সপ্তম অনুবাক
প্রথম সূক্ত : পাবমানম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : রুদ্র, বৈশ্বানর, বায়ু, দ্যাবাপৃথিবী। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ ]
বৈশ্বানররা রশ্মিভির্নঃ পুনাতু বাতঃ প্রাণেনেষিরো নভোভিঃ। দ্যাবাপৃথিবী পয়সা পয়স্বতী ঋতাবরী যজ্ঞিয়ে নঃ পুনীতাম।১। বৈশ্বানরীং সুনৃতামা রভধ্বং যস্যা আশান্তম্বো বীতপৃষ্ঠাঃ। তয়া গৃণন্তঃ সধমাদেযু বয়ং স্যাম পতয়ো রয়ীণাম ॥ ২॥ বৈশ্বানরীং বৰ্চস আ রভধ্বং শুদ্ধা ভবন্তঃ শুচয়ঃ পাবকাঃ। ইহেড়য়া সধমাদং মদন্তো জ্যোক পশ্যেম সূর্যমুচ্চরন্তম্ ॥ ৩৷৷
বঙ্গানুবাদ –সকল প্রাণীতে জঠরাগ্নিরূপে বর্তমান অগ্নি, বৈশ্বানর সূর্য, প্রাণ রূপে দেহমধ্যে বিচরণশীল তথা অন্তরিক্ষে গমনশালী বায়ু ও যজ্ঞকে পূর্ণ-করণশালী দ্যাবাপৃথিবী আমাদের পবিত্র করুন। ১।
হে মনুষ্যবর্গ! বৈশ্বানরাত্মক সত্য স্তুতিরূপ বাণী প্রারম্ভ করো। যে বাণীর শরীর রূপ উপরের ভাগ বিস্তৃত হয়ে আছে, সেই বাণীর দ্বারা আমরা ধনের অধিপতি হওয়ার নিমিত্ত বৈশ্বানর অগ্নির স্তুতি করি। ২।
হে মনুষ্যবর্গ! ব্রহ্মবৰ্চস্ ইত্যাদি তেজকে প্রাপ্তির নিমিত্ত স্তুতিযুক্ত বাণী আরম্ভ করো। পুনরায় আমরা বৈশ্বানর অগ্নির কৃপায় তেজস্বী হয়ে অপরকেও পবিত্র করতে সমর্থ হবো। আমরা অন্নের দ্বারা পুষ্ট থেকে চিরকাল পর্যন্ত (অর্থাৎ দীর্ঘজীবীরূপে) সূর্যোদয়কে দর্শন করবো। ৩।
.
দ্বিতীয় সূক্ত : বর্চোবলপ্রাপ্তিঃ
[ঋষি : দ্রুহ্বণ। দেবতা : নির্ঋতি প্রভৃতি। ছন্দ : জগতী, অনুষ্টুপ।]
যৎ তে দেবী নির্ঋতিরাববন্ধ দাম গ্রীবাস্থবিমোক্যং যৎ। তৎ তে বি য্যাম্যাথুষে বসে বলায়াদোমদমনুমদ্ধি, প্রসূতঃ ॥ ১ নমোহস্তু তে নিঋতে তিগুতেজোইয়ম্ময়ান বি চুতা বন্ধপাশান। যমো মহ্যং পুনরিৎ ত্বাং দদাতি তস্মৈ যমায় নমো অস্তু মৃত্যবে ৷ ২ অয়স্ময়ে দ্রুপদে বেধিষ ইহাভিহিত মৃত্যুভির্যে সহস্র। যমেন ত্বং পিতৃভিঃ সংবিদান উত্তমং নাকমধি রোহয়েমম ॥ ৩৷৷ সংসমিদ যুবসে বৃষন্নয়ে বিস্বান্য আ। ইড়ম্পদে সমিধ্যসে স নো বসূন্যা ভর ॥৪॥
বঙ্গানুবাদ –হে পুরুষ! অনিষ্টকারিণী দ্যোতমানা নির্ঋতি দেবতা তোমার কণ্ঠগত ধমনীতে যে। অবিমোক্য (মোচন করা যায় না, এমন) পাপরূপ বন্ধন (বা পাশ) আরোপিত করেছেন, আমি তোমাকে চিরকাল জীবিত রাখার নিমিত্ত তোমার অঙ্গ হতে সেই পাপ-পাশ দূর করে (বা মুক্ত করে) দিচ্ছি। তুমি সেই পাশ হতে মুক্ত হয়ে আমাদের দ্বারা প্রেরিত হওয়ার পর এই তৃপ্তিদায়ক অন্ন চিরকাল সেবন করো। ১।
হে তীক্ষ্ণদীপ্তি নির্ঋতি! তোমাকে নমস্কার। তুমি আমাদের এই নমস্কারে প্রসন্ন হয়ে এই লৌহময় অতি দৃঢ় পাশ-বন্ধন মুক্ত করো। হে সাধক! সেই পাপ-পাশ হতে মুক্ত হওয়ার পর যম পুনরায় তোমাকে আমার নিকট প্রত্যর্পণ করে দিয়েছেন, (অর্থাৎ নির্ঋতি-পাশের দ্বারা বন্ধনগ্রস্ত হয়ে পূর্বে তুমি মৃতপ্রায় হয়ে ছিলে, ইদানীং তা বিমোচিত হওয়ায় লব্ধজীবন হয়েছে, সেই কারণে যম তোমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন)। সেই যমের উদ্দেশে নমস্কার। ২।
