যৌবন কথন
যৌবনের চারি ভেদ শুন বিবরণ। আগে বয়ঃসন্ধি পরে নবীন যৌব।।
তারপরে যুবা ভাবে উন্মাদ লক্ষণ। তার পরে বৃদ্ধভাব বুঝ বিচক্ষণ।।
যৌবনের সন্ধিকাল দ্বাদশ বৎসর। দশম নিয়ম কন ব্যাস মুনিবর।।
যৌবন পরম ধন : স্ববশ ইন্দ্রিয়গণ : শিশু বৃদ্ধ দেখি লোক রসকথা কহে না।
বালকের নাহি শুদ্ধি : বৃদ্ধ হলে হতবুদ্ধি : যুবা বিনা রস আর : কোনখানে রহে না।।
যুবা সূর্য্য বলমান্ : যুবা চন্দ্র দ্যূতিমান : যুবা বিনা সংসারের ভার অন্যে বহে না।
বিনা নর কিবা অন্য : যৌবন সকল ধন্য : যৌবন হইলে নষ্ট দেখি দেহ রহে না।।
নারীর যৌবন বড় দুরন্ত। শরীর মাঝে পোষে বসন্ত।।
বিনোদ বিননে বিনায়ে বেণী। পুরুষে দংশিতে পোষে সাপিনী।।
কত কত অলি নয়নে ঘোরে। মধুবাক্যে কত কোকিল ঝোরে।।
মলয় বাতাস শ্বাসেতে বহে। সৌরভে সুরভি গৌরব নহে।।
কমলকানন আননে থাকে। বান্ধুলী মধুর অধর রাখে।।
দুখানি বিষাণ নিশান রাগি। হৃদয়ে মলয় রেখেছে ঢাকি।।
লোহিত কমলে মৃণাল সাতে। আভরণে ঢাকি রেখেছে হাতে।।
ত্রিবলীডোরেতে বান্ধি অনঙ্গ। কটিতটে থুয়ে দেখয়ে রঙ্গ।।
সম্বরে অম্বর দিয়া কান্তার। মদন সদন রসভাণ্ডার।।
কিশলয় করিকরের ভয়ে। চরণের তলে শরণ হয়।।
যৌবনমরম জানে না যেবা। পণ্ডিত তাহারে বলয়ে কেবা।।
জপ তপ জ্ঞান দান যে কিছু। সকলি যৌবনধনের পিছু।।
যৌবন এ তিন অক্ষর লেখ। যে জন সরম উত্তম দেখ।।
যৌবনমরম যে জনে নাই। প্রথম ছাড়িয়া তাহার ঠাঁই।।
যদ্যপি যৌবনে উদ্যম করে। প্রথমের মতো গলিয়া মরে।।
ভারতচন্দ্রের ভারতী যোগ। যৌবনেতে কর যৌবন ভোগ।।