শায়লার বুক থেকে পাষাণ ভার নেমে গেছে। চিত্রা এসেছে তিনটায়। এসেই গোসল করে সাজতে শুরু করেছে। চিত্রাকে সাহায্য করছে মীরা। মীরা এখন আনন্দিত। তাকে দেখে মনেই হয় না একটু আগেই সে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছিল। শায়লার নিমন্ত্রিত লোকজন আসা শুরু করেছেন। উত্তরা থেকে শরীর খারাপ নিয়ে এসেছেন চিত্রার খালা। তার একটা আইটেম আনার কথা, তিনি দুটা আইটেম এনেছেন।
পাঁচটার সময় শায়লাকে অবাক করে দিয়ে ফ্ল্যাগ উড়ানো গাড়ি নিয়ে পূর্তমন্ত্রী চলে এলেন। সঙ্গে পুলিশের গাড়ি। তিনি শায়লার দিকে তাকিয়ে বললেন–ভাবী আমি সালু। পূর্তমন্ত্রী। লোকজন অবশ্য বলে ধূর্তমন্ত্রী। হা হা হা। রহমান আমাকে বলল, তার মেয়ের বিয়ে আমি যেন আসি। কাজ কর্ম ফেলে চলে এসেছি। হমান কোথায়?
শায়লা বললেন, ওকে একটা কাজে পাঠিয়েছি। এসে পড়বে। আপনি বসুন।
আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হবেন না ভাবী। আমি আছি। মেয়ের বিয়ে শেষ করে যাব।
শায়ালার অফিসের ডিরেক্টর সাহেব এসেছে। এই লোকের স্ত্রী জার্মান। অতি রূপবতী মহিলা। ভাত্রী ভাতা লালা বলছেন। শায়লা শাস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। বরপক্ষের লোকজনরা দেশকে কনে পক্ষের লোকজনও তুচ্ছ করার মতো না। ভাবতেই ভালো লাগছে।
আয়োজনের কোনো খুঁত নেই। চকচকে দুহাজার টাকার নোট নিজাম সাহেব গুলিস্তান থেকে নিয়ে এসেছেন।
শায়লার বাড়ি লেনিনে গমগম পড়ছে। বরপক্ষের লোকজন আসছে। পূর্তমন্ত্রীর সঙ্গের পুলিশের গাড়ি পুলিশ ট্রাফিক কনট্রোল করছে। আড়াল থেকে এই দৃশ্য দেখে আনন্দে শায়লার চোখে পানি এসে গেল। মীরা এসে তাঁকে বলল, মা কি সর্বনাশ। গেস্টরা সব এসে গেছে, তুমি তো এখনো শাড়ি বদলাও নি। তাড়াতাড়ি বাথরুমে যাও।