তৃতীয় পরিচ্ছেদঃ মাতুলালয়ে
ঈসা খাঁ মস্নদ-ই-আলী শ্রীমতী স্বর্ণময়ীকে সাদুল্লাপুর রওয়ানা করিয়া দিয়া মুরাদপুরের দিকে অগ্রসর হইলেন। সাদুল্লাপুরে জগদানন্দ মিত্র, স্বর্ণময়ীর মাতামহ। তিনি একজন প্রাচীন জমিদার। তাঁহার বয়স প্রায় নব্ব্যই পূর্ণ হইয়াছে। কিন্তু এখনও বৃদ্ধ বিনা চশমায় প্রদীপের আলোতে কাশীরাম দাসের মহাভারত অনায়াসে পড়িতে পারেন। লোকটির বেশ হাসিখুসী মেজাজ। আজকাল প্রায় ঠাকুর পূজা এবং ছিপে করিয়া পুকুরের মাছ ধরাতেই দিন কাটে।
তাঁহার দুই বয়স্ক পুত্র, বরদাকান্ত ও প্রমদাকান্ত। তাহাদের দুইজনের ঘরেও সাতটি মেয়ে ও পাঁচটি ছেলে জন্মিয়াছে। বরদাকান্তের জ্যেষ্ঠপুত্র হেমকান্ত, তাহার এক পিসীর সহিত কাশীতে বাস করে। তদ্ব্যতীত আর সকলেই বাড়ীতে। সুতরাং বাড়ীখানি ছেলেমেয়ের কোলাহলে এবং অট্রহাসিতে বেশ গোলজার। স্বর্ণ এখানে আসিয়া পরম যত্নে ও আনন্দের মধ্যে দিন কাটাইতে লাগিল। তাহার মামা ও মামীদের আদরে ও ভালবাসায়, মাতামহ এবং মাতামহীর স্নেহ ও যত্নে বাহিরে সুখানুভব করিলেও প্রাণের ভিতরে কি এক অতৃপ্তি ও শূন্যতা বোধ দিন দিন তীব্র হইতে তীব্রতর হইয়া উঠিতেছিল। ঈসা খাঁর কথা এক মুহূর্তেও ভুলিতে পারিত না। ঈসা খাঁর বীর্য-তেজঃ-ঝলসিত বীরবপু ও অনিন্দ্য-সুন্দর মুখমন্ডল, তাঁহার সেই মধুবর্ষিণী অথচ সুস্পষ্ট গম্ভীর ভাষা এক মুহূর্তের জন্য ভুলিতে পারিল না। ঈসা খাঁর সুন্দর-কমনীয় বীরমূর্তী তাহার হৃদয়ে এমন করিয়া আসন পরিগ্রহ করিয়াছে যে, যুবতীর চিন্তা ও কল্পনা, হৃদয় ও মন ঈসা খাঁ-ময় হইয়া গেল। দেখিল, ভুলিতে বসিলে স্মৃতি আরও দ্বিগুণ ত্রিগুণ জাগিয়া উঠে। হৃদয়ে যখন প্রেমাশ্নি জ্বলিয়া উঠে তখন উহাতে বাধা দিতে গেলে শিলা-প্রতিহত নদীর ন্যায় ভীষণ উচ্ছ্বসিত হইয়া দুই কুল প্লাবিত করিয়া ফেলে। পূর্বের লজ্জা ও সঙ্কোচ একেবারে উড়িয়া যায়। স্বর্ণ যখন বালক-বালিকার মধ্যে বসিয়া নানা প্রকারে তাহাদের আনন্দ বিধান এবং তাহাদের ক্ষণিক কলহের বিচার করিতে বসে, তখন তাহার মানসিক অধীরতা কিছু চাপা পড়ে বটে, কিন্তু আবার একেলাটি বসিলেই প্রাণের আকুলতা দশগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্ষার ভরা নদীর মত তাহার মন কি যেন এক চৌম্বক-আকর্ষণে ফাঁপিয়া ফুলিয়া উঠে। হৃদয়ের পরতে পরতে, শরীরের প্রতি অণুপরমাণুতে কি যেন এক পিপাসার তীব্রতা হইতে স্বর্ণময়ী বুঝিতে পারিল, যৌবন কাল কি ভয়ানক, প্রেমের আকর্ষণ কি ভয়ঙ্কর বেগশালী! উহা এক মুহূর্তের সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করিয়া সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে ভুলাইয়া প্রেমাস্পদের পদে আত্ম বিকাইয়া বসে। প্রেমাস্পদের মধ্যে তখন তাহার জীবনের আশা ও নির্ভর, সুখ ও শান্তির সর্বস্ব দেখিয়া পায়। রায়-নন্দিনীও দেখিতে পাইল, ঈসা খাঁ-ই তাঁহারা জীবনের সর্বস্ব। এক একবার তাঁহাকে পাইবার আশায় হৃদয় আশ্বস্ত হইত, কিন্তু পর মূহুর্তের নিরাশায় তাহার অন্তর ব্যথিত ও অবসন্ন হইয়া পড়িত। স্বর্ণ ভাবিত, “আমি ও তাঁহাকে দেহ-প্রাণ উৎসর্গ করিয়া বসিয়া আছি, কিন্তু তিনি তাহা না বুঝেন! অথবা আমি পৌত্তলিক কাফের-কন্যা বলিয়া যদি আমাকে গ্রহণ না করেন। কৈ! তাঁহাকে ত আমার প্রতি আকৃষ্ট বলিয়া বোধ হয় না।” আবার ভাবে, “না না, তিনি ত চিরকালই আমাকে ভালোবাসিয়া আসিয়াছেন। যাহাকে এতকাল ভালোবাসিয়াছেন, সে যদি এখন তাঁহার আত্মবিক্রয় করে, তবে কি তিনি আনন্দিত হইবেন না? নিশ্চয়ই আনন্দিত হইবেন।”
“ভালোবাসা প্রেমে ঘনীভূত হইতে কতক্ষণ?” আবার নিরাশা তাহার কর্ণকুহরে গোপনীয়ভাবে বলে, “কি বিশ্বাস। পুরুষের মন।” আবার স্বর্ণকুমারী চঞ্চল-চিত্ত হইয়া উঠে। এইরূপ আশা এবং নিরাশায় স্বর্ণময়ীর জীবন কেমন যেন আনন্দবিহীন ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিল। সে কি করিবে কিছুই ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিতেছিল না।
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুল্কপক্ষ চতুর্দশী সন্ধ্যা বহিয়া গিয়াছে। আকাশে কৃষ্ণ জলদখন্ড শ্রেণী বাঁধিয়া হিমালয় পানে ছুটিয়াছে। চতুর্দশীর চন্দ্র এক একবার মেঘের ফাঁক দিয়া নববধূর ন্যায় প্রেম-দৃষ্টিতে সুধাবর্ষণ করিয়া আবার দেখিতে দেখিতে তখনি মেঘের আড়ালে লুকাইতেছে। জগৎ এক একবার জ্যোস্না-প্লাবিত হইয়া হাসিয়া উঠিতেছে, আবার তরল আঁধারে ম্লান হইয়া যাইতেছে। বাতাস এক একবার থাকিয়া থাকিয়া উঁচু গাছের উপর দিয়া পাতাগুলিকে করতালির মত বাজাইয়া বহিয়া যাইতেছে। কখনও কখনও বাগানের নানাজতীয় ফল ফুলের গাছের মধ্যে এলোমেলোভাবে বহিয়া যেন লুকোচুরি খেলিতেছে। ম্লান-কৌমুদী-মাখা পুকুরের জলে ছোট ছোট ঢেউ উঠিয়া শ্রুতি-মধুর তক্ তক্ শব্দে পাড়ে যাইয়া লাগিতেছে। স্বর্ণময়ী এই বাগানের মধ্যস্থ পুস্করিণীর পরিস্কার বাঁধা ঘাটে বসিয়া জ্যোৎস্নালোকে বকুলের সুদীর্ঘ মালা গাঁথিতেছে এবং গুন্ গুন্ করিয়া আপন মনে গান গাহিতেছে। মালা গাঁথিতে গাঁথিতে এক একবার কি যেন মনে ভাবিয়া পুকুরে মৃদু লহরী-লীলার দিকে মুখ তুলিয়া চাহিতেছে এবং বুকভাঙ্গা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিতেছে! স্বর্ণময়ীর কণ্ঠ যদিও গুন্ গুন্ করিতেছিল এবং চম্পক অঙ্গুলী যদিও বকুলফুলে সূতা পরাইতেছিল, তত্রাচ তাহার মন যেন কোন্ এক দেশের শোভন আকাশে পথভ্রান্ত বিহঙ্গের ন্যায় উড়িয়া বেড়াইতেছিল। আজকার চন্দ্রও যেন মেঘ-পটলে লুক্কায়িত, স্বর্ণময়ীর মুখমন্ডলেরও তেমনি দীপ্তি লাবণ্য অন্তর্হিত। তাহার বদনমন্ডল যেন কেমন এক প্রকার বিষাদ গম্ভীর বলিয়া বোধ হইতেছে। এই গাম্ভীর্যের মধ্যেও তাহাকে অতুলনীয় সৌন্দর্যশালিনী বলিয়া বোধ হইতেছে। বাতাসে তাহার ললাট-প্রান্তস্থ কেশ-কলাপ ঈষৎ দুলিয়া দুলিয়া গোলাপীগণ্ড চুম্বন করিতেছিল। মালতীসুন্দরী, স্বর্ণময়ীর মামাতো ভগ্নী। যৌবনের সীমায় পদার্পন করিয়াছে। সুতরাং তাহার দেহ-লতিকা যেমন পুস্পিত, মনও তেমনি সুরভিপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছে। স্বর্ণময়ীকে সে আপনার হৃদয়ময় করিয়া তুলিয়াছে। স্বর্ণকে সে হৃদয়ের অন্তস্তম স্তর হইতে ভালোবাসে। স্বর্ণকে ভালোবাসিয়া সে নিজের জীবনকে মধুময় করিয়া তুলিয়াছে। মালতী সন্ধ্যা হইতে বাটীর কোনও ঘরের স্বর্ণকে খুঁজিয়া না পাইয়া অবশেষে বাগানে অনুসন্ধানের জন্য প্রবেশ করিল। বাগানে প্রবেশ করিয়া মালতী দেখিল যে, স্বর্ণ একলাটি বসিয়া গুন্ গুন্ করিয়অ গান করিতে করিতে মাল্য রচনা করিতেছে। সে অনেকণ স্বর্ণকে খুঁজিয়া পায় নাই, সুতরাং পুকুরপাড়ে স্বর্ণকে পাইয়া একবার তাহার সঙ্গে মজা করিবার লোভ মালতীর মনে অত্যন্ত বলবৎ হইয়া উঠিল। মালতী পশ্চাদ্দিক্ হইতে অতি ধীরে ধীরে পা টিপিয়া আসিয়া নীরবে দাঁড়াইল। স্বর্ণ তখন ঈসা খাঁর র্মর্তিধ্যানে প্রগাঢ় নিবিষ্ট, কাজেই অন্যমনস্কা ; মালতীর আগমন টের পাইল না। মালতী হাসিমুখে স্বর্ণময়ীর মালাগাঁথা দেখিতে লাগিল। স্বর্ণ দু’গাছি মালা গাঁথিয়া পার্শ্বে রাখিয়া দিয়াছিল। মালতী তাহা ধীরে ধীরে নিঃশব্দে তুলিয়া লইয়া আপনার গলায় পরিয়া খিল্ খিল্ করিয়া বেদম হাসিয়া উঠিল। স্বর্ণ অন্যমনস্কা ছিল, সুতরাং প্রথমে চমকিয়া উঠিল। তারপর মালতীর গলা ধরিয়া খুব হাসিতে লাগিল। সে হাসি যেন আর থামিতে জানে না। সে বেদম হাসির চোটে সমস্ত বাগান ও পুকুরের জলও যেন অট্র হাসিতে লাগিল। নিকটস্থ বকুল গাছের ডালের ঝোপে একটি কোকিল বোধ হয় নিদ্রা যাইতেছিল, শ্রীমতীদ্বয়ের হাসির চোটে আতঙ্কিত হইয়া কুহু কুহু করিয়া ডাকিতে ডাকিতে উড়িয়া যাইয়া পুস্করিণীর অপর পার্শ্বে আম্রবৃক্ষে আশ্রয় লইল। অনেকক্ষণ পরে হাসির বেগ থামিলে, স্বর্ণ মালতীকে বলিল, “কি লো! তুই এখানে মরতে এসেছিস্ কেন? আমাকে যে একবারে চমকে দিয়েছিস্? আমি তোর বর না কি লো? যে আমাকে ছাড়া একদন্ড থাকতে পারিস না!”
মালতীঃ আমি ভাই মরতে আসি নাই, তোমাকে ধরতে এসেছি। তোমাকে বর করতে কি আমার অমত? তুমি যদি বর হতে সাহস পাও, তাহ’লে আমি এখনই তোমাকে বরণ করি। কি বল? তোমার মত বর পেলে কি আর ছাড়ি?
স্বর্ণঃ বটে, বরের জন্য দেখছি তুই ক্ষেপে উঠেছিস্। বেশী অস্থির হ’স না, সবুর কর-মেওয়া ফলবে।
মালতীঃ তা ত! আপন স্বপন পরকে দেখাও। বরের জন্য কে ক্ষেপে উঠেছে তা মালা গাঁথাতেই টের পাওয়া যাচ্ছে, আমরা বুঝি কিছু বুঝি না?
স্বর্ণঃ কি বুঝিস্ লো! মালা তো তোর জন্যই গাঁথ্ছিলাম।
মালতীঃ বটে; আমার জন্য না ঈসা খাঁর জন্য?
স্বর্ণঃ (কুপিত হইয়া) তুই এমন কথা বল্লি যে, জিব টেনে ছিঁড়ে দেব।
মালতীঃ কেন, আমি কি বলেছি, রোজই ত তুমি ঈসা খাঁর গল্প কর। তাঁর সাহস, তার বীরত্ব, তাঁর ভালোবাসার কথা তুমিই ত বল।
স্বর্ণঃ বেশ্ ত আমি বলি, তাতে কি হয়েছে? তাঁর বীরত্বের কথা, তাঁর সাহস ও সৌন্দর্যের কথা এবং আমাকে যে তিনি দুই বার প্রাণ রক্ষা ক’রেছেন, তা আমি এক-শ বার বলবো। তাতে দোষ কি?
মালতীঃ তবে আমি কি দোষের কথা বলেছি?
স্বর্ণঃ তুই মালা দেওয়ার কথা বল্লি কেন ?
মালতীঃ ভারি ত অপরাধ ! না-পছন্দ হ’ল কিসে?
স্বর্ণঃ না-পছন্দ বা অযোগ্যতার কথা কে বলেছে?
মালতীঃ বাঃ! বা! তবেই ত তোমার পছন্দ ও যোগ্য হ’য়েছে দেখছি। তাই ত আমি মালা দিতে বলছি।
স্বর্ণ একটু অপ্রতিভ হইয়া পড়িল। পরে বলিল, “ওলো! তিনি যে মুসলমান, আর আমি যে হিন্দু।”
মালতীঃ হ’লই বা হিন্দু আর মুসলমান। আজকাল ত হিন্দু-মুসলমানে খুবই বিয়ে হচ্ছে।
স্বর্ণঃ কোথায় খুব হচ্ছে?
মালতীঃ কেন? এই ত ভুলুয়ার ফজল গাজীকে রামচন্দ্রপুরের লক্ষ্মীকান্ত মজুমদার কন্যা দিয়েছে। বাখরগঞ্জের হাশমতুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে বাঁশজোড়ের চক্রবর্তীদের মেয়ে শরৎকুমারীর বিয়ে ত গত পৌষেই হয়েছে। বামন ঠাকুরেরা এখন ত খুবই পাতি দিচ্ছেন। তাঁরা ত বলেছেন, “মুসলমান দেবতার জাতি, তাদের ঘরে মেয়ে দিলে অগৌরব বা অধর্ম নাই।” গত বৎসর সরাইলের জমিদার মথুরাকান্ত মুস্তফী ও আলমপুরের চৌধুরী শাহ্বাজ খানের মধ্যে কেন্দ্রপাড়া গ্রাম নিয়ে যে তুমুল বিবাদ-বিসম্বাদ হয়, সে বিবাদ মুথরাকান্ত মুস্তফীর কন্যা সরোজবাসিনীর সঙ্গে চৌধুরী সাহেবের পুত্র আবদুল মালেকের বিবাহ দিয়েই ত মিটিয়ে ফেলা হ’ল। বাবা সে বিয়ের নিমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। তাঁর মুখেই শুনেছি।
স্বর্ণঃ ওরূপ দুই চারটি ঘটনায় কি আসে যায়?
মালতীঃ কেন? দুই চা’রটা কোথায়? বাদশা নবাব ও উজিরদিগকে বড় বড় হিন্দু রাজরাজড়া কন্যা দিচ্ছেন।
স্বর্ণঃ আরে ওসব রাজ-রাজড়ার ও তাঁদের কন্যাদের কথা ছেড়ে দে। তাঁদের সবই শোভা পায়।
মালথীঃ (হাততালি) বাঃ বাঃ! বাঃ! আমিও ত সেই জন্যই ঈসা খাঁকে বরণ করতে বলছি। তুমি যে রাজা কেদার রায়ের কন্যা। তোমারও ত বেশ শোভা পাবে!
স্বর্ণ বড়ই অপ্রস্তুত ও অপ্রতিভ হইল। সে মনে মনে ভাবিল, আজ এরূপ হচ্ছে কেন? মালতী যে বড়ই জব্দ করতে আরম্ভ করল।
স্বর্ণকে অপ্রতিভ দেখিয়া মালতী বলিল, “তবে এইবার ঈসা খাঁকে মালা দেবে? কেমন?”
স্বর্ণঃ তোর বুঝি মুসলমান বিয়ে করতে বড়ই সাধ?
মালতীঃ আমার সাধ হলেই বা কি? আমি ত রাজকন্যা নই। এ সাধারণ হিন্দু জমিদারের কন্যাকে কোন মুসলমান গ্রহণ করবে?
স্বর্ণঃ তুই যদি বলিস্ না হয় আমি তার উপায় দেখি।
মালতীঃ আগে ভাই তুমি নিজের যোগার দেখ। কথার বলে, ‘মামা! আগে দেখ নিজের ধামা।-‘
স্বর্ণ মালতীর কথায় তাহার গালে এক মৃদু ঠোক্না দিতে অগ্রসর হইলে, মালতী নিজের গলা হইতে ফুলমালা লইয়া স্বর্ণের গলায় পরাইয়া দিল এবং চকিতে তাহার গণ্ড চুম্বন করিয়া বাড়ীর দিকে ছুটিল। স্বর্ণও তাহাকে ধরিবার জন্য বাতাসে আঁচল উড়াইয়া পুকুরের বাগান আলো করিয়া দ্রুত ছুটিল।