সপ্তম অধ্যায়
মন্ত্রঃ– বাচস্পতয়ে পবস্ব বৃষ্ণো অংশুভ্যাং গভত্তিপূতঃ। দেবো দেবেভ্যঃ পবস্ব যেং ভাগগাহসি৷৷৷৷৷ মধুমতীর্ন ইষস্কৃধি যত্তে সোমাদাভ্যং নাম জাগৃবি তস্মৈ যুত সোম সোমায় স্বাহা স্বাহোর্বন্তরিক্ষমন্বেমি৷২৷ স্বাক্তােহসি বিশ্বেভ্য ইন্দ্রিয়েডভ্যা দিব্যেভ্যঃ পার্থিবেভ্যো মনস্তাম্বু স্বাহা ত্বা সুভব সূর্যায় দেবেভ্যা মরীচিপেভ্যা দেবাংশশা যস্মৈ হেডে তৎসত্যমুপরিতা ভঙ্গেন হতোহসৌ ফটু প্রাণায় ত্বা ব্যানায় ত্বা।।৩৷৷ উপযামগৃহীতোহস্যন্তর্যচ্ছ মঘব পাহি সোম। ঊরূষ্য রায় এখো যজস্ব৷৷৷৷ অন্তস্তে দ্যাপৃথিবী দধামন্তর্দধামুর্বন্তরিক্ষ। সজুর্দেবেভিরবরৈঃ পরৈশ্চান্তর্যামে মঘব মাদয়স্ব৷৷৷৷ স্বাক্তােহসি বিশ্বেভ্যঃ ইন্দ্রিয়েভ্যঃ পার্থিবোভ্যো মনস্তাম্বু স্বাহা ত্বা সুভব সূর্যায় দেবেভ্যা মরীচিপেভ্য উদানায় ত্বা৷৬৷৷ আ বায়ো ভূষ শুচিপা উপনঃ সহস্রং তে নিযুত বিশ্ববার। উপ তে অন্ধো মদ্যময়ামি যস্য দেব দধিষে পূর্বপেয়ং বায়বে ত্বা।।৭।ইন্দ্ৰবায়ু ইমে সুতা উপ প্রয়োভিরাগত। ইন্দবো বামুশন্তি হি। উপযামগৃহীতোহসি বায়ব ইন্দ্ৰবায়ুভ্যাং তৈষ তে যোনিঃ সজোযোভ্যাং ত্বা।।৮৷ অয়ং বাং মিত্রাবরুণা সুতঃ সোম ঋতাবৃধা। মমেদিহ তং হব। উপযামগৃহীতোহসি মিত্রাবরুণাভ্যাং ত্বা।৯। রায়া বয়ং সসংসো মদেম হবেন দেবা যবসেন গাবঃ। তাং ধেনুং মিত্রাবরুণা যুবং নো বিশ্বাহা ধমনপস্ফুরন্তীমেষ তে যোনিঋতায়ুভ্যাং ত্ব৷১০৷৷ যা বাং কশা মধুমতাশ্বিনা সুনৃতাবতী। তারা যজ্ঞং মিমিক্ষত। উপযামগৃহীতোহস্যশ্বিভ্যাং ত্বৈষ তে যোনির্মান্ধীভ্যাং ত্বা।১১৷ তং প্রত্নথা পূর্বথা বিশ্বথেমথা জ্যেষ্ঠতাতিং বহিষদং স্বর্বিদ। প্রতীচীনং দোহসে ধুনিমাশুং জয়ন্তমনু যাসু বর্ধসে। উপযামগৃহীতোহসি শণ্ডায় দ্বৈষ তে যোনির্বীরতাং পাহ্যপমৃষ্ট শণ্ডো দেবাত্ত্বা শুক্রপাঃ প্রণয়ন্ত্রনাধৃষ্টাহসি৷১২৷৷ সুবীররা,বীরা প্রজনয়ন্ পরীহ্যভি রায়ম্পোষেণ যজমান। সঞ্জুম্মাননা দিবা পৃথিব্যা শুক্রঃ শুক্ৰশোচিষা নিরস্তঃ শণ্ডঃ শুক্ৰস্যাধিষ্ঠানমসি৷৷১৩৷৷ অছিন্নস্য তে দেব সোম সুবীর্যস্য রায়ম্পোষস্য দদিতারঃ স্যাম। সা প্রথমা সংস্কৃতিবিম্ববারা স প্রথমো বরুণো মিত্রো অগ্নিঃ ॥১৪৷ স প্রথমো বৃহস্পতিশ্চিকিত্বাঁস্তম্মা ইন্দ্রায় সুতমা জুহোত স্বাহা। তৃম্পন্তু হোত্রা মধ্বে যাঃ স্বিষ্টা যাঃ সুপ্রীতাঃ সুহুতা যৎস্বাহা হয়াডগ্নীৎ॥১৫৷৷ অয়ং বেনশ্চোদয়ৎপৃশ্নিগর্ভা জ্যোতির্জরায়ু রজসো বিমানে। ইমমপাং সঙ্গমে সূর্যস্য শিশুং ন বি মতিভী রিহন্তি। উপযামগৃহীতোহসি মক্কায় ত্বা।১৬৷ মনো ন যেষু হবমেষু তিগ্মং বিপঃ শচ্যা বনুথো দ্রবন্তা। আ যঃ শর্যাভিস্তুবিয়ো অস্যাশ্রীণীতাদিশং গভস্তাবেষ তে যোনিঃ প্রজাঃ পাহ্যপমৃষ্টো মৰ্কো। দেবাস্তুা মন্থিপাঃ প্রণয়ন্ত্রনাধৃষ্টাসি৷৷১৭৷ সুপ্রজাঃ প্রজাঃ প্রজনয়ন্ পরীহ্যভি রায়পোষেণ যজমান। সঞ্জগানো দিবা পৃথিব্যা মন্ত্রী মন্থশোচি। নিরস্তো মর্কো মন্থিনোহধিষ্ঠানমসি৷১৮৷৷ যে দেবাসসা দিব্যেকাদশ স্থ পৃথিব্যামধ্যেকাদশ স্থ। অল্পক্ষিত মহিনৈকাদশ হতে দেবাসো যজ্ঞমিমং জুষধ৷৷১৯৷৷ উপযামগৃহীতোহস্যাগ্রয়োহসি স্বাগ্রয়ণঃ। পাহি যজ্ঞং পাহি যজ্ঞপতিং বিষ্ণুত্ত্বামিন্দ্রিয়েণ পাতু বিষ্ণুং ত্বং পাহ্যভি সবনানি পাহি৷৷২০ সোমঃ। পবতে সোমঃ পবতেহস্মৈ ব্ৰহ্মণেইস্মৈ ক্ষত্ৰায়াস্মৈ সুম্বতে যজমানায় পবত ইষ উর্জে পবতেহ্য ওষধীভ্যঃ পবতে দ্যাপৃথিবীভ্যাং পবতে সুভূতায় পবতে। বিশ্বেভ্যস্তা দেবেভ্য। এষ তে যোনির্বিশ্বেভ্যস্তা দেবেভ্যঃ৷২১৷ উপযামগৃহীতোহসীন্দ্রায় ত্বা বৃহদ্ধতে বয়স্বত উথাব্যং গৃমি। যত্ত ইন্দ্র বৃহদ্বয়স্তস্মৈ ত্বা বিষ্ণবে বৈষ তে যোনিরুকেথভ্যস্কৃ। দেবেভ্যস্তৃা দেবাবং যজ্ঞস্যাযুষে গৃহূমি৷২২। মিত্রাবরুণাভ্যাং ত্ব দেবাব্যং যজ্ঞস্যায়ুষে গৃহ্বামীায় বা দেবাব্যং যজ্ঞস্যায়ুষে গৃহামীদ্রাগ্নিভ্যাং ত্বা দেবব্যং যজস্যায়ুষে গৃহামীন্দ্রাবরুণাভ্যাং ত্বা দেবাব্যং যজ্ঞস্যায়ুষে গ্রামীন্দ্রাবৃহস্পতিভ্যাং ত্বা দেবাব্যং যজ্ঞস্যায়ুষে গৃহামীদ্রাবিষ্ণুভ্যাং ত্বা দেবাব্যং যজ্ঞস্যায়ুষে গৃহামি৷৷২৩৷ মূর্ধানং দিবো অরতিং পৃথিব্যা বৈশ্বানরমৃত আ জাতমগ্নি। কবিং সমাজমতিথিং জনানামাসন্না পাত্রং জনয়ন্ত দেবাঃ।।২৪৷ উপযামগৃহীতোহসি ধ্রুবোহসি ধ্রুবক্ষিতি ধ্ৰুবাণাং ধ্রুবতমোহচ্যুতানামচ্যুতক্ষিত্তম এষ তে যোনিবৈশ্বানরায় ত্বা। ধ্রুবং ধ্রুবেণ মনসা বাঁচা সোমমব নয়ামি। অথা ন ইন্দ্র ইদ্বিশোহসপত্নাঃ সমসস্কর৷৷২৫৷৷ যন্তে দ্ৰন্স স্কতি যস্তে অংশগ্লাবচ্যুত ধিষণয়োরূপস্থা। অর্ষোবা পরি বা যঃ পরিত্রাতং তে জুহোমি মনসা বষট্কৃতং স্বাহা দেবানামুক্রমণমসি৷৷২৬৷ প্ৰাণায় মেবর্গোদা বসে পবস্ব। ব্যানায় মে বর্গোদা বসে পদোনায় মে বর্গোদা বর্ডসে পবস্ব। বাঁচে মে বর্গোদা বসে পবস্ব। দক্ষাভ্যাং মে বর্গোদা বর্ডসে পয়স্ব। শ্রোতায় মে বর্গোদা পবস্ব। চক্ষুর্ভাং মে বৰ্চোদসৌ বসে পবেথাম৷৷২৭। আত্মনে মে বর্গোদা বর্ডসে পবস্বৌজসে মে বর্গোদা বর্ডসে পবস্বায়ুষে মে বৰ্চোদা বৰ্চসে পবস্ব। বিশ্বাভ্যো মে প্রজাভ্যো বৰ্চোদসৌ বৰ্চসে পবেথা৷৷২৮৷৷ কোহসি কমোহসি কস্যাসি কো নামাসি। যস্য তে নামামন্মহি যং ত্বা সোমেনাতীতৃপাম। ভূর্ভুবঃ স্বাঃ সুপ্রজাঃ প্রজাভিঃ স্যাং সুবীরো বীরৈঃ সুপোষঃ পৌষেঃ২৯। উপযামগৃহীতোহসি মধবে তোপয়ামগৃহীতোহসি মাধবায় তোপয়ামগৃহীতোহসি শুক্ৰায় তোপয়ামগৃহীতোহসি শুচয়ে ত্বেপয়ামগৃহীতোহসি নভসে তোপয়ামগৃহীতোহসি নভস্যায় ভোপয়ামগৃহী-তেহসীষে দোপয়ামগৃহীতোহ সূর্জ কোপয়ামগৃহীতীতোহসি সহসে থোপয়ামগৃহীতোহসি সহস্যায় তোপয়ামগৃহী তোহসি তপসে তোপয়ামগৃহীতোহসি তপস্যায় দোপায়ামগৃহীহস্যংহসম্পতয়ে ৷৷৩০। ইন্দ্রাগ্নী আ গতং গীভিনভো বেরণ্য। অস্য পাতং ধিয়েষিতা। উপযামগৃহীতোহসীন্দ্রাগ্নিভ্যাং ত্বৈষ তে যোনিরিন্দ্রাগ্নিভ্যাং ত্বা।।৩১। আ ঘা যে অগ্নিমিম্বতে স্কুণন্তি বহিরানূষ। যেষামিন্দ্রো যুবা সখা। উপযামগৃহীতোহস্যগ্নীন্দ্রোভ্যাং ত্বৈষ তে যোনিরক্ষ্মীন্দ্রাভ্যাং, ত্বা৷৷৩২৷৷ ওমাসশ্চর্ষণীভৃতে বিশ্বে দেবাস আ গত। দাশ্বাংসসা দাশুষঃ সূতম্। উপযামগৃহীতোহসি বিশ্বেভ্যস্তা দেবেভ্য। এষ তে যোনির্বিশ্বেভ্যস্তা দেবেভ্যঃ ৩৩৷৷ বিশ্বে দেবাস আ গত শৃণুতা ম ইমং হব। এদং বহির্নিষীদত। উপযামগৃহীতোহসি বিশ্বেভ্যস্খা দেবেভ্য। এষ তে যোনির্বিশ্বেভ্যস্তা দেবেভ্যঃ৩৪৷ ইন্দ্র মরূত্ব ইহ পাহি। সোমং যথা শার্যাতে অপিবঃ সুতস্য। তব প্রণীতী তব শূর শর্মান্না বিবাসন্তি কবয়, সুযজ্ঞাঃ। উপযামগৃহীতোহসীন্দ্রায় ত্বা মরুত্বত এষ তে যোনিরিদ্ৰায় ত্ব মরুত্বতে৷৷৩৫৷ মরুত্বং বৃষভং বাবৃধানমকবারিং দিব্যং শাসমিন্দ্র বিশ্বাসাহমবসে নূতনায়োগ্রং সহোদামিহ তং হুবেম। উপযামগৃহীতোহসীন্দ্ৰায় ত্বা মরুতৃত এষ তে যোনিরিদ্ৰায় ত্বা মরুত্বতে। উপযামগৃহীতোহসি মরুতাং ত্বেজিসে৷৷৩৬৷ সজোষাইন্দ্র সগণণা মরূদ্ভিঃ সোমং পিব বৃত্ৰহা শূর বিদ্বান্। জাহি শর্জ রপ মৃধো নুদস্বাথাভয়ং কৃণুহি বিশ্বততা নঃ। উপযামগৃহীতোহসীন্দ্রায় ত্বা মরুত্বত এষ তে যোনিরিদ্ৰায় ত্বা মরুত্বতে৷৷৩৭। মরু ইন্দ্র বষভো রণায় পিবা সোমমনুধং মদায়। আ সিঞ্চস্ব জঠরে মধ্ব উমিং ত্বং রাজাইসি প্রতিপসুতানা। উপযামগৃহীতোহসীন্দ্রায় ত্বা মরুত্বত এষ তে যোনিরিদ্ৰায় ত্বা মরুত্বতে৷৷৩৮। মহা ইন্দ্রো নৃবদা চৰ্ষণিপ্রা উত দ্বিবহাঅমিনঃ সহোভিঃ। অস্মাদ্ৰগ্ৰাবৃধে বীৰ্যায়োরুঃ পৃথুঃ সুকৃতঃ কর্তৃভির্ভূৎ। উপযামগৃহীতোহসি মহেন্দ্ৰায় দ্বৈষ তে যোনির্মহেন্দ্ৰায় ত্বা।।৩৯৷৷ মহা ইন্দ্রো য ওজসা পর্জনো বৃষ্টিম ইব। স্তোমৈবৎসস্য বাবৃধে। উপযামগৃহীততাহসি মহেন্দ্রায় বৈষ তে যোনির্মহেন্দ্রায় ত্ব।৪০৷ উদু ত্যং জাতবেদসং দেবং বহন্তি কেবঃ দৃশে বিশ্বায় সূর্যং স্বাহা৷৷৪১৷ চিত্রং দেবানামুদগাদনীকং চক্ষুর্মিত্রস্য বরুণস্যাপ্নে। আপ্রা দ্যাবাপৃথিবী অন্তরিক্ষং সূর্য। আত্মা জগতস্তস্তুষশ্চ স্বাহা।।৪২৷ অগ্নে নয় সুপথা রায়ে অস্মান্বিশ্বানি দেব বরুনানি বিদ্বান্। যুযোঋনজুহুরাণমেনো ভূয়িষ্ঠাং তে নম উক্তিং বিধেম স্বাহা।৪৩৷৷ অয়ং নো অগ্নিবরিবস্কৃপোত্বয়ং মৃধঃ পুর এতু প্রভিন্দ। অয়ং বাজাঞ্জয়তু বাজসাতবয়ং শত্রুঞ্জয়তু জহঁষাণঃ স্বাহা৷৪৪৷৷ রূপেণ বো রূপমভ্যাগাং তুথো বো বিশ্ববো বি ভুজতু। ঋতস্য প্রথা প্রেত চন্দ্র দক্ষিণা বি স্বঃ পশ্য ব্যন্তরিক্ষং যতস্ব সদস্যৈঃঃ৫৷ ব্রাহ্মণমদ্য বিদেয়ং পিতৃমন্তং পৈতৃমত্যসৃষিমাৰ্ষেয়ংসুধাতুদক্ষিণম্। অস্মভ্রাতা দেবত্রা গচ্ছত প্ৰদাতারমা বিশত৷৪৬৷৷অগ্নয়ে ত্বা মহাংবরুণোদদাতু সোহমৃতত্বমশীয়ায় ত্রি এধি ময়ো মহং প্রতিগৃহীত্রে। রূদ্রায় ২ মহ্যং বরুণো দদাতু সোহমৃতত্বমশীয় প্রণো দাত্র এধি বয়ো মহং প্রতিগ্রহীত্রে।বৃহস্পতয়ে ত্বা মহ্যংবরুণোদদাতু সোহমৃতত্বমীয় বৃন্দাত্র এধি ময়ো মহং প্রতিহীত্রে। যমায় ত্বা মহং বরুণোদদাতু সোহমৃতত্বমীয় হয়ো দাত্র এধি বয়ো মহ্যং প্রতিগ্রহীত্রে৷৪৭৷৷ কোহদৎ কস্মা অদাৎ কামোহাৎ কামায়াদাৎ। কামো দাতা কামঃ প্রতিগ্রহীতা কামৈতত্তে৷৷৪৮৷৷
[কণ্ডিকা-৪৮ মন্ত্র ১৪০]
.
মন্ত্ৰার্থঃ— ১।হে সোম! অঙ্গুলির থেকে অভিযুত তুমি আপন রসস্রাবের অংশুসমূহের দ্বারা বাণীর স্বামীর নিমিত অভিযুত হয়ে, পবিত্র অবস্থায় পরিত হও। (মন্ত্র পাঠ করে প্রথমে উপাংশু গ্রহকে গ্রহণ করবে)। হে সোম! তুমি দেবতা হয়ে দেবতাগণের নিমিত্ত পরিশ্রুত হও। (মন্ত্র পাঠ করে দ্বিতীয় উপাংশু গ্রহকে গ্রহণ করবে) ॥
২। হে সোম! তুমি আমাদের বর্ষাকে (= অন্নকে) মধুর করে তোল, (তৃতীয় গৃহ গ্রহণ করে) হে সোম! তোমার তো অদম্য এবং সদা জাগরুক নাম সোম বলে কথিত। হে সোম! সেই গণবাচক তোমাকেই এই আহুতি অর্পণ করছি। (দ্বিতীয় স্বাহা-কে বলে বাইরে বেরিয়ে আসবে)। এই আমি বিস্তৃত অন্তরিক্ষকে প্রাপ্ত হচ্ছি।
৩। হে উপাংশুগ্ৰহ! সমস্ত ইন্দ্রিয়গণ, দিব্য এবং পার্থিব দেবতাদের নিমিত্ত তুমি স্বয়ং উৎপন্ন হয়েছে। তোমায় মন (= প্রজাপতি) ব্যাপ্ত করুক। এটি আহুতিস্বরূপ (মন্ত্রপাঠ করে উপাংশুগ্ৰহতে পরিপূর্ণ সোমের দ্বারা আহুতি দেবে)। হে সুষ্ঠুরূপে উৎপন্ন উপাংশুগ্রহে স্থিত সোম! আমি তোমায় সূর্যের (= প্রাণ) জন্যে আহুত করছি। মরীচিগণের পালক দেবতাদের জন্যে হে লেপ! তোমায় লেপন করি (এই যজু পাঠ করে হাতে লেগে থাকা সোমটিকে পশ্চিমদিকে যজ্ঞের পরিধিতে (লেপন, করুন)। হে দ্যুতিমান সোমের অংশবিশেষ! যে শত্রুকে মারার জন্যে আমি তোমায় প্রশংসিত করছি সেই আমার শত্ৰুটি এই ঊর্ধ্বগামী সোমাভিচারের দ্বারা নিহত হয়েছে। এই ফট (= অভিচারের আহুতি) হে উপাংশুগ্ৰহ! এই আমি তোমায় যথাপূর্ব স্থাপিত করছি। (যজুঃ পাঠ করে উপাংশুগ্রহের হাত দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় পূর্বের স্থানে রেখে দেবে)। হে গ্রহ! তোমায় প্রাণের জন্যে আর ন্যায়ের জন্যে এখানে স্থাপিত করছি।
৪। হে উপমগ্রহ! তোমায় গ্রহণ করা হয়েছে। এবার তুমি নিজের ভেতরে সোমরসকে ধারণ করো। হে ধনবান্ ইন্দ্র! তুমি সোমরস পান করো (বা রক্ষ করো)।
৫। হে ইন্দ্র! তুমি আমাদের পশুধনের রক্ষা করো। বর্ষার সাথে আমাদের সঙ্গতি করাও। হে অন্তর্যামগ্রহ! আমি তোমার অভ্যন্তরে দ্যাবাপৃথিবীকে বিধৃত করছি। আমি তোমার অভ্যন্তরে বিস্তৃত অন্তরিক্ষকে ধারণ করছি। হে ধনবান ইন্দ্র। সামান্য এবং উৎকৃষ্ট দেবতাগণের সাথে সমান প্রীতিকারক তুমি অন্তর্যামগ্রহে বিদ্যমান সোমরসের দ্বারা পরিতৃপ্ত হও।
৬। হে ইন্দ্ৰবায়ুগ্রহ (= সোমরস পানের পাত্র)! সমস্ত ইন্দ্রিয় এবং দিব্য তথা পার্থিব দেবগণের নিমিত্ত তুমি উৎপন্ন হয়েছে। তুমি মন (= প্রজাপতি) প্রাপ্ত হও। হে সুষ্ঠু উৎপন্নগ্রহ! তোমায় সূর্যের জন্যে গ্রহণ করি। হে পাত্র! মরীচিপায়ী দেবগণের জন্যে তোমায় শোধন করি (যজুঃ পড়ে সম্মুখে রাখা ঐন্দ্র বায়বগ্রহের হাত দিয়ে পরিষ্কার করবে)। হে গ্রহ! শরীরে উদান বায়ুর পরিপুষ্টির জন্যে আমি তোমায় গ্রহণ করি ৷
৭৷ হে বায়ো! হে পবিত্র সোমপায়িন্! তুমি এখানে আমাদের নিকটে এসে প্রতিষ্ঠিত হও। হে সর্ববরণীয় বায়ো! সহস্রশঃ তোমার বাহক মৃগ বিদ্যমান রয়েছে। (তুমি তাদের থেকে এখানে যজ্ঞে শীঘ্ৰ আগমন করো)। হে বায়ো! আমি তোমার জন্যে এই মত্তকরী সোমরস উপস্থিত করি। যে সোমরস প্রথম পান করার তরে তুমি নিজেকে বিবৃত করো। হে সোমরস! আমি তোমায় বায়ুপান করার জন্যে গ্রহণ করি।।
৮। হে ইন্দ্র বায়ো! এই সোমরস তোমাদের দুজনের জন্যেই অভিযুত করা হয়েছে। তোমরা দুজনে তীব্রগামী অশ্বের দ্বারা শীঘ্র যজ্ঞে আগমন করো। কেননা এই আহ্লাদক সোমরস তোমাদের দুজনের সম্প্রপ্তির কামনা করেছে। হে উপমগ্রহ! তুমি বায়ুদেবকে সোমরস পান করানোর নিমিত্ত এখন গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় ইন্দ্র বায়ুর সোমরস পানের জন্যে গ্রহণ করছি। হে পাত্র? এই স্থল বিশেষটি তোমার স্থিত হওয়ার স্থান। (পাত্রটিকে বেদীর ওপর যথাস্থানে ধরবে)। তারপর বলবে হে উপমগ্রহ! পরস্পর সমানপ্রীতি এবং ইন্দ্র ও বায়ুর নিমিত্ত তোমায় এখানে ধারণ করি বা সোমরসে পূর্ণ করি।
৯। (মিত্র-বরুণের সোমরস পান করার পাত্রটি গ্রহণ করে) হে মিত্র-বরুণ! যজ্ঞ বা সত্যের বৃদ্ধিকারক এই সোমরসটিকে অভিযুত করা হয়েছে। হে মিত্র বরুণ! তোমরা দুজনে আমাদের এই সোমপানের আহ্বানকে শ্রবণ করো। হে উপমগ্রহ! তুমি এবার গৃহীত হয়েছ। হে গ্রহ! আমি তোমায় মিত্রবরুণের নিমিত্ত গ্রহণ করি।
১০। (মিত্র-বরুণ সম্পর্কিত উপযাম-গ্রহে দুটি কুশ ধরে, সেই পাত্র ভরা সোমরসে দুধ মেলাবে)। দেবতাগণকে সোমহবিঃ প্রদানকারী আমরা ঋত্বিগ-যজমান গো অশ্বাদি ধনে যেন প্রসন্ন হই। দেবতা সোমহবিঃ-র দ্বারা প্রসন্ন হোন, গো-অশ্বাদি ঘাসের দ্বারা আনন্দিত হোক। হে মিত্র বরুণ! তোমরা দুজনে সদাসর্বদা আমাদের সেই অবিচালিনী (= ঋজুভাবে স্বদ্ধ মোক্ষণকারিণী) গাভী প্রদান করো। হে পাত্র! এই তোমার স্থিত হওয়ার স্থান। আমি তোমায় এখানে মিত্র এবং বরুণ দেবতার নিমিত্ত ধারণ করছি।
১১৷ (অশ্বিনীদেবগণের সোমপাত্র গ্রহণ করে–হে অশ্বিনৌ! তোমার যে বাণী (বা পিচকারী) মধু ও সত্যের দ্বারা যুক্ত–সেটির দ্বারা তুমি আমাদের যজ্ঞকে আসিঞ্চিত করো। হে উপম গ্রহ! তোমাকে এবার গ্রহণ করা হল। আমি তোমায় অশ্বিনীদের জন্যে গ্রহণ করছি। এই তোমার স্থান। মধুবিদ্যাযুক্ত অশ্বিনীগণের জন্যে আমি তোমায় এখানে বেদির উপর ধারণ করছি।
১২। হে সোম! চিরন্তন পূর্বকাল–সর্বকালবর্তমান কালের অন্যান্য ঋষিগণের সমান তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ, যজ্ঞে আহুত হয়ে দুর্ভাসনে আসীন, স্বর্গদাতা, শত্রুর প্রতি গমনকারী, বলশালী, শত্রুকে পর্যদস্তকারী; ক্ষিপ্রকারী। শত্রুর ধনাদি বিজয়ী ইন্দ্রকে সেই যজমানের নিমিত্ত সব কিছু প্রার্থিত করে, থাকো, যে যজমানের যজ্ঞক্রিয়ায় মিশ্রণাদির দ্বারা তুমি অভিবর্ধিত হও। হে শুক্রগ্রহ! তোমায় উপযামের দ্বারা গ্রহণ করা হয়েছে। হে গ্রহ! আমি তোমায় শন্ড বের করবার নিমিত্ত গ্রহণ করছি। এই তোমার স্থান। হে গ্রহ! তুমি যজমানের নিমিত্ত বীরের ন্যায় আচরণ করো। (দুটি ঘূপখণ্ড নিয়ে অধ্বর্যু এবং প্রতিস্থাতা সেগুলিকে প্রেক্ষণ করবেন এবং তার দ্বারা অধ্বর্যু শুক্রগ্রহণে ও প্রতিস্থাতা মনিগ্রহকে শোধন করে ঢেকে দেবেন। শুক্রের পুত্র এবং অসুরগণের পুরোহিত শণ্ডকে (কচ!) যজ্ঞ থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে। (অধ্বর্যু এবং প্রতিস্থাতা হবিধান মণ্ডপের থেকে বাইরে যাবেন)। হে শুক্রগ্রহ! শুভ্র সোমরসকে তোমার দ্বারা পানকারী দেবগণ তোমায় যজ্ঞস্থানে নিয়ে যাবেন। (বেদির দক্ষিণ ভাগে অধ্বর্যু শুক্রগ্রহকে এবং উত্তরভাগে প্রতিস্থাতা মনিগ্রহকে ধরবেন)।, হে উত্তরবেদিশ্রোতগণ! তুমি সর্বথা অহিংসিত হও।
১৩৷ (দক্ষিণ ভাগে স্থিত যুপের কাছে গিয়ে অধ্বর্যু বলবেন–) হে শুক্রগ্রহ! সুষ্ঠু বীর তুমি; বীরপুত্রগণের উৎপন্নকর্তা হয়ে গো-অশ্বের সমৃদ্ধি যজমানকে দিয়ে তুমি পরিতঃ প্রাপ্ত হও। আপন শুভ্র দীপ্তির দ্বারা শুক্রগ্রহ, দ্যাবাপৃথিবীর সাথে সঙ্গত হয়, তোমাদের সবাইকে ধারণ করে। শণ্ড যজ্ঞ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। (মন্ত্রপাঠ করে অধ্বর্যুর দ্বারা প্রেক্ষিত যুপখণ্ডটি বাইরে করে দিন)। হে যুপশকল! তুমি শুক্রগ্রহ ধারণের স্থান। (মন্ত্রপাঠ করে অধ্বর্যুর দ্বারা প্রেক্ষিত ঘূপশকলকে আহবনীয়তে ফেলে দেবেন)৷
১৪৷ হে সোমদেব! আমরা যজমানগণ তোমার অজস্রধারায় যুক্ত বলশালী রসের (দেবতাদের) প্রদাতা হতে পারি এবং সেই দেবগণের থেকে ধন-অন্ন প্রাপক হতে পারি। (যুপের দুদিকে দণ্ডায়মান হয়ে অধ্বর্যু এবং প্রতিপ্রস্থাতা ক্রমশঃ আহুতি দেবেন। অধ্বর্যু শুক্রগ্রহের সোমরসের দ্বারা প্রথম আহুতি দেবেন। তারপর প্রতিস্থাতা মনিগ্রহ দ্বারা আহুতি দেবেন)। সবার দ্বারা বরণীয় সেই প্রথম সোমক্রয়ের শুদ্ধ ক্রিয়া ছিল এবং সেই প্রথম বরুণ মিত্র এবং অগ্নি সোমের রক্ষক বা পানকারক।
১৫। সেই বৃহস্পতি এই সোমের সর্বপ্রথম জ্ঞাতা। সেই ইন্দ্রের জন্য, হে অধ্বর্যুগণ, অভিযুত সোমের আহুতি দুটি ইন্দ্রের জন্য এই সোমের রসের আহুতি। সেই ছন্দের অভিমানী দেবতাগণ তৃপ্ত হোন। যে ছন্দদেবতাগণ সোমরসের হোমে অপেক্ষিত এবং যাঁরা তাঁদের এই সোমযাগের প্রয়োগ দ্বারা সর্বথা। প্রীণিত–কেননা তাদের দ্বারা এটি সুষ্ঠুভাবে আহুত হয়ে দেবগণের সম্প্রপ্ত হচ্ছে। (অধ্বর্যু হোতার নিকট পশ্চিমমুখী হয়ে দণ্ডায়মান হবেন) অগ্নি সোমরসের দ্বারা পরিচরিত হল (এইরূপ তিনি হোতাকে বলবেন)।
১৬৷ (মনিগ্রহ কে গ্রহণ করবে)। বিদ্যুতের জ্যোতি থেকে গর্ভঝিল্লীর ন্যায় পরিবেষ্টিত এই কমনীয় চন্দ্ররূপী সোম আদিত্য দ্যুলোকের গর্ভে বিদ্যমান জলসমূহের নির্মাণে তাঁদের সম্প্রেরিত করে থাকে (= বর্ষিত হয়ে থাকে)। এই নোম মেধাবী, অধ্বর্যু এবং প্রতিপ্রস্থাতা সূর্যের জলসমূহের সাথে সঙ্গতিসম্পন্ন হলে পরে, বালকের ন্যায় স্তুতির দ্বারা অর্চনা করে থাকে। হে সোমরস! তুমি উপম গ্রহর দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় অসুর পুরোহিত মর্বকে যজ্ঞ থেকে বিতাড়িত করার জন্যে গ্রহণ করি।
১৭৷ মন্থিগ্রহতে পরিপূর্ণ যে সোমরস তার সাথে যবের ছাতু মেশাবে। যজ্ঞাদি কাৰ্য্যে ত্বরাবান্ অধ্বর্যু এবং প্রতিস্থাতা সোম্যগগুলিতে আপন স্বকর্মের দ্বারা মনের ন্যায় উৎসাহযুক্ত শুক্র, মন্থি গ্রহগুলিকে সম্প্রপ্ত করে থাকে। প্রভূতদক্ষিণ ধন যা অধ্বর্যু আপন হাতে গৃহীত পাত্রে আঙুলের দ্বারা সোমরস ও ছাতু রূপে সর্বদিকচক্রবালে মিলে দেয়, সেটিই প্রধান ঋত্বি। হে মহ্নিগ্রহ! এটাই তোমার স্থান। তুমি এখানে স্থিত হয়ে যজমানের প্রজাগণকে পালন করো। (প্রতিপ্রস্থাতা পোক্ষিত যূপসকলের দ্বারা মনিগ্রহকে ঢাকবেন এবং অপোক্ষিত যূপসকলের দ্বারা সেটি স্বচ্ছ করবেন)। এই অসুর পুরোহিত মর্বকে যজ্ঞ থেকে পরিষ্কার করে দেওয়া হল। (প্রতিস্থাতা হবিধান মণ্ডপ থেকে বাইরে যাবেন)। হে মন্থিগ্রহ! তোমায় মন্থিগ্রহ থেকে সোমরস পানকারী দেবগণ যজ্ঞস্থান প্রাপ্ত করাবেন। হে উত্তরবেদি শ্রোণে! তুমি সর্বথা অহিংসিত।
১৮। (প্রতিপ্রস্থতা উত্তর যূপস্থানে যাবেন)। হে মন্থিগ্রহ! সুন্দুর প্রজাগণের সাথে যুক্ত তুমি উত্তম প্রজাগণের উৎপন্নকর্তা হয়ে ধন-অন্নের যজমানকে সম্প্রাপ্ত হও। (প্রতিপ্রস্থাতা অরঙ্গি-কে যুক্ত করবেন) এই মন্থিগ্রহ দ্যাবাপৃথিবীর দ্বারা সঙ্গত হয়ে মন্থি জ্যোতি দ্বারা যুপকে ধারণ করে থাকে। (প্রতিপ্রস্থতা অপ্রেক্ষিত ঘূপসকলকে বাইরে করে দেবেন)। এই অসুর পুরোহিত মর্ব যজ্ঞ থেকে বহিষ্কৃত হল। (প্রতিপ্রস্থাতা প্রেক্ষিত ঘূপশকল-কে আহবনীয়তে রেখে দেবেন)। হে যুপশকল! তুমি মন্থিগ্রহের আধার।
১৯৷ যে এগারোজন দ্যুলোকবাসী দেবতা রয়েছেন; পৃথিবীর পরে যে এগারোজন দেবতা রয়েছেন তাদের এবং জল ও অন্তরীক্ষে স্বমহিমায় বিরাজিত যে দেবগণ রয়েছেন, তাদের সংখ্যাও এগাররা। সেই তোমরা সব দেবতাগণ আমাদের এই যজ্ঞকে প্রীতিপূর্বক সেবন করো।
২০। (আগ্রয়ণগ্রহকে গ্রহণ করবে) হে আগ্ৰয়ণগ্রহ! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। তুমি আগে নিয়ে যাওয়ার আগ্ৰয়ণগ্রহ স্বরূপ। তুমি আপন শ্রেষ্ঠত্বের বসে আমাদের রক্ষা করো। যজ্ঞকে রক্ষা করো, যজ্ঞের স্বামী যজমানকেও রক্ষা করো। যজ্ঞাভিমানী দেবতা বিষ্ণু তোমায় আপন বলে রক্ষা করুন। তুমি বিষ্ণুকে রক্ষা করো। হে আগ্রয়ণগ্রহ! তুমি আমাদের তিনটি সবনকেই রক্ষা করো।
২১। (তিন বার হিং পদের উচ্চারণ করে যজমান এই যজুষগুলি জপবেন)। সোমদশা পবিত্র পাবিত হয়ে থাকে। সে পাত্রে গতি সঞ্চার করে বা প্রাপ্ত হয়ে থাকে। এই ব্রাহ্মণজাতির কল্যাণের জন্যে, ক্ষত্রিয়বর্গের কল্যাণের জন্যে, এই অভিষব করা যজমানের কল্যাণের জন্যে সেটি পাবিত হয়ে থাকে। সেটি অন্ন বা বর্ষা এবং ঊর্জার জন্যে, পাবিত হয়ে থাকে। সেটি জল এবং ঔষধের নিমিত্ত পাবিত হয়ে থাকে। সেটি দ্যাবাপৃথিবীর নিমিত্ত পাবিত হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, সে সকলের সুষ্ঠু উদ্ভবের জন্যে পাবিত হয়ে থাকে। হে আগ্ৰয়ণগ্রহ! আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত গ্রহণ করছি। এটি তোমার স্থান আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের প্রীতি ও শান্তির নিমিত্ত এখানে ধারণ বা স্থাপন করছি।
২২। হে সোম! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছ। হে উথ্যগ্রহ! আমি উথ্যগণের (বরুণ- ব্রাহ্মণাচ্ছংসী অষ্টাবা সম্পর্কিত শস্ত্রগুলি) রক্ষাকারী তোমায় বৃহৎসা ও সোমান্ন যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে গ্রহণ করি। হে ইন্দ্র! তোমার যে মহ সোপান্ন রয়েছে–সেই সোমপান করার জন্যে আমি তোমায় আহ্বান করি। হে সোম! যজ্ঞাধিদেবতা বিষ্ণুর জন্যে আমি তোমায় গ্রহণ করি। (উথ গ্রহতে পূর্ণ নোমরক্ষকে তিন ভাগে বিভক্ত করে গ্রহণ করবে)। হে সোম! এই তোমার স্থান। হে সোম! আমি তোমায় সর্ব উথ্যগণের জন্যে গ্রহণ করছি। দেবতাগণকে প্রীত করে যে সোমরস–আমি সেই সব দেবতাদের আনন্দের জন্যে তোমায় গ্রহণ করছি। আমি তোমায় যজ্ঞের দোষরহিত সমাপ্তির জন্যে গ্রহণ করছি৷
২৩৷ হে সোম! দেবগণকে তর্পিত করার জন্যে তোমাকে আমি মিত্র-বরুণ দেবগণ ও যজ্ঞের নির্দোষ সমাপ্তির জন্যে গ্রহণ করছি। হে সোম! দেবগণকে প্রীণিত করা তোমায় আমি ইন্দ্রের জন্যে এবং যজ্ঞের নির্দোষ সমাপ্তির জন্যে গ্রহণ করছি। ইন্দ্র-অগ্নির জন্যে এবং যজ্ঞের নির্দোষ সমাপ্তির জন্যে আমি তোমাদের (দেবতাগণকে) তৃপ্তকারী সোমকে গ্রহণ করছি। ইন্দ্ৰ বরুণের প্রীতিকারক এবং যজ্ঞের নির্দোষ সমাপ্তির জন্যে হে সোম! আমি তোমার ন্যায় দেবীণককে গ্রহণ করছি। হে সোমরস! ইন্দ্র বৃহস্পতির প্রীতি এবং যজ্ঞের নির্দোষ সমাপ্তির জন্যে আমি তোমার ন্যায় দেবতৰ্পর্ক সোমরসকে গ্রহণ করে থাকি।
২৪। (ধ্রুবসংজ্ঞক সোমগ্রহকে গ্রহণ করে) দুলোকের সূর্যভাবে, মূর্ধাভূত, পৃথিবীর সঞ্চরণশীল যজ্ঞের অরণিমন্থন থেকে উৎপন্ন, ক্রান্তস্রষ্টা, সম্রাট, যজমানাদির অতিথিভূত এবং মুখে সদা বিদ্যামান সুবারূপ খাদ্যপাত্র বৈশ্বানর অগ্নিকে দেবতাগণ উৎপন্ন করেছেন৷
২৫৷ হে সোম! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছো। তুমি ধ্রুবসংজ্ঞক রূপে বিদ্যমান। তুমি বৈশ্বদেবী শংসনপ্রস্থান অবধি সদা ধ্রুবভাবে স্থিত রয়েছে। তুমি ধ্রুবগণের মধ্যে (= স্থির গণের মধ্যে) অত্যন্ত স্থিরতাবান্ চ্যুতিরহিতগণের মধ্যে তুমি বিশেষভাবে চ্যুতিরহিত স্থিতিসম্পন্ন। হে ধ্রুবপাত্র, এই তোমার স্থান। আমি তোমায় এখানে বৈশ্বানর অগ্নির নিমিত্ত স্থাপন করছি। (ধ্রুবগ্রহে স্থিত সোমরস হোতার চমস থেকে বের করবেন) আমি আপন স্থির মনের দ্বারা বাণী (ব = স্তুতি) সাথে ধ্রুবপাত্রে স্থিত সোমরসকে হোতর চমসে অর্পিত করছি। এবার ইন্দ্রই আমাদের প্রজাগণকে শহরিত এবং পরস্পর প্রীতিযুক্ত জানাবেন৷৷
২৬। (চলকে গিয়ে বা চুঁইয়ে পড়ে যাওয়া সোমরসের ক্ষেত্রে যে প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ ঘৃতের হোম দেওয়া হয় সেটিকে বি হোম বলা হয়ে থাকে। সেই বিপু হোমটি করে অধ্বর্যু-) হে সোম! তোমার যে ফোঁটাগুলি দ্রোণঘটাদি থেকে স্পর্শিত হয়ে পতিত হয়, তোমার যে লতাখণ্ড অভিষব করার পাথরের বাইরে ছিটকে এসে পড়েছে, সেই অংশটি অধ্বর্যুর হাত থেকে পতিত হয়েছে, অথবা যে দশা পবিত্রভাবে ছাঁকবার সময় গড়িয়ে গিয়েছিল, মনের দ্বারা বষট্ রূপে সংকল্পিত সেই সেই (তোমার) ভাগগুলির পূর্তির জন্যে আমি এই ঘৃত হোম করছি। এইরূপে ঘৃতাহুতি হয়েছে। (অধ্বর্যুর দ্বারা গ্রহণ করা তৃণযুগ্ম-র মধ্যে একটি তৃণকে চাতালে ফেলুন)। হে! চাতাল! তুমি দেবতাগণের স্বর্গগামী হওয়ার সোপানভূত হও।
২৭। (এই প্রাণ প্রভৃতি যজুষ গণের অবকাশ সংজ্ঞা! এদেরকে যজমানগণের দ্বারা আহুত করুন এবং ক্রমানুসারে সমস্ত গ্রহকে দেখান)। হে উপাংশুগ্রহ! তুমি ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদানকারী। অতএব তুমি আমার ব্রহ্মবৰ্চস্ এবং প্রাণদানের জন্যে স্বধর্মে প্রবর্তিত হও। হে অন্তর্যামগ্রহ! ব্রহ্মবর্ধসের প্রদাতা তুমি আমার ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করতে এবং আমার উদানের পুষ্টির জন্যে স্বকর্মে প্রবর্তিত হও এবং হে ঐন্দ্ৰবায়বগ্রহ! ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদানকারী তুমি আমায় ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করো এবং আমার বাণীর পুষ্টির নিমিত্ত স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও। হে মৈত্রাবরুণগ্রহ!ব্রহ্মবর্ডসের দাতা তুমি আমার যজ্ঞ, বল ও ব্রহ্মাবসের প্রাণের জন্যে সুকর্মে প্রবর্তিত হও। হে আশ্বিনগ্রহ! ব্রহ্মবৰ্চস্ এর প্রদানকারী তুমি আমায় ব্রহ্মবৰ্চস প্রদান করতে এবং আমার শ্রোত্রের পুষ্টির জন্যে স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও। হে শুক্রমনিগ্রহ! ব্রহ্মবৰ্চ-এর প্রদানকারী তোমরা দুজন আমাকে ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করতে এবং আমার চক্ষুর শক্তির পুষ্টিনিমিত্ত স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও।
২৮। হে আগ্রয়ণগ্রহ! ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদানকারী তুমি আমায় ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করতে এবং আমার ভূতাত্মার বলপ্রাপ্তির নিমিত্ত স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও। হে ধ্রুবগ্রহ! ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদাতা তুমি আমায় ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করতে এবং আমায় ওজস্বিতা, বল বা আয়ুর পুষ্টির নিমিত্ত স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও। হে পূতভৃদ–আবহনীয়গ্রহগণ! ব্রহ্মবস্ প্রদানকারী তোমারা দুজন আমায় ব্রহ্মবৰ্চস্ প্রদান করে এবং আমায় অক্ষয় প্রজার পুষ্টির নিমিত্ত স্বকর্মে প্রবৃত্ত হও।
২৯। (যজমান দ্রোণকলশকে দেখবেন) হে দ্রোণঘট! তুমি প্রজাপতি। তুমি প্রজাপতিতম। তুমি প্রজাপতি সম্পর্কিত। তুমি প্রজাপতি নামধারী হয়ে থাকো। যে তুমি প্রজাপতিভূত তার প্রজাপতিনাথকে আমরা জ্ঞাত হই। হে ঘট! যে প্রজাপতিরূপ ঘটে আমরা সোমরসে তৃপ্ত করে থাকি। হে ভূর্ভুবঃ স্বঃ (= অগ্নি-বায়ু-সূর্য)! আমরা যেন সুন্দর সন্তানযুক্ত হতে পারি। তারা যেন সুন্দর বীরের ন্যায় বীর্যবান বীর হয়। সুষ্ঠু পোষণ (= অন্ন) দ্বারা যেন আমরা সুপোষক (= অন্নদাতা) হই ॥
৩০। (অধ্বর্যু তথা প্রতিস্থাতা ১২টি ঋতু গ্রহের দ্বারা হোম করবে। দুটি দুটি করে এই ছয়টি গ্রহের মধ্যে প্রথম মাসের গ্রহগুলির ক্ষেত্রে অধ্বর্যু এবং দ্বিতীয় মাসের গ্রহগুলির ক্ষেত্রে প্রতিস্থাতার অধিকার হবে)। হে ঋতুগ্রহ! = তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় মধু (= চৈত্র) মাসের নিমিত্ত গ্রহণ করছি। (প্রতিপ্রস্থাতা বললেন- হে গ্ৰহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় মাধব (= বৈশাখ) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে পাত্র! তুমি উপামের (গ্রহের) দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় শুক্র ( = জ্যৈষ্ঠ) মাসের নিমিত্ত গ্রহণ করছি। হে পাত্র! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি (= প্রতিস্থাতা) তোমায় শুচিতার (= আষাঢ়) জন্যে গ্রহণ করি। হে ঋতুগ্রহ। তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হও। আমি তোমায় নভস (শ্রাবণ) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি (অধ্বর্যু) তোমায় এই (= আশ্বিন মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ!তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় ঊর্জ (= কার্তিক) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত। আমি তোমায় সহস (= অগ্রহায়ণ) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় সহস্য (= পৌষ) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় তপস (= মাঘ) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় তপহম (= ফাল্গুন) মাসের জন্যে গ্রহণ করছি। হে ঋতুগ্রহ! তুমি উপযামের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় পাপের স্বামী মলমাসের জন্যে গ্রহণ করছি৷
৩১। হে ইন্দ্র–অগ্নে! সোমরস পান করবার জন্যে তুমি যজ্ঞে এসো। এই সূর্যের সমান বরণীয় সোমরস তোমাদের দুজনের পান করার জন্যে অভিযুত করা হয়েছে। আমাদের স্তুতিতে প্রার্থিত হয়ে তোমরা দুজন আমাদের এই সোমরসটিকে পান করো। হে সোমরস! তুমি ইন্দ্র অগ্নির নিমিত উপম গ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। হে সোমরস! আমি তোমায় ইন্দ্র-অগ্নির পানের জন্যে গ্রহণ করছি। এই তোমার স্থিত হওয়ার স্থান। হে সোমরস! তোমায় আমি ইন্দ্র অগ্নির নিমিত্ত এই স্থানে ধারণ করি।
৩২। যে যজমান অগ্নি (= যজ্ঞকে) প্রজ্বলিত করছেন এবং যাঁরা ক্রমশঃ যজ্ঞবেদিতে দেবগণের উপবেশনের জন্যে দৰ্ভসন বিছিয়ে রাখছে; আর যে যজমানদের সাথে সদা যুবা ইন্দ্র মিত্রতায় আবদ্ধ রয়েছেন (= যাঁদের সোমহবি স্বীকার করার জন্যে তিনি তাদের যজ্ঞে পদার্পণ করে থাকেন); (–তারাই সুখপূর্বক সফল যজ্ঞ সম্পাদন করতে পারেন) হে সোমরস! তুমি উদযাম পাত্রের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় ইন্দ্র-অগ্নির নিমিত্ত গ্রহণ করছি। হে সোম! এই তোমার উপবেশনের স্থান। হে সোমরস! আমি তোমায় ইন্দ্র-অগ্নির নিমিত্ত এই বেদিতে স্থাপিত করছি (৩১ বা ৩২ সংখ্যক মন্ত্র দুটি পাঠ করে ইন্দ্র-অগ্নি সম্পর্কিত গ্রহকে গ্রহণ করা উচিত)।
৩৩। (এই মন্ত্রের দ্বারা বৈশ্বদেব গ্রহকে গ্রহণ করবে) রক্ষাকারী, প্রজাধারক হে বিশ্বদেবগণ! তুমি যজ্ঞে পদার্পণ করে। সোমহবি প্রদানকারী যজমানকে বিবিধ রত্ন দানকারী তুমি হে বিশ্বদেব! এই অভিষুত সোমরস পান করার জন্যে শীঘ্র আগমন করো। হে সোমরস! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত গ্রহণ করছি। হে সোম! এই তোমার স্থিত হওয়ার ভূমি। আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত এখানে বেদিতে স্থাপিত করছি।
৩৪। হে বিশ্বদেবগণ! তোমরা এখানে এসো। তোমরা আমার এই আহ্বানকে শ্রবণ করো। হে বিশ্বদেবগণ তোমরা এই দৰ্ভাসনে বিরাজমান হও। হে সোমরস! তুমি উপযাম পাত্রের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের জন্যে গ্রহণ করি। হে সোমরস! এই তোমার স্থিত হবার স্থান। আমি তোমায় বিশ্বদেবগণের নিমিত্ত গ্রহণ করছি এবং এখানে এই বেদিতে স্থাপিত করছি। (মন্ত্রে পড়ে বিশ্বেদেবগ্রহকে গ্রহণ করা উচিত।) (এই অবধি প্রাতঃ সবনে গ্রহণীয় গ্রহগণের গ্রহণ মন্ত্র পূর্ণ হল। এবার আগে মাধ্যন্দিন সবনে গৃহীত গ্রহগুলিকে গৃহীত করবার মন্ত্রগুলি লেখা যাক)।
৩৫। হে মরুৎগণের দ্বারা যুক্ত ইন্দ্র! তুমি এখানে যজ্ঞে আগমন করে সোমরস পান করো যে প্রকার রাজা শর্যাতির যজ্ঞে অভিযুত সোমরস পরিশ্রুত করে পান করেছিলে। হে শৌর্য্যোপেত ইন্দ্র! তোমার দ্বারা নিয়ে গিয়ে এবং তোমারই মুখে বিদ্যমান কবিজন এবং সুযজ্ঞসম্পাদনকারী যজমান সুখপূর্বক তোমার পরিচরণ করে থাকেন। হে সোমরস! তুমি উপমাসগ্রহে গ্রহীত হয়েছে। মরুৎগণের দ্বারা যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় গ্রহণ করি। হে সোম! এই তোমার স্থান। মরুঙ্গণের দ্বারা যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় ধারণ করি।
৩৬। মরুৎগণের দ্বারা যুক্ত, জলবর্ধক, অভিবর্ধনশীল, অনীচশত্রু, দিব্য, শাসক সর্বজনকে অভিভূতকারী উদঘূর্ণবল এবং বলদাতা সেই ইন্দ্রকে আজ এই নবীন যজ্ঞ রাক্ষসের জন্যে আমরা আহ্বান করি। হে সোমরস! তুমি উপযাম পাত্রের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় মরুৎগণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে গ্রহণ করছি। মরুলতগ্রহ! এই তোমার স্থান। মরুঙ্গণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় এখানে বেদিতে ধারণ করেছি। (মন্ত্র সংখ্যা ৩৫ এবং ৩৬-এর এটুকু অংশ পাঠ করে দুটি মরুতৃতী গ্রহগণকে গ্রহণ করবে)। হে মরুতৃতীগ্রহ! তুমি উপমাসের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। (উপযাম = ঋতুপাত্র)। আমি তোমায় মরুঙ্গণের ওজস্বিতা প্রাপ্তির জন্যে গ্রহণ করছি। (এই মন্ত্রাংশটা পড়ে তৃতীয় মরুতৃতী গ্রহটিকে গ্রহণ করবেন)।
৩৭। হে শূর ইন্দ্র। মরুঙ্গণের সাথে সমান প্রীতি; তাদের গণেদের সাথে যুক্ত এবং বিদ্বান তুমি এই অভিযুত এবং মাধ্যন্দিন সবনের সোমরসকে পান করো। তুমি শত্রুগণকে নিধন করো। হিংস্র রাক্ষস-অসুরগণকে নিধন করো। হে ইন্দ্র! এখন তুমি আমায় চতুর্দিক থেকে অভয় প্রদান করো। হে সোমরস! তুমি উপযাম গ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি মরুৎগণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে তোমায় গ্রহণ করি। হে সোমরস! এটা তোমার স্থান। মরুগণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় গ্রহণ করি ৷
৩৮। মরুৎগণের সঙ্গে যুক্ত হে ইন্দ্র! অভীষ্টবর্ধক তুমি যুদ্ধ এবং উল্লাসের নিমিত্ত এই পুরোডাশাদির দ্বারা যুক্ত সোমরসকে পান করো। হে ইন্দ্র! এই মধুর সোমরসের ঊর্মিকে আপন জঠরে (= কুক্ষি) আসিঞ্চিত করো (= পান করো)। হে ইন্দ্র! প্রতিপদা প্রভৃতিতে অভিষক করা এই সোমরসগুলির একমাত্র তুমিই স্বামী হওয়ার যোগ্য। হে সোমরস! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। মরুঙ্গণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় গ্রহণ করি। এই তোমার স্থান। হে সোমরস! মরুৎগণের সঙ্গে যুক্ত ইন্দ্রের জন্যে আমি তোমায় এই বেদীতে স্থাপনা করছি।
৩৯। মহান্, মনুষ্য (= যজমানগণের) যুক্ত, প্রজাগণকে অন্ন ও ধন দ্বারা পরিপূর্ণকারী পৃথিবী ও দুলোকে সবচেয়ে বড়, আপন শত্রুকে অভিভূতকারী, অতি বলবান বা শত্রুঘাতী, আমাদের প্রতি অভিমুখী উদার এবং বিস্তারমান্ ইন্দ্র, বৰ্ষর্ণরূপ বীরকর্মের নিমিত্ত অত্যন্ত অভিবৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়েছে। সে আপন বর্ষাণাদি কর্মের দ্বারা সুকর্মায় পরিণত হল। হে সোমরস। তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আমি তোমায় মহেন্দ্রর জন্যে গ্রহণ করছি। হে সোমরস! এই তোমার স্থান। আমি তোমায় মহেন্দ্র গ্রহের থেকে সোমরস পানকারী ইন্দ্রের জন্যে এখানে বেদিতে স্থাপিত করছি।
৪০। (এই মন্ত্র পাঠ করে মাহেন্দ্রগ্রহকে গ্রহণ করা উচিত।) সেই ইন্দ্র মহান যে আপন বলে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। যেমন পর্জন্য আপন ওজসের দ্বারা বৃষ্টিযুক্ত হয়ে থাকে। সেই বৎসঋষির স্তোমের দ্বারা অত্যন্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। হে সোমরস! তুমি উপযামগ্রহের দ্বারা গৃহীত হয়েছে। তোমায় মহেন্দ্রর জন্যে গ্রহণ করি। হে সোম! এই তোমার স্থান। মহেন্দ্রর জন্যে আমি তোমায় এখানে বেদিতে স্থাপিত করছি৷
৪১৷ সেই জ্ঞাতযোগ্য সমস্ত বস্তুসমূহকে স্বপ্রকাশের দ্বারা যিনি অভিজ্ঞাত হন (জানতে পারেন), সব পদার্থকে উৎপন্নকারী এবং অভিজ্ঞাত হয়েছেন যিনি, সেই দ্যুতিমান সূর্যকে তার প্রজ্ঞাপক রশ্মিপুঞ্চ সবার দর্শনার্থে উধ্বাকাশে নিয়ে আসে। সেই সূর্যের জন্যেই এই আহুতি। (এই মন্ত্র পাঠ করে দক্ষিণ হোমের প্রথম আহুতি প্রদান করবেন।) দক্ষিণ হোম বেদিশালার দরজায় স্থিত অগ্নিতে পাওয়া যায়।
৪২। (এই হোমের আহুতি দেওয়ার পূর্বে একটি কাপড়ে সোনা বেঁধে সুবায় ধারণ করা উচিত)। দ্যুতিমান রশ্মিগণের বিচিত্র সমূহ এই সূর্যের উপর এসেছে। সে মিত্র, বরুণ এবং অগ্নির চক্ষুস্বরূপ। এটি দ্যাবাপৃথিবী এবং অন্তরিক্ষকে আপূরিত করে রেখেছে। এই সূর্যই (= পরমাত্মা) চর-অচরের আত্মস্বরূপ। এর জন্যে এই আহুতি দেওয়া হল। (মন্ত্র পড়ে দ্বিতীয়বার আহুতি দেবেন)।
৪৩। হে অগ্নে! তুমি আমাদের সুপথের দ্বারা ধনপ্রাপ্তির দিকে নিয়ে চলো। তুমি যাবতীয় ধন আহরণের পথের (উপায়সমূহের) জ্ঞাতা। কুটিলতারূপ পাপ (= অসদুপায়ের দ্বারা ধন প্রাপ্ত করবার স্বভাব) থেকে আমাদের দূরে রাখো। হে অগ্নে (= পরমাত্মন্)! এরপর আমরা তোমার প্রতি অত্যধিক নমস্কার যুক্ত স্তুতির কথা বলব। তুমি অর্থাৎ অগ্নির জন্যে এই আহুতি প্রদান করা হল। (মন্ত্রপাঠ করে আগ্নী-তে আহুতি দেবে)
৪৪। এই অগ্নি আমাদের বরণীয় ধন-প্রাপ্ত করাবে। এটি হিংস্র রাক্ষস অসুরগণকে ভেদ করে রক্ষার্থে অগ্রে গমন করুক। যুদ্ধে এই মন্ত্রগুলি জপ করুক। অত্যন্ত প্রসন্নতার দ্বারা প্রাপ্তব্য এই অগ্নি শত্রুদের যেন পরাভূত করে। সেই অগ্নির জন্যে এই আহুতি। (আহুতি দেবেন)।
৪৫। (ঋত্বিজ দক্ষিণায় প্রাপ্ত গাভীগুলিকে সম্বোধন করে–) গাভীগণ! আমি আপন স্বরূপের সাথে তোমার স্বরূপ সম্প্রপ্ত হয়েছি। সবর্ধনের স্বামী সেই পরব্রহ্ম প্রজাপতিই তোমায় আমাদের (ঋত্বিজগণের) মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দিন। সোনার দক্ষিণায় যুক্তা তোমরা, হে গাভীগণ! এই যজ্ঞ-পথের দ্বারা আমাদের প্রাপ্ত হও। হে গাভীগণ! (সোপানভূতা তোমা হেন গাভীগণের মাধ্যমে) আমি স্বর্গপথ এবং পিতৃযান অন্তরিক্ষপথকে দেখে থাকি। (যজমানের দেব-পিতৃপুরুষগণকে স্বদানবশে প্রীণিত করে এখন তুমি আমাদের কাছে প্রাপ্ত হচ্ছ বা আমাদের প্রাপ্ত হয়ে এবার তুমি আমাদের দেব পিতৃপুরুষদের প্রসন্ন হওয়ার হেতুস্বরূপ বলে গণ্য হবে)। (যজমান) দক্ষিণার ধনগবাদি পশুসমূহ! যজ্ঞের সদস্য ঋত্বিজাদির দ্বারা গৃহীত হয়েও তুমি আরো আরো আধিক্যপ্রাপ্ত হও।
৪৬। (যজমান আগ্রীকে সপ্রাপ্ত হয়ে থাকে–) আমি আজ উত্তম পিতা, পিতামহ যুক্ত, মন্ত্ৰাৰ্থকর্তা, ঋষিকুলীয় (= ঋষিগণের কুল পরিচালক) এবং সদাই স্বর্ণরূপে দক্ষিণ প্রাপ্তকারী আগ্রীব্র ব্রাহ্মণকে যেন প্রাপ্ত করি। হে দক্ষিণায় প্রদত্ত ধনরাশি! আমাদের দ্বারা প্রদত্ত হয়ে তুমি, দানের পুণ্যের নিমিত্ত দেবগণে প্রাপ্ত হও। পুনরায় ফিরে এসে তুমি দাতা যজমানকেই অভিবৃদ্ধরূপে প্রাপ্ত হও। (যজমান যদি ১০০-র দক্ষিণা দান করেছে, তাহলে দেবতাদের দয়ার পুণ্যফলে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে ৪০০ হয়ে সেই যজমান ৪০০ সুবর্ণ প্রাপ্ত হবে)।
৪৭। হে স্বর্গ! বরুণদেব আমাকে অগ্নিস্বরূপের দান দিয়েছেন। আমি তোমাকে গ্রহণ করে অমৃতত্বকে প্রাপ্ত হবো। হে স্বর্ণদাতা! যজমানের নিমিত্ত তুমি আয়ুস্থ হয়ে প্রতিফলিত হও। হে গাভী! বরুণদেবই স্বয়ং তোমাকে আমায় রুদ্রস্বরূপ প্রদান করুক। এইভাবে বরুণের দ্বারা তোমাকে লাভ করে আমি অমরত্ব প্রাপ্ত করব। হে গাভী! তুমি দাতা যজমানের প্রাণ হয়ে প্রতিফলিত হও এবং আমাকে প্রতিগ্রহীতার নিমিত্ত দুগ্ধ-দধি প্রভৃতি খাদ্য হয়ে ফলিত হও। হে বস্ত্র! বরুণদেব স্বয়ং তুমি হেন বস্ত্রকে আমাকে বৃহস্পতিরূপ ব্রাহ্মণকে প্রদান করো। আমি তোমাকে প্রাপ্ত হয়ে অমরত্ব লাভ করব। হে বস্ত্র! দানে প্রদত্ত হয়ে তুমি দাঁত যজমানের নিমিত্ত তার ত্বকরূপ হয়ে প্রতিফলিত হও, আমারূপী প্রতিগ্রহীতার প্রতি সুখরূপ হয়ে সম্পন্ন হও। হে অশ্ব! স্বয়ং বরুণদেবই তোমা হেন অশ্বকে আমাকে যমস্বরূপ, ব্রাহ্মণকে, প্রদান করুন। তোমাকে গ্রহণ করে আমি অমরত্ব প্রাপ্ত হবো। হে অশ্ব! দানে প্রদত্ত হয়ে তুমি যজমানের নিমিত্ত পুনরপি অশ্ব (যান সাধনরূপ) হয়েই প্রতিফলিত হও এবং আমারূপী প্রতিগৃহীতার নিমিত্ত তুমি সুখস্বরূপ হও।(এই মন্ত্র ও মন্ত্রাংশকে পাঠ করে করে এবং অগ্নি ইত্যাদি দেবস্বরূপগুলিকে নিজেতে কল্পনা করে ঋত্বিক দক্ষিণায় প্রদত্ত স্বর্ণ-গো অশ্ব বস্ত্র ইত্যাদি গ্রহণ করে। দেবতা হয়ে দান গ্রহণ করলে সেই দান গ্রহণের দোষ লাগে না।
৪৮। (এই অদাহ্ মন্ত্র পাঠ করে শেষ বস্তুগুলিকেও দান করা উচিত)-কে দান করেছে? কাকে দান করেছে? কামই দাতা এবং প্রতিগ্রহীতা। হে কাম! এই প্রকার দাতা ও প্রতিগ্রহীতা দুজনেরই স্বরূপ হতে গ্রহণ করে এই সর্বধন ইত্যাদি সকল তোমারই। (যজমানের পক্ষে আপন ধন ইত্যাদি দানের অভিমান করা উচিত নয় এবং প্রতিগ্রহীতার পক্ষেও স্বয়ং কিছু ধন ইত্যাদি প্রাপ্ত করার অভিমান করা উচিত নয়।