০৫. মিস্টার বোস ডক্টর হাজরাকে গুড ইভনিং বলে

॥ ৫ ॥

মিস্টার বোস ডক্টর হাজরাকে ‘গুড ইভনিং’ বলে নিজের ঘরের দিকে চলে গেলেন। ডক্টর হাজরা ছেলেটির হাত ধরে বারান্দা দিয়ে আমাদের দিকেই এগিয়ে এসে, বোধহয় হঠাৎ দুজন অচেনা বাঙালিকে দেখে কেমন যেন একটু থতমত খেয়ে গেলেন। ফেলুদা হেসে নমস্কার করে বলল, ‘আপনিই বোধহয় ডক্টর হাজরা?’

‘হ্যাঁ—কিন্তু আপনাকে তো—?’

ফেলুদা পকেট থেকে তার একটা কার্ড বার করে ডক্টর হাজরাকে দিয়ে বলল, ‘আপনার সঙ্গে একটু কথা ছিল। সত্যি বলতে কী, আমরা আপনার খোঁজেই এসেছি। সুধীরবাবুর অনুরোধে। সুধীরবাবু একটা চিঠিও দিয়ে দিয়েছেন আপনার নামে।’

‘ও। আই সি। মুকুল, তুমি ঘরে যাও, আমি এঁদের সঙ্গে একটু কথা বলে আসছি, কেমন?’

‘আমি বাগানে যাব।’

ছেলেটির গলা বাঁশির মতো মিষ্টি, যদিও কথাটা বলল একেবারে ন্যাড়াভাবে, এক সুরে। প্রায় যেন একটা যন্ত্রের মানুষের ভেতর থেকে কথা বেরচ্ছে। ডক্টর হাজরা বললেন, ‘ঠিক আছে, বাগানে যাও, তবে লক্ষ্মী হয়ে থেকো, গেটের বাইরে যেয়ো না, কেমন?’

ছেলেটি আর কিছু না বলে বারান্দা থেকে এক লাফে নুড়ি-ফেলা জায়গাটায় নামল। তারপর একটা ফুলের লাইন টপকে বাগানের ঘাসের উপর পৌঁছে চুপ করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রইল। ডক্টর হাজরা আমাদের দিকে ফিরে কেমন যেন একটা অপ্রস্তুত হাসি হেসে বললেন, ‘কোথায় বসবেন?’

‘আসুন আমাদের ঘরে।’

ডক্টর হাজরার কানের চুলে পাক ধরেছে। চোখ দুটোয় বেশ একটা তীক্ষ্ণ বুদ্ধির ছাপ আছে। কাছ থেকে দেখে মনে হল বয়স প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি। আমরা তিনজনে সোফায় বসলাম। ফেলুদা ডক্টর হাজরাকে সুধীরবাবুর চিঠিটা দিয়ে তাঁকে একটা চারমিনার অফার করল। ভদ্রলোক একটু হেসে ‘ও রসে বঞ্চিত’ বলে চিঠিটা পড়তে লাগলেন।

পড়া হলে পর ডক্টর হাজরা চিঠিটা ভাঁজ করে খামে পুরে রাখলেন।

ফেলুদা এবার নীলুকে কিডন্যাপ করার ঘটনা বলে বলল, ‘সুধীরবাবু ভয় পাচ্ছিলেন যে ওই লোকগুলো হয়তো মুকুলকে ধাওয়া করে একেবারে যোধপুর পর্যন্ত চলে এসেছে। সেই কারণেই উনি বিশেষ চিন্তিত হয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। আমি খানিকটা তাঁর অনুরোধে পড়েই এসেছি। অবিশ্যি দুর্ঘটনা যদি কোনও না ঘটে তা হলেও আমাদের আসাটা যে একেবারে ব্যর্থ হবে তা নয়, কারণ রাজস্থান দেখার শখটা অনেক দিনের।’

ডক্টর হাজরা একটুক্ষণ ভেবে বললেন, ‘দুশ্চিন্তার কারণ যাকে বলে সে রকম অবিশ্যি এখনও পর্যন্ত কিছু ঘটেনি। তবে ব্যাপারটা কী জানেন, খবরের কাগজের রিপোর্টারদের অতগুলো কথা না বললেও চলত। আমি সুধীরবাবুকে বলেছিলাম যে ইনভেস্টিগেশনটা সেরে নিই, তারপর আপনি যত ইচ্ছা রিপোর্টার ডাকতে চান ডাকতে পারেন। বিশেষ করে যেখানে গুপ্তধনের কথাটা বলছে। আমি নাহয় জানি যে কোনও কথাটারই হয়তো ভিত্তি নেই, কিন্তু কিছু লোক থাকে যারা সহজেই প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে।’

‘জাতিস্মর ব্যাপারটা সম্বন্ধে আপনি কী মনে করেন?’

‘মনে যা করি সেটাকে তো এখনও পর্যন্ত অন্ধকারে ঢিল মারা ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না। অথচ ঢিল না মেরেই বা কী করি বলুন। জাতিস্মর যে আগেও এক-আধটা বেরোয়নি তা তো নয়। আর তাদের অনেক কথাই তো হুবহু মিলে গেছে। সেই জন্যেই যখন এই মুকুল ছেলেটির খবর পাই, তখনই ঠিক করি যে একে নিয়ে একটা থরো ইনভেস্টিগেশন করব। যদি দেখি যে এর কথার সঙ্গে সব ডিটেল মিলে যাচ্ছে, তখন সেটাকে একটা প্রামাণ্য ঘটনা হিসেবে ধরে তার উপর গবেষণা চালাব।’

‘কিছু দূর এগিয়েছেন কি?’ ফেলুদা জিজ্ঞেস করল।

‘এইটে অন্তত বুঝেছি যে, রাজস্থান সম্বন্ধে কোনও ভুল করিনি। এখানকার মাটিতে পা দেওয়ার পর থেকে মুকুলের হাবভাব বদলে গেছে। বুঝতেই তো পারছেন, বাপ-মা-ভাই-বোনকে এই প্রথম ছেড়ে একজন অচেনা লোকের সঙ্গে চলে এল, অথচ এই কদিনে একটিবার তাদের নাম পর্যন্ত করল না।’

‘আপনার সঙ্গে সম্পর্ক কেমন?’

‘কোনও গোলমাল নেই। কারণ, বুঝতেই তো পারছেন, আমি ওকে ওর স্বপ্নরাজ্যে নিয়ে চলেছি। ওর সমস্ত মনটাই তো পড়ে আছে ওর সোনার কেল্লার দেশে, আর এখানে এসে কেল্লা দেখলেই ও লাফিয়ে উঠছে।’

‘কিন্তু সোনার কেল্লা দেখেছে কি?’

ডক্টর হাজরা মাথা নাড়লেন।

‘না। তা দেখেনি। আসবার পথে কিষণগড় দেখিয়ে এনেছি। গতকাল সন্ধ্যায় এখানকার ফোর্টটা দেখেছে বাইরে থেকে। আজ বারমের নিয়ে গিয়েছিলাম। প্রতিবারই বলে—এটা নয়—আরেকটা দেখবে চলো। এ ব্যাপারে ধৈর্য লাগে মশাই। অথচ চিতোর-উদয়পুরের দিকটা গিয়ে কোনও লাভ নেই, কারণ ওদিকে বালি নেই। বালির কথা ও বার বার বলে, আর বালি বলতে এদিকটাতেই আছে, আর আগেও তাই ছিল। কাল তাই ভাবছি বিকানিরটা দেখিয়ে আনব।’

‘আমরা আপনার সঙ্গে গেলে আপত্তি নেই তো?’

‘মোটেই না। আর শুধু তাই না। আপনি সঙ্গে থাকলে কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারব, কারণ…একটা ঘটনা…’

ভদ্রলোক চুপ করলেন। ফেলুদা সিগারেটের প্যাকেটটা পকেট থেকে বার করেছিল, কিন্তু সেটা আর খুলল না।

‘কাল সন্ধ্যায় একটা টেলিফোন এসেছিল’, ডক্টর হাজরা বললেন।

‘কোথায়?’ ফেলুদা জিজ্ঞেস করল।

‘এই সার্কিট হাউসে। আমি তখন কেল্লা দেখতে গেছি। কেউ একজন ফোন করে জানতে চেয়েছিল, কলকাতা থেকে একজন ভদ্রলোক একটি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে কি না। ম্যানেজার ন্যাচারেলি হ্যাঁ বলে দিয়েছে।’

ফেলুদা বলল, ‘কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে কলকাতার কাগজের খবরটা এখানে কেউ কেউ হয়তো জানে, এবং সেই জন্যেই সেটাকে ভেরিফাই করার জন্য এখানে ফোন করেছে। যোধপুরে তো বাঙালির অভাব নেই। এ সব ব্যাপারে কৌতূহল জিনিসটা স্বাভাবিক নয় কি?’

‘বুঝলাম। কিন্তু সে লোক আমি এসেছি জেনেও আর খোঁজ করল না কেন? বা এখানে এল না কেন?’

‘হুঁ…’ ফেলুদা গম্ভীরভাবে মাথা নাড়ল। ‘আমার মনে হয় আমি আপনার সঙ্গে থাকাটাই ভাল। আর মুকুলকেও একা ছাড়বেন না বেশি।’

‘পাগল!’

ডক্টর হাজরা উঠে পড়লেন।

‘কালকের জন্যে একটা ট্যাক্সির বন্দোবস্ত করা আছে। আপনারা তো মাত্র দুজন, তাই একটা ট্যাক্সিতেই হয়ে যাবে।’

ভদ্রলোক যখন দরজার দিকে এগোচ্ছেন তখন ফেলুদা হঠাৎ একটা প্রশ্ন করে বসল—

‘ভাল কথা—শিকাগোতে আপনাকে জড়িয়ে একবার কোনও ঘটনা ঘটেছিল কি? এই বছর চারেক আগে?’

ডক্টর হাজরা ভুরু কুঁচকোলেন।

‘ঘটনা? শিকাগোতে আমি গেছি বটে…’

‘একটা আধ্যাত্মিক চিকিৎসালয় সংক্রান্ত ব্যাপার…?’

ডক্টর হাজরা হো হো করে হেসে উঠলেন—‘ওহো—সেই স্বামী ভবানন্দের ব্যাপার? যাকে আমেরিকানরা বলত ব্যাব্যানান্ডা? ঘটেছিল বটে, কিন্তু কাগজে যেটা বেরিয়েছিল সেটা অতিরঞ্জিত। লোকটা ভণ্ড ঠিকই, কিন্তু সে রকম ভণ্ড অনেক হাতুড়ে, অনেক টোটকাওয়ালাদের মধ্যে পাওয়া যায়। তার চেয়ে বেশি কিছু না। ওর বুজরুকি আসলে ধরে ফেলে ওর পেশেন্টরাই। খবরটা রটে যায়। প্রেস থেকে আমার কাছে আসে ওপিনিয়নের জন্য। আমি বরং ওর সম্বন্ধে খানিকটা মোলায়েম করেই বলেছিলাম। কাগজে তিলটাকে তাল করে ছাপায়। তারপর আমার ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয়ও হয়েছিল। আমি নিজেই ওর সঙ্গে দেখা করে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে নিই—অ্যান্ড উই পার্টেড অ্যাজ ফ্রেন্ডস্‌।’

‘ধন্যবাদ। কাগজের রিপোর্ট দেখে আমার ধারণা অন্যরকম হয়েছিল।’

ডক্টর হাজরার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও ঘর থেকে বেরোলাম। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। পশ্চিমের আকাশটা এখনও লাল, তবে রাস্তার বাতি জ্বলে গেছে। কিন্তু মুকুল কোথায়? বাগানে ছিল সে, কিন্তু এখন দেখছি নেই। ডক্টর হাজরা চট করে একবার নিজের ঘরে খুঁজে ব্যস্তভাবে বেরিয়ে এলেন।

‘ছেলেটা গেল কোথায়’ বলে ভদ্রলোক বারান্দা থেকে বাইরে নামলেন। আমরা তার পিছন পিছন গেলাম বাগানে। বাগানে যে নেই সে ছেলে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

‘মুকুল!’ ডক্টর হাজরা ডাক দিলেন। ‘মুকুল!’

‘ও আপনার ডাক শুনেছে’, ফেলুদা বলল। ‘ও আসছে।’

আবছা অন্ধকারে দেখলাম মুকুল রাস্তা থেকে গেট দিয়ে ঢুকল। আর সেই সঙ্গে দেখলাম উলটোদিকের ফুটপাথ দিয়ে একটা লোক দ্রুত হেঁটে পুবদিকে নতুন প্যালেসের দিকটায় চলে গেল। লোকটার মুখ দেখতে পারলাম না বটে, কিন্তু তার গায়ের জামার টকটকে লাল রংটা এই অন্ধকারেও স্পষ্ট বুঝতে পারলাম। ফেলুদা দেখেছে কি লোকটাকে?

মুকুল এগিয়ে এল আমাদের দিকে। ডক্টর হাজরা হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে এগিয়ে গেলেন। তারপর খুব নরম গলায় বললেন—

‘ওরকমভাবে বাইরে বেরতে হয় না মুকুল!’

‘কেন?’ মুকুল ঠাণ্ডা গলায় জিজ্ঞেস করল।

‘অচেনা জায়গা—কতরকম দুষ্ট লোক আছে এখানে।’

‘আমি তো চিনি।’

‘কাকে চেনো?’

মুকুল হাত বাড়িয়ে রাস্তার দিকে দেখাল—

‘ওই যে, যে লোকটা এসেছিল।’

হেমাঙ্গবাবু মুকুলের কাঁধে হাত দিয়ে ফেলুদার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘দ্যাটস্‌ দা ট্রাবল। কাকে যে সত্যি করে চেনে আর কাকে যে পূর্বজন্মে চিনত তা বলা মুশকিল।’

লক্ষ করলাম মুকুলের হাতে কী জানি একটা কাগজের টুকরো চক চক করছে। ফেলুদাও দেখেছিল সেটা। বলল, ‘তোমার হাতের কাগজটা একবার দেখব?’

মুকুল কাগজটা দিল। একটা দু ইঞ্চি লম্বা আধ ইঞ্চি চওড়া সোনালি রাংতা।

‘এটা কোথায় পেলে মুকুল?’ ফেলুদা জিজ্ঞেস করল।

‘এইখানে’, বলে মুকুল ঘাসের দিকে আঙুল দেখাল।

‘এটা আমি রাখতে পারি?’ ফেলুদা জিজ্ঞেস করল।

‘না। ওটা আমি পেয়েছি।’ সেই একই সুর। একই ঠাণ্ডা গলার স্বর। অগত্যা ফেলুদা কাগজটা ফেরত দিয়ে দিল।

ডক্টর হাজরা বললেন, ‘চলো মুকুল, ঘরে যাই। হাত-মুখ ধুয়ে তারপর খেতে যাব আমরা। চলি মিস্টার মিত্তির। কাল ঠিক সাড়ে সাতটায় আর্লি ব্রেকফাস্ট করে বেরোচ্ছি আমরা।’

খেতে যাবার আগেই ফেলুদা সুধীরবাবুকে পৌঁছ-খবর আর মুকুলের খবর দিয়ে একটা পোস্টকার্ড লিখে দিয়েছিল। স্নানটান সেরে যখন ডাইনিং রুমে পৌঁছেছি ততক্ষণে ডক্টর হাজরা আর মুকুল ঘরে চলে গেছেন। মন্দারবাবুকে দেখলাম উলটোদিকের কোনায় সেই অবাঙালি ভদ্রলোকের সঙ্গে বসে পুডিং খাচ্ছেন। আমাদের সুপ আসতে আসতে তাঁরা উঠে পড়লেন। দরজার দিকে যাবার পথে মন্দার বোস হাত তুলে গুডনাইট জানিয়ে গেলেন।

দুদিন ট্রেনে পথ চলে বেশ ক্লান্ত লাগছিল। ইচ্ছে ছিল, খেয়ে এসেই ঘুমিয়ে পড়ব, কিন্তু ফেলুদার জন্য একটুক্ষণ জেগে থাকতে হল। ফেলুদা তার নীল খাতা নিয়ে সিগারেট ধরিয়ে সোফায় বসেছে, আর আমি খাটে গিয়ে শুয়েছি। সঙ্গে অ্যান্টি-মশা মলম ছিল বলে আর মশারি টাঙাতে দিইনি।

ফেলুদা ডট পেনের পেছনটা টিপে নিবটা বার করে নিয়ে বলল, ‘কার কার সঙ্গে আলাপ হল বল।’

বললাম, ‘কবে থেকে শুরু করব?’

‘সুধীর ধরের আসা থেকে।’

‘তা হলে প্রথমে সুধীরবাবু। তারপর শিবরতন। তারপর নীলু। তারপর শিবরতনবাবুর চাকর—’

‘নাম কী?’

‘মনে নেই।’

‘মনোহর। তারপর?’

‘তারপর জটায়ু।’

‘আসল নাম কী?’

‘লালমোহন।’

‘পদবি?’

‘পদবি…পদবি…গাঙ্গুলী।’

‘গুড।’

ফেলুদা লিখে চলেছে। আমিও বলে চললাম।

‘তারপর সেই লাল জামা পরা লোকটা।’

‘আলাপ হয়েছিল তার সঙ্গে?’

‘না—তা হয়নি—’

‘ঠিক আছে। নেক্সট?’

‘মন্দার বোস। আর তার সঙ্গে যে লোকটা ছিল।’

‘আর মুকুল ধর, ডক্টর—’

‘ফেলুদা!’

আমার চিৎকারে ফেলুদার কথা থেমে গেল। আমার চোখ পড়েছে ফেলুদার বিছানার উপর। কী যেন একটা বিশ্রী জিনিস বালিশের তলা থেকে বেরোতে চেষ্টা করছে। আমি সেদিকে আঙুল দেখালাম।

ফেলুদা তড়াক করে লাফিয়ে উঠে এসে বালিশটাকে সরিয়ে ফেলতেই একটা কাঁকড়া বিছে বেরিয়ে পড়ল। ফেলুদা বিছানার চাদরটা ধরে একটা ঝটকা টান দিয়ে বিছেটাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে চটি দিয়ে তিনটে প্রচণ্ড চাপড় মেরে সেটাকে সাবাড় করল। তারপর একটা খবরের কাগজের টুকরো ছিঁড়ে নিয়ে থেঁতলানো বিছেটাকে তার মধ্যে তুলে বাথরুমে গিয়ে পিছনের দরজাটা খুলে কাগজটাকে পুঁটলি পাকিয়ে বাইরে ফেলে দিল। তারপর ফিরে এসে বলল, ‘জমাদারের আসার দরজাটা খোলা ছিল, তাই এ ব্যাটা ঢুকতে পেরেছে। নে, তুই এবার ঘুমিয়ে পড়। কাল ভোরে ওঠা আছে।’

আমার কিন্তু মোটেই অতটা নিশ্চিন্ত লাগছিল না। আমার মনে হচ্ছিল—নাঃ, থাক। যদি আমার টেলিপ্যাথির জোর থাকে, তা হলে হয়তো বিপদের কথা বেশি ভাবলেই বিপদ এসে পড়বে। তার চেয়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করে দেখি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *