গল্প-উপন্যাসের অ্যাডভেঞ্চার এবং বাস্তব জীবনের অ্যাডভেঞ্চার একরকমের হয়। না। গল্প-উপন্যাসের পুলিশরা সবসময়ই বোকা ধরনের থাকে। অল্প ধমক-ধামকে তারা ভড়কে যায়। হাস্যকর সব কাণ্ড করে। বাস্তবের পুলিশরা মোটেই সেরকমের নয়। ধমকি-ধামকে তারা অভ্যস্ত। এ নিয়ে মোটেই মাথা ঘামায় না।
পুলিশের আইজি আনুশকার ছোটমামা শুনেও তারা তেমন ঘাবড়াল না। বিশ্বাস করল না, আবার অবিশ্বাসও করল না। রানা লক্ষ করল, এরা প্ল্যাটফর্মে আছে। শুধু একজন নেই। সে খুব সম্ভবত টেলিফোন করতে গেছে। সে ফিরে এলে কী হবে কে জানে? সবাইকে থানায় যেতে হলে কেলেঙ্কারি। রানা একবার বাথরুম করে এসেছে। আবার বাথরুম পেয়ে গেছে। শরীরের সব জলীয় পদার্থ বের হয়ে যাচ্ছে।
এরকম একটা টেনশনের ব্যাপার, কিন্তু দলের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই। অবশ্যি আনুশকা ছাড়া আর কেউ কিছু জানে না। কাউকে বলা হয় নি। আনুশকার ভেতর খানিকটা ভয়-ভীতি থাকা উচিত। এবং আনুশকার উচিত সবাইকে জানানো। সে তা করছে না। বেশ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে প্ল্যাটফর্মে মালপত্র নামাচ্ছে।
যাকে নিয়ে এত কাণ্ড সেই জরী খুব হাসি-খুশি। সে রানাকে এসে বলল, আমাকে একটা টুথব্রাশ এনে দিতে পারবে?
জরী বলল, খেলাব।
খেলিব মানে কি?
জরী বলল, টুথব্রাশ দিয়ে মানুষ কী করে তুমি জানো রানা। শুধু শুধু জিজ্ঞেস করলে কেন টুথব্রাশ দিয়ে কী করব? আমি কিছুই আনি নি, কাজেই আমার টুথব্রাশ লাগবে, পেস্ট লাগবে, আয়না লাগবে, চিরুনি লাগবে।
রাগে রানার গা জ্বলে যাচ্ছে। এত বড় বিপদ সামনে, অথচ মেয়েটা কিছুই বুঝতে পারছে না। বোঝার চেষ্টাও করছে না। চেষ্টা করলে রানার শুকনো মুখ থেকে এতক্ষণে ঘটনা আঁচ করে ফেলত। মেয়েরা যে আয়নায় নিজের মুখ ছাড়া অন্য কোনো মুখের দিকেই ভালোমতো তাকায় না। এটাই বোধহয় ঠিক। হোয়াট এ সেলফিস ক্রিয়েচার! হযরত আদম যে এত বড় শাস্তি পেলেন, এদের জন্যেই পেয়েছেন।
জরী বলল, কী হয়েছে? এমন পাথরের মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছ কেন? টুথব্রাশ একটা দিনে নিয়ে এসো। দাঁত মেজে চা খাব। চা আনতে কেউ কি গেছে?
চা-ফার কথা ভুলে যাও। ফরগেট এবাউট টি। সামনে গজব।
গজব মানে?
আনুশকাকে জিজ্ঞেস করো সামনে গজব-এর মানে কী। সে তোমাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেবে। তখন আর দাঁত মাজতে ইচ্ছা হবে না। ইচ্ছা করবে সাঁড়াশি দিয়ে দাঁত টেনে তুলে ফেলতে।
জরী আনুশকার কাছে গিয়ে বলল, কোনো সমস্যা হয়েছে?
আনুশকা বিরক্ত গলায় বলল, সমস্যা হবে কেন? কে বলেছে সমস্যার কথা?
রানা বলছে। ওকে একটা টুথব্রাশ আনতে বলেছিলাম, ও ভয়ংকর গলায় বলল—সামনে নাকি গজব।
আনুশকা বলল, তুই ওর কথায় কান দিবি না। টুথব্রাশের কথা ভুলে যা। আঙুলের ডগায় পেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে ফেল। মোতালেব কোথায়, মোতালেব? ওর না মাইক্রোবাস ঠিক করার কথা?
রানা কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। আনুশকার কথায় রাগে আবার তার গা জ্বলে গেল। মাইক্রোবাস ঠিক করার দায়িত্ব মোতালেবের না, তার। সে ঠিক করেও রেখেছে। এক ফাঁকে দেখে এসেছে, বাস স্টেশনে চলে এসেছে। পুলিশের নাকের উপর দিয়ে মাইক্রোবাসে চড়ে বসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে কি-না তা বুঝতে পারছে না বলেই সে চুপচাপ আছে। নয়তো এতক্ষণে জিনিসপত্ৰ বাসে তুলে ফেলতো। রানার বাথরুমে যাওয়াটা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। এদেরকে পুলিশের হাতে ফেলে যেতেও ইচ্ছা করছে না। কী থেকে কী হয়ে যাবে কে জানে? বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা, পুলিশ ছুয়ে দিলে আঠারো দুগুণে ছত্রিশ ঘা। প্লাস দুঘা এক্সট্রা। সব মিলিয়ে আটত্রিশ ঘা।
প্ল্যাটফর্মের এক জায়গায় গোল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের দলটি থেকে একজন এদিকেই আসছে। রানার পানির তৃষ্ণা পেয়ে গেছে। বুক খা-খা করছে।
পুলিশ অফিসার আনুশকার কাছে এসে দাঁড়ালেন। আনুশকা তার চামড়ার ব্যাগের ফিতা লাগাচ্ছিল। সে পুলিশ অফিসারের দিকে না তাকিয়েই বলল, কিছু বলবেন?
আপনারা যাচ্ছেন্ন কোথায়?
রাঙ্গামাটি।
ওখানে কি হল্ট করবেন?
জায়গা পছন্দ হলে করব। পছন্দ না হলে করব না।
থাকবেন কোথায়?
হোটেল নিশ্চয়ই আছে। আছে না?
পর্যটনের মোটেল আছে।
তাহলে পর্যটনের মোটেলেই থাকব।
রুম কি বুক করা আছে?
এত কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন?
এত কথা জিজ্ঞেস করেছি, কারণ আপনাদের দলেরই একজন খানিকক্ষণ আগে বললেন—আপনারা সেন্ট মাটিন আইল্যান্ডে যাচ্ছেন। যিনি বলেছেন তার নাম মোতালেব।
জরী হাই তুলতে তুলতে বলল, ও কিছু জানে না। শুরুতে আমাদের সেন্ট মাটিন যাবার প্ল্যান ছিল, পরে বদলানো হয়েছে। মোতালেব শেষ খবর পায় নি। আমরা যখন ফাইন্যাল ডিসিশন নিই তখন সে নাক ডাকিয়ে ঘুমুচ্ছিল।
পুলিশ অফিসার আগের মতোই সহজ গলায় বললেন, আপনাদের নেবার জন্য স্টেশনে একটা মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে আছে। বাসটা রাঙ্গামাটি যাবে না। বাস যাবে টেকনাফ।
এত খবর নিয়ে ফেলেছেন?
পুলিশে চাকরি করি। আমাদের কাজই হলো খবর নেয়া!
আর কী খবর নিলেন?
আরেকটা খবর হচ্ছে—নইমা বলে আপনার যে বান্ধবীকে পাওয়া যাচ্ছে না। বলছিলেন। তিনি চা খাচ্ছেন। স্টেশনের বাইরে টি-স্টল আছে। সেখানে চা খাচ্ছেন।
তাকে কি বলেছেন যে, আমরা তার খোঁজ করছি?
জি, বলা হয়েছে।
থ্যাংক য়্যু। থ্যাংক য়্যু ভেরি মাচ।
আমরা আরেকটা খবর নিয়েছি। ঢাকায় ওয়্যারলেস করে জেনেছি। আইজি নুরুদ্দিন সাহেবের আনুশকা নামে কোনো ভাগ্নী নেই।
আনুশকা মোটেই চমকাল না। সে এত স্বাভাবিকভাবে তার ব্যাগ ঠিক করছে। যে রানা মুগ্ধ হয়ে গেল। একেই বোধহয় বলে ইস্পাতের নার্ভ। এই নাৰ্ভ কতক্ষণ ঠিক থাকে তা দেখার ব্যাপার। বেশি টেনশানে ইস্পাতের নার্ভেরও ছিড়ে যাবার কথা। আনুশকার নার্ভ কখন ছিড়বে? রানা সেই দৃশ্য দেখার জন্যে অপেক্ষা করতে পারছে না। তার বাথরুমে না গেলেই নয়। সে বাথরুমের সন্ধানে রওনা হলো।
পুলিশ অফিসার বললেন, আপনারা কি আমাদের সঙ্গে থানায় যাবেন?
আনুশকা বলল, হ্যাঁ, যাব।
তাহলে চলুন।
এখন তো যেতে পারব না। হাত-মুখ ধোব, চা খাব, তারপর যাব। আপনারা এতক্ষণ অপেক্ষা করবেন?
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছি। আর অপেক্ষা করা ঠিক হবে না।
শুভ্ৰ এতক্ষণ চুপ করে শুনছিল। সে অবাক হয়ে বলল, কথাবার্তা কী হচ্ছে আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
পুলিশ অফিসার বললেন, থানায় চলুন। থানায় যাওয়ামাত্রই সব জলের মতো পরিষ্কার বুঝে যাবেন। পুলিশের অনেক কথাই বাইরে অর্থহীন মনে হয়। থানা হাজতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি শব্দের অর্থ পরিষ্কার হয়ে যায়।
থানায় যেতে হবে কেন?
সেটাও থানায় গেলেই জানতে পারবেন।
এতক্ষণে গাড়ি থেকে সবাই নেমে এসেছে। পুলিশের কথাবার্তা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে শুনে যাচ্ছে। জরীর চোখে-মুখে হতভম্ব ভাব। রানা তাহলে ভুল বলে নি। সমস্যা কিছু একটা হয়েছে। জরী বলল, ব্যাপার কী রে আনুশকা? উনি আমাদের থানায় যেতে বলছেন কেন?
আনুশকা সহজ গলায় বলল, ওনার ধারণা, আমরা মনিরুজ্জামান নামের এক ভদ্রলোকের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে এসেছি। এই জন্যেই আমাদের থানায় যেতে বলছেন?
জরী আগের চেয়েও অবাক গলায় বলল, মনিরুজ্জামানের স্ত্রীটি কে?
মনে হচ্ছে তুই। যে বদমাশটার সঙ্গে তোর বিয়ে হবার কথা ছিল ওর নামই তো মনিরুজ্জামান, তাই না?
জরীর মুখে কোনো কথা ফুটল না। সে বড়ই অবাক হয়েছে। আনুশকা বলল, তোরা সবাই হাত-মুখ ধুয়ে তৈরি হয়ে নে। আমরা থানায় যাচ্ছি। চা ওখানেই খাব।
নীরা ভীত গলায় বলল, এসব কী হচ্ছে? শুধু শুধু থানায় যাব কেন?
পুলিশ অফিসার অমায়িক ভঙ্গিতে হাসলেন।
আনুশকা বলল, আমরা আমাদের মালপত্র কী করব? এখানে রেখে যাব, না সঙ্গে নিয়ে যাব?
সেটা আপনাদের ব্যাপার। আপনারা ঠিক করবেন। দেরি করবেন না, চলুন।
আনুশকা উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, রানা কোথায় গেল? ও হচ্ছে আমাদের টিম লিডার। মালপত্রের ব্যাপারে ওর ডিসিশন লাগবে।
রানা টয়লেট খুঁজে বেড়াচ্ছে। বিপদের সময় কিছুই পাওয়া যায় না। এ পর্যন্ত দুজনকে জিজ্ঞেস করল, টয়লেট কোথায়? দুজনই এমনভাবে তাকাল যেন এই শব্দটা জীবনে প্ৰথম শুনছে। শব্দের মানে কী জানে না। স্টেশনের কাউকে ধরা দরকার। এরাও সব উধাও। নইমাকে দেখা যাচ্ছে। বেশ হাসি-খুশি মুখে আসছে। হাতে পত্রিকা। নইম বলল, এই রানা, যাচ্ছ কোথায়?
টিয়লেট খুঁজছি। টয়লেটটা কোথায় জানো?
আমি কী করে জানব?
না জানলে বলো জানি না। রেগে যাচ্ছ কেন?
মেয়েদের টয়লেট সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করাই অভদ্রতা। এই জন্যে রেগে যাচ্ছি। তোমার কি ইমারজেন্সি?
হ্যাঁ, ইমারজেন্সি।
তবড় টয়লেট, না ছোট টয়লেট?
কী যন্ত্রণা! ছোট।
তাহলে কোনো একটা ট্রেনের কামরায় ঢুকে পড়লেই হয়। ছুটে বেড়াচ্ছ কেন?
বিপদের সময় সব এলোমেলো হয়ে যায়, এটা খুবই সত্যি। সাধারণ ব্যাপারটা তার মাথায় আসে নি কেন? রানা লাফ দিয়ে সামনের একটা ট্রেনের কামরায় উঠে গেল।
নইম অপেক্ষা করছে। রানা নামলে তাকে একটা মজার জিনিস দেখাবে। রানা রাজি থাকলে তাকে নিয়ে আরেক কাপ চা খাবে। ওরা নিশ্চয়ই তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ টেনশানে ভুগুক। হু কেয়ারস?
রানা নামতেই নইমা বলল, চাটগাঁর লোকরা ঘুমুচ্ছি-কে কী বলে জানো? তারা বলে, ঘুম পাড়ি। ঘুম কি ডিম নাকি যে ডিম পাড়ার মতো ঘুম পাড়বে? হি-হি-হি।
রানা ধমকের সুরে বলল, হাসি বন্ধ করো।
হাসি বন্ধ করব মানে?
কেলেংকেরিয়াস ব্যাপার হয়ে গেছে। পুলিশ আমাদের অ্যারেক্ট করেছে।
তুমি এত ফালতু কথা বলো কেন?
মোটেও ফালতু কথা বলছি না। অবস্থা সিরিয়াস। উই আর আন্ডার অ্যারেস্ট।
আমরা কী করেছি? ডাকাতি করেছি?
তোমরা ডাকাতির চেয়েও বড় জিনিস করেছ। অন্যের বউ ভাগিয়ে নিয়ে চলে এসেছে।
রানা, তোমার ব্ৰেইনের নাট-বল্টু সব খুলে পড়ে গেছে। তুমি ঢাকায় গিয়েই ধোলাইখালে চলে যাবে। নাট-বল্টু লাগায়ে নেবে। তোমার যা সাইজ, রেডিমেড পাওয়া যাবে না। লেদ মেশিনে বানাতে হবে।
রানা আগুন-চোখে তাকাল। সে ভেবে পাচ্ছে না পুরুষ এবং মেয়ের মস্তিষ্কের ঘিলুর পরিমাণ সমান হওয়া সত্ত্বেও মেয়েরা পৃথিবীর কিছুই বোঝে না কেন?
যে বাস ওদের টেকনাফ নিয়ে যাবে বলে এসেছে সেই বাসে করেই ওরা থানায় যাচ্ছে। পুলিশের দুজন লোক বাসে আছে। একজন বসেছে ড্রাইভারের পাশে, অন্যজন আনুশকাঁদের সঙ্গে। নইম সেই পুলিশ অফিসারের দিকে তাকিয়ে করুণ গলায় বলল, আচ্ছা, চিটাগাং-এর লোেকরা ঘুমাচ্ছি না বলে ঘুম পাড়ি বলে কেন? ঘুম কি ডিম যে পাড়তে হয়? সবাই হো-হো করে হাসছে। পুলিশ অফিসারটি হাসছে না।
সে তাকিয়ে আছে শুভ্রর দিকে। শুভ্ৰ বলল, আপনি কি আমাকে কিছু বলবেন?
হ্যাঁ, বলব। আপনার নাম শুভ্র?
জি।
আপনার বিরুদ্ধে আলাদা স্পেসিফিক অভিযোগ আছে। গুণ্ডামির অভিযোগ। আপনি রশীদউদ্দিন ভূইয়া নামে বুফেকারের কেয়ারটেকারকে মারধর করেছেন। চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়েছেন এবং এক পর্যায়ে তাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ঠেলে নিচে ফেলে দেবার চেষ্টা করেছেন।
শুভ্ৰ শুধু একবার বলল—আমি?
বলেই সে চুপ করে গেল। অন্য সবাই চুপ। শুধু নইমা এখনো হেসে যাচ্ছে। চিটাগাং-এর লোকেরা ঘুমিয়ে পড়াকে কেন ঘুম পাড়ি বলে—এটা কিছুতেই তার মাথায় ঢুকছে না।
অয়ন বাসের রড ধরে দাঁড়িয়ে আছে। মুনার পাশে খালি জায়গা আছে। সে যেখানে দাঁড়িয়ে সেখান থেকে মুনার পাশের জায়গাটাই সবচে কাছে। কাজেই অয়ন যদি সেখানে গিয়ে বসে কেউ অন্য কিছু মনে করবে না। সে ঠিক ভরসাও পাচ্ছে না। মুনা যদি ফট করে কিছু বলে বসে।
রানা বলল, তুই হাঁদার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? বোস না।
অয়ন মুনার পাশে বসতে গেল। মুনা বলল—আপনার গা থেকে বিশ্রী গন্ধ আসছে। অন্য কোথাও গিয়ে বসুন।
অয়ন আগের জায়গায় ফিরে গেল।