০৫. পঞ্চম অধ্যায় – যেনার অপরাধ
ধারা-১২৫
যেনা-এর সংজ্ঞা বালেগ ও বুদ্ধিমান দুইজন নারী ও পুরুষের বৈবাহিক বা ব্যতিরেকে বেয় ও জ্ঞানে একজনের যৌনাঙ্গে অপরজনের যৌনাঙ্গ প্রবি করানো হইলে
তাহাকে ‘যেনা বলে।
ব্যাখ্যা পুরুষাঙ্গ অঙ্গে প্রবেশ করানোই যেনা সাব্যস্ত হওয়ার জন্য যটে।
বিশ্লেষণ
যেনা (;) শব্দের পারিভাষিক অর্থ, “নিজ স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য নারী বা পুরুষের সহিত যৌনকর্ম।” ইমাম আবু হানীফা (র) যেনার নিম্নোক্ত সংজ্ঞা প্রদান করিয়াছেন, “এমন কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতিতে তাহার যৌনাঙ্গে কোন পুরুষের সঙ্গমক্রিয়াকে যেনা বলে, যে তাহার স্ত্রীও নহে এবং স্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাও বিদ্যমান নাই।”
মহান আল্লাহ যেনাকে ধ্বংসাত্মক গুনাহ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করিয়াছেন। কুরআন মজীদে বলা হইয়াহে :
ولا تقربوا الا انه كان فاحشة وساء سبيلا .
“তোমরা যেনার নিকটবর্তীও হইবে না, ইহা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ” (সূরা বনী ইসরাঈল : ৩২)।
মহানবী (স)-কে মুসলমানদের নিকট হইতে যেসব গর্হিত কাজে লিপ্ত না হওয়ার শপথ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে উহাদের মধ্যে যেনাও অন্তর্ভুক্ত।
أيها النبي اذا جاءك المؤمنات يبايعك على أن لا
يشرك بالله شيئا ولا يسرقن ولا يزنين … فبايعهن .
“হে নবী! মুমিন নারীগণ যখন তোমার নিকট আসিয়া বায়’আত করে এই মর্মে যে, তাহারা আল্লাহর সহিত কোন শরীক স্থির করিবে না, চুরি করিবে না, যেনা করিবে না….. তখন তাহাদের বায়আত গ্রহণ করিও” (সূরা মুমতাহানা : ১২)।
কুরআন মজীদে মুমিনদের যেসব বৈশিষ্ট্য উল্লিখিত হইয়াছে, যেনায় লিপ্ত না হওয়াও উহাদের অন্তর্ভুক্ত। “এবং তাহারা যেনায় লিপ্ত হয় না” (সুরা ফুরকান : ৬৮)।
মহানবী (সা) বলেন : . ১। সে।
“কোন ব্যক্তি যখন যেনায় লিপ্ত হয় তখন তাহার হইতে ঈমান বাহির হইয়া যায়।”
لا يزني الزاني حين يزني وهو مؤمن .
“ব্যভিচারী ঈমানদার থাকিয়া যেনা করিতে পারে না।”
ধারা-১২৬
হযোগ্য যেনা। নিম্নলিখিত শর্তাবলী বিদ্যমান থাকিলে দুইজন নারী-পুরুষের যৌনকর্ম হজযোগ্য যেনা হিসাবে গণ্য হইবে
(ক) যৌনকর্মে লিপ্ত নারী-পুরুষ পরস্পর স্বামী-স্ত্রী নহে; (খ) উভয়ে বালেগ; (গ) উভয়ে মুসলিম; (খ) উভয়ে বােধতি সশষ; (ঙ) উতয়ে জীবিত; (চ) যৌনকর্ম ৰোয় ও জ্ঞানে অনুষ্ঠিত হইয়াছে; (ছ) দুইজনের একজন পুরুষ এবং অপরজন নারী; (জ) একজনের পুরুষাঙ্গ অপরজনের জননেন্দ্রিয়ে প্রবিষ্ট কানো হইয়াছে।
বিশ্লেষণ
ফাসিদ ও বাতিল বিবাহের অধীন স্বামী-স্ত্রীর যৌনকর্ম হযোগ্য যেনার আওতায় পড়ে না। নাবালেগ ও বুদ্ধিভ্রম (পাগল) সোকের যৌনকর্মও হজযোগ্য যেনার আওতাবহির্ভূত। মৃত ব্যক্তির সহিত কৃত যৌনকর্ম, পুরুষের সহিত পুরুষের বা নারীর সহিত নারীর যৌনকর্মও হদযোগ্য যেনার আওতায় পড়িবে না। নারীর জননেন্দ্রিয় ছাড়া অন্য কোথাও, যেমন পশ্চাদ্বারে, যৌনকর্ম করিলে তাহাও হদ্দমোগ্য যেনার আওতায় পড়িবে না।
ধারা-১২৭
মুহসান ( আ.)-এর সংজ্ঞা (ক)যেবালেগ ও বুদ্ধিমানমুসলিম পুরুষ ওনারী পরস্পর সহীহ বিবাহ অনুষ্ঠানে পর সঙ্গমাদ লাভ করিয়াছে তাহাকে বা তাহাদিগকে ‘মুহসান’ (w) বলে।
২৯৩
(খ) কোন ব্যক্তি মুহসান’ কি না তাহা প্রমাণের জন্য দুইজন সাক্ষীই যথেষ্ট হইবে।
বিশ্লেষণ
যেনা ও যেনার অপবাদ প্রমাণের জন্য ন্যূনপক্ষে চারজন সাক্ষীর প্রয়োজন হইলেও কোন ব্যক্তি মুহসান’ কি ‘গায়র মুহসান’ তাহা প্রমাণের জন্য অন্ততপক্ষে দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্যই যথেষ্ট। ইমাম আবু হানীফা, আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (র)-এর মতে দুইজন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন নারীর সাক্ষ্য দ্বারা কোন ব্যক্তি মুহসান কিনা তাহা প্রমাণিত হইবে। কিন্তু যুফার (র)-এর মতে এই ক্ষেত্রেও চারজন পুরুষ সাক্ষীর প্রয়োজন এবং তাঁহার মতে, কোন ব্যক্তি নিজেকে মুহসান’ বলিয়া স্বীকার করার পর সে তাহা প্রত্যাহার করিলে আইনত তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে, এই মত অধিকতর যুক্তিসঙ্গত মনে হয়। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফ (র)-এর মতে এই ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার গ্রহণযোগ্য হইবে না। এই বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা ও আবু ইউসুফ (র)-এর কোন মত উল্লিখিত নাই।
ধারা-১২৮
মুম-এর শর্তাবলী মুহসান হওয়ার জন্য কোন ব্যক্তির মধ্যে ছয়টি শর্ত বিদ্যমান থাকিতে হইবে (ক) বালেগ; (খ) বুদ্ধিমান; (গ) স্বাধীন; (ঘ) মুসলিম; (৬) সহীহ বিবাহিত; (চ) স্বামী-লীর সহিত সমকৃত।
বিশ্লেষণ
কোন ব্যক্তির মধ্যে উপয়োক্ত শর্তাবলী বিদ্যমান থাকিলে সে মুহসান’ গণ্য হইবে। উপরোক্ত শর্তাবলীর কোন একটি বা সবগুলির অবর্তমানে কোন ব্যক্তিকে মুহসান’ বলা যাইবে না। সুতরাং নাবালেগ, পাগল ও কাফির ব্যক্তি মুহসান’ নহে। ফাসিদ বিবাহের দ্বারাও মুহসান’ গণ্য হইবে না। সহীহ বিবাহের পর সঙ্গমক্রিয়া না হইলেও ‘মুহসান’ গণ্য হইবে না। আহলে কিতাব স্ত্রীর সহিত স্বামীর সঙ্গমক্রিয়াও স্বামীকে “মুহসান” করিবে না।
মুসলিম হওয়ার শর্ত সম্পর্কে ফকীহগণের মধ্যে মতভেদ আছে। ইমাম শাফিঈ ও আবু ইউসুফ (র)-এর মতে অমুসলিম ব্যক্তিও মুহসান’ গণ্য হইবে এবং তাহার উপরও রজমের নির্ধারিত শান্তি কার্যকর হইবে। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা, মালেক ও
২৯৪
আহমাদ ইবন হাম্বল (র)-এর মতে অমুসলিম ব্যক্তি মুহসান’ নহে এবং তাহার উপর রজমের শান্তি কার্যকর হইবে না।
যেনায় লিপ্ত নারী-পুরুষ উভয়ের মুহাম হওয়া শর্ত নহে। একজন মুসান হইলে এবং অপরজন মুহসান না হইলে তদনুযায়ী শান্তি কার্যকর হইবে।
ধারা-১২৯
মুহসান-এর শাস্তি ‘মুহসান’-এর যেনায় অপরাধ প্রমাণিত হইলে তাহাকে জনসমক্ষে রজম’ (পাথর নিক্ষেপে হত্যা) করিতে হইবে।
বিশ্লেষণ
মহানবী (স) বলেন :
خذوا عني خذوا عني قد جعل الله لهن سبيلا . البكر
بالبكر جلد مائة ….. والثيب بالثيب جلد مائة والرجم .
“আমার নিকট হইতে গ্রহণ কর, আমার নিকট হইতে গ্রহণ কর। আল্লাহ তাহাদের (যেনাকারীদের) জন্য পন্থা বাহির করিয়াছেন। অবিবাহিত নারী-পুরুষ যেনা করিলে এক শত বেত্রাঘাত………, বিবাহিত নারী-পুরুষ যেনা করিলে এক শত বেত্রাঘাত এবং রজম করিতে হইবে।
لا يحل دم امری مسلم الأ ثلاثه نفر الارك للاسلام
فارق الجماعة والثيب الزاني والنفس بالنفس .
“কোন মুসলমানের রক্তপাত (হত্যা) বৈধ নহে, তিন ব্যক্তি ব্যতীত : ইসলাম ত্যাগকারী-যে মুসলিম সমাজ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িয়াছে, বিবাহিত যেনাকারী এবং নরহত্যাকারী।
عن عبد الله بن عباس أن عمر ابن الخطاب قال ان الله بعث محمدا صلى الله عليه وسلم بالحق وأنزل عليه الكتاب فكان فيما أنزل عليه أية الرجم فقرأناها ووعيناها ورجم رسول الله صلى الله عليه وسلم ور جمنا من بعده واني خشيت أن تنال بالناس الزمان أن يقول قائل مانجا أي الجم في كتاب الله فيضوا بترك فريضة أنزلها الله
‘
২৯৫
تعالى فالرجم حق على من زنى من الرجال والنساء اذا كان محصنا اذا قامت البنه أو كان مل أو اعتراف .
“আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (র) হইতে বর্ণিত। উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা মুহাম্মাদ (সা)-কে সত্য (দীন) সহকারে পাঠাইয়াছেন এবং তাঁহার উপর কিতাব নাযিল করিয়াছেন। তিনি তাঁহার উপর যাহা নাযিল করিয়াছেন তাহাতে রজম’ সম্পর্কিত আয়াতও ছিল, তাহা আমরা পড়িয়াছি এবং মুখস্থ করিয়াছি। রাসূলুল্লাহ (সা) রজম করিয়াছেন এবং তাঁহার পরে আমরাও রজম করিয়াছি। আমার আশঙ্কা হইতেছে যে, পরবর্তী কালে কোন ব্যক্তি বলিতে পারে, “আমরা তো কিতাবে (কুরআনে) রজম সম্পর্কিত আয়াত দেখিতে পাইতেছি না।” এইভাবে তাহারা আল্লাহর নাযিলকৃত একটি বাধ্যতামূলক আয়াত ত্যাগ করিয়া পথভ্রষ্ট হইবে। পুরুষ ও নারীদের মধ্যে কোন বিবাহিত ব্যক্তি (মুহসান) যেনা করিলে এবং তাহা প্রমাণিত হইলে অথবা গর্ভধারণ করিলে অথবা স্বীকারোক্তি করিলে তাহার উপর রজম (পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হইবে।”
মহানবী (সা)-এর নিকট ইহুদীরা আসিয়া বলিল যে, তাহাদের মধ্যে একটি পুরুষ ও একটি নারী যেনা করিয়াছে। মহানবী (সা) তাওরাত কিতাবের বিধান অনুযায়ী তাহাদের উভয়কে রজমের নির্দেশ দিলেন এবং তাহা কার্যকর করাইলেন।
মাই ইবন মালেক আল-আসলামী মহানবী (সা)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া যেনার স্বীকারোক্তি করিলে তিনি তাহাকে রজমের নির্দেশ দেন। সে ছিল বিবাহিত।
জুহায়না গোত্রের শাখা গামিদ গোত্রের একটি স্ত্রীলোক যেনার স্বীকারোক্তি করিলে মহানবী (সা) তাহাকে রজম করার নির্দেশ দেন।
দুই ব্যক্তি মহানবী (সা)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া তাহাদের একজন বলিল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পুত্র এই লোকের স্ত্রীর সহিত যেনা করিয়াছে। এই বিষয়ে আমি বিশেষজ্ঞ আলেমগণের নিকট জিজ্ঞাসা করিলে তাহারা বলিলেন যে, আমার পুকে এক শত বেত্রাঘাত সহ্য করিতে হইবে ও এক বৎসরের নির্বাসন দিতে হইবে এবং তাহার স্ত্রীকে রজম করিতে হইবে। মহানবী (সা) বলেন, সেই মহান সত্তার শপথ যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! আমি তোমাদের মাঝে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব মোতাবেক ফয়সালা যৱিব। মহানবী (সা) তাহার পুত্রকে এক শত বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দিলেন। তিনি উনাইস আল-আসলামী (রা)-কে নির্দেশ দিলেন যে, তিনি অপর ব্যক্তির স্ত্রীর নিকট গিয়া ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিবে এবং সে যেনার স্বীকারোক্তি করিলে তাহাকে রজম করিবেন। স্ত্রীলোকটি যেনার স্বীকারোক্তি করিল এবং তাহাকে রজম করা হইল।
ধারা-১৩০ গায়র মুহান ( 1) -এর সংজ্ঞা যে বালেগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম পুরুষ বা নারীর মধ্যে ধারা ১২৮-এ বর্ণিত মুহসান’-এর সকল শর্ত অথবা উহার কোন একটি শর্ত অনুপস্থিত তাহাকে ‘গায়র মুহসান’ বলে।
বিশ্লেষণ
এক কথায় অবিবাহিত বালেগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম নারী ও পুরুষগণ গায়র মুহসান হিসাবে গণ্য। অর্থাৎ যে বালেগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম পুরুষ বা নারী পর্যায়ক্রমে, কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম নারী বা পুরুষের সহিত সহীহ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইয়া সঙ্গমস্বাদ আস্বাদন করে নাই সে-ই গায়র মুহসান’ হিসাবে গণ্য।
ধারা-১৩
গায়র মুহসান-এর শাস্তি ‘গায়র মুহসান’-এর যেনার অপরাধ প্রমাণিত হইলে তাহাকে জনসমক্ষে এক শত বেত্রাঘাত করিতে হইবে।
বিশ্লেষণ
মহান আল্লাহ বলেন :
الزانية والزاني فاجلدوا كل واحد منهما مائة جلدة ولا
تاخم
بهما راف في دين الله ان گنتم تؤمنون بالله
واليوم الأخر وليشهد عذابهما طائفة من المؤمنين .
“যেনাকারিণী ও যেনাকারী, তাহাদের প্রত্যেককে এক শত কশাঘাত করিবে। আল্লাহর বিধান কার্যকরীকরণে তাহাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ্ ও আখেরাতের উপর ঈমান আনিয়া থাক। মুমিনগণের একটি দল যেন তাহাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে” (সূরা নূর : ২)।
ফকীহগণের সর্বসম্মত রায় অনুযায়ী এই আয়াতে অবিবাহিত নারী-পুরুষের যেনায় লিপ্ত হওয়ার অপরাধের শাস্তি বর্ণিত হইয়াছে।
মহানবী (সা) বলেন : . L. i, ২iu২. “অবিবাহিত নারী বা পুরুষ (বাকিরা) যেনা করিলে এক শত বেত্রাঘাত”?
হানাফী মাযহাবমতে, বেত্রাঘাতের সহিত অতিরিক্ত কোন শাস্তি যুক্ত হইবে না। তবে আদালত অপরাধীকে নির্বাসন বা অতিরিক্ত কোন শাস্তি দেওয়া জরুরী বিবেচনা করিলে তাযীরের আওতায় তাহা করিতে পারে। কিন্তু ইমাম শাফিঈর মতে বেত্রাঘাতের সহিত এক বত্সরের নির্বাসনের শাস্তি বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত হইবে। হাম্বলী মাযহাবেরও
২৯৭
এই মত। ইমাম মালেক ও আওযাঈ (র)-এর মতে কেবল পুরুষের ক্ষেত্রে বেত্রাঘাতের সহিত নির্বাসনের শাস্তি যুক্ত হইবে।
বেত্রাঘাতের শাস্তি প্রকাশ্য দিবালোকে কার্যকর করিতে হইবে, যাহাতে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করিতে পারে। উল্লিখিত আয়াতের শেষাংশে এই কথাই বলা হইয়াছে।
ধারা-১৩২
যেনাকারিণী গর্ভবতী হইলে যেনাকারিণী মুহসান হউক অথবা গায়র মুহসান’, সে গর্ভবতী হইলে গর্ত খালাস ও সন্তানের দুধপানের মেয়াদ শেষ হইবার পর তাহার উপর শাস্তি কার্যকর হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, শাস্তি বেত্রাঘাত হইলে উহা ‘নিফাস’ শেষ হওয়ার পরে কার্যকর হইবে।
ব্যাখ্যা স্ত্রীলোকের সন্তান প্রসবের পর তাহার যে রক্তস্রাব হয় তাহাকে নিফাস’ বলে। নিফাসের সর্বোচ্চ মেয়াদ চল্লিশ দিন।
বিশ্লেষণ
ইসলাম প্রত্যেকটি মানব সন্তানকেই নিষ্পাপ মনে করে, তাহার জন্মসূত্র যাহাই হউক। সুতরাং গর্ভবতীর উপর শাস্তি কার্যকর করিলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি বা জীবননাশের আশঙ্কা রহিয়াছে। এইজন্য গর্ভবতীর উপর শান্তি কার্যকর করা বিলম্বিত হইবে, যাবত না সে সন্তান প্রসব করে এবং এই সন্তানের দুধপাল সমাপ্ত
হয়।
জুহায়না গোত্রের শাখা গাদিম গোত্রের এক নারী যেমায় মাধ্যমে গর্ভবতী হয়। সে মহানবী (সা)-এর দরবারে উপস্থিত হইয়া চারিবার যেনার স্বীকারোক্তি করিলে তিনি তাহাকে রজমের শাস্তির নির্দেশ দেন, কিন্তু গর্ভ খালাস ও সন্তানের দুধপানকাল সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তি কার্যকর করা যুগিত রাখেন। সন্তানের দুধপানকাল সমাপ্ত হইলে সে সন্তানসহ মহানবী (সা)-এর দরবারে উপস্থিত হয় এবং মহানবী (সা) সন্তানের লালন-পালনের দায়িত্বভার এক ব্যক্তির উপর অর্পণ করিয়া স্ত্রীলোকটির উপর শাস্তি কার্যকর করেন।
বেত্রাঘাতের শান্তি হইলে নিফাস হইতে পবিত্র হওয়ার পর তাহা কার্যকর হইবে।”
ধারা-১৩৩
যেনার প্রমাণ নিম্নলিখিত উপায়ে যেনার অপরাধ প্রমাণিত হইবে—
(ক) চারিজন বালেগ ও বুড়িমান মুসলিম পু চকে অপরাধীকে তাহাদের একজনের যৌনাঙ্গ অপরনের যৌনাঙ্গে এবি কাইয়া যৌনকার্য করিতে দেখিয়ে বামা পা ধান করিলে;
অথবা () যেনাকারী অথবা যেকারিণী আদালতের সমুখে নেয় চারির বেনার স্বীকারোক্তি করিলে;
অথবা (গ) কোন কুমারী বা স্বামীহীনা নারী গর্ভবতী হইলে এবং সে অবৈধ গর্ভের স্বীকারোক্তি করিলে।
शीशी। যেনাকারী বা যেনাকারিণী কোন পর্যায়ে, এমনকি শান্তি কার্যকর করাকালে তাহার স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করিলে অথবা কোন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে অথবা সাক্ষীগণের সাক্ষ্যে গরমিল হইলে যেনা প্রমাণিত হইবে না; তবে চার-এর অতিরিক্ত সাক্ষীগণের কেহ সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে বা তাহাদের সাক্ষ্য গরমিল হইলে তাহা ধর্তব্য হইবে না।
বিশ্লেষণ
একদিকে যেনার জন্য কঠোর শাস্তি নির্ধারণ করা হইয়াছে এবং অপরদিকে তাহা প্রমাণের পক্ষও কঠিন করা হইয়াছে। যেনায় সাক্ষ্যের বিষয়ে কুরআন মজীনে বলা হইয়াছে;
والتي يأتين الفاحشة من نسائكم فاستشهدوا عليهن
:: a)। “তোমাদের নারীগণের মধ্যে যাহারা যেনা করে তাহাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হইতে চারজন সাক্ষী তলব করিবে” (সূরা নিসা : ১৫)।
والذين يرمون المحصنت ثم لم ياتوا بأربعة شهداء .
“যাহারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি (যেনার) অপবাদ আরোপ করে এবং চাৰিজন সাক্ষী উপস্থিত করে না………” (সূরা নূর : ৪)।
لولا جاءوا عليه بأربعة شهداء .
“তাহারা কেন এই (যেনার অপবাদের ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে নাই…………” (সূরা নূর : ১৩)।
এক ব্যক্তি নিজ স্ত্রীর প্রতি যেনার অপবাদ আরোপ করিলে মহানবী (সা) তাহাকে বলেন :
انت بأربعة يشهدون على صدق مقالتك .
২৯৯
“চারজন সাক্ষী হাযির কর, যাহারা তোমার বক্তব্যের সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে।”
সাদ ইবন উবাদা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলেন :
یارسول الله أرأيت لو وجدت مع امراتي رجلا أمهله
حتى أتي بأربعة شهداء قال نعم .
“হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি মনে করেন, আমি যদি আমার স্ত্রীর সহিত কোন পুরুষকে (যেনায় লিপ্ত) দেখিতে পাই, আমি কি তাহাকে চারজন সাক্ষী নিয়া আসা পর্যন্ত অবকাশ দিব? তিনি বলেন, হাঁ।”
স্বীকারোক্তির মাধ্যমেও যেনা প্রমাণিত হয়। অপরাধী আদালতের সম্মুখে চারবার যেনার স্বীকারোক্তি করিলে তাহার উপর দণ্ড কার্যকর হইবে। ইমাম আবু হানীফা, আহমাদ, আবু লায়লা ও ইসহাক ইবন রাহওয়ায়হ (র)-এর মতে, চারবারের কম সংখ্যক স্বীকারোক্তি করিলে যেনার শাস্তি কার্যকর হইবে না। ইমাম মালেক, শাফিঈ, উছমান আল-বাণ্ডী, হাসান বসরী (র) প্রমুখের মতে, একবারের স্বীকারোক্তিই শাস্তি কার্যকর করার জন্য যথেষ্ট। কোন পর্যায়ে, এমনকি শান্তি কার্যকর করাকালে, অপরাধী তাহার স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করিলে যেনার শান্তি কার্যকর হইবে না।”
একজনের স্বীকারোক্তির উপর বিশ্বাস করিয়া যেমন তাহাকে যেনার শাস্তি দেওয়া যায়, তেমনি তাহার স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের উপর বিশ্বাস করিয়া তাহাকে যেনার শাস্তি হইতে রেহাইও দেওয়া যায়। স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করিলে সন্দেহের সৃষ্টি হইয়া যায় এবং এই অবস্থায় কঠোর দণ্ড দেওয়া যায় না।
বামীহীনা নারীর গর্ত প্রকাশ পাইলে তাহা যেনা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট হইবে কিনা সেই বিষয়ে মতভেদ আছে। হযরত উমর (রা)-এর মতে গর্ভধারণ যেনা প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইমাম মালেক (র) এই মত গ্রহণ করিয়াছেন। কিন্তু হানাফী ফকীহগণসহ অধিকাংশ ফকীহর মতে যেনার মতো একটি কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধের প্রমাণের জন্য কুমারী বা স্বামীহীনা নারীর গর্ভধারণ যথেষ্ট নহে। যেনার শাস্তি কার্যকর করার জন্য উহা নিশ্চিত প্রমাণ অবশ্যই নহে, যেনার অপরাধে লিপ্ত হওয়ার সন্দেহ করা যাইতে পারে মাত্র। তবে অপরাধী চারিবার অবৈধ গর্ভের স্বীকারোক্তি করিলে উহা হদ্দের আওতায় আসিবে। সঙ্গমক্রিয়া ব্যতীত অলক্ষ্যে কোন পুরুষের বীর্যের অল কোন নারীর জরায়ুতে পৌছাইতে পারে এবং তাহার ফলে সে গর্ভবতী হইতে পারে। সুতরাং সন্দেহের অবকাশ থাকা অবস্থায় হদ কার্যকর হইবে না।
মহানবী (সা) বলেন : 4: 19s gaa। “যতদূর সম্ভব হদ্দ কার্যকর করা প্রতিরোধ কর।”
ادفعوا الحدود بالشبهات .
৩০০
“সন্দেহের ক্ষেত্রে হদ কার্যকর করা স্থগিত রাখ।”
ধারা-১৩৪ বল প্রয়োগে যেনা অনুষ্ঠান বা ধর্ষণ (১L JI) (ক) কোন পুরুষ বা নারী বল প্রয়োগ করিয়া পর্যায়ক্রমে কোন নারী বা পুরুষের সহিত সঙ্গম করিলে তাহা যেনা হিসাবে গণ্য হইবে।
(খ) বল প্রয়োগকারী যেনার শাস্তি ভোগ করিবে এবং যাহার উপর বল প্রয়োগ করা হইয়াছে সে শাস্তিযোগ্য হইবে না, যদি বল প্রয়োগ প্রমাণিত হয়।
(গ) আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী ক্ষেত্রবিশেষে নির্দোষ প ক্ষতিপূরণ পাইতে পারে।
বিশ্লেষণ
কোন ব্যক্তিকে যেনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করিতে হইলে সে বেজায় উক্ত কর্ম
কন্তু ত্বক করিয়াছে বলিয়া প্রমাণিত হওয়া জরুরী। জোরপূর্বক অথবা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন ব্যক্তিকে যেনা করিতে বাধ্য করা হইলে সে অপরাধীও সাব্যস্ত হইবে না এবং শাস্তি ভোগ করিবে না। শরীআতের মূলনীতি এই যে, বলপ্রয়োগে কানো কাজের দায়িত্ব হইতে প্রয়োগকৃত ব্যক্তি মুক্ত।” ঝং কুরআন মজীদ যেসব নারীকে জোরপূর্বক যেনায় লিপ্ত হইতে বাধ্য করা হইয়াছে তাহাদের ক্ষমার ঘোষণা করিয়াছে।
ولا تكرهوا فتيتكم على البغاء ان اردن تحصا لتبتغوا عرض الحيوة النيا ومن يكرههن فان الله من بعد اگر اههن غفور رحيم .
“তোমাদের ক্রীতদাসীদেরকে, তাহারা সতীত্ব রক্ষা করিতে চাহিলে, পার্থিব জীবনের ধন-লালসায় ব্যভিচারিণী হইতে বাধ্য করিও না। যে তাহাদেরকে বাধ্য করে, তবে তাহারে উপর জবরদস্তির পর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু” (সূরা নূর : ৩৩)।
“মহানবী (সা)-এর যুগে এক মহিলা অন্ধকারে নামাযে যাওয়ার জন্য বাহির হইল। পথিমধ্যে এক ব্যক্তি তাহাকে ধরিয়া ফেলিল, এবং জোরপূর্বক তাহার সতীত্ব হরণ করিল। মহিলার চিৎকারে চারদিক হইতে লোকজন জড়াে হইল এবং ধর্ষণকারীকে ধরিয়া ফেলিল। মহানবী (সা) ধর্ষণকারীকে রজমের শাস্তি দিলেন এবং স্ত্রীলোকটিকে বলিলেন, তুমি চলিয়া যাও, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করিয়া দিয়াছেন।”
“একটি ক্রীতাস একটি ক্রীতদাসীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করিলে উমর ফারুক (রা) ক্রীতদাসের উপর হদ্দ জারী করেন, কিন্তু ক্রীতদাসীকে শাস্তি দেন নাই, কারণ তাহাকে বলাৎকার করা হইয়াছিল।”।*
৩০১
অনুরূপভাবে কোন পুরুষলোককে বল প্রয়োগে যেনা করিতে বাধ্য করা হইলে সেও বেকসুর খালাস পাইবে। ইহা ইমাম আবু ইউসুফ, মুহাম্মাদ ও শাফিঈ (র)-এর মত। রাজধান, সরকার বা তাহার প্রতিনিধি কোন পুরুষকে জোরপূর্বক যেনা করিতে বাধ্য করিলে যেনাকারীর শাস্তি হইবে না। তবে বল প্রয়োগকারী রাষ্ট্রপ্রধান ব্যতীত অন্য কে হইলে সে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করিবে। কোন কারণে শাস্তি মওকুফ হইলে ধর্ষণকারী কর্তৃক ধর্ষিতাকে মোহরানা প্রদান বাধ্যকর হইবে।
ধারা-১৩ একপক্ষ যেনার স্বীকারোক্তি করিলে এবং অপর পক্ষ অস্বীকার করিলে এক পক্ষ যেনার স্বীকারোক্তি করিলে এবং অপর পক্ষ অস্বীকার করিলে স্বীকায়োক্তিকারীর উপর হদ কার্যকর হইবে এবং অস্বীকারকারী রেহাই পাইবে।
বিশ্লেষণ
যেমন একটি পুরুষ একটি স্ত্রীলোকের সহিত যেনা করিল। পুরুষলোকটি অপরাধ বীকার করিল, কিন্তু স্ত্রীলোকটি অপরাধ অস্বীকার করিল। এই অবস্থায় যে অপরাধ স্বীকার করিয়াছে তাহার উপর হল কার্যকর হইবে এবং যে অপরাধ অস্বীকার করিয়াছে সে শাবিতে রেহাই পাইরে।
“সাহল ইন সাদ (রা) হইতে বর্ণিত। একটি পুরুষলোক মহানবী (সা)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া যেনার স্বীকারোক্তি করিল এবং যেই নারীর সহিত যেন
করিয়াছে তাহার নামও বলিল। রাসূলুন্নাহ (সা) সেই নারীকে ডাকিয়া পাঠাইলেন এবং তাহাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন। সে অপরাধ অস্বীকার করিল। তিনি স্বীকারোক্তিকারী পুরুষলোকটির উপর হদ্দ (দণ্ড) কার্যকর করিলেন এবং স্ত্রীলোকটিকে খালাস দিলেন।”
সাক্ষ্য দ্বারা প্রমাণিত যেনা ও ধর্ষণ ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে কেহ যেনা করিয়া অস্বীকার করিলে সে শাস্তির আওতায় আসিবে না। এমনকি এই অপরাধ প্রকাশিত হইয়া না পড়িলে তাহা গোপন রাখার নির্দেশ হাদীসে রহিয়াছে (দ্র. মাইয় আসলামী সম্পর্কিত হাদীস)।
ধারা-১৩৬
মৃত ব্যক্তির সহিত সঙ্গম
কোন ব্যক্তি মৃত নারীর সহিত সঙ্গম করিলে তাহা যেনা গণ্য হইবে না এবং যেনার শাস্তিও বর্তাইবে না, তবে অপরাধী তাযীরের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে।
বিশ্লেষণ
দুইজন নারী-পুরুষের যৌনকর্মকে যেনার আওতায় ফেলিতে হইলে উভয়ের জীবিত থাকা শর্ত। যে কোন এক পক্ষ মৃত হইলে সঙ্গমক্রিয়া হযোগ্য যেনার
৩০২
আওতায় পড়ে না। তথাপি অপরাধী যাহা করিয়াছে তাহা নিশ্চয়ই একটি জঘন্য অপরাধ। তাই তাযীরের আওতায় আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী সে শাস্তিযোগ্য হইবে। কিন্তু ইমাম মালেক, শাফিঈ ও আমাদের মতে অপরাধীর উপর যেনার শান্তি কার্যকর হইবে।” তাহাদের ও হানাফীগণের মধ্যে যেনার সংজ্ঞায় মতবিরোধের কারণে এই পার্থক্য হইয়াছে।
ধারা-১৩৭ সুস্থ ও বালেগ পাগল বা নাবালেগের সহিত যেনা (ক) সুস্থ জ্ঞানসম্পন্ন বালেগ ব্যক্তি পাগল বা নাবালেগের সহিত সঙ্গম করিলে এই সঙ্গমক্রিয়া হযোগ্য যেনার আওতায় পড়িবে না।
(খ) নাবালেগ ও পাগল ব্যক্তি কোন বালেগা নারীর সহিত তাহার সতিতে সঙ্গম করিলে এই সঙ্গমক্রিয়াও হজযোগ্য যেনার আওতায় পড়িবে না।
(গ) উপধারা (ক) ও (খ)-এ উল্লিখিত অপরাধীগণ হন্দের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে না; তবে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী কোন কোন ক্ষেত্রে বীরের আওতায় শান্তি প্রদান করা যাইতে পারে।
বিশ্লেষণ
উল্লিখিত সঙ্গমক্রিয়া হযোগ্য যেনার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না। তাই ঐসব ক্ষেত্রে যেনার শাস্তি কার্যকর হইবে না। কিন্তু তথাপি উহা অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাৰীয়ের আওতায় আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী অপরাধী শান্তির দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।”
ধারা-১৩৮
পারে সগম কোন ব্যক্তি নিজ স্ত্রী ব্যতীত কোন নারীর পারে সঙ্গম করিলে তাহা যেনার আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে না, তাযীরের আওতায় উক্ত কর্ম শাস্তিযোগ্য হইবে।
ধারা-১৩৯
লাওয়াতাত () বা সমকামিতা (ক) পুরুষের সহিত পুরুষের সঙ্গমকে পাওয়াতাত’ (সমকামিতা) বলে।
(খ) পাওয়াতাত’-এ লিপ্ত অপরাধী তাবীরের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে; কিন্তু বারবার উক্ত কার্য সংঘটন রী মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ভোগ করিবে, সে বিবাহিত বা অবিবাহিত যাহাই হউক।
বিশ্লেষণ
হযরত লুত (আ)-এর জাতির মধ্যে এই অপকর্ম ব্যাপকভাবে হড়াইয়া পড়িলে এবং নবী কর্তৃক তাহাদেরকে সতর্ক করা সত্ত্বেও তাহারা উহা হইতে বিরত না হইলে
৩০৩
অবশেষে আল্লাহ তা’আলা তাহাদেরকে সমূলে ধ্বংস করিয়া দেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন :
من وجدتموه يعمل عمل قوم لوط فاقتلوه الفاعل
• ২ Jgs, “তোমরা যাহাদেরকে সমকামিতায় লিপ্ত পাইবে তাহাদের উভয়কে হত্যা কর।”
সমকামিতাও যেহেতু যেনার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না, তাই এই প্রকার অপরা ক্ষেত্রেও যেনার শাস্তি প্রযোজ্য হইবে না, কিন্তু অপরাধী তাযীরের আওতায় আদালতের সুৰিৰেচনা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হইবে। উক্ত কর্ম অপরাধীর অভ্যাসে পরিণত হইলে, সে বিবাহিত হউক বা অবিবাহিত, মৃত্যুদণ্ড ভোগ করিবে।
হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হইয়াছে যে, কতা ও ভীতি প্রদর্শনের জন্য মহানবী (সা) মৃত্যুদণ্ডের সতর্কবাণী উচ্চারণ করিয়াছেন। অবশ্য ইমাম অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান আবশ্যক মনে করিলে তাহা করিতে পারেন।*
ধারা-১৪০
পর সহিত সঙ্গম পর সহিত মজিনা বেলার গলার আওতায় পড়বে না এবং পতর সহিত সমকার পর ও র বর মা; তবে অপরাধ আদালতের বিবেচনা
অনুযায়ী তাযীরের আওতায় শাস্তি ভোগ করিবে।
বিশ্লেষণ
পশুর সহিত সঙ্গম যেনার আওতায় না পড়িলেও উহা একটি অপরাধকর্ম। এই সম্পর্কে মহানবী (সা) কঠোরবাণী উচ্চারণ করিয়াছেন :
من اي بهيمة فاقتوه واقتها معه .
“যে ব্যক্তি পশুর সহিত সঙ্গম করিল তোমরা তাহাকে হত্যা কর এবং তাহার সহিত পশুটিও হত্যা কর।”
“ইবন আব্বাস (রা) বলেন, যে ব্যক্তি পশুর সহিত সঙ্গম করে তাহার উপর হদ্দ কার্যকর হইবে না।”
পশুর সহিত সঙ্গমক্রিয়া যেন না হইলেও এবং হদ্দযোগ্য না হইলেও উহা একটি দৃণিত অপরাধ। তাই অপরাধী আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী তাযীরের আওতায় শাস্তি ভোগ করিবে। মহানবী (সা) কঠোরভাবে সতর্ক করার জন্য হত্যার কথা বলিয়াছেন “
১৪
ধারা-১৪১
যেনার সন্দেহ (ক) কোন নারী-পুরুষ বিশেষ কারণে নিজদিগকে স্বামী-স্ত্রী ধারণা করিয়া পরশব সঙ্গম করিলে তাহা যেনার আওতায় পড়িবে না।
(খ) উপধারা (ক)-এ বর্ণিত ধারণা তাহাদের কাজের মধ্যেও হইতে পারে এবং আকদ (বিবাহ বন্ধন)-এর মধ্যেও হইতে পারে।
(গ) ফাসিদ বা বাতিল বিবাহের আওতায় সঙ্গমক্রিয়াও হজযোগ্য যেনার আওতায় পড়িবে না।
(ঘ) উপধারা (ক), (খ) ও (গ)-এ বর্ণিত ক্ষেত্রে তাহার বা তাহাদের উপর যেনায় শান্তি কার্যকর হইবে না, তবে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী সে বা তাহারা তাযীরের আওতায় দণ্ডিত হইবে।
বিশ্লেষণ
কাজের মধ্যে সন্দেহ–যেমন কোন ব্যক্তি তাহার তিন তালাক দেওয়া স্ত্রীর সহিত তাহার ইদ্দতকালে সঙ্গম করিল। সে সন্দেহ করিয়াছিল যে, স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেও তাহার ইদ্দতকালে তাহার সহিত সঙ্গম করা বৈধ।
আকদ-এর মধ্যে সন্দেহ : যেমন নিষিদ্ধ শ্রেণীর কোন নারীকে বিবাহ করিয়া তাহার সহিত সঙ্গম। এই উভয় ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী কেহই যেনার শাস্তি ভোগ করিবে
। তবে ক্ষেত্রবিশেষে সন্দেহের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করিয়া আদালত প্রয়োজন মনে করিলে অপরাধীদ্বয়কে তাযীরের আওতায় শাস্তি দিতে পারে।”
ধারা-১৪২ তিন তালাকপ্রাপ্তার সহিত ইদ্দতকালে সঙ্গম (ক) কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে শরীআত মোতাবেক তিন তালাক দেওয়ার পর, তাহার ইদ্দত পালনকালে তাহার সহিত সঙ্গম করা নিবি জানিয়াও, সম করিলে তাহা যেনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং সে যেনার শাস্তি ভোগ করিবে।”
(খ) সে যদি বলে যে, উপধারা (ক)-এ বর্ণিত অবস্থায় সম করা হারাম তাহা তাহার জানা ছিল না, তবে উক্ত সঙ্গম যেনা হিসাবে গণ্য হইবে না এবং তাহার উপর হদ্দ কার্যকর হইবে না; তবে আদালত বিবেচনা করিলে তাহাকে তাষীরের আওতায় শাস্তি দিতে পারে।
ধারা-১৪৩ ইদ্দতের পর তিন তালাকপ্রান্তর সহিত সম কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে আইনসিদ্ধভাবে তিন তালাক দেওয়ার এবং ইন্দাত শেষ হইলে পর আইনসিদ্ধ পন্থা ব্যতীত তাহাকে স্ত্রীতে ফিরাইয়া লইলে, অতঃপর
৩০৫
তার সহিত সা করিলে উক্ত সমক্রিয়া যেনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং
বামী-উতরে যেনার শক্তি ভোগ করি।
বিশে। তিন তালাক দেওয়ার পর স্বামী-স্ত্রীর বৈবাহিক বন্ধন সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হইয়া যায়। এই অবস্থায় তাহারা সঙ্গম করিলে সকল ইমামের মতে তাহা যেনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং তাহাদের উপর যেনার শাস্তি বলবৎ হইবে।
ধারা-১৪৪
মাতালের সম মাতাল ব্যক্তি কোন নারীর সহিত সঙ্গম করিলে তাহা যেনার আওতায় পড়িবে এবং অপরাধী যেনার শাস্তি ভোগ করিবে।
ধারা-১৪৫
শত সম শতমক্রিয়া অনুষ্ঠিত হইলে তাহা যে গণ্য হইবে না এবং সঙ্গমকামীদ্বয় কোমরূপ শাড়ি তোণ করিবে না।
বিলে। যেমন দুই ভ্রাতা দুই সহােদর ভগ্নিকে বিবাহ করিল। রাত্রিবেলা ভুলবশত বাসরঘরে একের স্ত্রীকে অপরের সহিত দেওয়া হইল এবং সকাল বেলা এই ভুল ধরা পড়িল। এই ক্ষেত্রে সঙ্গমক্রিয়া যেনা গণ্য হইবে না এবং সঙ্গমকারীদ্বয় শাস্তির সম্মুখীন হইবে না। মহান আল্লাহর বাণী :
وليس عليكم جنا فيما أخطأتم به ولكن اتعمدت
.
“এই ব্যাপারে তোমরা কোনরূপ ভুল করিলে তোমাদের কোন অপরাধ নাই, কিন্তু তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকিলে অপরাধ হইবে” (সূরা আহযাব : ৫)। মহানবী (সা) বলেন :
رفع عن أمتي الخطاء والتسيان وما استكرهوا عليه .
“আমার উম্মতকে তাহাদের ভুলত্রুটি, ভুলে যাওয়া এবং জবরদস্তিমূলকভাবে করানো কাজের দায় হইতে অব্যাহতি দেওয়া হইয়াছে।”
খালা-১৪৬
কাযা যেনার অপৰাদ (1) (ক) কোন ব্যক্তির বিয়ে যেনা, অপবাদ আরোপ করাকে ‘কাযা’ বলে।
৩০৬
(খ) কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি অপর কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান ব্যক্তির বিরুদ্ধে যেনার অভিযোগ উত্থাপন করিয়া তাহা চারজন বালেগ ও বুদ্ধিমান মুসলিম পুরুষ সাক্ষীর দ্বারা প্রমাণ করিতে না পারিলে উক্ত অভিযোগ ‘কা’ হিসাবে গণ্য হইবে এবং অভিযোগকারীর দণ্ড হইবে আশি (৮০) বেত্রাঘাত।
বিশ্লেষণ
অপবাদ আরোপকারী চারজন সাক্ষী দ্বারা তাহার উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণ করিতে না পারিলে সে আশি বেত্রাঘাত ভোগ করিবে। মহান আল্লাহ বলেন :
والذين يرمون المحملت ثم لم يأتوا بأربعة شهداء فاجلدوهم منين جلد و تقوا لهم شهادة أبدا وأولئك
هم الفسقون .
“যাহারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি (যেনার) অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না তাহাদেরকে আশিটি কোড়া’ মার এবং কখনও তাহাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করিও না, তাহারা ফাসেক” (সূরা নূর :৪)।
عن عائشة قالت لما نزل محذري قام النبي صلى الله عليه وسلم على المنبر فذكر ذلك ولا تعني القران فلما نزل من المنبر امر بالرجلين والمراة فضربوا حدتهم .
“আয়েশা (রা) বলেন, আমার পবিত্রতার বর্ণনা সম্বলিত আয়াত নাযিল হইলে পর মহানবী (সা) মিম্বরে দাঁড়াইলেন এবং ইহার উল্লেখ করিলেন এবং কুরআনের আয়াত পাঠ করিলেন। তিনি মিম্বর হইতে অবতরণ করিয়া দুইজন পুরুষ ও একটি স্ত্রীলোক সম্পর্কে নির্দেশ দিলে লোকেরা তাহাদের উপর হদ্দ কার্যকর করিল।
দোষারোপকারী নাবালেগ হইলে তাহার উপর হদ্দ কার্যকর না হইলেও আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী তাযীরের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে। নাবালেগ, পাগল ও চরিত্রহীন নারী ও পুরুষের প্রতি যেনার অপবাদ আরোপ করিলে তাহাও কাফের আওতায় শাস্তিযোগ্য হইবে না। জোরপূর্বক কাহাকেও যেনার অপবাদ আরোপ করিতে বাধ্য করা হইলে সেই ক্ষেত্রেও কাযাফ.এর শাস্তি আরোপিত হইবে না, যদি বলপ্রয়োগ প্রমাণিত হয়। পিতা বা দাদার উপর যেনার অপবাদ আরোপ করিলে সেই ক্ষেত্রেও কাফ-এর শান্তি আরোপিত হইবে না?
ধারা-১৪৭
লিআন (5) (ক) স্বামী যদি মীর বিরুদ্ধে যেনার অভিযোগ উত্থাপন করে এবং হার অনুকূলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাক্ষী বিদ্যমান না থাকে অথবা সে যদি খ্রীর গর্ভস্থ
সন্তান তাহার ঔরসজাত মহে বলিয়াদাবি করে, তবে এই অবস্থায় তাহাদের উভয়কে বিশেষ পায় আদালতের সামনে যে শপথ করিতে হয় তাহাকে লিআন’ বেল।
(খ) ৩ (ক)-এ বর্ণিত বিশেষ প’ নিরাপ ১. স্বামী নিম্নোক্ত বাক্যে চারির শপথ করিবে।
“আমি আল্লাহর নামে শপথ করিয়া সাক্ষ্য দিতেছি যে, আমি এই নারীর বিরুদ্ধে যেনার যে অভিযোগ উত্থাপন করিয়াছি সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চয়ই সত্যবাদী”; পঞ্চমবারে অভিযুক্তার প্রতি ইশারা করিয়া বলিবে, “আমি এই নারীর বিরুদ্ধে যেনার যে উত্থাপন অভিযোগ করিয়াছি সেই ব্যাপারে আমি মিথ্যাবাদী হইলে আমার উপর আবাহর অভিশাপ পতিত হউক।”
২. যীও নিম্নোক্ত বাক্যে চারিবার শপথ করিবে।
“আমি আল্লাহর নামে শপথ করিয়া সাক্ষ্য দিতেছি যে, এই ব্যক্তি আমার প্রতি যেনার যে অপবাদ আরোপ করিয়াছে সেই ব্যাপারে সে নিয়ই মিথ্যাবদীদের অন্তর্ভুত”; পঞ্চমবারে বিলবে : “এই ব্যক্তি আমার প্রতি যেনার যে অপবাদ আরোপ করিয়াছে সেই ব্যাপারে সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হইলে আমার উপর আল্লাহর অভিশাপ পতিত হউক।”
(গ) মী শপথ করিতে অস্বীকার করিলে তাহাকে হাজতবাসে আটক রাখা হইবে যাবত না সে শপথ করে অথবা তাহার উথাপিত অভিযোগ মিথ্যা বলিয়া স্বীকার করে।
(ঘ) স্বামী তাহার অভিযোগ মিথ্যা বলিয়া স্বীকার করিলে সে ধারা (১৪৬) মোতাবেক (কাফ-এর শাস্তি ভোগ করিবে।
(ঙ) স্ত্রী শপথ করিতে অস্বীকার করিলে তাহাকেও হাজতবাসে আটক রাখা হইবে যাবত না সে শপথ করে অথবা তাহার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য বলিয়া স্বীকার করে।
(চ) উভয়ে লিঅন করার পর আদালত তাহাদের বিবাহ বাতিল ঘোষণা করিবে এবং তাহারা আর কখনও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে পারিবে না?
তবে শর্ত থাকে যে, স্বামী তাহার অভিযোগ মিথ্যা বলিয়া স্বীকার করিলে ধারা (১৪৬)মোতাবেক শাস্তিভোগের পর তাহারা পুনর্বিবাহে আবদ্ধ হইতে পারিবে।
(ছ) ী তাহার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য বলিয়া স্বীকার করিলে এবং সে ‘মুহান’ হইলে ধারা (১৪৬) মোতাবেক এবং গায়র মুহসান হইলে ধারা (১২৯) মোতাবেক শাস্তি ভোগ করিবে।
(ক) লিমের সন্তান মাতার সহিত যুক্ত হইবে এবং মাতা ও সন্তান পরস্পরের ওয়ারিস হইবে।
বিশ্লেষণ
লিআন সম্পর্কে কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে :
৩০৮
والذين يرون ازواجهم ولم يكن لهم شهداء الأ أنفسهم شهادة أحدهم اربع شهدث بالله انه لمن الصدقين . والخامسة أن لعنة الله عليه ان كان من الكذبين . ويذروا عنها العذاب أن تشهد اربع شهدت بالله انه لمن الكذبين . والخامسة أن غضب الله عليها ان كان من الصدقين .
“যাহারা নিজেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে যেনার অভিযো উত্থাপন করে, অথচ নিজেরা ব্যতীত তাহাদের (প্রয়োজনীয় সংখ্যক) সাক্ষী নাই, তাহাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হইবে যে, সে (স্বামী। আল্লাহর নামে চারিবার শপথ করিয়া বলিবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী; এবং পঞ্চমবারে বলিবে, সে মিথ্যাবাদী হইলে তাহার নিজের উপর আল্লাহর অভিশাপ পড়িবে। তবে স্ত্রীর শান্তি রহিত হইবে যদি সে (স্ত্রী) আল্লাহর নামে চারিবার শপথ করিয়া সাক্ষ্য দেয় যে, তাহার স্বামী মিথ্যাবদী এবং পঞ্চমবারে বলে, তাহার স্বামী সত্যবাদী হইলে তাহার নিজের উপর আল্লাহর অভিশাপ পড়িবে” (সূরা নূর : ৬-৯)।
স্বামী-স্ত্রী যে কোন একজনের পক্ষ হইতে আদালতে লিআনের মোকদ্দমা দায়ের হইতে পারে। স্বামীই প্রথমে আদালতের সামনে শপথ করিবে। তাহার শপথের পর স্ত্রীর শপথ করা বাধ্যতামূলক হইয়া যায়। স্বামী নিম্নোক্ত বাক্যে চারিবার শপথ করিবে।
“আমি আম্লাহর নামে শপথ করিয়া সাক্ষ্য দিতেছি যে, আমি এই নারীর বিরুদ্ধে যেনার যে অভিযোগ উত্থাপন করিয়াছি সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চয়ই সত্যবাদী, পঞ্চমবার অভিযুক্তার প্রতি ইশারা করিয়া বলিবে, “আমি এই নারীর বিরুদ্ধে যেনার যে অভিযোগ উত্থাপন করিয়াছি সেই ব্যাপারে আমি মিথ্যাবাদী হইলে আমার উপর আল্লাহর অভিশাপ পতিত হউক।”,
স্বামী শপথ করিতে সম্মত না হইলে আদালত তাহাকে বন্দী করিয়া রাখিবার নির্দেশ দিবে যাবত না সে শপথ করে অথবা তাহার উত্থাপিত অভিযোগ চারিবার মিথ্যা বলিয়া স্বীকার করে। অভিযোগ মিথ্যা বলিয়া স্বীকার করার ক্ষেত্রে সে কাযাফ (যেনার অপবাদ আরোপ)-এর দপ্তরূপ আশি বেত্রাঘাত ভোগ করিবে।”
ও নিমোক বাক্যে চারির শপথ করিবে, “আমি আৱাহর নামে শপথ করিয়া সাক্ষ্য দিতেছি যে, এই ব্যক্তি আমার প্রতি যেনার যে অপবাদ আরোপ করিয়াছে সেই ব্যাপারে সে নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত”; পঞ্চমবারে বলিবে, “এই ব্যক্তি আমার প্রতি যেনার যে অপবাদ আরোপ করিয়াছে সেই ব্যাপারে সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হইলে আমার উপর আল্লাহর অভিশাপ পতিত হউক।
খ্রীলোকটি শপথ করিতে সম্মত না হইলে আদালত তাহাকে বন্দী করিয়া রাখিবার নির্দেশ দিবে, যাবত না সে শপথ করে অথবা তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ
৩০
চারিবার সত্য বলিয়া স্বীকার করে। অভিযোগ সত্য বলিয়া স্বীকার করিলে এবং সে মূসান’ বলে মম’-এর সৎ এবং গায়র মুহাম’ হইলে এক শত বেত্রাঘাত ভোগ করিবে।” ইমাম মালেক, শাফিঈ ও আহমাদের মতে, লিআন’ করিতে অসম্মত হইলে অপরাধীকে বন্দী করার প্রয়োজন নাই, দণ্ড দেওয়ার জন্য তাহার শপথ করিতে এমপিই যথেষ্ট *
লিআন সম্পর্কিত হাদীস : উআইমির ইবন আশকার আল-আজলানী (রা) মহানবী (সা)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া বলিলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি মনে করেন, যদি কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীর সহিত কোন ব্যক্তিকে অপকর্মে লিপ্ত দেখিতে পায় তবে সে কি তাহাকে হত্যা করিবে এবং আপনারা হত্যাকারীকে হত্যা করিবেন অথবা সে কি করিবে? রাসূল্লাহ (সা) বলিলেন, তোমার ও তোমার স্ত্রীর বিষয়ে কুরআনের আয়াত নাযিল হইয়াছে। তুমি যাও এবং তাহাকে লইয়া আস। সাহল (রা) বলেন, তাহারা দুইজনে লিআন করিল এবং আমরা তখন রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। উভয়ের লিআন সমাপ্ত হইলে উআইমির (রা) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাহাকে স্ত্রী হিসাবে রাখিয়া দিলে আমি তাহার প্রতি মিথ্যা আরোপকারী সাব্যস্ত হইব। অতঃপর তিনি মহানবী (সা)-এর নির্দেশদানের পূর্বেই তাহাকে তিন তালাক দেন।
হিলাল ইবন উমায়্যা (রা) তাঁহার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেনার অভিযোগ উত্থাপন করিলে রাসূলুৱাহ (সা) বলেন, প্রমাণ পেশ কর, অন্যথায় পিঠে বেত্রাঘাত ভোগ কর, (২) J, L;)। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার কোন ব্যক্তি তাহার স্ত্রীর সহিত অপর ব্যক্তিকে অপকর্মে লিপ্ত দেখিয়া সে কি প্রমাণ খোঁজ করিতে যাইবে? মহানবী (স) বারবার বলিতে থাকিলেন, “প্রমাণ, অন্যথায় তোমার পিঠে বেত্রাঘাত।” হিলাল (রা) বলিলেন, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠাইয়াছেন, আমি নিশ্চয়ই সত্যবাদী। অতঃপর মহানবী (সা)-এর উপর লিআন সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়। প্রথমে হিলাল (রা) নির্দিষ্ট পন্থায় পাঁচবার শপথ করেন, অতঃপর তাহার স্ত্রী :
ধারা-১৪৮
লিআনকামীর যোগ্যতা কোন ব্যক্তি বালেগ, বুদ্ধিমান, ন্যায়পরায়ণ ও মুসলিম হইলেই সে লিআন করিতে পারিবে।
বিশ্লেষণ
নাবালেগ, দুর্নীতিবাজ ও অমুসলিম ব্যক্তিরা লিআন করার যোগ্য নহে। অর্থাৎ যাহারা সাক্ষ্য আইনের অধীনে সাক্ষীর যোগ্য বিবেচিত হয় কেবল তাহারাই লিআন
৩১০
করিতে পারে। এমনকি আহলে কিতাব স্ত্রীও লিআন করার যোগ্য নহে। কিন্তু ইমাম শাফিঈ (র)-এর মতে যে কোন বালেগ ও বুদ্ধিমান দম্পতি লিআন করিতে পারে, তাহারা মুসলিম, অমুসলিম যাহাই হউক। ইমাম মালেক ও আহমাদ (র)-এর মতও তাই ৫৪
যেনা ও কাফের সাক্ষী
الشهادة على الزنا والقذف)
ধারা-১৪৯
সাক্ষীর শর্তাবলী চারিজন বালেগ, বুদ্ধিমান, বাকশক্তিসম্পন্ন ও ন্যায়পরায়ণ মুসলিম পুরুষ যদি যুগপৎভাবে বাচনিক সাক্ষী দেয় যে, তাহারা একত্রে একই সময়ে ও একই স্থানে কে অভিযুক্ত পুরুষকে অতিতা নারীর জননেন্দ্রিয়ে তাহার পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাইয়া সঙ্গম করিতে দেখিয়াছে, তাহা হইলে যেনা প্রমাণিত হইবে।
বিশ্লেষণ
যেনা প্রমাণিত হওয়ার জন্য সাক্ষীর সংখ্যা চারিজন হওয়া অত্যাবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেন :
والتي يأتين الفاحشة من نسائكم فاسنشهدوا عليهن
“তোমাদের নারীদের মধ্যে যাহারা যেনা করে, তাহাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হইতে চারিজন সাক্ষী তলব করিবে” (সূরা নিসা : ১৫)।
والذين يرمون المحصنت ثم لم يأتوا بأربعة شهداء .
“যাহারা সাধ্বী নারীর প্রতি (যেনার) অপবাদ আরোপ করে এবং চারিজন সাক্ষী উপস্থিত করে না…………” (সূরা নূর : ৪)।
لو لا جاءوا عليه بأربعة شهداء .
“তাহারা কেন এই ব্যাপারে চারিজন সাক্ষী উপস্থিত করে নাই” (সূরা নূর : ১৩)।
হিলাল ইবন উমায়্যা (রা) তাঁহার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেনার অভিযোগ উত্থাপন করিলে মহানবী (সা) তাঁহাকে বলিলেন : “চারিজন সাক্ষী (আন), অন্যথায় তোমার পিঠে বেত্রাঘাত (পড়িবে)।”
সাদ ইবন উবাদা (2) মহানবী (স)-কে বলিলেন, আমি যদি আমার স্ত্রীর সহিত কোন পুরুষলোককে (যেনায় লিপ্ত) পাই, তাহা হইলে ‘চারিজন সাক্ষী হাযির করা পর্যন্ত কি তাহাকে অবকাশ দিব? মহানবী (সা) বলিলেন : হাঁ
৩১১
অতএব সাক্ষীর সংখ্যা চার-এর কম হইলে যেনা প্রমাণিত হইবে না, এই বিষয়ে উম্মতের সকল যুগের ফকীহগণের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
যেমার সাক্ষর করেও সা আইনের সাধারণ শর্তাবলী প্রযোজ্য হইবে। যেমন সাক্ষীগণকে ন্যায়পরায়ণ মুসলিম হইতে হইবে। এই বিষয়ে ফকীহগণের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে (কতিপয় ব্যতিক্রম ছাড়া)। মহান আল্লাহ বলেন :
واستشهدوا شهيدين من رجالكم.
“তোমাদের পুরুষদের মধ্য হইতে দুইজন ন্যায়পরায়ণ শোককে সাক্ষী রাখ” (সূরা তালাক : ২)।
واشهدوا ذوي عدل منكم .
“তোমাদের মধ্য হইতে দুইজন ন্যায়পরায়ণ পুরুষলোককে সাক্ষী রাখ” (সূরা তালাক : ২)।
মহানবী (সা) বলেন :
خائنة ولا زان ولا زانية ولا ني
لا تجوز شهادة خائن و
• Is এ “বিশ্বাসঘাতক ও বিশ্বাসঘাতকিনী, যেনাকারী ও যেনাকারিণী এবং কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার শত্রুর সাক্ষ্য বৈধ নহে।”
অন্ধ ব্যক্তির সাক্ষীও গ্রহণযোগ্য নহে। কারণ বাদী ও বিবাদীকে স্বচক্ষে দেখিয়া তাহাদের প্রতি ইঙ্গিত করিয়া সাক্ষ্য প্রদান করা তাহার পক্ষে সব নহে। অনুরূপভাবে বােবার সাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য নহে। কারণ সে ইশারা-ইঙ্গিত ব্যতীত সরাসরি সাক্ষ্য প্রদান করিতে অক্ষম। কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাহার শত্রুর সাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য নহে, যদি এই শক্রতা ধন-সম্পদ, জায়গা-জমি ইত্যাদি পার্থিব বিষয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট হয়। তবে কোন ব্যক্তি পাপাচারী, প্রতারক, ধোঁকাবাজ, বিশ্বাসঘাতক ইত্যাদি হওয়ার কারণে কেহ যদি তাহার প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হয় তবে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শেষোক্ত ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য।
যেনার ক্ষেত্রে সাক্ষীর অতিরিক্ত শর্তাবলী নিম্নরূপ : ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হইয়াছে যে, যেনার ক্ষেত্রে সাক্ষীগণের সংখ্যা চার’-এর কম হইতে পারিবে না। সাক্ষীগণের সকলকেই পুরুষ’ হইতে হইবে। এই বিষয়ে চার মাযহাবের ফকীহগণ একমত “ এই ক্ষেত্রে নারীর সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নহে। তবে অপরাধী মুহসান কিনা এই ক্ষেত্রে পুরুষের সহিত নারীর সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য। অবশ্য আতা ইবন ইয়াসার (র) ও হাম্মাদ (র) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁহারা তিনজন পুরুষের সহিত দুইজন নারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন। ইন হাযম (র) এই ক্ষেত্রে পুরুষের সহিত নারীর বা তাহাদের এককভাবে সাক্ষ্য প্রদান বৈধ মনে করেন, তবে সেই
৩১১
ক্ষেত্রে প্রত্যেক পুরুষ সাক্ষীর পরিবর্তে নারী সাক্ষীর সংখ্যা দুইজন হইতে হইবে।
চারিজন সাক্ষীর মধ্যে অভিযুক্তার স্বামীও অন্তর্ভুক্ত থাকিলে তাহার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হইবে।
সাক্ষীগণ সশরীরে, স্বচক্ষে এবং সরাসরি অপরাধীদ্বয়কে একের পুরুষাঙ্গ অপরের যৌনাঙ্গে প্রবেশ করাইয়া অপরাধকর্ম করিতে দেখিলেই তাহাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হইবে। এই ক্ষেত্রে অপরের নিকট ঘটনার বিবরণ শ্রবণপূর্বক সাক্ষ্য দিলে তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে না।*
সাক্ষীগণকে একই সময়ে আদালতে হাযির হইয়া পরপর সাক্ষ্য দিতে হইবে। একজন আজ, দ্বিতীয়জন ইহার পরের দিন-এইভাবে সাক্ষ্য দিলে তাহা গ্রহণযোগ্য হইবে না। এই বিষয়ে হানাফী, মালিকী ও হাম্বলী ফকীহগণ একমত ॥৬৭ সময়, স্থান ও অপরাধীদ্বয় সম্পর্কে তাহাদের সকলের সাক্ষ্যের মধ্যে পূর্ণ সামঞ্জস্য থাকিতে হইবে। এইসব বিষয়ে মতভেদের ক্ষেত্রে তাহাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হইবে না।
ধারা-১৫০ সাক্ষীর অযোগ্যতা, সাক্ষ্য প্রত্যাহার, সাক্ষ্যে বৈপরীত্য,
চার-এর কম বা বেশি সংখ্যক সাদী। (ক) রায়দানের পূর্বে অথবা পরে এবং শান্তি কার্যকর করার পূর্বে কোন সাক্ষীর অযোগ্যতাপ্রমাণিত হইলে সকল সাক্ষী ধারা (১৪৬) মোতাবেক দণ্ড লোগ করিবে।
(খ) শাস্তি কার্যকর করার পর সাক্ষীর অযোগ্যতা প্রমাণিত হইলেও
১. বেত্রণখের ক্ষেত্রে : ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে বায়তুলমাল হইতে আরশ’ প্রদান বাধ্য হইবে;
২. মজম-এর ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে বায়তুলমাল হইতে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।
(গ) হদ কার্যকর হওয়ার পূর্বে কোন সাক্ষী তাহার সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে সকল সাফী ধারা (১৪৬) মোতাবেক গত জােগ করিবে।
(ঘ) হদ কার্যকর হওয়ার পর কোন সাক্ষী তাহার সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে কেবল সাক্ষ্য প্রত্যাহারকারী ধারা (১৪৬) মোতাবেক দণ্ডিত হইবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে এক-চতুর্থাংশ দিয়াত প্রদান তাহার উপর বাধ্যকর হইবে।
(৩) ঘটনার স্থান, কাল ও অপরাধীকে সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সাক্ষীগণের সালে বৈপরীত্য দেখা দিলে এবং সাক্ষীর মধ্যে ‘গ’ বলে তারা গো সাব্যস্ত হইবে না।
(চ) এক বা একাধিক সাক্ষী জোরপূর্বক যেনা সযেটিত হওয়ার এবংঅবশি স্বেচ্ছায় যেনা সংঘটিত হওয়ার সাক্ষ্য দিলে সাক্ষীগণ গোখী সাব্যস্ত হইবে না।
৩১৩
(খ) সার সংখ্যা চার’-এর কম হইলে সকল সা ধারা (১৪৬) মোতাবেক গত ভোগ করবে।
(জ) চায়-এর অতিরিক্ত সাক্ষীগণের সাক্ষ্যে বৈপরীত্য দেখা দিলে, তাহাদের হে সা প্রত্যাহার করিলে বা সাক্ষ্য প্রদানের অযোগ্য ঘোষিত হইলেও যেন। প্রমাণিত হইবে।
বিশ্লেষণ
আদালতে চারজন সাক্ষী উপস্থিত হইয়া অপরাধ সংঘটিত হওয়ার অনুকূলে সাক্ষ্য প্রদান করার পর কোন সাক্ষী তাহার সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে যেনা প্রমাণিত হইবে না এবং সাক্ষীগণের সকলে ‘কাযাফ’-এর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে। এই বিষয়ে হানাফী, মালিকী ও শাফি ফকীহগণ একমত।
কোন সাক্ষী সাক্ষ্যদানের অযোগ্য ঘোষিত বা সাব্যস্ত হইলে (যেমন কোন সাক্ষ সমাজে পাপাত্মা বলিয়া কুখ্যাত অথবা ইতিপূর্বে কাযাফ-এর ৭ ভোগ কর। সকল সাক্ষী কাযাফ’-এর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে, যদি রায়দান-এর পূর্বে বা পরে এবং শাস্তি কার্যকর করার পূর্বে এই অযোগ্যতা ধরা পড়ে। কিন্তু বেত্রদণ্ডের হ% কার্যকর করার পর অযোগ্যতা ধরা পড়িলে আবু হানীফা (র)-এর মতে সাক্ষীগণ কাযা’..’। শাস্তি ভোগ করিবে এবং আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (র)-এর মতে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে বায়তুলমাল হইতে ‘আরশ’ প্রদান বাধ্যকর হইবে। রজমের পর অযোগ। এব: পড়িলে সাক্ষীগণের উপর হল কার্যকর হইবে না; বরং নায়ল-মাল হইতে দিত প্রদান বাধ্যকর হইবে।
এক বা একাধিক সাক্ষী হ’ কার্যকর হওয়ার পূর্বে তাহ{ বা তাহাদের সাক্ষ্য প্রত্যাহার করিলে সকল সাকী কাযাফ’-এর শাস্তি ভোগ করবে। কিন্তু ইমাম মুহম্মদ (র)-এর মতে শুধু সাক্ষ্য প্রত্যাহারকারী কাযাফ’-এর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে, তবে রায়দানের পূর্বে তাহা প্রত্যাহার করা হইলে সকলকে কাযাফ-এর দণ্ড ভোগ করি। হইবে। হ% কার্যকর করার পরে কোন সাক্ষী তাহার সাক্ষ্য প্রত্যাহার করলে সে কাযাফ’-এর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং এক-চতুর্থাংশ ‘দিয়াত’ প্রদানও তাহার উপর বাধ্যকর হইবে।
ঘটনার স্থান ও সময়ের ব্যাপারে সাক্ষীগণের মধ্যে মতভেদ হইলে এবং তাহ সংখ্যা চারজন’ হইলে এই ক্ষেত্রে তাহাদের উপর ‘হ’ কার্যকর হইবে না। কারণ সাক্ষীর সংখ্যা চার” পূর্ণ হইয়াছে, শুধুমাত্র তাহাদের সাক্ষ্যের ত্রুটির কারণে অপরাধ প্রমাণিত হয় নাই। অনুরূপভাবে অপরাধীকে শনাক্ত করার ক্ষেত্রেও মতভেদ হইলে সাক্ষীগণ শান্তি ভোগ করিবে না।
অনুরূপভাবে দুইজনে সাক্ষ্য দিল যে, যেনা জোরপূর্বক সংঘটিত হইয়াছে এবং অপর দুইজন সাক্ষ্য দিল যে, স্বেচ্ছায় ও সম্মতিতে যেনা সংঘটিত হইয়াছে, এই ক্ষেত্রেও সাক্ষীগণ দপ্তযোগ্য হইবে না।
তথ্যনির্দেশিকা ১. ফাতাওয়া আলমগিরী, ২, পৃ. ১৪৩ :
الزنا هو فضاء الرجل شهوته محرما في قبل المرأة الخالي عر الملكين وشبهنهما
وشبهة الاشتباه او تمكين المراة المثل هذا الفعل .
বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩৩-৪ :
اما الزنا فهو اسم للوطء الحرام في قبل المرأة الحية في حالة الاخبار العاري عن
حقيقة النكاح وشبهته .
بد و
ع
আরও দ্র. ফাতহুল কাদীর, ৫খ, পৃ. ৩০-৩১। আবু দাউদ, কিতাবুস-সুন্নাহ, বাব ১৬, হাদীস নং ৪৬৯০। বুখারী ও মুসলিমের বরাতে মিশকাতে, কিতাবুল ঈমান, মং ৪৮, নূর মোহাম্মদ আজমী অনূদিত। আবু দাউদ, কিতাবুল হুদূদ, বাব ফির-
রাম, নং ৪৪১৫; মুসলিম, কিতাবুল হুদূদ, বাব হাদ্দিয যিনা, নং ১৬৯০; তিরমিযী, কিতাবুল হজুদ, বাবুর রাজম আলাস সায়্যিব, নং ১৪৩৪; ইবন মাজা, কিতাবুল হদ্দ, বাব হাদ্দিয় যিনা, মং ২৫৫০; নারিমী, কিতাবুল হুদদ, বাব আও ইয়াজআলাল্লাহু লাহুন্না সাবীলা, ২, পৃ. ১৮১; বুখারী, তাফসীর সূরা নিসা, তরজমাতুল বাব; মুসনাদে আহমাদ, ৩, ৪৭৬, ৫, ৩১৩, ৩১৭, ৩১৮, ৩২০, ৩২১, ৩২৭। নাসাঈ, কিতাবু তাহমিদ-দাম, বাব যিকরি মা ইয়াহিত বিহি দমাল-মুসলিম, ৭থ, পৃ. ৯০; পারিমী, কিতাবুল দূপ, বাব মা ইয়াহিয় বিহি কামাল মুসলিম, ২খ, পৃ. ১৭১.৭২ : বুখারী কিতাবু দিয়াত, যাব ইন্নান্নাফসা বিন-নাফস; মুসলিম, কাসামাহ, বাব মা ইউবাহু বিহি দামাল-মুসলিম, নং ১৬৭৬; তিরমিযী, কিতাবুদ দিয়াত, বাব ইয়াহিন্দু দামু ইমরিইম মুসলিম, নং ১৪০২; ইবন মাজা, দূর, বাবলা ইয়াহিনু দাম, নং ২৫৩৪; আবু দাউদ, হদ্দ, বাবুল হকমি ফীমান ইতান্দা, নং ৪৩৫২; মুসনাদ আহমাদ, ১, পৃ. ৩৮২; ৬খ, পৃ. ১৮১। আবু দাউদ, কিতাবুল হুদূদ, বাব ফির-রাজম, নং ৪৪১৮; বুখারী, কিতাবুল অদুদ, বাবুল ইতিফ বি-যিনা; তিরমিযী, কিতাবুল হজুদ, বাব ফী তাকীকি রাজম, নং ১৪৩১; মুসলিম, কিতাবুল হুদুদ, বাব রাজমিস সায়্যিব বিয-যিনা, নং ১৬৯১; ইন মাজা, হদ্দ, বাবু-রাজম, নং ২৫৫৩; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ (বাংলা অনু.), আবওয়াবু দৃদ বিষ-যিনা, অনুচ্ছেদ ১ রজম (পাথর নিক্ষেপে হত্যা), নং ৬৯৪, ৬৯৫,পৃ. ৪২৬-২৮ মুওয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ (বাংলা অনু.), অনুচ্ছেদ ১, নং ৬৯৬; আবু দাউদ, অদূদ, বাব ফির-রাজমিল ইয়াদিয়ায়ন, নং ৪৪৪৬; বুখারী, হদ্দ, বাব আহকামি আহুলিয যিম্ম; মুসলিম, হুদূদ, বাব রাজমিল ইয়াহূদ, নং ১৬৯৯; তিরমিযী, হদ্দ, বাবুর রাজমি
আহলিল কিবাত, নং ১৪৩৬; ইবন মাজা, হুদূদ, বাব রাজমিল ইয়াহুদ, নং ২৫৫৬। ৮. বিস্তারিত দ্র. আবু দাউদ, হুদুদ, বাব রাজমি মাইয ইবন মালিক, নং ৪৪১৯-৪৪৩৯;
এবং হাদীসের অন্যান্য গ্রন্থ দ.।
৩১৫
১৩.
৯. বিস্তারিত দ্র, আবু দাউদ, হুদুদ, বাব ২৫, নং ৪৪৪০-৪৫; মুসলিম, হুদূর, বা
মান ইতারাফা …….., নং ১৬৯৬; তিরমিযী, হুদূদ, বাব তারাব্লুসির-রাজমি বিল-হুবল, নং ১৪৩৫; নাসাঈ, জানাইয, বাবুস সালাতি আলাল-মারজুম, নং ১৯৫৯; ইবন
মাজা, হুদূদ, বাবুর রাজম, নং ২৫৫৫। ১০. বিস্তারিত দ্র. মুওয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ (বাংলা অনু.), নং ৬৯৭; বুখারী, কিতাবুল
আহকাম, বাব হাল ইয়াজুযু লিল-হাকিম আন ইয়াবআসা রাজুন ওয়াহদাহু ফি-নারি ফিল-মূর; কিতাপ-সুবি, বাব ই ইসতালাহু আলা জাওরিন ফাগ-সুল মার; কিতাবুল-গুরূত, আইমান, হদ্দ ইত্যাদি; মুসলিম, হুদূদ, ৰাব ইতিৱাফিয-যিনা, নং ১৬৯৭; আবু দাউদ, হুদূদ, বাব ২৫, নং ৪৪৪৫; তিরমিযী, হদ্দ, বাব রাজমি আস-সায়্যিব, নং ১৪৩৩; নাসাঈ, কুদাত, নং ৫৪১২; ইবন মাজা, হুদূদ, বাব
হাদিয-যিনা, নং ২৫৪৯। ১১. ইমাম সারাখসী, আল-মাসূত, ৯খ, পৃ. ১৩৬ প.।
পূর্বোক্ত বরাত।
হিদায়া, ২থ, পৃ. ৪৯২-৩। ১৪. বয়াত পূর্বে উল্লেখ করা হইয়াছে (৯ নং টাকা দ্র.)। ১৫. হিদায়া, কিতাবুল হদ্দ, ২৩, পৃ. ৪৯৩। ১৬, নাসা-রায়াৎ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭৩ (মুসনাদে আৰু ইয়ালার বরাতে)। ১৭.. আবূ দাউদ, দিয়াত, বাব গান ওয়াজাদা মাআ আহলিহি রাকুলান …………, নং
৪৫৩৩; মুসলিম, লিআন, নং ১৫। মাইয় আসলামী পরপর তিনবার রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সামনে যেনার স্বীকারোক্তি করেন এবং মহানবী (সা) প্রতিবার অন্যদিকে ঘুৰিয় যান। অবশেষে আবু বাকর সিদ্দীক (রা) তাহাকে সাবধান করিয়া বলেন, দেখ! তুমি চতুর্থবার স্বীকারোক্তি করিলে মহানবী (সা) তোমাকে রজম-এর শাস্তি দিবেন। কিন্তু সে চতুর্থবার স্বীকারোক্তি করিলে মহানবী (সা) তাহাকে রজমের নির্দেশ দেন। গামেদ গোত্রের স্ত্রীলোকটি এ মহানবী (সা)-এর সামনে চারিবার যেনার স্বীকারোক্তি করিয়াছিল। হিয়া, কিতাবুল হদ্দ, ২২, পৃ. ৪৮৮। মাই মাসলামীর উপর শাস্তি কার্যকর করাকালে সে বলিয়াছিল, আমাকে মহানবী (সা)-এর নিকট নিয়া যাও। লোকেরা আমাকে ধােকা দিয়াছে। কিন্তু তাহাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয় নাই। পরে মহানবী (সা)-কে এই কথা জানানো হইলে তিনি বলেন, তোমরা তাহাকে আমার নিকট
ফিরাইয়া আনিলে না কেন, সে অস্বীকার করিত, আমি তাহাকে ক্ষমা করিয়া দিতাম। ২০. কিতাবুল ফিকহ আলাল মাহিবিল আরবাআহ, খ, হাদু-যিনা, যুহরুল হামল
আলা ইমরাআতিন লা যাওজা লাহা, পৃ. ৯৪। ২১. ইবন মাজা, কিতাবুল হদ্দ, বাব দাফইল হুদূদ বিশ-শুবুহাত, নং ২৫৪৫। ২২. ঐ বরাত।
বিস্তারিত দ্র. তিরমিযী, হুদূদ, বাব মা জাআ ফিল-মারআতি ইযাসতুকরিহাত আলায-যিনা; দারু কুতনী, ৩২, পৃ. ৯২-৩; ইবন মাজা, ছদূদ, বাবুল মুসতাকরাই; বায়হাকী, ৮থ, পৃ. ২৩৫।
৩১৬
। *),
১৪. মুওয়াত্তা ইমাম মালেক, কিতাবুল হুদূদ, অনুচ্ছেদ : জামিউ মা জাআ ফী
হাদ্দিয-যিনা; মুওয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ (বাংলা অনু.), হাদীস নং ৭০৪। ২৫. আলমগিরী, ২, পৃ. ১৫০; হিদায়া, ২, পৃ. ৪৯৯। ২৬ আবু দাউদ, কিতাবুল হদ্দ, বাব ইয়া আকাররা-রাজু বিষ-যিনা ওয়ালাম
তুকিররাল-মাআত নং ৪৪৬৬-৪৪৬৭। • ২৭. আলমগিরী, কিতাবুল হুদ, আল-বাবুর রাবিই ফিল ওয়াতই আল্লাযী ইয়ুজিবুল
হাদ্দ ওয়াল্লাযী লা ইয়ুবিজুহু, ২, পৃ. ১৪৮; আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২খ,
পৃ. ৩৫৪-৫, ধারা ৪৮৮। ২৮. ‘আত-তাশরীউল জালাইল ইসলামী, ঐ। ২৯. আলমগিরী, দূদ, বাব আল-ওয়াউল্লাযী ইয়ুজিবুল হাদ্দ ওয়াক্কাযী লা ইযুজিবুহ,
২, পৃ. ১৫); হিদায়া, ২, পৃ.৪৯৮! ৩১. আলমগিরী, দ. খ, “. ১৫০; হিদায়া, ২খ, পৃ. ৪৯৬।
১. ৫ সূরা মারা ০.৮৪ আয়াত; হৃদ, ৭৭-৮৩ আয়াত; আম্বিয়া, ৭৪.৭৫
১।য়াত; মল, ৫৪-৫৮ ময়াত: আনকাবুত, ২৮-৩৫ আয়াত।
! দাউদ, হুদূদ, শা ফীমান আমিলা আমালা কাওমি দূত, নং ৪৪৬২; তিরমিযী, ইদ, বাব ফী হাজিল লাওয়াতী, নং ১৪৫৬; ইবন মাজা, হুসূদ, বার মান আমিলা তামালা কাওমি স্মৃত, নং ২৫৬৪।
অসমগিরী, চুন, পৃ ১৫০; হিদায়া, ছদ, ২খ, পৃ. ৪৯৬। ৩৪.। বাযলুল মাহদ, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত সং, হদ্দ, বাব ফী মান
আমিালা আমগা ‘ওনা সূত, ১৭ খ, পৃ. ৪২৮-৩০। ৩৫. আবু দাউদ, হদ, সব ফী মান আতাল-বাহীমাহ, নং ৪৪৬৪; ইবন মাজা, হদ্দ,
নং ২৫৬৪; তিরমিযী, দূদ, বাব ফীমান ইয়াকিউ আলা বাহীমাহ, মং ১৪৫৪। ৩৬, আবু দাউদ, হুদুদ, নং ৪৪৬৫: তিরমিযী, হুদুদ, নং ১৪৫৫।
আবু দাউদ, ইয়াত উনায়েদ ও আদিল আস-সায়্যিদ কর্তৃক সম্পাদিত, ১ম সংস্করণ, হিমস (সিরিয়া) ১৩৯৩/১১৯৭৩, ৪খ, পৃ. ৬০০৯; আলমগিরী, হদ্দ ২৩, পৃ. ১৫০;
হিদায়া. হুদ, ২৩, পৃ. ৪৯৭; বাদাইউস সানাই, হুদূদ, ৭২, পৃ. ৩৪। ৩৮. আলমগিরী, হুদু, বাব, ৪, ২খ, পৃ. ১৪৭৮; হিদায়া, হদ্দ, ২২, পৃ. ৪৯৩-৪।
ফাতহুল কাদীর, ৫খ, পৃ. ৩৫-৬ :
আলমগিরী, হুদূদ, বাব ৪, ২২, পৃ. ১৪৮। ৪১. আলমগিরী, ২খ, পৃ. ১৫১।
ফাতহুল কাদীর, ৫খ, প৩৯;আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২, পৃ. ৩৬৬। ৪৩. আয়ূ দাউদ, হুসূদ, আল ফী হান্দিল কাফি। ৪৪. ঐ বরাত।
হিদায়া, তালাক, বাবুল-লিআন, ২থ, পৃ. ৩৯৭। ৪৬. ইমাম শাফিঈ, কিতাবুল উখা, ৫, পৃ. ২৮৬: হিদায়া, তালাক, ২২, পৃ. ৪১৮;
মুখতাসারুল কুদূরী, পৃ. ১৬৮।
৪০.
৪৯..
৪৭. বিদায়া, তালাক, ৰাব-লিজান, ২থ, পৃ. ৩৯৭। ৪৮, দুই নং টীকার বরাতে।
মুফতী মুহাম্মাদ শফী, মা’আরিফুল কুরআন, ৬খ, পৃ. ৩৪৫; সায়্যিদ মওদূদী,
মুল কুরআন, ৩, পৃ. ৩৬১; বাদাইউস সানাই, ৩খ, পৃ. ২৪১। ৫০, কিতাবুল ফিকহ্ আলাল মাহিবিল আরবাআ, ৫, পৃ. ১০৮।
আবু দাউদ, কিতাবুততালাক, বাবুললিআন, নং ২২৪৫-৫৩ বুখারী, তালাক, বাবলিআন; মুসলিম, লিআন, নং ১৪৯২; ইবন মাজা, তালাক, বাব.লিআন, নং
২০৬৬। ৫২. আবু দাউদ, তালাক, বাব-লিআন, নং ২২৫৪-৫৭; বুখারী, তালাক, সব কওলিল
ইমাম আল্লাহুম্মা বায়্যিন; তিরমিযী, তাফসীর সূরা নূর, নং ৩১৭৮; ইবন মাজ।
তালাক, যাব লিআন, নং ২০৬৭। ৫৩, হিদায়া, তালাক, বাবুল লিআন, ২, পৃ. ৪১৭। ৫৪. ইবুন রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ, মিসর ১৩৩৭ হি., ২২, পৃ. ১১৮। ৫৫. আত-তারীউল জানাইল ইসলামী, ২৩, পৃ ৩৯৫-১।
আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২৩, পৃ. ৩৯৬ (নাসাঈর ন )। আবূ দাউদ, কিতাবুল আকদিয়া, বাব ১৬, নং ৩৬০১; তিরমিযী, কিতা: শাহ, নং ২২৯৯; ইবন মাজা, কিতাবুল আহকাম, নং ২৩৬৬। আল-বাহরুর রাইক ওয়া হাশিয়াতু মিনহাযিল খালিক, ৭খ, পৃ. ৮৪-:-: ইতে
আত-তাশরীউল জামাই-তে উদ্ধৃত, ২খ, পৃ. ৩৯৯। ৫৯, বাহরুর রাইক, ৭, পৃ. ৮৫ হইতে আত-তাশরীউল জানাই, ২, পৃ. ৩৯৯।
বাহরুর রাইক, ৭৩, পৃ. ৯৩, ৯৪ হইতে আত-তাশরীউল জানাং, ২, পৃ. ৮০৮’ শারহু ফাতহিল কাদীর, ৪খ, পৃ. ১১৪ হইতে আত-তাশরীউল জানাই, ২, পৃ. ৪১ আল-হিদায়া, কিতাবুল হুদুদ, বাবুশ-শাহাদাতি আয যিনা, ২খ, পৃ. ৫০৬; শর ফাতহিল কাদীর, ৪, পৃ. ১৭৬ (আত-তাশরীউল জানাই হইতে এখানে উদ্ধৃত, ২খ, পৃ. ৪২৬)। আল-মুগনী, ১০২, পৃ. ১৭৫-এর বরাতে আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২৩, ৭. ৪১১। আল-মুদাওয়ানা, ১৬, পৃ. ৮; আল-মুহাযযাব, ২২, পৃ. ৩৭৪ ও আল-ইকনা,
৪থ, পৃ. ৪৪২ প্রভৃতি এহের বরাতে আত-তাশরীউল জানাই, ২, পৃ. ৪১১। ৬৫. শারহ ফাতহিল কাবীর, ৪খ, পৃ. ১১৪-এর বরাতে তাশরীউল জানাইল ইসলামী,
২, পৃ. ১১। ৬৬. আত-
তাউল জানাই, ২থ, পৃ. ৪১১। ৬৭. শাহ ফাতহিল কাদীর, ৪খ, পৃ. ১২০; বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ৪৮; আল-মুগনী,
১০খ, পৃ. ১৭৮, ১৭৯; মাওয়াহিবুল জালীল, ৬, পৃ. ১৭৯; শাহ্য যুরকানী, এখ, পৃ. ১৭৬, ৮, পৃ. ৮১ প্রভৃতি গ্রন্থে বরাতে আত-তাশরীউল জানাইল ইসলামী, ২, পৃ. ৪১৭।