আলম্বনাদি কথন
আলম্বন বিভাবন আর উদ্দীপন। এই তিন ভাবের শুনহ বিবরণ।।
আলম্বন সেই যাহে রসের আশ্রয়। নায়ক নায়িকা দুই তার বিনিময়।।
নানাবিধ অনুভবে বলি বিভাবন। যাহে রস বাড়ে তাহে বলি উদ্দীপন।।
উদ্দীপন
গুণ স্মরা নাম লওয়া নিত্য রূপ দেখা। গীতবাদ্য শুনার আর কর্ম্ম রেখা লেখা।।
সুগন্ধি ভূষণ মেঘ পিকভৃঙ্গরব। চন্দ্র আদি নানামতে উদ্দীপন সব।।
বিভাবন
ভাব হাব হেলা হাস শোভা দীপ্তি কান্তি। মধুরতা উদারতা প্রগলভতা ক্লান্তি।।
ধৈর্য্য লীলা বিলাস বচ্ছিত্তি মৌগ্ধ্য ভ্রম। কিলকিঞ্চিৎ মোট্টায়িত মুট্ট মত শ্রম।।
বির্ব্বোক লালিত্য মন চকিত বিকার। নানামত অনুভব কত কব আর।।
ভাবহাবাদি পরিচয়
চিত্তের প্রথম সেই বিকার যে ভাব। গলা চক্ষু ভুরু আদি বিকাশেতে হাব।।
বক্ষ কাঁপে বস্ত্র খসে তারে বলি হেলা। প্রিয় কৃতকর্ম্ম চেষ্টা তারে বলি লীলা।।
হাসে সেই হাস্যে বলি বৃথা হয় যেই। পরিচ্ছদ বনা শোভা মধুরতা সেই।।
শোভা কান্তি দীপ্তি ভ্রম ব্যাপ্ত আছে এই। শ্রম অঙ্গ শ্লথ যেই ক্লান্তি হয় সেই।।
কার্য্য বিপরীত আদি সেই প্রগল্ভতা। ক্রোধেও বিনয় বাক্য সেই উদারতা।।
ধৈর্য্য সেই দুঃখেতে প্রেমের নহে হ্রাস। সাক্ষাতে প্রফুল্ল অঙ্গ সেই সে বিশ্বাস।।
অল্প আভরণে শোভা বিচ্চিত্তি সে হয়। বিভ্রম হইলে ব্যক্ত বেশবিপর্য্যয়।।
ক্রন্দনেতে হাস্য আর অভয়েতে ভয়। আক্রোধেতে ক্রোধ কিলকিঞ্চিৎ সে হয়।।
প্রসঙ্গেতে অঙ্গভঙ্গ সেই মোট্টায়িত। অঙ্গ ছুলে মুখে ক্রোধ সেই কুট্টমিত।।
বির্ব্বোক বাঞ্ছিত বস্তু পেয়ে অনাদর। অঙ্গভঙ্গ ঝনৎকার লালিত্যে সুন্দর।।
লজ্জায় না কহি কার্য্য চেষ্টায় জানায়। বিকার তাহারে বলে বুঝ অভিপ্রায়।।
জ্ঞাতকে অজ্ঞান সম মৌগ্ধ্য সেই হয়। চকিত ভ্রমর আদি দর্শনেতে ভয়।।
যৌবনাদি অভিমান জন্য মদ হয়। মনস্তাপ আদি যত কবিগণ কয়।।
কেশ বাস খসে অঙ্গমোড়া হাই উঠে। লোমাঞ্চ প্রফুল্ল গদ্গদি ঘর্ম্ম ছুটে।।
সাত্ত্বিক ভাব
স্তম্ভ হয় ধর্ম্ম বয় লোমাঞ্চ প্রকাশ। বিবর্ণ কম্পন অশ্রু গদ্গদ ত্রাস।।
প্রিয় বিনা সুখ যত দুঃখ সে তো হয়। প্রিয় পাইলে দুঃখে সুখ রাগ তারে কয়।।