অষ্টম অনুবাক
প্রথম সূক্ত : সত্যৌজা অগ্নিঃ
[ঋষি : চাতন। দেবতা : সন্তৌজা অগ্নি। ছন্দ : অনুষ্টুপ]
তান্তসত্যৌজাঃ প্ৰ দহত্বগ্নিবৈশ্বানরা বৃষ। যো নো দুরস্যা দিন্সাচ্চাথো যো নো অরাতিয়াৎ। ১। যো নো দিদদিম্মততা দিপ্সততা যশ্চ দিম্পতি। বৈশ্বানরস্য দংষ্ট্রয়োরগ্নেরপি দমি তম্ ॥ ২॥ য আগরে মৃগয়ন্তে প্রতিক্রোশেইমাবায্যে। ক্ৰব্যাদো অন্যান্ দিক্ষতঃ সর্বাংস্তান্তসহসা সহে ॥ ৩॥ সহে পিশাচাসহসৈষাং দ্রবিণং দদে। সর্বান্ দুরস্যতো হন্মি সং ম আকুতিঋধ্যতাম্ ॥৪॥ যে দেবাস্তেন হাসন্তে সূর্যেণ মিমতে জব। নদীষু পর্বতেষু যে সং তৈঃ পশুভিৰ্বিদে। ৫৷৷ তপনো অস্মি পিশাচানাং ব্যাঘ্রো গোমতামিব। শ্বানঃ সিংহমিব দৃষ্টা তে ন বিন্দন্তে ন্যঞ্চনম্ ॥ ৬৷৷ ন পিশাচৈঃ সং শক্লোমি ন স্তেনৈর্ন বনগুভিঃ।। পিশাচাস্তস্মান্নশ্যন্তি যমহং গ্রামমাবিশে। ৭। যং গ্রামমাবিশত ইদমুগ্ৰং সহো মম। পিশাচাস্তম্মান্নশ্যন্তি ন পাপমুপ জানতে ॥৮ যে মা ক্রোধয়ন্তি লপিতা হস্তিনং মশকা ইব। তানহং মন্যে দুহিতান্ জনে অল্পশয়ুনিব ॥ ৯৷৷ অভি তং নির্ঋতিধামশ্বমিবাস্বাভিধান্যা। মন্বো যো মহ্যং ধ্যতি স উ পাশান্ন মুচ্যতে। ১০।
বঙ্গানুবাদ –যে শত্রু আমাদের হিংসা করতে অভিলাষ করে; যারা আমাদের মধ্যে যে অবগুণ (দোষ) নেই, সেই মিথ্যা দোষ, আমাদের উপর আরোপিত করে; মনুষ্যের উপকার করণশালী সেচনসমর্থ অগ্নিদেব সেই শত্রুগণকে প্রচণ্ডরূপে ভস্ম করে ফেলুন। ১।
যে শত্রু আমাদের দুঃখ প্রদান করে এবং যে আমাদের আঘাত করতে আকাঙ্ক্ষা করে, এই দুই রকমের শত্রুগণকে আমাদের সকলের হিতৈষী অগ্নির দুই হনুর (চোয়ালের) অভ্যন্তরস্থ দন্তের মধ্যে নিক্ষেপ করছি। ২৷
যে যুদ্ধে মাংস ও রক্ত নষ্টকৃত হয়ে থাকে, সেখানে পিশাচ ইত্যাদি আমাদের হনন পূর্বক ভক্ষণের নিমিত্ত অন্বেষণ করে (অর্থাৎ তাকে তাকে থাকে), এবং শত্রুদের দ্বারা প্রেরিত করণের পর যে পিশাচ ইত্যাদি অমাবস্যার অর্ধ-রাত্রির সময়ে হনন করতে আকাঙ্ক্ষা করে, তাদের সকলকে আমরা আমাদের মন্ত্রশক্তির দ্বারা বশীভূত করছি ৷ ৩৷
আমরা এই রাক্ষসবর্গের বল সম্পর্কে জ্ঞাত আছি এবং এদের মন্ত্র-শক্তির প্রভাবে ক্ষীণ করে দিচ্ছি। দুষ্ট আচরণশীল আপন শত্রুদেরও আমি বিনাশ করে দিচ্ছি। আমাদের কাম্য সংকল্প সুখময় এবং সমৃদ্ধির সাথে যুক্ত হোক। ৪
যে পিশাচ আপন মায়ারূপ বিকারের দ্বারা হাস্য করায় এবং সূর্যের ন্যায় ঝলকিত হতে থাকে, যে পিশাচ পর্বত নদী ইত্যাদি স্থানে সঞ্চরণ করে থাকে, আমি তাদের সকল প্রতিবন্ধকতা বা প্রবঞ্চনা হতে মুক্ত হয়ে গো-ইত্যাদি পশুসমূহে সমৃদ্ধ হবো ৷ ৫
সিংহ যেমন গো-ইত্যাদির পালকগণের চিন্তার কারণ হয়ে থাকে, তেমনই আমি আমার আপন মন্ত্র-বলে রাক্ষসগণকে দুঃখ-দানের কারক হবো; সিংহ হতে ভয়ভীত কুকুরেরা যেমন লুকিয়ে থাকে, তেমনই এই পিশাচ ইত্যাদি গণ আমাদের মন্ত্র-বলের প্রভাবে অধঃপতিত হয়ে যাক ৷৷ ৬ ৷
চোর ও দস্যুগণ কখনও আমার সাথে মিলিত হয় না (অর্থাৎ সম্মুখীন হয় না), পিশাচগণ আমাতে বা আমার অধ্যুষিত স্থানে প্রবিষ্ট হতে সক্ষম হয় না। আমি যে গ্রামে গমন করি, সেই গ্রামের পিশাচগণ বিনাশ প্রাপ্ত হয়ে যায় ৷৷ ৭৷
আমার মন্ত্র-বল যে গ্রামে বর্তমান থাকে, সেখানে পিশাচগণ বিনষ্ট হয়ে যায়। এই কারণে সেই স্থানের অধিবাসী মনুষ্যগণ ঐ পিশাচবর্গের হিংসান্বিত কার্যকলাপকে কখনও জানতেই পারে না ॥ ৮
যেমন ক্ষুদ্রকায় কীট জনসমূহের চলাচলে পিষ্ট হয়ে যায় (বা সঙ্কুচিত হয়ে যায়), যেমন হস্তীর শরীরলগ্ন মশক হস্তীর ক্রোধকে বর্ধিত করে, তেমনই আমি আমার শরীরে বিলগ্ন পিশাচগণকে আপন মন্ত্র-রূপ ক্রোধের দ্বারা বিনষ্টের বিষয়ীভূত বলে মনে করি। ৯।
যেমন দুষ্ট অশ্বকে রশ্মির দ্বারা বন্ধন করা হয়, সেই রকমে পাপ দেবতা নির্ঋতি সেই বৈরীকে পাশবদ্ধ করে নিন, যে আমার উপর ক্রোধপরায়ণ হয় (বা আমি যার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে থাকি), সে যেন নিঋর্তির পাশ হতে অব্যাহতি না পায় ॥ ১০।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অষ্টমেনুবাকে পঞ্চ সূক্তানি। তত্র তান্তসত্যৌজা ত্বয়া পূর্বং (৪/৩৭) ইতি দ্বয়েঃ সূক্তয়েশ্চাতনগণে পাঠাৎ চাতনানাং অপনোদনেন ব্যাখ্যাতং (কৌ.৪/১) ইতি বিহিতে্যু ভূতগ্রহাদি-উচ্চাটনকর্মসু বিনিয়োগঃ। (৪কা, ৮অ. ১সূ)।
টীকা –অষ্টম অনুবাকে পাঁচটি সূক্ত। তার মধ্যে এই প্রথম সূক্তটি এবং এর পরবর্তীটির দ্বারা ভূত চি গ্রহ ইত্যাদির উচ্চাটনকর্মে বিনিয়োগ হয়ে থাকে। (৪কা. ৮অ. ১সূ)।
.
দ্বিতীয় সূক্ত : কৃমিনাশনম্
[ঋষি : বাদরায়ণি। দেবতা : ওষধি প্রভৃতি। ছন্দ : অনুষ্টুপ প্রভৃতি।]
ত্বয়া পূর্বমথর্বাণো জম্মু রক্ষাংস্যোষধে। ত্বয়া জঘান কশ্যপস্তুয়া কম্বো অগস্ত্যঃ ॥১॥ ত্বয়া বয়মন্সরসো গন্ধর্বাংশ্চাতয়ামহে। অজশৃঙ্গ্যজ রক্ষঃ সর্বান্ গন্ধেন নাশয় ॥ ২॥ নদীং যন্তুষ্পরসোহপাং তারমবশ্বসম। গুল্লুলুঃ পীলা নলদ্যৌগন্ধিঃ প্রমন্দনী। তৎ পরেতারসঃ প্রতিবুদ্ধা অভূতন ৷ ৩৷৷ যত্ৰাশ্বত্থা ন্যগ্রোধা মহাবৃক্ষাঃ শিখন্ডিনঃ। তৎ পরেতারসঃ প্রতিবুদ্ধা অভূতন ॥৪॥ যত্র বঃ প্রেঙ্খ হরিতা অর্জুনা উত যত্ৰাঘাটাঃ কর্কর্যঃ সংবদন্তি। তৎ পরেতারসঃ প্রতিবুদ্ধা অভূতন ॥ ৫৷৷ এয়মগন্নেষধীনাং বীরুধাং বীর্যাবতী। অজশৃঙ্গরাটকী তীক্ষ্ণশৃঙ্গী বৃষ ॥ ৬ আনৃত্যতঃ শিখন্ডিনো গন্ধর্বস্যাপ্সরাপতেঃ। ভিনন্নি মুম্বাবপি যামি শেপঃ ॥৭॥ ভীমা ইন্দ্রস্য হেতয়ঃ শতমৃষ্টীয়স্ময়ীঃ। তাভিহবিরদা গন্ধবানবকাদা ব্যতু ॥ ৮ ভীমা ইন্দ্রস্য হেতয়ঃ শতমৃষ্টীৰ্হিরণ্যয়ীঃ। তাভিহবিরদা গন্ধবানবকাদান ব্যষতু ॥৯॥ অবকাদানভিশোচানৰ্ম্ম জ্যোতয় মামকা। পিশাচা সর্বানোষধে প্ৰ মৃণীহি সহস্ব চ ॥ ১০ শ্বেবৈকঃ কপিরিবৈকঃ কুমারঃ সর্বকেশকঃ। প্রিয় দৃশ ইব ভূত্বা গন্ধর্বঃ সচতে স্ত্রিয়স্তমিতো নাশয়ামসি ব্ৰহ্মণা বীৰ্য্যাব ॥ ১১। জায়া ইদ বো অরসো গন্ধর্বাঃ পতয়ো ঘূয়ম। অপ ধাবতামর্তা মর্ত্যা মা সচধ্বম্ ॥ ১২৷৷
বঙ্গানুবাদ –হে ঔষধি! অথবা, কশ্যপ, কথ ও অগস্ত্য ইত্যাদি মহর্ষিগণ তোমাকে সাধিত (বা চ উপাসিত) করে রাক্ষসগণকে বিনষ্ট করেছিলেন। সেইরকমেই আমিও করছি (অর্থাৎ তোমার ধারণ, হোম ইত্যাদি সাধনের দ্বারা রাক্ষসগণের বিনাশ সাধিত করছি)। ১।
হে অজশৃঙ্গী (অর্থাৎ অজের শৃঙ্গের আকৃতি বিশিষ্টা)! হে ঔষধি! তোমার দ্বারা আমরা, উপদ্রবী গন্ধর্ব ও অপ্সরাগণকে নাশ করবো। তোমার উগ্র গন্ধের দ্বারা আমরা রাক্ষস, পিশাচ ইত্যাদিদের দূরে বিতাড়িত করবো ২
যেমন পারে উত্তরণ-কুশল নৌকা-চালকের নিকট উপস্থিত হতে হয়; তেমনই গুগুল, পীলা (পীলু), নলদী (নলদ), ঔক্ষগন্ধী, প্রমন্দনী–এই পাঁচ হবন-দ্রব্যসম্ভারের ভয়ে গন্ধর্ব-স্ত্রীগণ (অপ্সরাবৃন্দ) আপন স্থানে প্রত্যাবর্তন করুক ॥ ৩
হে অপ্সরাগণ! তোমরা পীপল, বট, প্লক্ষ ইত্যাদি বৃক্ষসমূহ এবং ময়ূর ইত্যাদিতে সমাকীর্ণ আপন স্থানে প্রত্যাবর্তন করো এবং সেখানে গতি-হীনা হয়ে পড়ে থাকো। ৪
হে অপ্সরাবৃন্দ! যেখানে শ্যামল ও অর্জুন বৃক্ষ আছে, যেখানে তোমাদের আমোদ ও নৃত্যের নিমিত্ত প্রেঙ্খা (বা দোলা) পাতিত হয়ে আছে এবং বাদ্য বাদিত হচ্ছে, তোমরা আপন সেই স্থানে প্রত্যাবর্তন করো এবং সেখানে নিশ্চেষ্ট (চেষ্টারহিত) হয়ে পড়ে থাকো ॥ ৫৷
এই অত্যন্ত বলবতী অজশৃঙ্গী নামক ঔষধি হিংসকবর্গের উচ্চাটন করণে সমর্থ। উগ্র গন্ধ ও শৃঙ্গাকারশালিণী এই ঔষধি রাক্ষস ও পিশাচগণকে বিনষ্ট করুক ৷ ৬ ৷
ময়ুরের ন্যায় নৃত্যপর, গীতিময় বাণীশালী (অর্থাৎ সঙ্গীতকারী), আমাদের হননের অভিলাষকারী গন্ধর্বের (অর্থাৎ অপ্সরাগণের পতির) অণ্ডকোষদ্বয়কে আমি চূর্ণ করছি ও তার উপস্থকে (শিশ্নকে) নির্বীর্য করে দিচ্ছি ৷৷ ৭৷
ইন্দ্রের যে লৌহায়ুধ হতে প্রাণীগণ ভয়ভীত হয়ে থাকে, যাতে শতধার (বা অসংখ্য ধীর) আছে, তার দ্বারা ইন্দ্র জলাশয়ের উপরে আগমনকারী শৈবাল-ভক্ষণকারী গন্ধর্বগণকে সংহার করুন। ৮।
ইন্দ্র আপন সহস্রধারশালী স্বর্ণায়ুধ সমূহের দ্বারা জলাশয়ে আগত শৈবাল-খাদক গন্ধর্বগণকে বিনাশ করুন। ৯।
হে অজশৃঙ্গী! সকল দিক হতে দীপ্তিময় হয়ে, শোকপ্রদ, শৈবাল-ভক্ষণশীল গন্ধর্বগণকে জলের মধ্যে প্রকটিত করো এবং উপদ্রব-করণশীল পিশাচগণকে সর্ব দিক হতে প্রহার পূর্বক বশীভূত করো। ১০।
গন্ধর্বগণ আপন মায়া-প্রভাবে কুকুরের আকৃতিশালী, বানরের আকৃতি সম্পন্ন, সকল দিকে কেশযুক্ত বালকের (অর্থাৎ মনুষ্য কুমারের) আকৃতিধারী হয়ে যায়। সুন্দর-দর্শনশালী হয়ে গন্ধর্বগণ গৃহে গৃহে গমন করে স্ত্রীগণকে প্রলোভিত করে তাদের সম্প্রাপ্ত হয়ে থাকে; এই হেন সেই গন্ধর্ববর্গকে আমরা মন্ত্র-বলের দ্বারা সেই স্ত্রীগণের নিকট হতে বিদূরিত করে দিচ্ছি ৷ ১১
হে গন্ধর্ববৃন্দ! অপ্সরাগণই তোমাদের উপভোগের যোগ্য, তারাই তোমাদের পত্নী। এই নিমিত্ত তাদের সঙ্গেই তোমরা মিলিত হও। তোমরা অমরশীল, অতএব মরণশীল ব্যক্তিগণের সাথে সঙ্গতি (বা সম্মিলন) করো না। (এই সূক্তের দ্বারা ব্যাধিসমূহের কীটাণুগুলির বর্ণনা করা হয়েছে এবং ঔষধির দ্বারা সেগুলির বিনাশ-সাধনের বিধি কথিত হয়েছে)। ১২।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –ত্বয়া পূর্বং, ইতি সূক্তস্য গণপ্ৰযুক্তো বিনিয়োগ, পূর্বসূক্তেন সহ উক্তঃ। তথা সর্বভূতগ্ৰহভৈষজ্যার্থং শমীপর্ণচূর্ণং শমীফলমধ্যে কৃত্বা অনেন সূক্তেন অভিমন্ত্র আবিষ্টগ্রহং পুরুষং ভোজয়েৎ। অলঙ্কারেণ সহ ধারয়েৎ। তথা ব্যাধিতগৃহং পরিকিরেৎ। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি। (৪কা, ৮অ. ২সূ)।
টীকা— এই সূক্তটি পূর্বসূক্তের সাথে গণপ্ৰযুক্তে বিনিয়োগ হয়। তথা সর্বভূতগ্রহের ভৈষজ্যার্থে শমীপর্ণচূর্ণ শমীফলের মধ্যে করে এই সূক্তের দ্বারা অভিমন্ত্রিত পূর্বক গ্রহাবিষ্ট পুরুষকে খাওয়ানো কর্তব্য। অলঙ্কারের সাথে ধারণও কর্তব্য। তথা ব্যাধিত ব্যক্তির গৃহে ছড়িয়ে দেওয়া কর্তব্য।..ইত্যাদি। (৪কা, ৮অ. ২সূ)।
.
তৃতীয় সূক্ত : বাজিনীবান ঋষভঃ
[ঋষি : বাদরায়ণি। দেবতা : অপ্সরা, ঋষভ। ছন্দ : অনুষ্টুপ প্রভৃতি]
উদ্ভিদতীং সংজয়ন্তীমন্সরাং সাধুদেবিনীম্। গ্রহে কৃতানি কৃথানামরাং তামিহ হুবে ॥১॥ বিচিন্বতীমাকিরীমপ্সরাং সাধুদেবিনীম। হে কৃতানি গৃহানামরাং তামিহ হুবে ॥ ২॥ যাযৈঃ পরিনৃত্যত্যাদদানা কৃতংগ্লহাৎ। সা নঃ কৃতানি সীতী প্রহামাগোতু মায়য়া। সা নঃ পয়স্বত্যৈতু মা নো জৈষুরিদং ধন ॥ ৩ যা অক্ষে প্রমোদন্তে শুচং ক্রোধং চ বিভ্রতী। আনন্দিনীং প্রমোদিনীমন্সরাং তামিহ হুবে ॥ ৪৷৷ সূর্যস্য রশ্মীননু যাঃ সঞ্চরন্তি মরীচীর্বা যা অনুসঞ্চরন্তি। যাসামৃষভো দূরতো বাজিনীবান্তসদ্যঃ সর্বান্ লোকান পর্ঘ্যৈতি রক্ষন। স ন এতু হোমমিমং জুষাণোহন্তরিক্ষেণ সহ বাজিনীবান্ ॥ ৫॥ অন্তরিক্ষেণ সহ বাজিনী কীং বৎসামিহ রক্ষ বাজি। ইমে তে স্তোকা বহুলা এহ্যর্বাঙিয়ং তে ককীহ তে মনোহস্ত ॥ ৬ অন্তরিক্ষেণ সহ বাজিনীবন্ ককীং বৎসামিহ রক্ষ বাজি। অয়ং ঘাসো অয়ং ব্রজ ইহ বৎসাং নি বীমঃ। যথানাম ব ঈশ্মহে স্বাহা। ৭৷
বঙ্গানুবাদ –দূত ক্রিয়ার অধিদেবতা, বিজয়প্রদা, অক্ষশলাকা ইত্যাদির দ্বারা শোভন ক্রীড়া করণ-শালিনী অপ্সরাকে আমি এই দূত-বিজয়ের কর্মে আহ্বান করছি। দূত ক্রিয়া জয়ের নিমিত্ত কৃত ইত্যাদি-কারিণী অপ্সরা আগতা হয়ে আমার জয় সুনিশ্চিত করুক৷ ১।
পাশাগুলিকে একত্রিত করে সেগুলিকে বহু কোষ্ঠে বিজয় হেতু নিক্ষেপ করে, অক্ষশলাকা ইত্যাদির দ্বারা শোভনতাপূর্বক ক্রীড়াশালিনী দূতক্রিয়ার অধিদেবতা অপ্সরাকে আমি এই দূত-বিজয়শালী কর্মে আহ্বান করছি। দূতক্রিয়া জয়ের নিমিত্ত কৃত ইত্যাদি-কারিণী অপ্সরা আগতা হয়ে আমার জয় সুনিশ্চিত করুক ॥ ২॥
যে অস্পা কৃত ইত্যাদি শব্দের দ্বারা কথিত অক্ষগত সংখ্যাবিশেষ বা অয়ের দ্বারা বিজয় প্রাপ্ত হওয়ার কারণে নৃত্যপরা হয়ে থাকে, সে গ্রহণযোগ্য পাশাসমূহে কৃত নামক চারিসংখ্যক অয়কে রক্ষা পূর্বক নিক্ষেপযোগ পাশসমূহের উপর আপন মায়ার সাথে প্রতিষ্ঠিত হোক এবং আমাদের বিজিত গো-ইত্যাদি ধনের সাথে প্রাপ্ত হোক। কৌশলের উপরে রক্ষিত (অর্থাৎ দাবার পাশায় প্রাপ্ত) আমাদের ধনকে অন্য দূত-ক্রিয়াশীল যেন জয় করে না নিতে পারে ৷৷ ৩৷৷
যে অপ্সরা অভিলষিত জয়ের অভাবে শোককে উৎপন্ন করে থাকে এবং পুনরায় বিজয়-প্রাপ্তির অভিপ্রায়ে ক্রোধকে উৎপন্ন করে থাকে, সেই অপ্সরা দূত-সাধন অক্ষে প্রসন্ন হয়; আমি তাকে আহ্বান করছি। দূতক্রিয়া জয়ের নিমিত্ত কৃত-ইত্যাদি-কারিণী অপ্সরা আগতা হয়ে আমার জয় সুনিশ্চিত করুক ৪
যে অপ্সরাগণের স্বামী দূরস্থ অন্তরিক্ষলোকে বিচরণ করেন এবং উষার সাথে যুক্ত হন, সেই সূর্য সকল লোকের রক্ষক রূপে সকল দিকে সঞ্চারমান হোন। সেই সূর্য অপ্সরাগণের সাথে আমাদের সমীপে আগমন পূর্বক এই হব্য গ্রহণ করুন। ৫৷৷
হে সূর্য! তুমি অপ্সরাগণের সাথে যুক্ত এবং উষাবান্ হয়ে আছে। এই গাভীবর্গের শ্বেতবর্ণশালী বৎসমুদায়কে রক্ষা পূর্বক তাদের পোষণ করো। তোমার দুগ্ধ ইত্যাদির বিন্দু বিন্দু ধারা সমৃদ্ধ হয়ে আমাদের প্রাপ্ত হোক। এই শ্বেত বর্ণালিনী তোমার গাভী এই গোষ্ঠে অবস্থিত আছে। তুমি আমাদের নমস্কার স্বীকার করো ও আমাদের সম্মুখে আবির্ভূত হও। ৬।
হে অপ্সরাবৃন্দের সাথে যুক্ত, উষাবান্ সূর্য! এই স্থানের শ্বেত বর্ণশালী বৎসগণকে রক্ষা করো; তাদের পোষণপূর্বক বৃদ্ধি সাধন করো। খাদ্যের নিমিত্ত দীয়মান এই ঘাস পৌষ্টিক (পুষ্টিকর) হোক। এই গোষ্ঠ গাভীগণের দ্বারা সমৃদ্ধ হোক। এই গোষ্ঠে আমরা বৎসগণকে দ্বাদশ রঞ্জুর দ্বারা বন্ধন করছি। যে প্রকারে তুমি স্বামী হয়েছে, সেই প্রকারে আমরা যাতে তাদের অধিপতি হতে পারি, সেইভাবেই বন্ধন করছি। যথানামে স্বাহামন্ত্রে এই হবিঃ আহুত হচ্ছে ॥৭॥
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— উদ্ভিন্তীং সংজয়ন্তীং ইতি সূক্তেন দ্যুতজয়কর্মণি অক্ষান্ অভিমন্ত্র দেবনং কুর্যাৎ। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি। (৪কা, ৮অ. ৩সূ)।
টীকা— দ্যুতজয়-কর্মে এই সূক্তের দ্বারা অক্ষগুলি অভিমন্ত্রিত করে অক্ষক্রীড়া করানো কর্তব্য।…ইত্যাদি। (৪কা, ৮অ. ৩সূ)।
.
চতুর্থ সূক্ত : সংনতি
[ঋষি : অঙ্গিরা ব্রহ্মা। দেবতা : পৃথিবী, অগ্নি প্রভৃতি। ছন্দ : বৃহতী, পংক্তি, ত্রিষ্টুপ]
পৃথিব্যামগ্নয়ে সমনমন্তস আর্গোৎ। যথা পৃথিব্যামগ্নয়ে সমনমন্নেবা মহঃ সংনমঃ সং নমন্তু ॥১॥ পৃথিবী ধেনুস্তস্যা অগ্নিবৎসঃ। সা মেহগ্নিনা বৎসেনেষমূৰ্জং কামং দুহাম্। আয়ুঃ প্রথমং প্রজাং পোষং রয়িং স্বাহা ॥ ২॥ অন্তরিক্ষে বায়বে সমনমন্তস আপ্পোৎ। যথান্তরিক্ষে বায়বে সমনমন্নেবা মহ্যং সনেমঃ সং নমন্তু ॥ ৩॥ অন্তরিক্ষং ধেনুস্তস্যা বায়ুর্বৎসঃ। সা মে বায়ুনা বৎসেনেষমূৰ্জং কামং দুহাম্। আয়ুঃ প্রথমং প্রজাং পোষং রয়িং স্বাহা। ৪৷৷ দিব্যাদিত্যায় সমনমন্তস আর্পোৎ। যথা দিব্যাদিত্যায় সমনমন্নেবা মহ্যং সংনমঃ সং নমন্তু ॥ ৫৷৷ দৌধেনুস্তস্যা আদিত্যো বসঃ। সা ম আদিত্যেন বৎসেনেষমূর্জং কামং দুহাম্। আয়ুঃ প্রথমং প্রজাং পোষং রয়িং স্বাহা ॥ ৬৷ দিক্ষু চন্দ্রায় সমনমন্তস আর্পোৎ। যথা দিক্ষু চন্দ্রায় সমনমন্নেবা মহ্যং সংনমঃ সং নমন্তু ॥ ৭৷ দিশো ধেনবস্তাসাং চন্দ্রো বৎসঃ। তা মে চন্দ্রেণ বৎসেনেষমূর্জং কামং দুহাম্।। আয়ুঃ প্রথমং প্রজাং পোষং রয়িং স্বাহা ॥৮॥ অগ্নাবগ্নিশ্চরতি প্রবিষ্ট ঋষীণাং পুত্রো অভিশস্তিপা উ। নমস্কারেণ নমসা তে জুহোমি মা দেবানাং মিথুয়া কর্ম ভাগম ॥ ৯৷ হৃদা পুতং মনসা জাতবেদো বিশ্বানি দেব বয়ুনানি বিদ্বান্। সপ্তাস্যানি তব জাতবেদস্তেভ্যো জুহোমি স জুষ হব্যম্ ॥ ১০
বঙ্গানুবাদ –অগ্নিদেব ভূতসমূহের সাথে যুক্ত (বা প্রাণীসমূহের দ্বারা প্রণত) হয়ে থাকেন। সেই অগ্নিদেবকে সকল প্রাণী প্রাপ্ত হয়ে থাকে; এই রকমে আমার অভিলষিত ফলগুলি আমাকে প্রাপ্ত হোক ॥১॥
পৃথিবী ধেনু, অগ্নি তার বৎস-স্বরূপ। সেই পৃথিবী অগ্নিরূপী বৎসের দ্বারা অন্ন, পুত্র, পশু ইত্যাদিতে শত বর্ষশালিনী আয়ু ইত্যাদি সকল কাম্য বস্তুসমূহ প্রদান করুক। সেই পৃথিবীর সকল অবদান আমাকে প্রাপ্ত হোক ॥ ২॥
অন্তরিক্ষ লোকের অধিস্বামী রূপে অবস্থিত বায়ুর নিকটে সেই স্থানস্থায়ী যক্ষ, গন্ধর্ব ইত্যাদি নিবাসকারীগণ একত্রে প্রণত হয়ে থাকে এবং তাদের দ্বারা বায়ুও সমৃদ্ধি লাভ করে থাকেন; তেমনই সমৃদ্ধি আমাকে প্রাপ্ত হোক ॥ ৩॥
অন্তরিক্ষ লোক ঈপ্সিত ফলদায়ক হওয়ার কারণে পয়স্বিনী ধেনুর ন্যায় হয়ে থাকে, এবং বায়ু তার বৎস-স্বরূপ। সেই অন্তরিক্ষ আপন বায়ুরূপী বৎসের দ্বারা অন্ন, অন্ন-রস, পুত্র, পশু, শতায়ু প্রজা ইত্যাদিকে পুষ্টির দ্বারা ঈপ্সিত বস্তুসমূহ প্রদান করুক। সেই অন্তরিক্ষের সকল অবদান আমাকে প্রাপ্ত হোক। ৪।
যেমন সূর্যমণ্ডলের নিবাসীগণ, সূর্যের সম্মুখে নত হয়ে থাকে এবং সেই সূর্য সেই দুলোকে বাসকারীগণের সাথেই প্রবৃদ্ধ হয়ে থাকেন। তাদেরই মতো ঈপ্সিত ফলগুলি আমার দিকে নত হোক ॥ ৫॥
অভিলষিত ফল প্রদানের কারণে আকাশ (অর্থাৎ দ্যুলোক) ধেনু এবং সূর্য তার বৎস-স্বরূপ। এই আকাশ আপন সূর্যরূপী বৎসের দ্বারা অন্ন, বল,পুত্র, পশু, শতবর্ষের আয়ু ইত্যাদি সকল ঈপ্সিত বস্তুসমূহ প্রদান করুক। সেই দ্যুলোকের সকল অবদান আমাকে প্রাপ্ত হোক ॥ ৬
পূর্ব ইত্যাদি দিমূহের প্রাণীগণ তাদের অধিস্বামীরূপে স্থিত চন্দ্ৰমার দ্বারা প্রসন্ন হয়ে প্রণত হয়ে থাকে, এবং চন্দ্রমা তাদের দ্বারা সম্পন্ন প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। আমি সেই রকম সম্পন্ন প্রাপ্ত হবো। ৭।
দিমূহ ঈপ্সিত ফলদায়ক হওয়ার কারণে ধেনুস্বরূপ এবং চন্দ্রমা তার বৎস। সেই দিকরূপা গাভী আপন চন্দ্ররূপী বৎসের দ্বারা অন্ন, অন্ন-রস, পুত্র, পশু, শতবর্ষের আয়ু ইত্যাদি দান পূর্বক আমার চ বৃদ্ধি সাধিত করুন। সেই দিকসমূহের সকল অবদান আমাকে প্রাপ্ত হোক ॥ ৮
মন্ত্রের শক্তির প্রভাবে অগ্নিদেব অঙ্গার রূপে স্থিত আহ্বানীয় অগ্নির মধ্যে বাস করে থাকেন। মন্ত্রদ্রষ্টা অথবা, অঙ্গিরা ইত্যাদির পুত্র। তিনি মিথ্যাপবাদ হতে রক্ষা করে থাকেন। এই হেন অগ্নির উদ্দেশে আমি হবিরম্ন প্রদান করছি। আমরা দেবতাদের প্রাপ্য ভাগকে করবো না (অর্থাৎ সত্য বলে স্বীকার করবো) ॥ ৯।
হে অগ্নিদেব! তুমি জাতবেদা, অর্থাৎ সকল প্রাণীজাতের জ্ঞাতা, দান ইত্যদি গুণসমূহের সাথে যুক্ত; তোমার মুখবিবরে সপ্তসংখ্যক জিহ্বা (অগ্নি সপ্তার্চি) বর্তমান। আমি সেই সপ্ত-জ্বিহা সমম্বিত মুখকে উন্মুক্ত করণের নিমিত্ত শুদ্ধান্তঃকরণে পূর্ণাহুতি প্রদান করছি।১০৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –পৃথিব্যাং অগ্নয়ে ইতি সূক্তেন সর্বসংপতকামঃ মান্ত্রবর্ণিকীঃ পৃথিব্যাদ্যা দেবতা যজত উপতিষ্ঠতে বা। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি। (৪কা, ৮অ. ৪সূ)।
টীকা –সর্ব সম্পৎকামী জন এই সূক্তের দ্বারা পৃথিবী ইত্যাদি দেবতার উদ্দেশে যজন-যাজন করবেন।..ইত্যাদি ॥ (৪কা. ৮অ. ৪সূ)।
.
পঞ্চম সূক্ত : শত্রুনাশনম
[ঋষি : শুক্র। দেবতা : জাতবেদা প্রভৃতি। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, জগতী]
যে পুরস্তাজুহুতি জাতবেদঃ প্রাচ্যা দিশোহভিদাসন্ত্যম্মা। অগ্নিমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথন্তাং প্রত্যগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ॥১॥ যে দক্ষিণতো জুহুতি জাতবেদো দক্ষিণায়া দিশোহভিদাসন্ত্যম্মান। যমমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ॥ ২॥ যে পশ্চাজুহুতি জাতবেদঃ প্রতীচ্যা দিশোহভিদাসন্ত্যম্মান। বরুণমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যাগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ॥ ৩॥ য উত্তরতো জুহুতি জাবেদ উদীচ্যা দিশোহভিদাসত্যম্মান। সোমমৃত্বা তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যগেনান প্রতিসরেণ হন্মি ॥৪॥ যেহধস্তাজুহুতি জাতবেদো ধ্ৰুবায়া দিশোহভিদাসন্ত্যম্মা। ভূমিমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথন্তাং প্রত্যগেনান প্রতিসরেণ হন্মি ॥ ৫॥ যেহন্তরিক্ষাঙ্কুতি জাতবেদো ব্যধ্বয়া দিশোহভিদাসন্ত্যম্মা। বায়ুমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ৷ ৬ ৷৷ য উপরিষ্টাহুতি জাবেদ ঊর্ধ্বায়া দিশোহভিদাসন্ত্যম্মান। সূর্যমৃত্ব তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ॥৭॥ যে দিশামন্তর্দেশেভ্যো জুহুতি জাতবেদঃ সর্বাভ্যো দিগভ্যোহভিদাসন্ত্যম্মান। ব্ৰহ্মর্ধা তে পরাঞ্চো ব্যথাং প্রত্যগেনা প্রতিসরেণ হন্মি ॥ ৮
বঙ্গানুবাদ –হে অগ্নি! তুমি উৎপন্ন প্রাণীসমূহের জ্ঞাতা (জাবেদা)। যে শত্রু অভিচার কর্মের দ্বারা পূর্ব দিক্ হতে আমাদের বিনাশ করতে ইচ্ছা করে, সেই শত্ৰু ঐ দিক্-অধিপতি অগ্নির নিকট গমন পূর্বক ভস্ম হয়ে যাক। আমি এই সকল অভিচার কর্মশালী শত্রুগণকে এই প্রতিসর (শোধক মন্ত্র সমন্বিত) কর্মের দ্বারা নাশ করছি।১৷
হে অগ্নি! যে শত্রু অভিচার কর্মের দ্বারা দক্ষিণ দিক হতে আমাদের ক্ষীণ করতে ইচ্ছা করে, সেই শত্ৰু ঐ দিক্-অধিপতি যমের নিকট গমন পূর্বক সন্তাপিত হোক। আমি এইসকল অভিচার কর্মশালী শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা, নাশ করছি। ২।
হে অগ্নি! তুমি উৎপন্ন প্রাণীসমূহে জ্ঞাতা। যে শত্রু পশ্চিম দিক্ হতে অভিচার কর্মের দ্বারা আমাদের নাশ করতে ইচ্ছা করে, তারা সেই দিকের অধিস্বামী বরুণের নিকট গমন পূর্বক ব্যথা-প্রাপ্ত হোক। আমি এই সকল অভিচার করণশালী শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা বিনাশ করছি ৷ ৩৷৷
হে অগ্নি! যে শত্ৰু উত্তর দিক হতে অভিচার কর্মের দ্বারা আমাদের নাশ করতে আকাঙ্ক্ষা করে, তারা সেই দিকের অধিস্বামী সোমের নিকট গমন পূর্বক ব্যথিত হোক, এবং আমাদের নিকট হতে প্রত্যাবর্তন করুক। আমি এই সকল অভিচার কর্মকারী, শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা বিনাশ করছি৷৷ ৪
হে অগ্নি! তুমি জামাত্র প্রাণীগণের জ্ঞাতা। যে শত্ৰু নিম্ন দিক হতে অভিচার কর্মের দ্বারা আমাদের হনন করতে ইচ্ছা করে, তারা সেই দিকের অধিদেবতা পৃথিবীর নিকটে উপস্থিত হয়ে ব্যথায় জর্জরিত হোক। আমি সেই সকল শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা নিবীর্য করে দিচ্ছি। ৫
হে অগ্নি! দ্যাবাপৃথিবীর মধ্যস্থানবর্তী অন্তরিক্ষ লোকের দিক হতে যে শত্রু অভিচার কর্ম সাধনের দ্বারা আমাদের বিনাশ করতে ইচ্ছুক হয়, সেই শত্রু সেই দিকের অধিস্বামী বায়ুদেবতার নিকট সমুপস্থিত হয়ে ব্যথাপ্রাপ্ত হোক এবং আমাদের নিকট হতে দূরে গমন। করুক। আমি সেই সকল শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা বিনাশ করে দিচ্ছি। ৬৷৷
হে অগ্নি! যে শত্রু ঊর্ধ্ব দিকস্থ দ্যুলোক হতে অভিচার কর্মের দ্বারা আমাদের বধ করতে ইচ্ছা করে, সেই শত্রু সেই দিকের অধিস্বামী সূর্যের নিকটে গমন পূর্বক যন্ত্রণা লাভ করুক এবং আমাদের নিকট হতে দূরে গমন করুক। আমি সেই সকল অভিচার কর্মকারী: শত্রুগণকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা বিনাশ করছি। ৭।
হে অগ্নি! পূর্ব ইত্যাদি দিক সমূহের অন্তরালবর্তী স্থান হতে অভিচার কর্মের দ্বারা আমাদের ক্ষীণ করে থাকে, তারা সকলে শক্তিহীন হয়ে যাক এবং আমাদের দিক হতে বিমুখ (বা পরাজুখ) হয়ে সকলকে বশীভূত করণশালী পরব্রহ্মের নিকট গমন পূর্বক ব্যথাগ্রস্ত হোক। আমি সেই সকল শবর্গকে প্রতিসর কর্মের দ্বারা বিনাশ করছি। ৮।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –যে পুরস্তাৎ ইতি সূক্তস্য দুষ্যা দুষিরসি (২/১১) যে পুরস্তাৎ (৪/৪০) ঈশানাং ত্বা (৪/১৭) ইত্যাদিকৃত্যাপ্রতিহরণগণে (কৌ. ৫/৩) পাঠাৎ কৃত্যানিৰ্হরণকর্মণি শান্ত্যদকাদৌ বিনিয়োগঃ ॥ (৪কা, ৮অ. ৫সূ)।
টীকা –এই সূক্তটি এবং দ্বিতীয় কাণ্ডের তৃতীয় অনুবাকের প্রথম সূক্ত ও চতুর্থ কাণ্ডের চতুর্থ অনুবাকের দ্বিতীয় সূক্ত ইত্যাদি কৃত্যাপ্রতিহরণগণে পঠিত কৃত্যা-নিবারণ কর্মে ও শান্তু্যদক কর্মে বিনিয়োগ হয়।(৪কা. ৮অ.৫সূ)।
[ইতি চতুর্থং কাণ্ডং সমাপ্তম]