০৫. নিরভানা রেস্টোর‍্যান্টে লাঞ্চ

আধঘণ্টার মধ্যে স্নান সেরে নিয়ে তিনজনে একতলায় গেলাম হোটেলেরই নিরভানা রেস্টোর‍্যান্টে লাঞ্চ খেতে। কাঠমাণ্ডুতে আসার এত অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটনা একটা বিরাট ধাপ এগিয়ে গেছে ভাবতে মনের মধ্যে একটা চাপা উত্তেজনার ভাব এসে গেছে, আর সেই সঙ্গে খিদেটাও পেয়েছে জবর। কলকাতায় অনীকেন্দ্র সোম খুন, নেপালে বাঙালি হেলিকপটার পাইলটের মৃত্যু, মিঃ বাটরার ডুপলিকেট—এ সবই যে একসঙ্গে জট-পাকানো তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মিঃ সোম কি চেয়েছিলেন ফেলুদা ওঁর বন্ধুর মৃত্যুর ব্যাপারেই তদন্ত করুক? ইনজেকশনে ভেজাল ছিল বলেই কি হিমাদ্রি চক্রবর্তীর মৃত্যু হয়? কিন্তু এ ব্যাপারে ফেলুদা আর কত দূর কী করতে পারে?

আমরা দু’জনে মোটামুটি চেনাশোনা খাবার অর্ডার দিয়েছি, কিন্তু লালমোহনবাবু হঠাৎ কেন যেন মেনু দেখে ওয়েটারকে জিগ্যেস করে বসলেন, ‘হোয়াট ইজ মোমো?’

‘ইটস মিট বলস ইন সস, স্যার,’ বলল ওয়েটার।

‘তরল পদার্থে ভাসমান মাংসপিণ্ড,’ বলল ফেলুদা। ‘তিব্বতের খাবার। শুনেছি মন্দ লাগে না খেতে। ওটা খেলে আপনি কলকাতায় গিয়ে বলতে পারেন যে দলাই লামা যা খান, আপনিও তাই খেয়ে এসেছেন।’

‘দেন ওয়ান মোমো ফর মি, ইফ ইউ প্লিজ।’

এছাড়া অবিশ্যি ভাত আর ফিশকারি অর্ডার দিয়েছেন ভদ্রলোক। বললেন, ‘মোমোটা ফর একসপিরিয়েন্স।’

একটা হালকা সবুজ রংয়ের কার্ড হাতে নিয়েই রেস্টোর‍্যান্টে ঢুকেছিলেন লালমোহনবাবু, এবার সেটা ফেলুদার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘এইটে যে ধরিয়ে দিল হাতে হোটেলের কাউন্টারে, এর মানেটা কিছু বুঝলেন? আমি তো মশাই হেড অর টেল কিছুই বুঝছি না। ক্যাসিনো কথাটা চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু ব্ল্যাকজ্যাক, পনটুন, রুলেট, জ্যাকপট—এগুলো কী? আর বলছে এই কার্ডের ভ্যালু নাকি পাঁচ ডলার। তার মানে তো চল্লিশ টাকা। ব্যাপারটা কী বলুন তো।’

আমিই লালমোহনবাবুকে বুঝিয়ে দিতে পারতাম, কিন্তু ফেলুদা আরও গুছিয়ে বলতে পারবে বলে ওর ওপর ছেড়ে দিলাম।

‘এখানে একটা বিখ্যাত হোটেল আছে,’ বলল ফেলুদা। ‘নানা রকম জুয়া খেলার ব্যবস্থা আছে সেখানে। জ্যাকপট, পনটুন, কিনো—এ সবই এক-এক রকম জুয়ার নাম। আর খেলার জায়গাটাকে বলে ক্যাসিনো। আমাদের দেশে এ ধরনের পাবলিক গ্যাম্বলিং নিষিদ্ধ, তাই ক্যাসিনো জিনিসটা পাবেন না। এই কার্ডটা নিয়ে ক্যাসিনোতে গিয়ে আপনি পাঁচ ডলার পর্যন্ত জুয়া খেলতে পারেন, নিজের পকেট থেকে পয়সা না দিয়ে।’

‘লেগে পড়ব নাকি, তপেশ?’

‘আমার আপত্তি নেই।’

‘নাকের সামনে মুলোর টোপ ঝোলালে গাধা কি আর না খেয়ে পারে?’

‘খেলার শেষে নিজেকে গর্দভ গর্দভ মনে হতে পারে সেটা কিন্তু আগে থেকে বলে দিচ্ছি,’ বলল ফেলুদা। ‘অবিশ্যি জ্যাকপটে এক টাকা দিয়ে হাতলের এক টানে পাঁচশো টাকা পেয়ে গেছে এমনও শোনা যায়।’

ঠিক হল একদিন সন্ধেবেলা গিয়ে দেখে আসা যাবে ক্যাসিনো ব্যাপারটা। হোটেল থেকেই বার-তিনেক বাস যায় সেখানে, তার জন্য আলাদা পয়সা লাগে না।

মোমো খেয়ে লালমোহনবাবু বললেন যে এর পাকপ্রণালীটা জেনে নেওয়া দরকার। ওঁর রান্নার লোক বসন্ত নাকি খুব এক্সপার্ট—‘উইকে একদিন করে মোমো খেতে পারলে মশাই ছ’ মাসের মধ্যে চেহারায় একটা ধ্যানী ভাব এসে যাবে। রাস্তায় বেরোলে পাড়ার ছোঁড়াগুলো যে মাঝে মাঝে ফ্যাচ ফ্যাচ করে হাসে, সেটা বন্ধ হয়ে যাবে।’

মনে মনে বললাম যে লালমোহনবাবু যখন মাঝে মাঝে ধ্যানী ভাব আনার চেষ্টা করেন, তখনই ওঁকে দেখে সবচেয়ে বেশি হাসি পায়।

তবে কাঠমাণ্ডুতে কেউ হাসবে না সেটা ঠিকই।

দুপুরে খাওয়ার পর নিউ রোড ধরে দক্ষিণ দিকে যেতে যেতে মনে হল, দেশি-বিদেশি এত জাতের লোক—নেপালি তিব্বতি পাঞ্জাবি সিন্ধি মারোয়াড়ি, জার্মান সুইডিশ ইংলিশ আমেরিকান ফ্রেঞ্চ—আর এত রকম ঘর বাড়ি দালান দোকান মন্দির হোটেলের এ রকম সাড়ে বত্রিশ ভাজা পৃথিবীর আর কোথাও আছে কি না সন্দেহ।

ফেলুদা বলল আমরা যেখানে যাচ্ছি—দরবার স্কোয়ার—যেটাকে বলা চলে কাঠমাণ্ডুর নার্ভ সেন্টার, যেমন চৌরঙ্গি ধর্মতলার মোড় কলকাতার-সেইখানেই নাকি এখানকার পুলিশ ঘাঁটি। ওকে একবার সেখানে যেতে হবে। আমরা ততক্ষণ চারপাশটা ঘুরে দেখব। আধঘণ্টা পরে একটা বাছাই করা জায়গায় আমরা আবার মিট করব।

হোটেল থেকে বেরিয়ে খানিকটা গিয়েই একটা চৌমাথা পড়ে, তারপর থেকে নিউ রোডের নাম হয়ে গেছে গঙ্গা-পথ। তারপর খানিকটা গিয়ে রাস্তাটা চওড়া হয়ে গেছে। এটা হল বসন্তপুর স্কোয়ার। ডাইনে পুরনো রাজার প্যালেস। সেটা ছাড়িয়ে ডাইনে ঘুরতেই বুঝে গেলাম দরবার স্কোয়ারে এসে গেছি, আর এমন একটা বিচিত্র জায়গা আমরা এর আগে কখনও দেখিনি।

লালমোহনবাবু বার তিনেক ‘এ কোথায় এলাম মশাই’ বলাতে ফেলুদা আর থাকতে না পেরে বলল, আপনার প্রশ্নের যে উত্তরটা এক কথায় হয়, যেটা আপনি ম্যাপ খুলেই পেতে পারেন, সেটা আপনি নিশ্চয়ই চাচ্ছেন না। আর অন্য যে উত্তর, সেটা সোজা গদ্যে বলার জিনিস নয়। আপাতত আপনাকে অ্যাডভাইস দিচ্ছি—চোখ-কান সজাগ রেখে মনপ্রাণ ভরে দেখে নিন। প্রাচীন শহরের এমন চেহারা আপনি ভারতবর্ষের কোথাও পাবেন না। এক পেতে পারেন কাশীর দশাশ্বমেধে, কিন্তু তার মেজাজ একেবারে আলাদা।’

সত্যিই, যেদিকে চাই সেদিকেই চমক। দাবা খেলা কিছুক্ষণ চলার পর যেমন ছকের উপর রাজা মন্ত্রী বড়ে গজ নৌকো সব ছড়িয়ে বসে থাকে, তেমনই কোনও খামখেয়ালি দানব যেন এই সব ঘর বাড়ি প্রাসাদ মন্দির মূর্তি স্তম্ভ ছড়িয়ে বসিয়ে দিয়েছে। আর তারই মধ্যে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য মানুষ আর যানবাহন। কাশীর কথা যে মনে পড়ে না তা নয়, কিন্তু কাশীর আসল মন্দিরগুলো সব গলির মধ্যে হওয়াতে সেগুলো আর দূর থেকে দেখার কোনও উপায় থাকে না। এখানে কিন্তু তা নয়। রাস্তা দিব্যি চওড়া। পুরনো প্যালেসের বারান্দায় এসে রাজা দর্শন দিতেন বলে অনেকখানি খোলা জায়গা রাখা আছে।

‘ম্যাপ অনুযায়ী একটু এগিয়েই কালভৈরবের মূর্তি,’ বলল ফেলুদা। ‘ওই মূর্তির সামনে আধঘণ্টা পরে তোদের মিট করছি।’

ফেলুদা পা চালিয়ে এগিয়ে গেল।

নেপালের কাঠের কাজ প্রসিদ্ধ সেটা আগেই শুনেছিলাম, সেটা যে কেন, এখানে এসে বুঝতে পারলাম। পুরনো বাড়িগুলোর জানালা দরজা বারান্দা, ছাত, সবই কাঠের তৈরি, আর তার কারুকার্য দেখলে মাথা ঘুরে যায়। এখানকার মন্দিরগুলোও কাঠের, আর তেমন মন্দির আর কোথাও দেখিনি। এমনিতে ভারতবর্ষের ধাঁচের হিন্দু মন্দিরও আছে, কিন্তু আসল হল যেগুলোকে গাইড বুকে বলে প্যাগোডা। দো-চালা, তিন-চালা, চার-চালা মন্দির, চওড়া থেকে ধাপে ধাপে ক্রমে সরু হয়ে উপর দিকে উঠেছে।

তবে দরবার স্কোয়ার শুধু ধর্মস্থান নয়, বাজারও বটে। রাস্তায় ফুটপাথে সিঁড়িতে বারান্দায়—সব জায়গায় জিনিস ফেরি হচ্ছে। শাকসবজি ফলমূল থেকে ঘটি-বাটি জামা-কাপড় অবধি। এখানকার নেপালিরা যে টুপি ব্যবহার করে, তার মধ্যে বেশ বাহার আছে। এক জায়গায় সেই টুপি বিক্রি হচ্ছে দেখে দু’জনে সেদিকে এগিয়ে গেলাম। কলকাতার নিউ মার্কেট থেকে জটায়ুর মন এখন কাঠমাণ্ডুর বাজারে চলে এসেছে, সেটা বুঝতে পারলাম ভদ্রলোককে তাঁর লাল ডায়রিটা বার করতে দেখে।

টুপির শেপ সবই এক, কিন্তু নকশা প্রত্যেকটাতে আলাদা। আমি নিজে একটা বাছাই করে দর করছি, এমন সময় পিছন থেকে চাপা গলা পেলাম জটায়ুর।

‘তপেশ!’

নামটা কানে আসতেই ঘুরে দেখি ভদ্রলোক কী যেন দেখে তটস্থ হয়ে গেছেন।

ওঁর দৃষ্টি অনুসরণ করে ডাইনে মুখে ঘোরাতেই দেখলাম—

হাত পঁচিশেক দূরে দাঁড়িয়ে বাটরা বা নকল বাটরা আমাদের দিকে পাশ করে সিপারেট ধরিয়ে হাঁটতে শুরু করল ডানদিকে একটা গলি লক্ষ করে।

‘তোমার দাদাকে বাঁ হাতে লাইটার ধরাতে দেখেছ কখনও?’

‘না।’

‘ইনি ধরালেন।’

‘দেখেছি। আর বাঁ পকেটে রাখলেন লাইটারটা।’

‘ফলো করবে?’

‘আপনাকে দেখেছে লোকটা?’

‘মনে তো হয় না।’

রোখ চেপে গেল। ফেলুদার সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের আরও বিশ মিনিট দেরি।

দু’জনে এগিয়ে গেলাম।

সামনে একটা মন্দিরের চারপাশে ভিড়। লোকটা হারিয়ে গেছে ভিড়ের মধ্যে।

মন্দিরটা পেরোতেই আবার দেখতে পেলাম তাকে। সে এবার গলিটার মধ্যে ঢুকেছে। প্রায় বিশ হাত তফাত রেখে আমরা তাকে অনুসরণ করে চললাম।

গলিটার দু’ দিকে দোকান, ছোট ছোট হোটেল, রেস্টোর‍্যান্ট। ‘পাই শপ’ কথাটা অনেক রেস্টোরান্টের গায়েই লেখা রয়েছে। ‘কলকাতায় পাইস হোটেল ছিল এক-কালে বলে জানি,’ চাপা গলায় মন্তব্য করলেন লালমোহনবাবু, ‘পাই শপ তো কখনও শুনিনি।’

আমি বললাম, ‘এ পাই টাকা-আনা-পাই না; পাই একরকম বিলিতি খাবার।’

একদল হিপি আসছে। গলিতে পাঁচমিশালি গন্ধ, তার বেশির ভাগটাই খাবারের। কয়েক মুহূর্তের জন্য একটা নতুন গন্ধ যোগ হল যখন হিপির দলটা আমাদের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। গাঁজা, ঘাম আর অনেক দিনের না-ধোয়া জামা-কাপড়ের গন্ধ।

‘এই রে!’

কথাটা লালমোহনবাবু বলে উঠেছেন, কারণ লোকটা ডাইনে একটা দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।

কী করব এবার? লোকটা আবার বেরোবে নিশ্চয়ই। অপেক্ষা করব? যদি দেরি করে? হাতে আর পনেরো মিনিট সময়। বললাম, ‘চলুন যাই গিয়ে ঢুকি দোকানে। সে তো আমাদের চেনে না, ভয়টা কীসের?’

‘ঠিক বলেছ।’

তিব্বতি হ্যান্ডিক্র্যাফটের দোকান। মাঝারি দোকান, দরজা দিয়ে ঢুকেই সামনে একটা কাউন্টার। তার পাশে ফাঁক দিয়ে দোকানের পিছন দিকে যাওয়া যায়। পিছনে দরজা, তারও পিছনে একটা অন্ধকার ঘর।

সেই ঘরেই হয়তো গিয়ে থাকবেন নকল বাটরা, কারণ আমার কোনও যাবার জায়গা নেই।

‘ইয়েস?’

কাউন্টারের পিছনে দাঁড়ানো তিব্বতি মহিলা হাসিমুখে আমাদের দিকে চেয়ে প্রশ্নটা করলেন। তার পিছনে একটি মাঝবয়সী তিব্বতি পুরুষ, গালে অসংখ্য বলিরেখা, একটা চোখ একটু ছোট, বেঞ্চিতে বসে আছে ঝিম ভাব নিয়ে।

আমরা দোকানে ঢুকে পড়েছি, তাই মহিলার প্রশ্নের উত্তরে কিছু বলা দরকার। কিছু দেখতে চাইতে হবে, যেন কিনতে চাই এমন ভাব করে। জিনিসের অভাব নেই দোকানে—মুখোশ, তংখা, জপযন্ত্র, তামার ঘটিবাটি, ফুলদানি, মূর্তি।

