হাদিস নম্বরঃ ১ | 1 | ۱
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
১। আবূ খায়সামা যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার) বলেন, সর্বপ্রথম তাকদীর’ সম্পর্কে বসরা শহরে মাবাদ আল জুহানী কথা তোলেন। আমি (ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার) এবং হুমায়দ ইবনু আব্দুর রহমান আল হিমায়রী হাজ্জ (হজ্জ) অথবা উমরা আদায়ের জন্য মক্কা মু’আযযামায় আসলাম। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কোন সাহাবীর সাক্ষাৎ পাই তাহলে তাঁর কাছে এসব লোক তাকদীর সম্পর্কে যা বলে বেড়াচ্ছে, সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করতাম।
সৌভাগ্যক্রমে মসজিদে নববীতে আমরা আবদুল্লাহ ইবনু উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর দেখা পাই। আমরা তাঁর কাছে গিয়ে একজন তাঁর ডানপাশে এবং আর একজন বামপাশে বসলাম। আমার মনে হলো, আমার সাথী চান যে, আমিই কথা বলি। আমি আরয করলাম, হে আবূ আবদুর রহমান! আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)-এর কুনিয়াত ছিল আবূ আবদুর রহমান। আমার দেশে এমন কতিপয় লোকের আবির্ভাব হয়েছে যারা কুরআন পাঠ করে এবং ইল্মে দ্বীন সম্পর্কে গবেষণা করে। তিনি তাদের অবস্হা সম্পর্কে আরো কিছু উল্লেখ করেন এবং বলেন যে, তারা মনে করে তাকদীর- বলতে কিছু নেই। সবকিছু তাৎক্ষনিকভাবে ঘটে। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, তাদের সাথে তোমাদের দেখা হলে বলে দিও যে, তাদের সাথে আমার কোন সস্পর্ক নেই এবং আমার সঙ্গে তাদেরও কোন সম্পর্ক নেই। আল্লাহর কসম! যদি এদের কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনার মালিক হয় এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে, তাকদীরের প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত আল্লাহ তা কবুল করবেন না।
তারপর তিনি বললেন, আমাকে আমার পিতা উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাদীস শুনিয়েছেন যে, একদা আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের কাছে এসে হাযির হলেন। তাঁর পরিধানের কাপড় ছিল সা’দা ধবধবে, মাথার কেশ ছিল কাল কুচকুচে। তাঁর মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন ছিল না। আমরা কেউ তাঁকে চিনি না। তিনি নিজের দুই হাঁটু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দুই হাঁটুর সাথে লাগিয়ে বসে পড়লেন আর তার দুই হাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর দুই উরুর উপর রাখলেন।
তারপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইসলাম হল, তুমি এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, রামাযানের রোযা পালন করবে এবং বায়তুল্লাহ পৌছার সামর্থ্য থাকলে হাজ্জ (হজ্জ) পালন করবে। আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। তার কথা শুনে আমরা বিষ্মিত হলাম যে, তিনই প্রশ্ন করেছেন আর তিনই-তা সত্যায়িত করছেন।
আগন্তুক বললেন, আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঈমান হল আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসুলগণের প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনবে, আর তাকদিরের ভালমন্দের প্রতি ঈমান রাখবে। আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন।
তারপর বললেন, আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইহসান হলো, এমনভাবে ইবাদত-বন্দেগী করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, যদি তুমি তাকে নাও দেখ, তাহলে ভাববে তিনি তোমাকে দেখছেন।
আগন্তুক বললেন, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চাইতে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি অধিক অবহিত নন। আগন্তুক বললেন, আমাকে এর আলামত সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুল বললেনঃ তা হলো এই যে, দাসী তার প্রভুর জননী হবে; আর নগ্নপদ, বিবস্ত্রদেহ দরিদ্র মেষপালকদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে।
উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বললেন যে, পরে আগন্তুক প্রস্হান করলেন। আমি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে উমর! তুমি জানো, এই প্রশ্নকারী কে? আমি আরয করলাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই সম্যক জ্ঞাত আছেন। রাসুল বললেনঃ তিনি জিবরীল। তোমাদের তিনি দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ২ | 2 | ۲
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
২। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ আল গুবারী (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মা’বাদ (আল জুহানী) তাকদির- সম্পর্কে তার মত ব্যক্ত করলে আমরা তা অস্বীকার করি। তিনি (ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার) বলেন, আমি ও হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান আল হিময়ারী হাজ্জ (হজ্জ) পালন করতে গিয়েছিলাম। এরপর কাহমাস-এর হাদীসের অনুরুপ মর্ম ও সনদের সাথে হাদীসটি বর্ণিত আছে। তবে এই বর্ণনায় কিছু বেশকম রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৩ | 3 | ۳
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
৩। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (রহঃ)…ইয়াহইয়া ইবনু ইয়া’মার ও হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান আল হিময়ারী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন, আমরা উভয়ে আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করি এবং তাকদির- সম্পর্কে যা বলা হয়, তা নিয়ে আলোচনা করি। তারা উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত উক্ত হাদীসটি কিছু বেশ কমসহ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪ | 4 | ٤
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
৪। হাজ্জাজ ইবনু শা’ইর (রহঃ)…. ইয়াহইয়া ইয়া’মার (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসটির উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫ | 5 | ۵
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকসমক্ষে ছিলেন, এমতাবস্হায় তাঁর কাছে একজন লোক হাযির হলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! ঈমান কী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঈমান হল, আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমুহ, তাঁর সঙ্গে মুলাকাত, তাঁর প্রেরিত রাসুলদের প্রতি ঈমান আনা এবং শেষ উত্থানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
তারপর আগন্তুক প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ইসলাম কী? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ইসলাম হল, আল্লাহর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা, ফরয সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, নির্ধারিত যাকাত আদায় করা এবং রামাযানের রোযা পালন করা।
আগন্তুক আবার প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ইহসান কী? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ইহসান হল, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত- বন্দেগী করবে যেন তাঁকে দেখছ; যদি তুমি তাকে নাও দেখ, তাহলে ভাববে যে, তিনি তোমাকে দেখছেন।
আগন্তুক প্রশ্ন করলেন, কিয়ামত কখন হবে? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চাইতে যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, তিনি অধিক অবহিত নন। তবে হ্যাঁ কিয়ামতের কিছু আলামত বর্ণনা করছি, দাসী তার প্রভূকে জন্ম দেবে। এটি কিয়ামতের আলামতের একটি। বিবস্ত্রদেহ, নগ্নপদ লোক হবে জনগণের নেতা; এটা কিয়ামতের আলামতের একটি। আর রাখালদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত।
পাঁচটি বিষয়ে আল্লাহ ব্যতীত কেউ কিছু জানেনা। এ বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এ আয়াতটি) তিলাওয়াত করেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ, তাঁরই কাছে রয়েছে কিয়ামতের জ্ঞান। তিনি নাযিল করেন বৃষ্টি এবং তিনি জানেন, যা রয়েছে মাতৃগর্ভে। আর কেউ জাননা কি কামাই করবে সে আগামীকাল এবং জাননা কেউ কোন মাটিতে সে মারা যারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব জানেন, সব খবর রাখেন। (সূরা লূকমানঃ ৩৪)
রাবী বলেন, তারপর লোকটি চলে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটিকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। তাঁরা তাকে আনার জন্য গেলেন। কিন্তু কাউকে পেলেন না। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইনি জিবরীল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদের দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৬ | 6 | ٦
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
৬। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র আবূ হায়্যান আত তায়মী (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় إِذَا وَلَدَتِ الأَمَةُ رَبَّهَا এর স্থলে إِذَا وَلَدَتِ الأَمَةُ بَعْلَهَا অর্থাৎ দাসী তার স্বামীকে জন্ম দেবে, কথাটির উল্লেখ রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৭ | 7 | ۷
পরিচ্ছদঃ ১. ঈমান, ইসলাম ও ইহসান প্রসঙ্গ, তাকদীরে বিশ্বাসের আবশ্যিকতা, যে ব্যাক্তি তাকদীর অবিশ্বাস করে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ অপরিহার্য হওয়ার দলীল ও তাঁর সম্পর্কে কঠোর ভাষা ব্যবহার। আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্যে শুরু করছি এবং প্রার্থনা করছি যেন তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বস্তুত মহান আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া আমরা কোন কিছুই করতে সমর্থ নই।
৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর। সাহাবা কিরাম তার কাছে প্রশ্ন করতে ভয় পেলেন। (রাবী বলেন) তারপর একজন লোক এলেন এবং তাঁর কাছে বসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! ইসলাম কী? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ ইসলাম হল, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রামাযানের রোযা পালন করবে। আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন।
তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! ঈমান কী? রাসুল বললেনঃ আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি, উত্থানের বিষয়ে এবং পুরোপুরি তাকদীরে ঈমান রাখবে। আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন।
তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! ইহসান কী? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহকে এমনভাবে ভয় করবে, যেন তাঁকে দেখছো, যদি তাকে না-ও দেখ; তাহলে (ধারণা করবে যে) তিনি তো তোমাকে দেখছেন। আগন্তুক বললেন, আপনি যথার্থ বলেছেন।
তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! কিয়ামত কখন ঘটবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে সে ব্যাক্তি প্রশ্লকারীর চাইতে অধিক অবহিত নয়। তবে আমি কিয়ামতের কিছু আলামত বর্ণনা করছি। যখন দেখবে, দাসী তার মুনিবকে জন্ম দেবে, এটা কিয়ামতের একটি আলামত। আর যখন দেখবে নগ্নপদ, বস্ত্রহীন, বধির ও মূকেরা দেশের শাসক হয়েছে, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত। আর যখন দেখবে, মেষপালক বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত, এটিও কিয়ামতের একটি আলামত।
পাঁচটি অদৃশ্য বিষয়ে আল্লাহ ব্যতীত কেউ কিছু জানেনা। তারপর (তিনি কুরআনুল -এর আয়াত) তিলাওয়াত করলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ, তাঁর কাছে রয়েছে কিয়ামতের মতের জ্ঞান। তিনি নাযিল করেন বৃষ্টি এবং তিনি জানেন, যা রয়েছে মাতৃগর্ভে। জাননা কেউ, কি উপার্জন করবে সে আগামীকাল। আর জাননা কেউ, কোন মাটিতে (দেশে) সে মারা যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব জানেন, সব খবর রাখেন। (সূরা লুকমানঃ ৩৪)
তারপর আগন্তুক উঠে চলে গেলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেনঃ তাঁকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। তাঁকে তালাশ করা হল, কিন্তু তাঁকে পাওয়া গেল না। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইনি জিবরীল (আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমরা প্রশ্ন না করায়, তিনি চাইলেন যেন তোমরা দ্বীন সমন্ধে জ্ঞান লাভ কর।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৮ | 8 | ۸
পরিচ্ছদঃ ২. নামাযসমুহ যা ইসলামের একটি রুকন
৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ইবনু আমিল ইবনু তারীফ ইবনু আবদুল্লাহ আল সাকাফী (রহঃ) … তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, নাজদের বাসিন্দা এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমতে হাযির হলেন। তাঁর মাথার চুল ছিল এলোমেলো। আমরা তার অস্পষ্ট আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। তিনি যা বলছিলেন তা আমরা বুঝতে পারছিলাম না। অবশেষে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছাকাছি এলেন। তারপর তাঁর কাছে ইসলাম সমন্ধে জানতে চাইলেন। জবাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দিনেরাতে পাঁচবার ফরয সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা। আগন্তুক জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাপারে আরো কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ না, তবে নফল সালাত (নামায/নামাজ) করা যায়। আর রামাযান মাসে রোযা পালন করা। আগন্তুক জানতে চাইলেন, এ ছাড়া আরও কিছু আছে কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, তবে নফল রোযা পালন করা যায়। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে যাকাতের কথা বললেন। আগন্তুক জানতে চাইলেন, এ ছাড়া আরও কিছু আছে কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে অতিরিক্ত দান করা যায়।
রাবী বললেন, তারপর আগন্তুক এ কথা বলতে বলতে চলে গেলেন। আল্লাহর কসম, আমি এর চাইতে বেশি করব না এবং কমও করব না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটি সত্য বলে থাকলে সফল হবে।
হাদিস নম্বরঃ ৯ | 9 | ۹
পরিচ্ছদঃ ২. নামাযসমুহ যা ইসলামের একটি রুকন
৯। ইয়াহইয়া ইবনু আয়্যুব ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) – তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীসটি মালিক-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তার পিতার কসম, সে সত্য বলে থাকলে সফলকাম হবে। কিংবা তার পিতার কসম সে সত্য বলে থাকলে জান্নাতে চলে গেল।
হাদিস নম্বরঃ ১০ | 10 | ۱۰
পরিচ্ছদঃ ৩. ইসলামের রুকনসমূহ সম্পর্কে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা
১০। আমর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুু বুকায়র আল নাকিদ (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করার ব্যাপারে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল। তাই আমরা চাইতাম যে, গ্রাম থেকে কোন বুদ্ধিমান ব্যাক্তি এসে তাঁকে প্রশ্ন করুক আর আমরা তা শুনি।
তারপর একদিন গ্রাম থেকে এক ব্যাক্তি এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমাদের কাছে আপনার দুত এসে বলেছে, আপনি দাবি করেছেন যে, আল্লাহ আপনাকে রাসুল হিসাবে পাঠিয়েছেন। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সত্যই বলেছে। আগন্তুক বলল, আসমান কে সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহ। আগন্তুক বলল, যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ। আগন্তুক বলল, এসব পর্বতমানা কে স্থাপন করেছেন এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে তা কে সৃষ্টি করেছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ। আগন্তুক বলল, কসম সেই সত্তার! যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং এসব পর্বতমালা স্থাপন করেছেন। আল্লাহই আপনাকে রাসুলরুপে পাঠিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ।
আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের উপর দিনে ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সত্যই বলেছে। আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুলরুপে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের উপর আমাদের মালের যাকাত দেওয়া ফরয। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঠিকই বলেছো আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুলরুপে পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, প্রতি বছর রমযান মাসের রোযা পালন করা আমাদের উপর ফরয। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সত্যই বলেছে।
আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রাসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন, তার কসম, আল্লাহ-ই কি আপনাকে এর নির্দেশ দিয়েছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলে যে, আমাদের মধ্যে যে বায়তুল্লায় যেতে সক্ষম তার উপর হাজ্জ (হজ্জ) ফরয। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সত্যি বলেছে। রাবী বলেন যে, তারপর আগন্তুক চলে যেতে যেতে বলল, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তার কসম, আমি এর অতিরিক্তও করব না এবং এর কমও করব না। এ কথা শুনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সে জান্নাতে যাবে।
হাদিস নম্বরঃ ১১ | 11 | ۱۱
পরিচ্ছদঃ ৩. ইসলামের রুকনসমূহ সম্পর্কে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা
১১। আবদুল্লাহ ইবনু হাশিম আল আবদী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে কোন প্রশ্ন করতে কুরআন মজীদে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল। তারপর তিনি হাদীসটির বাকি অংশ (উল্লেখিত হাদীসের) অনুরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ১২ | 12 | ۱۲
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১২। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়ের (রহঃ) আবূ আইয়ুব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আবূ আইয়ুব (রাঃ) বলেন, এক সফরে জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে এসে দাড়াল। সে তাঁর আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! অথবা বলেছিল, হে মুহাম্মাদ! আমাকে এমন কিছু বলেদিন যা আমাকে জান্নাতের কাছে নিয়ে যাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। রাবী বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থামলেন এবং সাহাবীদের দিকে তাকালেন। পরে তিনি বললেন, তাকে তাওফীক দেওয়া হয়েছে অথবা বললেন, তাঁকে হিদায়াত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কী বললে? রাবী বলেন, সে তার পূনরাবৃত্তি করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দিবে এবং আত্নীয়তার সস্পর্ক বজায় রাখবে, (এবারে) উটনী ছেড়ে দাও।
হাদিস নম্বরঃ ১৩ | 13 | ۱۳
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৩। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও আবদুর রহমান বিশর (রহঃ)- আবূ আইয়্যুব (রাঃ) থেকে এবং তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসের অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ১৪ | 14 | ۱٤
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৪। ইয়াহইয়াহ ইবনু ইয়াহইয়াহ আত তামিমী (রহঃ) ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবূ আইয়্যুব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে হাযির হল এবং আরয করল, আমাকে এমন একটি কাজের কথা বাতলে দিন, যে কাজ আমাকে জান্নাতের কাছে পৌছে দেবে এবং জাহান্নাম থেকে দুরে রাখবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দিবে এবং আত্নীয়তার সস্পর্ক বজায় রাখবো সে ব্যাক্তি চলে গেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে যে কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা দৃঢ়তার সাথে পালন করলে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আবূ শায়বার বর্ণনায় إِنْ تَمَسَّكَ بِمَا أُمِرَ এর স্থলে إِنْ تَمَسَّكَ بِهِ রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ১৫ | 15 | ۱۵
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৫। আবূ বকর ইবনু ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক বেদূঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি আমল বাতলে দিন, যা করলে আমি জান্নাতে যেতে পারব। তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কোন কিছু শরীক করবে না, ফরয সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, নির্ধারিত যাকাত দিবে এবং রামাযানের রোযা পালন করবে। তারপর সে বলল, যার হাতে আমার প্রান তাঁর কসম, আমি এর উপর কখনো কিছু বাড়াব না এবং তা থেকে কমও করব না। লোকটি চলে গেলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কেউ কোন জান্নাতী লোক দেখে খুশি হতে চাইলে, একে দেখুক।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ১৬ | 16 | ۱٦
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূমান ইবনু কাওকাল (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে হাযির হলেন। তিনি আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে অবহিত করুন, যদি আমি ফরয সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি, হারামকে হারাম বলে জানি, হালালকে হালাল জ্ঞান করি, তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ।
হাদিস নম্বরঃ ১৭ | 17 | ۱۷
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৭। হাজ্জাজ ইবনু শায়ির ও কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নূ’মান ইবনু কাওকাল (রাঃ) বলেছেন, হে আল্লাহর রাসুল! বাকি অংশ উপরোক্ত বর্ণনার অনুরুপ। তরে তিনি তাঁর বর্ণনায় وَلَمْ أَزِدْ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا (এবং এর উপর কিছু বৃদ্ধি না করি) কথাটি অতিরিক্ত উল্লেখ করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ১৮ | 18 | ۱۸
পরিচ্ছদঃ ৪. যে ঈমানের দ্বারা জান্নাতে প্রবেশ করা যায় এবং যে ব্যাক্তি তাঁর উপর আদিষ্ট বিষয়গুলি আঁকড়ে ধরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৮। সালামা ইবনু শাবীব (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছন যে, কোন এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে আরয করলেন, আমাকে অবহিত করুন, যদি আমি ফরয সালাত (নামায/নামাজ)সমূহ আদায় করি, রামাযানের রোযা পালন করি, হালালকে হালাল জানি এবং হারামকে হারাম জানি; যদি এর অতিরিক্ত কিছু না করি, তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব? রাসুল বললেন, হ্যাঁ। সে ব্যাক্তি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এর উপর কিছুমাত্র বাড়াব না।
হাদিস নম্বরঃ ১৯ | 19 | ۱۹
পরিচ্ছদঃ ৫. ইসলামের রুকনসমূহ ও এর গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমুহ
১৯। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নু’মায়র আল হামদানী (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেয়া, রামাযানের রোযা পালন করা এবং হাজ্জ (হজ্জ) করা। এক ব্যাক্তি (এ ক্রম পরিবর্তন করে) বলল, হাজ্জ (হজ্জ) করা ও রামাযানের রোযা পালন করা। রাবী বললেন, না রামাযানের রোযা পালন করা ও হাজ্জ (হজ্জ) করা এভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।
হাদিস নম্বরঃ ২০ | 20 | ۲۰
পরিচ্ছদঃ ৫. ইসলামের রুকনসমূহ ও এর গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমুহ
২০। সাহল ইবনু উসমান আল আসকারী (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচটি জিনিসের উপর ইসলামের বুনিয়াদ রচিত। আল্লাহর ইবাদত করা এবং তাঁকে ছাড়া অন্যকে অস্বীকার করা, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, বায়তুল্লাহ হাজ্জ (হজ্জ) করা ও রামাযানের রোযা পালন করা।
হাদিস নম্বরঃ ২১ | 21 | ۲۱
পরিচ্ছদঃ ৫. ইসলামের রুকনসমূহ ও এর গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমুহ
২১। উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসুল-এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেয়া, বায়তুল্লাহর হজ্জ করা ও রামাযানের রোযা পালন করা।
হাদিস নম্বরঃ ২২ | 22 | ۲۲
পরিচ্ছদঃ ৫. ইসলামের রুকনসমূহ ও এর গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমুহ
২২। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … তাঊস (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেন, আপনি কেন যুদ্ধে অংশ-গ্রহণ করছেন না? ইবনু উমর (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই সাক্ষ্য দেয়া, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেওয়া, রামাযানের রোযা পালন করা ও বায়তুল্লাহর হাজ্জ (হজ্জ) করা।
হাদিস নম্বরঃ ২৩ | 23 | ۲۳
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৩। খালাফ ইবনু হিশাম ও ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুল কায়সের (গোত্রের) একটি প্রতিনিধি দল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা রাবী’আ গোত্রের লোক। আমাদের এবং আপনার মধ্যে কাফির মুযার গোত্র বিদ্যমান। আমরা শাহরুল হারাম[১] ব্যতীত আপনার কাছে নিরাপদে পৌছতে পারি না। কাজেই আপনি আমাদের এমন কিছু -আদেশ দিন আমরা যে সবের আমল করতে পারি এবং আমাদের অন্যদের তৎপ্রতি আহবান জানাতে পারি।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের আমি চারটি বিষয় পালনের আদেশ করছি এবং চারটি বিষয়ে নিষেধ করছি। তারপর তিনি তাদের এ সমন্ধে বর্ণনা দিলেন এবং বললেন, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। অতঃপর এর ব্যাখ্যায় তাদেরকে বললেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল-এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেওয়া এবং তোমাদের গনীমতলব্ধ সামগ্রীর এক-পঞ্চমাংশ আদায় করা। আর আমি তোমাদের নিষেধ করছি দূব্বা, হানতাম, নাকীর, মুকায়্যার থেকে।[২] খানাফ তাঁর বর্ণনায় আরও উল্লেখ করেছেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি আঙ্গুল বন্ধ করেন।
১. শাহরুল হারাম- সম্মানিত মাসসমূহ; যিল্কদ, যিলহজ্জ, মুহাররম ও রজব। এ চারটি পবিত্র মাসে রক্তপাত ও যুদ্ধ নিষিদ্ধ ছিল। জাহিলী যুগের কাফিররাও তা মেনে চলত।
২. আগের দিনের আরবদের মধ্যে প্রচলত সুরাপাত্র।
দূব্বা – কদুর খোল বা লাউয়ের খোলস থেকে তৈরি পাত্র।
হানতাম – সবুজ রং এর কলস
নাকীর – খেজুর বৃক্ষের কান্ডমূল থেকে তৈরি পাত্র।
মুকায়্যার – আলকাতরা জাতীয় পদার্থের প্রলেপ দেওয়া পাত্র।
হাদিস নম্বরঃ ২৪ | 24 | ۲٤
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৪। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না এবং মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ জামরা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর কথা লোকদের বোঝাবার দায়িত্ব পালন করতাম। একজন স্ত্রীলোক তাঁর কাছে এসে কলসির নাবীয সম্পর্কে জানতে চাইল। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আবদুল কায়স গোত্রের এক প্রতিনিধি দল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে হাযির হলে, তিনি জিজ্ঞেস করলেন, প্রতিনিধি দলটি কারা? অথবা বললেন, লোকগুলো কারা? তারা বলল- আমরা রাবী’আ গোত্রের। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে বললেন, তোমরা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার আগেই এসেছ বলে মুবারকবাদ।
রাবী বলেন- তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল আমরা বহু দূর থেকে আপনার খিদমতে হাযির হয়েছি। আমাদের ও আপনার মধ্যে কাফির মুযার গোত্র বিদ্যমান। আমরা শাহরুল হারাম ব্যতীত আপনার কাছে নিরাপদে পৌছতে অপারগ। সুতরাং আপনি আমাদের ইসলামের সূস্পষ্ট বিধান সম্পর্কে নির্দেশ দান করুন, যেন আমরা আমাদের পশ্চাতের লোকজনকে তা অবহিত করতে পারি এবং তদনূযায়ী আমল করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাদের চারটি বিষয় পালনের নির্দেশ দিলেন এবং চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করলেন। এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা জানো এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কী? আরয করলেন, আল্লাহ ও তার রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ বিষয়ে ভাল জানেন।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল আর তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রামাযানের রোযা পালন করবে এবং গনীমত-লব্ধ সামগ্রীর এক-পঞ্চমাংশ দান করবে।
তিনি তাদের চারটি বিষয়ে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। তা হচ্ছে- দুব্বা, হানতাম, মুযাফফাত। চতুর্থটি সমন্ধে শু’বা বলেন, এরপর রাবী কখনো ‘নাকির’ কখনোবা ‘মুকায়্যার’ শব্দ উল্লেখ করেছেন।* রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এসব বিধান হিফাজত করবে এবং যারা আসেনি তাদের তা জানিয়ে দিবে।
আবূ বকর (রহঃ)-এর রিওয়ায়েতে مَنْ وَرَاءَكُمْ (যারা আসেনি) কথাটি রয়েছে কিন্তু الْمُقَيَّرِ শব্দটি নেই।
* আলকাতরা জাতীয় পদার্থের প্রলেপ দেওয়া পাত্র।
হাদিস নম্বরঃ ২৫ | 25 | ۲۵
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৫। উবায়দুল্লাহ ইবনু মু’আয (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে শুবার বর্ণনার অনুরুপ রিওয়ায়েত করেছেন। রাসুল বলেছেন , আমি তোমাদের দুব্বা, হানতাম, মুযাফফাত নামক নাবীয* তৈরির পাত্রের ব্যবহার নিষেধ করছি। ইবনু মু’আয (রহঃ) তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণিত রিওয়ায়েতে আরো উল্লেখ করেন যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল কায়েস গোত্রের ‘আশাজ্জ’ আশাজ্জ্ব আবদুল কায়েসকে বললেন, তোমার দুটি বিশেষ গুন রয়েছে, যা আল্লাহ পছন্দ করেন (তা হলো) সহিষ্ণুতা ও ধীর-স্থিরতা।
* নাবীয – কিসমিস, খেজুর ইত্যাদি গাজিয়ে তৈরি পানীয়।
হাদিস নম্বরঃ ২৬ | 26 | ۲٦
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৬। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব (রাঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুল কায়স গোত্রের কয়েকজন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে উপস্হিত হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর নাবী! আমরা রাবী’আ গোত্রের লোক। আপনার ও আমাদের মধ্যবতী যাতায়াত পথে মুযার গোত্রের কাফিররা অবস্থান করয়ে ‘শাহরুল’ হারাম ছাড়া আমরা আপনার কাছে আসতে পারি না। অতএব আপনি আমাদের এমন কাজের আদেশ দিন, আমাদের যারা আসেনি তাদের জানাতে পারি এবং যা পালন করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের চারটি বিষয় পালনের এবং চারটি বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিচ্ছি। (পালনীয় চারটি বিষয় হলোঃ) তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দিবে, রামাযানের রোযা পালন করবে এবং গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ প্রদান করবে। আমি তোমাদের চারটি বিষয়ে নিষেধ করছিঃ দুববা, হানতাম, মুয়াফফাত ও নাকীর-এর ব্যবহার।
তারা আরয করল, হে আল্লাহর নাবী! আপনি নাকীর সম্পর্কে কতটুকু জানেন? তিনি বললেন, এ হলো খেজুর বৃক্ষের মূল খোদাই করে তৈরি পাত্র। এতে কুতাইয়া* নামক খেজুর দিয়ে তাতে পানি ঢেলে, জোশ স্তব্ধ হওয়া পর্যন্ত রেখে তা পান করে থাক। ফলে তোমাদের কেউ বা তাদের কেউ (নেশাগ্রস্ত হয়ে) আপন চাচাত ভাইকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে বস। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, উপস্থিত লোকদের মধ্যে এভাবে আঘাতপ্রাপ্ত এক ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি বলেন, লজ্জায় আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আঘাতটি গোপন করছিলাম! আমি বললাম, হে আল্লাহর -রাসুল! আমরা কিসে পান করব?
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, রশি দ্বারা মুখবন্ধ চামড়ার পাত্রে। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নাবী! আমাদের দেশে ইঁদুরের উপদ্রব বেশি। সেখানে চামড়ার পাত্র অক্ষত রাখা যায় না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে, যদিও তা ইঁদুরে কেটে ফেলে। রাবী বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল কায়স গোত্রের আশাজ্জ সম্পর্কে বললেন, তোমার মধ্যে দুটি বিশেষ গুন রয়েছে যা আল্লাহ পছন্দ করেন (তা হলো) — সহিষ্ণুতা ও ধীর স্থিরতা।
* বর্ণনাকারী কাতাদা (রহঃ) কুতাইয়া এর স্থলে তামার বলেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ২৭ | 27 | ۲۷
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৭। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, যখন আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধিদল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এল। হাদীসটির বাকি অংশ ইবনু উলায়্যার বর্ণনায় অনুরুপ। তবে এ বর্ণনায় রয়েছে তোমরা এর মধ্যে ‘কুতাইয়া’ বা ‘তামার’ ও পানি ঢেলে দাও।
হাদিস নম্বরঃ ২৮ | 28 | ۲۸
পরিচ্ছদঃ ৬/ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি এবং (দ্বীনের অনুশাসনের) প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ এবং তাঁর প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ, আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি, তাঁর কাছে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করা প্রসঙ্গ।
২৮। মুহাম্মাদ ইবনু বাককার আল বাসরী (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধিদল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে হাযির হয়ে আরয করল, হে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আল্লাহ আপনার জন্য আমাদের কুরবান করুন। আমাদের জন্য কোন ধরনের পাত্র ব্যবহারযোগ্য? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা নাকীরে পান করবে না। তারা আরয করল, হে আল্লাহর নাবী! আপনার জন্য আল্লাহ আমাদের কুরবান করুন। আপনি কি জানেন নাকীর কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নাকীর এক ধরনের পাত্র যা খেজুর বৃক্ষমূল খোদাই করে তৈরি হয়। তিনি আরো বললেন, দুব্বা, হানতামেও তোমরা পান করবে না এবং তোমরা মুখবন্ধ পাত্র ব্যবহার করবে।
হাদিস নম্বরঃ ২৯ | 29 | ۲۹
পরিচ্ছদঃ ৭. তাওহীদ ও রিসালাতের শাহাদাত এবং ইসলামের বিধানের দিকে আহবান।
২৯। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, মু’আয (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ইয়ামনের প্রশাসক নিযুক্ত করে পাঠালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ তাদের সাথে সাক্ষাৎ হলে এ কথার আহবান জানাবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যদি তারা তা মেনে নেয় তাহলে তাদের জানিয়ে দেবে দিনে এবং রাতে আল্লাহ তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্তের সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করেছেন। যদি তারা তা মেনে নেয়, তাহলে তাদের জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন। ধনীদের থেকে তা আদায় করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মাঝে বন্টন করা হবে। তারা এ কথাটি মেনে নিলে, সাবধান, যাকাত হিসেবে তুমি তাদের থেকে বাছাই করে উত্তমগুলো নিবে না। আর মযলুমের (বদ) দুআ থেকে সাবধান! কেননা আল্লাহর ও মযলূমের দুআর মধ্যে কোন অন্তরায় নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৩০ | 30 | ۳۰
পরিচ্ছদঃ ৭. তাওহীদ ও রিসালাতের শাহাদাত এবং ইসলামের বিধানের দিকে আহবান।
৩০। ইবনু আবূ উমর (রাঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামনের প্রশাসক করে পাঠালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই তুমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ … বাকি অংশ ওয়াকীর বর্ণনার অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ৩১ | 31 | ۳۱
পরিচ্ছদঃ ৭. তাওহীদ ও রিসালাতের শাহাদাত এবং ইসলামের বিধানের দিকে আহবান।
৩১। উমায়্যা ইবনু বিস্তাম আল আয়শী … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামনে প্রাশাসক করে পাঠানোর সময় বলেছিলেন, তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ তাদের প্রথম যে দাওয়াত দিবে তা হল, মহান আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহবান করা। যখন তারা আল্লাহকে চিনে নিবে, তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ জন্য তাদের জন্য দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করেছেন। তারা তা করলে তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন। যা তাদের ধনীদের থেকে আদায় করা হবে এবং তা তাদের গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করলে তুমি তাদের থেকে তা আদায় করবে; কিন্তু তাদের উত্তম মাল থেকে সাবধান থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৩২ | 32 | ۳۲
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ইন্তেকালের পর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) খলীফা হলে আরবের একদল লোক কাফির হয়ে যায়।* উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর কাছে আরয করলেন, আপনি তাদের বিরুদ্ধে কিরুপে যুদ্ধ করবেন অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই-এ কথা স্বীকার না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই – এ কথা স্বীকার করবে, সে আমার থেকে তার জানোমালের নিরাপত্তা লাভ করল। তবে শরীআতসম্মত কারণ থাকলে ভিন্ন কথা; তার হিসাব তো আল্লাহর কাছে।
আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি সে ব্যাক্তির বিরুদ্ধে অবশ্যই যুদ্ধ করব, যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে।* কেননা যাকাত মালের হক। আল্লাহর কসম, যদি তারা একটি উটের রশিও দিতে অস্বীকার করে যা তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর যামানায় যাকাত হিসাবে দিত, তবুও আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, যুদ্ধের ব্যাপারে আল্লাহ আবূ বকর (রাঃ)-এর বক্ষ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। সুতরাং আমিও উপলব্ধি করলাম যে, এ ই হক।
* রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ইন্তিকালের পর আরবের কিছু সংখ্যক লোক মুরতাদ হয়ে যায় আর কিছু সংখ্যক লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করে। উমর (রাঃ) এর জিজ্ঞেস ছিল যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে অথচ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা উচিত কিনা।
* যারা নামায ফরয মনে করে অথচ যাকাত দেওয়া ফরয মনে করে না।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৩৩ | 33 | ۳۳
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৩। আবূ তাহির, হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই – এ কথার সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। সূতরাং যে কেউ আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই স্বীকার করবে, সে আমা হতে তার জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীআতসম্মত কারণ ব্যতীত। আর তার হিসাব আল্লাহর কাছে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৩৪ | 34 | ۳٤
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৪। আহমাদ ইবনু আবদ আয-যাবিব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই -এ কথার সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত এবং আমার প্রতি ও আমি যা নিয়ে এসেছি তার প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। এগুলো মেনে নিলে তারা তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করবে, তবে শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া। আর তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৩৫ | 35 | ۳۵
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৫। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) …… আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও জাবির (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। বাকি অংশ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে ইবনু মূসায়্যাব-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, এ কথার স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই- এ কথা স্বীকার করলে তারা আমার থেকে তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করবে। তবে শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া এবং তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করলেনঃ (অর্থ) “আপনি তো একজন উপদেশদাতা। আপনি এদের উপর কর্মনিয়ন্ত্রক নন”। ” (সূরা গাশিয়াঃ ২১-২২)
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৩৬ | 36 | ۳٦
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৬। আবূ গাস্সান-আল মিসমাঈ মালিক ইবনু আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লোকদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষন না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল এবং সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করে, যাকাত দেয়। যদি এগুলো করে তাহলে আমা থেকে তারা জানোমালের নিরাপত্তা লাভ করবে, তবে শরীআতসম্মত কারন ছাড়া। আর তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।
হাদিস নম্বরঃ ৩৭ | 37 | ۳۷
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৭। সূয়ায়দ ইবনু সাঈদ ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) … আবূ মালিক তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি; আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এ কথা স্বীকার করে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য উপাস্যকে অস্বীকার করে, তবে তার জানোমাল নিরাপদ। আর তার হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে।
হাদিস নম্বরঃ ৩৮ | 38 | ۳۸
পরিচ্ছদঃ ৮. লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল এবং নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে শরিয়তের বিধান এনেছেন, তার প্রতি ঈমান আনে। যে ব্যাক্তি এসব করবে সে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতিত। আর অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে। যে ব্যাক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ।
৩৮। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) আবূ মালিক (রহঃ)-এর সুত্রে তার পিতা তারিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলাকে এক বলে স্বীকার করে…… তারপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৩৯ | 39 | ۳۹
পরিচ্ছদঃ ৯. মৃত্যু যন্ত্রনা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরনকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তার কোনমতেই পরিত্রান না পাওয়ার দলীল।
৩৯। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া আত তূজীবী (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ)-এর সুত্রে তাঁর পিতা থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে উপস্থিত হলেন। সেখানে আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা ইবনু মুগীরাকে দেখতে পেলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচাজানো! আপনি কালিমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন। আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য (এর উসিলায়) সাক্ষ্য দিব। আবূ জাহল ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমায়্যা বলল, হে আবূ তালিব! তুমি কি আবদুল মুত্তালিবের দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারবার ঐ কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন।
আবূ তালিব শেষ কথাটি এ বললেন যে, তিনি আবদুল মুত্তালিবের দ্বীনের উপরই রয়েছেন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- বলতে অস্বীকার করলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আপনার জন্য অবশ্যই ইসতিগফার- করতে থাকব, যতক্ষন না আমাকে তা থেকে নিষেধ করা হয়, এ প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তায়াআলা নাযিল করেনঃ “(অর্থ) আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নাবী এবং মুমিনদের সঙ্গত নয় যখন সূস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী। “ (সূরা তাওবাঃ ১১৩) আর আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে আবূ তালিবের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে লক্ষ করে ইরশাদ করেনঃ (অর্থ) (হে রাসুল) আপনি যাকে চাইবেন তাকে পথ দেখাতে পারবেন না কিন্তু আল্লাহ পথ দেখান, যাকে ইচ্ছা করেন। আর তিনই সম্যক জ্ঞাত আছেন কাদের ভাগ্যে হিদায়াত আছে সে সষ্পর্কে। ”
হাদিস নম্বরঃ ৪০ | 40 | ٤۰
পরিচ্ছদঃ ৯. মৃত্যু যন্ত্রনা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরনকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তার কোনমতেই পরিত্রান না পাওয়ার দলীল।
৪০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … যুহুরির সুত্রে এ সনদেই অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে সালিহ-এর হাদীসটি فَأَنْزَلَ اللَّهُ فِيهِ এ বাক্যেই শেষ হয়েছে এবং তিনি আয়াত দুটির উল্লেখ করেননি। তিনি তার বর্ণনায় আরও উল্লেখ করেন يَعُودَانِ بتِلْكَ الْمَقَالَةِ তারা উভয়ই এ বক্তব্যটি পুনরাবৃত্তি করেন। -মা’মার বর্ণিত হাদীসে هَذِهِ الْكَلِمَةِ -এর স্থলে الْكَلِمَةِ فَلَمْ يَزَالاَ بِهِ ‘তারা উভয়ই তার সঙ্গে লেগে থাকল’ কথার উল্লেখ রয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৪১ | 41 | ٤۱
পরিচ্ছদঃ ৯. মৃত্যু যন্ত্রনা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরনকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তার কোনমতেই পরিত্রান না পাওয়ার দলীল।
৪১। মুহাম্মাদ ইবনু আব্বাদ ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা আবূ তালিবের অন্তিমকালে তাকে বলেছিলেন, আপনি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন, কিয়ামত দিবসে আমি আপনার জন্য এর সাক্ষ্য দিব। কিন্তু তিনি অস্বীকার করলেন। অনন্তর আল্লাহ জন্য নাযিল করেনঃ إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪২ | 42 | ٤۲
পরিচ্ছদঃ ৯. মৃত্যু যন্ত্রনা আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়ার, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়ার ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরনকারীর জাহান্নামী হওয়ার এবং তার কোনমতেই পরিত্রান না পাওয়ার দলীল।
৪২। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইবনু মায়মুন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচাকে বললেন, আপনি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ- বলুন, কিয়ামত দিবসে আপনার পক্ষে আমি এর সাক্ষ্য দেব! তিনি বললেন, কুরায়শ গোত্র এই বলে আমার নিন্দা করবে যে, আবূ তালিব ভীত হয়ে এ কথা বলেছেন, এ আশঙ্কা যদি না থাকত, তাহলে আমি কালিমা তাওহীদ পাঠ করে তোমার চোখ জুড়াতাম। এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ নাযিল করেনঃ (অর্থ) “আপনি যাকে চাইবেন পথ দেখাতে পারবেন না; কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান।”
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪৩ | 43 | ٤۳
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি -লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ–এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইন্তেকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১. গুনাহগার হলেও ক্ষমা লাভ অথবা শাস্তিভোগের পর সে জান্নাতে যাবে।
হাদিস নম্বরঃ ৪৪ | 44 | ٤٤
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর আল মুকাদ্দামী (রহঃ) … উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে অনুরুপ বলতে শুনেছি … বাকি অংশ পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ৪৫ | 45 | ٤۵
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৫। আবূ বকর ইবনু নাযর ইবনু আবূ নাযর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে একটি সফরে ছিলাম। এক পর্যায়ে দলের রসদপত্র নিঃশেষ হয়ে গেল। পরিশেষে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের কিছু সংখ্যক উট যবেহ করার মনস্থ করলেন। রাবী বলেন যে, এতে উমর (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি সকলের রসদ সামগ্রী একত্র করে আল্লাহর কাছে দুআ করতেন, তবে ভাল হতো। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাই করলেন। যার কাছে গম ছিল সে গম এবং যার কাছে খেজুর ছিল সে খেজুর নিয়ে হাযির হল, (তালহা ইবনু মূসা ররিফ বলেন) মুজাহিদ আরো বর্ণনা করেন যে, যার কাছে খেজুরের আটি ছিল, সে তাই নিয়ে হাযির হল। আমি (তালহা) আরয করলাম, আটি দিয়ে কি করতেন? তিনি বললেন, তা চুষে পানি পান করতেন বর্ণনাকারী বললেন, তারপর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সংগৃহীত খাদ্য সামগ্রীর উপর দুআ করলেন। রাবী বলেন, অবশেষে লোকেরা রসদে নিজেদের পাত্র পুর্ণ করে নিল। রাবী বলেন যে, তখন রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যে এ দুটি বিষয়ের প্রতি সন্দেহাতীত বিশ্বাস রেখে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, সে জান্নাতে দাখিল হবে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪৬ | 46 | ٤٦
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৬। সাহল ইবনু উসমান ও আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) অথবা আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, (সন্দেহ রাবী আমাশের) তাবুকের যুদ্ধের সময়ে লোকেরা দারুণ খাদ্যাভাবে পতিত হল। তারা আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের উটগুলো যবেহ করে তার গোশত খাই এবং তার চর্বি ব্যবহার করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যবেহ করতে পার। রাবী বলেন, ইত্যবসরে উমর (রাঃ) আসলেন এবং আরয করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি এরুপ করা হয়, তাহলে বাহন কমে যাবে বরং আপনি লোকদেরকে তাদের উদ্বৃত্ত রসদ নিয়ে উপস্থিত হতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর নিকটে বরকতের দুআ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দিবেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ- ঠিক আছে। একটি দস্তরখান আনতে বললেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের উদ্বৃত্ত রসদ চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ একমুঠো গম নিয়ে হাযির হল, কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে হাযির হল, কেউ এক টুকরা রুটি নিয়ে আসল, এভাবে কিছু পরিমাণ রসদ-সামগ্রী দস্তরখানায় জমা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরকতের দুআ করলেন। তারপর বললেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রে রসদপত্র ভর্তি করে নাও। সকলেই নিজ নিজ পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোন পাত্রই আর অপূর্ণ রইল না। এরপর সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করলেন। কিছু উদ্বৃত্তও রয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-যে ব্যাক্তি সন্দেহাতীতভাবে এ কথা দুটির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে, সে জান্নাত থেকে বাধাপ্রাপ্ত হবে না।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪৭ | 47 | ٤۷
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৭। দাউদ ইবনু রুশায়দ …… উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি একথার সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসুল, ঈসা (আলাইস সালাম) আল্লাহর বান্দা ও তার দাসীর পূত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারিয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন (অর্থাৎ কালিমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারিয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যাক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে ইচ্ছা করবেন তাতে প্রবেশ করাবেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৮ | 48 | ٤۸
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৮। আহমাদ ইবনু ইবরাহীম আল দাওরাকী (রহঃ) … উমায়ের ইবনু হানী (রাঃ)-এর সুত্রে এ সনদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তার বর্ণনায় একটু পার্থক্য দেখা যায়। তিনি বলেন, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, সে যে আমলের উপর থাকুক না কেন। “জান্নাতের আটটি তোরণের যেটি দ্বারা ইচ্ছা সে প্রবেশ করতে পারবে” কথাটি তিনি উল্লেখ করেননি।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯ | 49 | ٤۹
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৪৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, সুনাবিহ (রহঃ) বলেন, আমি উবাদার কাছে গেলাম, তখন তিনি মৃত্যুশয্যায় ছিলেন, আমি কেঁদে ফেললাম। আমাকে বললেন, চুপ থাক, কাঁদছ কেন? আল্লাহর শপথ! যদি আমাকে সাক্ষী বানানো হয়, তাহলে আমি তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দেবো, যদি আমাকে সুপারিশকারী বানানো হয়, তাহলে অবশ্যই আমি তোমার জন্য সুপারিশ করব এবং যদি আমার সাধ্য থাকে, তবে আমি তোমার উপকার করব। তারপর উবাদা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রুত একটি ছাড়া সব হাদীসই তোমাকে শুনিয়েছি, যাতে তোমাদের কল্যাণ রয়েছে। তোমাদের কাছে সে হাদীসটি আজ বর্ণনা করছি, কেননা আজ আমি মৃত্যুর দুয়ারে উপস্থিত। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসুল, আল্লাহ তাঁর জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫০ | 50 | ۵۰
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫০। হাদ্দাব ইবনু খালিদ আল আযদী (রহঃ) … মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি এক সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বাহনের পিছনে বসা ছিলাম। আমার ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মাঝে হাওদার কাঠখন্ড ছাড়া আর কোন ব্যবধান ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে মু’আয ইবনু জাবাল! আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! বান্দা হাযির; আপনার আনুগত্য শিরোধার্য! তারপর তিনি কিছুদুর অগ্রসর হয়ে আবার বললেন, হে মু’আয ইবনু জাবাল! আমি বললাম, বান্দা আপনার খেদমতে হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য, হে আল্লাহর রাসুল! তারপর তিনি কিছুদুরে আগ্রসর হয়ে আবার বললেন, হে মু’আয ইবনু জাবাল! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! বান্দা আপনার খেদমতে হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য।
