ধর্ম ও নারী
গত ২৪ শে মার্চ (২০০৪) নিউ ইয়র্কের ইসলামিক সেন্টারে বিনে পয়সার ভোজের সঙ্গে শেখ মোহাম্মদ আল-শরীফ একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিলো: বিবাহ এবং তার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক কী। নানা শাস্ত্রীয় বচন উদ্ধৃত করে তিনি যা বলেছিলেন, তা সংক্ষেপে বলিতে গেলে হিংটিংছট–বিয়ের সঙ্গে ভালোবাসার কোনো সম্পর্ক নেই। শুনে কারো কারো একটু খটকা লাগতে পারে। কেউ কেউ বিস্মিত হতে পারেন। কিন্তু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলে স্বীকার করতেই হবে যে, বিয়ে মানে হলো একজন পুরুষের সঙ্গে একজন মহিলার সহাবস্থান, সহবাস! পুরুষপ্রধান ঐতিহ্যিক সমাজের প্রত্যাশা হলো: দিনের বেলা স্বামী বাইরে যাবে, টাকা পয়সা নিয়ে আসবে। তাই দিয়ে সংসার চলবে। আর বৌ ঘরে বসে রান্নাবান্না করবে, সংসারের কাজকৰ্ম্ম করবে, বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করবে, আর রাতে স্বামীর সঙ্গে শোবে। তাতে ভালোবাসার কথাটা প্ৰায় অবান্তর। ধান ভানতে শিবের গীত গাইবার মতো। এ যুগের শেখ সাহেবই নয়, প্রাচীন শাস্ত্রকার মনুও এই একই বিধান দিয়েছেন। আসলে সব শিয়ালের একই রা! মনু বলেছেন, পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভাৰ্যা। অর্থাৎ পুত্র জন্ম দেওয়ার জন্যে বৌ আনা। তা না-হয়ে খাল কেটে কুমির আনে কে? একটা লোকের খাওয়া-পরার জন্যে তো ব্যয় কম হয় না! তদুপরি, তার সঙ্গে মানিয়ে চলতে গেলে কিছু ছাড় তো দিতেই হয়! তা ছাড়া, এটা বিজ্ঞানের কথা— সন্তান জন্ম দিতে ভালোবাসা লাগে না। ধর্ষণ করলে কি গৰ্ভ হয় না?
শেখ মুহাম্মদ আল-শরীফ এবং মনু–দুজনই যা বলেছেন, তা শাস্ত্রীয় আইনের কথা। মনুর বিধান তো রীতিমতো হিন্দুদের কোড অব লাইফ। অমাবস্যা, পূর্ণিমা, একাদশী, ষষ্টী–কবে কুমড়ো খাওয়া যাবে, কবে যাবে না–এ ধরনের বিষয় থেকে আরম্ভ করে কবে যৌন সম্ভোগ করা যাবে, কবে যাবে না–সবই আছে মনুতে। এর চেয়ে কমপ্লিট কোড অব লাইফ আমার জানা নেই। আর থাকলেও, তার কোনো দরকার নেই। আর শেখ মুহাম্মদও যা বলেছেন জেনেশুনেই বলেছেন। তিনি প্রথম যৌবনেই হাফিজ হয়েছেন কোরান মুখস্থ করে। তার পর খোদ মদিনা থেকে ডিগ্রি করেছেন ইসলামী আইন নিয়ে। খৃস্টানরা কি বাদ যান? না, যান না। যুগে যুগে ংস্কার নামক নানা প্ৰক্ষেপ ঢুকে পড়েছে খৃস্টধর্মে। শাখার হিশেবে খৃস্টধর্ম বোধ হয় হিন্দু ধর্মকেও হারিয়ে দিয়েছে। তবু খৃস্টধর্মের সেই বিচিত্ৰ মতের মধ্যেও নারীদের কম কাবু বা কোণঠাসা করা হয়নি। তবে পশ্চিমা দেশের অধিকাংশ নাগরিক চার্চে যান না, সকালে-সন্ধ্যায় প্রার্থনাও করেন না। কাজেই সেখানে মেয়েদের ওপর ধর্মের শাসনটাকে–অন্তত বাইরে থেকে–লোহার শিকলের মতো দুর্ভর মনে হয় না।
ধর্মে ধর্মে দুস্তর ভেদ আছে। এক ধর্মে যা পুণ্যের কাজ, অন্য ধর্মে তা রীতিমতো পাপ বলে বিবেচিত হতে পারে। এক ধর্মে শুয়োর খাওয়া কোনো অন্যায় কাজ নয়, কিন্তু আর-এক ধর্মে শুয়োরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ। আবার কোনো ধর্মে সব রকমের মাসং খাওয়াই নিষিদ্ধ। বিচার করে দেখলে ধর্মে ধর্মে এ রকমের অমিল দেখা যাবে। বিস্তর। কিন্তু সব ধর্মেই পুরুষদের তুলনায় নারীদের হেয় করে দেখানো হয়েছে। ধর্মের বিধান অনুযায়ী নারীরা মনুষ্যেতর জীব। তবে সেই জীবটা অন্য মানুষের মতো দেখতে, মানুষের মতো কথা বলে, মানুষের মতো বুদ্ধি রাখে, এমন কি, এই জীবটিকে না-হলে তথাকথিত মানুষগুলোর চলেও না। কিন্তু এই জীবটিকে ছোটো করে তার সীমানার মধ্যে রাখার জন্যে সব ধর্মেই এন্তার উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
গরু ছাগল থেকে শুরু করে তাবৎ জীবের অন্তত স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার আছে। নারীদের তাও নেই। তাদের দেহটা যেহেতু পুরুষদের কামনার বস্তু, সে জন্যে সেই দেহটা নিয়ে পুরুষদের ঈর্ষা এবং দুশ্চিন্তার সীমা নেই। সে জন্যে যেমহাপুরুষ বিধবাদের বিবাহ দেওয়ার অনুমতি দেন, তিনিই আবার নিজের বিধবাদের বিবাহ নিষিদ্ধ করেন। কেবল তাই নয়, নারীদেহটাকে ঢেকে-ঢুকে রাখার বিধান দেওয়া হয়েছে সব ধর্মে। বোধ হয় প্রাচীন হিন্দু ধর্মে এ ব্যাপারে অতো শুচিবাইগ্রস্ত ছিলো না। সে কালের যতো নারীমূর্তি দেখা যায়, বিশেষ করে টপলেস মূর্তি, তা থেকে এ ধারণা হতে পারে। তা ছাড়া, মন্দিরে মিথুনরত মূর্তি থেকেও এমন মনে হতে পারে। কোনো কোনো মন্দির আছে, যাকে বলা যায় বাৎস্যায়নের প্র্যাকটিকল ডেমনষ্ট্রেশান। কয়েকজন পুরুষ মিলে এক নারীকে সঙ্গম, কয়েক নারীকে এক পুরুষের সঙ্গম থেকে আরম্ভ করে যৌনকর্মের এমন কোনো বৈচিত্র্য নেই, যার নমুনা নেই এসব মূর্তিগুচ্ছে। কিন্তু হিন্দু ধর্মের এই ব্যতিক্রম বাদ দিলে সব ধর্মই নারীদেহ নিয়ে মহা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কতোভাবে সেই সুন্দর দেহটিকে ঢেকে রাখা যায়, তার প্রতিযোগিতা চলে ধর্মে ধর্মে।
ডিবিশন অব লেবার। এই ডিবিশন অব লেবারের প্রতি সব ধর্মেরই কমবেশি সমর্থন রয়েছে। ধর্ম নারীপুরুষের ভূমিকা মোটামুটি একটা নির্দিষ্ট ছকের মধ্যে বেঁধে দিয়েছে। তুমি ঘরে বসে হাত পুড়িয়ে রান্না করো, থালা-বাটি মাজো, ঘাম ঝরিয়ে কাপড় কাচো, ঘর পরিষ্কার করো, আমি ভদ্র পোশাক পরে বাইরে গিয়ে কিছু টাকা পয়সা নিয়ে আসি। অর্থাৎ শক্ত কাজটা তুমি করো, হাল্কা কাজটা আমি সারি। এভাবে পেশী আর অর্থ দিয়ে পুরুষরা একেবারে আদি কাল থেকে নারীদের রেখেছে বন্দী করে।
তার ফলে যেসব সামাজিক আইন তথা লোকাচার শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তৈরি হয়েছে, তা পুরুষরাই তৈরি করেছেন। কোনো কোনো প্রভাবশালী পুরুষ আবার এসব আইনকে অদৃশ্য শক্তি ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে আরও জোরদার করেছেন। অন্য ভাষায় বলা যেতে পারে, পুরুষের আইন আর ধর্ম সম্পূরকের মতো কাজ করেছে। পুরুষের আইনই ধর্মের লেবাসে অবশ্য-পালনীয় প্রশ্নাতীত বিধানে পরিণত হয়েছে। কারণ পুরুষের আইন লুকিয়ে-চুরিয়ে কখনো কখনো অমান্য করা যায়। বীরপুরুষরা সবসময়ে হাজির থাকেন না, সর্বত্রগামীও নন। বাকি সময়টা মেয়েদের পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব বেছে নিলেন স্বয়ং ঈশ্বর মহোদয়, যিনি সর্বশক্তিমান, সর্বদ্ৰষ্টা, সদাজাগরূক, সর্বত্রগামী। সুতরাং তাঁর বিধান অমান্য করার উপায় নেই। তিনি আবার অনেকগুলো দেবতা (অথবা অপদেবতা) লাগিয়ে রেখেছেন মেয়েদের পাহারা দেওয়ার জন্যে। এটা হাড়ে-হাড়ে উপলব্ধি করতে পেরেই নারীবাদীরা অতো চটা ধর্মের ওপর।
