তরু উপন্যাস লেখা শুরু করেছে। শুরুটা আয়োজন করে করা। টেবিল ল্যাম্প অফ করে সে আঠারোটা মোমবাতি জ্বালিয়েছে। তার বয়স আঠারো, এই জন্যে আঠারোটা মোমবাতী। রেডিওবন্ড কাগজ আনিয়েছে। লিখেছে ফাউনটেন পেন দিয়ে। সে লেখা শুরু করেছে রাত বারোটায়। আপাতত উপন্যাসের নাম দিয়েছে ‘নিশি উপন্যাস’।
তরুর লেখা উপন্যাসের প্রথম কয়েক পাতা
আমি আঠারো বছরের রূপবতী তরুণীদের একজন। আমার নাম শামসুন নাহার খানম। ডাকনাম তরু। ক্লাসে আমার বন্ধুরা আমাকে ডাকে শসা। কেন শসা ডাকে আমি জানি না। কেন ডাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। কেউ বলে না, শুধু হাসে। নিশ্চয়ই বাজে কোনো কারণ আছে। সবচেয়ে বেশি হাসে আয়েলিতা। হাহা হিহি হাহা। আয়েলিতার হাসি পুরুষদের মতো। আয়েলিতার নিক নেম ছাগলের দাড়ি। শুনলে মনে হয় খারাপ কিছু না, আসলে ভয়ংকর।
আমি বাবার সঙ্গে খাকি। বিয়ে হয় নি এই জন্যে বাবার সঙ্গে থাকি। আমার ধারণা বিয়ের পরও আমি বাবার সঙ্গেই থাকব। কারণ বাবা একা। বাবার প্রথম স্ত্রী আমার বড় খালা। বিয়ের দু বছরের মাথায় তিনি হার্ট এ্যাটাকে মারা যান। তখন বাবা আমার মাকে বিয়ে করেন। আমার মা মারা যান আমার জন্মের এক বছরের মাথায়। আমার আর কোনো খলাি ছিলেন না বলে বাবা আর বিয়ে করতে পারেন নি। আমি নিশ্চিত আমার যদি আরেকজন খালা থাকতেন বাবা তাকেও বিয়ে করতেন এবং তিনিও মারা যেতেন। বাবা তার মৃত স্ত্রীদের অত্যন্ত পছন্দ করেন। আমার মা এবং খালা দুজনেরই দুটা ওয়েল পেইনটিং পাশাপাশি সাজানো। দুজনের মৃত্যু দিনে বাড়িতে কোরানখানি হয়। মিলাদ পড়ানো হয়। বাবা মুখ শুকনা করে ঐ দুই দিন ঘরেই থাকেন কোথাও যান না। শুধু তা-না তিনি সেদিন মাওলানার কাছে তওবা করেন। তওবা অনুষ্ঠানে চোখের পানি ফেলেন।
বাবার নাম আব্দুল খালেক খান। তিনি ফালতু ধরনের ব্যবসায়ী। তার তিনটা সিএনজি ট্যাক্সি আছে। ট্যাক্সির গায়ে লেখা শামসুন নাহার পরিবহন। ট্যাক্সি ছাড়াও তার দুটি ট্রাক আছে। ট্রাকের গায়ে লেখা তরু পরিবহন। সমগ্র বাংলাদেশ সাত টন। আমরা যেখানে থাকি সেই রাস্তার শেষ মাথায় বাবার একটা মুদি দোকানের মতো আছে। মুদি দোকানের নাম শামসুন নাহার খানম ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, বাবার একটা নাপিতের দোকানও আছে। তার নাম—নাহার হেয়ার ড্রেসিং। সবই আমার নামে। বাবা যদি কোনদিন রেডিমেড হাফ শার্টের দোকান দেন তাহলে তার নামও হবে তরু রেডিমেড হাফ শার্ট।
ফালতু ধরনের ব্যবসা হলেও বাবার অনেক টাকা। কারণ তিনি অত্যন্ত হিসাবি। আমাদের বাসায় বাজে খরচ করার কোনো উপায় নেই। অনেক খ্যাখ্যান করার পর তিনি আমাকে সবচেয়ে সস্তার একটা মোবাইল কিনে দিয়েছেন। মোবাইলে কাউকে টেলিফোন করা নিষেধ। কেউ টেলিফোন করলে ধরা যাবে। বাবা আমাকে ডেকে কঠিন গলায় বলেছেন, আধুনিক বিশ্বের (বাবা কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার পছন্দ করেন) অপ্রয়োজনীয় একটি আবিষ্কারের নাম মোবাইল টেলিফোন।
আমি বলেছিলাম, কেন অপ্রয়োজনীয়?
বাবা উত্তর দিয়েছেন, কারণ এই বস্তু মানুষকে অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে উৎসাহী করে। কর্মবিমুখ করে। তুমি অবশ্যই তোমার মোবাইলের নাম্বার কাউকে দিবে না।
আমি বললাম, কাউকে নাম্বার না দিলে তারা টেলিফোন করবে কীভাবে? ঠিক আছে আমার মোবাইল লাগবে না। এটা তোমার কাছে থাকুক। আমার যখন দরকার হবে তোমার কাছ থেকে নিয়ে টেলিফোন করব।
এরপর বাবা বিরক্ত হয়ে আমাকে টেলিফোন দিয়ে দিয়েছেন। বাবা কথায় কখনও আমার সঙ্গে পারেন না। যখন পারেন না, তখন হামকি-ধামকি করেন।
আমার মোবাইল টেলিফোনের নাম্বার ০১৭৮১১৯২২৩০। আমার উপন্যাস যদি ছাপা হয়, কেউ যদি কিনে পড়েন, তাহলে আমাকে এই নাম্বারে টেলিফোন করে জানাবেন। রাত বারোটার পরে করবেন, তখন কলচার্জ কম। আমি অনেক রাত জাগি।
এখন বলি আমরা কোথায় থাকি। কলাবাগানে। বিশ বছর আগে বাবা তার এক বন্ধুর কাছ থেকে তিন কাঠা জায়গা কিনেছিলেন। সেই তিন কাঠায় বাবা দোতলা বাড়ি বানিয়েছেন। আমরা দোতলায় থাকি। বাবার ব্যবসার লোকজন ট্রাক ড্রাইভার, ট্যাক্সি ড্রাইভার, দোকানদার, নাপিত—এরা সবাই একতলায় থাকে।
একতলার দুটা কামর বাবা ভাড়া দিয়েছেন। সেখানে জামান নামে এক ভদ্রলোক তার স্ত্রী এবং শালাকে নিয়ে থাকেন। জামান সাহেব কিছুদিন পরপরই তার শালাকে মারধর করেন। শালাটার নাম সনজু। সে কলেজে পড়ে। সেকেন্ড ইয়ার। হাবা টাইপের। দুলাভাইয়ের মার খেয়ে সে হাউ হাউ করে দেতিলার সিঁড়িতে বসে কাঁদে। ছেলেটা দেখতে সুন্দর আছে, তবে অতিরিক্ত রোগা। সে যদি আমাদের সঙ্গে পড়ত তাহলে আমি তার নাম দিতাম সুতা কৃমি।
এখন আমি আপনাদের সুতা কৃমির একটা মজার গল্প বলব। উপন্যাসের নিয়মে এই গল্প আরো পরে বসা উচিত কিন্তু পরে ভুলে যাব বলে এখনি বলছি। উপন্যাসের নিয়মে চরিত্রদের চেহারা এবং আচার-ব্যবহার কিছুটা বর্ণনা করা দরকার, যাতে পাঠক চরিত্র সম্পর্কে ধারণা করতে পারে এবং কল্পনায় সে একজনকে দাড়া করাতে পারে। আমি বাবার চেহারা বর্ণনা করতে ভুলে গেছি। সুতা কৃমি সম্পর্কে শুধু বলেছি দেখতে সুন্দর। এখন দুজনের চেহারার বর্ণনা দেব। তারপর সুতা কৃমির গল্পটা বলব।
বাবা
জনাব আব্দুল খালেদ খান
বয়স চল্লিশ মিডিয়াম হাইট। মোটাসোটা। ভুড়ি আছে। মাথায় টাক। গোঁফ আছে। মোটা গোফ। গোঁফ খানিকটা পাকা। কানে লম্বা লম্বা লোম আছে। এইগুলি তিনি কখনও কাটান না। কানের লোম না-কি লক্ষ্মী, কাটতে নেই। মুখ গোলাকার। গায়ের রঙ ফর্সা। চোখে চশমা পরেন। প্রচুর পান খান বলে দাঁতে কালো কালো দাগ আছে। তার কানে যেমন লম্বা লম্বা লোম আছে, নাকেও আছে। চুল কাটার সময় নাপিত নাকের গর্তে কেঁচি ঢুকিয়ে নাকের চুল কেটে দেয়। নাপিত এই কাজটা আমাদের বাসায় এসে করে বলে আমি দেখেছি। কুৎসিত দৃশ্য।
ভুল ইংরেজি অবলীলায় বলা বাবার স্বভাব। ট্রাক ব্যবসায় তিনি Loss খেয়েছেন এর ইংরেজি তিনি করলেন Big lost in truck business.
রাগারাজি, হৈ চৈ করা তার স্বভাব। তার ড্রাইভারদের তিনি বস্তি টাইপ গালাগালি করেন আবার কিছুক্ষণ পরেই, বাবা রে! কেন এরকম করিস বলে পিঠে হাত দেন।
সুতা কৃমি
সনজু
বয়স ১৮-১৯ কিংবা ষোল-সতেরো। রোগা। লম্বায় খুব সম্ভব পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চি। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা। চেহারা বালক বালক। মুখ লম্বাটে। চোখ মেয়েদের মতো। অর্থাৎ চোখের পাপড়ি বড় বড়। নাক সামান্য চাপা। ডান দিকের কপালে লাল তিল আছে। মাথার চুল কোঁকরানো, প্রায় নিগ্রো টাইপ। ঠোঁটও নিগ্রোদের মতো মোটা। তবে দেখতে খারাপ লাগে না।
এখন সুতা কৃমির ঘটনাটা বলি। সেদিন ছিল বুধবার। বুধবার সকালে আমার কোনো ক্লাস নেই। প্রথম ক্লাস এগারোটায়। ক্লাস নেবেন রবীন্দ্রবিশারদ ড. সিদ্দিক। রবীন্দ্রবিশারদরা সাধারণত নজরুলবিদ্বেষী হয়। তিনি নজরুলবিদ্বেষী। তার ধারণা কবি নজরুল একজন মহান পদ্যকার ছাড়া কিছুই না।
সিদ্দিক স্যার কখনও রোল কল করেন না, সবাইকে পার্সেন্টেজ দিয়ে দেন। কাজেই আমি ঠিক করলাম কলেজে যাব দুপুরের পর। টিভি দেখার জন্যে টিভি ছেড়েছি (বাবা বাসায় নেই তো, টিভি ছাড়া যায়)। জিটিভিতে শাহরুখ খানের কি একটা ছবি দেখাচ্ছে। শাহরুখ খানের অভিনয় আমার ভালো লাগে না। তার চেহারা ফাজিলের মতো, অভিনয়ও ফাজিলের মতো। তারপরেও দেখছি। হঠাৎ সুতা কৃমির বোন হাউমাউ করে দরজা খুলে ঘরে ঢুকেই বলল, তরু আমার ভাইটাকে বাঁচাও, ওকে মেরে ফেলছে। ওর দুলাভাই ওকে মেরে ফেলছে। আমি ছুটে গেলাম।
গিয়ে দেখি রক্তারক্তি কাণ্ড। বেচারা লুঙ্গি পরেছিল। লুঙ্গি খুলে গেছে। সে মেঝেতে নেংটা হয়ে পড়ে আছে। ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে। হাত কেটে রক্ত পড়ছে। সুতা কৃমির বোন নীলা ভাবী লুঙ্গি দিয়ে ভাইকে ঢাকল। আমি ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বললাম, কী করছেন আপনি! এখন এ যদি মারা যায় আপনার তো ফাসি হয়ে যাবে। আমি সাক্ষী দেব।
ভদ্রলোক বললেন, তরু তুমি জানো না এ কত বড় চোর। আমার বিশ হাজার টাকা চুরি করেছে। নিজের হাতে ব্রাউন পেপারে মুড়ে ড্রয়ারে রেখেছি। আমরা তিন জন ছাড়া ঘরে আর কেউ আসে না …
আমি বললাম, কথাবার্তা পরে শুনব। এখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আমার কথা শেষ হবার আগেই সুতা কৃমি রক্ত-বমি করা শুরু করল। এই দেখে সম্ভবত তার দুলাভাইয়ের টনক নড়ল। স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে সুতা কৃমিকে নিয়ে রওনা হলো হাসপাতালের দিকে।
দুপুরে ভাত খাচ্ছি, নীলা ভাবী এসে জানাল ডাক্তাররা তার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আর টাকাটা চুরি হয় নাই। পাওয়া গেছে।
আমি বললাম, কোথায় পাওয়া গেছে?
নীলা ভাবী চোখ মুছতে মুছতে বলল, খাটের নিচে। ড্রয়ার থেকে নিচে পড়েছে, পায়ের ধাক্কা লেগে চলে গেছে খাটের নিচে।
জামান ভাই এখন কি বলছেন?
কী আর বলবে। কিছু বলছে না। গম্ভীর হয়ে আছে।
সরি তো বলবে।
আশ্চর্য কথা বললে। তোমার ভাই কি সরি বলার মানুষ। টাকা পাওয়া। গেছে এতেই সে খুশি।
সুতা কৃমি তিনদিন পর হাসপাতাল থেকে ফিরে স্বাভাবিকভাবে বাজার সদাই করা শুরু করল। কলেজে যাওয়া শুরু করল, যেন কিছুই হয় নি। আজ এই পর্যন্ত লিখলাম। কারণ আঠারোটা মোমবাতির এগারোটা শেষ হয়ে নিভে গেছে। বাকি সাতটাও যাই যাই করছে। কাজেই প্রিয় পাঠক সমাজ বিদায়।
তরুর লেখা এইটুকুই। আসল ঘটনা সে লেখায় বাদ দিয়েছে। উপন্যাসের শেষের দিকে আসলটা লিখবে। পাঠকদের জন্যে সাসপেন্স জমা থাকুক। একটা ছোট্ট সমস্যা অবিশ্য থাকবে—পাঠকরা বিশ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ভুলে যেতে পারে। সবার স্মৃতিশক্তি তো আলবার্ট আইনস্টাইনের মতো না যে, যা পড়বে সবই মনে থাকবে।
মূল ঘটনা হচ্ছে সুতা কৃমি বিশ হাজার টাকা ঠিকই চুরি করেছিল। এক দুপুর বেলায় তরুদের বাসায় ঘন ঘন কলিং বেল টিপছে। তার মুখে ঘাম। নিঃশ্বাস পড়ছে ঘন ঘন। মুখ কাঁদো কাঁদো।
তরু বলল, কী সমস্যা?
সে ব্রাউন কাগজে মোড়া একটা প্যাকেট বের করে বলল, এই প্যাকেটটা রাখবেন?
তরু বলল, প্যাকেটে কি বোমা, না-কি পিস্তল?
টাকা। একশ টাকার দুটা বান্ডেল।
টাকা রাখব কেন? কার টাকা?
দুলাভাইয়ের।
তোমার দুলাভাইয়ের টাকা থাকবে তোমার কাছে কিংবা তোমার বোনের কাছে। আমার কাছে কেন?
সনজুর চোখ-মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। তরু লক্ষ করল তার হাত কাঁপছে। যে কোনো মুহূর্তে টাকার বান্ডেল হাত থেকে পড়ে যাবে।
তরু বলল, টাকাটা কি তুমি চুরি করেছ?
সনজু অন্য দিকে তাকিয়ে হাসূচক মাথা নাড়ল।
তরু বলল, ঝেড়ে কাশতে হবে। খুকখুক করে কাশলে হবে না। ঘটনা কী বলো?
আমি পালিয়ে যাব।
কোথায়?
টেকনাফে আমার এক বন্ধু আছে। কাঠ চিড়াই কলে কাজ করে। তার কাছে যাব।
বন্ধুর নাম কী?
এনামুল করিম।
পড়াশোনা বাদ দিয়ে কাঠ চেড়াই?
দুলাভাইয়ের কাছে থাকতে পারছি না। তিন মাসের কলেজের বেতন বাকি পড়েছে। কলেজে নাম কাটা গেছে। এই বিশ হাজার টাকা নিয়ে আমি পালিয়ে যাব।
তরু প্যাকেট রেখে দরজা বন্ধ করে দিল। মারামারির মূল ঘটনার পর জামান এবং তার স্ত্রী যখন সনজুকে নিয়ে হাসপাতালে তখন তরু টাকার প্যাকেট খাটের নিচে রেখে এসেছে।
হাসপাতাল থেকে ফেরার পর কয়েক বারই তরুর সাথে সনজুর দেখা হয়েছে। সনজু টাকার প্রসঙ্গ তুলে নি। তরুও না।
গতকাল তরু সনজুকে একটা সিএনজি ডেকে দিতে বলল। সনজু সিএনজি ডেকে দিল। তরু বলল, লক্ষ করলাম কলেজে যাচ্ছ।
সনজু বলল, হুঁ।
নাম যে কাটা গিয়েছিল, নাম কি উঠেছে?
উঠেছে।
তোমার দুলাভাই বেতনের টাকা দিয়েছেন?
আপা দিয়েছেন।
উনি কোত্থেকে দেবেন? উনার কি আলাদা টাকা আছে?
না। মনে হয় দুলাভাইয়ের কাছ থেকে নিয়ে দিয়েছেন।
তোমার বন্ধু এনামুল করিম কেমন আছে?
জানি না।
যোগাযোগ নাই?
না।
তার কি কোনো মোবাইল টেলিফোন আছে?
আছে।
নাম্বার জানা আছে?
আছে। আমার মোবাইলটা নিয়ে তার কাছে টেলিফোন করতে পারো।
দরকার নাই।
তরু হালকা গলায় বলল, তোমার দুলাভাইকে খুন করার কোনো পরিকল্পনা যদি করো, আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি। আমার এক বান্ধবী আছে কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে পড়ে। ওর নাম নীলা। ওকে বললেই সে পটাশিয়াম সায়ানাইড জোগাড় করে দিবে। তুমি তোমার দুলাভাইয়ের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দেবে। পারবে না?
না।
তারপরও আমি জোগাড় করে রাখব। সব ব্যবস্থা করা থাকবে। আমাকে বললেই হবে। ঠিক আছে?
সনজু তাকিয়ে রইল। তার সামান্য ভয় করতে লাগল। এই অদ্ভুত মেয়েটা এসব কি বলছে? ঠাট্টা করছে? না-কি সিরিয়াস? ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে সিরিয়াস। সনজুর কপাল ঘেমে উঠল।