হে নির্ঋতি! যখন তুমি লৌহপাশের দ্বারা বিজড়িত করে কারো পদে শৃঙ্খল আরোপিত করো, তখন জ্বর ইত্যাদি ব্যাধি তাকে বন্ধন করে নেয়। তুমি আপন অধিষ্ঠাতা যমরাজ ও পিতৃগণের সহমতি গ্রহণ করে একে দুঃখবহিত স্বৰ্গকে প্রাপ্তি করাও৷ ৩৷
হে কাম্যবৰ্ষক অগ্নি! তুমি সকলকে সকল ধন প্রাপ্ত করিয়ে থাকো, অতএব আমাদের ধন দান করো। তুমি বেদীর উপর দেদীপ্যমান হও। ৪।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –..তত্র বৈশ্বানররা রশ্মিভিঃ ইতি আদ্যস্য তৃচস্য বৃহঙ্গণে পাঠাৎ শান্তু্যদকাভিমন্ত্রণে বিনিয়োগ। তথা অর্থোত্থাপনবিঘুশমনকর্মণি অনেন তৃচেন ক্ষীরৌদনহবনাদীনি কর্মানি কুর্যাৎ। সূত্রিতং হি৷ মহ্য আপঃ (৬/৬১) বৈশ্বানরো রশ্মিভিঃ (৬/৬২) ইত্যভিবষণাবসেচনানাং ইতি (কৌ.৫/৫) তথা অস্য তৃচস্য পবিত্রগণে পাঠাৎ সর্বজ্ঞেষু প্রোণে বিনিয়োগঃ।….তথা অগ্নিচয়নে যৎ তে দেবী ইতি নৈঋতেষ্টকোপধনানন্তরং রুক্মপাশসহিতাং প্রস্তাৎ আসন্দীং অনুমন্ত্রয়তে।…ইত্যাদি। (৬কা, ৭অ. ১-২সূ)।
টীকা— প্রথম সূক্তটি শান্তিকর্মে বিনিযুক্ত হয়। অর্থোত্থাপনবিঘ্নশমন কর্ম ইত্যাদির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই সূক্তটির বিনিয়োগ পূর্ববতী সূক্তের অনুরূপ। দ্বিতীয় সূক্তটি অগ্নিচয়নে সূত্রোক্ত প্রকারে বিনিযুক্ত হয়। এই সূক্তের তৃতীয় মন্ত্রে নির্ঋতি প্রসঙ্গে সায়ণাচার্যের বর্ণনা অয়স্ময়ে অয়োবিকারে শৃঙ্খলাদৌ দ্রুপদে দারুনির্মিতে পাদবন্ধনে… ইত্যাদি আমাদের মনঃপূত হয়নি। আমরা পরবর্তী কালের ব্যাখ্যাকারদের অনুসরণ করেছি। (৬কা, ৭অ. ১-২)।
.
তৃতীয় সূক্ত : সামমনস্যম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : সাংমনস্যম। ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ]
সং জানীধ্বং সং পৃচ্যধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম। দেবা ভাগং যথা পূর্বে সংজানানা উপাসতে ॥১॥ সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানং ব্রতং সহ চিত্তমেষাম। সমানেন বো হবিষা জুহোমি সমানং চেতত অভিসংবিশধ্বম্ ॥ ২॥ সমানী ব আকুতিঃ সমানা হৃদয়ানি বঃ। সমানমস্তু বো মনো যথা বঃ সুসহাসতি ॥ ৩৷৷
বঙ্গানুবাদ –হে সমান-মনঃশালী জনবর্গ! তোমাদের জ্ঞানও সমান হোক। তোমরা পুনরায় একই কর্মে যুক্ত হয়ে যাও। তোমাদের অন্তঃকরণ একই অর্থকে জ্ঞাতশীল হোক। যেমন ইন্দ্র ইত্যাদি দেবগণ একই কার্যে জ্ঞান রক্ষা করে (অর্থাৎ একই যজ্ঞে লক্ষ্য রেখে) হব্য ইত্যদি গ্রহণ করেন, সেই রকমে তোমরা ঈপ্সিত ফলকে প্রাপ্তির উদ্দেশে পরস্পরের বিদ্বেষকে ত্যাগ করো ৷৷ ১।
এই পুরুষবর্গের কার্য-অকার্য সম্বন্ধী জ্ঞান সমান; এদের কর্ম, অন্তঃকরণও সমান। শ্রেষ্ঠ ফলপ্রাপ্তির উদ্দেশে আমি একীকরণশালী ঘূত ইত্যাদি হব্য প্রদান করছি। তোমরা এক-চিত্ততা প্রাপ্তশালী হও ২
হে সমানতা আকাঙ্ক্ষাকারী জনগণ! তোমাদের অন্তঃকরণ ও সঙ্কল্প একসাথেই থাকুক। তোমাদের মন একই রকম থাকুক। যাতে তোমাদের সকল কার্য শোভন রীতি অনুসারে সমান হয়, তার নিমিত্ত আমি এই সমানাত্মক কর্ম সাধিত করছি ৷৷ ৩৷৷
.
