০৯ অধ্যায় – দ্য মার্চ

০৯ অধ্যায় – দ্য মার্চ

সানজু বলেন:

এক. সাধারণত একটা সামরিক অভিযানে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যখন প্রস্তুতি নেবেন তখন তাদের মুখোমুখি অবস্থান নেবেন, পাহাড় পেরিয়ে সমভূমির কাছাকাছি থাকবেন। পাহাড়ের পাদদেশে উঁচুভুমিতে শিবির স্থাপন করুন এবং সূর্যের মুখোমুখি থাকুন। নিচু সমভুমিতে যুদ্ধ করুন। আক্রমণের ক্ষেত্রে কিছুতেই পাহাড়ে উঠবেন না। যতটা পারবেন চেষ্টা করুন পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নিতে। কোন নদী পেরিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে হলে সেটা পার হয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে যান। নদীর কিনারায় একেবারেই থাকবেন না। শত্রুকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে যদি নদী পার হতেই হয় তবে পানির কিনারায় তাবু তৈরি করবেন না। শত্রুর অর্ধেক সৈন্য নিজেদের সৈন্যদের ভেতরে মিশে যেতে দিন, তারপর আঘাত হানলে সুবিধা বেশি পাবেন।

হো ইয়েন-সি এর ভাষ্যমতে, এক বসন্ত এবং শরৎকালের মধ্যবর্তী সময়ে ডিউক সাং এসেছিলেন হাং নামক স্থানে চু সৈন্যদের আক্রমণের উদ্দেশ্যে। ডিউক সাং তার সৈন্যদেরকে আক্রমণের নির্দেশ দিলেন যখন চু সৈন্যরা সকলে নদী পেরিয়ে গেছে। যুদ্ধ মন্ত্রী বলেন: আমাদের চেয়ে শত্রু সৈন্য অনেক বেশি ছিল। আমি ডিউক সাং এর কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম চু সৈন্যদের আক্রমণের। জন্য, তখনও তারা সকলে নদী পেরোতে পারেনি। ডিউক সাং জবাবে বলেছিলেন: না, এখনই নয়।’

ইতোমধ্যে চু সৈন্যরা নদী পেরিয়ে গেছে কিন্তু তখনও অবস্থান নিতে পারে নি, যুদ্ধ মন্ত্রী আবারও আক্রমণের অনুমতি চাইলে ডিউক বলেন: ‘এখনও না । তারা তৈরি হলে তারপরই আমরা আক্রমণে যাব।’

সে যুদ্ধে সাং সৈন্যরা পরাজিত হয়েছিল, ডিউক মারাত্মকভাবে আহত হলেন, এবং তার অফিসারদেরকে কতল করা হয়।

দুই. আক্রমণের উদ্দেশ্য থাকলে, আপনার প্রতিপক্ষকে নদীর কিনারায় আক্রমনের সুযোগ দেবেন না। সূর্যের দিকে মুখ করে উঁচু জমিতে অবস্থান নিন। নিচু ভ্যালিতে কখনও অবস্থান নেবেন না।

এসব কিছুই নদীর আশে পাশে বা কাছাকাছি অবস্থান নেয়ার কথা বলেছি। তীর থেকে সরে যেতে পারলে কিভাবে পরিকল্পনা সাজাবেন তার কথা বলছি এবার।

.

দ্রুত তীর থেকে সরে পড়ন। তীরে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করবেন না। যদিও বা নদীর কাছাকাছি এসে বিস্তীর্ণ জমিতে অবস্থান নিতেই হয় তবে পেছনে কিছু ঘাস বিস্তীর্ণ জমি ফেলে আসুন। এই কাজটা করবেন তখনই, যখন সেখানে অন্য কোন উপায় না থাকে। তীর পেরিয়ে যদি সমতল ভূমিতে পৌঁছুতে পারেন তবে নিজের সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিন। পেছনে এবং ডানে উঁচু ভুমি রাখুন, যুদ্ধক্ষেত্রটা হবে ঠিক সামনে আর পেছনে তো আপনি নিরাপদ।

আর এগুলো হল সমতলভূমিতে অবস্থান নেয়ার কৌশল।

সানজু বলেন, এই পরিস্থিতিতে কিভাবে অবস্থান নেবেন এবং সুযোগ আদায় করে নেবেন তার কৌশল বললাম। এই কৌশলগুলি অনুসরণ করে ইয়েলো রাজা চারটা রাজ্য দখল করতে সক্ষম হোন। একজন সৈন্য নিচু জমির চাইতে উঁচু জমিই বেশি পছন্দ করে; সূর্যের আলো পেতে চায় এবং ছায়াযুক্ত স্থান অপছন্দ করে। এমন পরিস্থিতি পেলে সৈন্য তার শক্তি সামর্থ্য সম্পর্কে আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে পারে। একজন সৈন্য কিছুতেই হেরে যাওয়া মেনে নিতে পারে না। যখন উঁচু ঢিবি, পাহাড়ি এলাকা পাবেন, তখন আপনাকে অবশ্যই সুর্যের আলোতে নিজেকে অবস্থান নেবেন এবং এগুলোকে ডানে এবং পেছনে রাখবেন।

এই কৌশলগুলি একজন সৈন্যের জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক এবং এর মাধ্যমে ভূমি থেকে যে সুবিধাগুলি পাওয়া যেত তা পেতে সাহায্য করবে। সানজু ভূমিকে বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত করেছেন :

‘হ্যাভেনলি ওয়লস’, ‘হ্যাভেনলি প্রিজনস’, ‘হ্যাভেনলি নেটস’, ‘হ্যাভেনলি ট্র্যাপস’, এবং হ্যাভেনলি ক্র্যাকস’, ইত্যাদি চোখে পড়লেই দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়ুন। শত্রুর দিকে আগানোর চিন্তা বাদ দিন।

সাও সাও এর ভাষ্যমতে, প্রবল বর্ষণে পাহাড়ের পাদদেশে পানি জমে যাওয়াই হল ‘প্রিসিপশাস টরেন্টস’। চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা সমতল ভূমিকে ‘হ্যাভেলি ওয়েল’ বলা হয়। যখন পাহাড়ের পাদদেশ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং যাওয়ার পথটা একটা খাঁচার মত তখন সেটাকে বলা হয় হ্যাভেনলি প্রিজন। যেখানে কিছু সৈন্য এগিয়ে গিয়ে মাঝে কোন ফাঁদে পড়ে বিভক্ত হয়ে যায় তখন সেটাকে বলা হয় ‘হ্যাভেনলি নেট’ । জোয়ারে ডুবে যাওয়া ভূমিকে বলা হয় হ্যাভেনলি ট্র্যাপ’। যেতে যেতে পাহাড়ি পথ যদি ছোট হয়ে আসে এবং মাঝ পথে কিছুটা ডুবন্ত তখন সেটাকে বলা হয় হ্যাভেনলি ক্র্যাক।

এমন জায়গাগুলোকে এড়িয়ে চলুন এবং আপনার শত্রুকে সেদিকে খেদিয়ে নিয়ে যান। তাদের মুখোমুখি হয়ে পেছনদিকে সরে এমন জায়গাগুলিতে ঢোকার জন্য তাদেরকে বধ্য করুন।

.

সৈন্যদের চলার পথে ভয়ঙ্কর গিরিখাত অথবা স্পঞ্জ জাতীয় ঘাসে ভরা বিপজ্জনক জমি থাকতে পারে। তাছাড়া ঘন বন জঙ্গল এবং পাহাড়ে ঘেরা দুর্গের মত জায়গা থাকতে পারে। এমন সব জায়গায় শত্রু ফাঁদ পেতে রাখতে পারে।

শত্রু খুবই কাছে কিন্তু অল্প সংখ্যক শত্রু দেখা যাচ্ছে তার মানে সে তার সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করছে। সে যখন আপনাকে তার দিকে আক্রমনের টোপ দেবে তার মানে সে এমন জায়গায় অবস্থান করছে যেখান থেকে সে ভুমির সুবিধাটা গ্রহন করে আপনার বিরুদ্ধে তা কাজে লাগাতে চাইছে। সানজু কিছু লক্ষনের কথা বলে গেছেন যেগুলো দেখে আপনার শত্রু সম্পর্কে ভাল অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন:

এক. ঘন বনে যদি গাছ নড়তে দেখা যায় তবে বুঝতে হবে শত্ৰু এগিয়ে আসছে।

দুই. ঘাসের উপর অনেক সংখ্যক দৃশ্যমান প্রতিবন্ধকতা লাগিয়ে রাখার মনে, শত্রু আপনাকে ভয় দেখিয়ে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।

তিন. বন-জঙ্গল থেকে হঠাৎ পাখি উড়ে গেলে বুঝবেন শত্রু সেনারা সেখানে ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করছে; বন্য প্রানি হচকিত হয়ে পালিয়ে গেলে মনে করবেন শত্রু হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে।

চার. দূরে কোথাও যদি ধুলি কলাম বা স্তম্ভের মত আকাশে উড়ে তখন বুঝবেন শত্রু রথ নিয়ে এগিয়ে আসছে; আর যদি দেখেন ধুলি মেঘ নিচু হয়ে অনেকখানি এলাকা জুড়ে, বুঝবেন শত্রুর পদাতিক বাহিনী আসছে।

তু-মু এর ভাষ্যমতে, শত্রুর রথ এবং ঘোড়ার গাড়িগুলো যখন দ্রুত এগিয়ে আসে তখন মাছের ঝাকের মত এক দল বেধে একের পর এক এগিয়ে আসে। আর এই কারনেই ধুলা সিলিন্ডারের মত লম্বাটে গোলাকার আকারে ঘুরতে থাকে।

চ্যাং ইউ এর ভাষ্যমতে, সৈন্য নিয়ে যখন সেনানায়ক এগুবেন তখন পরিদর্শক দল আগে আগে গিয়ে পথে কোন বিপত্তি আছে কিনা তা পর্যবেক্ষন করে। যদি দেখে যে শত্রু সেনারা ধুলার মেঘ উড়িয়ে এগিয়ে আসছে দ্রুত তারা ফিরে এসে কমান্ডিং জেনারেলকে তা জানায়।

পাঁচ. যখন দেখবেন ছোট ছোট ধুলার মেঘ একটা জায়গায় চারিপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে বুঝবেন শত্রু আগুন জ্বালানোর কাঠ সংগ্রহ করছে; আর যখন দেখবেন নিচু ধুলার মেঘ একটা বিশাল এলাকাজুড়ে স্থির হয়ে আছে তখন বুঝে নিতে হবে শত্রু সৈন্যরা সেখানে শিবির স্থাপন করছে।

ছয়. শত্রুর দুত যখন সুর পাল্টে কথা বলে অথচ পাশাপাশি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তারমানে সে আপনার বিরুদ্ধে অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

সাত. শত্রুর কথাবার্তায় যদি প্রতারণার ছাপ খুঁজে পান আর পুর্বেই একবার আক্রমণ করে গেছে, তাহলে তারা পশ্চাদপসরণ করার পায়তারা করছে।

আট. দুত যখন ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিমায় কথা বলে, এবং কিছু শর্তে সটকে পড়তে চায়, তাহলে বুঝতে হবে তারা যুদ্ধের কিছু সময় বিরতি চায়। আর এই সুযোগে তাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে।

নয়. কোন উপযুক্ত কারণ অথবা গ্রহনযোগ্য প্রতিনিধি ছাড়াই যখন শত্রু সন্ধির প্রস্তাব করে, বুঝতে হবে এর পেছনে নিশ্চই কোন ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে।

দশ. শত্রুর হালকা রথগুলো যখন ক্যাম্প ছেড়ে বাইরে এসে ঘোড়াসওয়ারদের পাশাপাশি অবস্থান নেয়, বুঝতে হবে শত্রু যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজাচ্ছে।

এগারো. যখন শত্রুসেনারা ক্ষিপ্র গতিতে যে যার স্থানে অবস্থান নিচ্ছে, তখন বুঝে নিতে হবে আক্রমনের সময় খুবই সন্নিকটে।

এগারো. যখন শত্রুর অর্ধেক সেনা এগিয়ে আসে আর বাকিরা পালিয়ে যাওয়ার ভান করে, তারমানে শত্রু আপনাকে ধোঁকা দেয়ার পায়তারা করছে।

বারো. যখন শত্রু সেনারা তাদের নিজেদের অস্ত্রের উপর ঠেস দিয়ে দাঁড়ায়, তখন বুঝে নিবেন তারা ক্ষুধায় ক্লান্ত।

তেরো. শত্রুর পানি সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত সৈন্যরা যখন পানি সংগ্রহ করতে এসে নিজেরাই পানি পান করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন বুঝতে হবে ক্যাম্পে থাকা সকল সৈন্যই পানির তৃষ্ণায় ব্যাকুল।

চৌদ্দ. শত্রু সৈন্যদের সামনে কোন সুযোগ পড়ে আছে আর তারা তা পেতে এগিয়ে না আসলে বুঝতে হবে তারা এখন ক্লান্ত-বিদ্ধস্ত।

পনেরো. শত্রু ক্যাম্পের ওপর পাখির আনাগোনা দেখলে বুঝবেন, তারা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়েছে।

চেন হাও এর ভাষ্যমতে, এর মাধ্যমে সানজু বুঝিয়েছেন, এই উপসর্গগুলো দেখে শত্রুর সম্পর্কে যা শুনছেন তা সত্য না মিথ্যা তার বিচার আপনি নিজেই করতে পারবেন।

ষোল. রাতের গভীরে শত্রু ক্যাম্প থেকে চেঁচামেচির শব্দ ভেসে এলে অনায়াসেই অনুমান করে নিতে পারবেন, শত্রু সৈন্যরা কোন কারনে ভয় পেয়েছে।

তু-মু এর ভাষ্যমতে, শত্রুর সৈন্যরা এখন ভীত এবং অনিরাপদ। তারা হৈ চৈ করে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে।

সতেরো. সৈন্যদের মাঝে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে, বুঝবেন সেনাপ্রধান তার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি হচ্ছেন।

চেন হাও এর ভাষ্যমতে, কোন আদেশ প্রদানে সেনানায়ক যদি কঠোর না হন তবে অফিসাররা সহজেই তা অমান্য করতে সাহসি হয়।

আঠারো. শত্রু শিবিরের চারিদিকে তাদের হাতে থাকা পতাকা ও ব্যনারগুলো এলোমেলোভাবে উড়তে, দেখলে বুঝবেন তাদের মনোবল তলানিতে এসে ঠেকেছে।

তু-মু এর ভাষ্যমতে, চ্যাং সাও এর যুদ্ধে লু রাজ্যের ডিউক চুয়াং এর কাছে চি পরাজিত হলে সাও কেই অনুরোধ করলেন চি সৈন্যদের পিছু নেয়ার অনুমতির জন্য। ডিউক সাও কেই কে জিজ্ঞেস করলেন তিনি পিছু নেয়ার অনুমতি কেন চাইছেন। কেউ জবাবে বললেন: ‘আমি তাদের রথগুলোকে এলোমেলোভাবে যেতে দেখেছি। আর তাদের পতাকা ও ব্যানারগুলি এখানে সেখানে উড়ছে। আর তাই তাদেরকে পিছু ধাওয়া করার জন্য অনুমতি চেয়েছি।’

উনিশ. অফিসারদের আচরণে অসন্তোষ দেখা গেলে বুঝবেন সেনাদলের ভেতরে হতাশা ভর করেছে।

চেন হাও এর ভাষ্যমতে, সেনানায়ক যদি অপ্রয়োজনীয় কোন পরিকল্পনা নিয়ে পড়ে থাকেন, তবে অফিসাররা যুদ্ধে অবহেলা করবে।

বিশ. যখন দেখবেন সৈন্যরা তাদের ঘোড়াগুলোকে যত্ন করে খাওয়াচ্ছে আর নিজেরাও পেটপুরে খেয়ে নিচ্ছে, কিন্তু কোন তৈজসপত্র ঝুলতে দেখছেন না আর তাবুও গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে, বুঝবেন তারা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতির শেষের দিকে।

একুশ. সৈন্যরা যখন সুযোগ পেলেই নিজেদের মধ্যে স্বল্পস্বরে কথা বলতে শুরু করে, এর মানে হল তারা তাদের জেনারেলের উপর বিশ্বাস হারাচ্ছে।

একুশ. কমান্ডারদের বেশি বেশি পুরস্কার দিতে দেখলে, বুঝবেন তারা আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছে, কারণ দীর্ঘ অভিযানের শেষের দিকে তারা সেনা বিদ্রোহের ভয়ে থাকে। আর বেশি বেশি শাস্তি দিতে দেখলে বুঝবেন কমান্ডাররা প্রচন্ড দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছে।

বাইশ. অফিসাররা যখন দোষী সৈন্যদেরকে শাস্তি দিতে ভয় পায়, এর মানে শত্রু সেনাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা চরমে পৌঁছে গেছে।

তেইশ. শত্রু সৈন্যরা যখন প্রবল উদ্বিপনাতে থাকে, আর আপনার সামনে থাকা সত্ত্বেও আক্রমণও করছে না আবার পিছুও হটছে না, তবে আসল ঘটনাটা কি তা আপনাকে অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে।

.

যুদ্ধে অল্প সংখ্যক সৈন্য কোন সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে না। শুধুমাত্র সৈন্যদের পেশিশক্তির উপর ভিত্তি করে যুদ্ধে যাওয়াটা বোকামি। সংখ্যায় কম মানে আপনার সরাসরি পেশিশক্তি বলে আক্রমনের সুযোগ কম। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় আক্রমনের কৌশলটা ব্যবহার করতে পারলে, কম সংখ্যক সৈন্য নিয়েই জেতা সম্ভব। যার দূরদৃষ্টি নেই আর যে তার শত্রুকে অবজ্ঞা করে, নিশ্চই শত্রুর কাছে তার পরাজয় ঘটে। সৈন্যদেরকে যদি তাদের বিশ্বস্ততার পুরস্কার না দিয়ে শাস্তি দেয়া হয় তবে তারা অবাধ্য হয়ে যাবে। যদি বাধ্য না হয়, তাহলে তাদেরকে নিয়োগ দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সৈন্যরা যদি বিশ্বাসযোগ্য হয়, আর তাদের ভুলের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা না থাকে তবে তাদেরকে দিয়ে যুদ্ধে পাঠানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। আর তাই, তাদেরকে দ্রভাবে নির্দেশ প্রদান করুন এবং তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে শেষ শক্তিটুকুও কাজে লাগান আর তখনই জয় নিশ্চিত তা আগে থেকেই বলে দেয়া যায়। যথাযথ কার্যকর নির্দেশ যদি সৈন্যদের জন্য প্রদান করা হয়, তবে তারা বাধ্য হবে। আর উপযুক্ত পরিবেশ ছাড়া অযথা নির্দেশ প্রদান করলে যেগুলোর কথার সাথে কাজের মিল থাকে না তা যদি সৈন্যদের উপর প্রদান করা হয় তবে তারা এমনিতেই অবাধ্য হবে। আদেশ যদি নিয়মিতভাবে বিশ্বাসযোগ্য এবং পর্যবেক্ষণ সমৃদ্ধ হয়, তখন কমান্ডারের সাথে সৈন্যদের সন্তোষজনক সম্পর্ক নিশ্চিত হয়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *