সানাউল্লাহর সামনে রূপবতী কিন্তু বামনটাইপ খাটো এক মেয়ে বসে আছে। সে নিজে খাটো, তার হাত-পাও খাটো। মেয়েটার চোখ পিটপিট রোগ আছে। সে ক্রমাগত চোখ পিটপিট করে যাচ্ছে। মেয়েটার গা থেকে ফিনাইলের কঠিন গন্ধ আসছে। মেয়েটা হোপ ক্লিনিকের নার্স। নাম রেনুকা। সে আবু করিমের একটা চিঠি নিয়ে এসেছে।
সানাউল্লাহ বললেন, মা, তোমার নাম?
মেয়েটা বলল, আমার নাম দিয়ে কী করবেন? চিঠি নিয়ে এসেছি চিঠি পড়েন। পুনশ্চ লেখাটা আগে পড়েন।
সানাউল্লাহ বললেন, নামটা বলে, আলাপ পরিচয় হোক।
মেয়েটা বলল, আলাপ পরিচয়ের কিছু নাই। আমার নাম রেনুকা। চিঠির পুনশ্চটা শুরুতেই পড়বেন। প্লিজ।
সানাউল্লাহ বললেন, পুনশ্চ শুরুতে পড়ব কেন? আগে চিঠি পড়ব, তারপর পুনশ্চ?
মেয়েটা বলল, পুনশ্চ পড়ে আমাকে আমার টাকাটা দিয়ে দিন। আমি চলে যাই। মর্নিং শিফটে আমার ডিউটি আছে। আরেকটা কথা, আমাকে চেক দিলে হবে না। নগদ টাকা দিতে হবে। ঘরে এত টাকা না থাকলে কাউকে ব্যাংকে পাঠিয়ে আনান।
সানাউল্লাহ বললেন, স্থির হয়ে বসো তো মা। এত নড়াচড়া করবে না। পুরো চিঠিটা আমাকে শান্তিমতো পড়তে দাও। তোমাকে টাকা দেবার ব্যাপার থাকলে টাকা দেয়া হবে।
সানাউল্লাহ চিঠি পড়া শুরু করলেন।
প্রিয় সানাউল্লাহ,
আমি মহাবিপদে আছি। এরা আমাকে জেলখানায় আটকে ফেলেছে। কোনো কারণ ছাড়াই রোজ রাতে পেথিড্রিন ইনজেকশন দিচ্ছে। দিনে দিচ্ছে কড়া ঘুমের ওষুধ। আপত্তি করলেই বিছানার সঙ্গে হাত-পা বেঁধে রাখছে। আমি শায়লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। সম্ভব হয় নি।
এই ক্লিনিকের ব্যবসাই হচ্ছে রোগীকে আধাপাগল বানিয়ে চিকিৎসার নামে দীর্ঘদিন আটকে রাখা। যত বেশিদিন রাখতে পারে তাদের ততই লাভ।
আমি মানছি অচিার নিয়ে আমার অবসেশন আছে। এই অবসেশনের অর্থ কি আমি ভায়োলেন্ট মানসিক রোগী? সানাউল্লাহ, তুমি আমাকে যেভাবেই পার নরক থেকে উদ্ধার করো।
ইতি
আবু করিম।
পুনশ্চ : যে মেয়েটি এই চিঠি তোমার হাতে দিবে তাকে দশ টাকা দিয়ে দিবে।
সানাউল্লাহ মানিব্যাগ খুলে দশ টাকার একটা নোট এগিয়ে দিলেন। রেনুকা হতভম্ব গলায় বলল, দশ হাজার টাকা দেবার কথা। দশ টাকা দিচ্ছেন কেন? আমি নিজে পড়েছি দশ হাজার টাকী লেখা ছিল।
সানাউল্লাহ বললেন, হাজার শব্দটা কালি দিয়ে কাটা। তোমার হাতে যখন চিঠি দিয়েছে তখন আমার বন্ধু হাজার কেটে দিয়েছে। এই দেখ।
রেনুকা চোখ বড় বড় করে বলল, অতি বদলোক তো!
সানাউল্লাহ বললেন, বদ লোক না। অতি বুদ্ধিমান লোক। এমন একজন বুদ্ধিমান মানুষকে পাগল হিসেবে তোমরা আটকে রেখেছ। তুমি দশ টাকা নিয়ে বিদেয় হও। আরেকটা কথা, আমার বন্ধুকে তুমি যদি এখন কোনো ঝামেলা কর তাহলে তুমি নিজে বিরাট যন্ত্রণায় পড়বে।
কী যন্ত্রণায় পড়ব?
সেটা এখনো চিন্তা করি নাই। যাই হোক, চা খাবে? চা খেতে চাইলে চা খাওয়াতে পারি।
বেনুকা থমথমে গলায় বলল, চা খাব না।
সানাউল্লাহ বললেন, দশ টাকা পেয়ে তুমি মন বেশি খারাপ করে ফেলেছ। এটা তো মা ঠিক না। এই দশ টাকা রোজগার করতে একজন ভিক্ষুকের চার ঘণ্টা কঠিন পরিশ্রম করতে হয়।
রেনুকা বলল, আমার উপর এত বড় চালাকি কেউ করে নাই।
সানাউল্লাহ বললেন, এতে তোমার খুশি হওয়া উচিত। চালাকের সঙ্গেই মানুষ চালাকি করে। বোকার সঙ্গে করে না। দশ টাকার ঘটনায় প্রমাণিত হলো তুমি বোকা না।
রেনুকা কোনো কথা না বলে ছুটে বের হয়ে গেল।
সানাউল্লাহ ঝিম ধরে বসে আছেন। বন্ধু আবু করিমকে কীভাবে জেল থেকে বের করবেন বুঝতে পারছেন না। ডা. জোহরা খানম কঠিন পনীর অর্থাৎ কঠিন চীজ। বিষয়টা নিয়ে যে আইনুদ্দিনের সঙ্গে পরামর্শ করবেন তাও সম্ভব না। মানুষের জ্বর যেমন মাথায় উঠে যায় আইনুদ্দিনের অংক মাথায় উঠে গেছে। রেনুকা মেয়েটার গা থেকে যেমন ফিনাইলের গন্ধ আসছিল আইনুদ্দিনের গা থেকে এখন অংকের গন্ধ আসছে।
বাবা! তোমার কী হয়েছে?
সানাউল্লাহ চমকে তাকালেন। ভূত-কন্যা ডমরু তার কোলে বসে আছে। এই মেয়েটা তাকে প্রায়ই চমকাচ্ছে। যখন তখন কোলে এসে বসছে। ঘাড় ধরে ঝুলছে। ডমরুকে আজ কুচকুচে কালো দেখাচ্ছে। সানাউল্লাহর চমকে ওঠার এটাও একটা কারণ। মড়ু ডমরু সবসময় এক চেহারায় দেখা দেয় তা-নী। একেক দিন একেক চেহারায় উদয় হয়।
সানাউল্লাহ তাঁর বিপদের কথা বললেন। ডমরু বলল, তুমি হামিদ চাচার কাছে যাও, উনি ব্যবস্থা করে দেবেন।
সানাউল্লাহ ভূত-মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন, ইউ নটি ভূত গার্ল। ভালো বুদ্ধি দিয়েছ।
হামিদুর রহমান পরিচিত কাউকে সেইভাবে চিনতে না পারলেও সানাউল্লাহকে চিনলেন। এবং আনন্দিত গলায় বললেন, কেমন আছ? তোমার নাম ভুলে গেছি কিন্তু চেহারা মনে আছে। তুমি জাবিনের বাবা হয়েছে?
জি হয়েছে।
ব্যাটারি চিকিৎসা চলছে তো। এই চিকিৎসায় এখন অনেক সুস্থ আছি। স্মৃতিশক্তি অনেকটাই ফিরেছে।
সানাউল্লাহ বললেন, আপনার কাছে একটা কাজে এসেছি।
হামিদ বললেন, আমার কোনো আত্মীয়স্বজন আমার কাছে কাজে আসবে আর আমি মুখ ফিরিয়ে থাকব— এই ঘটনা কোনোদিন ঘটবে না। বলো কী কাজ?
সানাউল্লাহ বললেন, এই চিঠিটা একটু পড়েন ভাইজান।
হামিদ চিঠি পড়ে বললেন, কে আছ গাড়ি বের কর। Action Action Direct Action. আমি জাবিনের বাবাকে নিয়ে জিপে করে যাব। পেছনে আসবে মাইক্রোবাস। মাইক্রোবাসে যারা সবসময় থাকে তারা থাকবে। শুধু রব্বানি যেন না যায়। এর মাধা অতিরিক্ত গরম। একে যতবার নিয়ে গেছি বিপদে পড়েছি।
ডা, জোহরা খানমের সামনে হামিদুর রহমান এবং সানাউল্লাহ বসা। জোহরা খানম চোখ সরু করে তাকিয়ে আছেন। তিনি খবর পেয়েছেন ক্লিনিকের গেটের দুজন দারোয়ান কিছুক্ষণ আগে দৌড়ে পালিয়ে গেছে। ক্লিনিকের ভেতর একটা মাইক্রোবাস ঢুকেছে। বাসভর্তি সন্দেহজনক চরিত্রের লোকজন। রিসিপশনে যে মেয়েটা বসে ছিল সে জানালা খুলে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে পা ভেঙেছে। তাকে তিন নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। জোহরা খানম ব্যাপার কিছুই বুঝতে পারছেন না। তিনি শীতল গলায় বললেন, আপনারা কী চান?
হামিদ বললেন, আপনার ক্লিনিকের নামডাক শুনেছি। ভর্তি হওয়ার জন্যে এসেছি। আমাকে একটা ভিআইপি কেবিন দিন। আমি ভিআইপি পারসন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
জোহরা খানম বললেন, ভর্তি হতে চাইলেই তো ভর্তি হওয়া যায় না। আপনার সমস্যা কী, কেন ভর্তি হতে চাচ্ছেন, তা জানতে হবে।
হামিদ বললেন, আমার ব্যাটারি খাওয়া রোগ হয়েছে। সকালে নাশতার সঙ্গে একটা ব্যাটারি খাই। দেশী কিংবা চায়নিজ ব্যাটারি খেতে পারি না। স্টমাক আপসেট হয়। তবে আমেরিকান বা জার্মান ব্যাটারিতে সমস্যা হয় না।
জোহরা খানম বললেন, পরিষ্কার বুঝতে পারছি আপনারা আমাকে ভয় দেখাতে এসেছেন। ভয়টা কেন দেখাতে চাচ্ছেন বুঝতে পারছি না। চাদা চান? যে প্রতিষ্ঠান মানসিক রোগীদের সমস্যায় নিবেদিত, তার কাছ থেকেও চাদা তুলবেন?
সানাউল্লাহ বললেন, ম্যাডাম, চাঁদা তুলতে আসি নি। আপনার প্রেসার মাপার যন্ত্রটা দিন। প্রেসার মাপার যন্ত্রে হাত দিয়ে বলব, ইহা সত্য। আমার প্রেসারের সমস্যা আছে। কাজেই প্রেসার মাপার যন্ত্রে হাত রেখে মিথ্যা বলব না।
হামিদ বলল, চড়-থাপ্পড় দেয়ার জন্যেও আসি নাই। মেয়ে হচ্ছে মাতৃজাতি। মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। হাদিসের কথা।
তাহলে চান কী?
হামিদ বললেন, কী চাইতে এসেছি এখন ভুলে গেছি। বেশিক্ষন আমার কোনো কথা মনে থাকে না। যদিও ব্যাটারির চিকিৎসা চলছে। তবে এই চিকিৎসার ফল বেশিক্ষণ থাকে না। অবশ্যি চিন্তার কিছু নাই। আমার ভাই সঙ্গে আছে, সে আমাকে মনে করিয়ে দিবে। এবং যথাসময়ে Action নেয়া হবে। Action Action Direct Action. ম্যাডাম, কিছু মনে নিবেন আমি মাঝে মাঝে স্লোগান দিব। পলিটিক্যাল লোক তো। স্লোগান না দিয়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারি না।
জোহরা খানব বিড়বিড় করে বললেন, Oh God!
হামিদ সানাউল্লাহর দিকে তাকিয়ে হতাশ গলায় বললেন, কী জন্যে অ্যাকশনের ঘোষণা দিয়েছি কিছুই ঘরে নাই। সানাউল্লাহ কানে কানে মনে করিয়ে দিলেন।
জোহরা খানম বললেন,আমি ধৈর্যের শেষ সীমানায় উপস্থিত হয়েছি। পুলিশ ডাকা ছাড়া এখন আর আমার হাতে Optionনাই।
হামিদ বলেন, অবশ্যই পুলিশ ডাকবে। আপনাকে ডাকতে হবে না। আমিই ডেকে দিব। ম্যাডাম, মেয়েছেলেরা অনেক ধৈর্যশীল হয়। আপনার ধৈর্য কম। এর একমাত্র কারণ আপনার গোঁফ। গোঁফের জন্যে আপনার মধ্যে কিছু পুরুষস্বভাব চলে এসেছে। পুরুষদের ধৈর্য কম হয়। হয় আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠেভকরে ফেলবেন।ধৈর্য ফিরে পাবার এইটাই একমাত্র পথ।
জোহরা খানম থমথমে মুখে হাতে টেলিফোন নিলেন। নিচু গলায় কিছু কথা বললেন। কী কথা কার সঙ্গে কথা কিছুই বুঝা গেল না। দুটা শব্দ শুধু বুঝা গেল। চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসী হামিদ মোটেই বিচলিত হলেন না।
হামিদের একজন এ্যাসিসটেন্ট দরজায় উঁকি দিল। খড়খড়া গলায় বলল, ওস্তাদ কিছু লাগবে?
হামিদ বললেন, একটা ওয়ান টাইম ব্লেজার নিয়ে এসে যায় গোঁফ ফেলে দিতে রাজি হয়েছেন। আর বিশেষ পানি লাগবে এক গ্লাস।
অ্যাসিসটেন্ট দ্রুত বের হয়ে গেল। জোহরা বেগম বলনে, থানার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে দশ মিনিটের মধ্যে পুলিশ চলে আসবে।
হামিদ বললেন, রাস্তায় যেমন যানজট, একঘণ্টার আগে পুলিশ আসবে না। আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন। এর মধ্যে লক্ষ্মী মেয়ের মতো গোঁফ ফেলে দিন। আপনার জন্যে পানি আনা হবে। দৈনিক জাত গ্লাস পানি খাওয়া দরকার। পানি যত খাবেন তত ভালো। এর মধ্যে ওসি সাহেবের সঙ্গে আরেকবার যোগাযোগ করে তাড়াতাড়ি আসতে বলুন। আমার নামটা বলুন। আমার নাম কমিশনার হামিদ। বাজারে প্রচলিত নাম চ্যাপ্টা হামিদ। অথচ আমার মধ্যে চ্যাপ্টা কিছুই নাই।
রিসিপশনিস্টের ঘর থেকে বিকট ঝনঝন শব্দ হলো। মনে হচ্ছে টিভি ভাঙা হয়েছে। পিকচার টিউব ফাটলে এমন বিকট আওয়াজ হয়।
ওয়ান টাইম রেজার এবং এক গ্লাস পানি চলে এসেছে। জোহরা খানম দ্বিতীয় দফায় থানায় টেলিফোন করলেন। চ্যাপ্টা হামিদ শব্দ দুটা কয়েকবার শোনা গেল। টেলিফোন বার্তা শেষ হবার পর জোহরা খানমের মুখ ছাইবর্ণ হয়ে গেল। তাঁর কথাবার্তাও খানিকটা জড়িয়ে গেল। তিনি হাতে ওয়ানটাইম রেজার নিতে নিতে বললেন, আপনারা যা বলছেন তা যদি করি তাহলে কি আপনার বিদায় হবেন?
হামিদ দরাজ গলায় বললেন, অবশ্যই। আমি ওয়ান ওয়ার্ড ম্যান। এক কথার মানুষ।
সানাউল্লাহ বললেন, আমরা শুধু যাওয়ার সময় আপনাদের একজন পেশেন্টকে সঙ্গে নিয়ে যাব। পেশেন্টের নাম আবু করিম।
জোহরা খানম বাথরুমে ঢুকে গেলেন। বাথরুম থেকে বের হবার পর তাঁকে অদ্ভুত দেখাতে লাগল। হামিদ বললেন, গোঁফ থাকা অবস্থাতেই তো ভালো ছিল। এখন উনার চেহারায় বার বাদর ভাব চলে এসেছে। যখন গোফ ছিল তখন সবাই তাকিয়ে থাকত গোঁফের দিকে। এখন গোঁফ ফেলে দেবার কারণে পুরো মুখ একসঙ্গে চোখে পড়ছে বলে এই অবস্থা। যাই হোক, ম্যাডাম গ্লাসের পানিটা এক চুমুকে খেয়ে ফেলুন। আমরা বিদায় হই।
বিনাবাক্য ব্যয়ে জোহরা খানম পানির গ্লাস শেষ করলেন। হামিদ উঠে দাড়াতে দাড়াতে বললেন, আপনাকে দেয়া হয়েছিল কমোডের পানি। এটা আমার শাস্তির একটা অংশ। মেয়েছেলের গায়ে তো হাত তুলতে পারি না। কমোডের এক গ্লাস পানি খাইয়ে দেই। সপ্তাহখানিক কিছু খেতে পারবেন না। ক্রমাগত বমি করবেন। তারপর ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে।
হামিদের কথা শেষ হবার আগেই জোহরা খানম টেবিল ভাসিয়ে বিকট শব্দে বমি করলেন। রিসিপশনিস্টের ঘরের টেলিভিশনের পিকচার টিউব ফাটার সময় যে আওয়াজ হয়েছিল তারচেয়েও বড় আওয়াজ হলো।
শব্দ কী কারণে হয়েছে দেখার জন্যে ভীত চোখে যে নার্স উঁকি দিল তার নাম রেনুকা।
সানাউল্লাহ আনন্দিত গলায় বললেন, রেনুকা! মা কেমন আছ?
রেনুকা জবাব দিল না। আতঙ্কে তার চোখ ছাইবর্ণ হয়ে গেল। সানাউল্লাহ বললেন, আমার বন্ধু আবু করিমের মতো রোগী এখানে কয়জন আছে ঠিকমতো বলো। পাগল না অথচ পাগল বানিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে।
রেনুকা বলল, তিনজন।
সানাউল্লাহ বললেন, এই তিনজনকে দ্রুত ছাড়ার ব্যবস্থা কর। আমাদের মাইক্রোবাস আছে, মাইক্রোবাসে তুলে দাও। অর্ডার তোমার ম্যাডামই দিতেন। উনি বৃমির ওপর আছেন। অর্ডার দেয়ার মতো অবস্থা তাঁর না।
রেনুকা তাকালো জোহরা খানমের দিকে। জোহরা খানম কিছু একটা বলতে গিয়ে আবারো বিকট শব্দে বমি করলেন।
হামিদ বললেন, এই ক্লিনিকে যারা কাজ করছে সবাই দোষী। প্রত্যেককেই বিশেষ পানি খাওয়া উচিত। অপরাধের শাস্তি। রেনুকা মা! তোমাকে যা করতে বলা হয়েছে তা কর। তারপর তুমি নিজেই কমোড থেকে এক কাপ পানি তুলে খেয়ে ফেলবে। তোমাকে মা ডেকে ফেলেছি এইজন্যে কনসেশন। আমার সামনে পানি তুলবে, আমার সামনে খাবে। ঠিক আছে লক্ষ্মী মা আমার?