০১. রাত দুপুরে সবাই যখন ঘুমে অচেতন

রাত দুপুরে সবাই যখন ঘুমে অচেতন তখন বৃটিশ মেরিনের সেপাহীরা এসে ছাউনি ফেলেছিলো এখানে। শহরের এ অংশটার তখন বসতি ছিলো না। ছিলো, সার সার উর্ধ্বমুখী গাছের ঘন অরণ্য। দিনের বেলা কাঠুরের দল এসে কাঠ কাটতো আর রাতে হিংস্র পশুরা চড়ে বেড়াতো। শহরে তখন গভীর উত্তেজনা। লালবাগে সেপাহীরা যে কোন মুহুর্তে বিদ্রোহ করবে। যে কটি ইংরেজ পরিবার ছিলো, তারা সভয়ে আশ্রয় নিলো বুড়িগঙ্গার ওপর গ্রিনবোট।

খবর পেয়ে যথাসময়ে বৃটিশ মেরিনের সৈন্যরা এসে পৌঁছেছিলো আর শহরের এ অংশটা দখল করে তাঁবু ফেলেছিলো এখানে। সে থেকে এর নাম হয়েছিলো, আণ্ডার গোরা ময়দান।
লোকে বলতো, আণ্ডা গোরার ময়দান। শেষতে লালবাগের নিরস্ত্র সেপাহীদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেছিলো তারা। মানুষের রক্তে লালবাগের মাটি লাল হয়ে ওঠে। কিছু সেপাহী মার্চ করে পালিয়ে যায় ময়মনসিংহের দিকে। যারা ধরা পড়ে তাদের ফাঁসি দেয়া হয় আণ্ডা গোরার ময়দানে। মৃতদেহগুলোকে ঝুলিয়ে রাখা হয় গাছের ডালে ডালে।

লোকে দেখুক। দেশদ্রোহীতার শাস্তি কত নির্মম হতে পারে, স্বচক্ষে দেখুক নেটিভরা।

এসব ঘটেছিলো একশো বছর আগে। আঠারশো সাতান্ন সালে।

আণ্ডা গোরার ময়দান এখনো আছে। শুধু নয় পালটেছে তার। লোকে বলে, ভিকটোরিয়া পার্ক।

সে অরণ্য আজ নেই। মাঝে একটা প্রচণ্ড ঝড় হয়েছিলো। সে ঝড়ে কি আশ্চর্য, গাছের-ডালগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেলো, আর গুঁড়িশুদ্ধ গাছগুলো লুটিয়ে পড়লো মাটিতে। লোকে বলতো, গাছেরো প্রাণ আছে। পাপ সইবে কেন?

তারপর থেকে আবাদ শুরু হয়ে এখানে।

ঘর উঠলো। বাড়ি উঠলো। রাস্তা ঘাট তৈরি হলো। আর মহারানীর নামে গড়া হলো একটা পার্ক।

আগে জনসভা হতো এখানে এখন হয় না। শুধু বিকেলে ছেলে বুড়োরা এসে ভিড় জমায়। ছেলেরা দৌড়ঝাঁপ দেয়। বুড়োরা শুয়ে-বসে বিশ্রাম নেয়, চিনে বাদামের খোসা ছড়ায়।

এ হলো গ্রীষ্মে অথবা বসন্তে। শীতের মরশুমে লোক খুব কম আসে, সন্ধ্যার পরে কেউ থাকে
না।

এবারে শীত পড়েছিলো একটু বিদঘুটে ধরনের। দি

নে ভয়ানক গরম। রাতে কনকনে শীত।

সকালে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছিলো পুরো আকাশটা। আকাশের অনেক নিচু দিয়ে মন্থর গতিতে ভেসে চলেছিলো এক টুকরা মেঘ। উত্তর থেকে দক্ষিণে। রঙ তার অনেকটা জমাট কুয়াশার মত দেখতে।

ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশ দিয়ে ঠিক সেই মেঘের মত একটি ছেলেকে হেঁটে যেতে দেখা গেলো নবাবপুরের দিকে। দক্ষিণ থেকে উত্তরে। পরনে তার একটা সদ্য ধোঁয়ান সাদা শার্ট। সাদা প্যান্ট।
পা জোড়া খালি। জুতো নেই। রাস্তার দুপাশে দোকানীরা পসরা নিয়ে বসেছে। টাউন সার্ভিসের বাসগুলো চলতে শুরু করেছে সবে। ভিড় বাড়ছে। কর্মচঞ্চল লোকেরা গন্তব্যের দিকে ছুটছে রাস্তার দুধার ঘেঁষে। কিন্তু ওদের সঙ্গে এ ছেলেটির একটা আশ্চর্য অসামঞ্জস্য প্রথম দৃষ্টিতেই ধরা পড়ে। সব আছে তার। ধবধবে জামা। প্যান্ট। পকেটে কলম। কব্জিতে বাঁধা ঘড়ি। হাতে একটা খাতা। মুখের দিকে তাকালে, ভদ্রলোকের সন্তান বলে মনে হয়। কিন্তু, পায়ে জুতো নেই কেন ওরা জুতো অবশ্য এ দেশের অনেকেই পরে না। পরে না, পরবার সমর্থ নেই বলে আর সামর্থ যে নেই ওদের জীর্ণ মলিন পোষাকের দিকে তাকালে বোঝা যায়। এ ছেলেটির পোষাকে কোন দৈন্য নেই। বরং আভিজাত্যের চমক আছে। তবে, এ পোষাক পরে খালি পায়ে হেঁটে যাচ্ছে কেন সে?

এ দৃশ্য যাদের চোখে পড়লো, তারা একটু অবাক হয়ে তাকালো ওর দিকে। তাদের চোখে হঠাৎ জাগা বিস্ময়। মনে ক্ষণিক প্রশ্ন। ছেলেটির মাথায় কোন ছিট নেই তো? পাগল নয় তো ছেলেটা?

কেউ কেউ তাকে নিয়ে ইতস্তত মন্তব্য করলো। আরে না না, পাগল না। ছেলেটার বোধ হয় কেউ মারা গেছে। তাই শোক করছে খালি পায়ে হেঁটে।

কেউ বললো, কে জানে এটা একটা ফ্যাশনও হতে পারে। আজকাল কত রকমের ফ্যাশন যে দেখি।

কেউ বললো, মহররমের তো এখনো অনেক দেরি, তাই না?

ছেলেটা তখনো হেঁটে চলেছে আপন মনে। মাঝে মাঝে সন্ধানী দৃষ্টিতে চারপাশে তাকাচ্ছে সে। কি যেন তালাশ করছে। কি যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে তার চঞ্চল দুটো চোখ। আর যখন কোন লোকের দিকে তাকাচ্ছে সে, তখন তার মুখের দিকে না তাকিয়ে তার পায়ের দিকে দেখছে আগে।

এমনি করে যখন বংশালের মোড় পেরিয়ে গেলো সে, তখন একজনের দিকে চোখ পড়তে সারামুখে আনন্দের আবীর ছড়িয়ে গেলো তার। পেছন থেকে সে তাকালে, মুনিম ভাই, এই যে, ওদিকে নয়, এদিকে।

মুনিম পেছন ফিরে তাকালো।

গায়ের রঙ তার রাতের আঁধারের মতো কালো। মসৃণ মুখ। খাড়া নাকের গোড়ায় পুরু ফ্রেমের চশমা। পরনে একটা ধবধবে পায়জামা পা জোড়া কিন্তু তারও নগ্ন। জুতো নেই।

মুখোমুখি হতে পরস্পরের দিকে স্নেহার্ড চোখে তাকালো ওরা। মৃদু হাসলো। হেসেই গম্ভীর হয়ে গেলো দুজনে। তারপর পথ চলতে চলতে মুনিম বললো, বাসা থেকে মা বেরুতেই দিচ্ছিলেন না। বুঝলে আসাদ। মায়ের আমার সব সময় ভয়, যদি কিছু ঘটে? আমার অবশ্য এসব বালাই নেই। আসাদ আস্তে করে বললো, মা মরে গিয়ে বোধহয় ভালই হয়েছে। থাকলে নিশ্চয়ই কান্নাকাটি করতো।

