দরবেশ বাচ্চু ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে।
বাচ্চু ভাই একা নয়, তার চায়ের দোকানে রাত নটার সময় যে কজন ছিল, সবাইকে। আমাদের কাদের মিয়া তাদের এক জন। এত রাত পর্যন্ত সে বাইরে থাকে না। রাত আটটায় বি বি সির খবর। এর আগেই সে আজিজ সাহেবের ঘরে উপস্থিত হয়। সেদিনই শুধু দেরি হল।
যে-ছেলেটি খবর দিতে এল সে দরবেশ বাঙ্গু ভাইয়ের দোকানের বয়। দশএগার বছর বয়স। তাকেই শুধু ওরা ছেড়ে দিয়েছে। তার কাছে জানা গেল রাত নটার কিছু আগে দু-তিন জন লোক এসেছে দোকানে। লোকগুলি বাঙালী। এদের মধ্যে এক জন বেটেমতো-মাথার চুল কোঁকড়ান। সে বলল, বাচ্ছ ভাই এখানে কার নাম?
বাচ্চু ভাই কাউন্টার থেকে উঠে এলেন।
আমার নাম। কী দরকার?
একটু বাইরে আসেন।
ওরা বাচ্চু ভাইকে বাইরে নিয়ে একটা গাড়িতে তুলল। তারপর এসে বাকি সবাইকে বলল, জিজ্ঞাসাবাদ করবার জন্যে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। ভয়ের কিছু নাই।
আমি ছেলেটিকে বললাম, দোকানে তালা দিয়ে এসেছিস?
হ স্যার। ক্যাশ বাক্সের টেকাও আমার কাছে।
কত টাকা?
মোট তেত্রিশ টাকা বার আনা।
তুই আর এত রাত্রে যাবি কোথায়? থাক এখানে।
দরবেশ সাবের বাসাত একটা খবর দেওন দরকার।
সকালে দিবি, এখন আর যাবি কীভাবে? কাৰ্য্য না?
ছেলেটি মাথা চুলকাতে লাগল। বললাম, দরবেশ সাবের বাড়িতে আছে কে?
তাঁর পরিবার আছে। আর একটা পুলা আছে, নান্টু মিয়া নাম। খালি কান্দে।
তুই খাওয়াদাওয়া করেছিস?
জ্বি-না।
ভাত খা। এখন ঘর থেকে বার হওয়া ঠিক না।
কাদের মিয়াকে ধরে নিয়ে গেছে, এই খবরে আমি বিশেষ বিচলিত বোধ করলাম না। সহজ স্বাভাবিকভাবেই চা বানালাম। রাতের জন্যে কাদের কিছু রানা করে গেছে কিনা, তা দেখলাম হাঁড়ি-পাতিল উল্টে। ছেলেটার শোবার জায়গা দেখিয়ে দিয়ে তার সঙ্গে কিছু গল্পগুজবও করলাম।
বাড়ি কোথায়?
বিরামছরি, ময়মনসিং।
বাড়িতে আছে কে?
মা আছে, ভইন আছে, দুইটা ভাই আছে। চাইর জন খানেওয়ালা।
বোনের বিয়ে হয়েছে?
হইছিল, এখন পৃথ্যক।
এক সময় বিলু এসে আমাকে নিচে ডেকে নিয়ে গেল। আজিজ সাহেবের জ্বর। তিনি কম্বল গায়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। তাঁর সামনের চেয়ারে নেজাম সাহেব বসে আছেন। আমাকে দেখেই নেজাম সাহেব শুকনো গলায় বললেন, কাদের মিয়াকে শুনলাম শুট করেছে।
ধরে নিয়ে গেছে। শুট করেছে। কিনা জানি না।
কী সর্বনাশের কথা ভাই! আজিজ সাহেব একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন। থেমে থেমে বললেন, মনটা খুব খারাপ আজকে।
আমি চুপ করে রইলাম। বিলু বলল, আপনার খাওয়া হয়েছে?
না।
আপনার জন্য ভাত বাড়ছি। আমি এখনো খাই নি। নীলু আপাও খায় নি।
না, আমি খাব না। কাদের রোধে গিয়েছে।
তবু খেতে হবে।
নীলু বলল, ইনি খেতে চাচ্ছেন না, তবু জোর করছ, কেন?
না, খেতেই হবে।
আজিজ সাহেব বললেন, কাদেরের ব্যাপারে কী করবে?
করার তো তেমন কিছু নেই।
তা ঠিক।
আর কোনো কথাবার্তা হল না। বিলু এসে বলল, আসুন ভাত দিয়েছি।
আমি অস্বস্তির সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। ভাত খেতে গিয়ে দেখি, নীলু খেতে আসে, নি। তার নাকি মাথা ধরেছে।
বিলু বলল, মাথা ধরছে না হাতি, আমার সঙ্গে রাগ। আপনাকে খেতে বলেছি তো, তাই তার রাগ উঠে গেছে। তার রাগ করবার কী?
আমি চুপ করে রইলাম। বিলু বলল, সে অনেক কিছুই করে, যা আমার ভালো লাগে না। কিন্তু আমি কি রাগ করি?
রাগ কর না?
মাঝে মাঝে করি, কিন্তু কাউকে বুঝতে দিই না। আমার মুখ দেখে কেউ কিছু বুঝতে পারবে না। এই যে কাদের বেচারা মারা গেল–
কাদের মারা গেছে বলছ কেন?
মিলিটারি ধরলে কি আর কেউ ফেরে? কেউ ফেরে না।
উপরে এসে দেখি, ছেলেটি তখনো ঘুমায় নি। বারান্দায় বসে আছে।
কি রে, ঘুমাস নি?
দরবেশ সাবের লাগি পেট পুড়ে।
পেট পুড়বার কিছু নাই। দেখবি সকালে ছেড়ে দেবে। মিলেটারির হাতে তো ধরা পড়ে নি। মিলিটারির হাতে ধরা পড়লে একটা চিন্তার কারণ ছিল।
ছেলেটা গম্ভীর হয়ে বলল, না স্যার, দরবেশ সবেরে আইজ রাইতেই গুলী করব।
দূর ব্যাটা, বলেছে কে তোকে?
আমার মনে আইতাছে স্যার। যোড়া আমার মনে অয় হেইড অয়।
বলে কী এই ছেলে! আমি সিগারেট ধরিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকলাম তার দিকে।
দরবেশ সাবরে খাওন দিছে, না।–দিছে-না শেষ খানাটা বালা হওয়ন দরকার। কী কন স্যার?
কী বলছিস এইসব?
দরবেশ সাব আর জিন্দা নাই, স্যার।
আমি একটা কড়া ধমক লাগালাম। রাগী গলায় বললাম, দেখবি ভোরবেলা চলে এসেছে। দরবেশ মানুষ, তাকে খামাখা গুলী করবে কেন?
ইজাবুদ্দিন সাহেব আগের মতোই আমাকে খাতির-যত্ন করলেন। প্রায় দশ বার বললেন, আমার সাধ্যমতো খোঁজখবর করব। সন্ধ্যার মধ্যে ইনশাল্লাহ খবর বের করব।
ছাড়া পাবে তো?
যদি বেঁচে থাকে, তাহলে ইনশাল্লাহ ছাড়া পাবে।
বেঁচে না থাকার সম্ভাবনা আছে নাকি?
আছে শফিক সাহেব, সময় খারাপ। চারদিকে ঝামেলা, কারোর মাথাই ঠিক নাই।
কোনো খবর পেলে জানাবেন।
ইনশাল্লাহ জানাব। চিন্তা করবেন না। ফি আমানুল্লাহ।
আমি সন্ধ্যার সময় এসে খোঁজ নেব।
কোনো দরকার নাই। কষ্ট করবেন কেন খামাখা?
ইজাবুদ্দিন সাহেব আমাকে রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে এলেন। গলার স্বর খাদে নামিয়ে বললেন, চীনা সৈন্যরা চলে আসছে, জানেন নাকি?
চীনা সৈন্য?
জ্বি, হাজারে হাজারে আসছে। যে-সব ফুটফাট শুনেন, সব দেখবেন খতম।
চীনা সৈন্য আসছে, এইসব বলল কে আপনাকে?
হা-হা-হা! খবরাখবর কিছু কিছু পাই। ব্রিগেডিয়ারের সঙ্গে খানা খেয়েছি। গত সপ্তাহে। খুব হামদদি লোক।
আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, ইজাবুদ্দিন সাহেব।
জ্বি।
এই সব বিশ্বাস করবেন না। পাকিস্তানীদের অবস্থা খারাপ।
এইটা ভাইসাবে আপনি কী বললেন?
ঠিকই বললাম। আপনি নিজেও সাবধানে থাকবেন।
মাবুদে এলাহী, আমি সাবধানে থাকব কেন? আমি কী করলাম?
