৯
আসলে ফেলুদা বাথরুমে যায়নি। ও খুব ভোর থাকতে উঠে নীচে চলে গিয়েছিল একটা টেলিফোন করতে। বম্বেতে ট্রাঙ্ক-কল। আমি স্নান-টান সেরে নীচে গিয়ে দেখি ফেলুদা টেলিফোনে কথা বলছে। শেষ হলে পর জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী ব্যাপার?’ ও বলল, ‘শশধরবাবু বম্বেতে নেই। আজ ভোরেই বেরিয়ে পড়েছেন। বোধহয় এখানেই আসছেন। আমার আগের টেলিগ্রামটাতে হয়তো কাজ হয়েছে।’
চা খেতে খেতে ফেলুদা বলল, ‘আজ একটা এক্সপেরিমেন্ট করব। মনে হচ্ছে একটা ব্যাপারে একটু ছেলেমানুষি করে ফেলেছি। সেটা সত্যি কি না পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’
এক্সপেরিমেন্টটা কী সেটা আর আগে থেকে জিজ্ঞেস করতে সাহস হল না। কোথায় সেটা হবে জিজ্ঞেস করাতে ফেলুদা বলল তার জন্য একটা নিরিবিলি জায়গা চাই। নিরিবিলি ঘর হলে হবে কি না জিজ্ঞেস করাতে ফেলুদা চটে গিয়ে বলল, ‘তোর মুণ্ডু! ঘর তো হোটেলেই রয়েছে। চাই একটা রাস্তা, যেখানে লোকজনের ভিড় নেই। কারণ লোকে দেখে ফেললে ভাববে পাগল। একবার নাথুলা রোডের দিকটায় গিয়ে দেখতে হবে।’
সত্যি বলতে কী, এই দু’দিনে গ্যাংটকের একটামাত্র রাস্তা ছাড়া আর বিশেষ কিছুই দেখা হয়নি। তাই একটু হেঁটে বেড়াবার ছুতো পেয়ে ভালই লাগছিল।
হোটেল থেকে বেরিয়েই ডক্টর বৈদ্যর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। রোদের বেশ ঝাঁঝ, তাই ভদ্রলোক দেখি সানগ্লাস পরেছেন। বললেন, ‘কোথায় চললেন আপনারা?’
ফেলুদা বলল, ‘শহরটা দেখাই হয়নি। ভাবছিলাম একটু ওপর দিকটায় যাব—প্যালেসের ও দিকে।’
‘আমি যাচ্ছি গাড়ির সন্ধানে। আজ দিনটা ভাল আছে। এ গুড ডে টু মেক দ্যাট ট্রিপ টু পেমিয়াংচি। আপনারা না এলে কিন্তু একটা খুব ভাল জায়গা মিস করবেন।’
‘যাবার তো ইচ্ছে আছে।’
‘আমি থাকতে থাকতে চলে আসুন। গ্যাংটক জায়গাটা খুব সুবিধের না। বিশেষ করে আপনার পক্ষে নিরাপদ নয় মোটেই।’
ভদ্রলোক হাসিমুখে হাত নেড়ে চলে গেলেন।
আমি বললাম, ‘হঠাৎ ওকথাটা বললেন কেন ভদ্রলোক?’
ফেলুদা হাঁটতে হাঁটতে বলল, ‘তুখোড় আছেন বাবাজি। আমি যেমন ওকে সন্দেহ করছি, ও-ও তেমনই উল্টে আমাকে সন্দেহ করছে। হয়তো বুঝে ফেলেছে যে, আমি একটা গোলমালে জড়িয়ে পড়ছি।’
‘কিন্তু তোমাকে তো সত্যিই হুমকি দিয়ে লিখেছে ফেলুদা। খাটের উপর কাগজটা দেখলাম যে।’
‘এটা কি নতুন জিনিস হল?’
‘তা অবিশ্যি নয়।’
‘তবে! তোর যদি ধারণা হয়ে থাকে যে, ওই একটা তিব্বতি কথার জন্য আমি তদন্ত বন্ধ করে দেব, তা হলে তুই ফেলু মিত্তিরকে এখনও চিনিসনি।’
মুখে সেটা না বললেও, মনে মনে বললাম যে যদি কেউ ফেলু মিত্তিরকে চেনে তবে সেটা আমিই। বাদশাহী আংটির ব্যাপারে হুমকি সত্ত্বেও কী সাংঘাতিক বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ফেলুদা সেটা তো আমি দেখেছি।
চড়াই রাস্তাটা উঠে ক্রমে ফ্ল্যাট হয়ে গিয়ে শেষটায় একটা প্রকাণ্ড চওড়া—প্রায় দার্জিলিং-এর ম্যালের মতো—খোলা জায়গায় এসে পড়েছে। সেটার মাঝখানে একটা নিচু রেলিং দিয়ে ঘেরা ফুলের কেয়ারি করা গোল জায়গা রয়েছে। আবার সেটার মাঝখানে একটা হলদে কাঠের পোস্টে এদিকে-ওদিকে পয়েন্ট করা সব রাস্তা আর জায়গার নাম লেখা ফলক রয়েছে। ডান দিকে যে ফলকটা পয়েন্ট করা, তাতে লেখা রয়েছে ‘প্যালেস’। ডান দিকে চেয়ে দেখলাম, দু’দিকে গাছের সারিওয়ালা একটা সোজা রাস্তার শেষ মাথায় একটা বাহারের গেট দেখা যাচ্ছে। বুঝলাম ওটাই হল প্যালেসের গেট।
বাঁ দিকে দেখানো ফলকটায় লেখা রয়েছে ‘নাথুলা রোড।’ আশেপাশে কোনও লোকজন নেই। দূরে প্যালেসের রাস্তায় কালকের দেখা বিদেশি টুরিস্টরা ক্যামেরা হাতে পায়চারি করছে। ফেলুদা বলল, ‘লক্ষণ ভালই। চ’ বাঁ দিকে চ’।’
যে নাথুলা রোড দিয়ে একেবারে বর্ডারে চলে যাওয়া যায়, সেটা দিয়ে আমি আর ফেলুদা এগিয়ে চললাম এক্সপেরিমেন্টের উদ্দেশ্যে। রাস্তাটা ক্রমেই নির্জন হয়ে এসেছে। ফেলুদা বাঁ দিকের খাড়াই পাহাড়ের দিকে দৃষ্টি রেখে এগিয়ে চলেছে। এদিকটা শহরের পুব দিক। কাঞ্চনজঙ্ঘা হল পশ্চিম দিকে। এ দিকে বরফ দেখা যায় না, তবে নীচে বহু দূরে দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া একটা নদী দেখা যায়। আরেকটা জিনিস যেটা দেখা যায় সেটা হল রোপওয়ে। শূন্যে টাঙানো তারের রাস্তা দিয়ে ঝুলন্ত গাড়ি চলেছে মাল নিয়ে পাহাড়ের এ-মাথার এক স্টেশন থেকে ও-মাথার আরেক স্টেশনে।
রোপওয়ে দেখতে এত ভাল লাগছিল যে ফেলুদার প্রথম ডাকটা শুনতেই পাইনি। তারপর শুনলাম, ‘অ্যাই তোপ্সে—এদিকে আয়!’
পাহাড়ের গা বেয়ে খানিক দূরে উঠে গেছে ফেলুদা, আর সেখান থেকে আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
আমিও উঠে গেলাম। ফেলুদার পাশে একটা পাথর পড়ে আছে—সাইজে সেটা একটা পাঁচ নম্বরের ফুটবলের মতো।
‘এই পাথরের পাশে দাঁড়া।’
দাঁড়ালাম। এ রকম বাধ্য অ্যাসিস্ট্যান্ট কোনও গোয়েন্দা কখনও পেয়েছে বলে আমার মনে হয় না।
‘আমি যাচ্ছি নীচে। ও দিক থেকে এ দিকে হেঁটে যাব। আমি যখন বলব, তখন তুই পাথরটা ঠেলে নীচের দিকে গড়িয়ে দিবি। যেভাবে রয়েছে পাথরটা, বুঝতেই পারছিস একটা ঠেলা দিলেই ওটা নীচের দিকে গড়িয়ে যাবে। পারবি তো?’
‘জলের মতো সোজা।’
ফেলুদা নীচে নেমে যেদিক দিয়ে এসেছি সেদিকটায় চলে গেল। তারপর শুনতে পেলাম ওর হাঁক—‘রেডি?’
আমি চেঁচিয়ে বললাম ‘রেডি’—আর তারপরেই পেলাম ফেলুদার পায়ের আওয়াজ।
আমার লাইনে আসার আট-দশ পা আগেই ফেলুদা চেঁচিয়ে উঠল—‘গো!’ আমি পাথর ঠেলে দিলাম। ফেলুদা হাঁটা থামাল না। দেখলাম পাথর গড়িয়ে রাস্তায় পৌঁছানোর আগেই ফেলুদা তার অন্তত দশ পা সামনে এগিয়ে চলে গেছে।
‘দাঁড়া!’
ফেলুদা ফিরে এল, সঙ্গে পাথর।
‘এবার তুই নীচে যা। তোকে হাঁটতে হবে। হাঁটা থামাবি না। আমি পাথর ফেলব। যদি দেখিস পাথর তোর দিকে তাগ করে আসছে—হয়তো তোর গায়ে এসে লাগবে—তুই লাফিয়ে পাশ কাটাতে পারবি তো?’
‘জলের মতো সোজা।’
এবার আমি হাঁটতে শুরু করলাম—আড়চোখ পাহাড়ের দিকে। ফেলুদা খুব হিসেব করে জিভটিব কামড়ে একটা বিশেষ টাইমে পাথরটাকে মারল ঠেলা।
আমি থামলাম না। লাফিয়ে পাশ কাটানোরও দরকার হল না। পাথর আমি পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় পড়ে দুটো পাক খেয়ে ডান দিকের পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নীচের দিকে চলে গেল।
ফেলুদা যেখানে ছিল সেখানেই বসে পড়ল। কী আর করি—আমিও তার কাছে গিয়ে হাজির হলাম।
‘কী মূর্খ আমি! কী মূর্খ! এই সহজ—’
ফেলুদার কথা শেষ হল না। একটা শব্দ আমার কানে আসতেই এক ঝলক উপরে তাকিয়ে এক হ্যাঁচকা টানে আমি ফেলুদাকে তার জায়গা থেকে প্রায় তিন হাত পাশে সরিয়ে আনলাম, আর ঠিক সেই মুহূর্তেই একটা বিরাট পাথরের চাঁই এক সেকেন্ড আগে যেখানে ফেলুদা ছিল, সেখান দিয়ে গড়িয়ে গিয়ে বুনো লাল ফুলের একটা প্রকাণ্ড ঝোপড়াকে তছনছ করে দিয়ে রাস্তায় একবার মাত্র ঠোক্কর দিয়ে পিছনের ঢাল দিয়ে নেমে অদৃশ্য হয়ে গেল।
ফেলুদা ‘জায়গাটা সত্যিই নিরাপদ নয়’ বলে আমার হাত ধরে টেনে একেবারে রাস্তায়। তারপর দুজনে আর টুঁ শব্দটি না করে পা চালিয়ে এক নিশ্বাসে একেবারে তেমাথায় পৌঁছে গেলাম। একটা মিলিটারি লরি আমাদের পাশ কাটিয়ে নাথুলার দিকে চলে গেল। ফেলুদা খালি একবার মৃদুস্বরে বলল, ‘থ্যাঙ্কস, তোপসে।’ তার দিকে চেয়ে দেখি সে গম্ভীর হয়ে গেছে। আমার মনের যে কী অবস্থা সে আর বলে কাজ নেই।
কাছেই একটা ছাউনি দেওয়া বসবার ঘর ছিল। অনেকটা ইডেন গার্ডেনের ব্যান্ডস্ট্যান্ডের মতো দেখতে। আমরা তার ভিতরে গিয়ে বেঞ্চিতে বসে হাঁপ ছাড়লাম। ফেলুদা কপালের ঘাম মুছে বলল—
‘কাউকে দেখতে পেয়েছিলি?’
বললাম, ‘না। অনেক উঁচু থেকে পাথরটা এসেছিল। আমি যখন দেখেছি তখনই তার ভেলোসিটি অনেক।’
ফেলুদা একটা সিগারেট ধরিয়ে ভাল করে একটা টান দিয়ে বলল, ‘আর ঢিলেঢালা ভাব চলবে না। একটা কুইক এসপার-ওসপার হওয়া দরকার।’
আমি বললাম, ‘কিন্তু অনেক প্রশ্নের তো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না ফেলুদা।’
‘কে বললে তোকে?’ ফেলুদা খেঁকিয়ে উঠল। ‘কাল রাত্রে কখন ঘুমিয়েছি জানিস? আড়াইটে। ফেলু মিত্তির ঘোড়ার ঘাস কাটছে না। এক্সপেরিমেন্ট সাক্সেসফুল। যা সন্দেহ করেছিলাম তাই। পাথর এসে গাড়িতে পড়েনি। ওয়ান ইন এ মিলিয়ন চান্সের উপর নির্ভর করে কেউ খুন করে না। প্ল্যানটা ছিল অন্য, কিন্তু সেটাকে অ্যাক্সিডেন্টের চেহারা দেবার জন্য পাথরটা ফেলা হয়েছিল। মিস্টার শেলভাঙ্করকে অজ্ঞান করা হয়েছিল আগেই। তারপর তাকে জিপ সমেত খাদের মধ্যে ফেলা হয়েছিল, তারপর সব শেষে ফেলা হয়েছিল পাথর।’
‘কিন্তু তা হলে…ড্রাইভারটা যে…’
‘ড্রাইভারকে হাত করা হয়েছিল। এ বিষয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই, কারণ এ ছাড়া জিনিসটা সম্ভব নয়।’
‘কিম্বা ড্রাইভার তো নিজেই খুন করে থাকতে পারে?’
‘না। কারণ, মোটিভ কী? তার পক্ষে মূর্তিটার কথা জানার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা ছিল বলে মনে হয় না।’
ফেলুদা উঠে পড়ল।
‘আমাদের টার্গেট হচ্ছে SKM 463।’
কিন্তু দুঃখের বিষয় SKM 463-এর খোঁজ করে তাকে পাওয়া গেল না। সে গাড়ি কাল রাত্রেই নাকি শিলিগুড়ি চলে গেছে।
‘আসলে কী জানিস, জিপটা নতুন বলে সকলেরই ওটার উপর চোখ। ওটা তাই আর বসে থাকে না।’
‘তা হলে আমরা কী করব?’
‘দাঁড়া, একটু ভাবতে দে। সব গণ্ডগোল হয়ে যাচ্ছে।’
জিপ-স্ট্যান্ড থেকে হোটেলে ফিরে এলাম। ডাইনিং রুমে বসে বেয়ারাকে ডেকে কোল্ড ড্রিঙ্কের অর্ডার দিলাম। ফেলুদার চোখ লাল, চুল উসকো-খুসকো, মুঠো করা ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতের তেলোতে বার বার ব্যর্থ ঘুঁষি মারছে।
‘কবে পৌঁছেছি আমরা এখানে?’ সে হঠাৎ প্রশ্ন করল।
‘চোদ্দোই এপ্রিল।’
‘চোদ্দোই না পনেরোই?’
‘চোদ্দোই। তুমি ভুলে যাচ্ছ ফেলুদা—সেদিন ছিল পয়লা বৈশাখ—’
‘ইয়েস ইয়েস। আর খুন হয়েছে কবে?’
‘এগারোই।’
‘সেদিন গ্যাংটকে ছিল শেলভাঙ্কার, নিশিকান্ত, হেলমুট আর ডক্টর বৈদ্য।’
‘আর বীরেন্দ্র।’
‘ধরে নিচ্ছি বীরেন্দ্রও ছিল। ধরে নিচ্ছি প্রাইটেক্স ভুল করেনি। আচ্ছা…নিশিকান্তবাবুর জানালা দিয়ে কবে কাগজ ফেলল?’
‘যেদিন আমরা এসেছি, সেদিনই রাত্রে।’
‘চোদ্দোই রাত্রে। গুড। সে সময় কে কে ছিল শহরে?’
‘হেলমুট, শশধর, ধরে নিচ্ছি বীরেন্দ্র, আর…আর…’
‘নিশিকান্ত।’
‘নিশিকান্ত তো থাকবেই!’
‘শুধু থাকবেই না। ও যদি কোনও গোলমাল করে থাকে, তা হলে নিজের উপর থেকে সন্দেহ হটিয়ে দেবার জন্য নিজেই নিজের ঘরে কাগজ ফেলতে পারে, নিজেই খাদের মধ্যে লাফিয়ে পড়ে ‘হেল্প’ বলে চিৎকার করতে পারে।’
‘কী গোলমাল করতে পারেন নিশিকান্তবাবু?’
‘সেটা এখনও জানি না। খুন করার সাহস ওর আছে বলে মনে হয় না। লোকটা নেহাতই ভিতু, আর সেটা অভিনয় নয়।’
‘তা হলে আর কেউ বাকি রইল কি?’
‘ডক্টর বৈদ্য! ডক্টর বৈদ্যকে বাদ দিবি না! তিনি কবে কালিম্পং গেছেন, বা অ্যাট অল গেছেন কি না—সেটা তো আমরা জানি না! ডাকবাংলো থেকে যে অন্য জায়গায় গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকেননি, তার গ্যারান্টি কী?’
ফেলুদা এক চুমুকে এক গেলাস সিকিম অরেঞ্জ শেষ করে বলল, ‘একমাত্র শশধরবাবুর গতিবিধি সম্বন্ধে সন্দেহের কোনও কারণ নেই—কারণ তিনি আমাদের সঙ্গে একই প্লেনে একই জিপে গ্যাংটক এসেছেন, এবং পরদিন বম্বে ফিরে গেছেন। ফিরে যে গেছেন সেটা তাঁর বাড়ির লোকেরা টেলিফোনে কনফার্ম করেছে। অবিশ্যি এখন তিনি বম্বেতে নেই। একটা চান্স আছে, হি ইজ অন হিজ ওয়ে হিয়ার। মনে হচ্ছে পেমিয়াংচিটা—’
ফেলুদা কথা থামাল। বাইরে থেকে একজন লোক এসে হোটেলের ভিতর ঢুকে ম্যানেজারের টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল। লোকটা আমাদের জার্মান হিপি হেলমুট উঙ্গার। ম্যানেজারকে কী জিজ্ঞেস করাতে তিনি আমাদের দিকে আঙুল দেখিয়ে দিলেন।
‘ওঃ—তোমরা এখানেই আছ? আমি দেখতেই পাইনি।’
আমরা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। হেলমুটের যেন একটু কিন্তু কিন্তু ভাব। বলল, ‘একটা জরুরি আলোচনা ছিল। তোমাদের ঘরে যাওয়া যায় কি?’