বলতে গিয়ে ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সে।

ঠাটারী বাজার পর্যন্ত সংখ্যায় ওরা দুজন ছিলো। রেলওয়ে লেবেল ক্রসিং পেরিয়ে গুলিস্তানের কাছে এসে পৌঁছতে সে সংখ্যা দুজন ছাড়িয়ে দশজনে পৌঁছলো।

ওরা এখন দশজন।

দশজন মার্জিত পোষাক পরা নগ্ন পায়ের যাত্রী।

পথ চলতে গিয়ে হঠাৎ একজন বললো, একি একসঙ্গে হাঁটছো কেন?

আইনে পড়বে যে, ভাগ হয়ে যাও।

আসাদ চুপ করে ছিলো। সে বললো, জানো আমি যখন একা ছিলাম তখন সত্যি ভীষণ ভয় হচ্ছিলো আমার। এখন অবশ্য আর তা করছে না।

ঠিক বলছো। আমারও তাই। তাকে সমর্থন জানালো আরেকজন।

রমনা পোস্টাফিসটা পেছনে ফেলে ওরা যখন রেলওয়ে হাসপাতালের কাছে এসে পৌঁছেছে তখন একটা পুলিশ বোঝই লরী এসে আচমকা থামলো ওদের সামনে, একটু দূরে। তিন চারজন পুলিশ লরী থেকে নেমে রাস্তায় টহল দিতে লাগলো। পায়ে কালো রঙ দেয়া চকচকে বুট জুতো। পরনে খাকি পোষাক। মাথায় লোহার টুপি হাতে একটা করে রাইফেল। পুলিশ দেখে প্রথমে থমকে দাঁড়িয়ে গেলো ওরা। পরস্পরের মুখের দিকে তাকালো।

একটি নীরব মুহূর্ত। তারপর আবার চলতে শুরু করলো।

আসাদ বললো, মনে হচ্ছিলো আমাদের ধরবার জন্যে লরীটা থামিয়েছে ওরা। আমিও তাই ভাবছিলাম। বললো, আরেকজন।

মুনিম কিছু বললো না। পকেট থেকে রুমালটা বের করে নীরবে মুখখানা মুছলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে সোজা উত্তরে, তার দুপাশে আকাশমুখী যে গাছগুলো দাঁড়িয়ে তার নাম দেবদারু। ফারুন আসতে সে গাছের পাতা ঝরতে থাকে। ঝরে অনেকটা ইলশেগুঁড়ির মত। ছোট ছোট সবুজ পাতাগুলো ঝরে পড়ে, রাস্তার ওপর সবুজের আস্তরণ বিছিয়ে দেয়। ভোরের দিকে সেখানে শিশিরের অসংখ্য সোনালি বিন্দু আলতো ছড়িয়ে থাকে।

সেদিনের সেই কুয়াশা ছড়ান ভোরে রাস্তা যখন অনেকটা ফাঁকা আর জনশূন্য তখন তিনটি মেয়েকে এক সারিতে এগিয়ে আসতে দেখা গেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে।

তাদের সবার পরনে চওড়া পাড়ের ধবধবে শাড়ি।

প্রথমার চুলগুলো সুন্দর করে বিনুনী করা। মুখে তার চিকেন পক্সের গুড়ি গুড়ি দাগ।

দ্বিতীয়ার দৈহিক গড়ন একটু ভারী গোছের। চেহারাটা সুন্দর আর কমনীয়। গায়ের রঙ দুধে আলতা মেশানো।

তৃতীয়ার মেঘ কালো চুল পিঠময় ছড়ান। চোখজোড়া কাটাকাটি আর চিবুকের ওপর একটা মস্ত বড় তিল।

জুতোবিহীন তিনজোড়া পা সমতালে মাটিতে ফেলছিলো তারা আর এগিয়ে আসছিলো নগ্ন পায়ে শিশির মেখে মেখে।

ওরা ছিলো তিনজন।

রানু, বেনু আর নীলা।

রানু বললো, আপা, কেমন লাগছে রে?