নারীবাদীরা চটা–তার কারণ তারা অনুভব করতে পেরেছেন যে, কখনো অনুনয়-বিনয় করে, কখনো ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিষিদ্ধ ফল খাইয়ে, কখনো মিনসের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করে যদিবা একটু এধার-ওধার করা যায়, ঈশ্বর বাবুর কথা স্বামী অগ্রাহ্য করতে চান না, এমন কি, নারীরা নিজেরাও অমান্য করতে ভয় পান। কী জানি, শেষে কী হয়! ফলে সেই মান্ধাতার আমল থেকে চলে আসা আইনই কবুল করে নিতে হয়। নারীবাদীরা মুক্তির, স্বাধীনতার, উন্নততর জীবনের, সমানাধিকারের সৃষ্টিছাড়া চিন্তাভাবনা করলেও, সাধারণ নারীরা আদৌ ভেবেই দেখেন না, পুরুষরা কী কী উপায়ে এক্সপ্লয়েট করেন তাঁদের।
স্বাধীনভাবে চিন্তা করার বিষয়টা ধর্ম তথা সনাতন মূল্যবোধ ঠিক উৎসাহিত করে না। ধর্মের কথা হলো: তুমি ভাববে কেন? তোমাকে যেমনটা করতে বলা হয়েছে, ঠিক তেমন করো–পুস্তকী ভাষায় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না-করে, ডানে-বায়ে না-তাকিয়ে যেমন বলা হয়েছে–ঠিক তেমনই–সামনে চলো। ধর্ম যতো আগেই বিধান দিয়ে থাক, সেটা প্রশ্নাতীত। সেটা এ যুগে চলতে পারে। কিনা, অথবা সেটা মেনে চললে উন্নতির পথে যাওয়া সম্ভব কিনা, এটা কেউ বিচার করে না। এমন কি, এ প্রশ্ন কেউ তুললে রক্ষণশীল সমাজ রক্তচক্ষু দেখিয়ে তাকে শাসন করে। এসব ঝামেলায় বেশির ভাগ লোকই যেতে চায় না। বস্তৃত, সনাতন মূল্যবোধ মেনে চললে শামসুর রাহমানের ভাষায় মেষের মতো সুখে থাকা যায়— মেষরে মেষ তুই আছিস বেশ!
নারীরা কিছুকাল আগে পর্যন্ত সেই বেশ সুখেই ছিলেন। কিন্তু পথভ্রষ্ট কিছু নারদরদী–ভাষান্তরে–স্ত্রৈণ পুরুষ এবং কিছু উচ্চাভিলাষী মহিলা মিলে নারীদের মনে অশান্তির বীজ বপন করেন দেড় শো / দু শো বছর থেকে। তখন থেকেই ঘরেঘরে নারীদের মনে অ-সনাতনী চিন্তা দানা বঁধতে আরম্ভ করে। নারীপুরুষের অধিকার সমান ইত্যাদি বৈপ্লবিক ধারণা বাসা বাধে। এখন ধর্মগুরুরা পই পই করে মন্ত্র যপ করে ফের এই অবাধ্য নারীদের ঘর-মুখো করতে চেষ্টা করছেন। অনেক স্বামীও যোগ দিয়েছেন এই চেষ্টায়। তারা বৌদের এবং ক্ষেত্রবিশেষে মেয়েদের শ্ৰীলতার দোহাই দিয়ে কয়েক পরীত কাপড়চোপড় পরাচ্ছেন। দুবেলা মন্ত্র যাপ করাচ্ছেন। উঠতে-বসতে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, স্বামী পরম গুরু। স্বামীর পদতলেই স্বর্গ। কিন্তু যে-স্ত্রীরা শিক্ষার আলো দেখেছেন, একবার চার দেয়ালের বাইরে কাজ করার স্বাদ পেয়েছেন, রান্নাবান্নার চেয়েও তৃপ্তিদায়ক কাজের জগতের সন্ধান পেয়েছেন, সন্তান জন্মদান এবং তাদের লালনপালন করার চেয়েও অর্থবহ। জীবনের দেখা পেয়েছেন, সেই নারীরা আর পুরোনো মূল্যবোধের খাচায় বন্দী হবার সম্ভাবনায় আনন্দে লাফাচ্ছেন না। ফলে রক্ষণশীল সংসারে নারীপুরুষে দ্বন্দ্ব দেখা দিচ্ছে, সেই দ্বন্দ্ব কখনো কখনো এমন গুরুতর হচ্ছে যে, তার ফলে সংসার ভেঙে যাচ্ছে। এই অশান্তি এবং দ্বন্দ্বের জন্যে সমাজ সাধারণত অবাধ্য নারীদেরই দোষারোপ করে। সমাজে এঁদের ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না।
আর, নারীদের অধিকারের কথা যাঁরা বলছেন, এবং সেই অধিকার আদায়ের জন্যে প্রচলিত সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঝাণ্ডাটা একটু উচু করে তুলে ধরছেন, সেই নারীবাদীদের রীতিমতো ভয়ভীতি এবং সহিংসতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে যেখানে স্ত্রীশিক্ষার হার অনেক বেশি, যে-সমাজে নারীপ্রগতির ধারা বইতে শুরু করেছে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, সেখানেও তিলোত্তমা অথবা সুস্মিতাদের অনেকে ভালো চোখে দেখেন না। আর, বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে সনাতন ভূমিকার বাইরে কোনো নারী কিছু করলে, তাকে সমাজের শাসন সহ্য অথবা অগ্রাহ্য করতে হয়। তসলিমার মতো কেউ নারীদের অধিকার এবং পুরুষদের অন্যায় শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তাঁকে ফতোয়ার শিকার হতে হয়। কেবল ব্যক্তি নয়, এনজিওর মতো কোনো সংস্থা নারীদের উন্নতির কাজে এগিয়ে এলে তাকেও মৌলবাদীদের বোমাবাজি অথবা অগ্নিসংযোগের শিকার হতে হয়।
ধর্ম এবং নারীদের সংঘাত অবশ্য ফতোয়া অথবা ধমীয় বিধান দিয়ে মীমাংসা করা যাবে বলে মনে হয় না। কারণ, জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্ৰযুক্তির উন্নতি হচ্ছে বলতে গেলে রকেটের গতিতে। গোটা বিশ্বের নারীপুরুষের মিলিত কর্মজীবনের ক্রমবর্ধমান আদর্শ যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা পৃথিবীতে। ইচ্ছে করলেও সেই প্রগতির ধারাকে ঠেকিয়ে রাখার উপায় নেই। ফলে মধ্যপ্ৰাচ্য এবং আফ্রিকার মতো রক্ষণশীল সমাজগুলোও এই নতুন জীবনের আদর্শ দিয়ে কমবেশি প্রভাবিত হতে আরম্ভ করেছে। এসব দেশে শিক্ষার হার যতো ছড়িয়ে পড়বে, এই আদর্শ ততোই প্রশস্ত পথে রক্ষণশীলতার দুর্গগুলিকে দুর্বল করবে। তাতে ধর্ম যাই বলুক না কেন। কিছু কাল এমন হবে যে, মানুষ ধর্ম এবং বাস্তব জীবনকে দুটো কম্পার্টমেন্টে ভাগ করে নেবে। ধর্ম পালন করার সময়ে ধর্ম করবে, আবার জীবন পালন করার সময়ে আধুনিকতাকে মেনে নেবে। ধর্ম এবং জীবনের মধ্যে এক ধরনের আপোশ করে নেবে। যেমন, এখন পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে লক্ষ্য করা যায়। এমন কি, অল্পবিস্তর লক্ষ্য করা যায় মধ্যপ্রাচ্যে।
ধর্ম অত্যন্ত শক্তিশালী একটি বিশ্বাস। এই শিক্ষা অস্থিমজ্জায় মিশে থাকে। ভেতর থেকেই সে আমাদের শাসন করে। তার বিধানকে অগ্রাহ্য করা অথবা অবহেলা করা তাই আদীে সহজ নয়। কিন্তু তাই বলে ধর্ম চিরকাল এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। সব ধর্মের দিকে তাকিয়ে দেখলেই দেখা যাবে, তাতে ধীরে ধীরে কমবেশি পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। তাই ধর্ম যতোই শক্তিশালী হোক, সে সময়ের ঘড়িটাকে আটকে রাখতে পারবে না, অথবা যে-নারী একবার মুক্ত হাওয়ার স্বাদ পেয়েছে, তাকেও ফের বদ্ধ অন্ধকার ঘরে বন্দী করতে পারবে না।