হাদিস নম্বরঃ ৬০৭০ | 6070 | ٦۰۷۰
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭০। হুমায়দী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস মৃত ব্যাক্তির অনুসরণ করে থাকে। দুটি ফিরে আসে, আর একটি তার সাথে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার আমল তার অনুসরণ করে খাকে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, পক্ষান্তরে তার আমল তার সাথে থেকে যায়।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭১ | 6071 | ٦۰۷۱
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭১। আবূ নূমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন ব্যাক্তির মৃত্যু হয়, তখন কবরেই প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় তার জান্নাত অথবা জাহান্নামের ঠিকানা তার সামনে পেশ করা হয়। এবং বলা হয় যে, এই হল তোমার ঠিকানা। তোমার পুনরুত্থান পর্যন্ত।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭২ | 6072 | ٦۰۷۲
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭২। আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মৃত ব্যাক্তিদেরকে গালি দিও না। কারণ তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণাম ফল পর্যন্ত পৌছে গিয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৩ | 6073 | ٦۰۷۳
পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ব্যাক্তি পরস্পরে গালাগালি করল। একজন মুসলমান, অপরজন ইহুদী। মুসলমান বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা কে জগতবাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। ইহুদী বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে জগতবাসীর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। রাবী বলেনঃ এতে মুসলমান রাগাম্বিত হয়ে গেল এবং ইহুদীর মুখমণ্ডলে একটি চপেটাঘাত করে বসল। এরপর ইহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে তার মাঝে এবং মুসলমানের মাঝে যা ঘটেছিল এ সম্পর্কে তাকে অবহিত করল।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর ওপর প্রাধান্য দিও না। কেননা কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে, আর আমিই হব সেই ব্যাক্তি যে সর্বপ্রথম হুশে আসব। হুশ হয়েই আমি দেখতে পাব যে মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমের কিনারা ধরে আছেন। আমি জানিনা মূসা (আলাইহিস সালাম) কি সেই লোক যিনি বেহুশ হবেন আর আমার পূর্বেই প্রকৃতিস্থ হয়ে যাবেন। নাকি তিনি সেই লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা বেহুশ হয়ে যাওয়া থেকে সতন্ত্র রেখেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৪ | 6074 | ٦۰۷٤
পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামত হবে তখন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে। আর আমিই হব সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, যে হুশ হয়ে দাঁড়াবো। আর আমি দেখতে পাব যে, মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমকে ধরে আছেন। মূলত আমি জানিনা যে, তিনি বেহুশীদের অন্তর্ভুক্ত কি না? এ হাদীস আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৫ | 6075 | ٦۰۷۵
পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা’আলা যমীনকে আপন মুঠোয় আবদ্ধ করবেন আর আকাশকে ডান হাত দিয়ে লেপটে দিবেন। এরপর তিনি বলবেনঃ আমিই বাদশাহ, দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়?
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৬ | 6076 | ٦۰۷٦
পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন একটি রুটি হয়ে যাবে। আর আল্লাহ তা’আলা বেহেশতীদের মেহমানদারীর জন্য তাকে বেহেশতে তুলে নেবেন। যেমন তোমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় তার রুটি হাতে তুলে নেয়। এমন সময় একজন ইহুদী এলো এবং বলল, হে আবূল কাসিম! দয়াময় আপনাকে বরকত প্রদান করুন। কিয়ামতের দিন বেহেশতিদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে কি জানাব না? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। লোকটি বলল, (সেই দিন) সমস্ত ভূ-মণ্ডল একটি রুটি হয়ে যাবে। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন (লোকটিও সেইরূপই বলল)। এবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকালেন এবং হাসলেন। এমনকি তার চোয়ালের দাঁতসমূহ প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেনঃ তবে কি আমি তোমাদেরকে (সেই রুটির) তরকারী সম্পর্কে বলব না? তিনি বললেনঃ তাদের তরকারী হবে বালাম এবং নূন। সাহাবাগগ বললেনঃ সে আবার কি? তিনি বললেনঃ ষাড় এবং মাছ। এদের কলিজার গুরদা থেকে সত্তর হাজার লোক খেতে পারবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৭ | 6077 | ٦۰۷۷
পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৭। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মানুষকে এমন স্বচ্ছ শুভ্র সমতল যমীনের ওপর একত্রিত করা হবে সাদা গমের রুটি যেমন স্বচ্ছ-শুভ্র হয়ে থাকে। সাহল বা অন্য কেউ বলেছেনঃ তার মাঝে কারও কোন কিছুর চিহ্ন বিদ্যমান থাকবে না।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৮ | 6078 | ٦۰۷۸
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের হাশর হবে তিন প্রকারে। একদল তো হবে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আশিক ও দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত বান্দাদের। দ্বিতীয় দল হবে দু’জন, তিনজন, চারজন বা দশজন এক উটের ওপর আরোহণকারী। আর অবশিষ্ট যারা থাকবে অগ্নি তাদেরকে একত্রিত করে নেবে। যেখানে তারা থামবে আগুনও তাদের সাথে সেখানে থামবে। তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে রাত্রি যাপন করবে। তারা যেখানে সকাল করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে সকাল করবে। যেখানে তাদের সন্ধ্যা হবে আগুনেরও সেখানে সন্ধ্যা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৯ | 6079 | ٦۰۷۹
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর নাবী! অধোবদন অবস্হায় কাফেরদেরকে কিভাবে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে? তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যে মহান সত্তা (মানুষকে) দু’পায়ের উপর হাটাতে পারেন, তিনি কি কিয়ামতের দিন অধোবদন করে হাটাতে সক্ষম নন? তখন কাতাদা (রাঃ) বললেনঃ আমাদের রবের ইজ্জতের কসম! হ্যাঁ, অবশ্যই পারেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮০ | 6080 | ٦۰۸۰
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮০। আলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই তোমরা খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনা বিহীন অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হবে। সুফিয়ান বলেনঃ এ হাদীসকে ঐ সমস্ত হাদীসের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হয়, যা ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বয়ং শুনেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮১ | 6081 | ٦۰۸۱
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে শুনেছি তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মুলাকাত করবে খালি গা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮২ | 6082 | ٦۰۸۲
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮২। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে খুৎবা দিতে দাঁড়ালেন। এরপর বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের হাশর করা হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়াতঃ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা বলেন যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছি তেমনিভাবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করব। আর কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) কে পোশাক পরিধান করানো হবে। আমার উম্মাত থেকে কিছু লোককে আনা হবে আর তাদেরকে আনা হবে বামওয়ালাদের (বাম হাতে আমলনামা প্রাপ্ত) ভিতর থেকে। তখন আমি বলব, হে প্রভু। এরা তো আমার উম্মাত। এরপর আল্লাহ বলবেনঃ নিশ্চয়ই তুমি জানো না তোমার পরে এরা কি করেছে। তখন আমি আরয করব, যেমন আরয করেছে নেককার বান্দা অর্থাৎ ঈসা (আলাইহিস সালাম) আয়াতঃ وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ} … الْحَكِيمُ অর্থাৎ যতদিন আমি ছিলাম আমি তাদের ওপর সাক্ষী ছিলাম … الْحَكِيمُ পর্যন্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর জবাব দেওয়া হবে। এরা সর্বদাই দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শনের ওপর বিদ্যমান ছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৩ | 6083 | ٦۰۸۳
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৩। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তখন তো পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তিনি বললেনঃ এইরূপ ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৪ | 6084 | ٦۰۸٤
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা কোন এক তাবুতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের প্রান। আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে, তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে। আর এটা চিরন্তন সত্য যে বেহেশতে কেবলমাত্র মুসলমানগণই প্রবেশ করতে পারবে। আর মুশরিকদের মুকাবিলায় তোমরা হচ্ছ এমন, যেমন কাল ষাড়ের চামড়ার উপর শুভ্র (সাদা) পশম। অথবা লাল ষাড়ের চামড়ার ওপর কাল পশম।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৫ | 6085 | ٦۰۸۵
পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আদম (আলাইহিস সালাম) কে ডাকা হবে। তিনি তার বংশধরকে দেখতে পাবেন। তখন তাদেরকে বলা হবে, ইনি হচ্ছে তোমাদের পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)। জবাবে তারা বলবে হাযির! হাযির! আমরা আপনার খিদমতে হাযির! এরপর তাকে আল্লাহ বলবেন, তোমার জাহান্নামী বংশধরকে বের কর। তখন আদম (আলাইহিস সালাম)বলবেন, প্রভূ হে! কি পরিমাণ বের করব? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ প্রতি একশ থেকে নিরানব্বই জনকে বের কর। তখন সাহাবাগণ বলে উঠলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! প্রতি একশ থেকে যখন নিরানব্বই জনকে বের করা হবে তখন আর আমাদের মাঝে বাকী থাকবে কি? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই অন্যান্য সকল উম্মাতের তূলনায় আমার উম্মাত হল কাল ষাড়ের গায়ের শুভ্র পশমের ন্যায়।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৬ | 6086 | ٦۰۸٦
পরিচ্ছদঃ ২৭২৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার (২২ঃ ১)। কিয়ামত আসন্ন (৫৩ঃ ৫৭)। কিয়ামত আসন্ন (৫৪ঃ ১)
৬০৮৬। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ডেকে বলবেন, হে আদম! তিনি বলবেন, আমি তোমার খিদমতে হাযির। সমগ্র কল্যাণ তোমারই হাতে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলবেন, জাহান্নামীদের (দেওয়ার জন্য) বের কর। আদম (আলাইহিস সালাম) আরয করবেন, কি পরিমাণ জাহান্নামী বের করব? আল্লাহ বলবেন, প্রতি এক হাজারে নয়শ, নিরানব্বই জন। বস্তুত এটা হবে ঐ সময়, যখন (কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা দর্শনে) বাচ্চা বৃদ্ধ হয়ে যাবে। (আয়াতঃ) আর গর্ভবতীরা গর্ভপাত করে ফেলবে; মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি কঠিন। (সূরা হাজ্জঃ ২)
এটা সাহাবাগণের কাছে বড় কঠিন মনে হল। তখন তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্য থেকে সেই লোকটি কে হবেন? তিনি বললেনঃ তোমরা এই মর্মে সুসংবাদ গ্রহণ কর যে ইয়াযুয ও মাযুয থেকে এক হাজার আর তোমাদের মাঝ থেকে হবে একজন। এরপর তিনি বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতের মুঠোয় আমার জান। আমি আকাঙ্ক্ষা রাখি যে তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হয়ে যাও। বর্ননাকারী বলেনঃ এরপর আমরা আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার, বললাম। তিনি আবার বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার জান। আমি অবশ্যই আশা করি যে তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হয়ে যাও। অন্য সব উম্মাতের মাঝে তোমাদের তুলনা হচ্ছে কাল ষাড়ের চামড়ার মাঝে সাদা চুল বিশেষ। অথবা সাদা চিহ্ন, যা গাধার সামনের পায়ে হয়ে থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৭ | 6087 | ٦۰۸۷
পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৭। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ সেই দিন মানূষ তাদের প্রভূর সামনে দণ্ডায়মান হবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবাই দণ্ডায়মান হবে ঘামের মাঝে কান পর্যন্ত ডুবে থাকা অবস্থায়।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৮ | 6088 | ٦۰۸۸
পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত ছাড়িয়ে যাবে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত হবে; এমনকি কান পর্যন্ত।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৯ | 6089 | ٦۰۸۹
পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৮৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম হত্যার বিচার করা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯০ | 6090 | ٦۰۹۰
পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার ভাই এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তা থেকে মাফ নিয়ে নেয়, তার ভাই এর জন্য তার কাছ থেকে নেকী কেটে নেওয়ার পূর্বে। কেননা সেখানে (হাশরের ময়দানে) কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি নেকী না থাকে তবে তার (মাজলুম) ভাই এর গোনাহ এনে তার উপর ছুঁড়ে মারা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯১ | 6091 | ٦۰۹۱
পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯১। আয়াতে কারীমা وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِمْ مِنْ غِلٍّ এর তাৎপর্যে সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে খালাস পাওয়ার পর একটি পুলের ওপর তাদের আটকানো হবে, যা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তীস্থানে থাকবে। দুনিয়ায় থাকতে তারা একে অপরের উপর যে যুলুম করেছিল তার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তারা যখন পাক-সাফ হয়ে যাবে, তখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের জান, প্রত্যেক ব্যাক্তি তার দুনিয়ার বাসস্থানকে চেনার তুলনায় জান্নাতের বাসস্থানকে অধিক চিনবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯২ | 6092 | ٦۰۹۲
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯২। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যার চুলচেরা হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব দেওয়া হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন বললাম, আল্লাহ তা’আলা কি এরুপ বলেন নি “অচিরেই সহজ হিসাব গ্রহণ করা হবে”। তিনি বলেনঃ তা তো হবে শুধু পেশ করা মাত্র।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৩ | 6093 | ٦۰۹۳
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি। ইবনু জুরাইজ, মুহাম্মদ ইবনু সুলাইম, আইউব ও সালিহ ইবনু রুস্তম, ইবনু আবূ মুলাইকা আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত রূপে বর্ননার অনুসরণ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৪ | 6094 | ٦۰۹٤
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৪। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন যারই হিসাব গ্রহণ করা হবে সে ধবংস হয়ে যাবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি, যার ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে তার হিসাব সহজ হবে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তা পেশ করা বৈ কিছুই নয়। আর কিয়ামতের দিন আমাদের মাঝে যার চুলছেড়া হিসাব নেওয়া হবে তাকে নিঃসন্দেহে আযাব দেওয়া হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৫ | 6095 | ٦۰۹۵
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু মামার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ কিয়ামতের দিন কাফেরকে হাযির করা হবে আর তখন তাকে বলা হবে, তোমার যদি পৃথিবী ভরা স্বর্ণ থাকত তাহলে কি তার বিনিময়ে তুমি আযাব থেকে বাঁচতে চাইতে না? সে বলবে, হ্যাঁ চাইতাম। এরপর তাকে বলা হবে তোমার কাছে তো এর চেয়ে সহজতর বস্তুটি (তৌহীদ) চাওয়া হয়েছিল।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৬ | 6096 | ٦۰۹٦
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৬। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রত্যেক ব্যাক্তির সঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন। আর সেদিন বান্দা ও আল্লাহর মাঝে কোন দোভাষী থাকবে না। এরপর সামনের দিকে নযর করে তার সামনে জান্নাত দেখতে পাবে না। সে পুনরায় তার সামনের দিকে নযর ফেরাবে তখন তার সামনে পড়বে জাহান্নাম। তোমাদের মাঝে যে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেতে চায়, সে যেন এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও নিজকে রক্ষা করে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৭ | 6097 | ٦۰۹۷
পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৭। আ’মাশ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘূরিয়ে নিলেন। আবার বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। তিনি তিনবার এইরূপ করলেন। এমন কি আমরা মনে করতে লাগলাম যে তিনি বুঝি জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করেছেন। এরপর আবার বললেনঃ তোমরা এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তবে উত্তম কথার দ্বারা হলেও (জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ গ্রহণ কর)।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৮ | 6098 | ٦۰۹۸
পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৮। ইমরান ইবনু মায়সারাহ ও উসায়দ ইবনু যায়িদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ববতী উম্মাতদের আমার সমীপে পেশ করা হয়। কোন নাবী তাঁর অনেক উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবীর সঙ্গে রয়েছে দশজন উম্মাত। কোন নাবীর সঙ্গে পাঁচজন আবার কোন নাবী একা একা যাচ্ছেন। নজর করলাম হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। আমি বললামঃ হে জিবরীল! ওরা কি আমার উম্মাত? তিনি বললেনঃ না। তবে আপনি ঊধর্বলোকে নজর করুন! আমি নজর করলাম, হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। ওরা আপনার উম্মাত। আর তাদের সামনে রয়েছে সত্তর হাজার লোক তাদের কোন হিসাব হবে না হবে না তাদের কোন আযাব।
আমি বললাম, তা কেন? তিনি বললেনঃ তারা কোন দাগ লাগাত না, ঝাড়ফুঁকের শরণাপন্ন হত না এবং কুযাত্রা মানত না। আর তারা কেবল তাদের প্রভূর ওপরই ভরসা করত। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে উঠে দাঁড়িয়ে বললেনঃ আপনি আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! তুমি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। এরপর আরেক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ যেন আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশাতো দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৯ | 6099 | ٦۰۹۹
পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৯। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাত থেকে কিছু লোক দল বেঁধে বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর তারা হবে সত্তর হাজার। তাদের চেহারাগুলো পূর্ণিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জল থাকবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এতদ শ্রবণে উক্কাশা ইবনু মিহসান আসাদী তাঁর গায়ে চাদর উঠাতে উঠাতে দাঁড়ালেন, এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার জন্য দোয়া করুন, আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। এরপর আনসার সম্প্রদায়ের এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর নিকট দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশা তো উক্ত দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০০ | 6100 | ٦۱۰۰
পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০০। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মত থেকে সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একে অপরের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বর্ননাকারী (আবূ হাযিম) এর এ দু’সংখ্যার মাঝে সন্দেহ রয়েছে। তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে আর তাদের চেহারাগুলো পূর্নিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০১ | 6101 | ٦۱۰۱
পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। অতঃপর তাদের মাঝে একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোষণা দেবে যে, হে জাহান্নামের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। হে জান্নাতের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০২ | 6102 | ٦۱۰۲
পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০২। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন জান্নাতবাসীগণকে বলা হবে, এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। জাহান্নামের অধিবাসীদেরকে বলা হবে, হে জাহান্নামীরা! এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৩ | 6103 | ٦۱۰۳
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৩। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জান্নাতে উঁকি দিয়ে দেখলাম যে, তার অধিকাংশ অধিবাসীই দরিদ্র আবার জাহান্নামে উঁকি দিতে দেখতে পেলাম এর অধিকাংশ অধিবাসীই নারী।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৪ | 6104 | ٦۱۰٤
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম, (এরপর দেখতে পেলাম যে) তথায় যারা প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশই নিঃস্ব। আর ধনাট্য ব্যাক্তিরা আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি জাহান্নামের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন (দেখতে পেলাম যে) এখানে প্রবেশ কারীদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৫ | 6105 | ٦۱۰۵
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৫। মু’আয ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মূত্যৃকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যবেহ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোযণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষণ্ণতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৬ | 6106 | ٦۱۰٦
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৬। মুআয ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জান্নাতীগণকে সম্বোধন করে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তারা জবাবে বলবে, হে আমাদের প্রভূ! হাযির, আমরা আপনার সমীপে হাযির। এরপর আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছ? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে এমন বস্তু দান করেছেন যা আপনার মাখলুকাতের ভিতর থেকে কাউকেই দান করেন নি। অতএব আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না! তখন তিনি বলবেন, আমি এর চাইতেও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান করব। তারা বলবে, প্রভু হে! এর চাইতেও উত্তম সে কোন বস্তু? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ তোমাদের ওপর আমি আমার সন্তুষ্টি অবধারিত করব। এরপর আমি আর কখনও তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হব না।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৭ | 6107 | ٦۱۰۷
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বদরের যুদ্ধের দিন হারিসা (রাঃ) শহীদ হলেন। আর তখন তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। তাঁর মা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সাথে হারিসার স্থান সম্পর্কে আপনি তো অবশ্যই জানেন। সে যদি জান্নাতী হয়; আমি ধৈর্য ধারণ করব এবং সাওয়াব মনে করব। আর যদি অন্য কিছু হয় তাহলে আপনি দেখতে পাবেন আমি কি করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! অথবা তুমি কি বেওকুফ হয়ে গেলে! জান্নাত কি একটা না কি? জান্নাত তো অনেক। আর সে হারিসা তো রয়েছে জান্নাতূল ফিরদাউসের মাঝে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৮ | 6108 | ٦۱۰۸
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৮। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে।
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ার মাঝে একজন আরোহী একশ-বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে, তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না।
রাবী আবূ হাযিম বলেনঃ আমি এই হাদীসটি নু’মান ইবনু আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) এর সমীপে পেশ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আমার কাছে এই মর্মে হাদীস বর্ননা করেন যে তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ায় উৎকৃষ্ট, উৎফূল্ল ও দ্রুতগামী অশ্বের একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে। তবুও তার ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না।
হাদিস নম্বরঃ ৬১০৯ | 6109 | ٦۱۰۹
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৯। কুতায়বা (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমার উম্মাত থেকে সত্তর হাজার অথবা সাত লক্ষ লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী আবূ হাযিম জানেন না যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দু’টি সংখ্যার মাঝে কোনটি বলেছেনঃ (তিনি এই মর্মে আরও বলেন যে) তারা একে অপরের হাত দৃঢ়ভাবে ধারন করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রথম ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষন না সর্বশেষ ব্যাক্তি প্রবেশ করবে। তাদের চেহারাগুলো হবে পূর্নিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১০ | 6110 | ٦۱۱۰
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতের মাঝে তাদের কামরাসমূহ দেখতে পাবে, যেমন আকাশের মাঝে তোমরা তারকাসমূহ দেখতে পাও। (সনদান্তর্ভুক্ত) রাবী আবদুল আযীয বলেনঃ আমার পিতা বলেছেন যে, আমি এই হাদীসটি নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশকে বলেছি। অতঃপর তিনি বলেছেন, আমি এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই আবূ সাঈদকে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমি শুনেছি। এবং এতে তিনি এটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। যেরূপ অস্তমান তারকাকে আকাশের পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে তোমরা দেখে থাক।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১১ | 6111 | ٦۱۱۱
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কম আযাব প্রাপ্ত লোককে আল্লাহ তা’আলা বলবেন, দূনিয়ার মাঝে যত কিছু আছে তার তূল্য কোন সম্পদ যদি (আজ) তোমার কাছে থাকত, তাহলে কি তুমি তার বিনিময়ে নিজকে (আযাব থেকে) মুক্ত করতে? সে বলবে, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন, আমি তোমার থেকে এর চেয়েও সহজতর বস্তুর প্রত্যাশা করেছিলাম, যখন তুমি আদমের পৃষ্টদেশে বর্তমান ছিলে। আর তা হচ্ছে এই যে, তুমি আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর তুমি তা অস্বীকার করলে আর আমার সাথে অংশী স্থাপন করলে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১২ | 6112 | ٦۱۱۲
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১২। আবূ নুমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শাফাআতের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যেমন তারা সা’আরীর। (রাবী জাবির বলেন) আমি বললাম সা’আরীর কি? তিনি বললেনঃ সা’আরীর মানে যাগাবীস (শৃগালের বাচ্চাসমুহ) বের হওয়ার সময় তাদের মুখ থাকবে ভাঙ্গা (দাঁত পড়া)। (সনদান্তর্ভুক্ত রাবী হাম্মাদ বলেন) আমি আবূ মুহাম্মাদ আমর ইবনু দীনারকে জিজ্ঞাসা করি যে, আপনি কি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ শাফাআতের দ্বারা জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৩ | 6113 | ٦۱۱۳
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৩। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আযাবে চর্ম বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পর একদল লোককে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন জান্নাতীগণ তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৪ | 6114 | ٦۱۱٤
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যার অন্তকরণে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে বের কর কয়লার মত হয়ে তারা জাহান্নাম থেকে ফিরে আসবে। এরপর নহরে হায়াত (সজীবনী প্রস্রবণ) এর মাঝে তাদেরকে অবগাহিত করা হবে এতে তারা এমন সজীব হয়ে উঠবে যেমন নদী তীরে জমাট আবর্জনায় সজীব উদ্ভিদ গজিয়ে উঠে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেনঃ তোমরা কি দেখ নাই বীজকাটা উদ্ভিদ কি সুন্দর হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে?
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৫ | 6115 | ٦۱۱۵
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তালুতে রাখা হবে প্রজ্জলিত অঙ্গার, তাতে তার মগয উৎলাতে থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৬ | 6116 | ٦۱۱٦
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৬। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচেয়ে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তলায় রাখা হবে দু’টি প্রজ্বলিত অঙ্গার। এতে তার মগয টগবগ করতে থাকবে। যেমন ডেক বা কলসী উথলায়।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৭ | 6117 | ٦۱۱۷
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) জাহান্নামের আলোচনা করলেন। এরপর তিনি তার মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং এর থেকে পানাহ চাইলেন। পুনঃ তিনি জাহান্নামের আলোচনা করে মুখ ফিরিয়ে নিলেন ও এর থেকে পানাহ চাইলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের অগ্নি থেকে নিজকে রক্ষা কর এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও। আর যে তাও পারবে না সে যেন ভাল কথার বিনিময়ে হলেও আত্নরক্ষা করে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৮ | 6118 | ٦۱۱۸
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন; যখন তাঁর কাছে তার চাচা আবূ তালিব সমন্ধে আলোচলা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ সম্ভবত কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত তাকে উপকার প্রদান করবে। আর তখন তাকে জাহান্নামের অগ্নিতে যা টাখনু পর্যন্ত পৌছে রাখা হবে যাতে তার মগজ মূল।
হাদিস নম্বরঃ ৬১১৯ | 6119 | ٦۱۱۹
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন তারা বলবে, আমাদের জন্য আমাদের রবের কাছে যদি কেউ শাফাআত করত, যা এ স্থান থেকে আমাদের উদ্ধার করত। তখন তারা সকলেই আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আপনি ঐ ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ তাআলা স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন। আপনার মাঝে নিজে থেকে রুহ ফুকে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাদের হুকুম করেছেন; তারা আপনাকে সিজদা করেছে। অতঃপর আপনি আমাদের জন্য আমাদের প্রভুর কাছে শাফাআত করুন। তখন তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। এরপর বলবেন, তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও যাকে আল্লাহ প্রথম রাসুল হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যাকে আল্লাহ তা’আলা খলীলরূপে গ্রহগ করেছেন। অতঃপর তারা তার কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যার সঙ্গে আল্লাহ তা’আলা কথা বলেছেন। তখন তারা তার কাছে আসবে। তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেনঃ তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও।
তারা তার কাছে আসবে। তখন তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে চলে যাও। তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তখন তারা সকলেই আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে অনুমতি চাইব। যখনই আমি আল্লাহ তা’আলাকে দেখতে পাব তখন সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ ত’আলার যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। এরপর আমাকে বলা হবে, তোমার মাথা উঠাও। সাওয়াল কর, তোমাকে দেওয়া হবে। বল; তোমার কথা শ্রবণ করা হচ্ছে। শাফাআত কর; তোমার শাফাআত কবুল করা হবে।
তখন আমি মাথা উত্তোলন করব এবং আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে প্রশংসার বাণী শিক্ষা দিয়েছেন তার মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সুপারিশ করব, তখন আমার জন্য সীমা নির্ধারন করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে বেহেশতে প্রবেশ করিয়ে দেব। এরপর আমি পুর্বের ন্যায় পুনঃ তৃতীয়বার অথবা চতুর্থবার সিজদায় পড়ে যাব। অবশেষে কুরআনের বাণী মুতাবিক যারা অবধারিত জাহান্নামী তাদের ব্যতীত আর কেউই জাহান্নামে অবশ্যই থাকবে না। কাতাদা উক্ত আঘাতের ব্যাখ্যায় তখন বলেছিলেন, চিরস্থায়ী জাহান্নাম যাদের জন্য অবধারিত হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১২০ | 6120 | ٦۱۲۰
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদল লোককে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফাআতে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করা হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৬১২১ | 6121 | ٦۱۲۱
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২১। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বদরের যূদ্ধে হারিসা (রাঃ) আদৃশ্য তীরের আঘাতে শাহাদাতবরণ করলে তার মাতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার অন্তরে হারিসার স্নেহ-মমতা যে কত গভীর তা তো আপনি জানেন। অতএব সে যদি জান্নাত লাভ করে তরে আমি তার জন্য কান্নাকাটি করব না। আর যদি ব্যতিক্রম হয় তবে আপনি অচিরেই দেখতে পাবেন আমি কি করি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তো নির্বোধ। জান্নাত কি একটি, না কি অনেক? আর সে তো সবচেয়ে উন্নতমানের জান্নাত ফিরদাউসে রয়েছে। তিনি আরও বললেনঃ এক সকাল বা এক বিকাল আল্লাহর রাস্তায় চলা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। তীরের দু’প্রান্তের দূরত্বের সমান বা কদম পরিমাণ জান্নাতের জায়গা দুনিয়া ও তৎ মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। জান্নাতের কোন নারী যদি দুনিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত দুনিয়া আলোকিত ও খুশবুতে মোহিত হয়ে যাবে। জান্নাতি নারীর নাসীফ (ওড়না) দুনিয়ার সব কিছুর চেয়ে উত্তম।
হাদিস নম্বরঃ ৬১২২ | 6122 | ٦۱۲۲
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন লোকই জান্নাতে প্রবেশ করবে, স্বীয় জাহান্নামের ঠিকানাটা তাকে দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এ জন্য) যেন সে বেশি বেশি শোকর আদায় করে। আর যে কোন লোকই জাহান্নামে প্রবেশ করবে তাকে তার জান্নাতের ঠিকানাটা দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত। (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এজন্য) যেন এতে তার আফসোস হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৬১২৩ | 6123 | ٦۱۲۳
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ থেকে বেশি সৌভাগ্যশালী হবে আপনার শাফাআত দ্বারা কোন লোকটি? তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! আমি ধারণা করেছিলাম যে তোমার আগে কেউ এ সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না। কারণ হাদীসের ব্যাপারে তোমার চেয়ে অধিক আগ্রহী আর কাউকে আমি দেখিনি। কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত দ্বারা সর্বাধিক সৌভাগ্যশালী ঐ ব্যাক্তি হবে যে খালেস অন্তর থেকে বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
হাদিস নম্বরঃ ৬১২৪ | 6124 | ٦۱۲٤
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জাহান্নাম থেকে বের হবে এবং সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে তার সম্পর্কে আমি জানি। এক ব্যাক্তি অধোবদন অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবং সে ফিরে আসবে ও বলবে, হে প্রভূ! জান্নাত তো পরিপূর্ন দেখতে পেলাম। পুনরায় আল্লাহ তাআলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ন হয়ে গিয়েছে। তাই সে ফিরে এসে বলবে, হে প্রভু! জান্নাত তো ভরপুর দেখতে পেলাম। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। কেননা জান্নাত তোমার জন্য সমতুল্য এবং তার দশ গুন। অথবা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দশ গুন। তখন লোকটি বলবে, প্রভু! তুমি কি আমার সাথে বিদ্রূপ বা হাসি-ঠাট্টা করছ? (রাবী বলেন) আমি তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এভাবে হাসতে দেখলাম যে তার দন্তরাজি প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল এবং বলা হচ্ছিল এটা জান্নাতীদের নিম্নতম মর্যাদা।
হাদিস নম্বরঃ ৬১২৫ | 6125 | ٦۱۲۵
পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আবূ তালিবকে কিছু উপকার করতে পেরেছেন?
হাদিস নম্বরঃ ৬১২৬ | 6126 | ٦۱۲٦
পরিচ্ছদঃ ২৭৩৩. সিরাত হল জাহান্নামের পুল
৬১২৬। আবূল ইয়ামান ও মাহমূদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা কতিপয় লোক বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাব? উত্তরে তিনি বললেনঃ সূর্যের নিচে যখন কোন মেঘ না থাকে তখন তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তিনি বললেনঃ পূর্নিমার চাঁদ যদি মেঘের অন্তরালে না থাকে তবে তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলাকে ঐরুপ দেখতে পাবে।
আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে একত্রিত করে বলবেন, (দুনিয়াতে) তোমরা যে যে জিনিসের ইবাদত করেছিলে সে তার সাথে চলে যাও। অতএব সূর্যের ইবাদতকারী সুর্যের সাথে, চন্দ্রের ইবাদতকারী চন্দ্রের সাথে এবং মূর্তিপূজারী মূর্তির সাথে চলে যাবে। অবশিষ্ট থাকবে এ উম্মাতের লোকেরা, যাদের মাঝে মুনাফিক সম্প্রদাযের লোকও থাকবে। তারা আল্লাহ তাআলাকে যে আকৃতিতে জানত, তার ব্যতিক্রম আকৃতিতে আল্লাহ তা’আলা তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু। তখন তারা বলবে, আমরা তোমার থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আমাদের প্রভু না আসা পর্যন্ত আমরা এ স্থানেই থেকে যাব। আমাদের প্রভু যখন আমাদের কাছে আসবেন, আমরা তাকে চিনে নেব। এরপর যে আকৃতিতে তারা আল্লাহ তা’আলাকে জানত সে আকৃতিতে তিনি তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু।
তখন তারা বলবে হ্যাঁ, আপনি আমাদের প্রভু। তখন তারা আল্লাহ তা’আলার অনুসরণ করবে। এরপর জাহান্নামের পুল স্থাপন করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে, সর্ব প্রথম আমি সেই পুল অতিক্রম করব। আর সেই দিন সমস্ত রাসুলের দু’আ হবে اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ অর্থাৎ হে আল্লাহ! রক্ষা কর, রক্ষা কর। সেই পুলের মাঝে সাদান নামক (এক প্রকার তিক্ত কাটাদার গাছ) গাছের কাটার ন্যায় কাটা থাকবে। তোমরা কি সাদানের কাঁটা দেখেছ। তারা বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ।
তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ কাঁটাগুলি সা’দানে কাঁটার মতই হবে, তবে তা যে কত বড় হবে সে সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সে কাটাগুলি মানুষকে তাদের আমল অনুসারে ছিনিয়ে নেবে। তাদের মাঝে কতিপয় লোক এমন হবে যে তারা তাদের আমলের কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কতিপয় লোক এমন হবে যে তাদের আমল হবে সরিষা তুল্য নগণ্য। তবুও তারা নাজাত পাবে। এমন কি আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের বিচার কার্য সম্পাদন করবেন এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্যদাতাদের থেকে যাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার ইচ্ছা করবেন আল্লাহ তাদেরকে বের করার জন্য ফেরেশতাদেরকে আদেশ করবেন। সিজদার চিহ্ন থেকে ফেরেশতারা তাদেরকে চিনতে পারবে।
আর আল্লাহ তায়ালা বনী আদমের ঐ সিজদার স্থানগুলিকে জাহান্নামের জন্য হারাম কলে দিয়েছেন। সুতরাং ফেরেশতারা তাদেরকে এমতাবস্হায় বের করবে যে, তখন তাদের দেহ থাকবে কয়লার মত। তারপর তাদের দেহে পানি ঢেলে দেয়া হবে। যাকে বলা হয় -মাউল হায়াত- সঞ্জীবনী পানি। সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা আবর্জনায় যেরুপ উদ্ভিদ জন্মায়- পরে এগুলো যেরুপ সজীব হয় তারাও সেরুপ সজীব হয়ে যাবে। এ সময় জাহান্নামের দিকে মুখ করে এক ব্যাক্তি দাড়িয়ে থাকবে আর বলবে, হে প্রভু! জাহান্নামের হাওয়া আমাকে ঝলসে দিয়েছে, এর জ্বলন্ত অঙ্গার আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে সূতরাং তুমি আমার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দাও। এভাবে সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে।
তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে আর তুমি অন্যটির প্রার্থনা করবে? লোকটি বলবে, না। আল্লাহ, তোমার ইজ্জতের কসম! আর অন্যটি চাইব না। সুতরাং তার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এরপর সে বলবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দাও। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আমার কাছে আর অন্য কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য আদম সন্তান! তুমি কতই না গাদ্দার? সে এরূপই প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ সম্ভবত আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে তুমি অন্য আরেকটি আমার কাছে প্রার্থনা করবে।
লোকটি বলবে, না, তোমার ইজ্জতের কসম! অন্যটি আর চাইব না। তখন সে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে এই মর্মে ওয়াদা করবে যে, সে আর কিছুই চাইবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করবেন। সে যখন জান্নাতের মধ্যস্থিত নিয়ামতগুলি দেখতে পাবে, তখন আল্লাহ যতক্ষন চাইবেন ততক্ষন সে চুপ থাকবে। এরূপই সে বলতে থাকবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি কি বল নাই যে তুমি আর কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য হে আদম সন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার।
লোকটি বলবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে তোমার সৃষ্ট জীবের মাঝে সবচে হতভাগ্য কর না। এভাবে সে প্রার্থনা করতে থাকবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা হেসে ফেলবেন। আর আল্লাহ তাআলা যখন হেসে ফেলবেন, তখন তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিবেন। এরপর সে যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তাকে বলা হবে, তোমার যা ইচ্ছে হয় আমার কাছে চাও। সে (বিভিন্ন) আরয করবে, এমনকি তার আকাঙ্ক্ষা নিঃশেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এগুলি তোমার এবং এর সমপরিমানও তোমার।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ ঐ লোকটি হচ্ছে সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী। রাবী বলেন যে, এ সময় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর বর্ণনার মাঝে আবূ সাঈদ খুদরীর নিকট কোনরূপ পরিবর্তন ধরা পড়েনি। এমন কি তিনি যখন هَذَا لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ পর্যন্ত বর্ণনা করলেন, তখন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি هَذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ এটি তোমার এবং দশ গুন বলেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি مِثْلُهُ مَعَهُ স্মরণ রেখেছি।