অষ্টম পরিচ্ছেদ
পয়সা–কড়ি
বড়লোক ও সম্পদশালী হবার অধিকার শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ও সাধু ব্যক্তিদেরই আছে। তিনি জানেন-অর্থ কীভাবে ব্যবহার করতে হবে।
যিনি সাধু, কর্মী ও পরিশ্রমী তার উন্নতি যেমন অবশ্যম্ভাবী অন্যের তেমন নয়।
তুমি সাধু ও জ্ঞানী, তুমি দরিদ্র হয়ে থাকবে, এরূপ ইচ্ছা পোষণ করো না। তোমাকে ধনী হতে হবে, কেননা তুমি জান অর্থ কীভাবে ব্যয় করতে হয়।
অর্থাপিশাচ, নীচ, সঙ্কীর্ণ হৃদয় ব্যক্তি যদি অর্থ উপায় করে, তবে তার উপার্জনের কোন মূল্য নাই।
সৎ উদ্দেশ্যে পয়সা উপায় করা উপাসনারাই তুল্য। সত্য কথা বলতে কি, ইহা শ্রেষ্ঠ উপাসনা।
মানুষের কল্যাণ করবে কি দিয়ে? পয়সা কই?
খোদার নামে পয়সা উপায় করা। তুমি শ্ৰেষ্ঠ সাধকের অন্যতম হবে। স্ত্রীপুত্রের ভরণপোষণ করার জন্যও পয়সা চাই। সংসারে বাস করে পরিবারের সুখস্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানো তোমার কর্তব্য, তা না করলে তুমি অন্যায় করবে।
পয়সাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখো। চিন্তাশীল জ্ঞানী ব্যক্তিরা পয়সাকে অশ্রদ্ধার চোখে দেখেন না।
পয়সার প্রতি মমতাহীন হয়ে বেহিসাবীর মত খরচ করলে বুদ্ধি ও ধর্ম নষ্ট হয়। পয়সাকে ঘৃণা করো না। পয়সার প্রতি অন্যায় মমতা পোষণ করে নিজেকে হীন করো না।
বিবেচক ও মিতব্যয়ী ব্যক্তি হিসেবী না হয়ে পারে না। তিনি ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবেন। বর্তমানে ছোট ছোট আরাম ও সুখ ভোগের ইচ্ছগুলিকে দমিয়ে রেখে তিনি সামনের শীতের দিনের কথা চিন্তা করেন।
যে সমস্ত মানুষ বেহিসেবী হয়ে রসনাকে সংযত করতে জানে না, মূর্থের মতো যত খেয়াল চাপে আর খরচ করে, তারা মনুষ্যত্বের অবমাননা করে।
দুঃখের পর সুখ, অশান্তি ও বেদনা তাদের জীবনের অনেক শক্তি নষ্ট করে দেয়।
মানুষ যদি একটু বুঝে সুঝে খরচ করে, তাহলে তার দুঃখ অনেকটা কমে যায়। মানুষ নিজের দুঃখ রচনা করে-নিজেকে নিজে দরিদ্র করে।
অভাবগ্ৰস্ত যে তার চিত্তে স্বাধীনতা থাকে না। তুমি মিতব্যয়ী হও, তোমার মনের স্বাধীনতা বেড়ে যাবে।
সোজা কথা নয়। এজন্য কম সাধনা আবশ্যক হয় না। অনেক মানুষ চরিত্রের সব ভুল দেখে আতঙ্কিত হন, কিন্তু মিতব্যয়ী হওয়া লজ্জাজনক মনে করেন না, বস্তুত সত্যবাদী হওয়া যেমন জীবনের একটি শ্রেষ্ঠ কাজ, মিতব্যয়ী হওয়াও তেমনি একটি বড় কাজ।
যাদের অভাব সারে না তারা চিরকালই ছোট। দুর্ভিক্ষের দিনে তারাই আগে মরে। তুমি সমাজে আজ শ্রেষ্ঠ আসন গ্রহণ করে আছ-কিছু বাঁচাও না-যদি সহসা তোমার মৃত্যু হয়, তাহলে তোমার স্ত্রী-পুত্রের কি হবে? যেখানে আছ নিজের বর্তমান আর্থিক অবস্থা হতে উন্নত হতে চেষ্টা করা সব খরচ করে নিজেকে ইতর মানুষের কৃপার পাত্র করো না।
আমি বলছি না, জীবনের সুন্দর মধুর গুণগুলি বিসর্জন দিয়ে পিশাচের মতো অর্থ জমাবে। আমি বলি, নিজেকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, চিত্তের স্বাধীনতাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সতর্ক হও। সব সময়েই যদি অভাব তোমাকে ব্যস্ত করে, তাহলে তোমার মনের বল থাকবে না। নিজের ত্যাগ কর।
পৃথিবীর বড় বড় কাজ, সঞ্চয়ী লোকদের দ্বারা অথবা তাদের সাহায্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভাবগ্ৰস্ত ব্যক্তি নিজের অভাব নিয়েই ব্যস্ত-সে সমাজের কি কাজ করবে? কোন ভাল কাজের জন্য পয়সা ব্যয় করতে কষ্টবোধ না করে সে পারে না।
একদিন সন্ধ্যাকালে দেখলাম একটা অপরিচিত রমণী হঠাৎ আমাদের ঘরের ভিতর প্রবেশ করলো। কারণ জিজ্ঞাসা করায় সে বললে একজনের কাছ থেকে সে কিছু হাওলাত করেছিল, দিতে পারে নাই, রাস্তায় তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, ভয়ে সে এখানে একটু সরে দাঁড়িয়েছে।
তোমার অবস্থাও যদি এমনি হয় তবে সে কত দুঃখের হয় বল দেখি? যদি কারো নিকট হতে টাকা নিয়ে থাক-কিংবা যদি তোমার কাছে কিছু পায়, তাহলে সে যত ছোট লোকই হোক না, তার সামনে তোমার একটু সঙ্কোচ হবেই। জীবনের এই অবস্থা বড় পীড়াদায়ক, বড় বিরক্তিকর। তোমার ভিতরে যদি মনুষ্যত্ব থাকে, তাহলে নিজেকে এই লজ্জাজনক অবস্থার ভিতরে টেনে এনো না।
হাতে যদি পয়সা না থাকে তাহলে মনে মনে পরদুঃখকাতর হয়েও কোন লাভ নেই। এক ভদ্রলোক এক সময়ে তাঁর যা কিছু ছিল সব এক বিপদগ্ৰস্ত মানুষকে দিয়ে নিজেই বিপদে পড়েছিলেন।
তোমার হাতে যদি পয়সা-কড়ি কিছুই না থাকে, তবে মানুষের দুঃখের সামনে বোকার মতো তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।
জীবনকে যদি স্বাধীন করতে চাও তাহলে কিছু কিছু জমাও-অল্প হলেও জমাতে থাকা হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বাতির পলতে চিপে তেল বের করতেন, তা জান?
হযরত ঈসা (যীশু) বলেছেন-ছোট বলে ফেলে দিও না, কুড়িয়ে রাখো।
এক পয়সা বলে ঘৃণা করো না! দুটি চাল, একটা লঙ্কা নষ্ট হলে কি ক্ষতি, এ কথা ভেবো না।
সামান্য মুষ্টি চালের শক্তিতে কত বড় বড় কাজ সম্পাদিত হয়।
তোমার মিঠাই খাবার ইচ্ছা হচ্ছে, খাওয়ার আগে ভেবে দেখ; তোমার চাল কেনবার পয়সা আছে কিনা।
এক ভদ্রলোক তাঁর পুত্রের কাছে চিঠি লিখলেন, হিসেব করে খরচ করা জীবনের এক প্ৰধান গুণ। অনেক লোক টাকা-পয়সা নিয়ে হিসেব করা ভাল মনে করে না। তুমি তাদের একজন হয়ো না।
জগতে অনেক প্রতিভাশালী লোকের চরিত্রে এ-গুলি ছিল না বলে তুমি তাদের বন্দস্বভাবটি অনুকরণ করো না, তাদের যদি এই দোষ না থাকতো তাহলে তারা জগতে আরও বেশি উপকার করতে পারতেন।
তাদের সদগুণগুলি অনুসরণ না করে, তাদের বদঅভ্যাসগুলি অনুসরণ করাতে গৌরব। নাই। চাঁদে কলঙ্ক আছে বলে কে কবে নিজের দেহকে কলঙ্কিত করে?
বর্তমানের অবস্থাকে মেনে নিয়ে কষ্টে-সৃষ্ট তোমাকে দিন কাটাতে হবে। চলে না বলে সীমা অতিক্রম করো না। যে মুহূর্ত পর্যন্ত আয় না বাড়ে সে পর্যন্ত তোমাকে দরিদ্রের মতো থাকতে হবে। তুমি বর্তমান সত্যকে অবিশ্বাস করতে পার না। তোমার আয় যখন সামান্য তখন জোর করে এই সামান্য অবস্থাকে। অস্বীকার করে বেশী খরচ করলে চলবে না। বর্তমানকে সত্য বলে গ্ৰহণ করো। বর্তমানকে অসত্য মনে কর, হয় তুমি চোর না হয়। পরদিয়া প্ৰত্যাশী হবে। পরে যে পর্যন্ত দান না করে সে পর্যন্ত অন্তত তুমি নিজেও সীমার ভিতর দাঁড়িয়ে থাক।
শুধু নিজের অবস্থায় সস্তুষ্ট থাকলেও চলবে না, তোমাকে কিছু কিছু বঁটাচাতে হবে। খুব সামান্য হোক ক্ষতি নাই। বেঁচে থাকা যেমন দরকার, কিছু কিছু বঁটাচানও তেমনি দরকার। যা তুমি বঁচাবে তার অস্তিত্ব ভুলে যাও। তা কাউকে দিও না।
যখন সর্বস্বান্ত হয়েছ—দুৰ্গতির যখন সীমা নাই, তখন যদি নিজের নিবুদ্ধিতার জন্য নিজেকে ধিক্কার দাও, তাতে লাভ কি? স্ত্রী-পুত্র হয়ত এক সময়ে তোমার উপহারে সুখী হয়েছিল-আজ তোমার দুৰ্গতির দিনে তারা বলবে, না বুঝে আবদার করেছিলাম, তুমি জ্ঞানী পিতা হয়ে কেন তা শুনলে? বস্তুত দুঃখের দিনে তারা তোমার গত উপকার ও দানের কথা ভেবে চুপ করে থাকবে না, এক সময়ে সুখের জীবন ছিল বলে আজ তারা খালি পেটে থাকতে পারে না!
অভাবে মানুষ পশু হয়, স্ত্রী-পুরুষ আত্মীয়-বন্ধু সকলের সঙ্গে অজ্ঞাতসারে মর্মান্তিক অসদ্ব্যবহার করতে হয়, অথচ সে হীনতা নিজে কিছু বোঝা যায় না।
তোমার কৃপণতায় (?) একটা মানুষ অসন্তুষ্ট হতে পারে, কিন্তু সে যখন ক্ষুধাতুর হয় তখন যদি তুমি তাকে ভাত না দাও সে তোমাকে হত্যা করবে।
বেশী ভাবতেন! হেলায় যে পয়সা রাস্তাঘাটে ফেলে দিচ্ছ, সেগুলি জমিয়ে রাখলে হয়ত একটি বড় কারবারের ভিত্তি স্থাপন করতে পারতে।
পর তোমাকে চিনল না বলে, তুমি মরে যেতে পার না। জগতে অতি অল্প লোকই একজনে আর একজনের কষ্ট বোঝে। অতএব সাবধান।
পিতার সাধনার সম্পদ অনেক কুড়ে সন্তান ভোগ করে, আবার অনেকে উড়িয়ে দেয়-নিজের স্বভাব দোষে।।
পরের পরিশ্রমলব্ধ অর্থ যদি বিনা পরিশ্রমে লাভ হয়, তাহলে জাতীয় জীবন দুর্বল হয়ে পড়ে। মানুষ পরিশ্রম করে না-হিসেবী হয় না।
একথাও ঠিক হৃদয়হীন ধনী অত্যাচারীর উপর অনশনক্লিষ্ট অত্যাচারী দীন-দরিদ্র বিরক্ত না হয়েও পারে না।
অবস্থা শোচনীয় এ কথা কাউকে বলো না। তাতে কোন লাভ হবে না, কেউ তোমাকে দয়া করবে না। কাজ করো। আশীর্বাদ আর অনুগ্রহ যদি আসে। তবে তা খোদার কাছ থেকে আসবে। আমার এ কথা বিশ্বাস করে।
যদি খরচপত্র সম্বন্ধে সতর্ক থাক, যে আয়ই হোক তোমার সংসার একরকম চলবেই—তোমার দরিদ্র প্রতিবেশীকে সম্ভবমত সাহায্য করবার সৌভাগ্য তোমার হবেই।
এক ব্যক্তিকে জানি-বাড়ি থেকে চিঠি এসেছিল, ভাই তিনটির শীতের কাপড় নেই—লোকটি সে কথায় আদৌ কান না দিয়ে নিজের জন্য ১০ টাকার এক জামা কিনে ফেললো।
বস্তুত এই সমস্ত অপদাৰ্থ মানুষ জগতে কাউকে সুখ দিতে আসে না। তারা কেবল মানুষের দুঃখ সৃষ্টি করে। যারা তাদের স্পর্শে আসে তাদের কষ্টের সীমা থাকে না।
মানুষ যদি হিসেবী হতো তা হলে জগতের পনের আনা দুঃখ কমে যেতো। জগতে এত দরিদ্র লোক থাকত না-মানুষের এত হাহাকার শোনা যেতো না।
মানুষটি জ্ঞানী এবং সত্যবাদী কি-না একথা জানিবার আগে তিনি মিতব্যয়ী কি-না এ— কথা জানতে চেষ্টা করো।
মেয়ে বিয়ে দেবার সময় জামাইয়ের রূপ, গুণ ও শিক্ষার খবর নেবার সঙ্গে সঙ্গে শুনে রেখো, জামাই টাকা-পয়সা হিসেবমত খরচ করেন কি-না, কারণ, সেটা একটা মস্ত গুণ। তার ঋণ করবার কু-স্বভাব আছে কি-না!
শিক্ষা না থাক, রূপ না থাক, গুণ না থাক, মিতব্যয়ী জামাতার হাতে তোমার মেয়ের খাবার পরিবার কোন কষ্ট হবে না।
কেউ কেউ বলে থাকে, ভদ্রলোক যারা তাদের অবস্থা খারাপ না হয়ে যায় না। একথা তুমি বিশ্বাস করো না। ভদ্রলোক অন্যায় করে বা অসৎ উপায়ে পয়সা উপার্জন করতে ঘৃণা বোধ করেন। সত্য, কিন্তু তাই বলে তাকে টানাটানির ভিতর পড়ে থাকা ঠিক নয়। যেমন করে হোক, তিনি তার শোচনীয়তার মধ্যেই সচ্ছলতা টেনে আনবেন। তিনি পর-প্রত্যাশী। হবেন না। পরের দুয়ারে তিনি হাত পাতবেন না। তিন আলসে এবং কুড়ে হয়ে বসে। থাকবেন না-সৎ উপায়ে পয়সা অর্জন করে অর্জিত অর্থ হিসেবী হয়ে খরচ করবেন।
মানুষকে হিসেবী হতে হবে-এর অর্থ এ নয় যে, তুমি অতি মাত্রায় হিসেবী হবে—যাতে তোমার পরিবারবর্গের খুব কষ্ট হয়, তোমার সুবুদ্ধি ও বিবেচনা তোমার ব্যয়কে নিয়মিত করবে।
কখনও ঋণ করো না। এই একটা কথা যদি তুমি পালন করতে পার তাহলে তোমার ব্যয়কে নিয়ন্ত্রিত করবে।
খালি থলে যেমন খাড়া হয়ে দাড়ায় না; কাণ করলে তেমন তোমার সোজা। হয়ে দাঁড়াবার ক্ষমতা থাকবে না।
ঋণ করতে থাকে, দেখবে তুমি ভারি মিথ্যাবাদী হয়েছে-তোমার মনুষ্যত্ব লোপ পেয়েছে—তুমি পশু হয়েছে।
এক ভদ্রলোক এক যুবককে এই উপদেশ দিয়েছিলেন-ঋণ করে কোন সখী মিটাতে চেষ্টা করো না-পয়সা নাই লজার খাতিরে অন্য ছেলেদের দেখাদেখি বাকী করে গায়ের জামা কিনো না। অসঙ্কোচে বলো, আমার দরকার নেই, যা আছে তাই ভাল।
যে মানুষ তোমার কাছে খুব ছোট, তার কাছ থেকে যদি তুমি টাকা ধার করে থােক, তাহলে তার সামনে তোমার একটু সঙ্কোচ হবেই। মনের এই সঙ্কোচবোধ স্বাধীনচিত্ত ভদ্রলোকের কাছে অসহ্য।
কিছুতেই ধার করবে না। ডাক্তার জনসন বলেছেন—ধার করার অর্থ, জীবনকে দুঃখময় করে তোলা। দরিদ্র যে, সে নিজের দারিদ্র্যেই বিব্রত, পরের উপকার কি করবেঃ অন্যান্য সদগুণ লাভের সঙ্গে সঙ্গে ধার করার অভ্যাসকে পরিহার করবার গুণটি লাভ করতে বদ্ধপরিকর হও।
সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখার অভ্যাসটি খুব ভাল। এক পয়সার হিসােব লিখতে লজ্জা বোধ করো না। চোখের সামনে নিজের আর্থিক মূল্যাটুকু ধরে রাখলে খরচ করার আগে সতর্ক হতে পারবে।
ডিউক অব ওয়েলিংটন খরচপত্রের হিসাব নিজে রাখতেন। তিনি বলেছেন—পরিবারের কর্তা যিনি, তিনি নিজের হাতে এই কাজ করবেন। দেনাপাওনা সবই নিজের হাতে দিতে হবে।
আমেরিকার রাষ্ট্রনায়ক ওয়াশিংটন আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখতে লজ্জাবোধ করতেন না।
যখন মনের মাঝে কোন খেয়াল চাপে, সে খেয়ালকে তুমি দমন করো। খেয়ালকে জয় না করতে পেরে, বহু মানুষ এবং বহু পরিবার ধ্বংস হয়েছে। মন দমন করবার জন্য চরিত্রবল আবশ্যক। এই বল সাধনার দ্বারা লাভ করতে হবে। খেয়াল বা সখকে যদি প্রশ্ৰয় দিতে থাক তাহলে তুমি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে। সখের কোন অন্ত নাই, যেমন ভোগ-কামনার নিবৃত্তি নাই।
চরিত্রবান হওয়া এক সাধনা-মিতব্যয়ী হতে চেষ্টা করা তেমনি একটি সাধনা। অমিতব্যয়ী ও ঋণী মানুষকে অসঙ্কোচে জ্ঞানী মানুষেরা ভদ্রলোক বলে না। দোকানের বাকী কাপড় গায়ে দিয়ে তুমি ভদ্রত রক্ষা করছে, জ্ঞান ও বিবেকের কাছে কিন্তু ভদ্রতা রক্ষা হলো না, বিবেক তোমার বলবে, এটা অপমান ছাড়া আর কিছুই নয়।