০৬. রুস্তম সাইকেল নিয়ে বের হয়েছে

রুস্তম সাইকেল নিয়ে বের হয়েছে। ঘণ্টাখানিক সাইকেলে চক্কর দেবে। সাইকেলে চক্কর দেওয়া মানে ব্যালেন্স রাখা। ব্রেইন ব্যস্ত থাকে ব্যালেন্স রাখতে। কাজেই সে আনন্দিত বা দুঃখিত হওয়ার সময় পায় না। সাইকেলে উঠলে হাওয়ায় ভেসে থাকার অনুভূতি হয়, সেটাও খারাপ না। মানুষ ছাড়া কোনো প্রাণী কি হাওয়ায় ভাসার কল্পনা করে? একটা কুকুর বা একটা ভেড়া কি অবসর সময়ে কখনো ভাবে, সে হাওয়ায় উড়ছে?

সাইকেল চালিয়ে রুস্তম ঘরে ফিরল। বারান্দার বেতের চেয়ারে গম্ভীর মুখে চশমা পরা এক বালক বসে আছে। তার হাতে অদ্ভুত এক খেলনা। কাঠির মাথায় কাঠঠোকরা পাখি। পাখিটাকে ছেড়ে দিলেই সে কাঠি টুকরাতে ঠুকরাতে নিচে নামতে থাকে। রুস্তম কি ছেলেটাকে কল্পনায় দেখছে? মনে হয় না। চশমা পরা গম্ভীর মুখের কোনো ছেলে তার কল্পনায় নেই।

রুস্তম বলল, তুমি কে?

ছেলে ইংরেজিতে জবাব দিল। মাই নেম ইজ নো। বেঙ্গলি নো।

এখানে তোমাকে কে এনেছে?

আমাদের ড্রাইভার নিয়ে এসেছে। আমি এক ঘণ্টা থাকব। এক ঘণ্টার মধ্যে পনেরো মিনিট চলে গেছে। তুমি কোথায় ছিলে?

সাইকেল চালাচ্ছিলাম।

মেড পারসন সাইকেল চালাতে পারে না।

তোমাকে কে বলেছে?

আমি জানি। কারণ আমার অনেক বুদ্ধি।

তুমি কি আমাকে চিনতে পেরেছ?

ইউ আর মাই ড্যাড।

কিভাবে চিনলে?

মার ঘরে তোমার তিনটা ছবি আছে। তুমি কি আমার সঙ্গে হেডশেক করবে?

করব।

রুস্তম হাত বাড়িয়ে ছেলের হাত ধরল। হঠাৎ করেই রুস্তমের চোখে পানি এসে গেল। ছেলে গম্ভীর গলায় বলল, তুমি মেড পারসন না। মেড পারসন শুধু হাসতে পারে, কাঁদতে পারে না।

তোমার ডাকনাম না। ভালো নাম কী?

ভালো নাম বিভাস। বিভাস অর্থ সূর্য। The Sun। সূর্য পৃথিবী থেকে কত দূরে জানো?

জানি না।

সূর্য পৃথিবী থেকে নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল দূরে।

স্কুলে শিখিয়েছে?

হ্যাঁ। আমি রাইম মিলাতে পারি, তুমি কি পারো?

ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না। বুঝিয়ে বলো।

বিভাস বলল, আমার নাম বিভাস। পানিতে ভাসছে একটা হাঁস। বিভাসের সঙ্গে হাঁসের রাইম।

রুস্তম বলল, মনে হয় আমি পারব।

বিভাস বলল, আমি একটা করে সেনটেন্স বলব, তুমি রাইম করবে। ঠিক আছে?

হ্যাঁ ঠিক আছে।

The sun is hot

রুস্তম বলল,

The sun is hot
But I am not
I feel cold
My son is bold
He is such a fun

বিভাস বলল, তুমি খুব ভালো রাইম করতে পারো। তুমি কি আমাকে দেখে খুশি হয়েছ?

খুব খুশি হয়েছি।

মা বলেছিল, তুমি কোনো কিছুতেই খুশিও হও না, আবার দুঃখও পাও না।

রুস্তম বলল, আমি খুশি হই আবার দুঃখও পাই। তবে দুঃখ পেলেও কাউকে বুঝতে দেই না। আনন্দে থাকার চেষ্টা করি। আমার ডাক্তার আমাকে সবসময় আনন্দে থাকতে বলেছে।

তুমি কি এখন আনন্দে আছ?

হ্যাঁ।

তুমি কি আমাকে এক পিস কাগজ আর কলম দিতে পারবে?

পারব। কী করবে? ছবি আঁকবে?

না My Father Essayটা লিখব। আগে যেটা লিখেছিলাম, সেটা ভুল ছিল।

পারবে।

তার বাবাকে লেখা বিভাসের রচনাটা এই রকম–

My father is a loving person. He can make Ryhmes with almost anything. He likes to ride byke. A Mad Person cannot ride byke, so he is not a mad person. He is poor in science. He could not tell the distance between earth and sun.

When my father shook is hand with me he cried. This again shows that he is not a mad person. Mad persons cannot cry. They can only laugh. Ha Ha Ha.

বিভাস এক ঘণ্টার জন্য এসেছিল। ঘড়ি দেখে এক ঘণ্টা পার করে বলল, যাই?

রুস্তম বলল, যাও।

বিভাস বলল, মা বলেছে তুমি গুড পেইন্টার। আমি তোমার জন্য একটা ছবি নিয়ে এসেছি। ছবিটা ভালো হয়নি। আমি এর চেয়ে ভালো ছবি আঁকতে পারি।

রুস্তম ছেলের ছবি হাতে নিল। ছবিতে একটা জবা ফুল আঁকা। রুস্তম বলল, ছবি দেখে আমি বুঝতে পারছি, তুমি জবা ফুল এঁকেছ। কাজেই ছবিটা ভালো হয়েছে।

তুমি কি জবা ফুলের ইংরেজি জানো?

জানি। সাধারণভাবে জবাকে বলে চায়না রোজ। মূল ইংরেজি হলো Hibiscus rosa sinensis.

বাবা! তুমি Good boy.

বিভাস একবারই তার বাবাকে বাবা ডেকে গাড়িতে উঠে গেল। রুস্তম তার ছেলের ছবি আইকা গাম দিয়ে লেখার টেবিলের সামনে সেঁটে দিল।

 

সাজ্জাদ আলী লোক মারফত তার ছেলেকে একটা চিঠি পাঠিয়েছেন। যে চিঠি নিয়ে এসেছে তার নাম ছগীর। তার চেহারায় কী কারণে যেন ইঁদুরভাব প্রবল। কোঠর থেকে প্রায় বের হয়ে আসা চোখের কারণে হতে পারে। ছগীরের পোশাক-আশাক পরিষ্কার, কিন্তু তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে নোংরা পোশাক পরে আছে। তার গা থেকে গরম মসলার গন্ধ আসছে।

ছগীর বলল, পত্ৰ মন দিয়ে পাঠ করেন। আমাকে কিছু টাকা দেওয়ার কথা আছে। টাকা দেন। চলে যাব। ভুখ লেগেছে, খানা খেতে হবে।

রুস্তম বলল, আমার এখানে খান। রান্না হয়ে গেছে।

আমি দুই বেলা বিরানি খাই। অন্য কিছু খাই না। এই জন্য আমার আরেক নম বিরানি ছগীর।

সকালে নাশতা কী খান?

নাশতার মধ্যেও হিসাব আছে। খাসির তেহারি খাই। বিষুদবারে খাই মুরগির লটপটি দিয়ে পরোটা।

মুরগির লটপটি কী?

মুরগির লটপটি কী সেই হিসাব আপনাকে পরে দিব। আগে পত্র পাঠ করেন। জেলখানা থেকে পত্র বের করা দিগদারি আছে।

রুস্তম চিঠি পড়তে শুরু করল।

 

৭৮৬

বাবা রুস্তম,

তুমি কী ভাব? জেলখানায় আছি বলে তোমাদের কোনো সংবাদ পাই না? তোমার এবং তোমার বোনের ওপর নজরদারি করার জন্য আমার লোক আছে। তোমার বোন যে কাণ্ড করেছে তার ক্ষমা অন্যদের কাছে থাকতে পারে, আমার কাছে নাই।

এই পত্র নিয়ে যে তোমার কাছে গিয়েছে তার নাম বিরানি ছগীর। যে কোনো কাজে তুমি তার ওপর ভরসা করতে পারো। যে বদটার সঙ্গে তোমার বোন পালিয়েছে, তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তুমি ছগীরকে ব্যবহার করতে পারো।

আমার শরীর ভালো না। আমি বিরাট অশান্তিতে আছি। পায়ে পানি এসেছে। মেয়েদের পেটে সন্তান এলে পায়ে পানি আসে। আমার পেটে সন্তান আসার কোনো কারণ নাই। কিন্তু পায়ে পানি।

জেলের ডাক্তার বলেছে, কিডনির সমস্যা। কিডনি সমস্যা হলে নাকি পায়ে পানি আসে।

আমার রাতের ঘুম জন্মের মতো বিনাশ হয়েছে। গত মাসের তিন তারিখ থেকে রাতের ঘুম শেষ। ওই তারিখে জেলখানায় মুসা গুণ্ডার ফাঁসি হয়। ফাঁসির আগে সে বিকট চিৎকার করতে থাকে, আমারে মারিস না। আমারে মারিস না।

তারপর থেকে প্রতিরাতেই এই চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে। বাকি রাত আর ঘুমাতে পারি না। আমি একা যে শুনি তা নয়। সবাই শোনে। জেলার সাহেব নিজেও শুনেছেন। আজিব ঘটনা।

এই চিৎকারের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমাকে জেল থেকে বের হতে হবে। এই বিষয়ে তুমি, তোমার বোন তোমরা কিছুই করছ না। বিরাট আফসোস। যাই হোক, আমার নিজের ব্যবস্থা আমি নিজেই করব।

শত দুঃখের মধ্যে একটা ভান্তে সংবাদ হলো, গোলাম মওলা এবং তার ড্রাইভার র্যাবের হাতে ধরা খেয়েছে। এটা পাকা খবর। তার ড্রাইভারের নাম মনু। সে পাকা সন্ত্রাসী। গোলাম মওলার ডান হাত বাম হাত দুইটাই সে। সবাই মনু ড্রাইভারকে অতি ভালো মানুষ হিসেবে জানে। অন্যের কথা বাদ দাও, আমি নিজেও তাই জানতাম।

যাই হোক, নিয়মিত ওষুধ সেবন করবে। যে কোনো প্রয়োজনে ছগীরের সাহায্য নিবে।

ইতি তোমার হতভাগ্য পিতা
এস, আলী B.Sc. (Hons)

চিঠি শেষ করে রুম বলল, আপনাকে কোনো টাকা-পয়সা দেওয়ার কথা চিঠিতে লেখা নাই।

ছগীর হতভম্ব গলায় বলল, বলেন কী? চিঠি আমার কাছে দেন। পড়ে দেখি। আমাকে পাঁচ হাজার টাকা ক্যাশ দেওয়ার কথা।

ছগীর চিঠি পড়ল। সে অবাক, আসলেই টাকা-পয়সার কোনো উল্লেখ নাই। ছগীর বড় নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ৭৮৬ যে লেখা এটা কী? টাকার পরিমাণ?

না, এটা একটা সাংকেতিক সংখ্যা। এর অর্থ বিসমিল্লাহ হের রহমানের রহিম।

জীবনে প্রথম শুনলাম।

রুস্তম বলল, অনেক কিছুই জীবনে প্রথম শুনতে হয়। একটা বলব?

বলেন শুনি।

সূর্যের আরেক নাম বিভাস। এটা জানেন?

না।

পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল এটা জানেন?

না।

জবা ফুলের আরেক নাম চীনা গোলাপ। এটা জানেন?

না।

আপনার যদি নতুন কিছু জানতে ইচ্ছা করে চলে আসবেন। আমি শোনাব।

আপনি তো আজিব লোক। এখন বলেন আপনার কোনো কাজ আছে? কনটাকে কাজ করে দেব।

আমার একটা কাজ আছে। মুনিয়া মেয়েটাকে বলতে হবে সে যেন চলন্ত ট্রাকে লাফ দিয়ে পড়ার কথা না ভাৰে। বেশি ভাবলে এটা তার মাথায় ঢুকে যাবে। তখন সে সত্যি চলন্ত কোনো ট্রাকের সামনে পড়বে। Inhibition কেটে গেলে মানুষ যে কোনো কাজ করতে পারে।

মুনিয়াকে এই কথা বলতে হবে?

জি।

সে থাকে কই?

সে থাকে কোথায় আমি জানি না। তাকে যশোরের নাইট কোচে তুলে দেওয়া হয়েছে।

তার কোনো পিকচার কি আছে আপনার কাছে?

না। তবে আমি ঠিক করেছি তার একটা ছবি আঁকব। আর্টিস্ট হোসেন মিয়া আউট লাইন এঁকে আমার অনেক সুবিধা করে দিয়েছেন।

ছগীর উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, আপনার সঙ্গে অনেক প্যাচাল পাড়লাম, এখন উঠি। আপনার দেমাগে সমস্যা আছে। ভালো পীর-ফকির দেখে একটা তাবিজ নেন। আপনাকে পছন্দ হয়েছে বলে কথাটা বললাম।

বিরিয়ানি খেতে যাবেন?

হ্যাঁ। আপনাকে তো বলেছি আমার একমাত্র খাদ্য বিরিয়ানি। আমার ঠিকানাটা লিখে রাখেন। এমন জায়গায় রাখেন যেন চোখের সামনে থাকে। যে কোনো সময় আমার প্রয়োজন পড়বে। ভালো মানুষের প্রয়োজন নাই। এখন সময় খারাপ। এখন শুধু দুষ্টের প্রয়োজন।

আপনাকে বিরিয়ানি আনিয়ে দিচ্ছি। আমার সঙ্গে দুপুরের খাবার খান। বাবা চিঠিতে টাকার কথা কিছু না লিখলেও আপনাকে আমি টাকা দিব।

কেন দিবেন?

আমার বাবা মিথুক মানুষ। তিনি টাকার লোভ দেখিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পছন্দ করেন। আপনার বেলাতেও এই কাজ করেছেন। আপনি যে সত্যি কথা বলছেন তা বুঝতে পারছি।

কিভাবে বুঝলেন?

কিভাবে বুঝলাম সেটা বলতে পারব না। আমার মাথার ঠিক নেই। সব কথা গুছিয়ে বলতে পারি না।

আমি আপনাকে পাগলের তেল এনে দিব। এই তেল এক সপ্তাহ মাথায় মাখবেন। ইনশাআল্লাহ আরোগ্য হবেন। যদি আরোগ্য না হন আমি নিজের গু নিজে চেটে খাব।

বিরানির বদলে গু খাবেন?

অবশ্যই খাব। একবার যখন বুলেছি তখন খাব। ধোয়া লুঙ্গি আছে? গোসল করব। গোসল না করে আমি খানা খাই না। যতবার খানা ততবার গোসল।

ধোয়া লুঙ্গি আছে।

বিরিয়ানি কোত্থেকে আনাবেন? মগবাজারের তাজ হোটেলেরটা ভালো। কাউকে পাঠায়ে দেন নিয়ে আসবে। ম্যানেজারকে যেন আমার নাম বলে।

নাম বললে কি হবে?

মাংস ঠিকমতো দিবে। ঘাড়ের মাংস দিবে। আলু এক-দুই পিস বেশি দিবে।

ছগীর দুপুরের খাওয়া শেষ করে লম্বা ঘুম দিল। ঘুম ভাঙল সন্ধ্যার পর। সে খালি গায়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই ঘুরে বেড়াতে লাগল। যেন এই বাড়ি তার নিজের।

চায়ের কাপ হাতে একসময় রুস্তমের ঘরে ঢুকল। রুস্তম লেখালেখিতে ব্যস্ত। রুস্তমের সামনের চেয়ারে বসতে বসতে বলল, কি লিখেন?

রুস্তম বলল, প্রণাশের মৃত্যুর অংশটা লিখছি।

প্রণাশ কে?

আমার উপন্যাসের চরিত্র। সে মারা যাওয়ার পর উপন্যাস শুরু হয়। কিভাবে মারলে তাকে ভালো হবে এটা বুঝতে পারছি না। অনেকভাবে লিখেছি, কোনোটাই পছন্দ হচ্ছে না। আপনাকে পড়ে শুনাব? আপনার কাছে কোনটা ভালো লাগে যদি বলেন।

ছগীর হাই তুলতে তুলতে বলল, পড়েন শুনি। ছলো পড়বেন। রেলগাড়ির মতো পড়লে কিছু বুঝব না।

রুস্তম প্রণাশের মৃত্যুর সব ভার্সান পড়ল। ছগীর বলল, সিনেমা হলে মিত্যু সবচে ভালো।

কেন?

পাবলিক বিরাট ক্যাসাল শুরু করবে। পাবলিক আসছে বই দেখতে, মিত্যু দেখতে আসে নাই। টিকেট কাটা পাবলিক। হৈ-হল্লা হবে। চেয়ারের গদি কাটা হবে। এর মধ্যে কয়েকটা ককটেল ফুটলে খেলা জমবে।

ককটেল?

ককটেল না থাকলেও চলবে। কোক-ফান্টার বোতল ভালোমতো ঝাঁকি দিয়া যদি ফিক্কা মারেন ককটেল ফোটার আওয়াজ হবে। শেষমেশ সিনেমার পর্দায় আগুন।

ছগীরের চোখ কোটর থেকে খানিকটা বের হয়ে এসেছে। চোখ চকচক করছে। রুস্তমের মনে হলো ছগীর চোখের সামনে দৃশ্যটা স্পষ্ট দেখছে। বড় লেখকদের লক্ষণ। বড় লেখকরা চোখের সামনে সব দেখতে পান।

প্রণাশ বাবুর পরিবারের বয়স কত?

বয়স অল্প।

অল্পটা কত ঠিকমতো বলেন।

ধরুন বাইশ-তেইশ।

চেহারা-ছবি কেমন?

মিষ্টি চেহারা।

চেহারার আবার ঝাল-মিষ্টি কি! চোখ-মুখের কাটিং কেমন?

ভালো।

নাক মোটা না খাড়া?

সামান্য মোটা।

ঠোঁটের অবস্থা কি? পাতলা না মোটা?

নাকের সঙ্গে মিল রেখে ঠোঁটও খানিকটা মোটা।

গাত্র বর্ণ কালো?

কালো না, শ্যামলা।

প্রণাশ বাবুর মিত্যুর পর তার স্ত্রীর গতি কি হবে কিছু চিন্তা করেছেন? তাকে একটা ভালো মুসলমান ছেলের সঙ্গে শাদির ব্যবস্থা করেন। মেয়েটা কলেমা পড়ে মুসলমান হবে তারপর শাদি। ছেলে গরিব ঘরের। বিবাহের পর তার ভাগ্য খুলে যাবে। দুই হাতে টাকা আসতে থাকবে। ধানমণ্ডিতে ফ্ল্যাট কিনবে। গাড়ি কিনবে। গাড়ি দুইটা দিয়ে দেন। একটা তার আরেকটা তার স্ত্রীর। ছেলের আপন ভাই বিষয়টা ভালো চোখে নিবে না। তার নজর আপন ভাইয়ের স্ত্রীর দিকে। সে সময়ে-অসময়ে ভাইয়ের বাসায় উপস্থিত হয়। ভাবীর জন্য সে দেওয়ানা। মেয়েটা শুরুতে না না করলেও একসময় তার মন দুর্বল হয়। দুইজনে মিলে ঠিক করে পথের কাঁটা দূর করবে। দশ হাজার টাকার কনটাকে তারা একজনরে ঠিক করে, মনে করেন তার নাম ছগীর।

রুস্তম বলল, এই গল্পটা আর শুনতে চাচ্ছি না।

শুনতে না চাইলে শুনবেন না। জোর-জবরদস্তি করে আপনারে কিছু শুনাব না। বিরানি ছগির জোর-জবরদস্তি করে কোনো কিছু করে না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *