নতুন রাষ্ট্র : ভাষা সংস্কার কমিটি
পৃথিবীতে কোনো জাতিরাষ্ট্রই এক-জাতি-রাষ্ট্র নয়। এক ভাষাভাষী রাষ্ট্রও নেই বললেই চলে, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি আরব দেশ ছাড়া। ভারতের মতো পাকিস্তানও। ছিল বহুজাতিক রাষ্ট্র। বহু ভাষাভাষী মানুষের রাষ্ট্র। বহু ধর্মের মানুষের দেশ। জাতীয় সংহতি সব দেশেই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। হাজার মাইল দূরে দুই ডানাবিশিষ্ট পাকিস্তানের সংহতির জন্য প্রয়োজন ছিল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্যের। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকশ্রেণি সংহতির জন্য শুধু ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করতে চাইল। জাতীয় সংহতির জন্য ধম কোনো প্রধান উপাদান হতে পারে না।
মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ তাঁর এক রচনায় মওলানা মোহাম্মদ আকরম খার একটি লেখার উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তাতে আকরম খাঁ লিখেছেন :
‘সকল দলেই চরমপন্থী আছে। (আমাদের বাঙালি মুসলমান) চরমপন্থীরা বলিতে আরম্ভ করিয়াছেন, বাঙ্গলা শুধু আমাদের মাতৃভাষা নহে উহা আমাদের জাতীয় ভাষাও বটে।… নেশন বা জাতি সম্বন্ধে মোছলমানদের আদর্শ স্বতন্ত্র। এই স্বাতন্ত্রই মোছলেম জাতীয়তার বিশেষত্ব এবং মোছলেম জাতির রক্ষাকবচ। এ বিষয়ে আলোচনা করিবার সময় আমাদিগকে বিশেষ করিয়া স্মরণ রাখিতে হইবে যে, মোছলমানের জাতীয়তা বংশ, ব্যবসায় বা দেশগত নহে। মোছলমানের। জাতীয়তা সম্পূর্ণ ধর্মর্গত। বিশ্বের সব মোছলমান মিলিয়া এক অভিন্ন ও অভেদ্য জাতি। কোনো মহাদেশের কোনো দেশের বা কোনো প্রদেশের মোছলমানদিগের দ্বারা কথিত ভাষা সেই দেশের মোছলমানদিগের জাতীয় ভাষা বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। মোছলমানের জাতীয় ভাষা যে আরবি একথা ভুলিলে মোছলমানের সর্বনাশ হইবে। এই আরবি ভাষাই বিশ্ব মোছলমানের মিলনের একমাত্র অবলম্বন।’
[মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা-প্রীতি, ঢাকা,১৯৮০, পৃষ্ঠা. ৬২]
আকরম খাঁর এই বক্তব্য অনেক দিন আগের। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর আগে তিনি তাঁর এক লেখায়, যা মোহাম্মদীতে প্রকাশিত হয়েছিল। তখন ছিল অখণ্ড বাংলা ও অখণ্ড ভারত। তিনি জানতেন না যে একদিন পাকিস্তান নামে একটি রাষ্ট্র হবে এই উপমহাদেশে এবং বাংলা ভাগ হয়ে তার এক অংশ হবে পাকিস্তানের। একটি প্রদেশ এবং আরেক অংশ হবে ভারতের একটি প্রদেশ।
পাকিস্তানের দুই অংশেরই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুদীর্ঘ কালের। এদিকে বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেমন অতি প্রাচীন; তেমনি ওদিকে পাঞ্জাব, সিন্ধু, সীমান্ত প্রদেশ প্রভৃতির সভ্যতা কয়েক হাজার বছরের। এই রাষ্ট্রের ভাষা-সংস্কৃতি নিয়ে কোনো বিতর্কের অবকাশ ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানের শাসকশ্রেণি ভাষা-সংস্কৃতির প্রশ্নে দায়িত্বজ্ঞানহীন তৎপরতা শুরু করে।
১৯৪৯ সালের ৯ মার্চ সরকার ঘোষণা করে ‘ইস্ট বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ কমিটি’-পূর্ব বাংলা ভাষা কমিটি। উদ্দেশ্য, পূর্ব বাংলার মানুষের ভাষার সরলীকরণ, সংস্কার ও প্রমিতকরণের প্রশ্ন বিবেচনা করা এবং বাংলা ভাষাকে নির্দিষ্টভাবে পূর্ব বাংলা এবং সাধারণভাবে পাকিস্তানের মানুষের প্রতিভা ও কৃষ্টির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা। এই কমিটি গঠন ছিল একেবারেই অপ্রয়োজনীয় একটি কাজ। নতুন রাষ্ট্রে অসংখ্য সমস্যা ছিল। সেসব জরুরি সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে বাংলা ভাষা সংস্কারে সরকারের তৎপরতার নিশ্চয়ই বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল। পাকিস্তানের মানুষের প্রতিভা ও কৃষ্টি কথাটিতে তা পরিষ্কার। উর্দু, পাঞ্জাবি ও সিল্কি ভাষাও পাকিস্তান ও ভারত দুই দেশেই প্রচলিত। সেগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের মাথাব্যথা ছিল না। বাংলা ভাষা সংস্কারের উদ্বেগ অর্থহীন ছিল না, কারণ তার সঙ্গে জড়িত ছিল রাজনীতি-প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি।
ভাষা সংস্কার কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল মুসলিম লীগের নেতা ও আজাদ পত্রিকার মালিক মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁকে, বাংলা ভাষার বিষয়ে যার কোনো জ্ঞান ছিল না। কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফাকে, তিনি তখন ছিলেন ফরিদপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি ছিলেন খুব ভালো কবি, কিন্তু ভাষাবিজ্ঞানে তারও কোনো ব্যুৎপত্তি ছিল না। সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী ও লেখক হাবীবুল্লাহ বাহার, মন্ত্রী এ এম মালিক (একাত্তরে ইয়াহিয়া নিযুক্ত অধিকৃত বাংলাদেশের গভর্নর), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (দিনাজপুর) মওলানা আবদুল্লাহ আলবাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও দৈনিক আজাদ-এর সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন, পুলিশের ডিআইজি সৈয়দ আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ ইসমাইল, শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মীজানুর রহমান, সিলেটের এমসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এমাজউদ্দিন আহমদ, ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজের অধ্যক্ষ শাইখ শরফুদ্দীন, নওগাঁর ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজের অধ্যাপক আবুল কাসেম মোহাম্মদ আমুদ্দীন, চট্টগ্রাম আলাভিয়া প্রেসের মালিক জুলফিকার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান গণেশচরণ বসু এবং ঢাকার জমিদার ও সমাজসেবক মোহিনী মোহন দাস। শহীদুল্লাহ ও গণেশ বসু ছাড়া কমিটির কোনো সদস্যের বাংলা ভাষাতত্ত্বে কোনো জ্ঞান ছিল না। তবে তাঁদের যা ছিল, তা হলো বাংলা ভাষাকে ইসলামি রূপ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা। বাংলা ভাষা সংস্কারের জন্য গঠিত এই কমিটির সুপারিশ যারা করেছিলেন, তাঁদের আক্কেলের তারিফ করতে হয়।
অবশ্য পরে রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান মুহম্মদ এনামুল হক এবং ঢাকার জগন্নাথ কলেজের বাংলার অধ্যাপক অজিত কুমার গুহকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরল-সোজা মানুষ গোলাম মোস্তফার কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন সম্ভব ছিল না, তাই তাঁকে বাদ দিয়ে শাইখ শরফুদ্দীনকে সদস্যসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান থেকে বোঝা যায়, দুইজন হিন্দু সদস্য গণেশ বসু ও অজিত গুহের পক্ষে ওই ধরনের সাম্প্রদায়িক পরিবেশে কাজ করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁরা অপারগতা প্রকাশ করে কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি নেন। ভাষা কমিটি সংখ্যালঘুদের মনের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকবে। কারণ তারা দেখছিলেন, বাংলা ভাষা থেকে হিন্দু উপাদান বা লোকায়ত বাংলার উপাদান বাদ দিয়ে ইসলামি বা মুসলমানি উপাদান যোগ করাই হবে ওই কমিটির কাজ। মূল বিষয় বাংলা ভাষাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস মাত্র। ওই অপপ্রয়াসে শহীদুল্লাহ ও এনামুল হকের মতো পণ্ডিতদের যুক্ত থাকা ছিল অত্যন্ত দুঃখজনক। গণেশ বসু ও অজিত গুহের মতো তাঁরাও যদি কমিটি থেকে অব্যাহতি চাইতেন, সেটাই হতো উপযুক্ত কাজ। কিন্তু তারা যতটা না বিশ্বাস থেকে তার চেয়ে বেশি বিভ্রান্তি থেকে এবং সরকারি আনুকূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। গণেশ বসু অব্যাহতি নিলে তার জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হরনাথ পালকে নেওয়া হয়।
পূর্ব বাংলার মানুষ চেয়েছিল অর্থনৈতিক মুক্তি। সেই দিকেই সরকারের প্রাধান্য দেওয়ার কথা। কিন্তু তা না দিয়ে বাঙালির ভাষাকে ইসলামীকরণ, মুসলমানীকরণ, আরবি হরফে বাংলা লেখার সুপারিশ কিংবা রোমান হরফে বাংলা লেখার অপচেষ্টা চালাতে থাকে; যেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয়েছে বাংলা ভাষার সংস্কার করার জন্য।
আরবি হরফে বাংলা লেখার পক্ষে যেসব বাঙালি লেখক-শিক্ষাবিদ কেন্দ্রীয় সরকারের সুরে সুর মেলান, তাঁদের একজন সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন। ১৯৪৯-এর ১৫ মার্চ, তিনি দৈনিক আজাদ-এ প্রকাশিত এক লেখায় বলেন, ‘…আরবি হরফে বাংলা লেখা সম্ভব কি না সে প্রশ্নের আলোচনা আমরা করিব না; কারণ পূর্বেই বলিয়াছি যে, পূর্ব পাকিস্তানে এককালে আরবি হরফের প্রচলন ছিল এবং এখনও এলাকা বিশেষে ইহার প্রচলন রহিয়াছে। আরবি হরফে বাংলা লেখার অসুবিধার কথা যাহারা বলেন, তাহাদের যুক্তির অসাড়তা ইতিহাসই প্রমাণ করিয়া দিয়াছে। সপ্তদশ শতাব্দীর আলাওল যে বাংলা লিখিতেন উহাতে বেশ সংস্কৃত শব্দ ছিল। যদি আলাওলের পক্ষে সেই ভাষা আরবি হরফে লিখিতে কোনো অসুবিধা না হইয়া থাকে তবে এ যুগে নূতন করিয়া অসুবিধা হওয়ার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নাই। [বশীর আলহেলাল, ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস, বাংলা একাডেমি,১৯৮৫, পৃ. ৬৩৩-৩৪]
সৈয়দ আলাওলের নিজের হাতের লেখা কোনো পাণ্ডুলিপি সাজ্জাদ হোসায়েন কোথাও দেখেছেন কি না তা তিনিই বলতে পারতেন, তবে তিনি বা তারও আগে আবদুল হাকিম এবং ওই সময়ের কবিরা নিশ্চয়ই বাংলা অক্ষরেই লিখেছেন। সেকালে মুসলমান কবিদের কেউ যদি আরবি হরফে বাংলা কবিতা লিখে থাকেন, এবং কেউ কেউ লিখেছেনও, সেটা তিন শ বছর পরে আবার বাংলা ভাষায় চালু করতে হবে, যখন বাংলা সাহিত্য বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে, তা কোনো সুস্থ বা প্রকৃতিস্থ মানুষের পক্ষে ভাবা সম্ভব নয়। পাকিস্তান একশ্রেণির বাঙালি শিক্ষিত মানুষের মস্তিষ্ক বিকৃত করে দিয়েছিল। অল্পসল্প মাথা খারাপ নয়,বদ্ধ উন্মাদ করে দিয়েছিল একশ্রেণির বাঙালি মুসলমানকে। তবে তারা সংখ্যায় অতি নগণ্য। সাধারণ মানুষ ওই সব অপতৎপরতাকে ঘৃণা করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।
আরবি হরফে বাংলা লেখার পক্ষে ছিলেন যাঁরা, তাঁদের একজন সাংবাদিক সাহিত্যিক মুজিবর রহমান খাঁ। আবুল ফজলের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ১৯৪৯-এর ২ এপ্রিল, মুজিবর রহমান খাঁ বলেন :
‘মোছলেম লীগের রাজনৈতিক আন্দোলনের দ্বারা আজ আমরা পাকিস্তান অর্জন করিয়াছি। আমাদের স্বাধীন পাকিস্তানের তমদ্দুন আন্দোলন হইবে আমাদের জাতীয় ভাবধারাকে সজীব করিয়া তোলার প্রয়াস। প্রথমত: জাতীয় পাকিস্তানি রাষ্ট্র ইহার অর্থ পাকিস্তানে এক রাষ্ট্রীয় ভাষা, এক রাজনৈতিক বন্ধন ও এক তমদ্দুন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিরাট ভৌগোলিক ব্যবধান রহিয়াছে; কিন্তু আমাদের পরস্পরের নিকটতম হওয়ার জন্য প্রয়োজন ঐক্য, মিলন, সংহতি এবং তমদ্দুনিক যোগাযোগ। ইহার জন্যই আরবি বর্ণমালা গ্রহণ প্রয়োজন।
‘বাঙ্গলা সাহিত্যে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিবঙ্গের মধ্যে একটি বিরোধ রহিয়াছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও মোছলেম লীগের বিরোধের ন্যায় বাংলাসাহিত্যেও মোছলমান ও হিন্দু সাহিত্যিকগণের মধ্যে একটা বিরোধ রহিয়াছে। …. বাঙ্গলা বর্ণমালা সংস্কৃত বর্ণমালার অপভ্রংশ এবং ইহা বহু ত্রুটিপূর্ণ। এজন্য বহু হিন্দু সাহিত্যিক ও পণ্ডিত বাঙ্গলা বর্ণমালাকে রোমান অক্ষরে রূপান্তরিত করিবার জন্য প্রস্তাব করিয়াছিলেন। সুসাহিত্যিক এবং ভারত সরকারের মন্ত্রী শ্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি নিজে প্রস্তাব করিয়াছেন বাংলা বর্ণমালাকে হিন্দি বর্ণমালায় রূপান্তরিত করিবার জন্য। যদি বাংলা বর্ণমালা হিন্দি বর্ণমালায় রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়, তবে বাংলা বর্ণমালা আরবিতে গ্রহণ করা কষ্টকর হইতে পারে না। …. সেই দিন নিকটবর্তী যেই দিন আরবি বর্ণমালায় বাংলা ভাষা এবং উর্দুর মিশ্রণে একটি মাত্র পাকিস্তানি ভাষার জন্ম হইবে।
‘হিন্দুস্থানের জাতীয়তাবোধ দৃঢ়তর করিবার জন্য হিন্দুস্থানি সরকার সমগ্র হিন্দুস্থানে এক ভাষা, এক বর্ণমালার নব হিন্দুস্থান গড়িতে অগ্রসর হইতেছে। আজ সমগ্র পাকিস্তানবাসী নিজেদের সাহিত্যকে আরবি অক্ষরে রূপান্তরিত করিতে চাহে। জাতি চাহে পর্বতের ন্যায় মজবুত ভিত্তিতে তাহাদের তমদ্দুনের প্রতিষ্ঠা। ইহাই জাতীয় আন্দোলন। আরবি অক্ষরে বাংলা বর্ণমালাকে রূপান্তরিত করিলে। বাংলাসাহিত্যের ক্ষতির তুলনায় লাভ হইবে শতগুণ বেশি।]
[আজাদ, ৯ এপ্রিল, ১৯৪৯]
এই জাতীয় লেখকের সততার পরিচয় পাওয়া যেত যদি তারা নিজেরা আরবি অক্ষরে বাংলা সাহিত্য রচনা করে দেখিয়ে দিতেন। তাঁরা সেই ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছেন যে বিষয়ের তারা চর্চা করেন না। তাঁদের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলা সাহিত্যের লক্ষ কোটিগুণ ক্ষতি হতো।