‘আই লাইক মোমা,’ হঠাৎ কী কারণে যেন বলে বসলেন লালমোহনবাবু।

‘মোমমা ইউ গেট ইন টিবেটান রেস্টোরান্ট, নট হিয়ার।’

ইংরিজিটা মোটামুটি ভালই বলেন মহিলা।

‘নো নো নো,’ বললেন লালমোহনবাবু, মানে, আই ডোন্ট ওয়ন্ট টু ইট মোমো।’

মহিলার ভুরু বিশেষ না থাকলেও, যেটুকু আছে সেটুকু উপর দিকে উঠে গেছে।

‘ইউ লাইক মোমো, অ্যান্ড ইউ ডোন্ট ওয়ন্ট টু ইট মোমো?’

‘নো নো—মানে, নট নাউ। ইন হোটেল আই এট মোমো। নাউ আই ওয়ন্ট টু, মানে, নো হাউ—মানে…’

এর কোনও শেষ নেই, অথচ ভদ্রলোক কী বলতে চাইছেন সেটা বেশ বুঝতে পারছি।

লালমোহনবাবুর পিঠে হাত দিয়ে ওঁকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, ‘ডু ইউ হ্যাভ এ টিবেটান কুক-বুক?’

আমি জানতাম এ জিনিসটা দোকানে থাকবে না। মহিলাও মাথা নেড়ে ‘স্যরি’ বলে বুঝিয়ে দিলেন নেই।

‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলে বেরিয়ে এলাম দু’জনে। হাতে মিনিট আষ্টেক সময়। নকল-বাটরা-উধাও রহস্যটাকে হজম করে যে পথে গিয়েছিলাম সে পথে ফিরে এসে একজন লোকের কাছ থেকে দুটো নেপালি ক্যাপ কিনে সেগুলো মাথায় চাপিয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়েই দেখি পৌঁছে গেছি কালভৈরবের মূর্তির সামনে।

বাপ্‌রে কী ভয়াবহ মূর্তি! দিনের বেলা দেখেই গা শিউরে ওঠে, আর রাত্তিরে যখন লোক থাকে না তখন দেখলে না জানি কী হবে। এর কাছেই কোথায় যেন আবার একটা শ্বেতভৈরবের মূর্তি আছে, সেটাও এক সময় এসে দেখে যেতে হবে।

ফেলুদা এল মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই। থানার ফটক মূর্তির ঠিক সামনেই।

আমরা দু’জনেই নকল বাটরার ঘটনাটা বলার জন্য উদ্‌গ্রীব, কিন্তু ফেলুদার কী বলার আছে সেটা জানা দরকার, সে যে কেন থানায় গিয়েছিল সেটাই জানি না। বলল, ‘দিব্যি লোক ও সি মিঃ রাজগুরুং। বললেন নেপাল সরকার যদি ভারত সরকারের অনুরোধ রাখতে রাজি হয়, তা হলে মিঃ সোমের আততায়ীকে ধরার ব্যাপারে এরা সব রকম সাহায্য করবেন।’

‘দ্যাট ম্যান ইজ হিয়ার, ফেলুবাবু!’ আর চাপতে না পেরে বলে ফেললেন জটায়ু।

আমি ব্যাপারটা আরেকটু খুলে বললাম।

‘তুই ঠিক দেখেছিস বাঁ হাতে লাইটার ধরাল?’

‘আমরা দু’জনেই দেখেছি!’ বললেন জটায়ু।

‘ভেরি গুড’, বলল ফেলুদা। ‘মিঃ বাটরাকে কাল খবরটা দিতে হবে। ইয়ে, তোরা বরং বাজার-টাজার একটু ঘুরে দেখ, আমার হোটেলে গিয়ে দু-একটা। ফোন করার আছে।’

বুঝলাম কাঠমাণ্ডুতে এসে সাইট-সিইং ব্যাপারটা খুব বেশি হবে না ফেলুদার।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *