চতুর্থ অনুবাক
প্রথম সূক্ত : শত্রুনাশনম
[ঋষি : চাতন। দেবতা : অগ্নি। ছন্দ : বৃহতী]
ভ্রাতৃব্যক্ষয়ণমসি ভ্রাতৃব্যচাতনং মে দাঃ স্বাহা ॥ ১৷ সপত্নক্ষয়ণমসি সপত্নাতনং মে দাঃ স্বাহা ॥ ২॥ অরায়ক্ষয়ণমস্যরায়চাতনং মে দাঃ স্বাহা। ৩ পিশাচক্ষয়ণমসি পিশাচচাতনং মে দাঃ স্বাহা ॥৪॥ সদান্বক্ষয়ণমসি সদাচাতনং মে দাঃ স্বাহা ॥ ৫
বঙ্গানুবাদ –হে অগ্নি! তুমি আমার ভ্রাতৃব্য অর্থাৎ আত্মীয়রূপ শত্রুদের নাশকরণে সমর্থ; এই হেতু আমাকেও সেই ভ্রাতৃ-বিনাশক শক্তি প্রদান করো। আমি তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিস্য, প্রদান করছি। ১।
হে অগ্নি! তুমি আমার সপত্ন অর্থাৎ সাধারণ বিপক্ষীয়রূপ বৈরিবর্গকে বিনাশ-করণে দক্ষ; অতএব আমাকেও বৈরিগণের নাশকতামূলক শক্তি প্রদান করো। আমি তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিষ্য নিবেদন করছি ৷ ২।
হে অগ্নি! যারা দান ইত্যাদি মঙ্গলপ্রদ কর্মের শত্রু, তুমি সেই অরায় নামক রাক্ষসগণকে হনন-করণশালী। আমাকেও সেই অরায়গণের বিনাশক বল প্রদান করো। আমি তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিষ্য প্রদান করছি। ৩।
হে অগ্নি! তুমি পিশাচগণকে বিনাশ-করণক্ষম; তুমি এই রকমই সামর্থ্য আমাকেও প্রদান করো। আমি তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিষ্য প্রদান করছি। ৪।
হে অগ্নি! তুমি রাক্ষসীবর্গকে সংহারকরণে সমর্থ; আমাকেও রাক্ষসীগণ নাশ-করণশীল বল প্রদান করো। আমি তোমাকে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিষ্য প্রদান করছি ৷৷ ৫.
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— চতুর্থেবাকে নব সূক্তনি। তত্র ভ্রাতৃব্যক্ষয়ণং ইতি প্রথমসূক্তেন অভিচারকর্মণি শরসমিদাধানং কৃষ্ণব্রীহিযবতিলাদাবপনং চ কুর্যাৎ। (কৌ. ৬।২)। অত্র অরায়ক্ষয়ণং (৩-৫) ইত্যাদাস্তিস্রঃ চাতনগণে (কৌ. ১৮) পঠিতাঃ। অতস্তস্য গণস্য যত্রতত্র বিনিয়োগস্তত্রতত্র আসা বিনিয়োগে দ্রষ্টব্যঃ। (২কা, ৪অ. ১সূ)।
টীকা –নয়টি সূক্ত সম্বলিত চতুর্থ অনুবাকের এটি প্রথম সূক্ত। এই সূক্তের দ্বারা অভিচার কর্মে শরসমিধ আধান এবং কৃষ্ণব্রীহি, যব, তিল ইত্যাদি আবপন করণীয়। এই সূক্তেও সায়ণাচার্য হোমাধাররূপে অগ্নিকে সম্বোধন করে ব্যাখ্যা করেছেন ॥ (২কা. ৪অ. ১ সূ)।
.
দ্বিতীয় সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : অগ্নি। ছন্দ : গায়ত্রী]
অগ্নে যৎ তে তপস্তেন তং প্রতি তপ। যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥১॥ অগ্নে যৎ তে হরস্তেন তং প্রতি হর। যোহশ্ম দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ। ২৷৷ অগ্নে যৎ তেহর্চিনে তং প্রত্যর্চ যোহস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিমঃ ৷ ৩৷৷ অগ্নে যৎ তে শশাচিস্তেন তং প্রতি শোচ যোহম্মান্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৪৷ অগ্নে যৎ তে তেজস্তেন তমতেজসং কৃণু যোহশ্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৫॥
বঙ্গানুবাদ –হে অগ্নি! তোমার যে সন্তাপপ্রদ শক্তি আছে, তার দ্বারা শত্রুকে লক্ষ্য করে দীপ্ত হয়ে ওঠো। যে শত্রুআমাদের বিরুদ্ধে কৃত্যা ইত্যাদি কর্ম করে, সেই বিদ্বেষীকে পীড়িত করো। ১।
হে অগ্নি! আমাদের প্রতি বিদ্বেষশীল বা আমরা যাকে বিদ্বেষ করি, সেই শত্রুর উপর তুমি আপন ক্রোধরূপ আয়ুধকে প্রয়োগ করো। ২।
হে অগ্নি! আমাদের প্রতি বৈরিতাসম্পন্ন বা যার প্রতি আমরা বৈরভাবান্বিত, সেই শত্রুকে তুমি আপন তেজের (অর্থাৎ দীপ্তির) দ্বারা ভস্ম করে দাও ৩
হে অগ্নি! যে আমাদের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ বা আমরা যার প্রতি বিদ্বেষসম্পন্ন, তার উপর তুমি তোমার শোকপ্রদ শক্তিকে প্রয়োগ করো। ৪
হে অগ্নি! আমাদের বৈরী শত্রুগণকে তোমার অবদমিত করণশালী তেজের দ্বারা বলহীন করে দাও ॥ ৫॥
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অগ্নে যৎ তে ইত্যাদিভিঃ পঞ্চভিঃ সূক্তৈরভিচারকর্মণি পুরস্তাদ্ধোমান্ আজ্যেন জুয়াৎ। (কৌ. ৬/১)। (২কা. ৪অ, ২সূ)।
টীকা –এই সূক্তটি এবং এর অব্যবহিত পরবর্তী চারটি সূক্তের দ্বারা আভিচারিক কর্মে আজ্যের দ্বারা হোম করণীয়। আভিচারিক এবং প্রত্যাভিচারিক (কারও অভিচার কর্মের অভিচার কর্মের বিরুদ্ধে পাল্টা, অভিচার) কর্মে এই সূক্ত-মন্ত্রগুলি প্রয়োগের বিধি আছে।..ইত্যাদি (২কা. ৪অ. ২সূ)।
.
তৃতীয় সূক্ত : শত্রুনাশনম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : বায়ু। ছন্দ : গায়ত্রী]
বায়ো যৎ তে তপস্তেন তং প্রতি তপ। যোহম্মান দেষ্টি যং বয়ং দ্বিন্মঃ ॥ ১৷ বায়ো যৎ তে হরস্তেন তং প্রতি হর যোহস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ২॥ বায়ো যৎ তেহর্চিনে তং প্রত্যর্চ। যোহম্মান ঘেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৩ বায়ো যৎ তে শোচিন্তেন তং প্রতি শোচ যোস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥৪॥ বায়ো যৎ তে তেজস্তেন তমতেজসং কৃণু যোহশ্ম দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিষ্মঃ ॥ ৫৷৷
বঙ্গানুবাদ –হে বায়ু! তুমি অন্তরিক্ষ লোকে বিচরণশালী। তুমি আপন পীড়াপ্রদ শক্তিকে (আমার) শত্রুর প্রতি প্রযুক্ত করো। আমাদের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ কৃত্যাকারী (শত্রুকে) সন্তাপ প্রদান করো। ১
হে বায়ু! আমাদের প্রতি বৈরিতা-পোষণকারী বা যাদের প্রতি আমরা বৈরিতা পোষণ করি, সেই শত্রুগণের উপর তুমি আপন ক্রোধকে প্রয়োগ করো ॥২॥
হে বায়ু! আমাদের প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন বা আমরা যাদের প্রতি বিদ্বেষভাবাপন্ন, এই দুই রকম শত্রুদের বিনাশ করার নিমিত্ত তুমি আপন অৰ্চিতে (সন্তাপক প্রবাহে) প্রদীপ্ত হয়ে ওঠো ॥৩॥
হে বায়ু! আমাদের দ্বেষ-করণশালী শত্রু বা যাদের প্রতি আমরা দ্বেষ পরায়ণ, সেই দুইরকম শত্রুর উপর তুমি আপন শোকপ্রদ সামর্থ্যের প্রয়োগ করো এবং তাদের শোকাকুল করে দাও। ৪
হে বায়ু! আমাদের প্রতি দ্বেষকারী বা যাদের প্রতি আমরা দ্বেষ করে থাকি, সেই দুই রকম শত্রুর উপর আপন বশীকরণ-শক্তিকে প্রয়োগ করো এবং শত্রুগণের তেজকে হরণ করে লও ৫৷৷
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— ইত উত্তরাণি বায়ো যৎ (২।২০) সূর্য যৎ (২।২১) চন্দ্র যৎ (২।২২), আপো যৎ (২।২৩) ইতি চত্বারি সূক্তানি অগ্নে যৎ (২।১৯) ইতি পূর্বসূক্তবদ ব্যাখ্যেয়ানি। তেষু বাদিদেবতাসম্বোধনমেব বিশেষঃ। আপো যদ বঃ ইত্যত্র অপাং নিত্যবহুত্বা বহুবচন-নির্দেশঃ। (২কা. ৪অ. ৩-৬সূ)।
টীকা— পূর্ববর্তী সূক্তে বিনিয়োগ উল্লিখিত হয়েছে। এখানে সায়ণাচার্যের উল্লেখমতো পরবর্তী ষষ্ঠ সূক্তের সম্বোধ্য আপঃ পদটি নিত্যবহুত্ব হওয়ার কারণে বহুবচন নির্দেশ করা হয়েছে। (২কা. ৪অ. ৩-৬সূ)।
.
চতুর্থ সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : সূর্য। ছন্দ : গায়ত্রী]
সূর্য যৎ তে তপস্তেন তং প্রতি তপ যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ১. সূর্য যৎ তে হরস্তেন তং প্রতি হর যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ২৷৷ সূর্য যৎ তেহর্চিস্তেন তং প্রত্যর্চ যোহম্মা দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৩৷৷ সূর্য যৎ তে শোচিস্তেন তং প্রতি শোচ যোহস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিষ্মঃ ॥ ৪৷ সূর্য যৎ তে তেজস্তেন তমতেজসং কৃণু যোহস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৫৷৷
বঙ্গানুবাদ –হে আদিত্য! তোমাতে যে সন্তাপন শক্তি রয়েছে, সেই শক্তিকে শত্রুর প্রতি লক্ষ্যপূর্বক প্রকটিত করো। তুমি আপন তেজের দ্বারা শত্রুকে বিপরীত করো (অর্থাৎ সন্তাপিত করো)। যে শত্রুকে আমরা বিদ্বেষ করি,অথবা যে শত্রু আমাদের প্রতি বিদ্বেষপূর্বক কৃত্যা ইত্যাদি অভিচার কর্ম করে, তাদের তুমি পীড়িত করো। ১।
যারা আমাদের শত্রুতা করে এবং আমরা যাদের শত্রুতা করি, হে আদিত্য! সেই শত্রুদের উপর তুমি আপন ক্রোধরূপ আয়ুধকে নিক্ষেপ করো। ২।
যারা আমাদের বৈরিতা করে এবং আমরা যাদের প্রতি বৈরভাব-সম্পন্ন, হে আদিত্য! সেই শত্রুগণকে ভস্মীভূত করার নিমিত্ত আপন দীপ্তির দ্বারা সংযুক্ত হও। ৩
হে আদিত্য! তোমার এ যে শোক-প্রদানক্ষম শক্তি আছে, তার দ্বারা আমাদের শোক-প্রদানোদ্যত শত্রুদের শোকাকুল করে দাও। ৪
হে আদিত্য! আমাদের বৈরিগণকে তুমি তোমার শত্ৰু-বশীকরণশীল সামর্থ্যে বশীভূত করে তাদের নির্বীর্য করে দাও। ৫।
টীকা –পূর্ব মন্ত্রে বিনিয়োগ উল্লিখিত হয়েছে ৷ (২কা. ৪৩. ৪সূ)।
.
পঞ্চম সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : চন্দ্র। ছন্দ : গায়ত্রী ]
চন্দ্র যৎ তে তপস্তেন তং প্রতি তপ যোহম্মান্ দ্বেষ্টি যুং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ১ চন্দ্র যৎ তে হরস্তেন তং প্রতি হর যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ২॥ চন্দ্র যৎ তেহর্চিস্তেন তং প্রত্যর্চ যোহস্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৩॥ চন্দ্র যৎ তে শোচিন্তেন তং প্রতি শোচ যোহম্মা দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিমঃ। ৪ চন্দ্র যৎ তে তেজস্তেন তমতেজসং কৃণু যোহশান্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥৫॥
বঙ্গানুবাদ– হে চন্দ্র! যে শত্রু আমাদের প্রতি দ্বেষ পোষণ করে এবং আমরা যাদের প্রতি দ্বেষ পোষণ করি, এবং যে শত্রু আমাদের উপর কৃত্যা ইত্যাদি অভিচার প্রয়োগ করতে অভিলাষ করে, তুমি সেই শত্রুকে আপন সন্তাপন শক্তির দ্বারা সন্তপ্ত করো ৷৷ ১।
হে চন্দ্র! যারা আমাদের প্রতি দ্বেষ রক্ষা করে এবং আমরা যাদের প্রতি দ্বেষ করি, তুমি সেই শত্রুগণের উপর আপন ক্রোধ রূপ বলকে প্রয়োগ করো। ২
হে চন্দ্র! তুমি আপন দীপ্তির দ্বারা আমাদের বৈরিবর্গকে এবং যারা আমাদের প্রতি দ্বেষ করে থাকে, তাদের বিনাশ করে দাও। ৩।
হে চন্দ্র! আমাদের প্রতি দ্বেষকারী বা যাদের আমরা দ্বেষ করি, তাদের তুমি তোমার শোকপ্রদ বলের দ্বারা শোকাকুল করে দাও। ৪
হে চন্দ্র! তুমি তোমার শত্রুবশকারী সামর্থ্যের দ্বারা আমাদের বৈরিবর্গকে বশীভূত করো এবং তাদের নিবার্য করে দাও। ৫৷৷
টীকা –পূর্ববর্তী মন্ত্রবৎ এই সূক্তের বিনিয়োগ নির্ধারিত আছে। (২কা, ৪৩. ৫)।
.
ষষ্ঠ সূক্ত : শত্রুনাশনম
[ঋষি : অথর্বা। দেবতা : আপঃ। ছন্দ : গায়ত্রী ]
আপো য বস্তপস্তেন তং প্রতি তপত যোহম্মান ঘেষ্টি যং বয়ং দ্বিঃ ॥১॥ আপো যদ বো হরস্তেন তং প্রতি হরত যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ। ২ আপো যদ বোহর্চিস্তেন তং প্রত্যর্চত যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৩। আপো যদু বঃ শোচিস্তেন তং প্রতি শোচত যোহশ্মন্ দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৪৷৷ আপো য বস্তেজনে তমতেজসং কৃণুত যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিম্মঃ ॥ ৫৷৷
বঙ্গানুবাদ –হে জল (অর্থাৎ জলের অভিমানী দেবীগণ)! যে শত্রু আমাদের দ্বেষ করে অথবা আমরা যাদের দ্বেষ করি, এবং যারা আমাদের প্রতি কৃত্যা ইত্যাদি অভিচার কর্ম প্রয়োগ করতে ইচ্ছা করে, সেই শত্রুগণকে তোমরা তোমাদের সন্তাপন শক্তির দ্বারা সন্তপ্ত করো। ১।
হে জলরাশি। যারা আমাদের দ্বেষ করে বা যাদের আমরা দ্বেষ করে থাকি, সেই শত্রুগণের উপর তোমরা তোমাদের ক্রোধকে প্রকট করো। ২।
হে জলসমূহ! আমরা যাদের প্রতি বিদ্বেষ পরায়ণ, বা যারা আমাদের প্রতি বিদ্বেষ-সম্পন্ন, তোমরা তোমাদের আপন দীপ্তির দ্বারা তাদের বিনাশ করে দাও। ৩৷৷
হে জলসমুদয়! যারা আমাদের দ্বেষ করে এবং আমরা যাদের দ্বেষ করি, তোমরা তোমাদের আপন শোকপ্রদ শক্তির দ্বারা তাদের (অর্থাৎ সেই শত্রুগণকে) শোকাভিভূত করে দাও। ৪।
হে জলবর্গ! যারা আমাদের বিদ্বেষী বা আমরা যাদের বিদ্বেষী, তোমরা তোমাদের বশীকরণ-সামর্থ্যে তাদের বশীকৃত করে নিবীর্য করে দাও। ৫।
টীকা— এই সূক্তেরও বিনিয়োগ দ্বিতীয় সূক্তে উল্লিখিত হয়েছে। জলের বহুবচনত্ব সম্পর্কে তৃতীয় সূক্তে উল্লেখ করা হয়েছে। (২কা. ৪অ. ৬) ॥
.
সপ্তম সূক্ত : শত্রুনাশনম্
[ঋষি : ব্রহ্মা। দেবতা : আয়ু। ছন্দ : পংক্তি, বৃহতী ]
শোরভক শোরভ পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনৰ্হেতিঃ কিমীদিনঃ। যস্য স্থ তমত্ত যো বঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ১। শোবৃধক শোবৃধ পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনর্হেতিঃ কিমীদিনঃ। যস্য স্থ তমত্ত যো বঃ প্রাহৈৎ মত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ২॥ ম্রোকানুম্রোক পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনৰ্হেতিঃ কিমীদিনঃ। যস্য স্থ তমত্ত যোবঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ৩৷ সর্দানুসৰ্প পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনৰ্হেতিঃ কিমীদিনঃ। যস্য স্থ তমত্ত যোবঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ৪৷ জুৰ্ণি পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনৰ্হেতিঃ কিমীদিনীঃ। যস্য স্থ তমত্ত যোবঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥৫৷৷ উপব্দে পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনহেতিঃ কিমীদিনীঃ। যস্য স্থ তমত্ত যো বঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ৬৷৷ অর্জুনি পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনহেতিঃ কিমীদিনীঃ। যস্য স্থ মত্ত যোবঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত। ৭৷৷ ভরূজি পুনর্বো যন্তু যাতবঃ পুনর্হেতিঃ কিমীদিনীঃ। যস্য স্থ তমত্ত যোবঃ প্রাহৈৎ তমত্ত স্বা মাংসান্যত্ত ॥ ৮
বঙ্গানুবাদ –হে রাক্ষসাধিপতি শোরভ! হে রাক্ষসাধিপতির সচিব (মন্ত্রী) শোরভুক! তোমরা শরভের ন্যায় সকলকে হিংসা-করণশীল রাক্ষসগণের মধ্যে মুখ্য। আমাদের অভিমুখে প্রেরিত তোমাদের যে যাতুন (রাক্ষস) আছে, তারা আয়ুধসমূহ সহ আমাদের নিকট হতে প্রত্যাবর্তন করুক। তোমাদের চোর ইত্যাদি অনুচরগণও এই স্থান ত্যাগ করে গমন করুক। যে প্রযোক্তা তোমাদের আমাদের নিকট প্রেরণ করেছে অথবা তোরা আপন দলের সাথে আমাদের যে শত্রুগণের নিকট অবস্থান করছো, তোমরা আমাদের সেই শত্রুগণকে ভক্ষণ করো। তোমরা এবং তোমাদের আয়ুধ শত্রুগণের মাংস ভক্ষণ করুক। ১
হে শোবৃধক! (অপরকে আঘাত করণশালী) তুমি তোমার আপন আশ্রিতগণের সুখ-বৃদ্ধিকারী শোবৃধবর্গের অধিপতি। তোমার প্রেরিত যাতুধান নামক রাক্ষসবৃন্দ এবং হিংসাত্মক আয়ুধগুলি আমার দিক্ হতে প্রত্যাহরণ করো। তোমার চোর ইত্যাদি অনুচরগণও যেন এইস্থানে না অবস্থান করে। হে রাক্ষসগণ! যে প্রযোক্তা আমাদের নিকটে তোমাদের প্রেরণ করেছে, অথবা তোমরা আমাদের যে বিরোধীবর্গের নিকটে অবস্থান করছে, সেই শত্রুগণের মাংস তোমরা ভক্ষণ করো। ২।
হে ম্রোক ও অনুম্রোক! (চোর) তোমরা ধন অপহরণ করে গুপ্ত রীতি অনুসারে (অর্থাৎ গোপনে) পলায়ন করে থাকো। তোমাদের প্রেরিত যাতুন রাক্ষস এবং হিংসাত্মক আয়ুধগুলি আমাদের নিকট হতে প্রত্যাগমন করুক। তোমাদের চোর ইত্যাদি অনুচরগণও যেন এখানে না অবস্থান করে। হে ম্রোকানুম্রোকবর্গ! যে প্রযোক্তা কর্তৃক তোমরা এই স্থানে প্রেরিত হয়েছে, অথবা তোমরা আমাদের যে বিরোধীসমূহের নিকট অবস্থান করছে, তোমরা সেই শক্রসমূহের মাংস ভক্ষণ করো ৷ ৩৷
সর্পের ন্যায় কুটিলভাবে গমনকারী হে সৰ্পনামক রাক্ষসাধিপতি! এবং সেই সর্পকে অনুসরণকারী (সচিব) হে অনুসর্প! তোমাদের দ্বারা প্রেরিত যাতুধান রাক্ষস এবং হিংসাত্মক আয়ুধ আমার নিকট হতে প্রতিনিবৃত্ত করো। তোমাদের কিমীদন। ইত্যাদি অনুচরগণও যেন এই স্থানে অবস্থান না করে। হে রাক্ষসবর্গ! যে প্রযোক্তা তোমাদের এই স্থানে প্রেরণ করেছে অথবা আমাদের যে বিরোধীগণের নিকট অবস্থান করছো, তোমরা আমাদের সেই শত্রুগণের মাংস ভক্ষণ করো। ৪
হে প্রাণীশরীরকে জীর্ণকারিণী ভূৰ্ণি নামধারিণী রাক্ষসীর দল! তোদের দ্বারা প্রেরিত অলক্ষ্মীরূপ যাতুধান রাক্ষসীসমূহ এবং হিংসাত্মক আয়ুধ আমার নিকট হতে প্রতিনিবৃত্ত হোক। তোদের প্রেরিত কিমীদিনী ইত্যাদি অনুচরীগণও যেন আমার নিকট না অবস্থান করে। হে সদল জুৰ্ণিগণ! যে প্রযোক্তা আমাদের নিকট তোদের প্রেরণ করেছে, অথবা তোরা আমাদের যে শত্রুবর্গের নিকট অবস্থান করছিস, তোরা সেই শত্রুদের ভক্ষণ কর। তাদের মাংস চর্বণ কর। ৫।
হে উপব্দা নাম্নী রাক্ষসী! তুই ক্রুর (বা কর্কশ) শব্দশালিনী এবং ক্র কর্মকারিণী। তোর দ্বারা প্রেরিতা অলক্ষ্মী-করণশীলা যাতুধানী রাক্ষসীগণ এবং হিংসা সাধন রূপ আয়ুধসমূহ আমাদের নিকট হতে প্রতিনিবৃত্ত হোক। তোর কিমীদিনী ইত্যাদি অনুচরীগণও যেন এই স্থানে অবস্থান না করে। হে সদলবল উপব্দ রাক্ষসীগণ! যে প্রযোক্তা তোদের এই স্থানে আমাদের নিকট প্রেরণ করেছে, অথবা তোরা আমাদের যে শত্রুগণের নিকট অবস্থান করছিস, তোরা সেই শত্রুদের মাংস ভক্ষণ করতে থাক্ ॥ ৬।
হে অর্জুনি নাম্নী রাক্ষসী! তোমাদের দ্বারা প্রেরিত যাতনাসমূহ, রাক্ষসীবর্গ এবং হিংসা-সাধন রূপ আয়ুধসমূহ আমাদের নিকট হতে প্রত্যাবৃত্ত হয়ে ও যাক। তোমাদের কিমীদিনী ইত্যাদি অনুচরীগণও যেন এই স্থানে অবস্থান না করে। হে সদলবল অর্জুনি রাক্ষসীগণ! যে প্রযোক্তা আমাদের নিকট তোমাদের প্রেরণ করেছে, অথবা তোমরা আমাদের যে বিরোধীগণের নিকট অবস্থান করছো, তোমরা তার (অর্থাৎ সেই প্রেরণকারীর) এবং সেই শত্রুগণের মাংস ভক্ষণ করো ৷৷ ৭
হে ভরূজি নাম্নী রাক্ষসী! তুমি প্রাণীর দেহ-অপহরণ করে গমনকারিণী! তোমার দ্বারা প্রেরিতা অলক্ষ্মীশালিনী যাতনাসমূহ, রাক্ষসীগণ, হিংসা-সাধন আয়ুধরাশি এবং কিমীদিনী ইত্যাদি অনুচরীবর্গ আমাদের নিকট হতে প্রতিনিবৃত্ত হোক। হে সদলবল ভরূজীসমূহ! যে প্রযোক্তা আমাদের নিকট তোমাদের প্রেরণ করেছে, অথবা তোমরা আমাদের যে বিরোধীগণের সকাশে অবস্থান করছে, সেই শত্রুদের মাংস তোমরা ভক্ষণ করো ॥৮
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— শোরভক ইতি সপ্তমসূক্তেন অলক্ষীবিনাশকর্মণি সমুদ্রমধ্যে শাপেটস্থেগ্নৌ হুত্বা চরুং সম্পত্য অভিমন্ত্র প্রাশ্মীয়াৎ। তথা তস্মিন্নেব কর্মণি শোরভক ইত্যনেনৈব সূক্তেন খণ্ডিতয়বানাং সঙ্কুং রক্তবর্ণায়া অজায়া দস্যুদকে ক্ষিপ্ত আজ্যেন হুত্বা সম্পাত্য অভিমন্ত্র অশ্নীয়াৎ। তথৈব তস্মিন্নেব অনেন সূক্তেন নৃনগ্রন্থিন কৃত্বা উদপাত্রে প্রত্যুচং বিস্রস্য তেনোদকেন আপ্লাবনং মুখমার্জনং চ কুর্যাৎ। উক্তং হি সূত্রে। শোরভকেভি সামুদ্রং অল্প কর্ম ব্যাখ্যাতং অপহতধানা লোহিতাজায়া দুষ্পেন সন্নীয়াশ্নাতি ইত্যাদি। (কৌ. ৩/২) ॥ (২কা. ৪অ, ৭সূ)।
টীকা— এই সূক্তের মন্ত্ৰসমুদায় অলক্ষ্মী-বিনাশের নিমিত্ত অনুষ্ঠেয় কর্মে প্রয়োগ করা হয়। সমুদ্রের মধ্যে শাপেটস্থ অগ্নিকে আহুতি দান পূর্বক চরু পাক করে এই মন্ত্রসমুহের দ্বারা অভিমন্ত্রিত করে ভক্ষণ করণীয়। ইত্যাদি।-আচার্য সায়ণের যে ব্যাখ্যা অবলম্বনে আমরা বঙ্গানুবাদ করেছি, সুধীজনের জ্ঞাতার্থে তার কিঞ্চিৎ নমুনা–হে শোরভক স্বাশ্রিতানাং সুখস্য প্রাপক। শরভবৎ সর্বেষাং হিংসকো বা শোরভঃ যাতুধানাধিপতিঃ। অসৌ গ্রামনী প্রধানভূতো যস্য তৎসচিবাদেঃ স শোরভকঃ।…হৈ মোক মোচতি ধনাদিকং অপহৃত্য ছন্নঃ সন গচ্ছতীতি ম্রোকঃ। …হে সর্প! সর্পতি কুটিলং গচ্ছতীতি সর্পঃ এতৎসংজ্ঞো যাতুধানাধিপতিঃ। তৎ অনুসৃত্য গচ্ছতীতি অনুসৰ্পঃ…জীতি জীর্ণং ভবতি প্রাণিশরীরং অনয়েতি জুৰ্ণিঃ এতৎসংজ্ঞা রাক্ষসী তস্যা সম্মুদ্ধিঃ … হে উপব্দে ক্রশব্দকারিণী।…হে অর্জুনি অর্জুনশীলে অর্জুনবর্ণে বা৷ (২ কা. ৪অ.৭সূ)।
.
অষ্টম সূক্ত : পৃশ্নিপর্ণা
[ঋষি : চাতন। দেবতা : পৃশ্নিপর্ণা। ছন্দ : অনুষ্টুপ ]
শং নো দেবী পৃশ্নিপণশং নিঋত্যা অকঃ। উগ্রা হি কথজম্ভনী তামভক্ষি সহস্বতীম। ১ সহমানেয়ং প্রথমা পৃশ্নিপর্ণজায়ত। তয়াহং দুর্ণাং শিয়ো বৃশ্চামি শকুনেরিব ॥ ২॥ অরায়মশৃপাবানং যশ্চ স্ফাতিং জিহীর্ষতি। গর্ভাদং কং নাশয় পৃশ্নিপৰ্ণি সহস্ব চ ॥ ৩৷৷ গিরিমেনা আ বেশয় কন্বান জীবিতয়োপনান। তাংস্তুং দেবি পৃশ্নিপৰ্ণগ্নিরিবানুদহন্নিহি। ৪। পরাচ এনা প্র গুদ কথা জীবিতয়োপনা। তমাংসি যত্র গচ্ছন্তি তৎ ঐব্যাদো অজীগমম্ ॥ ৫.
বঙ্গানুবাদ –এই পৃশ্নিপণী (চিত্রপর্ণী) নামক ঔষধি কুষ্ঠ ইত্যাদি রোগের শান্তি আমাদের সুখসম্পাদনশালিনী হোক। আমরা এই (কুষ্ঠ) রোগকে নাশ করণশালিণী ঔষধিকে (ভক্ষণ ও লেপনের দ্বারা) সেবন করছি। এই ঔষধি প্রচণ্ড বলধারণ পূর্বক পাপকে নাশ করে থাকে; এই ঔষধি নির্ঋতি রাক্ষসীকে পীড়িত করুক। ১।
এই পৃশ্নিপর্ণী ঔষধিগুলির মধ্যে প্রথম উৎপন্ন হয়েছিল। এটি দাদ, হাজা, বিসর্পক, শ্বেতকুষ্ঠ ইত্যাদি মুখ্য রোগকে দমন করার প্রধান সাধন। আমি এটির প্রলেপের দ্বারা উক্ত রোগসমূহকে পক্ষীর মস্তকের ন্যায় সমূলে ছিন্ন (নাশ) করছি ॥ ২॥
হে পৃশ্নিপর্ণী! শরীরের শুদ্ধ রক্তকে চোষণকারী কুষ্ঠ ইত্যাদি ব্যাধিরূপ শত্রুকে এবং শরীরের বৃদ্ধিকে রোধশালিনী ব্যাধিসমূহকে তুমি বিনাশ করো। তুমি গর্ভ-নষ্টকারী রোগকে অথবা গর্ভধ্বংসকারী রোগকেও নাশ করো। ৩।
হে পৃশ্নিপণী! এই কুষ্ঠ ইত্যাদি রোগ প্রাণসমূহকে ভ্রমে (বিমোহনে) পাতিত করে থাকে। এই সকল রোগের কারণভূত পাপকে, সর্প ইত্যাদিকে ভস্মকরণশালী দাবানলের ন্যায়, পর্বতের উপরে নীত করে ভস্ম করো। ৪।
হে পৃশ্নিপর্ণী! সূর্যোদয়ের পর যে দেশে অন্ধকার থেকে যায়, সেই অন্ধকারযুক্ত স্থানে ধাতুসমূহের ভক্ষক কুষ্ঠ ইত্যাদিকে প্রেরণ করছি। তুমি আপন প্রলেপনের দ্বারা, প্রাণসমূহকে ভ্রমে পাতনকারী সেই পাপ-ব্যাধিগুলিকে বিপরীত মুখে প্রেরণ করো ॥ ৫॥
সূক্তস্য বিনিয়োগ –শং নো দেবী পৃশ্নিপর্ণী ইতি সূক্তস্য চাতনগণে পাঠাৎ শান্ত্যদকাদৌ অস্য বিনিয়োগোবগন্তব্যঃ। তথা কুষ্ঠাদিসর্বরোগ-ভৈষজ্যকর্মণি অনেন সূক্তেন পৃপিণীং পেষয়িত্ব লেপয়েৎ। …..ইত্যাদি। (২কা, ৪অ. ৮সূ)।
টীকা –এই সূক্তমন্ত্রগুলি শান্তিজলক কর্মে পাঠপূর্বক বিনিয়োগ বিহিত আছে। এবং কুষ্ঠ ইত্যাদি সর্বরোগের ভৈষজ্য কর্মে এই সূক্তের দ্বারা পৃশ্নিপণী (বা. চিত্রপর্ণী) পেষণ পূর্বক লেপন করা কর্তব্য। (২কা, ৪অ, ৮সূ) ॥ ৪।
.
নবম সূক্ত : পশুসংবর্ধনম
[ঋষি : সবিতা। দেবতা : পশবঃ। ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ ]
এহ যন্তু পশবো যে পরেয়ুবায়ুৰ্যেৰ্ষং সহচারং জুজোষ। ত্বষ্টা যেষাং রূপধেয়ানি বেদাস্মিন্ তান্ গোষ্ঠে সবিতা নি যচ্ছতু। ১। ইমং গোষ্ঠং পশবঃ সং স্রবন্তু বৃহস্পতিরা নয়তু প্রজান। সিনীবালী নয়ত্বগ্রমেষামাজঘুষো অনুমতে নি যচ্ছ৷৷ ২। সংসিঞ্চামি গৰাং ক্ষীরং সমাজ্যেন বলং রস। সংসিক্তা অস্মাকং বীরা ধ্ৰুবা গাবো ময়ি গোপতৌ। ৪আ হরামি গৰাং ক্ষীরমাহার্ষং ধান্যং রস। আহৃতা অস্মাকং বীরা আ পত্নীরিদমস্তক৷৷ ৫
বঙ্গানুবাদ –যে পশুগণ এই স্থান হতে ফিরে গিয়েছিল, তারা পুনরায় এই গোষ্ঠে প্রত্যাগমন করুক। যে পশুগণের রক্ষার নিমিত্ত বায়ু তাদের সাথে সাথে অবস্থান করেন এবং গর্ভপ্রাপ্ত যে পশুগণের নাম এবং রূপকে ত্বষ্টা নির্ধারিত করে থাকেন, সূর্য সেই সকল পশুগণকে এই গোষ্ঠে স্থিত করুন ৷ ১
গো-বর্গের আনয়নসম্পর্কিত বিধিকে যিনি সম্যকরূপে জ্ঞাত আছেন, সেই বৃহস্পতি গো-গণকে গোষ্ঠে প্রেরিত করুন। গবাদি পশু আমার গোষ্ঠে আগত হোক। সিনীবালী (শুক্লবর্ণা চন্দ্রকলার অভিমানী দেবপত্নী) এবং অমাভিমানী দেবতা এই পশুগণকে আনয়নপূর্বক গোষ্ঠে রক্ষা করুন। ২।
গো-সমূহ, অশ্ব ইত্যাদি ভালভাবে এইস্থানে আগমন করুক। সেবক, ধান, যব ইত্যাদিও সমৃদ্ধির সাথে প্রাপ্ত হোক। আমি আপন ঈপ্সিত ফলের সিদ্ধির নিমিত্ত ঘৃতাহুতি প্রদান করছি৷৷ ৩৷
গাভীগণের অধিপতিরূপ আমাতে (অর্থাৎ আমার অধীনে) গো-গণ অবস্থান করুক। আমাদের পুত্রগণ ঘৃত ইত্যাদির দ্বারা পুষ্টশালী হোক। আমি প্রথমে গাভীগণের দুগ্ধ সিঞ্চন করছি। অন্ন, জল এবং রসকে ঘৃতের দ্বারা সিঞ্চন করছি। ৪।
এই প্রয়োগের দ্বারা গো-দুগ্ধ, ধান্য এবং রস ইত্যাদিকে আপন গৃহে আনয়ন করছি। আপন পত্নী, পুত্র ইত্যাদিকেও গৃহে আনয়ন করছি। ৫।
সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— এহ যন্তু পশবঃ ইতি সূক্তেন গোপুষ্টিকামঃ অভিনবং পয়ঃ বৎসলালামিশ্রিতং সম্পত্য অভিমন্ত্র অশ্নীয়াৎ! তথা অনেন সূক্তেন গাং অভিমন্যু দদ্যাৎ। তথৈব অনেন উদপাত্রং অভিমন্ত্র গোষ্ঠমধ্যে নিনয়েৎ। এবং সারূপবৎসৌদনে গুগুলুলবণশকৃৎপিণ্ডা প্রক্ষিপ্য পশ্চাদ অগ্নেস্ত্রিরাং নিখায় চতুর্থেহনি উদ্ধৃত্য অনেন সম্পত্য অভিমন্ত্র অশ্নীয়াৎ। অত্রোক্তং কৌশিকেন। … ইত্যাদি। (২কা. ৪অ. ৯সূ)।
টীকা –এই সূক্তের মন্ত্রগুলি গাভীর পুষ্টিকামনায় প্রযোজ্য হয়ে থাকে। এই উদ্দেশ্যে গো-বৎসের লালামিশ্রিত প্রথম দুগ্ধ এই সূক্তমন্ত্রগুলির দ্বারা অভিমন্ত্রিত করণীয়।…ইত্যাদি। (২কা. ৪অ. ৯সূ)।