তিনি বললেন, তুমি কি জানো বান্দার উপর আল্লাহ তায়ালার কী হক রয়েছে? আমি আরয করলাম, আল্লাহ এবং তার রাসুলই তা ভাল জানেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, তারা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। তারপর কিছুদুর চললেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার বললেন, হে মু’আয ইবনু জাবাল। আমি আরয করলাম, বান্দা আপনার খেদমতে হাযির, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার আনুগত্য শিরোধার্য। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি জানো, এগুলো করলে আল্লাহর কাছে বান্দার কী হক আছে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তায়ালা তাকে শাস্তি দিবেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৫১ | 51 | ۵۱
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি এক সফরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর গাধা উফায়রের পিঠে তার পিছনে বসা ছিলাম। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে মু’আয! তুমি কি জানো বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভাল জানেন।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বান্দার উপর আল্লাহর হক হল, তারা আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোনকিছু শরীক করবে না। আল্লাহর উপর বান্দার হক হল, যে তাঁর সঙ্গে শরীক করবে না, তাকে তিনি শাস্তি দিবেন না। মু’আয (রাঃ) বললেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি লোকদের এ সংবাদ জানিয়ে দেব? তিনি বললেন, না, লোকদের এ সংবাদ দিও না, দিলে এর উপরই তারা ভরসা করে থাকবে।
হাদিস নম্বরঃ ৫২ | 52 | ۵۲
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫২। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে মু’আয! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর কী হক? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা হল, যেন আল্লাহরই ইবাদত করা হয় এবং তার সঙ্গে যেন অন্য কিছু শরীক না করা হয়। তিনি বললেন, তুমি কি জানো, তা করলে আল্লাহর কাছে বান্দার হক কী? মু’আয (রাঃ) বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তাদের তিনি শাস্তি দিবেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৫৩ | 53 | ۵۳
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫৩। কাসিম ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) … মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম। তিনি বললেন, তুমি কি জানো, মানুষের উপর আল্লাহর হক কী?…… বাকি অংশ উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ৫৪ | 54 | ۵٤
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫৪। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা কর্রেন যে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে বসা ছিলাম। আমাদের মধ্যে আবূ বকর ও উমর (রাঃ)-ও ছিলেন। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্য থেকে উঠে চলে গেলেন। তিনি আমাদের মাঝে আসতে বিলম্ভ করলেন। এতে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম যে, আমাদের অনুপস্থিতিতে তিনি কোন বিপদে পড়লেন কিনা। আমরা শঙ্কিত হয়ে উঠে দাঁড়ালাম। ভীত-সন্ত্রস্তদের মধ্যে আমি ছিলাম প্রথম। তাই আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সন্ধানে বেরিয়ে পড়ল। তালাশ করতে করতে বনী নাজ্জার গোত্রের আনসারদের বাগানের কাছে পৌছলাম।
আমি বাগানের চারদিকে ঘুরে কোন দরজা পেলাম না। হঠাৎ দেখতে পেলাম বাইরের কুয়া থেকে একটি ‘রবি’ (ঝরনা, প্রণালী, নালা) বাগানের ভিতর প্রবেশ করেছে। আমি নিজেকে শিয়ালের মত সংকুচিত করে প্রণালীর পথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে প্রবেশ করলাম। তিনি বললেন, আবূ হুরায়রা! আমি আরয করলাম, জি হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার অবস্থা কি? আমি আরয করলাম, আপনি আমাদের মধ্যে ছিলেন। তারপর আমাদের মধ্য থেকে উঠে চলে এলেন। আপনার ফিরতে দেরি দেখে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম যে আমাদের অবর্তমানে আপনি বেশি বিপদে পড়লেন কি না? এ আশঙ্কায় আমরা সকলেই তীত হয়ে পড়লাম। আমি সর্বপ্রথম বেরিয়ে গিয়ে এ বাগানে উপস্থিত হই, আমি শিয়ালের মত সংকুচিত হয়ে এ বাগানে প্রবেশ করি। আর সেসব লোক আমার পেছনে রয়েছেন।
তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হে আবূ হুরায়রা বলে তার পাদুকা জোড়া প্রদান করলেন, আর বললেন, আমার এ পাদুকা জোড়া নিয়ে যাও এবং বাগানের বাইরে যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হয় তাকে এ সুসংবাদ শুনিয়ে দাও, যে ব্যাক্তি আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই, সে জান্নাতী হবে।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, বাইরে এসে প্রথমেই উমরের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হল। তিনি বললেন, হে আবূ হুরায়রা! এ জুতা জোড়া কি? আমি বললাম, এ তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পাদুকা মুবারক। তিনি আমাকে এ দুটি দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, যার সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়, সে যদি আন্তরিক বিশ্বাসে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই, তাকে যেন জান্নাতের সুসংবাদ দেই। একথা শুনে উমর (রাঃ) আমার বুকে এমন জোরে আঘাত করলেন যে, আমি পেছনে পড়ে গেলাম। তখন তিনি বললেন, ফিরে যাও, হে আবূ হুরায়রা!
আমি কাঁদো কাঁদো অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমতে ফিরে এলাম। আর সাথে সাথে উমরও আমার পিছনে পিছনে এলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ হুরায়রা! তোমার কি হয়েছে? আরয করলাম, উমর (রাঃ)-এর সাথে আমার দেখা হয়। আপনি যা বলে আমাকে পাঠিয়েছিলেন আমি তা উমরকে জানাই। এতে তিনি আমার বুকে আঘাত করলেন যে আমি পিছনের দিকে পড়ে যাই। তিনি আমাকে ফিরে আসতে বলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উমর! কি সে তোমাকে এ কাজে উত্তেজিত করেছে?
তিনি উত্তর দিলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনার জন্য আমার পিতামাতা কুরবান হোক। আপনি কি আপনার পাদুকা মুবারকসহ আবূ হুরায়রাকে পাঠিয়েছেন যে, তার সাথে যদি এমন লোকের সাক্ষাৎ হয়, যে আন্তরিকতার সাথে সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তবে তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। উমর (রাঃ) বললেন, এরুপ করতে যাবেন না। আমি আশঙ্কা করি যে, লোকেরা এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে; আপনি তাদের ছেড়ে দিন, তারা আমল করুক। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আচ্ছা, তাদের ছেড়ে দাও।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৫৫ | 55 | ۵۵
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫৫। ইসহাক ইবন মানসুর (রহঃ) … আনাস ইবন মালিক (রাঃ) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) একই বাহনের পৃষ্ঠে সওয়ার হয়েছিলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে মু’আয ইবনু জাবাল! মু’আয (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! বান্দা হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্যা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেন, হে মু’আয! মু’আয উত্তর দিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! বান্দা হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার বললেন, হে মু’আয মু’আয উত্তর করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! বান্দা হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি কোন বান্দা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়! কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর রাসুল, তবে আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করবেন। মু’আয (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ খবর লোকদের দিয়ে দিব কি, যাতে তারা সুসংবাদ পায়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা হলে লোকেরা এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। পরে সত্য কথা গোপন রাখার গুনাহের ভয়ে মু’আয (রাঃ) অন্তিমকালে এ খবর শুনিয়ে গিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৬ | 56 | ۵٦
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫৬। শায়বান ইবনু ফাররুখ (রহঃ) … মাহমুদ ইবনুুর রাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি মদিনায় এসে ইতবানের সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, আপনার কাছ থেকে একটি হাদীস আমার কাছে পৌচেছে ইতবান বললেন, আমার চোখে কোন এক রোগ দেখা দিলে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে খবর পাঠালাম যে, আমার একান্ত আকাঙ্ক্ষা, আপনি আমার কাছে তাশরীফ আনবেন এবং আমার গৃহে দু-রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবেন। আপনার সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের স্থানটিকে আমি নিজের জন্য সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের স্থান বানিয়ে নেব। তারপর আল্লাহ যাদের মনযুর করলেন, তাঁদের সাথে নিয়ে রাসুল তাশরীফ আনলেন, রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘরে ঢূকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকলেন আর তাহার সাহাবীরা পরস্পর কথাবার্তা বলছিলেন।
তারপর মালিক ইবনু দুখশুম-এর প্রতি তাদের দূষ্টি আকৃষ্ট হল। তারা ইচ্ছা পোষণ করছিলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মলিক ইবনু দুখশুম-এর জন্য বদ দুআ করুন যেন সে ধ্বংস হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) সম্পন্ন করলেন এবং বললেন, সে কি সাক্ষ্য দেয় না যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল? তাঁরা আরয করলেন, সে এ কথা বলে বটে, কিন্তু তার অন্তরে ঈমান নেই। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে ব্যাক্তি-আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল- এ কথার সাক্ষ্য না দেবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে! অর্থাৎ আগুন তাকে দগ্ধ করবে। আনাস (রাঃ) বলেন, হাদীসটি আমাকে বিস্মিত করেছিল। আমি আমার পুত্রকে বললাম, হাদীসটি লিখে নাও। তারপর সে তা লিখে রাখল।
হাদিস নম্বরঃ ৫৭ | 57 | ۵۷
পরিচ্ছদঃ ১০. যে ব্যাক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে – এর প্রমান
৫৭। আবূ বকর ইবনু নাফি আল আবদী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইতবান (রাঃ) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এ বলে খবর পাঠালেন, আপনি আমার ঘরে তাশরীফ আনুন এবং আমার জন্য একটি সালাত (নামায/নামাজ)-এর স্থান নিদিষ্ট করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে তাশরীফ আনলেন এবং মালিক ইবনু দুখশুম নামক এক ব্যাক্তির কথা সেখানে উল্লেখ করা হল…… তারপর বর্ণনাকারী সুলায়মান ইবনু মুগীরার অনুরুপ হাদীসটি রিওয়ায়াত করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৫৮ | 58 | ۵۸
পরিচ্ছদঃ ১১. যে ব্যাক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) কে রাসুল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেয়, সে মুমিন যদিও সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত হয়
৫৮। মুহাম্মদ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু আবূ উমর আল মাক্কী ও বিশর ইবনু হাকাম (রহঃ) … আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ সে ব্যাক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে যে রব হিসাবে আল্লাহকে, দ্বীন হিসাবে ইসলামকে এবং রাসুল হিসাবে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৫৯ | 59 | ۵۹
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৫৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি। আর লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৬০ | 60 | ٦۰
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬০। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি। অথবা ষাটটিরও কিছু বেশি। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে “আল্লাহ ব্যাতিত ইলাহ নেই” এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে-;রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। আর লজ্জা ঈমানের বিশিষ্ট একটি শাখা।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৬১ | 61 | ٦۱
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬১। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আমর আন-নাকিদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … সালিমের পিতা আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যাক্তি তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে নসীহত করছিলেন শুনতে পেয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।
হাদিস নম্বরঃ ৬২ | 62 | ٦۲
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬২। আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … যুহুরি (রহঃ) থেকে উক্ত সনদে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় আছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসারীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন; সে আনসারী তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে নসীহত করছিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬৩ | 63 | ٦۳
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬৩। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লজ্জা কল্যাণ বয়ে আনে। এ রিওয়ায়েত শুনে বুশায়র ইবনু কা’ব বলেছেন, হিকমতের গ্রন্থে লিখিত আছে ষে, লজ্জা মর্যাদা, গম্ভিড়্য ও ধৈর্যের উৎস। ইমরান (রাঃ) বলেন, আমি তোমার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীস বর্ণনা করছি আর তুমি আমার কাছে তোমার পুঁথির কথা শোনাচ্ছ।
হাদিস নম্বরঃ ৬৪ | 64 | ٦٤
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) আবূ কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমাদের একদল ইমরান ইবনু হুসায়ন (রহঃ)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমাদের মাঝে বুশায়র ইবনু কাবও ছিলেন। তখন ইমরান (রাঃ) আমাদের কাছে হাদীস রিওয়ায়েত প্রসঙ্গে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, লজ্জা মঙ্গলজনক সবটাই। রাবী বলেন যে, কিংবা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ লজ্জা সবটাই মঙ্গলজনক। বুশায়র ইবনু কাব (রহঃ) বলেন, কোন কোন কিতাবে বা হিকমতের গ্রন্থে আমরা পেয়েছি যে, লজ্জা থেকেই প্রশান্তি ও আল্লাহর জন্য গাম্ভীর্য এবং তা থেকে দুর্বলতারও উৎপত্তি।
রাবী বলেন, একথা শুনে ইমরান (রাঃ) রাগান্বিত হলেন, এমন কি তার দু চোখ লাল হয়ে গেল। ইমরান (রাঃ) বলেনঃ এরূপ নয় কি যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করছি, আর তুমি তার মুকাবিলায় পূঁথির কথা পেশ করছ। এরপর ইমরান (রাঃ) পুনরুক্তি করলেন। আর বুশায়রও তার কথার পূনরাবৃত্তি করলেন। এতে ইমরান (রাঃ) খুবই রাগান্বিত হলেন। রাবী বলেন যে, আমরা বলতে লাগলাম, হে আবূ নূজায়দ! (ইমরানের উপনাম) সে আমাদেরই লোক। তার মধ্যে ক্রটি নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৬৫ | 65 | ٦۵
পরিচ্ছদঃ ১২. ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জাশীলতার ফযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৬৫। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাম্মাদ ইবনু যায়দের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬৬ | 66 | ٦٦
পরিচ্ছদঃ ১৩. ইসলামের যাবতীয় গুন যার মধ্যে নিহিত
৬৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, আবূ কুরায়ব, কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সুফিয়ান ইবনু আবদুল্লাহ আল সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাকে ইসলাম সমন্ধে এমন কথা বলে দিন, আপনার পরে যেন তা আমাকে আর কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবূ উসামার হাদীসে بَعْدَكَ এর স্থলে غَيْرَكَ রয়েছে। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি বল, আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। তারপর এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাক।
হাদিস নম্বরঃ ৬৭ | 67 | ٦۷
পরিচ্ছদঃ ১৪. ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পারস্পারিক ফযীলত ও সর্বোত্তমটির বর্ণনা
৬৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খেদমতে আরয করল যে, কোন ইসলাম উত্তম (অর্থাৎ ইসলামের সর্বোত্তম আমল কোনটি?) রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি লোকদের পানাহার করাবে এবং সালাম দিবে, তোমার পরিচিত কিংবা অপরিচিত যেই হোক না কেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬৮ | 68 | ٦۸
পরিচ্ছদঃ ১৪. ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পারস্পারিক ফযীলত ও সর্বোত্তমটির বর্ণনা
৬৮। আবূ তাহির আহমাদ ইবনু আমর ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু সারহ আল মিসরী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আল আস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, সর্বোত্তম মুসলিম কে? তিনি বললেনঃ সেই ব্যাক্তি যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৬৯ | 69 | ٦۹
পরিচ্ছদঃ ১৪. ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পারস্পারিক ফযীলত ও সর্বোত্তমটির বর্ণনা
৬৯। হাসান আল হুলওয়ানী ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, সত্যিকার মুসলিম সেই ব্যাক্তি যার মুখ ও হাত থেকে অন্যান্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।
হাদিস নম্বরঃ ৭০ | 70 | ۷۰
পরিচ্ছদঃ ১৪. ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পারস্পারিক ফযীলত ও সর্বোত্তমটির বর্ণনা
৭০। সাঈদ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল উমুবী (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! কোন ইসলাম উত্তম? তিনি বললেন উত্তম ইসলাম হল তার, যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলমান নিরাপদ থাকে।
ইবরাহীম ইবনু সাঈদ আল জাওহারী (রহঃ) … বুরাইদ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে এ সনদে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সর্বোত্তম মুসলিম কে? রাবী হাদীসের বাকি অংশ উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৭১ | 71 | ۷۱
পরিচ্ছদঃ ১৫. যেসব গুনে গুণান্বিত হলে ঈমানের মিষ্টতা পাওয়া যায়
৭১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম, মুহাম্মদ ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু আবূ উমর ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … একত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস যার মধ্যে রয়েছে, সেই ঈমানের প্রকৃত মিষ্টতা অনুভব করবে। (১) যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অন্যসব থেকে অধিক প্রিয়, (২) যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তাঁর বান্দাকে ভালবাসে এবং (৩) যাকে আল্লাহ কুফূর থেকে মুক্তি দিয়েছেন, তারপর সে কুফরের দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৭২ | 72 | ۷۲
পরিচ্ছদঃ ১৫. যেসব গুনে গুণান্বিত হলে ঈমানের মিষ্টতা পাওয়া যায়
৭২। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি গুন যার মধ্যে বিদ্যমান, সে ঈমানের প্রকৃত সা’দ পায় (১) যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কাউকে ভালবাসে, (২) যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অন্য সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় এবং (৩) যাকে আল্লাহ কুফর থেকে নাজাত দিয়েছেন; তারপর সে কুফরের দিকে ফিরে যাওয়া থেকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক পছন্দ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৭৩ | 73 | ۷۳
পরিচ্ছদঃ ১৫. যেসব গুনে গুণান্বিত হলে ঈমানের মিষ্টতা পাওয়া যায়
৭৩। ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদীসের বর্ণনাকারীদের অনুরুপ; তবে এতে রয়েছে, “ইহুদি অথবা নাসারার দিকে ফিরে যাওয়া থেকে…।”
হাদিস নম্বরঃ ৭৪ | 74 | ۷٤
পরিচ্ছদঃ ১৬. রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে স্ত্রী, পুত্র, পরিজন ও পিতামাতা তথা সকলের চাইতে অধিক ভালবাসা ওয়াজিব এবং যে ব্যাক্তি এরূপ ভালবাসবে না, তার ঈমান নেই
৭৪। যুহায়র ইবনু হারব ও শায়বান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন বান্দা (রাবী আবদুল ওয়ারিসের বর্ণনায় কোন ব্যাক্তি) ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন আমি তার কাছে তার পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও অন্য লোকদের চাইতে অধিক প্রিয় না হব।
হাদিস নম্বরঃ ৭৫ | 75 | ۷۵
পরিচ্ছদঃ ১৬. রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে স্ত্রী, পুত্র, পরিজন ও পিতামাতা তথা সকলের চাইতে অধিক ভালবাসা ওয়াজিব এবং যে ব্যাক্তি এরূপ ভালবাসবে না, তার ঈমান নেই
৭৫। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউই ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন পর্যন্ত না আমি তার কাছে তার সন্তান-সন্ততি, পিতামাতা এবং অন্য লোকদের চাইতে অধিক প্রিয় না হব।
হাদিস নম্বরঃ ৭৬ | 76 | ۷٦
পরিচ্ছদঃ ১৭. নিজের জন্য যা পচন্দ করে, তা অপর মুসলমান ভাই এর জন্য পচন্দ করা ঈমানের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত হওয়ার প্রমান
৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না ও ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউই মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন সে তার ভাই-এর জন্য, অন্য বর্ণনায় তার প্রতিবেশীর জন্যও তা পছন্দ করবে না, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৭৭ | 77 | ۷۷
পরিচ্ছদঃ ১৭. নিজের জন্য যা পচন্দ করে, তা অপর মুসলমান ভাই এর জন্য পচন্দ করা ঈমানের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত হওয়ার প্রমান
৭৭। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সে মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, কোন বান্দা ততক্ষন পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন সে তার প্রতিবেশী (অন্য বর্ণনায় ভাই-এর) জন্য তা পছন্দ না করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
হাদিস নম্বরঃ ৭৮ | 78 | ۷۸
পরিচ্ছদঃ ১৮. প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া হারাম
৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়ুব, কুতায়বা ইবনু সা-ঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৭৯ | 79 | ۷۹
পরিচ্ছদঃ ১৯. প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করতে উৎসাহিত করা, কল্যাণকর কথা ব্যাতিত নীরবতা অবলম্বন করা এবং এগুলো ঈমানের অন্তুরভুক্ত হওয়ার বর্ণনা
৭৯। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার ভাল কথা বলা উচিত, অন্যথায় নীরবতা অবলম্বন করে। যে ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে সম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৮০ | 80 | ۸۰
পরিচ্ছদঃ ১৯. প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করতে উৎসাহিত করা, কল্যাণকর কথা ব্যাতিত নীরবতা অবলম্বন করা এবং এগুলো ঈমানের অন্তুরভুক্ত হওয়ার বর্ণনা
৮০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানের সম্মান প্রদর্শন করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে অন্যথা চুপ থাকে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৮১ | 81 | ۸۱
পরিচ্ছদঃ ১৯. প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করতে উৎসাহিত করা, কল্যাণকর কথা ব্যাতিত নীরবতা অবলম্বন করা এবং এগুলো ঈমানের অন্তুরভুক্ত হওয়ার বর্ণনা
৮১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ… পরবর্তী অংশ রাবী আবূ হাসীনের হাদীসের অনুরুপ। তবে এতে রয়েছে فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ “তার প্রতিবেশীর প্রতি সে যেন ভাল ব্যাবহার করে”।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৮২ | 82 | ۸۲
পরিচ্ছদঃ ১৯. প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করতে উৎসাহিত করা, কল্যাণকর কথা ব্যাতিত নীরবতা অবলম্বন করা এবং এগুলো ঈমানের অন্তুরভুক্ত হওয়ার বর্ণনা
৮২। যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র (রহঃ) … আবূ সুরাইয়া আন-খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অন্যথায় নীরবতা অবলম্বন করে।
হাদিস নম্বরঃ ৮৩ | 83 | ۸۳
পরিচ্ছদঃ ২০. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ, ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব
৮৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … তারিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ঈদের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পুর্বে মারওয়ান ইবনু হাকাম সর্বপ্রথম খুতবা প্রদান আরম্ভ করেন। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, খুতবার আগে হবে সালাত (নামায/নামাজ)। মারওয়ান বললেন, এ নিয়ম রহিত করা হয়েছে। এতে আবূ সাঈদ (রাঃ) বললেন, ‘এ ব্যাক্তি তো কর্তব্য পালন করেছে’। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ যদি অন্যায় কাজ দেখে, তাহলে সে যেন হাত দ্বারা এর সংশোধন করে দেয়। যদি এর ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখের দ্বারা, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তর দ্বারা (উক্ত কাজকে ঘূণা করবে), আর এটাই ঈমানের নিম্নতম স্তর।
হাদিস নম্বরঃ ৮৪ | 84 | ۸٤
পরিচ্ছদঃ ২০. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ, ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব
৮৪। আবূ কুরায়ব মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরি (রাঃ)-এর সুত্রে মারওয়ানের ঘটনা বর্ননা করেছেন। আর এই হাদীসটি শু’বা ও সুফিয়ানের বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ।
হাদিস নম্বরঃ ৮৫ | 85 | ۸۵
পরিচ্ছদঃ ২০. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ, ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব
৮৫। আমর আন-নাকিদ, আবূ বকর ও ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তায়াআলা আমার পুর্বে যখনই কোন জাতির মাঝে নাবী প্রেরণ করেছেন তখনই উম্মাতের মধ্যে তাঁর এমন হাওয়ারী ও সাথী দিয়েছেন, যারা তাঁর পদাংক অনুসরণ করে চলতেন, তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। অনন্তর তাদের পরে এমন সব লোক তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে, যারা মুখে যা বলে বেড়াত কাজে তা পরিণত করত না, আর সেসব কর্ম সস্পাদন করত যেগুলোর জন্য তারা আদিষ্ট ছিল না। এদের বিরুদ্ধে যারা হাত দ্বারা জিহাদ করবে, তারা মুমিন; যারা এদের বিরুদ্ধে মুখের কথা দ্বারা জিহাদ করবে, তারাও মুমিন এবং যারা এদের বিরুদ্ধে অন্তরে (ঘূণা পোষণদ্বারা) জিহাদ করবে তারাও মুমিন। এর বাইরে সরিষার দানার পরিমাণেও ঈমান নেই।
রাবী আবূ রাফি (রহঃ) বলেন, আমি হাদীসটি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে বর্ণনা করলাম, তিনি আমার বিবরণ অস্বীকার করলেন। ঘটনাক্রমে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) উপাস্থিত হলেন এবং কানাত নামক (মদিনার নিকটবতী একটি) স্থানে অবতরণ করলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) অসুস্থ ইবনু মাসঊদকে দেখার উদ্দেশ্যে আমাকে সাথে নিয়ে গেলেন। আমি তার সাথে গেলাম। যখন আমরা বসে পড়লাম। তখন আমি এই হাদীস সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি তদ্র্যুপ বর্ণনা করলেন যেরুপ আমি ইবনু উমরের কাছে বর্ণনা করেছিলাম। সালিহ ইবনু কায়সার বলেন, এ হাদীসটি আবূ রাফি থেকে অনুরুপভাবে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৮৬ | 86 | ۸٦
পরিচ্ছদঃ ২০. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ, ঈমান হ্রাস-বৃদ্ধি হয়, ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব
৮৬। আবূ বকর ইবনু ইসহাক ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন কোন নাবী অতিবাহিত হননি যার এমন হাওয়ারী ছিল না, যারা তাঁর প্রদর্শিত পথে চলতেন না এবং তার প্রতিষ্ঠিত আদর্শের উপর আমল করতেন না। তারপর তিনি সালিহ বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে এ বর্ণনায় ইবনু মাসঊদের আগমন এবং তাঁর সাথে ইবনু উমরের মিলিত হওয়ার বিষয় উল্লেখ নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৮৭ | 87 | ۸۷
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৮৭। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা, ইবনু নুমায়র, আবূ কুরায়ব এবং ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) … আবূ মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত দিয়ে ইয়ামনের দিকে ইশারা করে বললেনঃ জেনে রাখ, ঈমান সেখানেই। কঠোর ও পাষাণ-হৃদয় হচ্ছে শয়তানের দুই শিং এর স্থলে বসবাসকারী সেসব লোক, যারা উটের লেজের গোড়ায় থেকে চিৎকার দিয়ে থাকে, অর্থাৎ রাবীআ ও মূযার গোত্র।
হাদিস নম্বরঃ ৮৮ | 88 | ۸۸
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৮৮। আবূ রাবী আয যাহার্নী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়ামনের অধিবাসীরা এসেছে, তাদের হৃদয় বড়ই কোমল। ঈমান রয়েছে ইয়ামেনবাসীদের মধ্যে, ধর্মীয় প্রজ্ঞা রয়েছে ইয়ামনবাসীদের মধ্যে এবং হীকমতও রয়েছে ইয়ামনবাসীদের মধ্যে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৮৯ | 89 | ۸۹
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৮৯। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না এবং আমর আল নাকিদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ… পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদীসের অনুরুপ।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯০ | 90 | ۹۰
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯০। আমর আবূ-নাকিদ ও হাসান আল হুলওয়ানি (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কাছে ইয়ামনবাসীরা এসেছো তারা নমরচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ধর্মীয় প্রজ্ঞা ইয়ামনবাসীদের মধ্যে এবং হিকমতও ইয়ামনবাসীদের মধ্যে রয়েছে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯১ | 91 | ۹۱
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯১। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুফুরের মূল পুর্ব দিকে। অহংকার ও দাম্ভিকতা রয়েছে উচ্চঃস্বরে চিৎকারকারী পশুপালক– ঘোড়া ও উটওয়ালাদের মধ্যে। আর নম্রতা রয়েছে বকরিওয়ালাদের মধ্যে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯২ | 92 | ۹۲
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯২। ইয়াহইয়া ইবনু আইয়্যুব, কুতায়বা ও ইবনু হুজর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঈমান ইয়ামনবাসীদের মধ্যে, কুফূর পূর্বদিকে এবং নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে। আর অহংকার ও রিয়া চিৎকারকারী ঘোড়া ও উট-পালকদের মধ্যে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯৩ | 93 | ۹۳
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৩। হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, অহংকার ও দাম্ভিকতা চিৎকারকারী উট-পালকদের মধ্যে এবং নম্রতা বকরিওয়ালাদের মধ্যে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯৪ | 94 | ۹٤
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৪। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান আদ দারমী (রহঃ) … যুহুরি (রহঃ) থেকে উপরোক্ত সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেন। তবে এতে এ বাক্য অতিরিক্ত রয়েছে, “ঈমান ইয়ামনবাসীদের মধ্যে এবং হিকমতও ইয়ামনবাসীদের মধ্যে।”
হাদিস নম্বরঃ ৯৫ | 95 | ۹۵
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি শুনেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়ামনবাসীরা এসেছে। তারা কোমল-হৃদয় ও নম্রচিত্ত। ঈমান ইয়ামনবাসীদের মধ্যে এবং হিকমতও ইয়ামনবাসীদের মধ্যে। নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে এবং অহংকার ও দাম্ভিকতা চিৎকারকারী উট-পালকদের মধ্যে যাদের অবস্থান সুর্যোদয়ের দিকে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯৬ | 96 | ۹٦
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৬। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কাছে ইয়ামনের লোকেরা উপস্থিত হয়েছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ঈমান ইয়ামনীদের মধ্যে এবং হিকমত ইয়ামনীদের। আর কুফরের মূল রয়েছে পূর্বদিকে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৯৭ | 97 | ۹۷
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আমাশ (রহঃ)-এর সুত্রে এ সনদেই অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর রিওয়ায়েতে -কুফরের মূল রয়েছে পূর্ব দিকে, কথাটি উল্লেখ করেননি।
হাদিস নম্বরঃ ৯৮ | 98 | ۹۸
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৮। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না ও বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আমাশ (রহঃ) এর সুত্রে এ সনদে জারীর (রাঃ) বর্নিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে বর্ণনাকারী শু’বা, অহংকার ও দাম্ভিকতা উট-মালিকদের মধ্যে আর নম্রতা ও মর্যাদা বকরীর মালিকদের মধ্যে, অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৯৯ | 99 | ۹۹
পরিচ্ছদঃ ২১. ঈমানের ক্ষেত্রে মুমিনদের পারস্পারিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীদের প্রাধান্য
৯৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … জারির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মনের কঠোরতা ও গোয়ার্তুমী পূর্বাঞ্চলে আর ঈমান হিজাযবাসীদের মধ্যে।
হাদিস নম্বরঃ ১০০ | 100 | ۱۰۰
পরিচ্ছদঃ ২২. মু’মিন ব্যাতিত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করবে না, মু’মিনদের ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ আর তা অর্জনের উপায় হল পরস্পর অধিক সালাম বিনিময়
১০০। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ঈমান আনবে আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষন না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বাতলে দেব না যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে? তা হল, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে।
বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
I love allah and Muhammad sallallahu alaihi waya sallam.