নীলা মুখ তুলে তাকালো, কি?

এই খালি পায়ে হাঁটতে।

কেন, জীবনে কি প্রথম খালি পায়ে হাঁটছে নাকি?

না। তবে রাস্তায় এই প্রথম।

বেনু সহসা হেসে উঠলো ওদের কথায়। বললো, আমার কিন্তু বেশ লাগছে। ওপাশ থেকে তখন আরো একটি মেয়ে এগিয়ে আসছিলো মেডিকেল কলেজের দিকে। তার গায়ের এ্যাপ্রন আর হাতের স্টেথোস্কোপ খানা দেখে সহজে অনুমান করা যাচ্ছিলো যে, সে ডাক্তারী পড়ে। অন্যদিন তার পায়ে এক জোড়া সুন্দর স্যাভেল পরানো থাকতো। আজ সেও নগ্ন পায়ে। চলনে তার জড়তা নেই। ক্লান্তি নেই। দৃঢ় পদক্ষেপ।

কাছে আসতে নীলা মিষ্টি হেসে বললো, কি সালমা যে, ক্লাশে যাচ্ছ বুঝি? তারপর তার নগ্ন পা জোড়ার দিকে চোখ পড়তে আনন্দে চিৎকার করে উঠলো সে, তুমিও তাহলে, বেশ বেশ।

হ্যাঁ, আমি। আমিও তোমাদের দলে। সালমা শান্ত গলায় জবাব দিলো। বেনু বললো, তোমাদের আর সবাই, ওরাও খালি পায়ে হাঁটছে তো?

হ্যাঁ।

ইডেন কলেজের ওরা?

ওরাও খালি পায়ে।

কামরুন্নেছা?

হ্যাঁ, ওরাও।

সহসা কি এক আনন্দে চার জোড়া চোখ চিকচিক করে উঠলো।

রানু বললো, সত্যি কি মজা না?

তার কথায় আবার মৃদু হেসে উঠলো নীলা। হাসতে গেলে বড় সুন্দর দেখায় ওকে। ছিটেফোটার মত ব্রণের দাগ ছড়ানো মুখখানা হঠাৎ লাল হয়ে পরক্ষণে আবার শুভ্রতায় ফিরে আসে।

পেছনে এক পলক তাকিয়ে নিয়ে নীলা বললো, আচ্ছা আমরা এবার চলি সালমা। চলতে গিয়ে কি ভেবে আবার থেমে পড়লো। একা একা যাচ্ছে যে, পুলিশের ভয় নেই।

ভয়? ভ্রূজোড়া অস্বাভাবিকভাবে বাঁকা হয়ে এলো তাঁর। ঠোঁটের কোণে ঈষৎ কাঁপন জাগলো। নীলার দিকে কয়েক পা এগিয়ে এসে চাপা অথচ তীব্র গলায় বললো, ভয়, বলতে গিয়ে দুচোখে যেন আগুন ঠিকরে বেরুলো তার, পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিলো সালমা।

আশ্চর্য শান্ত গলায় বললো, আমার স্বামী জেলে। ভাই জেলে। ছোট বোনটিও আমার জেলখানায়, আমার ভয় করার মত কিছু আছে।

তিনটি মেয়ে। তিনটি নারী হৃদয়। মুহূর্তে মোচড় দিয়ে উঠলো।

সালমার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ কোন কথা বলতে পারলো না ওরা। গুমোট ভাবটা কেটে গেলে নীলা আস্তে করে বললো, চলো। গলা থেকে ফাটা বাঁশের মত আওয়াজ বেরুলো তার।

বে বললো, কি আশ্চর্য।

রানুর চোখে তখনো বিস্ময়। সে মুখখানা ফিরিয়ে নিয়ে এলো নীলার দিকে। বেনুর দিকে।

তারপর।

রানু, বেনু আর নীলা। ওরা আবার হাঁটতে শুরু করলো।

কিছুদূরে এসে রানু প্রথম কথা বললো। আপা, যা বলে গেলে সব সত্যি? কেন, তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি! ওর দিকে না তাকিয়েই জবাব দিলো নীলা। বেনু কিছু বললো না। সে বোবা হয়ে গেছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সবুরের সঙ্গে কথা বলছিলো মুনিম। ছেলেটা একটা বদ্ধ পাগল। কি যে সব বকে বোঝা ভার। বলে, এসব কিছু হবে না মুনিম ভাই, প্রয়োজন একটা আঘাত। সে আঘাত না দিতে পারলে কিছু হবে না। বলে হাসে সবুর। বদ্ধ পাগলের মত হাসে। মুনিম সরে গিয়ে পকেট থেকে এক আনা পয়সা বের করে সিগারেট কিনলো। তারপর পাশে ঝুলানো দড়ি থেকে সিগারেটটা ধরিয়ে নিলে সে। সবুরে চোখ পড়লো মেয়ে তিনটির দিকে। চোখ পড়তেই মুখখানা বিকৃত করে অন্য দিকে সরিয়ে নিলো সে।

মেয়েরা ওর ভাবভঙ্গী দেখে হেসে উঠলো।

মুনিম বললো, কি ব্যাপার মুখটা অমন করলে কেন?

ওই মেয়েগুলোকে আমি দুচোখে দেখতে পারি না বলে।

কেন, ওরা আবার কি করলো তোমার?

আমার আবার কি করবে। সবুর মুখখানা প্যাঁচার মতো করে বললো, ওদের দিয়ে কোন কাজ হয় কোনদিন? আজ পর্যন্ত এক আন্দোলনে ওদের আসতে দেখেছো? এখন তো খালি পায়ে হেঁটে খুব বাহাদুরি দেখাচ্ছে। একটা পুলিশ আসুক, দেখবে তিনজন একসঙ্গে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে রাস্তার ওপর।

কি যা তা বকছো? মুনিম ধমকে উঠলো। তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে। সবুর তবু থামলো না। যাই বল তুমি, ও মেয়েগুলোকে দিয়ে কিছু হবে না। এ আমি হলপ করে বলতে পারি।

তুমি একটা বদ্ধ পাগল। বলে ফিক করে হেসে দিলো মুনিম। আধপোড়া সিগারেটটা সবুরের দিকে এগিয়ে দিলে। নাও টানো বলে দ্রুত পায়ে মধুর রেস্তোরাঁর দিকে এগিয়ে গেলো সে।

আমগাছ তলায় একদল ছাত্র জটলা করে এতক্ষণ কি যেন আলাপ করছিলো। মুনিমকে দেখতে পেয়ে ছুটে এসে ঘিরে দাঁড়ালো ওকে।

একজন বলল, পোস্টারগুলো কোথায় লাগাবা মুনিম ভাই? প্রক্টার সাহেব বড় বেশি গোলমাল শুরু করেছেন। বলছেন, এখানেও লাগাতে দেবেন না। আরেকজন বললো, দেয়াল পত্রিকার কি খবর মুনিম ভাই, ওটা লিখতে দিয়েছেন?

তৃতীয় জন বললো, ব্যাপার কি? লিফলেটগুলো এখনো এসে পৌঁছলো না প্রেস থেকে?

একসঙ্গে তিনটে প্রশ্ন।

পকেট থেকে রুমালটা বের করে মুখ মুছলো মুনিম। সবার দিকে এক পলক তাকিয়ে নিয়ে বললো, সব হবে, এত ব্যস্ত হচ্ছে কেন তোমরা?

কিন্তু পোস্টারগুলো?

হ্যাঁ, ওগুলো আমাদের ইউনিয়ন অফিসের দেয়ালে সেঁটে দাও। তারপর একটা ছেলের দিকে তাকালো মুনিম। এই যে রাহাত, তুমি আমার সঙ্গে এসো। একটু প্রেস থেকে ঘুরে

আসি। দেখি লিফলেটগুলোর কি হলো।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *