সপ্তম অনুবাক
প্রথম সূক্ত: গণ্ডমালা চিকিৎসা
[ঋষি : অথর্বাঙ্গিরা। দেবতা : মন্ত্রোক্ত দেবতা, জাতবেদা। ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ]
অপচিতাং লোহিনীনাং কৃষ্ণা মাতেতি শুশ্রুম। মুনেৰ্দেবস্য মূলেন সর্বা বিধ্যামি তা অহম ॥ ১৷৷ বিধ্যাম্যাসাং প্রথমাং বিধ্যামিত মধ্যমাম। ইদং জঘন্যামাসামা চ্ছিনদ্রি স্তুকামিব। ২৷৷ ত্বাষ্ট্রেণাহং বচসা বি ত ঈর্ষামমীমদ। অথো যো মনুষ্টে পতে তমু তে শময়ামসি ॥ ৩ ব্ৰতেন ত্বং ব্রতপতে সমক্তো বিশ্বাহা সুমনা দীদিহীহ। তং ত্বা বয়ং জাতবেদঃ সমিদ্ধং প্রজাবন্ত উপ সদেম সর্বে ॥ ৩৷৷
বঙ্গানুবাদ –আমরা শ্রবণ করেছি যে, গলা হতে আরম্ভ করে কক্ষ ইত্যাদি সন্ধিস্থান পর্যন্ত প্রস্ত লোহিতবর্ণবিশিষ্ট গণ্ডমালা নামক ব্রণগুলির মাতা বা উৎপাদয়িত্রী হলো কৃষ্ণবর্ণা পিশাচী। (বর্ণভেদবিশিষ্ট গণ্ডমালার প্রভেদ ষষ্ঠ কাণ্ডের ৮৩ সূক্তে বা ৯ম অনুবাকের ১ম সূক্তে স্পষ্টভাবে উক্ত হয়েছে)। এই কষ্টসাধ্য গণ্ডমালাকেও আমি অথবা মুনির রুদ্ৰাত্মক শরের দ্বারা (অথবা শরপ্রকৃতিভূত বৃক্ষবিশেষের মূলের দ্বারা নির্মিত ঔষধির দ্বারা) বিদ্ধ করছি। (কারণ মাতৃকীর্তনের অপচিত রোগান্তরবৎ সাধারণ ঔষধির দ্বারা পরিহরণীয় নয়)। ১৷
মুখ্য স্থিতিশীল দুশ্চিকিৎস গণ্ডমালাকে আমি ঋক্ররূপ শরের দ্বারা বিনিযুক্ত করছি। এর মধ্যে যে গণ্ডমালাগুলি পরিহরণে অতি দুঃসাধ্য নয় এবং যেগুলি সুসাধ্য ও স্বল্প প্রযত্নে দূর হওন-শালিনী, সেগুলিকেও আমি বিদ্ধ করছি। ২।
হে ঈর্ষাবান্ পুরুষ! আমি তোমার স্ত্রী-বিষয়ক ক্রোধকে ত্বষ্টার মন্ত্রে শান্ত করছি। শুধু স্ত্রীর প্রতি ঈর্ষার উদ্রেগ-শমনই নয়, হে পতি! আমি তোমার সকল প্রকার ক্রোধকেই ত্বষ্টার মন্ত্রে উপশমিত করে দিচ্ছি ৷৷ ৩
হে ব্রতপতি (ব্রত-কর্মের পালয়িতা) অগ্নি! এই ব্রতের দ্বারা অনুষ্ঠীয়মান দর্শপূর্ণমাস ইত্যাদি কর্মের দ্বারা পূজিত (বা সুসংস্কৃত হয়ে) তুমি আমাদের গৃহে প্রদীপ্ত হয়ে থাকো। হে জাতবেদা! সমিদ্ধ (অর্থাৎ সম্যক্ দীপ্ত) তোমাকে আমরা পুত্রপৌত্র ইত্যাদি সমেত পরিচর্যা করবো (পরিচরণং ক্রিয়াস্ম)। ৪
.
দ্বিতীয় সূক্ত : অঘ্ন্যাঃ
[ঋষি : উপরিবভ্ৰব। দেবতা : অঘ্ন্যা। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, পংক্তি ]
প্রজাবতীঃ সূবসে রুশন্তীঃ শুদ্ধা অপঃ সুপ্রপাণে পিবন্তী। মা ব স্তেন ঈশত মাঘশংসঃ পরি বো রুদ্রস্য হেতিবৃর্ণ ॥ ১. পদজ্ঞা স্থ রময়ঃ সংহিতা বিশ্বনাম্নীঃ। উপ মা দেবীর্দেবেতিরেত। ইমং গোষ্ঠমিদং সদো ঘৃতেনাস্মান্তসমুক্ষত ॥ ২॥
বঙ্গানুবাদ –হে ধেনুগণ! তোমরা সুন্দর তৃণসম্পন্ন ভূখণ্ডে তৃণ ভক্ষণ করতে করতে, পুত্র-পৌত্র ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ হয়ে, নির্মল জল পান করতে করতে, তস্করদের দ্বারা অপহৃত না হয়ে, ব্যাঘ্র ইত্যাদি হননশীল প্রাণীদের দ্বারা অহিংসিত হয়ে অবস্থান করো। জ্বরাভিমানী দেবতা রুদ্রের বাণ তোমাদের উপর যেন পতিত (বা নিক্ষিপ্ত) না হয়। ১।
হে গাভীগণ! তোমরা দুগ্ধ প্রদানের দ্বারা প্রসন্ন-করণশালিনী হয়ে থাকো। তোমরা আপন গোষ্ঠকে (বা গো-সঞ্চরণ স্থানকে) জ্ঞাত আছে। তোমরা সকল বৎসের সাথে ও অন্য গাভীদের সঙ্গে নিয়ে পরস্পর আনুকূল্যা হয়ে আমাদের নিকট (সন্নিধানে) আগমন করো এবং (ইড়া, রম্ভা, দিতা, সরস্বতী, প্রেয়সী ইত্যাদি বহু নামযুক্তা হয়ে) আমাদের গৃহ, গোষ্ঠ ও গৃহপতিগণকেও দুগ্ধ-ঘৃত ইত্যাদির দ্বারা সম্যক্ সিঞ্চন করো। ২।
.
তৃতীয় সূক্ত : গণ্ডমালা চিকিৎসা
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : অপচিদভৈষজ্যম্ প্রভৃতি। ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ, উষ্ণিক]
আ সুসসা সুস্রসঃ অসতীভ্যো অসত্তরাঃ। সেহোররসতরা লবণাদ বিক্লেদীয়সীঃ ॥১॥ যা গ্রৈব্যা অপচিতোহথো বা উপপক্ষ্যাঃ। বিজাম্নি যা অপচিতঃ স্বয়ংসঃ ॥ ২॥ যঃ কীকসাঃ প্রণাতি তলীদ্যমবতিষ্ঠতি। নির্যাস্তং সর্ব জায়ান্যং যঃ কশ্চ ককুদি শ্রিতঃ ॥ ৩. পক্ষী জায়ান্যঃ পততি স আ বিশতি পূরুষ। তদক্ষিতস্য ভেষজমুভয়োঃ সুক্ষতস্য চ ॥ ৪৷৷ বিন্ন বৈ তে জায়ান্য জানং যতত জায়ান্য জায়সে। কথং হ তত্র ত্বং হনো যস্য কৃন্মো হবিগৃহে ॥ ৫॥ ধৃষৎ পিব কলশে সোমমিন্দ্র বৃত্ৰহা শূর সমরে বসুনাম্। মাধ্যন্দিনে সবন আ বৃষস্ব রয়িষ্ঠাননা রয়িমম্মা ধেহি ॥ ৬৷৷
বঙ্গানুবাদ— গণ্ডমালাগুলি পূয় (অর্থাৎ ব্রণ হতে নির্গত দূষিত রক্ত ইত্যাদি) যুক্ত এবং পীড়াপ্রদ হয়ে থাকে। এগুলি মন্ত্র ও ঔষধির প্রয়োগে নিঃশেষে বিনাশ প্রাপ্ত হোক। অপচিৎ (ক্ষীণ ব্রণ) পাকাবস্থার পূর্বে বোঝা (বা দেখা) যায় না। এগুলি নিঃসার তুলা ইত্যাদিরূপ পদার্থ অপেক্ষাও বিকীর্ণ অবয়বশালী হয়ে থাকে। লবণ যেমন যেস্থানে রক্ষিত থাকে, সেখানেই অধিক জল ক্ষরণশালী হয়ে থাকে, সেইরকম ব্রণ পাকাবস্থা প্রাপ্ত হলে তার সকল সন্ধি হতে পূয় ক্ষরিত হয়ে থাকে। এইরকম অপচিৎ ব্রণ (গণ্ডমালা) অধিক ক্ষরণের মাধ্যমে বিনষ্ট হয়ে থাকে। ১৷
গ্রীবায় উৎপন্ন অপচিৎ গণ্ডমালা, বাহুমূলের (অর্থাৎ বগলের) নীচের স্ফোটক (ফোঁড়া) এবং গুহ্যপ্রদেশে (অর্থাৎ উরুসন্ধি বা কুঁচকিতে) যে ব্রণ উৎপন্ন হয়েছে, সেগুলি মন্ত্র ও ঔষধির প্রভাবে স্বয়ং ক্ষরিত হয়ে থাকে। ২৷
যে রাজযক্ষ্মা অস্থিসমূহে ব্যাপ্ত হয়েছে এবং মাংসকেও ক্ষয়িত করে ফেলছে, যে দুরারোগ্য রাজযক্ষ্মা গ্রীবার উপরিভাগে সংশ্রিত হয়ে অঙ্গস্থ শ্রেষ্ঠ স্থানগুলি (ককুৎস্থানং) বিশুষ্ক করে দিচ্ছে, যে রাজযক্ষ্মা সমগ্র শরীরের ধাতুকে শোষণ করে নিচ্ছে, যে রাজযক্ষ্মা (ক্ষয়রোগ) নিরন্তর জায়া (নারী) সম্ভোগের দ্বারা উপজনিত, সেগুলি সবই মন্ত্র ইত্যাদির দ্বারা সুসংস্কৃত ঔষধি বা অগ্নি প্রমুখ দেবতার সৌজন্যে বিনাশ প্রাপ্ত হোক ৩॥
জায়ার (অর্থাৎ নারীর সাথে অতিরিক্ত সম্ভোগের ফলে জাত ক্ষয়রোগ পক্ষবান্ পক্ষীর মতো সর্বত্র বিতায়িত হয়ে পড়ে; এই রোগ পুরুষের দেহে সর্বতঃ ব্যাপ্ত হয়ে যায়। শরীরে স্বল্পকালস্থায়ী বা চিরকালস্থায়ী এই রোগ শরীরের অশোষক বা শরীরগত সর্বধাতুর নিঃশেষ শোষণকারী, যাই-ই হোক না কেন, তা মন্ত্রের দ্বারা অভিমন্ত্রিত বীণাতন্ত্রীর খণ্ডের দ্বারা দূর হয়ে যায়, (উভয়োঃ অক্ষিতসুক্ষিতয়োঃ ক্ষয়রোগমোঃ তৎ প্রসিদ্ধং মন্ত্রাভিমন্ত্রিতং বীণাতন্ত্রী খাদিরূপং ভেষজঃ নিবর্তনৌষধং ভবতি) ৪
হে জায়া-সমাগমের কারণে (অর্থাৎ অতিরিক্ত নারী-সঙ্গমজনিত দোষে) আগত রাজযক্ষ্মা! আমরা তোমার এই উৎপত্তির কারণ জ্ঞাত আছি। আমরা যে যজমানের আলয়ে রোগ দূরীকরণশালী ইন্দ্র প্রমুখ দেবতাগণের উদ্দেশে হবিঃ সমর্পণ করছি, সেই আলয়ে তুমি কিভাবে প্রবিষ্ট হয়েছে? (অর্থাৎ যৎ রোগনিৰ্হরণার্থং যত্র দেবতা ইজ্যতে তত্র স রোগগা ন বাধতে–এই-ই বক্তব্য)। ৫
হে বিক্ৰান্ত ও বৃঘাতী ইন্দ্র! এই দ্রোণকলশাখ্যে স্থিত সোম পান করো! ধননিবাস-স্থানভূত তুমি, চ আমাদের ধনের সাথে যুক্ত করো। মাধ্যন্দিন সবনে আপন জঠরে সোম সিঞ্চন করতে করতে (অর্থাৎ সোম পান করতে করতে) আমাদের ঐশ্বর্যে স্থাপিত করো ৷৷ ৬ ৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অত্র অপচিতাং ইতি আদ্যে সূক্তে প্রথমাভ্যাং ঋভ্যাং প্রতৃচ্যং গণ্ডমালাভৈষজ্যার্থং সূত্রোক্তলক্ষণেন ধনুষা শরেণ চ গণ্ডমালাং বিধ্যেৎ। তথা তস্মিন্নেব কর্মণি কৃষ্ণোর্ণস্তুকাবজ্বালিতং উদকং আভ্যাং অভিমন্ত্র উষঃকালে ব্যাধিতং অবসিঞ্চেৎ। সূত্রিতং হি।…. ঈর্ষাবিনাশকর্মণি ত্বাষ্ট্রেণাহং ইত্যেনাং ঈর্ষাবন্তং দৃষ্টা জপেৎ…ত উক্তং সংহিতাবিধৌ।…প্রজাবতী ইতি ঘৃচস্য গোপুষ্টিকর্মণি বিনিয়োগ উক্তঃ …আ সুস্রসঃ ইতি দ্বাভ্যাং গণ্ডমালাভৈষজ্যকর্মণি শঙ্খং ঘৃষ্টা অভিমন্ত্র শুনকলালাং বা অভিমন্যু গণ্ডমালাং প্রলিম্পেৎ..ইত্যাদি। বিদ্ম বৈ তৈ ইত্যস্যা ঋচো রাজযক্ষ্মভৈষজ্যে বিনিয়োগঃ। সোমযাগে মাধ্যন্দিনসবনে ধৃষৎ পিব ইত্যনয়া দ্রোণকলশস্থং সোমং ব্রহ্মা অনুমন্ত্রয়েত।….ইত্যাদি। (৭কা, ৭অ. ১-৩সূ)।
টীকা –উপযুক্ত প্রথম সূক্তের প্রথম দুটি মন্ত্র গণ্ডমালা রোগের ভৈষজ্যকর্মে সূত্রোক্তলক্ষণের দ্বারা বিনিয়োগ করণীয়। ঐ সূক্তেরই তৃতীয় ও চতুর্থ মন্ত্রদ্বয় ঈর্ষাবন্ত পুরুষদর্শনে জপনীয় এবং ঈর্ষা বিনাশকল্পে সূত্রোক্তপ্রকারে বিনিয়োগ করণীয়। দ্বিতীয় সূক্তটির দুটি মন্ত্র গোপুষ্টিকর্মে বিনিযুক্ত হয়। তৃতীয় সূক্তটির প্রথম দুটি মন্ত্র গণ্ডমালারোগের ভৈষজ্যকর্মে সূত্রোক্তপ্রকারে ব্রণে শঙ্খ ঘর্ষণ ইত্যাদি কর্মে বিনিযুক্ত হয়। তৎপরবর্তী দুটি মন্ত্র রাজযক্ষ্মার ভৈষজ্যকর্মে বিনিযুক্ত হয়। সোমযাগে মাধ্যন্দিন সবনে ধৃষৎ পিব ইত্যাদি মন্ত্রটির দ্বারা ব্রহ্মা (ঋত্বি) কর্তৃক দ্রোণকলস্থিত সোম অনুমন্ত্ৰণীয় ॥ (৭কা, ৭অ. ১-৩)।
.
চতুর্থ সূক্ত : শত্রুনাশনম
[ঋষি : অঙ্গিরা। দেবতা : মরুৎ–বর্গ। ছন্দ : গায়ত্রী, ত্রিষ্টুপ, জগতী ]
সাংতপনা ইদং হবির্মরুতন্তজুজুষ্টন। অম্মাকোতী রিশাদসঃ ॥১॥ যো নো মর্তে মরুতো দুৰ্ণায়ুস্তিরশ্চিত্তানি বসবো জিঘাংসতি। দ্রুহঃ পাশা প্রতি মুঞ্চতাং সস্তপিষ্ঠেন তপসা হন্তনা তমম্ ॥ ২॥ সস্বৎসরীণা মরুতঃ স্বৰ্কা উরুক্ষয়াঃ সগণা মানুষাসঃ। তে অস্মৎ পাশা প্র মুঞ্চন্ত্রেনসঃ সান্তপনা মৎসরা মাদয়িষ্ণবঃ ॥ ৩ ৷৷
বঙ্গানুবাদ –মধ্যন্দিনে সন্তাপদায়ক সূর্যের সাথে সম্বন্ধযুক্ত হে মরুৎ-বর্গ! তোমরা শত্রুগণকে বাধা প্রদান করে থাকো। এই হবিঃ তোমাদের উদ্দেশে সমর্পিত হচ্ছে; আমাদের রক্ষার নিমিত্ত তোমরা এই হবিঃ সেবন করো ॥ ১। হে বসুপ্রদায়ক মরুৎ-বর্গ! যে শত্রু দুর্ভাব-পূর্ব ক্রোধ অবলম্বন করে চুপি চুপি আমাদের ক্ষুব্ধ করে তুলছে, তারা পাপীজনের প্রতি দ্রোহপরায়ণ বরুণের পাশে বন্ধনপ্রাপ্ত হোক। হে মরুৎগণ! তোমরা সেই জিঘাংসাপরায়ণ শত্রুকে আপন সন্তপ্ত করণশালী বাণের দ্বারা নষ্ট করে দাও
২৷৷ যে মরুৎ-বর্গ অন্তরিক্ষে নিবাসশীল, প্রত্যেক সম্বৎসরে আবির্ভূত হওনশালী, মন্ত্রের দ্বারা স্তুত্য, মনুষ্যগণের হিতকরী, শত্রুগণের সন্তাপকারী এবং সকলের সন্তোষকরণশীল,–তারা আমাদের পাপের পাশ হতে মুক্ত করুন ৷ ৩৷৷
.
পঞ্চম সূক্ত : বন্ধমোচনম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : অগ্নি। ছন্দ : উষ্ণিক, ত্রিষ্টুপ]
বি তে মুঞ্চামি রশনাং বি যোক্ট্রং বি নিযোজন। ইহৈব ত্বমজ এধ্যগ্নে। ১৷৷ অস্মৈ ক্ষত্রাণি ধারয়ন্তমগ্নে যুনন্নি ত্বা ব্ৰহ্মণা দৈব্যেন। দীদিহ্যস্মভ্যং দ্রবণেহ ভদ্রং প্রেমং বোচো হবিদাং দেবতাসু ॥ ২॥
বঙ্গানুবাদ— হে অগ্নি! আমি তোমা কর্তৃক এই রুগ্ন-পুরুষে রোগরূপী রজ্জ্বর বন্ধন প্রযোক্তা আমি মোচিত করছি। এর কণ্ঠ, হস্তসন্ধি, মধ্যপ্রদেশ বা সর্বাবয়বে বন্ধনকারী তোমার রঙ্কু আমি মমাচন করে দিচ্ছি। হে অগ্নি! তুমি এই রোগার্তের অনুকূল হয়ে প্রবৃদ্ধ (বা অবন্ধনকারক) হও॥১॥
হে অগ্নি! আমি তোমাকে হবিঃ বহন করার নিমিত্ত নিযুক্ত করছি। তুমি আমাদের পুত্র ও ধন ইত্যাদি সম্পর্কিত সুখ প্রদান করো। অতঃপর, হে অগ্নি! চরুপুরোডাশ ইত্যাদি রূপ হবিঃ প্রদানকারী এই যজমানের কামনা সম্পর্কে ইন্দ্র ইত্যাদি দেবতাগণের সকাশে বলো ॥ ২॥
.
ষষ্ঠ সূক্ত : অমাবস্যা
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : অমাবস্যা। ছন্দ : জগতী, ত্রিষ্টুপ]
যৎ তে দেবা অকৃথন ভাগধেয়মমাবাশ্যে সংবসন্তো মহিত্বা। তেনা নো যজ্ঞং পিপৃহি বিশ্ববারে রয়িং নো ধেহি সুভগে সুবীরম্ ॥১॥ অহমেবাস্ম্যমাবস্যা মামা বসন্তি সুকৃতো ময়ীমে। ময়ি দেবা উভয়ে সাধ্যাশ্চেন্দ্ৰজ্যেষ্ঠাঃ সমগচ্ছন্ত সর্বে ॥ ২॥ আগন রাত্রী সঙ্গমনী বসুনামূর্জং পুষ্টং ববেশয়ন্তী। অমাবস্যায়ৈ হবিষা বিধেমোর্জং দুহানা পয়সা ন আগন ॥ ৩ ৷৷ অমাবাশ্যে ন ত্বদেন্যন্যো বিশ্বা রূপাণি পরিভূর্জজান। যক্কামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম ॥৪॥..
বঙ্গানুবাদ –হে অমাবস্যা! দেবতাগণ তোমার মহত্ব স্বীকার করে তোমাকে যে হবির্ভাগ প্রদান করেছেন, তুমি তা গ্রহণ করে আমাদের যজ্ঞ সম্পন্ন করো। হে শোভনভাগ্যযুক্তা অমাবস্যা! তুমি আমাদের সুন্দর পুত্র ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত ধন প্রদান করো। ১।
(এইবার দেবতাবাসস্থানভূত অমাবস্যা শব্দের দ্বারা নিষ্পত্ত দেবতা স্বয়ং বলছেন)–আমিই অমাবস্যার অভিমানী দেবতা। (শুধু শব্দতঃই নয় অর্থতঃও আমি এই নামিকাই)। শ্রেষ্ঠ কর্মকুশল দেবতাগণ আমাতে নিবাস করে থাকেন। সিদ্ধ ও সাধ্য নামক উভয় প্রকার ইন্দ্ৰজ্যেষ্ঠ (বা ইন্দ্রপ্রমুখ) সকল দেবতা যজ্ঞাহ্-রূপে আমাতে মিলিত হয়ে থাকেন ॥ ২॥
কাল সম্পন্ন তিথিশালিনী অমাবস্যা, আমাদের ঐশ্বর্যযুক্ত করতে আগমন করুন। তিনি অন্ন, রস ও ধনকে পুষ্ট করে আমাদের দিকে আগমন করুন। আমরা এই গাভীরূপে আপ্যায়মানা অমাবস্যাকে হবিঃ দ্বারা পরিচর্যা করছি ৷ ৩৷৷
হে অমাবস্যা! কোন দেবতা তুমি বিনা সৃষ্টি রচনা করতে সমর্থ হননি। আমরাও যে ফলের অভিলাষে হব্য প্রদান করছি, আমাদের সেই ইচ্ছা পূর্ণ হোক এবং আমরা যেন ধনের অধিপতি হতে পারি। ৪
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অভিচারকর্মণি সান্তপনাঃ ইতি তৃচেন বিদ্যুদ্ধবৃক্ষসমিধ আদধ্যাৎ। তথা চাতুর্মাস্যেষু সাকমেধপর্বণি মধ্যন্দিনে কালে সান্তপনমরুদ্যাগং সান্তপনাঃ ইতি ব্রহ্মা অনুমন্ত্রয়েত। তদ উক্তং বৈতানে।..সর্বব্যাধিভৈষজ্যকর্মণি বি তে মুঞ্চামি ইত্যনয়া উদঘটং সম্পত্য অভিমন্ত্র সূত্রোক্তপ্রকারেণ ব্যাধিতং আপ্লবয়েদ অবসিঞ্চে বা। সূত্রিতং হি।…যৎ তে দেবা অকৃথন ইতি চতুসৃভিঃ স্বাভিলষিতফলকামঃ অমাবস্যাং যজেত উপতিষ্ঠেত বা…তথা দর্শযাগে পার্বণহোমং যৎ তে দেবা অকৃথন ইত্যনয়া কুর্যাৎ।…ইত্যাদি। (৭কা, ৭অ. ৪-৬) ৷৷
টীকা— অভিচার কর্মে উপযুক্ত চতুর্থ সূক্তের মন্ত্ৰত্রয়ের বিনিয়োগ হয়। চাতুর্মাসে সাকমেধ পর্বে মধ্যন্দিন কালেও এর বিনিয়োগ হয়ে থাকে। সর্বব্যাধির ভৈষজ্যে পঞ্চম সূক্তটির দুটি মন্ত্রে জলপূর্ণ ঘট অভিমন্ত্রণ পূর্বক সূত্রোক্তপ্রকারে ব্যাধিত ব্যক্তিকে স্নান করানো বা তার গাত্র-সিঞ্চন করণীয়। যৎ তে দেবা অকৃথন ইত্যাদি চারটি মন্ত্র স্বাভিলষিতফল-কামনায় অমাবস্যার যাগ বা উপাসনা কর্তব্য। দর্শর্যাগে পার্বণহোমে কিংবা শ্ৰেীতদর্শর্যাগে এই মন্ত্রগুলির বিনিয়োগ নির্ধারিত আছে। (৭কা.৭অ. ৪-৬সূ)।
.
সপ্তম সূক্ত : পূর্ণিমা
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : পৌর্ণমাসী, প্রজাপতি। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ ]
পূর্ণা পশ্চাদুত পূর্ণা পুরস্তাদুন্মধ্যতঃ পৌর্ণমাসী জিগায়। তস্যাং দেবৈঃ সংবসন্তো মহিত্বা নাকস্য পৃষ্ঠে সমিষা মদেম ॥১॥ বৃষভং বাজিনং বয়ং পৌর্ণমাসং যজামহে। স নো দদাত্বক্ষিতাং রয়িমনুপদস্বতীম্ ॥ ২॥ প্রজাপতে ন ত্বদেন্যন্যো বিশ্বা রূপাণি পরিভূর্জজান। যৎকামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম ॥ ৩॥ পৌর্ণমাসী প্রথমা যজ্ঞিয়াসীদাং রাত্রীণামতিশৰ্বরেষু। যে ত্বাং যজ্ঞৈজ্ঞিয়ে অয়ন্ত্যমী তে নাকে সুকৃতঃ প্রবিষ্টাঃ। ৪।
বঙ্গানুবাদ –পূর্ণচন্দ্রোপেতা পূর্ণিমা শ্রেষ্ঠ রূপে পূর্বাকাশে অবস্থান করেন এবং পশ্চিমাকাশে ও মধ্যগগনে প্রকাশযুক্ত হয়ে থাকেন। এই পূর্ণিমায় অগ্নি, সোম ইত্যাদি দেববর্গের মহিমায় নিবাসিত আমরা স্বর্গের দুঃখরহিত উপরিভাগে (নাকস্য দুঃখরহিতস্য স্বর্গস্য পৃষ্ঠে) অন্নের দ্বারা পুষ্ট হবো (এখানে বোঝানো হচ্ছে–পূর্ণিমায় অগ্নীষোম ইত্যাদি যাগের দ্বারা স্বর্গভোগপ্রাপ্তি ভবতি)। ১।
অভিষ্ট ফল-বর্ষণশালিনী পূর্ণিমাকে আমরা পূজা করছি। আমাদের দ্বারা আহুতি প্রাপ্ত সেই পূর্ণিমা আমাদের অবিনাশী ও ক্ষয়রহিত ধনরাশি আমাদের মধ্যে স্থাপনা করুন। ২।
হে প্রজাপতি! তুমি সর্বরূপশালী প্রাণীবর্গের সৃষ্টিকরণে সমর্থ, এমনটি অন্য কেউ করতে সক্ষম হয়নি। আমরা যে অভীষ্টের সাথে (অর্থাৎ যা কামনা করে) তোমাকে হবিঃ সমর্পণ করছি, আমাদের সেই অভীষ্ট প্রাপ্ত হোক এবং আমরা ধনপতি হই। (ষষ্ঠ সূক্তের চতুর্থ মন্ত্রে যেভাবে অমাবস্যা প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, এই মন্ত্রে সেইভাবেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে; কেবল অমাবস্যা পদের স্থানে প্রজাপতি বিশেষিত হয়েছে)। ৩।
পূর্ণিমা তিথি অহহারাত্রির মধ্যে আদিভূতা (অর্থাৎ মুখ্য যজ্ঞ-যোগ্যা)। ইনি রাত্রি ব্যতীত হওয়ার পর উৎপন্ন হওন-শালিনী তৃতীয় সবন ব্যাপী এবং সোম ইত্যাদি হবিঃসমূহে পূর্ণা। হে যজ্ঞাহা (যজ্ঞিয়া) পূর্ণিমা! যে ঋত্বিক ও যজমান দর্শপূর্ণমাস ইত্যাদি যজ্ঞকর্মের দ্বারা অভীষ্ট ফল যাচনা করছেন, সেই যাজ্ঞিকগণ দুঃখহীন স্বর্গলোকে প্রবিষ্ট হন (অর্থাৎ স্থান লাভ করে থাকেন)। ৪
.
অষ্টম সূক্ত : সূর্যাচন্দ্রমসৌ
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : সাবিত্রী, সূর্য ও চন্দ্র। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ ও পংক্তি]
পূর্বাপরং চরতো মায়য়ৈতৌ শিশু ক্রীড়ন্তৌ পরি যাতোহর্ণব। বিশ্বানন্যা ভুবনা বিচষ্ট ঋতূরনন্যা বিদধজ্জায়সে নবঃ ॥ ১। নবোনবো ভবসি জায়মানোহং কেতুরুষসামেষ্যগ্রম। ভাগং দেবেভ্যো বি দধাস্যায় প্র চন্দ্রমস্তিরসে দীর্ঘায়ুঃ ॥ ২॥ সোমস্যাংশশা যুধাং পতেইনো নাম বা অসি। অনূনং দর্শ মা কৃধি প্রজয়া চ ধনেন চ ॥ ৩॥ দর্শোহসি দর্শতোহসি সমগ্রোহসি সমন্তঃ। সমগ্রঃ সমন্তো ভূয়াসং গোভিরশ্বৈঃ প্রজয়া পশুভিগ্হৈধনেন। ৪। যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিস্তস্য ত্বং প্রাণেনা প্যায়স্ব। আ বয়ং প্যাশিষীমহি গোভিরশ্বৈঃ প্ৰজয়া পশুভিগ্হৈর্ধনেন ॥ ৫॥ যং দেবা অংশুমাপ্যায়য়ন্তি যমক্ষিতমক্ষিতা ভক্ষয়ন্তি। তেনাস্মানিল্লো বরুণণা বৃহস্পতিরা প্যায়য়ন্তু ভুবনস্য গোপাঃ ॥৬॥
বঙ্গানুবাদ –গগনমণ্ডলে গমনশীল সূর্য ও চন্দ্রমা জলযুক্ত অন্তরিক্ষে শিশুর ন্যায় ক্রীড়াপর হয়ে বিচরণ করে থাকেন। এঁদের মধ্যে সূর্য সর্ব ভুবনের প্রাণীসমূহকে সন্দর্শন করছেন এবং চন্দ্রমা চ.ঋতুসমূহের অবয়বরূপ মাস, পক্ষ (অর্ধমাস) ইত্যাদি উৎপন্ন করে স্বয়ং নিত্য নবরূপে উৎপন্ন হচ্ছেন ॥ ১।
হে চন্দ্র! তুমি শুক্লপক্ষে প্রতিদিন এক-এক কলা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে নিত্য নবরূপে প্রকট হয়ে থাকো। সকল তিথিই তোমার অধীন। তুমি রাত্রিসমূহের কর্তা এবং অগ্রগণ্য। তুমি কেতুবৎ তিথিসমূহের জ্ঞাপয়িতা (অর্থাৎ চন্দ্রকলার হ্রাসবৃদ্ধির অধীনস্থ হওয়ায় তিথি নিণীত হয়ে থাকে)। তুমি দিনসমূহের সৃষ্টিকরণশালী। শুক্লপক্ষে পশ্চিমে দর্শন দিয়ে থাকো এবং কৃষ্ণপক্ষে রাত্রির অবসানের পূর্বেই অন্তর্হিত হয়ে থাকো। তুমি দেবগণের নিমিত্ত হবির বিভাগ-করণশালী হয়েছে এবং দীর্ঘ আয়ু প্ৰদানশালী (বা বর্ধনশালী) হয়েছে। ২।
হে চন্দ্রমার পুত্র বুধ! তুমি বীরবর্গের পালনকর্তা। (বুধগ্রহের বলেই যুদ্ধজয় হয়ে থাকে–এটা প্রসিদ্ধ)। তোমার সম্পূর্ণ নাম লব্ধ হয়েছে। তুমি দ্রষ্টব্য হও। হব্য ইত্যাদি প্রদান পূর্বক তোমাকে প্রসন্ন করণশালী আমি যেন পুত্র ইত্যাদি ধনের সাথে যুক্ত হই। ৩।
হে সোম! তুমি অমাবস্যায় সূর্য সহ দ্রষ্টব্য হয়েছে। (এই নিমিত্ত সেই তিথি দর্শ নামে অভিহিত) শুক্লপ্রতিপদি এককলাত্মক চন্দ্র দৃশ্যমান হন, তারপর তৃতীয়া ইত্যাদি হতে ফুট দর্শন হয়ে অষ্টমী ইত্যাদি হতে ফুটতর কলায় চন্দ্র সমৃদ্ধ হয়ে থাকেন। অনন্তর পূর্ণিমাতে সর্বকলায় পূর্ণমণ্ডলরূপে (অর্থাৎ সমগ্রভাবে) তিনি প্রতিভাত হন। আমিও এই প্রকারে গো-ইত্যাদি সম্পদের সাথে সমগ্র ও সমৃদ্ধ হবো। ৪
যে আমাদের সাথে দ্বেষ করে থাকে, কিংবা আমরা যাকে দ্বেষ করি, তার প্রাণকে, হে চন্দ্র! তুমি হরণ করো এবং আমাদের গো, অশ্ব, প্রজা ও ধনের সাথে বৃদ্ধিসম্পন্ন করো ॥ ৫॥
যে এক কলাত্মক সোমকে দেবতাগণ শুক্লপক্ষীয় প্রতিটি দিনে কলায় কলায় (এক এক কলা প্রদান করে) বৃদ্ধি-সাধিত করে চলেন, এবং যে অক্ষিত (অর্থাৎ অবিচ্ছিন্ন) ক্ষয়রহিত চন্দ্রকে অক্ষিত (অর্থাৎ অক্ষীণ) পিতৃ ইত্যাদি পুরুষগণ সেবন (বা পান) করেন, সেই উভয় (অর্থাৎ কলায় কলায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত এবং ক্ষয়হীন) সোমরূপের সাথে পরমৈশ্বর্যসম্পন্ন দেবাধিপতি ইন্দ্র, পাপনিবারক দেবতা বরুণ, দেবগণের হিতকরী বৃহৎ-দেবতা বৃহস্পতি এবং ভূতজাতের প্রবৃদ্ধিপ্রদ বা অন্য দেবতাগণ আমাদের হবিঃ ইত্যাদির দ্বারা প্রীত হয়ে আমাদের বর্ধন সাধিত করুন ৷ ৬ ৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –সফলকামঃ পূর্ণা পশ্চাৎ ইতি দ্বাভ্যাং পৌর্ণমাসী প্রথমা যজ্ঞিয়াৎ ইত্যনয়া চ পৌর্ণমাসীং যজেত উদৃতিষ্ঠেত বা। তস্মিন্নেব কর্মণি প্রজাপতে ন ত্বৎ ইত্যনয়া প্রজাপতি যজেত উপতিষ্ঠেত বা।…বিবাহে পূর্বাপরং ইতি ঘৃচেন আজ্যসমিৎপুরোশাদীনি জুহুয়া… মহাশূন্তৌ গ্রহযজ্ঞে সোমস্যাংশশা যুধাং পতে ইতি চতুঋচেন হবিরাজ্যহোমসামদাধানোপস্থানানি বুধায় কুর্যাৎ। তৎ উক্তং শান্তিকল্পে।…ইত্যাদি। (৭কা, ৭অ. ৭-৮সূ) ৷ টীকা— উপযুক্ত সপ্তম ও অষ্টম সূক্তের মন্ত্রগুলি অভীষ্ট ফলকামনায় দর্শপূর্ণ যাগ ইত্যাদিতে নানাভাগে বিনিযুক্ত হয়। যেমন, সফল কামনায় পূর্ণা পশ্চাৎ এই দুটি মন্ত্র ও পৌর্ণমাসী প্রথমা ইত্যাদি মন্ত্রটি পূর্ণিমা উদ্দেশে যাগে বা উপাসনায় বিনিযুক্ত হয়। প্রজাপতে ন ত্বৎ ইত্যাদি মন্ত্রে প্রজাপতির যাগে বা উপাসনায় বিনিযুক্ত হয়। বিবাহে অষ্টম সূক্তের দুটি মন্ত্র সূত্রোক্তপ্রকারে বিনিয়োগ হয়। মহাশান্তি গ্ৰহযজ্ঞে এই সূক্তের শেষ চারটি মন্ত্রের দ্বারা সূত্রানুসারে বুধের উদ্দেশে হবিঃ ইত্যাদি সমর্পণ করা হয়। বুধ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে–হে সোমস্যাংশে সোমস্য চন্দ্রমসঃ অংশভূত সোমপুত্র হে বুধ…। মনে হয়, বৈদিক এই বর্ণনা অবলম্বন করেই পুরাণে সোম বা চন্দ্রের ঔরসে বৃহস্পতি-ভার্যা তারার গর্ভে বুধের জন্ম কাহিনী পল্লবিত হয়ে উঠেছে ৷ (৭কা, ৭অ. ৭-৮)।