ইজাবুদ্দিন সাহেব কাজের লোক। বিকালবেলোয় খবর আনলেন, কাদের মিয়া, পিতা বিরাম মিয়া, গ্রাম কুতুবপুর, থানা কেন্দুয়া–জীবিত আছে। দু-এক দিনের মধ্যে ছাড়া পাবে। তবে দরবেশ বাঙ্গু ভাই নামে কেউ ওদের কাস্টডিতে নেই। এই নামে কোনো লোককে আটক করা হয় নি।
দু দিনের জায়গায় এক সপ্তাহ হয়ে গেল, কাদের ফিরল না। আমি রোজই এক বার যাই ইজাবুদ্দিন সাহেবের কাছে! ভদ্রলোকের ধৈর্য সীমাহীন–একটুও বিরক্ত হন না! রোজই বলেন, বলছি তো ছাড়া পাবে। সবুর করেন। আল্লাহ্ দুই কিসিমের লোক পছন্দ করে, এক–যারা নেক কাজ করে, দুই–যারা সবুর করে। সবুরের মতো কিছু নাই।
কাদেরের অনুপস্থিতিতে আমার খাওয়াদাওয়া হয় নিচতলায় নেজাম সাহেবদের ওখানে। ওদের একটি কাজের মেয়ে রানা করে দিয়ে যেত। এখন আর আসছে না। এখন রান্না করছেন মতিনউদ্দিন সাহেব। চমৎকার রান্না। দৈনন্দিন খাবারের ব্যাপারটি যে এত সুখকর হতে পারে, তা আমার ধারণার বাইরে ছিল। অবশ্য নেজাম সাহেব প্রতিটি খাবারের কিছু-না-কিছু ত্রুটি বের করেন।
গরুর গোসতে কেউ টমেটো সস দেয়া করেছেন কী আপনি? খেতে ভালো হলেই তো হয় না। একটা নিয়ম-নীতি আছে। গোসতের সঙ্গে আলু ছাড়া আর কিছু দেওয়া যায় না।
কেন? দেওয়া যায় না কেন?
আরে ভাই যায় না, যায় না। কেন তা জানি না। টেস্টের চেয়ে দরকার ফুড ভ্যালু। বুঝলেন?
নেজাম সাহেবের আরেকটি দিক হচ্ছে, নিতান্ত আজগুবী সব কুৎসা খুব বিশ্বাসযোগ্য ভঙ্গিতে বলা। এগুলি হয়। সাধারণত ভাত খাবার সময়। সেদিন যেমন জলিল সাহেবের প্রসঙ্গ তুললেন, জলিল সাহেবের স্ত্রীর ভাবভঙ্গি লক্ষ করেছেন?
কী ভাবভঙ্গি?
না, তেমন কিছু না।
তেমন কিছু না হলে লক্ষ করব কীভাবে?
জলিল সাহেবের ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা যেন কেমন কেমন।
আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, কেমন কেমন মানে?
নেজাম সাহেব প্রসঙ্গ পাল্টে বললেন, জলিল সাহেবের ভাই বিয়ে-শাদি করেন নাই, জানেন তো?
না, জানি না। তাতে কী?
নেজাম সাহেব। আর কথা বললেন না। এক দিন চোখ ছোট করে বিলুর প্রসঙ্গ তুললেন, মেয়েটাকে দেখে কী মনে হয় আপনার, শফিক ভাই?
কী মনে হবে! কিছুই মনে হয় না।
তাই বুঝি?
নেজাম সাহেব মাথা হেলিয়ে হে— হে করে হাসতে লাগলেন, যা শুনে গা রি রি করে! আমার অনুপস্থিতিতে এই লোকটি আমাকে নিয়ে কী বলে কে জানে?
চাঁদপুর থেকে জলিল সাহেবের ভাইয়ের একটি চিঠি এসেছে। তিনি গোটা গোটা হরফে লিখেছেন—
পরম শ্রদ্ধেয় বড়ো ভাই সাহেব,
সালাম পর সমাচার এই যে, আপনার পত্র খানি যথাসময়ে হস্তগত হইয়াছে। জলিল যে শেষ সময়ে আপনাদের মতো দরদী মানুষের সঙ্গে ছিল, ইহার জন্য আল্লাহর কাছে আমার হাজার শুকুর। সমগ্র জীবন আমি আল্লাহ পাকের নিয়ামত স্বীকার করিয়াছি। গাফুরুল রাহিমের কোনো কাজের জন্য মন বেজার করি নাই। কিন্তু আজকে আমার মনটায় বড়োই কষ্ট। আপনি লিখিয়াছেন জলিলের মাথার কাছে দাঁড়ায়ে বোন নীলু ও বোন বিলু, কাঁদতে ছিল। আল্লাহ্ তাদের বেহেস্ত নাসিব করুক, হায়াত দরাজ করুক। জলিলের পরম সৌভাগ্য আপনাদের মতো মানুষের সহিত তাহার দেখা হইল। আপনি লিখিয়াছেন, তাহার মৃত্যুসংবাদ যেন এখন আর তাহার স্ত্রী ও কন্যার নিকট না দেই। আপনার কথাটি রাখিতে না পারার জন্য আমি বড়ই শরমিন্দা। হাদিসে জন্ম ও মৃত্যুসংবাদ গোপন না করার নির্দেশ আছে। আল্লাহপাক যাহাকে দুঃখ দেন, তাহাকে দুঃখ সহ্য করার ক্ষমতাও দেন। গাফুরুর রহিমের কাছে আপনার জন্য দোয়া করি। আল্লাহরপাক আপনার হায়াত দরাজ করুক, আমিন।
ইতি
আপনার স্নেহধন্য
আব্দুর রহমান
চিঠি পড়ে কেন জানি খুব মন খারাপ হয়ে গেল। আমি চিঠিটি হাতে নিয়ে আজিজ সাহেবের সঙ্গে কথা বলতে গেলাম। ঘরে ঢুকেই অপ্রস্তুত হয়ে দেখি বিলু মাথা নিচু করে কাঁদছে। আজিজ সাহেব এবং নীলু গম্ভীর হয়ে বসে আছে। আমাকে ঢুকতে দেখেই নীলু বিলুউঠে চলে গেল। আজিজ সাহেব এই প্রথম বারের মতো শব্দ শুনে আমাকে চিনতে পারলেন না, থেমে থেমে বললেন, কে, মতিনউদ্দিন?
জ্বি-না, আমি। আমি শফিক।
ও শফিক। বস। বস তুমি। মনটাতে খুব অশান্তি।
আমি বেশ খানিকক্ষণ বসে রইলাম। আজিজ সাহেব কোনো কথা বললেন না। অন্য দিনের মতো বিলুকে ডেকে চায়ের ফরমাশ করলেন না। আমি যখন চলে আসবার জন্যে উঠে দাঁড়িয়েছি, তখন তিনি ক্লান্ত স্বরে বললেন, আমি আমার মেয়ে দুটিকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যাব।
আমি অবাক হয়ে বললাম, কখন ঠিক করলেন?
অনেক দিন ধরেই চিন্তা করছিলাম। এখন মানস্থির করেছি। নেজাম সাহেবকে বলেছি আমাদের নিয়ে যেতে।
কবে নাগাদ যাবেন?
জানি না এখনো, নেজাম সাহেব অফিস থেকে ছুটি নেবেন, তারপর।
আজিজ সাহেবেরা শুক্রবার দুটার সময় সত্যি সত্যি চলে গেলেন।
যাবার আগে বিলু দেখা করতে এল আমার সঙ্গে। খুব হাসিখুশি ঝলমলে মুখ। এসেই জিজ্ঞেস করল, চাট করে বলুন তো, সব প্রাণীর লেজ হয়, আর মানুষের হয় না কেন? চট করে বলুন!
আমি চুপ করে বইলাম। বিলু হাসতে হাসতে বলল, কি, পারলেন না তো? না, আপনার বুদ্ধিাশুদ্ধি একেবারেই নেই।
আমি বললাম, তোমাদের সঙ্গে আবার কবে দেখা হবে কে জানে?
বিলু গম্ভীর হয়ে বলল, আর দেখাটেখা হবে না। কিছু বলবার থাকলে বলে ফেলুন। কি, আছে কিছু বলবার?
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি, কিছু বলতে পারি না। নিচ থেকে নীলু তীক্ষ্ণ স্বরে ডাকে, এত দেরি করছিস কেন, এই বিলু, এই?
মতিনউদ্দিন সাহেব জিনিসপত্র নিয়ে উঠে আসেন দোতলায়। একা— একা নিচতলায় থাকতে ভয় লাগে তাঁর। তার উপর কদিন আগেই নাকি ভয়াবহ একটি স্বপ্ন দেখেছেন।–একটি কালো রঙের জীপে করে তাকে যেন কারা নিয়ে যাচ্ছে। যারা নিয়ে যাচ্ছে, তাদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তবে বোঝা যাচ্ছে লোকগুলি অসম্ভব বুড়ো। অনেক দূর গিয়ে জীপটি থামল। তিনি জীপ থেকে নামলেন। কিন্তু বুড়ো লোকগুলি নামল না। যো-জায়গাটিতে তিনি নেমেছেন, সেটি পাহাড়ী জায়গা, খুব বাতাস বইছে। তিন ভয় পেয়ে বললেন, এই, তোমরা আমাকে কোথায় নামালে?
বুড়ো লোকগুলি এই কথায় খুব মজা পেয়ে হোহো করে হাসতে লাগল। তিনি দেখলেন, জীপটি চলে যাচ্ছে। তিনি প্ৰাণপণে ডাকতে লাগলেন, এই–এই।