দ্বিতীয় অনুবাক
প্রথম সূক্ত : শালা
[ঋষি : ভৃগ্বঙ্গিরা। দেবতা : শালা। ছন্দ : অনুষ্টুপ, পংক্তি, উষ্ণিক, শক্করী, বৃহতী, ত্রিষ্টুপ, গায়ত্রী ]
উপমিতাং প্রতিমিতামথে পরিমিতামুত। শালায়া বিশ্ববারায়া নদ্ধানি বি চুমসি ॥১॥ যৎ তে নদ্ধং বিশ্ববারে পাশশা গ্রন্থিশ্চ যঃ কৃতঃ। বৃহস্পতিরিবাহং বলং বাঁচা বি স্বংসয়ামি তৎ ॥ ২॥ আ যযাম সং বব গ্রন্থীংশ্চকার তে দৃঢ়া। পরূংষি বিদ্বাংস্তেবেন্দ্রেণ বি তামসি ৷৩৷৷– বংশানাং তে নহনানাং প্রাণহস্য তৃণস্য চ। পক্ষাণাং বিশ্ববারে তে নদ্ধানি বি চূতামসি ॥ ৪৷ সন্দংশানাং পলদানাং পরিঞ্জল্যস্য চ। ইদং মানস্য পত্না নদ্ধানি চি চূতামসি ॥৫॥ যানি তেন্তঃ শিকান্যাবেধূ রণ্যায় কম। প্রতে নি তামসি শিবা মানস্য পত্নী ন উদ্ধিতা তম্বে ভব৷ ৬ ৷৷ হবির্ধানমগ্নিশালং পত্নীনাং সদনং সদঃ। সদো দেবানামসি দেবি শালে ॥৭৷ অক্ষুমোপশং বিততং সহস্রাক্ষং বিষুবতি। অবনদ্ধমভিহিতং ব্ৰহ্মণা বি তামসি ॥৮॥। যা শালে প্রতিগৃহ্নাতি যেন চাসি মিতা ত্ব। উভৌ মানস্য পত্নি তৌ জীবতাং জরদন্তী ॥৯৷৷ অমুত্রৈনমা গচ্ছতা দৃঢ়া নদ্ধা পরিস্কৃতা। যস্যাস্তে বিমস্যঙ্গমঙ্গং পরুষ্পরুঃ ॥১০৷৷ যা শালে নিমিমায় সংজভার বনস্পতী। প্রজায়ৈ চক্রে ত্বা শালে পরমেষ্ঠী প্রজাপতিঃ ॥১১। নমস্তস্মৈ নমো দাত্রে শালাপতয়ে চ কৃন্মঃ। নমোহগ্নয়ে প্রচরতে পুরুষায় চ তে নমঃ ॥১২৷৷ গোত অশ্বেভ্যো নমো যচ্ছালায়াং বিজায়তে। বিজাবতি প্রজাবতি বি তে পাশাংশৃমসি ॥১৩ অগ্নিমন্তচ্ছাদয়সি পুরুষান্ পশুভিঃ সহ। বিজাতি প্রজাতি বি তে পাশাংতামসি ॥১৪৷ অন্তরা দ্যাং চ পৃথিবীং চ য ব্যচস্তেন শালাং প্রতি গৃহ্নামি ত ইমাম্ যদন্তরিক্ষং রজসো বিমানং তৎকৃথেইহমুদরং শেবধিভ্যঃ। স্তেন শালাং প্রতি গৃহ্নামি তস্মৈ ॥ ১৫৷৷ উর্জতী পয়স্বতী পৃথিব্যাং নিমিতা মিতা। বিশ্বাং বিভ্রতী শালে মা হিংসীঃ প্রতিগৃহুতঃ ॥১৬৷ তৃণৈরাবৃতা পলদান্ বসানা রাত্রীব শালা জগতত নিবেশনী। মিতা পৃথিব্যাং তিষ্ঠসি হস্তিনী পদ্বতী॥১৭৷ ইটস্য তে বি চূম্যপিনদ্ধমপোর্ণব। বরুণেন সমুজিং মিত্রঃ প্রাতজতু ॥ ১৮৷৷ ব্ৰহ্মণা শালাং নিমিতাং কবিভিনিমিতাং মিতাম। ইন্দ্রাগ্নী রক্ষং শালামমৃতৌ সোম্যং সদঃ ॥১৯৷ কুলায়েৎধি কুলায়ং কোশে কোশঃ সমুজিতঃ। তত্র মর্তো বি জায়তে যম্মাদ বিশ্বং প্রজায়তে ॥২০৷৷ যা দ্বিপক্ষা চতুষ্পক্ষা টপক্ষা যা নিমীয়তে অষ্টাপক্ষাং দশপক্ষাং শালাং মানস পত্নীমগ্নিগর্ভ ইবা শয়ে ॥ ২১৷ প্রতীচীং ত্বা প্রতীচীনঃ শালে প্রৈমহিংসতীম। অগ্নিহন্তরাপশ্চতস্য প্রথমা দ্বাঃ ॥২২। ইমা আপঃ প্র ভারম্যযক্ষ্মা যক্ষ্মনাশনীঃ।। গৃহানুপ প্র সীদামামৃতেন সহাগ্নিনা ॥ ২৩৷৷ মা নঃ পাশং প্রতি মুচো গুরর্ভারো লঘুৰ্ভব। বধূমিব ত্বা শালে যত্রকামং ভরামসি ॥ ২৪৷ প্রাচ্যা দিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥ ২৫৷৷ দক্ষিণায়া দিশঃ শালায়া নমো মহিশ্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥ ২৬৷৷ প্রতীচ্যা দিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥ ২৭৷ উদীচ্যা দিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥২৮ধ্রুবায়া দিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥২৯৷৷ ঊর্ধ্বায়া দিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥৩০। দিশোদিশঃ শালায়া নমো মহিম্নে স্বাহা দেবেভ্যঃ স্বাহ্যেভ্যঃ ॥৩১।
বঙ্গানুবাদ –উপমিত, প্রতিমিত ও পরিমিত শালাকে (গৃহকে) উন্মোচিত করে, সকলের নিমিত্ত বরণীয় শালার বন্ধনকে উন্মোচন করা হচ্ছে।…হে শালা! তুমি সকলের দ্বারা বরণযোগ্য।… হে শালা! তুমি হব্যযুক্ত অগ্নিকুণ্ড, দেবতাগণের উপবেশনের আসন এবং পত্নীবর্গ সমভিব্যাহারে উপবেশনের স্থানসমূহের সাথে যুক্ত।…হে শালা! যে তোমাকে নির্মাণ করেছে এবং যে তোমাকে গ্রহণ করে রেখেছে, সেই দুজন বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত আয়ু লাভ করুক।…শালার অধিস্বামীকে, দাতাকে, অগ্নিকে এবং বিচরণ করণশীল পুরুষকে, তথা তোমাকেও (শালাকেও) আমরা নমস্কার করছি। শালাতে উৎপন্ন হওনশালী গো-সমূহ, অশ্ব-সমুদায়কে এই অন্ন প্রদত্ত হচ্ছে। হে বিজাবতী! হে প্রজাবত! আমরা তোমার বন্ধনকে উন্মোচিত করছি।…দ্যাব-পৃথিবীর মধ্যে যে ব্যচ (বিস্তৃত অবকাশ) রয়েছে, তার দ্বারা তোমার এই শালাকে গ্রহণ করছি। অন্তরিক্ষ ও পৃথিবীর যে রচনা-শক্তি আছে, তা আমার উদরস্থ হয়ে থাকে। অতএব আমিই এই শালাকে স্বর্গপ্রাপ্তির নিমিত্ত গ্রহণ করছি।…হে শালা! তুমি প্রতিগ্রহকারীদের নাশ করো না।…তুমি উত্তম পাদশালিনী হস্তিনীর ন্যায় পৃথিবীর উপর স্থিরভাবে দণ্ডায়মান থাকো। বিদ্বানবর্গের মন্ত্রের দ্বারা নির্মিত এই শালীকে সোমপানের স্থানে প্রতিষ্ঠিত ইন্দ্র. ও অগ্নি রক্ষা করুন। ঘর-রূপ বাসার মধ্যে দেহ-রূপ বাসা বিদ্যমান, তাতে গর্ভকোষ অধোমুখে স্থিত রয়েছে। তারই দ্বারা মরণধর্মী মনুষ্য জন্ম নিয়ে থাকে এবং তারই দ্বারা সমগ্র সংসার উৎপন্ন হয়। দ্বিতল, চারিতল, ছয় বা আট বা দশ কক্ষশালিনী শালা নির্মাণ করা হয়; সেই শালাতে আমি জঠরাগ্নির গর্ভাশয়ে শয়ন করার ন্যায় শায়িত আছি।…যক্ষ্মা ব্যাধির নাশ করণশালী জলকে আমি ভরণ করছি এবং অমৃতময় অগ্নির সাথে ঘরের নিকটে (বা পার্শ্বে) উপবেশন করছি। হেঃ শালা! বধূর সমান আমরা তোমাকে পুষ্ট করছি; তুমি আপন পাশবন্ধন আমাদের দিকে পাতিত করো না।..শালা প্রত্যেক দিকের মহত্বকে নমস্কার। দেবগণ এই আহুতি প্রাপ্ত হোন।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –উপমিতাং ইতি সূক্তের শালাসবং দদাতি সব্যজ্ঞবিধানেন স্বৰ্গকামঃ ইতি বিনিয়োগমালা। সূত্রমপি। উপমিতাং ইতি যচ্ছালয়া সহ দাস্য ভবতি তদন্তর্ভবত্যপিহিতং ইত্যাদি (কৌ. ৮/৭)। শালা নাম গৃহং। (৯কা, ২অ. ১সূ.)।
টীকা –উপযুক্ত সূক্তটির দ্বারা স্বর্গকামী জন সব যজ্ঞবিধানের দ্বারা সূত্রোক্ত প্রকারে গৃহদানের নিমিত্ত বিনিয়োগ করবেন। বংশ-সন্দংশ ইত্যাদির দ্বারা বদ্ধ শালা উঘাটন পূর্বক প্রতিগ্রহীতাকে দান করণীয়। …ইত্যাদি। (৯কা, ২অ. ১সূ.)।
.
দ্বিতীয় সূক্ত: ঋষভঃ
[ঋষি : ব্রহ্মা। দেবতা : ঋষভ। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, জগতী, অনুষ্টুপ, বৃহতী, পংক্তি]
সাহস্রত্বেষ ঋষভঃ পয়স্বান্ বিশ্বা রূপাণি বক্ষণাসু বিভ্রৎ। ভদ্রং দাত্রে যজমানায় শিক্ষন বাম্পত্য উম্রিয়স্তন্তুমাতান ॥১॥ অপাং যো অগ্রে প্রতিমা বভূব প্রভূঃ সর্বশ্মৈ পৃথিবীব দেবী। পিতা বৎসানাং পতিরপ্প্যানাং সাহস্ত্রে পোষে অপি নঃ কৃণোতু। ২। পুমানন্তর্বাস্থবিরঃ পয়স্বান্ বসোঃ কবন্ধমৃষভো বিভর্তি। বাহ্ণভোবভাতা তমিন্দ্রায় পথিভির্দেবযানৈহুমগ্নির্বহতু জাতবেদাঃ ॥ ৩৷৷ পিতা বসানাং পতিরস্নানামথো পিতা মহতাং গর্গরাণা। বৎসসা জরায়ু প্রতিধুক পীযূষ আমিক্ষা ঘৃতং তদ্বস্য রেতঃ ॥ ৪৷৷ দেবানাং ভাগ উপনাহ এষোহপাং রস ওষধীনাং ঘৃতস্য। সোমস্য ভক্ষমঘৃণীত শক্রো বৃহন্নদ্রিরভবদ যচ্ছরীর ॥ ৫৷৷ সোমেন পূর্ণং কলশং বিভর্ষি ত্বষ্টা রূপাণাং জনিতা পশূনাম। শিবান্তে সন্তু প্রজন্ম ইহ যা ইমা ন্যম্মুভ্যং স্বধিতে যচ্ছ যা অমূঃ ॥ ৬৷৷ আজং বিভর্তি ঘৃতমস্য রেতঃ সাহঃ পোষশুমু যজ্ঞমাহুঃ। ইন্দ্রস্য রূপমৃষভো বসানঃ সো অম্মা দেবাঃ শিব ঐভূ দত্তঃ ॥৭॥ ইন্দ্রসৌজো বরুণস্য বাহু অশ্বিনোরংসৌ মরুমিয়ং ককুৎ। বৃহস্পতিং সংভৃতমেতমাহুর্ষে ধীরাসঃ কবয়ো যে মনীষিণঃ ॥ ৮৷৷ দৈবীর্বিশঃ পয়স্বানা তনোষি ত্বামিং ত্বাং সরস্বমাহুঃ। সহস্রং স একমুখা দদাতি যো ব্রাহ্মণ ঋষভমাজুহোতি ॥ ৯৷ বৃহস্পতিঃ সবিতা তে বয়ো দধেী ত্বায়োঃ পর্যাত্মাত আভৃতঃ। অন্তরিক্ষে মনসা ত্বা জুহোমি বহিষ্টে দ্যাবাপৃথিবী উভে স্তম ॥ ১০ য ইন্দ্র ইব দেবেষু গোধেতি বিবাবদৎ। তস্য ঋষভস্যাঙ্গানি ব্রহ্মা সং স্তেীতু ভদ্রয়া। ১১। পার্শ্বে আস্তামনুমত্যা ভগস্যাস্তামনুবৃজৌ। অষ্ঠীবন্তাবব্রবীন্মিত্রো মমৈতৌ কেবলাবিতি ॥ ১২ ভসদাসীদাদিত্যানাং শ্রোণী আস্তাং বৃহস্পতেঃ। পুচ্ছং বাতস্য দেবস্য তেন ধূনোত্যোধীঃ ॥ ১৩ গুদা আসন্তসিনীবাল্যাঃ সূৰ্য্যায়াচমব্রুব। উত্থাতুরব্রুবন্ পদ ঋষভং যদকল্পয়ন্ ॥ ১৪। ক্রোড় আসীজ্জামিশংসস্য সোমস্য কলশো ধৃতঃ। দেবাঃ সঙ্গত্য যৎ সর্ব ঋষভং ব্যকল্পয়ন্ ॥ ১৫৷৷ তে কুষ্ঠিকাঃ সরমায়ৈ কুর্মেভ্যো অদধুঃ শফা। উবধ্যমস্য কীটেভ্যঃ শবর্তেভ্যো অধারয়ন্ ॥ ১৬৷৷ শৃঙ্গাভ্যাং রক্ষ ঋষত্যবর্তিং হন্তি চক্ষুষা। শৃণোতি ভদ্রং কর্ণাভ্যাং গৰাং যঃ পতিরঘ্নঃ ॥ ১৭ ৷৷ শতযাজং স যজতে নৈনং দুম্বন্ত্যগ্নয়ঃ। জিম্বন্তি বিশ্বে তৎ দেবা যো ব্রাহ্মণ ঋষভমাজুহোতি ॥ ১৮ব্রাহ্মণেভ্য ঋষভং দত্ত্বা বরীয়ঃ কৃণুতে মনঃ। পুষ্টিং সো অগ্ন্যানাং স্বে গোষ্ঠেহব পশ্যতে ॥ ১৯৷৷ গাবঃ সন্তু প্রজাঃ সথো অস্তু তবল। তৎ সর্বমনু মনস্তাং দেবা ঋষভদায়িনে। ২০ অয়ং পিপান ইন্দ্র ইদ রয়িং দধাতু চেতনী। অয়ং ধেনুং সুদুঘাং নিত্যবৎসাং বশং দুহাং বিপশ্চিতং পরো দিবঃ ॥ ২১। পিশঙ্গরূপো নভসো বয়োধা ঐন্দ্রঃ শুষ্মে বিশ্বরূপোন আগন। আয়ুরস্মভ্যং দধৎ প্রজাং চ রায়শ্চ পোষৈরভি নঃ সচতাম্ ॥ ২২৷৷ উপেহোপপৰ্চনাস্মিন্ গোষ্ঠ উপ পৃঞ্চ নঃ। উপ ঋষভস্য যদ রেত উপেন্দ্র ভব বীর্যম্ ॥ ২৩৷ এতং বো যুবানং প্রতি দয়ো অত্র তেন ক্রীড়ন্তীশ্চরত বশ অনু। মা নো হাসিষ্ট জনুষা সুভাগা রায়শ্চ পৌষেরভি ন সচধ্বম্ ॥ ২৪।
বঙ্গানুবাদ –এটি সহস্র সিঞ্চনে সমর্থ কান্তিমান ঋষভ। এটি দুগ্ধের সাথে যুক্ত। বৃহস্পতির মন্ত্রের দ্বারা যুক্ত গাভীগণের যোগ্য, এই ষণ্ড যজমানের মঙ্গল সাধন পূর্বক সন্তানসমূহের বৃদ্ধি করে থাকে।..ঋষভ বৎসগণের জনক এবং গাভীবর্গের পতি; সে মেঘ সমূহের পালনকর্তা। এর বীর্য অমৃত, আমিক্ষা, প্রতিধুক এবং ঘৃতের স্বরূপ। ঔষধি ও ঘৃত-রস জলের ভাগ, উপনাহ দেবতাগণের ভাগ এবং সোম-পানের নিমিত্ত পর্বতাকার শরীরকে বরণ করেছিলেন।…এই বৃষ ক্ষরণশীল, ঘৃতকে ধারণশালী এবং সহস্র পুষ্টি প্রদান করণশালী। ইন্দ্রের রূপ-ধারণ করতে পারঙ্গম এই ঋষভ আমাদের কল্যাণরূপে মিলিত (প্রাপ্ত) হোক।…এই ঋষভের ওজুঃ ইন্দ্রের ভাগ, এর বাহু বরুনের, ককুদ (স্কন্ধের ঝুঁটি) মরুৎ-গণের, অংস (স্কন্ধ) অশ্বিদ্বয়ের এবং সংভৃত (পোষণ) বৃহস্পতির প্রিয়।…হে ঋষভ! তুমি দেবতাগণকে দুগ্ধ, হবিঃ ইত্যাদির দ্বারা যুক্ত করে বৃদ্ধি সাধিত করে থাকো। এই নিমিত্ত তোমাকে ইন্দ্র বলা হয়। মন্ত্রযুক্ত যজ্ঞের বৃষভকে দান-করণশালী (অর্থাৎ যিনি বৃষভ-দান করেন), এক মুখশালিনী সহস্র গাভী দান করণশালীর তুল্য হয়ে থাকেন।…ইন্দ্র যেমন দেবতাগণের মধ্যে আগমন করেন, তেমনই গাভীগণের মধ্যে গর্জন করতে করতে আগমনশীল ঋষভের অঙ্গকে ব্রহ্মা মঙ্গলময় বাণীর দ্বারা প্রার্থনা করে থাকেন।…ভগ, অনুমতি, মিত্র, আদিত্য, বায়ু, সূর্য, সিনীবালী প্রমুখ।– দেবগণ ঋষভের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কল্পনা করেছিলেন।…গাভীগণের পতি প্রধান (বা শ্রেষ্ঠ) ঋষভ শৃঙ্গের দ্বারা রাক্ষসগণকে বিতাড়িত করে থাকে, দৃষ্টির দ্বারা দারিদ্র্য দূর করে এবং আপন শ্রোত্রের দ্বারা সৌভাগ্যকে শ্রবণ করে।…গাভী হোক, প্রজা হোক, শরীরে বল হোক, দাতার নিমিত্ত ঋষভ এই সবই দিয়ে থাকে।..হে ইন্দ্র এই ঋষভের বীর্য তোমারই। হে গাভীগণ! এই যুবা বৃষ তোমাদের নিমিত্ত রক্ষিত আছে। তোমরা এই গোষ্ঠে তার সাথে ক্রীড়া পূর্বক বৎসগণের সাথে বিচরণ করো এবং আমাদের ত্যাগ করো না। তুমি ধনের দ্বারা আমাদের পুষ্ট করো।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –ব্রাহ্মণণা বৃষভং হত্বা তন্মাংসং ভিন্নভিন্নদেবতাভ্যো জুহোতি। তত্র বৃষভস্য প্রশংসা তদঙ্গানাং চ কমানি কতমদেবেভ্যঃ প্রিয়াণি ভবন্তি তদ্বিবেচনং। বৃষভবলিহবনস্য মহত্বং চ, বর্ণতে। তদুৎপন্নং শ্রেয়শ্চ স্বয়তে। সাম্প্রদায়িকাস্তু এবং বিনিযুঞ্জন্তি সূক্তং। তদ্যথা। বৃষোৎসর্গে সাহস্রঃ ইত্যর্থসূক্তেন ঋষভং সম্পত্য অভিমন্ত্র বিসৃজেৎ। …এতং বো যুবানং (৯/২/২৪) ইত্চা বৎসস্যাভিমন্ত্রণং কৃত্বা প্রোক্ষণং কুর্যাৎ। তথা অনেন সূক্তেন পুষ্টিকামো বশাবিধানেন (কৌ. ৫/৮) ঋষভেন ইন্দ্রং যজতে। তথা অনেন সূক্তেন সম্পৎকামঃ পৌর্ণমাস্যাং ব-বিধানেন শ্বেতেন ঋষভেণ ইন্দ্রঃ যজতে। …ইত্যাদি৷৷ (৯কা, ২অ. ২সূ.)।
টীকা –উপযুক্ত সূক্তে বৃষভকে বলি প্রদান করে তার মাংসে ভিন্ন ভিন্ন দেবতার উদ্দেশে যজ্ঞের নির্দেশ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে বৃষভের প্রশংসা ও তার কোন্ কোন্ অঙ্গ কোন্ দেবতার কত প্রিয় তা বলা হয়েছে। বৃষভবলি হবনের ও মহত্ব বর্ণিত হয়েছে।…বৃষোৎসর্গে এই সূক্তের দ্বারা ঋষভকে অভিমন্ত্রিত পূর্বক তাকে ত্যাগ করার বিধান রয়েছে। মূল বিনিয়োগে উল্লেখিত ছয়টি মন্ত্রের সাথে এতং বো যুবানং ঋকটির দ্বারা বৎসের অভিমন্ত্রণ পূর্বক পোণ করণীয়। এই সূক্তের দ্বারা পুষ্টিকামী ব্যক্তি কর্তৃক বশাবিধানের দ্বারা, সূত্রানুসারে বৃষভের দ্বারা, ইন্দ্রের যাগ করণীয়। আবার সম্পৎকামী ব্যক্তি কর্তৃক পৌর্ণমাসীতে ববিধানের দ্বারা, শ্বেতবর্ণের বৃষভের দ্বারা, ইন্দ্রের যাগ করণীয়।..ইত্যাদি। (৯কা, ২অ, ২সূ.)।