চতুর্থ সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : পরাশর, ইন্দ্র। ছন্দ : পংক্তি, অনুষ্টুপ ]
অব মনুরবায়তাব বাহু মননযুজা। পরাসর ত্বং তেষাং পরাঞ্চং শুম্মমদয়াধা নো রয়িমা কৃধি ॥১॥ নিৰ্হস্তেভ্যো নৈৰ্হস্তং যং দেবাঃ শরুমস্যথ। বৃশ্চামি শক্ৰণাং বাহুননেন হবিষাহম ॥ ২॥ ইন্দ্ৰশ্চকার প্রথমং নৈৰ্হস্তমসুরেভ্যঃ। জয়ন্তু সত্বানো মম স্থিরেণেণে মেদিনা ॥ ৩৷৷
বঙ্গানুবাদ –শত্রুর ক্রোধ শান্ত হোক। তাদের আয়ুধ অসফল হোক। আপন মনে নিবিষ্ট হয়ে যা থাকায় শত্রুর ভুজসমূহ শস্ত্ৰাস্ত্র চালনায় অশক্ত হোক। হে পরাশর (পরাগতা শৃণাতি হিনস্তিশজন সু ইতি পরাশর ইন্দ্র)! তুমি শত্ৰুশক্তিকে পরাজুখ করে হননশালী; এই শত্রুকে পরাহত করো এবং এর ধনসমূহ আমাদের প্রদান করো ॥১॥
হে দেবগণ! তোমরা শত্রুবর্গের ভুজবলকে ক্ষীণ করণশালী যে বাণ চালনা করে থাকে, সেই বাণরূপ দেবতাগণের উদ্দেশে দীয়মানা এই হবিঃ-রূপ আয়ুধের দ্বারা শত্রুদের ভুজসমূহকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি ॥ ২॥
পুরাকালে দেবতাগণের অধিপতি ইন্দ্র রাক্ষসগণকে ভুজবল-রহিত করে দিয়েছিলেন, এইরকমে ইন্দ্রের অনুগ্রহে আমাদের যোদ্ধাগণ শত্রুগণের উপর বিজয় লাভ করুক ॥ ৩৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –সং জানীধ্বং ইতি তৃচেন সাংমনস্যকর্মণি উদকুম্ভং সুরাকুম্ভং বা সম্পত্য অভিমন্ত্র সূত্রোক্তপ্রকারেণ গ্রামমধ্যে নিনয়েৎ। তথা তত্রৈব কর্মণি ত্রিবর্ষদেশীয়ায়া বৎসতর্যা মাংসবিশেষং অনেন তৃচেন সম্পাত্য অভিমন্যু আশয়েৎ। তথা ভক্তং অনেন সম্পাত্য অভিমন্ত্র প্রাপয়েৎ। তথা সুরাং প্রসোদকং বা অনেন সম্পত্য অভিমন্ত্র পারয়েৎ। সূত্রিতং হি।…অব মনুঃ ইতি তৃচেন সংগ্রামজয়কর্মাণি কুর্যাৎ। তানি চ আজ্যহোমঃ সঙ্কুহোমঃ ধনুরিঋেগ্নৌ ধনুঃসমিদাধানং শরেখেগৌ শরসমিদাধানং সম্পাতিত্যাভিমন্ত্রিতধনুঃ প্রদানং চ প্রত্যেতব্যানি। এতেষু কর্মসু অনুষ্ঠিতেষু সংগ্রামে দৃষ্টমাত্রেণ শত্ৰবঃ পালয়ন্তে।…ইত্যাদি। (৬কা, ৭অ. ৩-৪)।
টীকা— তৃতীয় সূক্তটির দ্বারা সাংমনস্যকর্মে (অর্থাৎ পরস্পর বিরোধীগণকে ঐকমত্যে আনয়নের নিমিত্ত কর্মে) জলপূর্ণ বা সুরাপূর্ণ কুম্ভ অভিমন্ত্রিত করে গ্রামের মধ্যে রক্ষণীয়; ইত্যাদি সূত্রোক্ত বিধি অনুসারে বিনিয়োগ নির্দিষ্ট আছে। চতুর্থ সূক্তের মন্ত্রগুলি সংগ্রামজয় কর্মে বিনিযুক্ত হয়। আজ্যহোম সঞ্জুহোম ইত্যাদি কর্ম অনুষ্ঠানের ফলে দৃষ্টমাত্র শত্রুগণ যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করে পলায়ন করে।..ইত্যাদি ॥ (৬কা, ৭অ. ৩-৪)।
.
পঞ্চম সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : ইন্দ্র। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ ]
নিৰ্হস্তঃ শত্রুরভিদাসন্নস্তু যে সেনাভিষুধমায়ন্ত্যম্মান। সমর্পয়েন্দ্র মহতা বধেন দ্রাত্বেমঘহারো বিবিদ্ধঃ ॥১॥ আতন্বনা আয়চ্ছন্তোইস্যন্তো যে চ ধাবথ। নিৰ্হস্তাঃ শত্ৰবঃ স্থনেত্রো বোদ্য পরাশরীৎ॥ ২॥ নিৰ্হস্তাঃ সন্তু শত্রবোহজৈষাং স্লাপয়ামসি। অথৈমিন্দ্র বেদাংসি শতশো বি ভজামহৈ ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –আমাদের সন্তপ্ত করণশীল শত্রুর হস্ত শক্তিহীন হয়ে যাক। শত্রুগণ হিংসাজনক দুঃখ-প্রদানশালী দুষ্ট কুৎসিত গতি প্রাপ্ত হোক। হে ইন্দ্র! শত্রুগণ সেনা-সমভিব্যাহারে আমাদের উপর আক্রমণ করতে উদ্যত হয়েছে, তুমি তাদের বজ্রের দ্বারা সংযুক্ত করে হনন করো ॥১।
হে শত্রুগণ! তোমরা ধনু আকর্ষণ করে শরসন্ধান পূর্বক বাণ নিক্ষেপ করতে করতে আমাদের ব অভিমুখে ধাবিত হচ্ছো; ইন্দ্র এখনই তোমাদের সেই সকলকে নিবীর্যহস্তা করে দেবেন। ২।
আমাদের শত্রুবর্গের ভুজ-বল বিনষ্ট হোক, তাদের সকল অঙ্গ শিথিল হয়ে যাক। হে ইন্দ্র! তোমার কৃপায় তাদের সমস্ত সম্পত্তি আমরা পরস্পর (নিজেদের মধ্যে) বন্টন করে নেবো ৷৷ ৩৷৷
.
ষষ্ঠ সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : ইন্দ্র। ছন্দ : অনুষ্টুপ]
পরি বক্সানি সবত ইন্দ্রঃ পূষা চ সম্রতুঃ। মুহ্যদ্যামূঃ সেনা অমিত্রাণাং পরস্তরাম্ ॥১॥ মূঢ়া অমিত্রাশ্চরতাশীৰ্ষাণ ইবাহয়ঃ। তেষাং বো অগ্নিমূঢ়ানামিন্দ্রো হন্তু বরংবরম্ ॥ ২॥ ঐষু নহ্য বৃজিনং হরিণস্যা ভিয়ং কৃধি। পরাঙমিত্র এষত্ববাচী গৌরুপেষতু ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –ইন্দ্রদেব ও পূষা দেবতা এই শত্রুবর্গের পথগুলি অবরুদ্ধ করে দিন। শত্রুসেনাগণ অত্যন্ত মোহে পতিত হয়ে কার্য-অকার্য নির্ণয় করণে যেন সমর্থ না হয় (অর্থাৎ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ুক)। ১।
হে শত্ৰুবর্গ! ফণা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সর্প যেমন দংশন করতে পারে না, কেবল ছটফট করতে থাকে, তেমনই তোমরা বিমূঢ় হয়ে রণস্থলে ব্যর্থভাবে বিচরণ করতে থাকো। আমাদের আহুতি সমূহে প্রসন্ন হয়ে ইন্দ্রদেব তোমাদের মুখ্য বীরবর্গকে বিনাশ করে দিন ॥ ২॥
হে অভীষ্টবর্ষক ইন্দ্র! সোমমণির বেষ্টনশালী কৃষ্ণমৃগের চর্মকে আমাদের সৈন্যগণের অঙ্গাবরণে বন্ধন করে দাও। শত্রুগণের মধ্যে ত্রাস উৎপন্ন করিয়ে যাতে তারা পরাভূত হয়ে, পলায়ন করে এবং তাদের গো-ইত্যাদি ধন যাতে আমাদের মিলে যায়, তেমন করো ॥ ৩
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –নিৰ্হস্তঃ ইতি তৃচস্য অব মনুঃ (৬/৬৫) ইতি তৃচবৎ সংগ্রামজয়কর্মণি বিনিয়োগো দ্রষ্টব্যঃ। …পরিবর্ক্সানি ইতি তৃচস্য নিস্তঃ (৬/৬৬) ইতি তৃচবৎ সংগ্রামজয়কর্মণি বিনিয়োগো দ্রষ্টব্যঃ। তথা অনেন তৃচেন পরসেনায়া বিদ্বেষণাসকামো রাজা সেনাং ত্রিঃ পরিগচ্ছে। তথা তত্রৈব কর্মণি অনেন তৃচেন সম্পাতিতাভিমন্ত্রিতসোমমণিং চর্মবেষ্টিতং কৃত্বা রাজ্ঞে বধীয়াৎ। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি ॥ (৬কা, ৭অ, ৫-৬)।
টীকা— পঞ্চম সূক্তের মন্ত্রগুলির বিনিয়োগ পূর্ববর্তী চতুর্থ সূক্তের সংগ্রামজয় কর্মের বিনিয়োগের অনুরূপ। ষষ্ঠ সূক্তের বিনিয়োগ পূর্ববর্তী পঞ্চম সূক্তের সংগ্রামজয় কর্মের বিনিয়োগের অনুরূপ। এই সূক্তের দ্বারা শত্রুসেনার মধ্যে ত্রাসসঞ্চারের নিমিত্ত রাজার কর্ম সাধিতব্য হয়। এই কর্মে এই সূক্তের দ্বারা রাজা কর্তৃক অভিমন্ত্রিত সোমমণিকে চর্মবেষ্টিত করে ধারণ ইত্যাদি করণীয়।… ইত্যাদি। (৬কা.৭অ.৫-৬)।
.
সপ্তম সূক্ত : বপনম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : সবিতা ইত্যাদি মন্ত্রোক্ত দেবতাগণ। ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ]
আয়মগন্তসবিতা ক্ষুরেণণাষ্ণেন বায় উদকেনেহি। আদিত্যা রুদ্রা বসব উন্তু সচেতসঃ সোমস্য রাজ্ঞো বপত প্ৰচেতসঃ ১। অদিতিঃ শ্মশ্রু বপত্বাপ উন্তু বচসা। চিকিৎসতু প্রজাপতিদীর্ঘায়ুত্বায় চক্ষসে॥ ২ যেনাবপৎ সবিতা ক্ষুরেণ সোমস্য রাজ্ঞো বরুণস্য বিদ্বান্। তেন ব্রহ্মাণে বপতেদমস্য গোমানশ্ববানয়মস্তু প্রজাবান ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –সকলের প্রেরক সবিতা মুণ্ডন-করণশালী ক্ষুরের সাথে নভোমণ্ডলে আগত হয়েছেন। হে বায়ু! তুমিও এই বালকের মস্তক আর্দ্রকরণের নিমিত্ত উষ্ণ জলের সাথে আগমন করো। একাদশ রুদ্র, দ্বাদশ আদিত্য ও অষ্টবসু সমান জ্ঞানের সাথে (বা ঐকমত্য হয়ে) জলের দ্বারা এর মস্তক সিক্ত করুন। হে প্রকৃষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন মনুষ্যগণ! বরুণ ও সোমের সাথে সম্বন্ধিত ক্ষুরের সাহায্যে এই মানবকের সিক্ত হয়ে যাওয়া কেশসমূহ বপনের (মুণ্ডনের) দ্বারা বর্জন করে দাও ॥১॥
অদিতি এই পুরুষের শ্মশ্রু বপন (ছেদন) করুন; জলদেবগণ এর কেশসমূহকে সিক্ত করুন; স্রষ্টা প্রজাপতি এর চিকিৎসা করুন, যাতে এ চক্ষুশক্তি ও দীর্ঘায়ু সম্পন্ন হয় ২৷৷
সোম ও বরুণের দ্বারা সম্বন্ধিত যে ক্ষুরের দ্বারা সবিতাদেব মুণ্ডন করেছিলেন (অর্থাৎ সবিতা যে ক্ষুরে সোম ও বরুণকে মুণ্ডিত করেছিলেন), হে বিপ্রদল! তেমনই ক্ষুরের দ্বারা এই পুরুষের কেশ-শ্মশ্রু বপন করে দাও। এই পুরুষ এই সংস্কারের দ্বারা গো, অশ্ব, পুত্র, পৌত্র ইত্যাদির দ্বারা যুক্ত হয়ে যাক ॥ ৩
.
অষ্টম সূক্ত : বৰ্চঃপ্রাপ্তিঃ
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : বৃহস্পতি, অশ্বিনদ্বয়। ছন্দ : অনুষ্টুপ]
গিরাবরগরাটেষু হিরণ্যে গোষু যদ যশঃ। সুরায়াং সিচ্যমানায়াং কীলালে মধু তন্ময়ি ॥ ১। অশ্বিনা সারঘেণ মা মধুনাক্তং শুভশতী। যথা ভর্গস্বতীং বাচমাবদানি জনাঁ অনু ॥ ২॥ ময়ি বর্চো অথো যশোহথো যজ্ঞস্য যৎ পয়ঃ। তন্ময়ি প্রজাপতির্দিবি দ্যামিব দৃংহতু ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –রথের উপর উপবিষ্ট হয়ে শত্রুর সম্মুখে গমনশীল রথীর জয়ঘোষে যে যশ প্রাপ্য হয়, হিমবা ইত্যাদি পর্বতে যে যশ আছে, এবং সুবর্ণের জ্যোতিতে ও ক্ষীর ইত্যাদি দানের নিমিত্ত গাভীতে যে যশ আছে, সেই যশ আমার প্রাপ্য হোক। সিচ্যমান পাত্রে আসিচ্যমান সুরায়, এবং জলে ও অন্নে মাধুর্যোপেত রসের যে যশকে লোকে প্রশংসা করে, তা সবই আমার : হোক ॥১॥
হে অশ্বিনীকুমারদ্বয়! তোমরা আমাকে মক্ষিকাসমূহের দ্বারা একত্ৰীকৃত (সারঘ) মধুর দ্বারা সম্পন্ন করো, যাতে আমার বাণী মধুর ও দীপ্তিমতী হয়ে যায়। ২৷৷
অন্ন ও যজ্ঞের ফল রূপ ক্ষীর ইত্যাদিতে যে যশ আছে, তথা আমি হেন সাধকে যে তেজ আছে, সেগুলি অন্তরিক্ষলোকে জ্যোতির্মণ্ডলকে দৃঢ় করণের ন্যায়, প্রজাপতি আমি হেন যজমানে দৃঢ় করুন ॥ ৩।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –আয়মগন্তসবিতা ক্ষুরেণ ইতি তৃচেন গোদান চূড়াকরণ ক্ষৌরার্থেদকুম্ভা ভিমন্ত্রণং কুর্যাৎ….তথা অস্যৈব তৃচস্য ক্ষৌরার্থোদকাভিমন্ত্রেণ বিনিয়োগঃ…..গিরাবরগরাটেষু ইতি তৃচেন মেধাজননকামঃ সুপ্তোখিত দুখং প্রক্ষালয়েৎ। তথা কুমারীবৰ্চস্যকর্মণি দধি মধু একত্র কৃত্বা অনেন তৃচেন সম্পত্য অভিম কুমারী প্রাশয়েৎ। তথা ক্ষত্রিয়বস্যকর্মণি ….ক্ষত্রিয়ং প্রাশয়েৎ। তথা বৈশ্যশূদ্রাদিবৰ্চস্যকর্মণি…বৈশ্যাদিং প্রাশয়েৎ। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি। (৬কা, ৭অ, ৭-৮)।
টীকা –সপ্তম সূক্তের দ্বারা গোদান, চূড়াকরণ উপনয়ন ইত্যাদি কর্মে ক্ষৌরার্থে জলকুম্ভ অভিমন্ত্রণ করণীয়। অষ্টম সূক্তটি মেধাজননকামীর পক্ষে বিনিযুক্ত হয়। এই সূক্তটি কুমারী, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য-শূদ্র ইত্যদির তেজঃ-লাভ কর্মে সূত্রোক্ত প্রকারে বিনিযুক্ত হয়ে থাকে। (৬কা.৭অ.৭-৮)। ..
.
নবম সূক্ত : অঘ্ন্যা
[ঋষি : কাঙ্কায়ন। দেবতা : অঘ্ন্যা। ছন্দ : জগতী ]
যথা মাংসং যথা সুরা যথাক্ষা অধিদেবনে। যথা পুংসো বৃষণ্যত স্ত্রিয়াং নিহন্যতে মনঃ। এবা তে অগ্ন্যে মনোহধি বৎসে নি হন্যতাম্ ॥১॥ যথা হস্তী হস্তিন্যাঃ পদেন পদমুজে। যথা পুংসো বৃষণ্যত স্ত্রিয়াং নিহন্যতে মনঃ। এবা তে অম্ন্যে মনোহধি বৎসে নি হন্যতাম্ ॥ ২॥ যথা প্রধির্ষথোপধির্ষথা নভ্যং প্রধাবধি। যথা পুংসো বৃষণ্যত স্ক্রিয়াং নিহন্যতে মনঃ। এবা তে অঘো মনোহধি বৎসে নি হন্যতাম্ ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –যেমন সুরাসক্তের নিকট সুরা প্রিয়, মাংসাশীর নিকট মাংস প্রিয়, দূতকারের নিকট দূতস্থান প্রিয়, সুরতার্থী পুরুষের মন স্ত্রীবিষয়ে আসক্ত হয়ে থাকে, সেই রকমই, হে অবধ্য গাভী! তোমার এই বৎস তোমার প্রিয় হোক। ১।
যেমন হস্তিনীর পদের সাথে আপন পদ মিলিত হলে হস্তী প্রসন্ন হয়, যেমন সন্তানদাতা পুরুষ স্ত্রীবিষয়ে প্রসন্ন হয়, তেমনই, হে অবধ্য গাভী! তুমি তোমার বৎসের প্রতি প্রসন্ন থাকো। ২৷
যেমন রথচক্রের মধ্যফলকের সাথে নেমি দৃঢ়তার সাথে বন্ধনযুক্ত হয়ে থাকে (বা দৃঢ় সম্বন্ধযুক্ত হয়), তেমনই, হে ধেনু! তুমি বৎসের সাথে বন্ধনযুক্ত হয়ে থাকো। যেমন কামী পুরুষের মন স্ত্রীবিষয়ে মুগ্ধ হয়ে থাকে, তেমনই, তোমার মন এই বৎসে মুগ্ধ হয়ে থাকুক ৩
.
দশম সূক্ত : অন্নম
[ঋষি : ব্রহ্মা। দেবতা : অগ্নি, সর্ব দেবগণ। ছন্দ : জগতী, ত্রিষ্টুপ ]
যদন্নমন্নি বহুধা বিরূপং হিরণ্যমশ্বমুত গামজামবি। যদেব কি চ প্রতিজগ্রহাহমগ্নিষ্টদ্ধোতা সুহুতং কৃণোতু। ১। যন্মা হুতমহুমাজাম দত্তং পিতৃভিরনুমতং মনুষ্যঃ। যম্মামে মন উদিব রাবজীত্যগ্নিষ্টদ্ধোতা সুহুতং কৃণোতু ॥ ২॥ যদন্নমগ্ননৃতেন দেবা দাস্যদাস্যমুত সংগৃণামি। বৈশ্বানরস্য মহততা মহিমা শিবং মহ্যং মধুমদস্তুন্নম্ ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –ক্ষুৎপীড়াবশে ভোজ্যাভোজ্য বিভাগ না করে আমি বিবিধ রকমের অন্নকে উদরস্থ করে নিয়েছি এবং দারিদ্রবশে আমি হিরণ্য ইত্যাদি বহু দ্রব্য প্রতিগ্রহ করেছি। এই যজ্ঞ নিম্পাদক অগ্নি সেই অন্নদোষ ও প্রতিগ্রহ দোষ হতে আমাকে রক্ষা করুন।১।
যজ্ঞের দ্বারা সংস্কৃত বা অসংস্কৃত (অর্থাৎ হুত বা অহুত) যে দ্রব্যসামগ্রী প্রতিগ্রহের দ্বারা আমি প্রাপ্ত হয়েছি, পিতৃগণ ও দেবতাগণের দ্বারা প্রদত্ত যে প্রতিগ্রহ দ্রব্য আমি প্রাপ্ত হয়েছি, এই যজ্ঞ সম্পাদক অগ্নি সেই প্রতিগ্রহ দোষ হতে আমাকে রক্ষা করুন। ২।
হে দেবতাগণ! যে মিথ্যা ভাষণের দ্বারা আমি অপরের অন্নভাগ ভক্ষণ করে নিয়েছি এবং ঋণ গ্রহণ করে তা পরিশোধ করিনি, সেই দোষ হতে রক্ষা পূর্বক বৈশ্বানর অগ্নি সেগুলিকে আমার পক্ষে মধুর ও সুখদায়ক করে দিন ৷ ৩৷৷
.
একাদশ সূক্ত : বাজীকরণম
[ঋষি : অথর্বাঙ্গিরা। দেবতা : শেপোহর্ক। ছন্দ : জগতী, অনুষ্টুপ]
যথাসিতঃ প্ৰথয়তে বশাঁ অনু বপূংষি কৃন্বন্নসুরস্য মায়য়া। এবা তে শেপঃ সহসায়মকোহঙ্গেনাঙ্গং সংসমকং কৃশোত্ ॥১॥ যথা পসস্তায়াদরং বাতেন সুলভং কৃত। যাবৎ পরস্বতঃ পসস্তাবৎ তে বর্ধতাং পসঃ ॥ ২॥ যাবদঙ্গীনং পারস্বতং হানিং গাদভং চ যৎ। যাবশ্বস্য বাজিনস্তাবৎ তে বর্ধতাং পসঃ ॥ ৩॥
বঙ্গানুবাদ –যেমন এই বদ্ধ পুরুষ আসুরী মায়ায় স্ববশ পুরুষগণকে (আত্মীয়দের) আপন রূপরাশি প্রদর্শন করে আত্মপ্রসার প্রাপ্ত হয়, সেই রকম এই অর্কবৃক্ষের বিকার-মণি সহসা তোমার (অর্থাৎ আভিচারিক ক্রিয়া-সাধকের) উপস্থকে (পুংব্যঞ্জনলক্ষণ শেপ নামক অঙ্গকে) সন্তান উৎপত্তির যোগ্যরূপে বিস্তার করে দিক। ১
তায়োদর নামক (বিস্তৃত উদরশালী) প্রাণীবিশেষের পুংব্যঞ্জন (পস) যেমন বায়ুর দ্বারা স্থূলতা (স্ফীতি) প্রাপ্ত হয়, পরস্বত নামক মৃগবিশেষের পুংব্যঞ্জন যৎপরিমাণ বিশিষ্ট (বৃদ্ধি প্রাপ্ত) হয়, যেমন সুদৃঢ় অঙ্গশালী পুরুষের অঙ্গ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে প্রজা উৎপাদনে সমর্থ হয়ে থাকে, তেমনই, হে সাধক! তোমার পুরুষাঙ্গও সেই পরিমাণবিশিষ্ট বর্ধিত হোক ॥ ২॥
পরস্বত মৃগ সম্বন্ধি প্রজনন যৎপরিমাণবিশিষ্ট হয়, তথা হস্তী সম্বন্ধি ও গর্দভ সম্বন্ধি প্রজনন যেমন বৃহদাকারসম্পন্ন হয়, এবং বড়বাসঙ্গমনে অশ্বের লিঙ্গ যেমন দীর্ঘতর হয়, সেই রকম তোমার পুরুষাঙ্গও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোক।–(সৃষ্টির সঞ্চালনের উদ্দেশ্যে যে প্রকার সৃদৃঢ় শরীরাঙ্গের আবশ্যকতা হয়, তার যোগ্য হওয়ার প্রযত্ন সকল মনুষ্যেরই করা উচিত; যাতে ভাবী সন্তানও সুস্থ ও সবল হয়) ॥ ৩৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— যথা মাংস ইতি সুক্তেন গোবৎসয়োরন্যোন্যবিরোধশান্তিরূপে। সাংমনস্যকর্মণি বৎসং সংস্নাপ্য গোমূত্রেণ অবসিচ্য বৎসং ত্রিঃ পরিভ্ৰাম্য অভিমন্যু স্তনপানার্থং মুঞ্চেৎ। তথা তত্রৈব কর্মণি অনেন তৃচেন গোঙ শিরঃ কর্ণং চ অনুমন্ত্রয়েত। সূত্রিতং হি।…য অন্নং ইতি তৃচেন দুষ্টাদুষ্ট প্রতিগ্ৰহজনিতদোষশাস্ত্যর্থং প্রতিগ্রাহ্যং বস্তু অভিমন্যু গৃহ্নীয়াৎ।…যথাসিতঃ ইতি তৃচেন বাজীকরণকামঃ একশাখাকর্মণিং সম্পত্য অভিমন্ত্র অর্কসূত্ৰেণ বৰ্ধীয়াৎ।…ইত্যাদি। (৬কা, ৭অ. ৯-১১)।
টীকা –নবম সূক্তটি গাভী ও বৎসের মধ্যে বিরোধ শান্তির নিমিত্ত বিনিযুক্ত হয়ে থাকে। এই কর্মে বৎসকে গোমূত্রে সিঞ্চিত করে তিনবার পরিভ্রমণ করিয়ে এই মন্ত্রে অভিমন্ত্রিত পূর্বক স্তনপানার্থে ছেড়ে দেওয়া কর্তব্য। এই সূক্তের দ্বারা গাভীর মস্তক ও কর্ণ অভিমন্ত্রিত করণীয়।…দশম সূক্তটির দ্বারা দুষ্ট-অদুষ্ট প্রতিগ্ৰহজনিত দোষ শান্তির নিমিত্ত প্রতিগ্রাহ্য বস্তু অভিমন্ত্রিত করে গ্রহণীয়।…একাদশ সূক্তটির দ্বারা বাজীকরণকামী জন একশাখা-অর্কমণি অভিমন্ত্রিত করে অর্কসূত্রের দ্বারা ধারণ করবেন। অবশ্য এ সবই সূত্রোক্ত প্রকার অনুসারে করণীয় ॥ (৬কা.৭অ. ৯-১১সূ)।