০৪. শপথ ও মানত অধ্যায় – হাদিস ৬১৬৮-৬২৫০

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৮ | 6168 | ٦۱٦۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ বকর (রাঃ) কখনও কসম ভঙ্গ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহ তা’আলা কসমের কাফফারা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলতেন আমি যেকোন ব্যাপারে কসম করি। এরপর যদি এর চেয়ে উত্তমটি দেখতে পাই তবে উত্তমটিই করি এবং আমার কসম ভজের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৯ | 6169 | ٦۱٦۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৯। আবূ নুমান মুহাম্মাদ ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখতে পাও তবে স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে তার চেযে উত্তমটি অবলম্বন কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭০ | 6170 | ٦۱۷۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭০। আবূ নুমান (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) এর পিতা আবূ মূসা আশআরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা আশআরী সম্প্রদায়ের একদল লোকের সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম একটি বাহন সংগ্রহ করার জন্য। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর আমার কাছে এমন কোন জন্তু নেই যার উপর আরোহণ করা যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর আল্লাহ যতক্ষন চাইলেন, ততক্ষন আমরা সেখানে অবস্থান করলাম। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অতীব সুন্দর তিনটি উষ্ট্রী আনা হল। তিনি সেগুলোর উপর আমাদেরকে আরোহন করালেন। এরপর আমরা যখন চলতে লাগলাম তখন বললাম অথবা আমাদের মাঝে কেউ বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাদেরকে বরকত প্রদান করবেন না। কেননা, আমরা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাইতে এলাম তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করলেন। এরপর আমাদেরকে আরোহণ করালেন। চল আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাই এবং তাঁকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দেই। এরপর আমরা তার কাছে এলাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা আরোহণ করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছা মূতাবিক কোন কসম করি আর তা ব্যতীত অন্যটির মাঝে যদি মঙ্গল দেখি তখন কসমের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই। আর যেটা মঙ্গলকর সেটাই করে নেই এবং স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭১ | 6171 | ٦۱۷۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষ আগমনকারী আর কিয়ামতের দিন হব অগ্রগামী। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে কেউ আপন পরিজনের ব্যাপারে শপথকারী হলে আল্লাহর নিকট সে গুনাহগার হবে ঐ ব্যাক্তির তুলনায়, যে কাফফারা আদায় করে দেয় যা আল্লাহ তায়ালা অপরিহার্য করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭২ | 6172 | ٦۱۷۲

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭২। ইসহাক ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আপন পরিবারের ব্যাপারে কসম করে এর উপর অটল থাকে সে সবচেয়ে বড় গোনাহগার, যা কাফফারা দূর করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৩ | 6173 | ٦۱۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫০. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আল্লাহর কসম
৬১৭৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা একটি বাহিনী প্রেরণ করলেন আর তাদের আমীর নিযুক্ত করলেন উসামা ইবনু যায়িদকে। কতিপয় লোক তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচলা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচনামুখর হচ্ছ। ইতিপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বের ব্যাপারেও তোমরা সমালোচলা করেছিলে। আল্লাহর কসম! সে অবশ্যই নেতৃত্বের যোগ্য ছিল। আর মানুষের মাঝে সে আমার নিকট প্রিয়তম ব্যাক্তি ছিল। তারপরে নিশ্চয়ই এ উসামা অন্য সকল মামুষের চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৪ | 6174 | ٦۱۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৪। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসম ছিল مُقَلِّبِ الْقُلُوبِ বলা। অর্থাৎ অন্তরের পরিবর্তনকারীর (আল্লাহর) কসম।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৫ | 6175 | ٦۱۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৫। মূসা (রহঃ) … জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কায়সারের (রোম সম্রাট) পতনের পরে আর কোন কায়সার হবে না। কিসরা (পারস্যের বাদশাহ) এর যখন পতন হল তখনও তিনি বললেনঃ এরপর আর কোন কিসরা হবে না। কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান! অবশ্যই এদের দু’জনের অগাধ সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় তোমরা খরচ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৬ | 6176 | ٦۱۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিসরা যখন ধংস হবে তারপরে আর কোন কিসরা হবে না। আর কায়সার যখন ধ্বংস হবে তখন আর কোন কায়সার হবে না। কসম ঐ সত্তার। যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! এদের ধন-সম্পদ অবশ্যই তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৭ | 6177 | ٦۱۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৭। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মাদী আল্লাহর কসম! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে-এবং অধিক ক্রন্দন করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৮ | 6178 | ٦۱۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর হাত ধরেছিলেন। উমর (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার প্রাণ ব্যতীত আপনি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এমন কি তোমার কাছে তোমার প্রাণের চেয়েও আমাকে অধিক প্রিয় হতে হবে। তখন উমর (রাঃ) তাকে বললেনঃ এখন আল্লাহর কসম! আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! এখন (তোমার ঈমান ণূর্ণ হয়েছে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৯ | 6179 | ٦۱۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেছেন, একদা দু’ব্যাক্তি ঝগড়া করতে করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো। তন্মধ্যে একজন বলল, আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে আমাদের মাঝে মীমাংসা করে দিন। দু’জনের মাঝে (অপেক্ষাকৃত) বুদ্ধিমান দ্বিতীয় লোকটি বলল, হ্যাঁ। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে মীমাংসা করে দিন। আর আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। লোকটি বললঃ আমার পুত্র এ লোকটির নিকট চাকর হিসাবে ছিল। (মালিক বলেন, عَسِيف শব্দের অর্থ চাকর) আমার পূত্র এর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যাভিচার করেছে। লোকেরা বলেছে যে, আমার পুত্রের (শাস্তি) রজম হবে। সুতরাং আমি একশ’ বকরী ও একটি বাঁদী নিয়ে তার ফিদইয়া প্রাদান করেছি।

এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা আমাকে জানালেন যে, আমার পুত্রের একাশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের দেশান্তর হবে। আর রজম হবে এর স্ত্রীর। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রান! আমি তোমাদের উভয়ের মাঝে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব ভিত্তিক মীমাংসা করে দেব। তোমার বকরী ও বাদী তোমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি তাঁর পুত্রকে একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করলেন। আর উনায়স আসলামীকে হুকুম করা হল অপর লোকটির স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য। সে যদি (ব্যাভিচার) স্বীকার করে তরে তাকে রজম করতে। সে তা স্বীকার করল, সুতরাং তাকে রজম (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮০ | 6180 | ٦۱۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আসলাম, গিফার, মুযায়না এবং জুহায়না বংশ যদি তামীম, আমির ইবনু সাসা’আ, গাতফান ও আসা’দ বংশ থেকে উত্তম হয় তা হলে তোমাদের কেমন মনে হয়? তারা তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাহাবাগন বললেনঃ হ্যাঁ, তখন তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান। নিশ্চয়ই তারা এদের চেয়ে উত্তম!

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮১ | 6181 | ٦۱۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে রাজস্ব আদায়কারী নিযুক্ত করে পাঠালেন। সে কাজ শেষ করে তাঁর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা আপনার জন্য আর এ জিনিসটি আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মা-বাবার ঘরে বসে রইলে না কেন? তা হলে তোমার জন্য হাদিয়া পাঠাত কি না তা দেখতে পেতে? এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার ওয়াক্তের সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাশাহুদ পাঠ করলেন ও আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রসংসা করলেন। এরপর বললেনঃ রাজস্ব আদায়কারীর অবস্থা কি হল? আমি তাকে নিযুক্ত করে পাঠালাম আর সে আমাদের কাছে এসে বলছে, এটা সরকারী রাজস্ব আর এ জিনিস আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। সে তার বাবা-মার ঘরে বসে রইল না কেন? তা হলে দেখত তার জন্য হাদিয়া দেওয়া হয় কি না?

ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ, তোমাদের মাঝে কেউ যদি কোন বস্তুতে সামান্যতম খিয়ানত করে, তা হলে কিয়ামতের দিন সে ঐ বস্তুটিকে তার কাঁধে বহন করা অবস্থায় আসবে। সে। বস্তুটি যদি উট হয় তা হলে উট আওয়াজ করতে থাকবে। যদি গরু হয় তবে হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে। আর যদি বকরী হয় তরে বকরী আওয়াজ করতে থাকবে। আমি পৌছিয়ে দিলাম। রাবী আবু হুমায়দ বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হস্ত মুবারক এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমরা তার দু’কানের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। আবু হুমায়দ বলেনঃ এ কথাগুলো যায়িদ ইবনু সাবিতও আমার সঙ্গে শুনেছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে। সুতরাং তোমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮২ | 6182 | ٦۱۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮২। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়ারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূল কাসিম বলেছেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদ এর প্রাণ! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তা হলে তোমরা অবশ্যই অধিক ক্রন্দন করতে আর অল্প হাসতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৩ | 6183 | ٦۱۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৩। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তখন তিনি কা’বা গৃহের ছায়ায় বসে বলছিলেনঃ কা’বা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। কাবা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। আমি বললাম, আমার অবস্থা কি? আমার মাঝে কি কিছু (ক্রটি) পরিলক্ষিত হয়েছে? তিনি বলছিলেন, এমন অবস্থায় আমি তার কাছে বসে পড়লাম। আমি তাকে থামাতে পারলাম না। যতক্ষনের জন্য আল্লাহ চাইলেন আমি চিন্তায় আচ্ছন্ন রইলাম। এরপর আমি আরয করলাম, আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান। ঐ সমস্ত লোক কারা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এরা হল ঐ সকল লোক যারা অধিক সম্পদের অধিকারী। তবে হ্যাঁ, ঐ সমস্ত লোক স্বতন্ত্র যারা এরূপ, এরূপ ও এরূপ (ক্ষেত্রে খরচ করে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৪ | 6184 | ٦۱۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আমি আজ রাতে নব্বইজন স্ত্রীর সাথে মিলিত হব, যারা প্রত্যেকেই একটি করে সন্তান জন্ম দেবে, যারা হবে অশ্বারোহী; জিহাদ করবে আল্লাহর রাস্তায়। তাঁর সঙ্গী বলল, ইনশাআল্লাহ (বলুন)। তিনি ইনশাআল্লাহ বললেন না। অতঃপর তিনি সকল স্ত্রীর সলেই মিলিত হলেন। কিন্তু কেবলমাত্র একজন স্ত্রীই গর্ভবতী হলেন, তাও এক অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ প্রাণ। তিনি যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন, তাহলে সকলেই আরোহী হয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৫ | 6185 | ٦۱۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৫। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একদা রেশমের এক টুকরা বস্ত্র হাদিয়া পাঠানো হল। লোকেরা তার সৌন্দর্য ও মসৃনতা দেখে অবাক হয়ে পর্যায়ক্রমে হাতে নিয়ে দেখছিল। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এটি দেখে অবাক হচ্ছ? তাঁরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম। যার হাতের মুঠোয় আমার প্রান। নিশ্চয়ই জান্নাতে সা’দের রুমাল এর চেয়েও উত্তম হবে। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ তবে শুবা এবং ইসরাঈল আবূ ইসহাক থেকে যে বর্ণনা করেছেন তাতে وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ কথাটি বলেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৬ | 6186 | ٦۱۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হিন্দা বিনত উতবা ইবনু রাবীআ (একদা) বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ এমন এক সময় ছিল যখন ভূ-পৃষ্টে যারা বাস করছে তাদের মাঝে আপনার অনুসারী যারা তারা লাঞ্ছিত হোক এটা আমি খুবই পছন্দ করতাম। (এখানে বর্ণনার মাঝে তিনি أَخْبَاءٍ বলেছেনঃ, না خِبَاءٍ বলেছেনঃ এ সম্পর্কে রাবী ইয়াহইয়ার সন্দেহ রয়েছে।) কিন্তু আজ আমার কাছে এর চেয়ে অধিক প্রিয় কিছুই নেই যে, তাবুতে বসবাসকারীদের মাঝে আপনার অনুসারীরা সম্মানিত হোক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ। এ মর্যাদা আরও বর্ধিত হোক। হিন্দা বললোঃ আবূ সুফিয়ান নিশ্চয়ই একজন কৃপন লোক। তার মাল থেকে (তার পরিজনকে) কিছু খাওয়ালে এতে কি আমার কোন অন্যায় হবে? তিনি বললেনঃ না। তবে তা (শরীয়তসম্মত) পন্থায় হতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৭ | 6187 | ٦۱۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৭। আহমাদ ইবনু উসমান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় ইয়ামানী চামড়ার কোন এক তাবুতে তার পৃষ্ট মুবারক হেলান দিয়েছিলেন। তখন তিনি তাঁর সাহাবীদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি আছ? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি নও! তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! নিশ্চয়ই আমি কামনা করি তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৮ | 6188 | ٦۱۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কোন এক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তিকে قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ‏ পাঠ করতে শুনলেন। তিনি তা বারংবার পাঠ করছিলেন। প্রভাত হলে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলেন এবং এ সম্পর্কে তার কাছে উল্লেখ করলেন। আর উক্ত ব্যাক্তি যেন উক্ত সুরা তিলাওয়াতকে কম গুরত্ব দিচ্ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই এ সূরা কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৯ | 6189 | ٦۱۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৯। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, তোমরা রুকু ও সিজদা পূর্নভাবে আদায় কর। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমরা যখন রুকু এবং সিজদা কর তখন আমি তোমাদেরকে আমার পিছন থেকে দেখতে পাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯০ | 6190 | ٦۱۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৯০। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আনসার সম্প্রদায়ের জনৈক নারী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হল; সঙ্গে ছিল তার সন্তান-সন্ততি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মানুষের মাঝে তোমরা আমার নিকট সর্বধিক প্রিয়। তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯১ | 6191 | ٦۱۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর ইবনু খাত্তার (রাঃ) কে কোন বাহনের উপর আরোহণ অবস্হায় পেলেন। তিনি তখন তাঁর পিতার নামে কসম করছিলেন। তিনি বললেনঃ সাবধান। আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতৃপূরুষদের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ যদি কসম করতে চায় সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে নতুবা চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯২ | 6192 | ٦۱۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯২। সাঈদ ইবনু ওফায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পিতা-পিতামহের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। উমর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, তখন থেকে আমি সেচ্ছায় বা ভুলক্রমে তাদের নামে কসম করিনি। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেনঃ ‏أَوْ أَثَرَةٍ مِنْ عِلْمٍ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানগত বিষয় নকল করা। অনুরূপ উকায়ল, যুবায়দী ও ইসহাক কালবী (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু উয়ায়নাহ … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৩ | 6193 | ٦۱۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা-পিতামহগণের নামে কসম করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৪ | 6194 | ٦۱۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের গোত্র জারাম এবং আশআরী গোত্রের মাঝে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমরা (একদা) আবূ মূসা আশ আরীর সঙ্গে ছিলাম। তার কাছে খাবার পেশ করা হল, যার মাঝে ছিল মুরগীর গোশত। তাইমিলাহ গোত্রের এক লাল রঙের ব্যাক্তি তাঁর কাছে ছিল। সে দেখতে গোলামদের মত। তিনি তাকে খাবারে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান করলেন। তখন সে লোকটি বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু খেতে দেখেছি যার কারণে আমি একে ঘৃণা করছি। তাই আমি কসম করেছি যে, মুরগী আর খাব না। তিনি বললেনঃ ওঠ, আমি এ সম্পর্কে অবশ্যই তোমাকে একখানা হাদীস বলব। একদা আমি কতিপয় আশআরীর সঙ্গে বাহন সংগ্রহের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর বাহন যোগ্য এমন কিছুই আমার কাছে নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গনীমতের কিছু জন্তু এল। তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং বললেনঃ আশআরী লোক গুলো কোথায়? এরপর আমাদের জন্য পাচটি উৎকৃষ্ট মানের সুদানি উট দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করলেন।

আমরা যখন চলে গেলাম তখন চিন্তা করলাম আমরা এ কি করলাম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো কসম করেছিলেন আমাদেরকে বাহন দেবেন না বলে। আর তার কাছে কোন বাহন তো ছিলও না। কিন্তু এরপর তিনি তো আমাদেরকে আরোহণের জন্য বাহন দিলেন। আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসমের কথা ভুলে গিয়েছি। আল্লাহর কসম! এ বাহন আমাদের কোন কল্যাণে আসবে না। সুতরাং আমরা তার কাছে ফিরে গেলাম এবং তাকে বললাম যে আমাদেরকে আপনি আরোহন করাবেন এ উদ্দেশ্যে আমরা তো আপনার কাছে এসেই ছিলাম। আপনি কসম করেছিলেন যে আপনি আমাদেরকে কোন বাহন দিবেন না। আর আপনার কাছে এমন কোন কিছু ছিলও না, যাতে আমাদেরকে আরোহন করাতে পারেন। তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন কোন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে যদি অধিক মঙ্গল দেখতে পাই তা হলে যা মঙ্গল তাই বাস্তবায়িত করি এবং আমি কসম ভঙ্গ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৫ | 6195 | ٦۱۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৩. লাত, উযযা ও প্রতিমাসমূহের নামে কসম করা যায় না
৬১৯৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি কসম করে এবং বলে, লাত ও উযযার কসম, তখন সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ আর যে ব্যাক্তি তার সঙ্গীকে বলে “এস জুয়া খেলি”, তখন এর জন্য তার সাদাকা করা উচিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৬ | 6196 | ٦۱۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৪. কেউ যদি কোন বস্তুর কসম করে অথচ তাকে কসম দেয়া হয়নি
৬১৯৬। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বর্নের আংটি তৈয়ার করালেন এবং তিনি তা পরিধান করতেন। পরিধানকালে তার পাখরটি হাতের ভিতরের দিকে রাখলেন। তখন লোকেরাও (এরূপ) করল। এরপর তিনি মিস্বরের উপর বসে তা খুলে ফেললেন এবং বললেনঃ আমি এ আংটি পরিধান করেছিলাম। এবং তার পাথর হাতের ভিতরের দিকে রেখেছিলাম। অতঃপর তিনি তা ছুড়ে ফেলে দিলেন। আর বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি এ আংটি আর কোনদিন পরিধান করব না! তখন লোকেরাও আপন আপন আংটিগুলো খুলে ফেলল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৭ | 6197 | ٦۱۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৫. কেউ যদি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করে। নাবী (সাঃ) বলেছেন ”কেউ যদি লাত ও উযযার কসম করে তবে সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ এতে কুফরীর দিকে তার সম্পর্ক বোঝায় না
৬১৯৭। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … সাবিত ইবনু যিহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করলে সেটা ঐ রকমই হবে যে রকম সে বলল। তিনি (আরও বলেন) কোন ব্যাক্তি যে কোন জিনিসের মাধ্যমে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনে তাকে ঐ জিনিস শাস্তি দেয়া হবে। কোন মুমিনকে লানত করা তার হত্যা তুল্য। আবার কোন মুমিনকে কুফরীর অপবাদ দেওয়াও তার হত্যা তুল্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৮ | 6198 | ٦۱۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৬. “যা আল্লাহ চান ও তুমি চাও” বলবে না। “আমি আল্লাহর সাথে এরপর তোমার সাথে” এরূপ বলা যাবে কি?
৬১৯৮। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, বনী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের তিন ব্যাক্তিকে আল্লাহ তা’আলা পরীক্ষা করতে চাইলেন এবং একজন ফেরেশতা পাঠালেন। ফেরেশতা কুষ্ঠরোগীর কাছে এল। সে বলল, আমার যাবতীয় উপায়-উপকরণ ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আমার জন্য আল্লাহ ছাড়া, অতঃপর তুমি ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৯ | 6199 | ٦۱۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬১৯৯। কাবীসা ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে কসম পূর্ণ করতে হুকুম করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০০ | 6200 | ٦۲۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০০। হাফস ইরন উমর (রহঃ) … উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা উসামা ইবনু যায়িদ, সা’দ ও উবাই (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক কন্যা তাঁর কাছে এ মর্মে খবর পাঠালেন যে, আমার পুত্র মরনাপন্ন অবস্থায় আছে। সুতরাং তিনি যেন আমাদের কাছে তশরীফ আনেন। তিনি উত্তরে সালামের সাথে এ কথা বলে পাঠালেন যে, আল্লাহ তা’আলা যা দান করেন আর যা নিয়ে নেন সব কিছুই তো আল্লাহর জন্য। আর সব কিছুই আল্লাহর নিকট নির্ধারিত আছে। অতঃপব তোমার জন্য ধৈর্য ধারণ করা এবং পুণ্য মনে করা উচিত।

এরপর তার কন্যা কসম দিয়ে আবার খবর পাঠালেন। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম। (সেখানে পৌছে) তিনি যখন বসলেন, সন্তানটি তাঁর সামনে আনা হল। তিনি তাকে নিজের কোলে নিয়ে বসালেন আর শিশুটির শ্বাস নিঃশেষ হয়ে আসছিল। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে এলো। তখন সা’দ বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কি ব্যাপার? তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের মাঝে যাকে ইচ্ছা তার মনের ভিতরে দিয়ে থাকেন। আর আল্লাহ তা’আলা তো কেবলমাত্র তাঁর দয়াদ্র বান্দাদের ওপরই দয়া করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০১ | 6201 | ٦۲۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে মুসলমানের তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে (সে যদি ধৈর্য ধারণ করে) তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না, হ্যাঁ, কসম পূর্ণ করার জন্য (জাহান্নামের উপর দিয়ে পুলসিরাত) অতিক্রম করতে যতটুকু সময় লাগে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০২ | 6202 | ٦۲۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০২। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের সম্পর্কে অবহিত করব না? তারা হবে দুনিয়াতে দুর্বল, মাজলুম। তারা যদি কোন কথায় আল্লাহর ওপর কসম করে ফেলে তবে আল্লাহ তা’আলা তা পূর্ণ করে দেন। আর যারা জাহান্নামে যাবে তারা হবে অবাধ্য, ঝগড়াটে ও অহংকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৩ | 6203 | ٦۲۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০৩। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একদা প্রশ্ন করা হল যে, সর্বোত্তম মানুষ কে? তিনি বললেনঃ আমার সময়ের মানুষ। এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। এরপরে এমন লোক (পৃথিবীতে) আসবে যে তাদের সাক্ষী কসমের উপর অগ্রগামী হবে, আর কসম সাক্ষীর উপর অগ্রগামী হবে। রাবী ইবরাহীম বলেন যে, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের সাথীরা সাক্ষী এবং অঙ্গীকারের সাথে কসম করতে নিষেধ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৪ | 6204 | ٦۲۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৯. আল্লাহ তা’আলার নামে অঙ্গীকার করা
৬২০৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন মুসলমান ব্যাক্তির মাল আত্মসাৎ করার জন্য অথবা বলেছেনঃ তার ভাইয়ের মাল আত্নসাৎ করার জন্য যে ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহ তা’আলার সাথে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন। এ কথারই সত্যয়নে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে (পরকালে তাদের কোন অংশ নেই)।

বারী সুলায়মান তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেনঃ আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) যখন পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন জিজ্ঞাসা করেন, আবদুল্লাহ তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? উত্তরে লোকেরা তাকে কিছু বলল। তখন আশআছ (রাঃ) বললেনঃ এ আয়াত তো আমার আর আমার এক সঙ্গীর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আমাদের দু’জনের মাঝে একটি কুপের ব্যাপারে ঝগড়া ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৫ | 6205 | ٦۲۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৫। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ (আল্লাহ) আমি তোনার ইজ্জতের আশ্রয় চাই।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন) জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি যানে থাকবে। সে তখন আরয করবে, হে প্রভু! আমার চেহারাটি জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও। তোমার ইজ্জতের কসম। এ ছাড়া আর কিছুই আমি তোমার কাছে চাইব না। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ এ পুরস্কার তোমার আর এরূপ দশ গুণ। আবূ আইউব (রাঃ) বলেন, তোমার ইজ্জতের কসম! তোমার বরকত থেকে আমি অমুখাপেক্ষী নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৬ | 6206 | ٦۲۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৬। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম সর্বদাই বলতে থাকবে- আরও কি আছে? এমন কি রাবুল ইজ্জত তাতে তাঁর পা রাখবেন। ‘বাস, বাস’ জাহান্নাম বলবে, তোমার ইজ্জতের কসম! সেদিন তার একাংশ অপরাংশের সাথে মিলিত হয়ে যাবে। শুবা, কাতাদা (রহঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৭ | 6207 | ٦۲۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬১. কোন ব্যক্তির لَعَمْرُ اللَّهِ বলা। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, لَعَمْرُكَ মানে لَعَيْشُكَ অর্থাৎ তোমার জীবনের কসম
৬২০৭। ওয়াইসী ও হাজ্জাজ (রহঃ) … ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) এর অপবাদ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অপবাদ রটনাকারীরা যখন তাঁর সম্পর্কে যা ইচ্ছে তাই অপবাদ করল, তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁকে পুত-পবিত্র বলে প্রকাশ করে দিলেন। রাবী বলেনঃ উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই হাদীসের এক একটি অংশ আমার কাছে বর্ণনা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান হলেন এবং আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন। এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা সম্পর্কে বললেনঃ আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমরা তাকে হত্যা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৮ | 6208 | ٦۲۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬২. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করবেন। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, ধৈর্যশীল (২ঃ ২২৫)
৬২০৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ আয়াত- খানা لاَ وَاللَّهِ (না, আল্লাহর কসম) এবং بَلَى وَاللَّهِ‏ (হ্যাঁ, আল্লাহর কসম) এ জাতীয় কথা বলা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৯ | 6209 | ٦۲۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২০৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) অত্র হাদীস মারফূ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মাতের সে সমস্ত ওয়াসওয়াসা মাফ করে দিয়েছেন যা তাদের মনে উদয় হয় বা যে সব কথা মনে মনে বলে থাকে; যতক্ষন না তা কাজে পরিণত করে বা সে সম্পর্কে কারও কাছে কিছু বলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১০ | 6210 | ٦۲۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১০। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন খুতবা দিতেছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলালাহ! আমি ধারণা করলাম যে, অমুক অমুক রুকনের পূর্বে অমুক অমুক রুকন হবে। এরপর অপর এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! অমুক অমুক আমলের পূর্ব অমুক আমল হবে, (অর্থাৎ তারা যবেহ, হলক ও তাওয়াফ) এই তিনটি কাজ সম্পর্কে জানতে চাইল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ করতে পার, কোন দোষ নেই। ঐ দিন যে সম্পর্কেই জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ করতে পার কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১১ | 6211 | ٦۲۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরয করল যে, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যিয়ারত করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। আরেক ব্যাক্তি বলল, আমি তো যবেহ করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। অপর ব্যাক্তি বলল, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যবেহ করে ফেলেছি! তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১২ | 6212 | ٦۲۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১২। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মসজিদের এক কোণে অবস্হান করছিলেন। লোকটি তাঁর কাছে এসে তাকে সালাম করল। তিনি বললেনঃ ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তখন সে ফিরে গেল এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল। পুনরায় এসে তাঁকে সালাম করল। তিনি উত্তরে বললেনঃ তোমার উপরও সালাম। তুমি ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তৃতীয়বার লোকটি বলল, দয়া করে আমাকে অবহিত করে দিন। তিনি ইরশাদ করলেনঃ যখন তুমি সালাতে দণ্ডায়মান হবে তখন খুব ভালভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে। এরপর কিবলামুখী হবে। তারপর তাকবীরে তাহরীমা বলবে। এরপর কুরআন মজীদ থেকে যা তোমার জন্য সহজ তিলাওয়াত করবে। এরপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। এরপর মাথা উত্তোলন করবে। এমনকি সঠিকভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীরস্হিরভাবে। এরপর (সিজদা থেকে) মাথা উত্তোলন করবেঃ এমন কি সোজা হয়ে এবং ধীরস্থিরভাবে বসে যাবে। এরপর পূনরায় সিজদা করবে ধীরস্থিরভাবে। তারপর সিজদা থেকে মাথা উত্তোলন করবে। এমন কি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর তোমার সমস্ত সালাত (নামায/নামাজ)ই এরূপ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৩ | 6213 | ٦۲۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৩। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উহুদের যুদ্ধে মুশরিকরা প্রকাণ্ডভাবে পরাজয় বরণ করে। ইবলিস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা পিছনের দিকে ফির। এতে সামনের লোকগুলো পিছনের দিকে ফিরল। তারপর পিছনের লোকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। হুযায়ফা ইবনু ইয়ামন (রাঃ) আকস্মিক তার পিতাকে দেখে মুসলমানদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ এ তো আমার পিতা, আমার পিতা। আল্লাহর কসম! তারা ফিরল না। পরিশেষে তারা তাকে হত্যা করল। হুযায়ফা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর কসম! মৃত্যু পর্যন্ত হুযায়ফা (রাঃ) এর নিকট তার পিতার মৃত্যুটি মানসপটে বিদ্যমান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৪ | 6214 | ٦۲۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৪। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সায়িম ভুলক্রমে কিছু আহার করে সে যেন তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ন করে। কেননা, আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৫ | 6215 | ٦۲۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৫। আদম ইবনু আবু ইয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। প্রথম দু’রাকাআতের পর না বসে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকলেন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলে লোকেরা তার সালামের অপেক্ষা করছিল। তিনি আল্লাহু আকবার বলে সালামের পূর্বে সিজদা করলেন। এরপর মাথা উত্তলোন করলেন। আবার আল্লাহু আকবার বলে সিজদা করলেন। এরপর আবার মাথা উত্তোলন করলেন এবং সালাম ফিরালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৬ | 6216 | ٦۲۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি সালাতে কিছু অধিক করলেন অথবা কিছু কম করলেন। মানসুর বলেন, এই কম-বেশির ব্যাপারে সন্দেহ ইবরাহীমের না আলকামার তা আমার জানা নেই। রাবী বলেন আরয করা হল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ) এর মাঝে কি কিছু কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? তিনি বললেনঃ কি হয়েছে? সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি এভাবে এভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দুটি সিজদা করেন। এরপর বললেন, এ দুটি সিজদা ঐ ব্যাক্তির জন্য যার স্মরণ নেই যে, সালাতে সে কি বেশি কিছু করেছে, না কম করেছে। এমন অবস্থায় সে চিন্তা করবে (প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে)। আর যা বাকি থাকবে তা পুরা করে নেবে! এরপর দু টি সিজদা আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৭ | 6217 | ٦۲۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৭। আল হুমায়দী (রহঃ) … উবাই ইবনু কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আল্লাহর বাণীঃ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا‏ (মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না ও আমার ব্যাপারে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।) সম্পর্কে শুনেছেন। তিনি বলেছেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর প্রথমবারের (প্রশ্ন উত্থাপনটা) ভুলবশত হয়েছিল।

আবূ আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আমাদের কাছে মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার … শাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন যে, বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) এর নিকট কয়েকজন অতিথি ছিল। তিনি তাঁর পরিবার-পরিজনকে তাদের জন্য সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তন করার পুর্বে কিছু যবেহ করতে হুকুম করলেন, যেন ফিরে এসেই তাঁরা আহার করতে পারেন। তখন পরিবারের লোকেরা সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তনের পুর্বেই (কুরবানীর পশু) যবেহ করলেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লোকেরা এ সম্পর্কে বর্ণনা করল। তিনি পুনরায় যবেহ করার জন্য হুকুম করলেন। বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা আছে যা দুটি বড় বকরীর গোশতের চেয়েও উত্তম।

ইবনু আউন শাবীর মাধ্যমে বর্ণনা করতে গিয়ে এ স্থানটিতে থেমে যেতেন। তিনি মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে এর অনুরূপ বর্ণনা করতেন এবং এ স্থানে থেমে যেতেন। আর বলতেন, আমার জানা নেই তিনি ছাড়া অন্য কারও জন্য তদ্রূপ অনুমতি আছে কিনা? আইউব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৮ | 6218 | ٦۲۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি (এক ঈদের দিন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি (সালাত (নামায/নামাজ) শেষে) খুতবা প্রদান করলেন। এরপর বললেনঃ যে ব্যাক্তি (সালাত (নামায/নামাজ) এর পূর্বেই) যবেহ করে ফেলেছে তার উচিত যেন তার পরিবর্তে আরেকটি যবেহ করে নেয়। আর যে এখনও যবেহ করেনি সে যেন আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৯ | 6219 | ٦۲۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৪. মিথ্যা কসম। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) পরস্পর প্রবঞ্চনা করার জন্য তোমরা তোমাদের শপথকে ব্যবহার করো না। করলে পা স্থির হওয়ার পর পিছলিয়ে যাবে। আর তোমাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি (১৬ঃ ৯৪) পর্যন্ত। دخلا দ্বারা প্রবঞ্চনা ও খিয়ানত উদ্দেশ্য।
৬২১৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমুহের (অন্যতম) হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে শরীক করা, পিতামাতার নাফরমানী করা, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২০ | 6220 | ٦۲۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৫. আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করে আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি … পর্যন্ত (৩ঃ ৭৭)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তোমাদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে অযুহাত করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২২৪) এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (১৬ঃ ৯৫)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর এবং তোমরা শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না (১৬ঃ ৯১) আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬২২০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি যদি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে মিথ্যা কসম করে তবে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আল্লাহ তা’আলা এ কথার সমর্থনে আয়াত ‏إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً‏ নাযিল করেন। এরপর আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) প্রবেশ করে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আবু আবদুর রহমান তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? লোকেরা বলল, এরূপ এরূপ। তখন তিনি বললেনঃ এ আয়াত আমার সম্পর্কে নাযিল করা হয়েছে। আমার চাচাতো ভাই এর জমিতে আমার একটি কূপ ছিল। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হলাম। তিনি বললেনঃ তুমি প্রমাণ উপস্থাপন কর অথবা সে কসম করুক! আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কথার উপরে সে তো কসম খেয়েই ফেলবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে কসম করে, অথচ সে তাতে মিথ্যাবাদী তবে কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২১ | 6221 | ٦۲۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২১। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাকে আমার সাথীগণ (একদা) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রেরণ করল তাঁর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন কিছুই আরোহণের জন্য দিতে পারব না। তখন আমি তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। এরপর যখন আমি তার কাছে এলাম, তিনি বললেনঃ তুমি তোমার সঙ্গীদের কাছে চলে যাও এবং বল যে, নিশ্চই আল্লাহ অথবা আল্লাহর রাসুল তোমাদের আরোহণের জন্য বাহনের ব্যবস্হা করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২২ | 6222 | ٦۲۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২২। আবদুল আযীয ও হাজ্জাজ (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) সম্পর্কে অপবাদ বর্ণনাকারীরা যা বলেছিল তা শুনতে পেলাম। আল্লাহ তা’আলা এ মর্মে তাঁর নিস্কুলষতা প্রকাশ করে দিয়েছেন। উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই আমার নিকট উল্লিখিত ঘটনার অংশ বিশেষ বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ যখন আল্লাহ ‏إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ থেকে দশখানা আয়াত আমার নিস্কুলষতা প্রকাশ করণার্থে নাযিল করেছেন। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) আত্নীয়তার সম্পর্কের কারণে মিসতাহ ইবনু সালামার ভরণ-পোষণ করতেন। অপবাদ প্রদানের কারণে আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! মিসতাহ যখন আয়িশার ব্যাপারে অপবাদ রটিয়েছে; এরপর আমি আর তার জন্য কখনও কিছু খরচ করব না। তখন আল্লাহ তা’আলা وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَى‏ এ আয়াত নাযিল করেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিন এটা আমি নিশ্চয়ই পছন্দ করি। তিনি পুনরায় মিসতাহের ভরণ-পোষণের জন্য ঐ খরচ দেওয়া শুরু করলেন, যা তিনি পূর্বে তাকে দিতেন এবং তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তার খরচ দেওয়া আর কখনও বন্ধ করব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৩ | 6223 | ٦۲۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২৩। আবু মামার (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কতিপয় আশআরী লোকের সঙ্গে (বাহন চাওয়ার জন্য) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলাম। যখন উপস্থিত হলাম, তখন তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। আমরা তাঁর কাছে বাহন চাইলাম। তিনি কসম করে বললেন যে, আমাদেরকে বাহন দিবেন না। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম আমি কোন কিছুর ওপর আল্লাহর ইচ্ছা মুতাবিক যখন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই; তাহলে যেটা মঙ্গলকর সেটাই করি আর কসমকে ভঙ্গ করে ফেলি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৪ | 6224 | ٦۲۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ তালিবের যখন মৃত্যু উপস্থিত হল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে তশরীফ আনলেন এবং বললেনঃ আপনি لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ কলেমাটি বলুন। আমি আল্লাহ তা’আলার নিকট আপনার ব্যাপারে এর মাধ্যমে সুপারিশ করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৫ | 6225 | ٦۲۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি কলেমা এমন যা জিহবাতে অতি হালকা অথচ মীযানে ভারী আর রাহমানের নিকট খুব পছন্দনীয়; তা হলঃ সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৬ | 6226 | ٦۲۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কলেমা বললেন। আর আমি বললাম, অন্যটি। তখন তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে মৃত্যু বরন করবে তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। আমি অপরটি বললাম, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক না করে মৃত্যৃবরণ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৭ | 6227 | ٦۲۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৮. যে ব্যাক্তি এ মর্মে কসম করে যে, স্বীয় স্ত্রীর কাছে একমাস গমন করবে না আর মাস যদি হয় উনত্রিশ দিনে
৬২২৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের ব্যাপারে ঈলা (কসম) করলেন। আর তখন তাঁর কদম মুবারক মচকে গিয়েছিল। তিনি তখন উনত্রিশ দিন কুঠরীতে অবস্থান করেছিলেন। এরপর তিনি নেমে এলেন (স্ত্রীগণের কাছে ফিরে এলেন) লোকেরা তখন জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো এক মাসের ঈলা করেছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ মাস তো কখনও ঊনত্রিশ দিনেও হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৮ | 6228 | ٦۲۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৮। আলী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ উসায়দ (রাঃ) বিবাহ করলেন। তার (ওলীমায়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলেন। আর তখন তার নব বিবাহিতা স্ত্রী তাঁদের খেদমত করছিলেন। সাহল (রাঃ) তার কাওমের লোকদেরকে বললেনঃ তোমরা কি জানো সে মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি পান করিয়েছিল? সে রাত্রি বেলা একটি পাত্রে তার জন্য খেজুর ভিজিয়ে রেখেছিল। এমনিভাবে সকাল হয়। আর সেগুলই সে তাঁকে পান করাল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৯ | 6229 | ٦۲۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী সাওদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমাদের একটি বকরী মরে গেল। আমরা এর চামড়া দাবাগাত করে নিলাম। এরপর থেকে তাতে সর্বদাই আমরা নাবীয প্রস্তুত করতাম। এমন কি তা পুরাতন হয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩০ | 6230 | ٦۲۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ পরিবার তরকারী মিশ্রিত গমের রুটি একাধারে তিনদিন পর্যন্ত খেয়ে পরিতৃপ্ত হননি। এভাবে তিনি আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবীস (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এই হাদীসটি আয়িশা (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩১ | 6231 | ٦۲۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আবূ তালহা (রাঃ) উম্মে সুলায়ম (রাঃ) কে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূর্বল আওয়াজ শুনতে পেলাম, যার মাঝে আমি ক্ষুধার আভাষ পেলাম। তোমার কাছে কি কিছু আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি কয়েকটি যবের রুটি বের করলেন। এরপর তার ওড়নাটি নিলেন এবং এর কিছু অংশে রুটিগুলি পেঁচিয়ে নিলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। আমি গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে পেলাম। এবং কতিপয় লোক তাঁর সঙ্গে রয়েছে। আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাকে কি আবূ তালহা গাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদেরকে বললেনঃ উঠ (আবূ তালহার কাছে যাও)। তখন তাঁরা আবূ তালহার নিকট চললেন। আমি তাদের আগে আগে যেতে লাগলাম। অবশেষে আবূ তালহার কাছে এসে উপস্থিত হলাম এবং তাকে এ সম্পর্কে খবর দিলাম। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বলল, হে উম্মে সুলায়ম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তো আমাদের কাছে তশরীফ এনেছেন অথচ আমাদের নিকট তো এমন কোন খাদ্যই নেই যা তাদের খেতে দিতে পারি। উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, আল্লাহ ও তার রাসুলই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন।

আবূ তালহা (রাঃ) রেরিয়ে এলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ তালহা (রাঃ) উভয়ই সামনাসামনি হলেন এবং উভয়ই একত্রে ঘরে প্রবেশ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মে সুলায়ম! তোমার কাছে যা আছে তাই নিয়ে এসো। তখন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) ঐ রুটিগুলি তার সামনে পেশ করলেন। রাবী বলেনঃ এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ রুটিগুলি ছিড়ার জন্য হুকুম করলেন। তখন রুটিগুলি টুকরা টুকরা করা হল।

উম্মে সুলায়ম (রাঃ) তার ঘি এর পাত্র থেকে ঘি নিংড়ে বের করলেন এবং তাতে মিশ্রিত করে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু পাঠ করলেন এবং বললেনঃ দশজন লোককে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তারা সকলেই আহার করলেন, এমন কি সবাই পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থকে বের হলেন। এরপর তিনি আবার বললেনঃ (আরও) দশজনকে অনুমতি দাও। তখন তাদরেকে অনূমতি দেয়া হল। এভাবে তারা সকলেই আহার করলেন, এমনকি সবহি পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থেকে বের হলেন। এরপর আবারো তিনি বললেনঃ আরো দশজনকে আসতে দাও। দলের লোক সংখ্যা ছিল সত্তর বা আশি জন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩২ | 6232 | ٦۲۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭১. কসমের মধ্যে নিয়ত করা
৬২৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে নিশ্চয়ই প্রতিটি আমলের গ্রহণযোগ্যতা ভার নিয়্যাতের উপয় নির্ভরশীল। কোন ব্যাক্তি তাই লাভ করবে যা সে নিয়্যাত করে থাকে। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুটির জন্যই হবে। আর যার হিজরত দুনিয়াকে হাসিলের জন্য হবে অথবা কোন রমনীকে বিয়ে করার জন্য হবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যই হবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৩ | 6233 | ٦۲۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭২. যখন কোন ব্যাক্তি তার মাল মানত ও তওবার লক্ষ্যে দান করে
৬২৩৩। আহামাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কাব (রাঃ) যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তখন তার জনৈক পুত্র তাঁকে ধরে নিয়ে চলতেন। আবদুর রাহমান বলেনঃ আমি আল্লাহর বানীঃ যে তিনজন তাবুকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত হয়েছে। সংক্রান্ত ঘটনা বর্ণনা করতে কা’ব ইবনু মালিককে শুনেছি। তিনি তার বর্ণনার শেষাংশে বলেনঃ আমার তওবা এটাই যে আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর কাছে দান করে দিয়ে আমি মুক্ত হব। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ এটি তোমার জন্য কল্যানকর হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৪ | 6234 | ٦۲۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৩. যখন কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যকে হারাম করে নেয় এবং আল্লাহর বাণীঃ হে নবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন আপনি আপনার স্ত্রীদের সন্তুষ্টির জন্য কেন তা হারাম করেছেন ? (৬৬ঃ ১) এবং আল্লাহর বাণীঃ ঐ সমস্ত পবিত্র বস্তুকে হারাম করো না, যা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন।
৬২৩৪। হাসান ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) এর কাছে অবস্হান করছিলেন এবং তার কাছে মধু পান করেছিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি এবং হাফসা (রাঃ) পরস্পরে পরামর্শ করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দু’জনের মধ্যে যার কাছে আগে আসবেন তখন আমরা তাঁকে এ কথাটি বলব যে, আপনার মুখ থেকে তো মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? এরপর তিনি কোন একজনের ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি তাঁকে ঐ কথাটি বললেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, না বরং আমি যায়নাব বিনত জাহাশের কাছে মধু পান করেছি। এরপরে আর কখনও এ কাজটি করব না।

তখনই এ আয়াত নাযিল হলঃ ‏يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ‏}‏، ‏{‏إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ‏ “তোমরা উভয়ে যদি আল্লাহর কাছে তওবা কর” এখানে সন্মোধন আয়শা ও হাফসা (রাঃ) এর প্রতি। আর إِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর কোন স্ত্রীর কাছে কথাকে গোপন করেন। এ আয়াত খানা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً “বরং আমি মধু পান করেছি” এর প্রতি ইঙ্গিত করণার্থে নাযিল হয়েছে।

ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) হিশাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কসম করে ফেলেছি এ কাজটি আমি আর কখনও করব না। তুমি এ ব্যাপারটি কারও কাছে প্রকাশ করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৫ | 6235 | ٦۲۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তোমাদেরকে কি মানত করতে নিষেধ করা হয়নি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেনঃ মানত কোন কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়ে আনতে পারে না এবং পিছিয়েও দিতে পারে না। তরে হ্যাঁ, মানতের দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (কিছু মাল) বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৬ | 6236 | ٦۲۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৬। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ এতে কিছুই রদ হয় না, কিন্তু কৃপণ থেকে মাল বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৭ | 6237 | ٦۲۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানত মানুষকে এমন বস্তু এনে দিতে পারে না, যা আমি তাকদীরে নির্ধারিত করিনি। বরং মানতটি তাকদীরের মাঝেই ঢেলে দেয়া হয় যা তার জন্য নির্ধারন করা হয়েছে। সুতরাং এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা কৃপনের কাছ থেকে মাল বের করে নিয়ে আসেন। আর তাকে এমন কিছু দিয়ে থাকেন যা পূর্বে তাকে দেওয়া হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৮ | 6238 | ٦۲۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৫. মানত করে তা পূর্ণ না করা গুনাহর কাজ
৬২৩৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের-মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম, এরপর তাদের পরবর্তী যমানার লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার যমানা বলার পর দু’বার বলেছেন না কি তিনবার তা আমার স্মরণ নেই। এরপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে যারা মানত করবে অথচ তা পূর্ন করবে না। তারা খেয়ানত করবে তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তাবা সাক্ষ্য প্রদান করবে অথচ তাদেরকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য বলা হবে না। আর তাদের মাঝে হৃষ্টপুষ্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৯ | 6239 | ٦۲۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৬. ইবাদতের ক্ষেত্রে মানত করা। (এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ) যা কিছু তোমরা ব্যয় কর অথবা যা কিছু তোমরা মানত কর আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২৭০)
৬২৩৯। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এরূপ মানত করে যে, সে আল্লাহর আনুগত্য করবে তাহলে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে এরূপ মানত করে, সে আল্লাহর নাফরমানী করবে তাহলে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪০ | 6240 | ٦۲٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৭. কোন ব্যাক্তি জাহিলী যুগে মানত করল বা কসম করল যে, সে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহন করেছে
৬২৪০। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উমর (রাঃ) একদা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জাহিলী যুগে মানত করেছিলাম যে, মসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করব। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মানত পুরা করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪১ | 6241 | ٦۲٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ মর্মে জানিয়েছেন যে, সা’দ ইবনু উবাদা আনসারী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তার মাতার কোন এক মানত সম্পর্কে, যা আদায় করার পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে মানত আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন। আর পরবর্তীতে এটাই সুন্নাত হিসাবে পরিগণিত হল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪২ | 6242 | ٦۲٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪২। আদম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক ব্যাক্তি এসে বলল যে, আমার বোন হাজ্জ (হজ্জ) করবে বলে মানত করেছিল। আর সে মারা গিয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার ওপর যদি কোন ঋণ থাকত তরে কি তুমি তা পূরণ করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সুতরাং আল্লাহ তা’আলার হককে আদায় করে দাও। কেননা, আল্লাহর হক আদায় করাটা তো অধিক কর্তব্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৩ | 6243 | ٦۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৩। আবূ আসিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য করার মানত করে সে যেন তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর নাফরমানী করার মানত করে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৪ | 6244 | ٦۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এ ব্যাক্তিটি যে নিজের জানকে আযাবের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে নিশ্চয় এতে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। আর তিনি লোকটিকে দেখলেন যে, সে তার দু’টি পুত্রের মাঝে ভর করে হাঁটছে। ফাযারীও অত্র হাদীসটি … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৫ | 6245 | ٦۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৫। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে দেখতে পেলেন। লোকটি একটি রশির অথবা অন্য কিছুর সাহায্যে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছে। তিনি সে রশিটি কেটে ফেললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৬ | 6246 | ٦۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৬। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা’বার তাওয়াফ করার সময় এক ব্যাক্তির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি অন্য আরেকজনকে নাকে রশি লাগিয়ে টানছিল (আর সে তাওয়াফ করছিল) এতদৃষ্টে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বহস্তে তার রশিটি কেটে ফেললেন এবং হুকুম করলেন, যেন তাকে হাতে টেনে নিয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৭ | 6247 | ٦۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা প্রদান করছিলেন। এক ব্যাক্তিকে দাঁড়ানো দেখে তার সম্পর্কে লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন। লোকেরা বলল যে, এ লোকটির নাম আবূ ইসরাঈল। সে মানত করেছে ষে, দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়াতে যাবে না, কারও সঙ্গে কথা বলবে না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে যায়, বসে এবং তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সমাপ্ত করে।

আবদুল ওয়াহহাব, আইউব ও ইকরামার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অত্র হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৮ | 6248 | ٦۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৮। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর মুকাদ্দমী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু উমরকে এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ব্যাক্তি মানত করেছিল যে সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন থেকে কোন দিনই বিরত থাকবে না। আর তার মাঝে কুরবানী বা ঈদুল ফিতরের দিন এসে পড়ল। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাঝে তোমাদের জন্য সুন্দরতম আদর্শ রয়েছে। তিনি ঈদুল ফিতরের এবং কুরবানীর দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন না। আর তিনি ঐ দিনগুলোর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা জায়েযও মনে করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৯ | 6249 | ٦۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার ইবনু উমর (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। এক ব্যাক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, আমি মানত করেছিলাম যে, যতদিন আমি বেঁচে থাকব ততদিন প্রতি মঙ্গলবার এবং বুধবার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব। কিন্তু এর মাঝে কুরবানীর দিন পড়ে গেল। (তখন এর কি হুকুম হবে?) তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা মানত পুরা করার হুকুম করেছেন; এদিকে কুরবানীর দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। লোকটি প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করল। তিনি এরুপই উত্তর দিলেন, এর চেয়ে বেশি কিছু বললেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫০ | 6250 | ٦۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৮১. কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বকরী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি ? এবং ইবনু উমর (রাঃ) এর হাদীস। তিনি বলেন নবী (সাঃ) এর কাছে একদা উমর (রাঃ) আরয করলেন যে, আমি এরূপ একখন্ড ভূমি লাভ করেছি যার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন মাল কখনও আমি পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি চাও তবে মূল মালটিকে রেখে দিয়ে (তার তার থেকে অর্জিত লাভটুকু) দান করে দিতে পার। আবূ ত্বলহা (রাঃ) নবী (সাঃ) এর কাছে আরয করলেন যে, আমার নিকট বায়রুহা নামক আমার বাগানটি সবচেয়ে প্রিয় তার দেয়ালটি হচ্ছে মাসজিদে নববীর সম্মুখে।
৬২৫০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বারের যুদ্ধের দিন বের হলাম। আমরা মাল, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড় ব্যতীত স্বর্ণ বা রৌপ্য গনীমত হিসাবে পাইনি। বনী যুবায়র গোত্রের রিফাআ ইবনু যায়িদ নামক এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একটি গোলাম হাদিয়া দিলেন, যার নাম ছিল মিদআম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদি উল কুরার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ওয়াদিউল কুরায় পৌছলেন, তখন মিদআম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওয়ারীর হাওদা থেকে মালপত্রগুলি নামাচ্ছিলেন। তখন আকস্মিক একটি তীর এসে তার গায়ে বিদ্ধ হল এবং তাতে সে মারা গেল। লোকেরা বলল, এ লোকটির জন্য জান্নাতের সুসংবাদ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখনও না, কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! খায়বারের যুদ্ধের দিন গনীমতের মাল থেকে বণ্টনের পুর্বে যে চাঁদরটি সে নিয়ে গিয়েছিল তার গায়ে তা লেলিহান শিখা হয়ে জ্বলবে। এ কথাটি যখন লোকেরা শুনতে পেল, তখন এক ব্যাক্তি একটি বা দু’টি ফিতা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে হাযির হল। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে জাহান্নামের একটি ফিতা বা জাহান্নামের দু’টি ফিতা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *