০৬. মোবারক তার থাকার ঘর দেখে মুগ্ধ

মোবারক তার থাকার ঘর দেখে মুগ্ধ। মনে মনে কয়েকবার বলল— খাইছে রে! খাটের উপর বিছানো চাদর দেখে প্রথম যে ইচ্ছাটা হল তা হচ্ছে চাদর গুটিয়ে হ্যান্ড ব্যাগে সামলে ফেলা। বড়ই বাহারী চাদর। খাটের পাশের টেবিলে নগ্নপরী লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। এই পরী কোনোমতে কুদ্দুসের হাতে ধরিয়ে দিতে পারলে কুদ্দুস চোখ বন্ধ করে দু হাজার টাকা দিবে। পরীর পায়ের কাছে এসট্রে আছে। এসট্রের রঙ গাঢ় লাল। মনে হচ্ছে জবা ফুল ফুটে আছে। এসট্রেটা অবশ্যই পাঞ্জাবির পকেটে ফেলে চলে যাওয়া যায়। এ বাড়ির লোকজন নিশ্চয়ই জিনিসপত্রের হিসেব রাখে না। প্রতি সন্ধ্যায় ম্যানেজার টাইপ একজন জাবদা খাতা এবং কলম নিয়ে উপস্থিত হয়ে জিনিসপত্রের রোলকল কি করবে? তার এ্যাসিস্টেন্ট একটা করে নাম বলবে আর সে জাবদা খাতায় টিক মার্ক দেবে—

১টা পরী

১টা লাল এসট্রে

১টা পাথরের বৌদ্ধ মূর্তি

১টা রঙিন TV ১৮ ইঞ্চি

১টা দেয়াল ঘড়ি

৪টা পেনটিং

১টা পানির জগ

১টা ফ্লাস্ক

৩টা ফুলদানী

১টা টেবিল ঘড়ি

এমন সিস্টেম যেহেতু নাই পরীক্ষামুলক ভাবে এসট্রে সামলে দেখা যেতে পারে।

একজন কাজের লোক মোবারকের সঙ্গে আছে। তার চোখে মুখে বিরক্তি। ট্রেনের টিকিট চেকার যখন হঠাৎ দেখে ফার্স্ট ক্লাস এসি কামরায় লুঙ্গিপরা প্যাসেঞ্জার পান খাচ্ছে এবং ভুড়ি বের করে ভুড়ি চুলকাচ্ছে তখন প্রচণ্ড রাগতে গিয়েও রাগ সামলায় কারণ এই প্যাসেঞ্জারের টিকিট আছে। মোবারকের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কাজের লোকেরও সেই ট্রেনের টিকিট চেকারের মত অবস্থা। মোবারককে বের করে দিতে পারলে সে খুশি হয়। বের করা সম্ভব হচ্ছে না— মোবারকের টিকিট আছে।

মোবারক বলল, এই ঘরে এসি নাই?

এমন ভাবে বলল যেন এসি না থাকলে রাতে তার ঘুমুতে সমস্যা হবে।

কাজের লোক থমথমে গলায় বলল, শীতের দিনে এসি দিয়া কী করবেন?

মোবারক বিরক্ত গলায় বলল, এসি দিয়ে কী করব সেটা আমার ব্যাপার। আছে কি-না বল।

জ্বি আছে।

এসি ছাড়। ঘর ঠাণ্ডা করে লেপ গায়ে শুয়ে থাকার অন্য আরাম। টিভিতে আছে দেখতে পাচ্ছি। ভিসিআর আছে?

ভিসিআর এই ঘরে নাই।

অন্য ঘর থেকে জোগাড় করে ফিট করে দাও। রাতে ঘুম না হলে ছবি দেখব। ক্যাসেট আছে না?

ইংরেজি ক্যাসেট আছে।

হিন্দি জোগাড় কর। একটা ছবি আমার অনেক দিন থেকে দেখার শখ। আমার বন্ধু জহির এই ছবি দশবার দেখেছে। নাম হল রোজা। একটা কাগজে নামটা লিখে নিয়ে যাও। ভিডিওর দোকান থেকে নিয়ে আসবে। পারবে না?

না।

তোমার নাম কী?

আমার নাম সুলতান।

শুধু সুলতান, না সুলতান মিয়া?

আমার নাম মোহাম্মদ সুলতান।

শোন মোহাম্মদ সুলতান— আমার দিকে এই ভাবে তাকাবে না। আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আমার শরীর থেকে কিডনি না নেয়া পর্যন্ত আমার সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করতে হবে। কিডনি না দিয়ে আমি যদি এখন ফুটে যাই তোমার বড় সাহেব বিরাট বিপদে পড়বে। বুঝতে পারছ?

মোহাম্মদ সুলতান কিছু বলল না। মোবারক বলল, এখন বল রোজা জোগাড় করা যাবে না?

জ্বি যাবে।

ভেরি গুড। তুমি রোজা দেখেছ?

জ্বি না।

কোনো অসুবিধা নেই। আমার সঙ্গে দেখবে।

আপনার ডিনার কি এই ঘরে দিয়া যাব?

ঘরে ছাড়া অন্য কোথাও খাওয়ার ব্যবস্থা আছে?

গেস্ট ডাইনিং হল আছে।

খুবই ভাল কথা। ডিনার গেস্ট ডাইনিং হলে দিবে। মেনু কী?

আমি জানি না— বাবুর্চি জানে।

বাবুর্চির কাছ থেকে জেনে আস। আরেকটা কথা এই ঘরেতো গান শোনার কোনো ব্যবস্থা দেখছি না। একটা ক্যাসেট প্লেয়ার বা মিউজিক সেন্টার জোগাড় কর। আমি কিছু ক্যাসেট কিনেছি— গাড়িতে আছে। নিয়ে আস। আমার ফেভারিট সব গান আছে—ইচুক দানা বিচুক দানা দানার উপর দানা। শুনেছ এই গান?

জ্বি না।

আমার সাথে শুনবে কোনো সমস্যা নেই। ম্যানেজার সাহেব বলেছিলেন বড় সাহেব আমার সঙ্গে কথা বলবেন। কখন বলবেন জান?

জ্বি না।

জেনে আস। যদি উনার দেরি হয় তাহলে আমি গোসল করব। বাথরুমে গরম পানির ব্যবস্থা আছে?

জ্বি আছে।

গরম পানি কীভাবে ছাড়ে দেখিয়ে দিয়ে যাও। গোসলের আগে কফি খাব। মগ ভর্তি করে এক মগ কফি আন। এক্সট্রা চিনি আনবে। আমি চিনি

বেশি খাই।

সুলতান হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। মোবারক মানিব্যাগ খুলে একশ টাকার একটা নোট বের করল– সুলতানের বখশিশ। বড় জায়গায় থাকলে মন বড় হয়ে যায়। একশ টাকার কমে বখশিশ দিতে ইচ্ছা করে না। মোবারক বিছানায় বসে ইচুক দানা বিচুক দানা গানটার সুর শীষে তুলতে চেষ্টা করছে। সুরটা ঠিকমত আসছে না।

সুলতান কফির মগ নিয়ে ঘরে ঢুকে বলল, বড় সাহেব আপনেরে ডাকে। কফি শেষ কইরা উনার সঙ্গে দেখা করেন।

বড় সাহেবের ঘরে আর কে আছে?

এখন কেউ নাই। স্যার একা।

কেন স্যারের বেগম সাহেব কোথায়?

বেগম সাহেব স্যারের সাথে থাকেন না। আলাদা বাড়িতে থাকেন।

কেন?

স্যারের সাথে বনিবনা হয় না।

অসুখে দেখতেও আসেন না?

প্রত্যেক দিনই একবার করে আসেন। আজও সকালে আসছিলেন।

তোমার স্যার লোক কেমন?

লোক অত্যন্ত ভাল। খালি রাগ বেশি।

মোবারক কফির মগে চুমুক দিতে দিতে বলল, ভাল মানুষের রাগ থাকে বেশি। যারা মিচকা শয়তান তারা রাগে না। পাছায় লাথি মারলেও লাথি খেয়ে হাসবে। শোন সুলতান আমি যদি দশ পনেরো মিনিট পরে যাই কোনো অসুবিধা আছে? গোসল করে ফিটফাট হয়ে যেতে চেয়েছিলাম।

আপনি এখনি চলেন।

 

মোবারক সরাসরি বড় সাহেবের শোবার ঘরে ঢুকতে পারল না। তাকে জুতা খুলে রাখতে হল। বাথরুমে ঢুকে ডেটল-পানি দিয়ে হাত মুখ ধুতে হল। প্রথমবার যখন তাঁর সঙ্গে দেখা হয় তখন এ ধরনের ব্যবস্থা ছিল না। এখন কেন কে বলবে?

ঘরের মুখেই ডাক্তার। ডাক্তার সাহেব অত্যন্ত সুদর্শন। টিভির প্যাকেজ প্রেমের নাটকে নায়ক হিসেবে খুব মানানসই। ডাক্তার সাহেব লজ্জিত মুখে বললেন, আমরা স্যারের ঘরটাকে স্টেরাইল রাখার চেষ্টা করছি। একটু এক্সট্রা প্রিকশন। আপনার ইনকনভেনিয়েন্সের জন্যে দুঃখিত। যান স্যারের সঙ্গে কথা বলুন। আমি পাশের ঘরেই আছি।

মোবারক ভীত মুখে ঘরে ঢুকল। যদিও ভয় করার তেমন কোনো কারণ নেই। বড় সাহেব নিশ্চয়ই তাকে ধমক দেবেন না।

মানুষটাকে আজ খুবই অসুস্থ লাগছে। হাত-পা-মুখ কেমন হলুদ হলুদ। এটা অবশ্যি হলুদ পায়জামা পাঞ্জাবির জন্যেও হতে পারে। তবে উনার চোখ উজ্বল। তারচেয়েও আশ্চর্য ব্যাপার ভদ্রলোকের মুখ হাসি হাসি।

মোবারক বলল, স্যার কেমন আছেন?

ভদ্রলোক হাসিমুখে মাথা ঝাঁকালেন যার অর্থ— আমি ভাল আছি। তারপরই বললেন, মোবারক বস।

মোবারক ধাঁধায় পড়ে গেল। কোথায় বসবে? ঘরটা বড়। বেশ বড়। কিন্তু বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। খাটের দুপাশে দুটা টেবিল আছে। একটা টেবিল ভর্তি বই, অন্য টেবিলটায় অষুধপত্র। মোবারক নিশ্চয়ই টেবিলের উপর উঠে বসবে না। স্যারের বিছানায় বসার প্রশ্নই উঠে না। তাহলে কোথায় বসবে মেঝেতে? না-কি পাশের ঘর থেকে মোড়া জাতীয় কিছু নিয়ে আসবে। পাশের ঘরে ডাক্তার সাহেব আছেন। উনাকে বললে উনিও হয়ত সমস্যা সমাধান করে দেবেন।

বড় সাহেব আজ তাকে তুমি তুমি করে বলছেন। এটা ভাল। তুমি বলার মধ্যে কাছের মানুষ, কাছের মানুষ ভাব আছে। বড় সাহেব তার নাম মনে রেখেছেন— এটা বিস্ময়কর। যদিও সে বড় সাহেবের নাম জানে না। নাম জানাটা উচিত ছিল। আজ এই ঘর থেকে বের হয়েই নামটা জেনে নিতে 361

বড় সাহেব বললেন, বিছানায় বোস। এই ঘরে ইচ্ছে করেই আমি সোফা বা চেয়ার রাখিনি। সোফা চেয়ার থাকলেই রোগী দেখতে এসে লোকজন বসে পড়ত। মানুষের স্বভাব হচ্ছে একবার বসলে সে উঠতে চায় না।

মোবারক বড় সাহেবের পায়ের কাছে খুব সাবধানে বসল। আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে লোকটাকে তার পছন্দ হচ্ছে। এটা খুবই ভাল লক্ষণ যে লোকটার শরীরে তার শরীরের একটা অংশ থাকবে সেই লোকটা পছন্দের না হলেতো মুশকিল।

বড় সাহেব হাত বাড়িয়ে টেবিল থেকে একটা কমলা নিয়ে মোবারকের দিকে গড়িয়ে দিতে দিতে বললেন, কমলা খাও।

কমলা মোবারকের খুবই অপছন্দের ফল। কিন্তু বড় সাহেব দিচ্ছেন না খাওয়াটা বিরাট বেয়াদবী। মোবারক কমলার খোসা ছড়াচ্ছে। তার প্রধান চিন্তা খোসাগুলি কোথায় ফেলবে? ময়লা ফেলার ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। খোসা হাতে নিয়ে বসে থাকতে হবে না-কি।

মোবারক।

জ্বি স্যার।

বলতো দেখি একটা কমলার কয়টা কোয়া থাকে।

স্যার বলতে পারছি না।

বড় সাহেব হাসতে হাসতে বললেন, দশটা কোয়া থাকে। তুমি গুনে দেখ।

মোবারক গুনে দেখল আসলেই দশটা কোয়া। কেউ একজন আগে ভাগে না গুণে বলে দিচ্ছে কমলার দশটা কোয়া এটা এমন কিছু ব্যাপার না। আগে গুণে দেখেছে। তবু মোবারক খুবই অবাক হয়েছে এমন ভঙ্গি করল।

বড় সাহেব গল্প বলার ভঙ্গিতে সহজ গলায় বললেন, আমার বাবা ছিলেন বাংলা বাজারে প্রুফ রিডার। হত-দরিদ্র মানুষ। আমরা ছিলাম তিন ভাই বোন। শীতের সময় বাবা মাঝে মধ্যে একটা কমলা নিয়ে ফিরতেন। কোয়া ভাগাভাগি করে তিন ভাই বোনকে দিতেন। একটা কোয়া সব সময় বেশি হত। সেই থেকেই আমি জানি কমলার দশটা কোয়া।

মোবারক বলল, বাড়তি কোয়াটা কে পেত স্যার?

আমার বোন পেত। পৃথিবীর সব বাবার মত আমার বাবাও তাঁর কন্যাকেই সবচে বেশি আদর করতেন। এই গল্পটা তোমাকে কেন বললাম তুমি জান?

জ্বি-না স্যার।

গল্পটা তোমাকে বললাম, কারণ আজ আমার টোটেল এ্যাসেট প্রায় ১০০ কোটি টাকা। পুরনো দিনের কথা আমার কখনোই মনে পড়ে না। কিন্তু কমলা দেখলেই মনে হয় এর ভেতর দশটা কোয়া।

আপনার বাবা কি আপনার এই অবস্থা দেখে গেছেন?

দেখে যান নি। তার জন্যে আমার খুব যে কষ্ট হয় তাও কিন্তু না। এই পথিবীতে সব মানুষই একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করতে আসে। বাবা এসেছিলেন হত দরিদ্র প্রুফ রিডারের চরিত্রে অভিনয় করতে। তিনি চমৎকার অভিনয় করে বিদায় নিয়েছেন।

স্যার আপনি খুবই সুন্দর করে কথা বলেন।

দ্যাটস ট্রু— আমি অবশ্যই খুব সুন্দর করে কথা বলি। সুন্দর করে কথা বলি বলেই মিথ্যা কথাগুলি সত্যির মত করে বলি। বাবার জন্যে আমার কষ্ট হয় না— এটা খুবই মিথ্যা কথা। উনার জন্যে ভয়ঙ্কর কষ্ট হয়। কমলাটা খাও মোবারক। হাতে নিয়ে বসে আছ কেন?

মোবারক কমলার একটা কোয়া মুখে দিল। তার হঠাৎ করে খুব মনটা খারাপ হয়েছে। সে যেন চোখের সামনে বড় সাহেবের দরিদ্র বাবাকে দেখতে পাচ্ছে। বেচারা কমলার কোয়া ভাগ করছে।

বড় সাহেব শান্ত গলায় বললেন, চোখটা মোছ মোবারক। আমার গল্প শুনে তোমার চোখে পানি এসেছে। আমি খুবই লজ্জা পাচ্ছি। আমি কোনো স্টোরি টেলার না। আমি রসকষহীন বিজনেস ম্যান। তোমারওতো বিজনেসম্যান হবার ইচ্ছা তাই না?

জ্বি।

কীসের বিজনেস করবে ভেবেছ কিছু?

জ্বি-না।

তুমি ভাব নি, কিন্তু আমি ভেবেছি। তুমি আধুনিক একটা ফলের দোকান দাও। বাংলাদেশের মানুষ এখন ফল খাওয়া শুরু করেছে। যেহেতু দেশে এখন ফ্রী ইকনমি, তুমি যে-কোনো দেশ থেকে ফল আমদানী করতে পার। তোমার ফলের দোকানে পৃথিবীর সব দেশের সব রকম ফল পাওয়া যাবে। স্ট্রবেরী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের লটকন। দোকানটার একটা অংশ থাকবে ফুলের জন্যে। টাটকা ফল এবং টাটকা ফুল বিক্রি হবে। একটা দাগ ধরা ফলও দোকানে থাকতে পারবে না। একটা বাসি ফুলও থাকতে পারবে না। পুরো দোকানটা হবে এয়ারকন্ডিশন্ড। তোমার দোকানের নামও আমি ঠিক করে রেখেছি।

FRUITS
AND
FLOWER

মোবারক ক্ষীণ স্বরে বলল, স্যার আমার কাছে স্বপ্নের মত লাগছে।

বড় সাহেব হাসতে হাসতে বললেন, মানুষের ধারণা বিজনেসম্যানরা স্বপ্ন দেখতে পারেন না। স্বপ্ন দেখার অধিকার শুধু কবিদের, গল্পকারদের, চিত্রকরদের। খুব ভুল ধারণা। প্রতিটি সাকসেসফুল বিজনেসম্যান হচ্ছেন একজন ড্রিমার। এক অর্থে কবি সাহিত্যিকদের চেয়ে তারা বড় ড্রিমার। কবি সাহিত্যিকরা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারেন না, একজন ব্যবসায়ী ড্রিমার পারেন। ব্যবসায়ীদের স্বপ্নগুলি খুব জাগতিক হয় এটাও অবশ্যি একটা কারণ।

বড় সাহেব হঠাৎ চুপ করে গেলেন। মনে হচ্ছে তাঁর কোনো শারিরীক অসুবিধা হচ্ছে। মোবারক উঠে দাঁড়িয়ে বলল, স্যার আমি কি এখন যাব?

তিনি হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়লেন।

মোবারক বলল, আমার দাদিজান থাকেন নেত্রকোনায়, উনাকে একটু কি দেখে আসব?

অবশ্যই দেখে আসবে। আর শোন মোবারক তোমার শরীরের একটা অংশ আমি ব্যবহার করব। আমি ধরে নিচ্ছি এটা তোমার একটা উপহার। সেই কারণেই আমি FRUITS AND FLOWERS তুমি যাতে করতে পার সেই ব্যবস্থা করব। ভালমতই করব। আমার উপহারটাও খারাপ হবে না।

মোবারক বলল, স্যার দেখবেন আমরা তিনজন জান দিয়ে খাটব।

বড় সাহেব বিস্মিত হয়ে বললেন, তোমরা তিনজন মানে!

আমার দুইজন খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে স্যার।

ভাল। একজন বন্ধু থাকাই ভাগ্যের কথা। তোমার আছে দুজন। তুমিতো ভাগ্যবান মানুষ। আচ্ছা তুমি এখন যাও— শরীরটা ভাল লাগছে না। কথা বলে আরাম পাচ্ছি না। আমি বিশ্রাম করব।

মোবারক ঘর থেকে বের হবার আগে আরেকবার বড় সাহেবের দিকে তাকালো। আশ্চর্য, বড় সাহেব তার দিকেই তাকিয়ে আছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *