০৫. লুতপাইন আজ ক্লাসে এসেছে

লুতপাইন আজ ক্লাসে এসেছে। চারদিন ক্লাস মিস দিয়ে আজ এসেছে। নিশ্চয় কোনো অসুখ-বিসুখ হয়েছে। তাকে দেখাচ্ছেও ফ্যাকাশে। মাথায় স্কার্ফ বাঁধা। স্কার্ফ বাঁধার জন্যেই হয়তো বেশি রোগা রোগা লাগছে। লুতপাইন বারবার তাকাচ্ছে রনির দিকে কিন্তু রনি এমন ভাব করছে যে সে দেখতে পাচ্ছে না। লুতপাইন যে চারদিন স্কুলে আসে নি তাতেও রনির কিছু আসে যায় নি। এখন বৈশাখ মাস। অতিরিক্ত গরমে অনেকের অসুখ-বিসুখ হয়। লুতপাইনেরও হয়েছে। তাতে কিছু যায় আসে না।

লুতপাইন রনির দিকে ঝুঁকে এসে বলল, এই শোনো, আমার জ্বর আর গলা ব্যথা হয়েছিল।

রনি ভাব করল যেন সে শুনতে পায়নি। সে চেয়ার ছেড়ে মিসের কাছে গিয়ে বলল, মিস বাথরুমে যাব।

মিস বললেন, যাও।

এই মিস ভালো। রনি যদি অনেক দেরি করে ফিরে, তাহলেও তিনি কিছু বলবেন না। রনির আসলে বাথরুম পায়নি। লুতপাইনের কথা না শোনার জন্যেই সে বের হয়েছে। এই মেয়েটির ওপর আজ তার খুব রাগ লাগছে। মেয়েটির জন্যে সে সরি কার্ড লিখেছিল, মেয়েটি আসে নি বলে কার্ড দিতে পারে নি। কার্ডটা এখনো আছে। কিন্তু রনির আর দিতে ইচ্ছে করছে না। এলিয়েনদের ছবিটাও আছে। ছবিটা অবশ্যি দেয়া যায়।

রনি স্কুল করিডোরে হাঁটছে। তার বেশ মজা লাগছে। সব ছাত্রছাত্রী ক্লাসে বসে আছে। সে শুধু হেঁটে বেড়াচ্ছে। কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না। মনে হচ্ছে সে একজন অদৃশ্য মানব। মাঝে মাঝে তার অদৃশ্য মানব হতে ইচ্ছা করে। অদৃশ্য মানব হবার কোনো মন্ত্র থাকলে ভালো হতো। এইচ জি ওয়েলস-এর ইনভিসিবল ম্যান বইটা আরেকবার পড়ে দেখতে হবে।

এই ছেলে। এই।

রনি থমকে দাঁড়াল। প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডামের গলা। রনিদের স্কুলের সব ম্যাডামকেই আপা বলা যায় কিংবা মিস বলা যায়। শুধু প্রিন্সিপ্যালকে ম্যাডাম বলতে হয়। ইনি খুবই রাগী।

নাম কী তোমার?

রনি।

কোন ক্লাস?

ফোর্থ গ্রেড।

কোন গ্রুপ?

বি গ্রুপ।

বারান্দায় হাঁটছ কেন?

বাথরুমে যাচ্ছি ম্যাডাম।

বাথরুমে যাচ্ছ মানে? বাথরুম তো এদিকে না।

সরি, আমি ভুলে গেছি।

বাথরুম কোন দিকে ভুলে গেছ? এর মানে কী?

Is anything wrong with you?

No Madam.

এসো আমার ঘরে এসো।

রনি প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডামের সঙ্গে হাঁটতে শুরু করল। তার ভয় লাগা উচিত কিন্তু কেন জানি মোটেই ভয় লাগছে না। বরং মজা লাগছে। মজা লাগার কারণ হচ্ছে, প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম রনির মিথ্যা কথাটা বিশ্বাস করেছেন। রনি যখন বলেছে, বাথরুম কোথায় আমি ভুলে গেছি, তখন প্রিন্সিপ্যাল ম্যাডাম রাগ করার বদলে অবাক হয়ে তাকিয়েছেন। এই যে এখন ম্যাডাম তার সামনে বসে আছেন, ম্যাডামের চোখে কোনো রাগ নেই। তাঁর চোখ অবাক অবাক।

বাথরুম কোথায় তুমি ভুলে গেছ?

জি ম্যাডাম।

এখন কি মনে পড়েছে?

ইয়েস ম্যাডাম।

এরকম ভুল কি তোমার প্রায়ই হয়?

জি।

কী রকম ভুল হয় বলো তো?

ক্লাসের ছেলেমেয়েদের আমি মাঝে মাঝে চিনতে পারি না।

বুঝতে পারছি না। উদাহরণ দিয়ে বলো।

আমাদের ক্লাসে একটা মেয়ে আছে, তার নাম লুতপা, তাকে আমি মাঝে মাঝে চিনতে পারি না।

বলো কী! তুমি এই ব্যাপারটা তোমার বাবা-মাকে বলেছ?

না।

বলো নি কেন?

বাবা-মা তো আমার সঙ্গে থাকে না। কীভাবে বলব?

তারা কোথায় থাকেন?

তারা মারা গেছেন।

মাই গড! তুমি এসব কী বলছ? তোমার নাম কী? আবার বলো তো।

রনি।

ও আচ্ছা, তুমি সেই ছেলে। তোমাকে তো চিনি। দুদিন পর পর তোমাকে নিয়েই থানা পুলিশ নানা সমস্যা।

সরি ম্যাডাম।

তুমি সরি হচ্ছ কেন। সমস্যা তো তুমি কর নি। তুমি কি কিছু খাবে? কোক পেপসি সেভেন আপ?

কোক খাব।

আমার ফ্রিজেই কোকের একটা ক্যান থাকার কথা। দাঁড়াও তোমাকে দিচ্ছি। ক্লাসে বসে খেও না। টিফিন পিরিয়ড়ে খাবে।

ইয়েস ম্যাডাম।

যাও এখন ক্লাসে যাও।

রনি ক্লাসে ঢুকল। সে এত দেরি করেছে, তারপরেও মিস কিছুই বললেন না। তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। সে যখন বসতে যাচ্ছে তখন লুতপাইন বলল, এতক্ষণ লাগল কেন?

রনি জবাব দিল না। লুতপাইন অকারণে কথা বলে, তার সব কথার জবাব দেবার কোনো দরকার নেই। বরং ম্যাডাম বোর্ডে কী লিখছেন সেটা দেখা অনেক দরকার।

লুতপাইন আবারো কথা বলল, এই তোমার কি শরীর খারাপ?

রনি সেই প্রশ্নেরও জবাব না দিয়ে টেবিলে তার খাতা খুলতে গিয়ে দেখে টেবিলের এক কোনায় একটা কার্ড। কার্ড খুলে দেখল সেখানে লেখা

Please forgive me
Lutopa

এটা একটা সরি কার্ড। রনি লুতপাইনকে দেবার জন্যে একটা সরি কার্ড ব্যাগে নিয়ে ঘুরছে আর উল্টা লুতপাইনই একটা সরি কার্ড দিয়েছে। তারটা দেয়া হয়নি। রনি বলল, তুমি সরি কার্ড দিয়েছ কেন?

লুতপাইন বলল, আমি যে সবসময় তোমাকে বিরক্ত করি এই জন্যে।

রনি বলল, তুমি সবসময় আমাকে বিরক্ত কর কেন?

লুতপাইন খুব সহজ গলায় বলল, Mity be আমি তোমাকে Love করি এইজন্যে।

রনির খুবই মেজাজ খারাপ হলো। মেয়েটা কী অসভ্য কথাই না বলছে। মিসের কাছে নালিশ করে দিলে কেমন হয়?

রনি ফিসফিস করে বলল, এইসব অসভ্য কথা আমাকে বলবে না। এইসব খুব খারাপ কথা।

লুতপাইন বলল, Love করা খারাপ?

হ্যাঁ খারাপ, এইসব বড়দের ব্যাপার।

আমি যখন বড় হব তখন তোমাকে Love করতে পারব?

আমার সঙ্গে আর কথা বলবে না। প্লিজ।

লুতপাইন ফিসফিস করে বলল, বড় হয়ে আমি কী করব জানো? বড় হয়ে আমি তোমাকে বিয়ে করব।

রনি একদৃষ্টিতে বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে। এমন ভাব করছে যে সে লুতপাইনের কোনো কথাই শুনতে পাচ্ছে না।

লুতপাইন বলল, আমি বাবাকে বলেছি যে বড় হয়ে তোমাকে বিয়ে করব। বাবা বলেছেন, Ok.

রনি কঠিন গলায় বলল, চুপ।

মিস তখন রনির দিকে তাকিয়ে বললেন, হ্যালো রনি, তুমি দেখি ক্রমাগত কথা বলে যাচ্ছ। ক্লাসের সময় কথা বলা ঠিক না রনি।

রনি বলল, সরি মিস।

মিস লুতপাইনকে কিছুই বলেন নি, তারপরেও লুতপাইন দাঁড়িয়ে অবিকল রনির মতো বলল, সরি মিস।

ক্লাসের সবাই হেসে ফেলল। এমনকি মিস নিজেও হাসলেন।

 

টিফিন টাইমটা রনির খুব খারাপ কাটে। তখন তার প্রধান চেষ্টা থাকে লুতপাইনের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকা। সেটা কখনো সম্ভব হয় না। লুতপাইন খুঁজে খুঁজে বের করে ফেলে। আজ রনি ঠিক করেছে সে এমনভাবে লুকিয়ে থাকবে যেন লুতপাইন কিছুতেই তাকে খুঁজে না পায়। টিফিনের ঘণ্টা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রনি বইয়ের ব্যাগ নিয়ে ছুটে বের হয়ে গেল।

চট করে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল। যা ভাবছে তাই। লুতপাইন তার দিকে তাকিয়ে দ্রুত ব্যাগ গোছাচ্ছে। কী সর্বনাশ!

স্কুল কম্পাউন্ডে থাকা যাবে না। যেখানেই যাবে লুতপাইন তাকে খুঁজে বের করবে। স্কুল কম্পাউন্ডের বাইরে চলে যেতে হবে। দারোয়ান সেটা করতে দেবে না। গেটে আটকাবে। দারোয়ানকে বলতে হবে গেটের বাইরে আমার গাড়ি আছে, গাড়িতে আমার স্কেল। আমি স্কেল আনব। দারোয়ান রনির ড্রাইভারকে চেনে। রনি দেখেছে এই দুজন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করতে করতে চা খাচ্ছে। কাজেই দারোয়ান তাকে ছেড়ে দেবে। সে করবে কী টিফিনের সময়টা গাড়িতে বসে থাকবে। টিফিন পিরিয়ড শেষ হলে স্কুল কম্পাউন্ডে ঢুকবে। একটা সমস্যা অবশ্যি থেকেই যায়–লুতপাইন তাকে খুঁজে না পেয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করতে পারে। এই মেয়ের যা বুদ্ধি!

রনি কোনো ঝামেলা ছাড়াই স্কুল কম্পাউন্ডের বাইরে চলে এল। গাড়ির কাছে গেল। ড্রাইভার গাড়ির আশপাশে নেই। গাড়ি তালা মেরে কোথায় যেন গেছে। রনিদের গাড়ির পাশে ভক্সওয়াগান গাড়িটাও আছে। এই গাড়ির ড্রাইভার নেই। ড্রাইভারের সঙ্গীও নেই। সবাই দল বেঁধে কোথাও আড্ডা দিতে গেছে বলে মনে হয়। দুই গাড়ির দুই ড্রাইভার একজন আরেকজনের শত্রু হবার কথা। কিন্তু তাদের মধ্যেও খুব খাতির। তারা একসঙ্গে চা খায়। সিগারেট টানে।

হ্যালো রনি।

রনি তাকিয়ে দেখে হাব্বত আলি রিকশায় বসে আছেন। রিকশা রনির দিকেই আসছে।

রনি আছ কেমন?

ভালো আছি।

বেড়াতে যাবে নাকি?

আমার ক্লাস আছে।

ছাত্রজীবনে এক আধবার স্কুল না পালালে স্কুল-জীবন সম্পূর্ণ হয় না। তাছাড়া আজকে টিফিনের পর তোমার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসও নেই। গেমস, লাইব্রেরি, মিউজিক। এই তিনটাই তো–তাই না?

আপনি কী করে জানলেন?

একদিন গিয়েছিলাম না তোমাদের স্কুলে? রুটিন ঘেঁটে দেখলাম। তুমি কি উঠবে রিকশায়?

রনি কিছু না বলে রিকশায় উঠে পড়ল। মন ঠিক আছে রনি? ঠিক আছে।

ঘোঁৎ চিকিৎসা লাগবে না?

না। আমরা কোথায় যাচ্ছি?

হাব্বত আলি বললেন, হাসপাতালে গেলে কেমন হয়? তোমাদের নাজমা মিস আছেন। তাকে দেখে এলাম। যাবে?

রনি আগ্রহের সঙ্গে বলল, যাব।

হাব্বত আলি বললেন, উনার অবস্থা ভালো না, তবে এখনো বেঁচে আছেন। দেশের বাইরে নিতে পারলে ভালো হতো।

দেশের বাইরে নিচ্ছে না কেন?

বললেই তো নেয়া যায় না। টাকা লাগে রে বাবা, টাকা। টাকা উল্টালে কী হয় জানো? টাকা উল্টালে হয় কাটা। একটা চন্দ্রবিন্দু যোগ করলে কাটা হয়ে যায় কাঁটা। কাঁটা মানে কন্টক।

রনি বলল, এইসব কী হাবিজাবি বলছেন?

হাব্বত আলি নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, জগতটাই হাবিজাবি। বলেই সুর করে প্রায় গানের মতো গাইলেন–

ওপরে কন্টক দাও
নিচেতে কন্টক
ডালকুত্তাদের মাঝে করহ বন্টক।

রনি বলল, এই ছড়াটার মানে কী?

হাব্বত আলি বললেন, কোনো মানে নেই। চোখ বন্ধ কর। এখন আমরা কিছুক্ষণ শূণ্য ভ্রমণ করব। রনি সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করে ফেলল, বাহ্ সত্যি সত্যিই মনে হচ্ছে সে শূন্যে ভেসে যাচ্ছে। প্রথম দিনের চেয়েও আজকের শূন্যে ভাসাটা অনেক বেশি মজার হচ্ছে। এই মজার ব্যাপারটা লুতপাইনকে বললে হতো। সেও মজা পেত। লুতপাইনের কথা ভেবে হঠাৎ তার কেন জানি একটু খারাপ লাগল।

হাব্বত আলি বললেন, মন খারাপ কেন রে ব্যাটা?

রনি বলল, মন খারাপ না। আপনি আমাকে ব্যাটা বললেন কেন?

আদর করে বললাম।

আমার বাবা আমাকে ব্যাটা ডাকত।

কী ডাকত তোমার তো মনে থাকার কথা না।

মনে আছে।

ব্যাটা উল্টা করলে কী হয় জানো? ব্যাটা উল্টো করলে হয় টাবে। হাব্বত আলি সুর করে বললেন,

টাবে টাবে
দুটা ভাত খাবে?

আপনি এত হাবিজাবি কথা বলেন কেন?

বিরক্তি লাগছে?

লাগছে।

বিরক্তি কাটাবার একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দেব?

দিন শিখিয়ে।

আজ না।

আজ না কেন?

আমরা হাসপাতালে চলে এসেছি। এইজন্যে আজ না।

 

রনি এই প্রথম কোনো হাসপাতালে ঢুকেছে। হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বলে একটা জায়গা। সেখানে মরণাপন্ন সব রোগীকে রাখা হয়েছে। নাকে নল, মুখে নল। নাজমা ম্যাডামের পুরো শরীরটা ব্যান্ডেজ করা, মাথায় ব্যান্ডেজ, মুখে ব্যান্ডেজ, শুধু চোখ দুটা খোলা। সেই চোখ বন্ধ।

রনির শরীর কাঁপতে লাগল। কী ভয়ঙ্কর অবস্থা! সে শক্ত করে হাত আলির হাত ধরে বলল, বাসায় যাব।

হাব্বত আলি বললেন, অবশ্যই বাসায় যাবে। তবে তুমি যে মিসকে দেখতে এসেছ, এটা তাকে জানিয়ে গেলে তিনি হয়তো খুশি হবেন। মিসের কাছে গিয়ে বলো, মিস আমি রনি।

ভয় লাগছে।

ভয় লাগার কিছু নেই, বলো।

রনি কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, মিস আমি এসেছি।

নাজমা মিস সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেললেন। একটু মাথা কাত করে রনিকে দেখলেন। তার ঠোঁটের কোণায় সামান্য হাসির আভাস দেখা গেল।

রনির কী যে খারাপ লাগল! সে বুঝতে পারছে তার চোখে পানি এসে যাচ্ছে। সে চায় না মিস তার চোখের পানি দেখেন। কিন্তু চোখের পানি সে আটকাতে পারছে না। হাব্বত আলি সাহেবকে জিজ্ঞেস করতে হবে উনি চোখের পানি আটকাবার কোনো কৌশল জানেন কি-না। জানার তো কথা। উনার যা বুদ্ধি।

রিকশায় ফেরার পথে রনি মন খারাপ করে থাকল। হাব্বত আলি বললেন, রনি, আমি কিন্তু আজ তোমাকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারব না।

রনি বলল, কেন পারবেন না?

কারণ তোমাদের বাসায় হুলস্থুল পড়ে গেছে। পুলিশে খবর দেয়া হয়েছে। আমি যদি তোমাকে নামিয়ে দেই, পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে আমাকে হাজতে ঢুকিয়ে দেবে।

হাজত কী?

পুলিশ অপরাধীদের ধরে প্রথমে যেখানে রাখে তার নাম হাজত।

ভয়ঙ্কর?

খুবই ভয়ঙ্কর। হাজত হলো হাবিয়া দোজখের খালাতো ভাই।

হাবিয়া দোজখ কী?

দোজখের ইংরেজি হচ্ছে Hell এবং হাজত হচ্ছে হাবিয়া দোজখের First Cousin, এখন বুঝেছি?

হুঁ।

আমি রিকশাওয়ালাকে সব বুঝিয়ে দিচ্ছি। সে তোমাকে ঠিক তোমাদের বাড়ির সামনে নামিয়ে দেবে। ঠিক আছে?

হ্যাঁ ঠিক আছে।

একা যেতে ভয় পাবে না তো?

ভয় পাব।

পরের বার যখন তোমার সঙ্গে দেখা হবে, তখন ভয় দূর করার কৌশল শিখিয়ে দেব। ঠিক আছে?

জি ঠিক আছে।

কয়েকবার ঘোঁৎ বলে দেখতে পার। ঘোঁৎ বললেও ভয় কাটার কথা।

হাব্বত আলি রিকশা থেকে নামলেন। রিকশাওয়ালাকে ঠিকানা বুঝিয়ে ভাড়া দিয়ে দিলেন। রনিকে বললেন, তোমাকে একটা ললিপপ কিনে দেই। ললিপপ খেতে খেতে যাও।

রনি বলল, দিন।

হাব্বত আলি রনিকে সবুজ রঙের একটা ললিপপ কিনে দিলেন। রনি বলল, থ্যাংকস।

হাব্বত আলি বললেন, সবুজ রঙটা দেখে একটা কথা মনে পড়েছে। তোমার মিসকে যে গাড়িটা ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেছে সেটার রঙ ছিল সবুজ। তোমাদের বাসায় তো অনেকগুলি গাড়ি–সবুজ রঙের কোনো গাড়ি কি আছে?

রনি বলল, না।

রিকশা চলতে শুরু করেছে। হাব্বত আলি রোদে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *