান্তে প্রোক্ষণীঃ সন্তু জিহ্বা সং মাগ্নে। শুদ্ধা ত্বং যজ্ঞিয়া ভূত্বা দিবং প্রেহি শতৌদনে ॥৩॥ যঃ শতৌদনাং পচতি কামপ্ৰেণ স কল্পতে। প্রীতা হ্যস্যর্বিজঃ সর্বে যন্তি যথাযথম্ ॥ ৪৷৷ স স্বর্গমা রোহতি যত্ৰাদস্ত্রিদিবং দিবঃ। অপূপনাভিং কৃত্বা যো দদাতি শতৌদনাম্ ॥ ৫স তাংল্লোকাৎ সমাপস্নাতি যে দিব্যা যে চ পার্থিবাঃ। হিরণ্যজ্যোতিষং কৃত্বা যো দদাতি শতৌদনাম্ ॥৬৷৷ যে তে দেবি শমিতারঃ পক্তাররা যে চ তে জনাঃ। তে ত্বা সর্বে গোম্পন্তি মৈভ্যো ভৈষীঃ শতৌদনে ॥৭ বসবা দক্ষিণত উত্তরান্মরুতা। আদিত্যাঃ পশ্চাদ গোন্সন্তি সাগ্নিষ্টোমমতি দ্রব ॥ ৮দেবাঃ পিতরো মনুষ্যা গন্ধর্বারসশ্চ যে। তে ত্বা সর্বে গোস্প্যন্তি সাতিরাত্ৰমতি দ্রব ॥৯॥ অন্তরিক্ষং দিবং ভূমিমাদিত্যান্ মরুতে দিশঃ। লোকাস সর্বনাপোতি যে দদাতি শতৌদনাম্ ॥১০৷৷ ঘৃতং প্রোক্ষন্তী সুভগা দেবী দেবান গমিষ্যতি। পারমঘে মা হিংসীর্দিবং প্রেহি শতৌদনে ॥১১। যে দেবা দিবিষদো অন্তরিক্ষসদশ্চ যে যে চেমে ভূম্যামধি। তেভ্যং ধুক্ষ সর্বদা ক্ষীরং সর্পিরথো মধু।১২। যৎ তে শিরো যৎ তে মুখং যৌ কর্ণী যে চ তে হনু। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ॥১৩ যৌ ত ওষ্ঠেী যে নাসিকে যে শৃঙ্গে যে চ তেংক্ষিণী। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ৷১৪৷৷ যৎতে ক্লোমা যদ্ধৃদয়ং পুরীতৎ সহকণ্ঠিকা। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ॥১৫৷৷ যৎ তে যকৃদ যে মতমে যদান্ত্রং যাশ্চ তে গুদাঃ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ॥১৬৷ যস্তে প্লাশিযৌ বনিদুর্যো কুক্ষী যচ্চ চর্ম তে। আমিক্ষাং দুহতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ৷৷১৭৷ যৎ তে মজ্জা যদস্থি যন্মাংসং যচ্চ লোহিত। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথে মধু ৷৷ ১৮৷৷ যৌ তে বাহু যে দোষণী যাবংসৌ চ তে ককুৎ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু। ১৯৷ যাস্তে গ্রীবা যে স্কন্ধা যাঃ পৃষ্টীর্যাশ্চ পৰ্শবঃ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ॥ ২০৷৷ যৌ ত ঊরূ অষ্ঠীবন্তৌ যে শ্রোণী যা চ তে ভসৎ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ৷৷ ২১। যৎ তে পুচ্ছং যে তে বালা যদ্ধাে যে চ তে স্তনাঃ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ॥ ২২৷৷ যাস্তে জঙ্ঘা যাঃ কুষ্ঠিকা ঋচ্ছরা যে চ তে শফাঃ। আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথো মধু ৷ ২৩৷৷ যৎ তে চর্ম শতৌদনে যানি লোমান্যগ্ল্যে। ণ নোমান্যষ্ম্যে আমিক্ষাং দুতাং দাত্রে ক্ষীরং সর্পিরথে মধু ॥ ২৪ ক্রোড়ৌ তে স্তাং পুরোডাশাবাজ্যেনাভিধারিতৌ। তৌ পক্ষৌ দেবি কৃত্বা সা পক্তারং দিবং বহ। ২৫৷৷ উনূখলে মুসলে যশ্চ চর্মণি যো বা শূপে তলঃ কণঃ। যং বা বাতো মারিশ্যা পবমাননা মমাথাগ্নিষ্টদ্ধোতা সুহুতং কৃপোতু ॥ ২৬। অপো দেবীমধুমতীতশ্রুততা ব্ৰহ্মণাং হস্তেষু প্রপৃথক সাদয়ামি। যকাম ইদমভিষিঞ্চামি বোহহং তন্মে সর্বং সং পদ্যতাঃ বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণা ॥ ২৭ ৷৷
বঙ্গানুবাদ –এই শত্রুনাশিকা, স্বর্গপ্রদায়িণী ধেনু ইন্দ্র কর্তৃক প্রদত্ত। এটি হিংসক শত্রুবর্গের মুখ বন্ধ করুক। হে ধেনু! তোমার নোম কুশরূপী, চর্ম বেদী রূপ। হে অজ! তোমার নোম (বা কেশ)!! প্রোক্ষণী স্বরূপ। তুমি শতৌদনা যজ্ঞকে প্রস্তুত করণশালী ইচ্ছাপূর্তিতে সমর্থ হয়ে থকো, তুমি দিব্যলোককে প্রাপ্ত করিয়ে থাকো। স্বর্ণালঙ্কৃত করে ধেনু দানকারী জন দিব্য ও পার্থিব লোক প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। হে দেবী শতৌদনা! দক্ষিণে বসুদেবগণ, উত্তরে মরুৎ-বর্গ, পশ্চাতে সূর্য তথা মনুষ্যগণ, পিতৃবর্গ ও গন্ধর্ববৃন্দ তোমাকে রক্ষা করবেন। তুমি ঘৃত প্রেক্ষণ করে দেবগণকে প্রাপ্ত হবে। ত্রিলোকবাসী দেবতাগণকে দুগ্ধ, ঘৃত, মধু দান করতে থাকো। তোমার বাহ্য ও আন্তরিক অঙ্গ-দানকর্তাকে দুগ্ধ, ঘৃত ও মধুকে দোহন করুক। হে দেবী শতৌদনা! পুরোডাশ সমূহ তোমার, ঘৃতের সাথে যুক্ত। মাতরিশ্বা যে অন্নকে মন্থন করে শুদ্ধ করেছেন, তার দ্বারা হোতাগণ অগ্নিতে সুহুত করুন। আমি যে অভীষ্ট লাভের উদ্দেশে তোমাকে চিন্তা করছি সেইসব ধনের দ্বারা হবে।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অঘায়তাং ইতি সূক্তং আহুত্যর্থগোবধে বিনিযুজ্যতে। সা চ বন্ধ্যা গৌঃ শতৌদনেত্যুচ্যতে। তস্য বধেন তস্যা মাংসাহুত্যা চ যদ্যজনং তদ অগ্নিষ্টেমাদপি অতিরাত্ৰাদপি চ শ্রেষ্ঠং ইত্যাদিরূপা প্রশংসা।..অঘায়তাং ইত্যর্থসূক্তেন শতৌদনসবে নিরুপ্তহবিরভিমৰ্শনং সম্পাতং দাতৃবাচনং দানং চ কুর্যাৎ। তথা চ সূত্রং…ইত্যাদি। (১০কা, ৫অ. ১সূ.)।
টীকা –উপযুক্ত সূক্তটি শতৌদনযজ্ঞে আহুতির নিমিত্ত গো-বধের ক্ষেত্রে বিনিযুক্ত হয়ে থাকে। বন্ধ্যা গাভীই শতৌদনা নামে উক্ত হয়েছে। এই শতৌদনা যজ্ঞের কর্তা (যজমান) অগ্নিষ্টোম এবং অতিরাত্র যজ্ঞ অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ ফল লাভ করেন, এমনই সব প্রশংসা করা হয়েছে। সূত্রানুসারে এই সূক্তের দ্বারা শতৌদন যজ্ঞে নিরুপ্ত হবিঃ অভিমৰ্শন পূর্বক দাতৃবাচন ও দান করণীয়।…ইত্যাদি। (১০কা, ৫অ. ১সূ.)।
.
দ্বিতীয় সূক্ত : বশাঃ গৌঃ
[ঋষি : কশ্যপ। দেবতা : বশা গৌ। ছন্দ : অনুষ্টুপ, বৃহতী, পংক্তি, গায়ত্রী ]
নমস্তে জায়মানায়ৈ জাতায়া উত তে নমঃ। বালেভ্যঃ শফেভ্যো রূপায়ায়ে তে নমঃ ॥ ১। যো বিদ্যাৎ সপ্ত প্রবতঃ সপ্ত বিদ্যাৎ পরাবতঃ। শিরো যজ্ঞস্য যো বিদ্যাৎ স বশাং প্রতি গৃহ্নীয়াৎ ॥ ২॥ বেদাহং সপ্ত প্রবতঃ সপ্ত বেদ পরাবতঃ। শিরো যজ্ঞস্যাহং বেদ সোমং চাস্যাং বিচক্ষণম্ ৷৷ ৩৷৷ যয়া দ্যৌর্যয়া পৃথিবী যয়াপো গুপিতা ইমাঃ। বশাং সহস্রধারাং ব্ৰহ্মণাচ্ছাবদামসি ॥ ৪ শতং কংসাঃ শতং দোগ্ধারঃ শতং গোপ্তাররা অধি পৃষ্ঠে অস্যাঃ। যে দেবাস্তস্যাং প্রাণন্তি তে বশাং বিদুরেকধা। ৫যজ্ঞপদীরাক্ষীরা স্বধাপ্রাণা মহীলুকা। বশা পর্জন্যপত্নী দেবী অপ্যেতি ব্ৰহ্মণা ॥ ৬৷ অনু ত্বাগ্নিঃ প্রাবিশদনু সোমো বশে ত্বা। ঊধস্তে ভদ্রে পর্জন্যো বিদজতস্তে স্তনা বশে ॥ ৭ অপস্তু ধুক্ষে প্রথমা উর্বরা অপসা বশে তৃতীয়ং রাষ্ট্রং ধুক্ষেহন্নং ক্ষীরং বশে ত্বম্ ॥ ৮৷৷ যদাদিত্যৈহঁয়মানোপাতিষ্ঠ ঋতাবরি। ইন্দ্ৰঃ সহস্রং পাত্রাৎসোমং ত্বপায়য়দ বশে ॥ ৯৷ যদদূচীন্দ্রমৈরা ত্বা ঋষভোহহুয়ৎ। তস্মাৎ তে বৃত্ৰহা পয়ঃ ক্ষীরং ক্রুদ্ধোহহরশে ॥ ১০। যৎ তে ক্রুদ্ধো ধনপতিরা ক্ষীরমহর বশে। ইদং তদদ্য নাকস্ত্রি পাত্রে রক্ষতি। ১১। ত্ৰিষু পাত্ৰেষু তং সোমমা দেব্যহরদ বশা। অথবা যত্র দীক্ষিত বৰ্হিৰ্য্যাস্ত হিরণ্যয়ে। ১২। সং হি সোমেনাগত সমু সর্বেণ পদ্বতা। বশা সমুদ্রমধ্যষ্ঠা গন্ধর্বৈঃ কলিভিঃ সহ ৷ ১৩৷৷ সং হি বাতেনাগত সমু সর্বৈঃ পতত্রিভিঃ। বশা সমুদ্রে প্রানৃত্যদৃচঃ সামানি বিভ্ৰতী ॥ ১৪ সং হি সূর্যেণাগত সমু সর্বেণ চক্ষুষা। বশা সমুদ্রমত্যখ্যদ ভদ্রা জ্যোতীংষি বিভ্রতী। ১৫৷৷ অভীবৃতা হিরণ্যেন যদতিষ্ঠ ঋতাবরি। অশ্বঃ সমুদ্ৰো ভূত্বাধ্যস্কন্দ বশে ত্ব। ১৬৷৷ তদ ভদ্রাঃ সমগচ্ছন্ত বশা দেখো স্বধা। অথবা যত্র দীক্ষিততা বহিষ্ক্যাস্ত হিরণ্যয়ে ৷ ১৭ বশা মাতা রাজন্যস্য বশা মাতা স্বধে তব। বশায়া যজ্ঞ আয়ুধং ততশ্চিত্তমজায়ত৷ ১৮৷৷ ঊর্ধ্বো বিন্দুরুদচরদ ব্ৰহ্মণঃ ককুদাদধি। ততত্ত্বং জজ্ঞিষে বশে ততো হোতাজায়ত। ১৯৷৷ আস্তে গাথা অভবনুষ্ণিভ্যো বলং বশে। পাজস্যাজ্জজ্ঞে যজ্ঞ শুনেভ্যো রয়স্তব। ২০ ঈর্মাভ্যাময়নং জাতং সথিভ্যাং চ বশে তব। আন্ত্রেভ্যো যজ্ঞিরে অত্রা উদরাদধি বীরুধঃ ॥ ২১। যদুদরং বরুণস্যানুপ্রাবিশথা বশে। ততত্ত্বা ব্রহ্মোদহুয়ৎ স হি নেত্রমবেৎ তব ॥ ২২৷৷ সর্বে গর্ভাদবেন্ত জায়মানাদসূস্বঃ। সসূব হি তামান্থর্বশেতি ব্ৰহ্মভিঃ কৃপ্তঃ স হ্যস্যা বন্ধুঃ ॥ ২৩৷৷ যুধ একঃ সং সৃজতি যো অস্যা এক ইদ বশী। তরাংসি যজ্ঞা অভব তরসাং চক্ষুরভবদ বশা। ২৪৷৷ বশা যজ্ঞং প্রত্যগৃহ্নাদ বশা সূর্যমধারয়ৎ। বশায়ামন্তরবিশদোদনো ব্ৰহ্মণা সহ। ২৫। বশামেবামৃতমাহুশাং মৃত্যুমুপাসতে। বশেদং সর্বভব দেবা মনুষ্যা অসুরাঃ পিতর ঋষয়ঃ ২৬। য এবং বিদ্যাৎ.স বশাং প্রতি গৃহ্নীয়াৎ। তথা হি যজ্ঞঃ সর্বপাদ দুহে দাত্রেইনপস্ফুরন্ ॥ ২৭৷৷ তিম্রো জিহ্বা বরুণস্যান্তদীদ্যত্যাসনি। তাসাং যা মধ্যে রাজতি সা বশা দুম্প্রতিগ্রহা। ২৮। চতুর্ধা রেতো অভবদ বশায়াঃ। অপস্তুরীয়মমৃতং তুরীয়ং যজ্ঞস্তুরীয়ং পশবস্তুরীয়ম৷ ২৯৷ বশা দ্যৌবশা পৃথিভী বশ বিষ্ণুঃ প্রজাপতিঃ। বশায়া দুগ্ধমপিবৎসাধ্যা বসবশ্চ যে ॥ ৩০৷৷ বশায়া দুগ্ধং পীত্বা সাধ্যা বসবশ্চ যে। তে বৈ ব্ৰধস্য বিষ্টপি পয়ো অস্যা উপিসতে। ৩১ ৷ সোমমেনামেকে দুহ্নে ঘৃতমেক উপাসতে। য এবং বিদ্যুষে বশাং দদুস্তে গস্ত্রিদিবং দিবঃ ॥ ৩২। ব্রাহ্মণেভ্যো বশাং দত্ত্বা সর্বাংল্লোকাসমতে। ঋতং হাস্যামাপিতমপি ব্ৰহ্মাথো তপঃ ॥ ৩৩৷৷ বশাং দেবা উপ জীবন্তি বশাং মনুষ্যা উত। বশেদং সর্বভব যাবৎ সূর্যো বিপশ্যতি ॥ ৩৪৷
বঙ্গানুবাদ –হে বশা (বন্ধ্যা ধেনু)! উৎপন্ন হওনশালিনী তোমাকে, তোমার রোমাবলীকে, তোমার শফকে (খুরকে) নমস্কার। দ্যাবাপৃথিবী, জলরাশি যার দ্বারা রক্ষিত হয়, সেই বশা গাভীকে নমস্কার। যজ্ঞপদী, ইরা, ক্ষীরা, স্বধা, পর্জন্যপত্নী-রূপা বশা তন্ত্রশক্তির দ্বারা দেবগণকে সন্তুষ্ট করে। থাকেন। হে বশা! তোমাতে সোম ও অগ্নি প্রবেশ করেছেন, পর্জন্য ও বিদজৎ তোমার স্তন। তুমি জল-অন্ন-দুগ্ধ প্রদায়িনী। আদিত্যের দ্বারা আহূত হয়ে ইন্দ্র তোমাকে বিপুল পরিমাণ সোম পান করিয়েছিলেন। যখন তুমি ইন্দ্রের সম্মুখে অবস্থান করছিলে, তখন ঋষভ তোমাকে আহ্বান করেছিল এবং ইন্দ্র রুষ্ট হয়ে তোমার দুগ্ধ হরণ করে নিয়েছিলেন। সেই হরণ-কৃত দুগ্ধ স্বর্গলোকে তিনটি পাত্রে রক্ষিত হয়ে আছে। বশা ঋক্সমূহ ও সামগুলিকে ধারণ করে থাকে। হে বশা! যখন তুমি স্বর্ণালঙ্কৃত হয়ে দণ্ডায়মানা হয়েছিলে, তখন দ্রুতগামী সমুদ্রও অধিক স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। যে স্থানে দীক্ষিত অথবাগণ (অথর্ববেদজ্ঞ ব্রাহ্মণগণ) কুশসমূহের উপর উপবেশন করেন, সেই স্থানে বশা মঙ্গল সাধন করে থাকে। হে বশা! তুমি ব্রহ্মের শিখর অপেক্ষা উচ্চ হয়ে ওঠা একটি বিন্দু হতে উৎপন্ন হয়েছে এবং পুনরায় হোতা উৎপন্ন হয়েছে। তোমার মুখ হতে গাথা সমূহ, নাড়ি সমূহ হতে বল, বল হতে যজ্ঞ এবং স্তন হতে কিরণ রাশি উৎপন্ন হয়েছে। তোমার ব্রণসমূহ ও শক্তি হতে অয়ন হয়েছে, অন্ত্র সমূহ হতে অস্ত্র এবং উদর হতে লতাসমূহ উৎপন্ন হয়েছে। যে প্রাণী উৎপন্ন হতে থাকে, সে গর্ভ হতে ভীত হয়। বশাই তাকে জন্ম দিয়ে থাকে। বশা যজ্ঞের প্রতিগ্রহণ করে থাকে। বশা অমৃত ও মৃত্যুর উপাস্য। বরুণের মুখের মধ্যে যে তিনটি জিহ্বা চক চক করে (উজ্জ্বল হয়ে বিরাজমান) তার মধ্য ভাগেরটিই বশা। বশাই দ্যাবাপৃথিবী, বিষ্ণু ও প্রজাপতি। যিনি বশাকে দান করেন, তিনি স্বর্গে গমন করে থাকেন। বশাদানীকে দেবতাগণ জীবিকা প্রদান করেন। এই সমগ্ৰ সংসার যতদূর পর্যন্ত সূর্যকে দর্শন করতে পারে, সেই সকল স্থান বশা-রূপই হয়ে থাকে।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –নমস্তে জায়মানায়ৈ ইতি সূক্তে পূর্বসূক্তোক্তবশা ন কেবলং মেধ্যমাংসাত্মিকা গৌর্ভবতি অপি তু সা বিশসনাদনন্তরং মহতী কাচি দেবী ভূত্বা দেবেষু মধ্যে সর্বাত্মিকা ভবতি যজ্ঞিয়েষু চ যজ্ঞিয়া ভবতীত্যাদি তস্যা মাহাত্মং প্রশংসা চোক্তা। –ত উক্তং কৌশিকেন (৮৭)৷ (১০কা. ৫অ. ২সূ)।
টীকা— পূর্ববর্তী সূক্তে যে বশা বা শতৌদনার কথা বলা হয়েছে, সে কেবল মেধ্যমাংসাত্মিকা গাভী। নয়, বরং সে বিশসনের পরে দেবীরূপে দেবতাগণের মধ্যে সর্বাত্মিকা যজ্ঞস্বরূপা হয়ে যায়, ইত্যাদি মাহাত্ম্য ও প্রশংসা উপযুক্ত সূক্তে বিধৃত হয়েছে। সূত্রানুসারে এর বিনিয়োগ কর্তব্য। (১০কা, ৫অ. ২সূ.)।
[ইতি দশমং কাণ্ডং সমাপ্ত]