গনি সাহেব অফিসেই ছিলেন। পান খাচ্ছিলেন। তিনি এমিতে পান খান না, কোন কারণে মেজাজ অত্যন্ত ভাল হলে জর্দা দিয়ে একসঙ্গে দুটা পান মুখে দেন। আজ তাঁর মেজাজ ভাল। শুধু ভাল না–অত্যন্ত ভাল, বিটিসির ফুল পেজ বিজ্ঞাপন পেয়েছেন। ছমাসের কনট্রাক্ট। সরকারি বিজ্ঞাপন বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। তিনি লোক লাগিয়েছেন–সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থাও হবে। জায়গামত খরচ করার লাইন বের করছেন। এতদিন লাইনটা পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন পাওয়া গেছে। তাঁর মন ভাল হবার আরেকটি সূক্ষ্ম কারণ হল তাঁর অরুন্ধতি পুরকায়স্থ। প্রািফ দেখার জন্যে সম্প্রতি তিনি এই মেয়েটিকে রেখেছেন। হতদরিদ্র মেয়ে। লাজুক এবং ভীতু ধরনের। সেদিন প্রািফ নিয়ে অরুন্ধতি তাঁর ঘরে ঢুকতেই তিনি বললেন, দরজাটা ভিড়িয়ে দাও তো। অরুন্ধতি চোখ-মুখ কালো করে বলল, কেন স্যার? তিনি বিরক্ত গলায় বললেন, টাইপ রাইটারের খটখট শব্দে মাথা ধরেছে। মাথা ধরা নিয়ে কাজ করতে পারি না। অরুন্ধতি দরজা ভিড়িয়ে দিয়েছে। তিনি গভীর মনযোগে অরুন্ধতি কাটা প্রক্লফের উপর চোখ বুলিয়েছেন। একবারও মেয়েটির দিকে তাকাননি।
অরুন্ধতি আজ অফিসে আসেনি। তার মায়ের অসুখ। মাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। এই খবর ফোন করে জানিয়েছে। গনি সাহেব দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন। অল্পবয়েসী মেয়েদের অনেক কথা সরাসরি বলা যায় না–টেলিফোনে বলা যায়। গ্রাহাম বেল সাহেবের এটা একটা অসাধারণ আবিহুকার। টেলিফোনে আজ তিনি অরুন্ধতিকে বলেছেন তার প্রতি তিনি অন্য একধরনের টান অনুভব করেন। ব্যাপারটা প্লাটোনিক। মর্তের ধূলি-কাদার কোন ব্যাপার না। অরুন্ধতি শুধু শুনে গেছে, মাঝে মাঝে শুধু বলেছে, জ্বি জ্বি। অরুন্ধতির সঙ্গে কথা বলা শেষ করেই তিনি জর্দা দেয়া পান আনিয়েছেন। পাঁচটা সিগারেট কিনিয়েছেন। জর্দা বেশি হয়ে গেছে, মাথা অল্প অল্প ঘুরছে, তবে তাঁর ভাল লাগছে।
সুবৰ্ণর অফিস সেগুনবাগিচায়। সরকারের কাছ থেকে এনিমি প্রপাটি বন্দােবস্ত নিয়ে অফিস করা। দেয়াল দিয়ে ঘেরা প্রায় এক বিঘার মত জায়গা নিয়ে দোতলা বাড়ি। বাড়ি ভাঙাচোরা, পলেস্তারা উঠানো। গনি সাহেব ইচ্ছা করেই ঠিক করছেন না। ঠিক করলেই লোকজনের নজরে পড়বে। এনিমি প্রপাটি দ্রুত হাত বদল হয়। তলে তলে গনি সাহেব অবশ্যি অনেকদূর এগিয়েছেন। ব্যাক ডেটের দলিল, কাগজপত্র জোগাড় করছেন। যে সব কাগজপত্র প্রমাণ করে যে জনৈকা হরিদাঁসি এই সম্পত্তি তার কাছে ১৯৫৮ সনে বিক্রি করেছেন। পরে তা বেদখল হয়ে যায়। এইসব কাজ অত্যন্ত সূক্ষ্ম কাজ। পুরানো স্ট্যাম্প খাজনার রশিদ পাওয়া মুশকিল। প্রচুর অর্থ লাগে, সময়ও লাগে। গনি সাহেব ধীরে ধীরে এগুচ্ছেন। এক কোটি টাকার একটা প্রপাটির ব্যাপারে তাড়াহুড়া করা যায় না। এখন কেউ বাড়ি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করলে গনি সাহেব দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলেন–আমার কেনা জমি। সরকার এনিমি প্রপাটি ডিক্লেয়ার করে আমার কাছেই লীজ দিয়েছে। মগের মুল্লকে বাস করলে যা হয়।
কেউ যদি বলেন, মামলা ঠুকে দেন না কেন? তখন গনি সাহেব মুখ করুণ করে বলেন, মামলা-মোকদ্দমা কি করে করতে হয় তাও তো জানি না। পত্রিকা নিয়ে থাকি–এর বাইরে কিছু চিন্তা করতে পারি না। তুচ্ছ জমিজমা নিয়ে চিন্তা করতে ভাল লাগে না। লীজ নিয়ে আছি, ভাল আছি–যদি সরকার কোনদিন নিয়ে নিতে চায় তখন দেখব।
আতাহারকে ঢুকতে দেখে গনি সাহেব আন্তরিক ভঙ্গিতে বললেন, আরে আতাহার, এসো এসো।
ভাল আছেন গনি ভাই?
আমার আর ভাল থাকাথাকি–ওলন্ড-এজ ডিজিজ প্রায় সব কটা ধরেছে। পাইলসের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। চেয়ারে এখন ঠিকমত বসতে পারি না। বাকা হয়ে বসতে হয়। চা খাবে তো? খাও, চা খাও।
গনি সাহেব বেল টিপে আতাহারকে চা দিতে বললেন। আতাহার চায়ের জন্যে অপেক্ষা করছে। তার কবিতা এই সংখ্যায় কেন যায়নি সে প্রসঙ্গ কিভাবে তুলবে বুঝতে পারছে না।
নতুন কিছু লিখেছ আতাহার?
জ্বি না।
এই তো তোমাদের সমস্যা। এক-আধটা হাফ ভাল কবিতা লেখ, তারপর ছাপাবার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়। তোমাদের কাণ্ডকারখানা দেখে মনে হয়–তোমরা একটা উদ্দেশ্যেই কবিতা লেখা–ছাপানোর উদ্দেশ্যে। কবিতা লেখা হবে প্রাণের তাগিদে। ছাপা হওয়া না হওয়া পরের কথা।
উৎসাহ পাওয়ার জন্যেও তো দু-একটা কবিতা ছাপা হওয়া দরকার।
উৎসাহটা আসতে হবে প্ৰাণের ভেতর থেকে। ছাপা টাইপ থেকে না।
কবিতা না ছাপিয়ে ট্রাংক ভর্তি করে রাখারও তো কোন অর্থ হয় না। জীবনানন্দ দাশ যদি তাঁর কোন কবিতা না ছাপাতেন তাহলে তো আমরা জানতেই পারতাম না–এতবড় একজন কবি আমাদের মধ্যে আছেন।
গনি সাহেব বিরক্ত মুখে বললেন, তোমরা কি পেয়েছ জীবনানন্দ দাশের ভেতর আমি জানি না। যাই হোক, এই নিয়ে তর্ক করতে চাই না–অন্য কিছু বলার থাকলে বল।
এই সংখ্যায় আমার একটা কবিতা যাবে বলে বলেছিলেন–বাসর নাম।
বলেছিলাম না-কি?
জ্বি।
ও হ্যাঁ, মনে পড়েছে। কিছু মনে করো না আতাহার, তুমি চলে যাবার পর কবিতোটা আবার পড়লাম।— কিছু হয়নি।
কিছু হয়নি?
যা হয়েছে সেটা না হবার মতই। বুঝতে পারছি মনে কষ্ট পোচ্ছ–তোমরা নিউ জেনারেশন পোয়েটস। তোমাদের উৎসাহ দেয়াও আমার দায়িত্ব। আচ্ছা, আরেকটা কবিতা রেখে যাও, দেখি বর্ষা সংখ্যায় দেয়া যায় কি-না। বর্ষা সংখ্যাটা ভাল মত বের করছি।
কবে দিয়ে যাব?
যত তাড়াতাড়ি পার। সম্ভব হলে রাতে বাসায় দিয়ে যেও।
তাহলে উঠি গনি ভাই?
আচ্ছা আচ্ছা। তোমরা আসা, কথা-টথা বলি–ভাল লাগে।
গনি সাহেব আন্তরিক ভঙ্গিতে হাসলেন। আতাহারও প্রাণপণ হাসার চেষ্টা করল। পারল না। হাসিটা কোথায় যেন বেজে গেল। গনি সাহেব বললেন, মুখটা এমন কালো কেন আতাহার? তোমাদের মুখ কালো দেখলে মনে কষ্ট পাই। বললাম তো বর্ষা সংখ্যায় ছেপে দেব। কথা দিলাম–আর কি চাও?
থ্যাংক য়্যু।
তোমার ঐ বন্ধুর খবর কি? সাজ্জাদ না নাম?
জ্বি।
অনেক দিন তাকে দেখি না। ওকে একটু দরকার ছিল। তোমার সঙ্গে কি দেখা হবে?
আপনি বললে এক্ষুণি দেখা করব।
তাহলে খুব ভাল হয়। ইন্ডিয়ান দুই লেখক আসছে–আমার বাসায় খেতে বলেছি। ওরা তো আবার জলযাত্রা ছাড়া কিছু বোঝে না। বাংলাদেশে তারা আসেই শুধু হুইস্পিকের লোভে। সাজ্জাদ। আবার জানে এইসব কোথায় পাওয়া যায়।
আমি বলব সাজ্জাদকে।
বলাবলি না, তুমি এক কাজ কর, সন্ধ্যাবেল ব্ল্যাক লেবেল একটা নিয়ে চলে এসো। সাজ্জাদের দুই-একটা কবিতা নিয়ে এসো। তোমাদের দুই বন্ধুকে এবার হাইলাইট করে দি। বক্স করে দুজনের দুটা করে মোট চারটা কবিতা। তুমি নতুন একটা কবিতা দিয়ে যেও আর দেখি বাসরটা ঠিকঠাক করে কিছু করা যায় কি-না।
আতাহার চুপ করে আছে। গনি সাহেব বললেন, সন্ধ্যায় চলে এসো। দেরি করো না।
দেরি করব না।
আরেকটা কথা শোন–তোমার ভালর জন্যে বলছি–প্রচুর পড়বে। তোমাদের কবিতায় এত ইরোটিক এলিমেন্ট অথচ আমি নিশ্চিত তোমরা বিদ্যাসুন্দর পড়নি। পড়েছ?
জ্বি-না।
অথচ আমাকে দেখা–আমি তো কবিতা লিখি না। কিন্তু আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুখস্থ বলে যেতে পারব—
“কি রূপসী অঙ্গে বসি অঙ্গ খসি পড়ে
প্ৰাণ দহে কত সহে নাহি রহে ধড়ে।।
মধ্যে ক্ষীণ কুচ পীণ শশহীন শশী
আস্যবর হাস্যোদর বিম্বাধর রাশি।।“
গনি সাহেব হাসিমুখে চুপ করলেন। আতাহার মনে মনে বলল–শালা বুড়া ভীম, তুই এই চার লাইনই জনিস।
গনি সাহেব আতাহারের দিকে তাকিয়ে হাসলেন। আতাহার বলল, শুনতে ভাল লাগছে, আরো বলুন।
আজ আর না। একদিনে বেশি শুনলে বদহজম হয়ে যাবে। বুঝলে আতাহার, পড়তে হবে, পড়তে হবে। আমাকে দেখ, ওলন্ড-এজ ডিজিজ। সব কটা ধরেছে, তারপরেও কোন রাতে তিন-চারটার আগে ঘুমুতে যেতে পারি না। কাল রাতে ঘুমুতে যাবার সময় শুনি ফজরের আজান পড়ছে।
বলেন কি?
কাব্বালা বিষয়ে একটা বই পড়ছিলাম–কাকবালাদের ব্যাপারটা জান তো–মিস্টিক গ্রুপ। শব্দ নিয়ে ওদের খুব অরিজিনাল থিংকিং আছে। তাদের ধারণা, শব্দ হচ্ছে সৃষ্টির মতো। সমস্ত জগৎ-সংসার সৃষ্টির মূল হল শব্দ। অবশ্য অন্যান্য ধর্ম এবং আধুনিক বিজ্ঞানও কাকবালাদের ধ্যান-ধারণা সমর্থন করে। বাইবেলে কি আছে? পরমপিতা ঈশ্বর বললেন, Let there be light, ওমি জগৎ সৃষ্টি হল। প্রথমে শব্দ, তারপর সৃষ্টি। এদিকে আমাদের হলি বুক দি কোরান বলছে–আল্লাহ বললেন কুন, ওমি জগৎ সৃষ্টি। বুঝতে পারছি?
বড়ই জটিল।
পড়াশোনা করি না বলেই জটিল বোধ হয়। কবিমাত্রেরই মিস্টিক কাকবালাদের সম্পর্কে জানা দরকার। কারণ কবি কাজ করেন শব্দ নিয়ে। কাব্বালাদের কাছে শব্দই সব। আচ্ছা, আজ যাও। আরেকদিন মডার্ন সায়েন্স শব্দ সম্পর্কে কি বলে বুঝিয়ে বলব।
আতাহার উঠে দাঁড়াল। তার অনেক কাজ–কণাকে খুঁজে বের করতে হবে। তারপর যেতে হবে ব্ল্যাক লেবেলের সন্ধানে।ব
ঋতু গ্যালারী পাওয়া গেল। গ্যালারীর পাশে নিউমুন ফার্মেসীও পাওয়া গেল। ফার্মেসীর কর্মচারীদের ভেতর কাউকে পাওয়া গেল না, যার স্ত্রীর নাম কণা। শামছু নামের একজন কর্মচারীর দিন সাতেক আগে অষুধ চুরির দায়ে চাকরি গেছে। তার স্ত্রীর নাম কণা হতে পারে। তবে কেউ নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারল না। সামছু এখন কোথায় আছে তাও কেউ জানে না।
আতাহার নিশ্চিত বোধ করছে। চিড়িয়াখানা দেখানোর দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া গেছে। এক হাজার টাকা বেঁচে গেলো। ঐ টাকায় একটা হুইস্পিকার বোতল কিনে দিয়ে আসতে হবে। ঢাকা ক্লাবের কর্মচারিরা ক্লাবের হুইস্কি ব্ল্যাকে বিক্রি করে দেয়। একজন আছে, নাম সিদ্দিক। মুখ ভৰ্তি দাড়ি, মাথায় টুপি। দেখে মনে হবে বিরাট আল্লাহওয়াল। লোক। তলে তলে তার এই ব্যবসা। এক হাজার টাকায় ব্ল্যাক লেবেল হবে কি-না কে জানে।
সন্ধ্যাবেলা দি গ্রেট গনির কাছে যাবার সময় আবদুল্লাহ সাহেবের লোহালক্কড়ের দোকান হয়ে যেতে হবে। ভদ্রলোককে দুটা খবর দেয়ার আছে–এক, ঐদিন বৃষ্টি রাত দশটায় থামেনি। রাত দেড়টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। দুই, তার ছাতাটা হারিয়ে গেছে। আবদুল্লাহ সাহেবের দোকানটার কি যেন নাম— কার্ড দিয়েছিলেন। কার্ডে লেখা ছিল–ও হ্যাঁ, লৌহ বিতান। নামটা ভাল হয়নি। লোহাঘর হলে ভাল ছিল। পিঠাঘরের মত লোহাঘর। আবদুল্লাহ সাহেবের বুড়ে কর্মচারিটার নাম যেন কি? ইন্টারেস্টিং বৃদ্ধ।
ইন্টারেস্টিং ধরনের মানুষদের আশেপাশে যারা থাকে তারাও ইন্টারেস্টিং হয়ে থাকে। বুড়াকে নিয়ে লেখা কবিতাটা সুবৰ্ণকে দিয়ে এলে কেমন হয়?
এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ ছিলেন নিজ মনে
আপন ভুবনে
জরার কারণে তিনি পুরোপুরি বৃক্ষ এক।
বাতাসে বৃক্ষের পাতা কাঁপে
তাঁর কাপে হাতের আঙ্গুল।
বৃদ্ধের সহযাত্রী জবুথবু—
পা নেই, শুধু পায়ের স্মৃতি পড়ে আছে…
আতাহার সিদ্দিকের খোঁজে বের হয়েছে। ঢাকা ক্লাবের সামনে পানের দোকানে খোঁজ করতে হবে। এইসব কাজ ভাল পারত মজিদ। মজিদ দলছুট হয়ে পড়েছে। নেত্রকোন। গার্লস কলেজে। সে এখন ইতিহাসের অধ্যাপক। ফাজলামির একটা সীমা থাকা দরকার। রুম ভর্তি সাজুগুজু, তরুণী। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। মজিদ গম্ভীর গলায় পড়াচ্ছে মোঘল পিরিয়ডে ভারতের অবস্থা। ভাবাই যায় না। এই মজিদ গাঁজা খেয়ে নেংটো হয়ে সারা রাত দি গ্রেট গনির বারান্দায় বসে ছিল। কবিতা না ছাপা পর্যন্ত কাপড় পড়বে না। গনি সাহেব কবিতা ছেপেছিলেন। শুধু যে কবিতা ছাপিয়েছিলেন। তাই না–কবিতার সম্মানী বাবদ পঞ্চাশটা টাকা দিয়ে বলেছিলেন–যাও, গাঁজা কিনে খাও। শুধু একটা জিনিস মনে রেখো, গাঁজা খেয়ে কবিতা লেখা যায় না। গাঁজা থেকে যে জিনিস বের হয় তার নাম–গাঁজিতা, কবিতা না।
মজিদ হাসিমুখে বলেছিল, আংকেল, সমাজে যেমন কবিতার দরকার আছে তেমন গাঁজিতারও দরকার আছে। আমি সমাজের দিকে তাকিয়ে কাজটা করছি। কাউকে না কাউকে তো অপ্রিয় কাজটা করতে হবে।
দি গ্রেট গনিকে আংকেল ডাকার দুঃসাহস একমাত্র মজিদেরই ছিল।
মেঘলা দিনে পুরানো বন্ধুদের কথা মনে হয়। আজ আবার মেঘলা করেছে। যে হারে এ বছর বৃষ্টি-বাদল হচ্ছে–ভয়াবহ বন্যা না হয়েই যায় না। পুরো ঢাকা শহর চলে যাবে পোচ হাত পানির নিচে। পানির উপর ভেসে থাকবে দালান-কোঠা। ঘরবাড়ির জানালা থেকে আসা টিউব লাইটের আলো পড়বে পানিতে। তরুণীরা বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে উদাস চোখে পানি দেখবে। মেয়েদের সঙ্গে পানির গোপন কোন সম্পর্ক আছে। মেয়েরা পানি দেখলেই উদাস হয়। কে জানে পানিও হয়ত মেয়েদের দেখলে উদাস হয়। হৃদয় নামক বস্তু শুধু মানুষের থাকবে, জড় জগতের থাকবে না, তা হয় না।