০১. নীলু আমার চেয়ে এগারো মিনিটের বড়

নীলু বয়সে আমার চেয়ে এগারো মিনিটের বড়। তার জন্মের এগারো মিনিট পর আমার জন্ম হয় এবং দারুণ একটা হৈচৈ শুরু হয়। ডাক্তার শমসের আলি অবাক হয়ে চেঁচিয়ে ওঠেন, আরে যমজ। বাচ্চা দেখি। ঠিক তখন ইলেকট্রসিটি চলে গিয়ে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। আমরা দুই বোন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে থাকি। ডাক্তার শমসের আলি হারিকেনের জন্যে চোঁচাতে থাকেন। আমার নানিজান ছুটে ঘর থেকে বেরুতে গিয়ে পানির একটা গামলা উল্টে ফেলেন।

আমার জন্মের সময় চারদিক অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল বলে বাবা আমার নাম রাখেন রাত্রি। নীলু জনের পর পর খুব কাদছিল, তাই তার নাম কান্না। এইসব কাব্যিক নাম অবশ্যি টিকল না। একজন হল নীলু। তার সাথে মিলে রেখে আমি হলাম বিলু। তার চার বছর পর আমাদের তিন নম্বর বোনটি হল; মিল দিয়ে নাম রাখলে শুধু মেয়েই হতে থাকবে এই জন্যে তার নাম হল সেতারা। নীলু, বিলু এবং সেতারা।

বাবার রাখা নাম না টিকলেও বাবা কিন্তু হাল ছাড়লেন না। সুযোগ পেলেই চেঁচিয়ে ডাকতেন, কোথায় আমার বড় বেটি কান্না? কোথায় আমার মেজো বেটি রাত্রি? জন্মদিনে বই উপহার দেবার সময় বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় গোটা গোটা হরফে লিখতেন, মামণি রাত্রিকে ভালবাসার সহিত দিলাম কিংবা মামণি কান্নাকে পরম আদরের সহিত দেওয়া হইল।

বইয়ের সঙ্গে সব সময় একটা করে তার স্বরচিত কবিতা থাকত। সে কবিতা তিনি তার প্রেস থেকে ছাপিয়ে ফ্রেম করে বঁধিয়ে আনতেন। আট বছরেব জন্মদিনে আমি এবং নীলু। যে কবিতাটি পেলাম সেটা শুরু হয়েছে এভাবে।–

‘সাতটি বছর গেল পর পর
আজকে পড়েছে আটে
তব জন্মদিন নয়তো মলিন
ভয়াল বিশ্বহাটে।’

যমজ বোন বলেই আমরা দু’জন সব সময় একই কবিতা পেতাম। শুধু কবিতা নয়। গল্পের বইও একই হত। দুজনের জন্যে দুটি শিশু ভোলানাথ কিংবা ঠাকুরমার ঝুলি।

আমরা দু’জন যে দেখতে অবিকল একরকম এ নিয়ে বাবার মধ্যে একটা গোপন গর্ব এবং অহংকার ছিল! নতুবা কেউ এলেই হাসিমুখে বলতেন–এরা যমজ। একজনের নাম রাত্রি, একজনের নাম কান্না। যার চুল ছোট ছোট ও হচ্ছে কান্না। মা বড় বিরক্ত হতেন। ভ্রূ কুঁচকে বলতেন— যমজ মেয়ে নিয়ে এত ঢোল পিটানোর কি আছে? যমজ-ফমজ আমি দুচক্ষে দেখতে পারি না, ছিঃ!

আমাদের দু’জনকে যাতে দেখতে এক রকম না দেখায় এ জন্যে তার চেষ্টার ক্রটি ছিল না। আমার চুল কেটে ছোট ছোট করে দিলেন। একজনের গায়ের রঙ যেন অন্যজনের চেয়ে আলাদা হয় সে জন্যে নীলুকে সপ্তাহে তিন দিন কাঁচা হলুদ দিয়ে গোসল করাতে লাগলেন। কিছুতেই কিছু হল না। আমরা যতই বড় হতে থাকলাম আমাদের চেহারার মিল ততই বাড়তে লাগল। নীলু। যেমন লম্বা। আমিও তেমন লম্বা। তার চিবুকের নিচে যে রকম একটি লাল রঙের তিল আমারও অবিকল সে রকম তিল। তার যেমন শ্যামলা গায়ের রঙ আমার তাই। মা পর্যন্ত ভুল করতে লাগলেন। যেমন একদিন বারান্দায় বসে তেঁতুলের খোসা ছড়াচ্ছি, মা ঝডের মত এসে প্রচণ্ড একটা চড় কষালেন।

এক খিলি পান দিতে বললাম। কতক্ষণ আগে?

আমি শান্ত স্বরে বললাম, আমাকে বলনি। বোধহয় নীলুকে বলেছ। আমি বিলু।

আমার ছোট চুল যখন লম্বা হল তখন দেখা গেল বাবা এবং মা ছাড়া আমাদের কেউ আলাদা করতে পারে না। কেন পারে না সে-ও এক রহস্য। নীলুর সঙ্গে আমার বেশ কিছু অমিল আছে। যেমন নীলুর নাক একটুখানি চাপা। ওর চোখ দুটি একটুখানি উপরের দিকে ওঠানো। তবুও দোতলার নজমুল চাচা আমাদের দুবোনকে যখনি দেখেন তখনি বলেন, কে কোন জন? কে কোন জন? নীলু। তাতে খুব মজা পায়। আমার অবশ্যি রাগ লাগে। এইসব আবার কি ঢং? নজমুল চাচা সব সময়ই ঢং করেন। মা নজমুল চাচাকে সহ্যই করতে পারেন না। নজমুল চাচার গলা শুনলেই মুখ কুঁচকে বলেন, ভাঁড় কোথাকার। সব সময় ভাঁড়ামি।

আমাদের নিয়ে সবচে বেশি ভাঁড়ামি করেন অবশ্যি আমার বড় মামা। দিনাজপুর থেকে বেড়াতে এলেই মহা উৎসাহে আমাদের দু’জনকে সামনে বসিয়ে উঁচু গলায় বলেন, দেখা যাক আমি নীলু বিলুকে আলাদা করতে পারি কি-না। ওয়ান টু থ্রি হুঁ এই জন হচ্ছে আমাদের বিলুমণি। বড় মামা ভাঁড়ামি করলে মা রাগ করতেন না, বরং একটু যেন খুশিই হতেন। সবচে খুশি হত নীলু। সে হেসে কুটিকুটি। নীলুর নাম কান্না না হয়েই ভালই হয়েছে। সে হাসতেই জানে, কাঁদতে জানে না। আমরা যখন ক্লাস সেভেনে উঠলাম নীলু আমার কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেল তার হাসি নিয়ে। যা-ই দেখে তাতেই তার হাসি পায়। মা হয়ত কিছু নিয়ে ধমক দিয়েছেন। সে মুখ ফিরিয়ে হাসি গোপন করবার চেষ্টা করছে। মা কঠিন স্বরে বলছেন, হাসছ কেন তুমি?

কই হাসছি না তো।

মুখ ফেরাও। তাকাও আমার দিকে।

নীলু মুখ ফেরালে আমরা দেখতাম হাসি থামাবার চেষ্টায় তার গাল লালচে হয়ে উঠেছে।

কেন তুমি শুধু শুধু হাসছ? হাসির কি হয়েছে বল তুমি, তোমাকে বলতে হবে।

আর হাসব না। মা! এখন থেকে শুধু কাঁদব।

বলেই সে আমার ফিক করে হেসে ফেলল। মা প্রচণ্ড একটা চড় কষলেন।

বাঁদর কোথাকার। তোমার হাসি আমি ঘুচিয়ে দিচ্ছি দেখ!

নীলুর চোখে জল আসছে কিনা মা দেখতে চেষ্টা করতেন। কোথায় কি? নীলু। এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে যেন কিছুই হয়নি। মা ক্লান্ত হয়ে বলতেন, ঠিক আছে যাও আমার সামনে থেকে।

নীলু এমনভাবে ছুটে যেত যেন আড়ালে গিয়ে হেসে বুক হালকা করবে। নীলুটা এমন হয়েছে কেন? এ বাড়িতে সবাই একটু গম্ভীর। সেতারা যার বয়স মাত্র পাঁচ সে পর্যন্ত কম কথা বলে। নীলুকার কাছ থেকে এত কথা বলা শিখল? কার কাছ থেকে অকারণে হাসরি এই অদ্ভুত অসুখ জোগাড় করল?

আমার এবং নীলুর খাট দক্ষিণ দিকের বড় ঘরটায়। নীলু ঘুমায় সেতারাকে সঙ্গে নিয়ে। তার একা এক ভয় করে। আকবরের মা ঘুমায় বারান্দায়। আমরা ডাকাডাকি করলে তার উঠে আসার কথা। সে একবার ঘুমালে নিশ্চিন্ত। সারা রাতে এক সেকেন্ডের জন্যেও জাগবে না। এমনিতে অবশ্যি বলবে, ভইন, আমার সজাগ ঘুম। ইটু শব্দ হইলেই চউখ খোলা। আকবরের মা কোন কাজ ঠিকমত করতে পারে না। প্রচুর মিথ্যা কথা বলে। অনেকবার তাকে বিদায় দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, লাভ হয়নি কিছুই। সে ঘাড় বাঁকিয়ে বলেছে, যাইতাম না। দেহি কেমনে বিদায় দেয়। তামাশা না? এই বুড়ো বয়সে যাইতাম কই?

আকবরের মা রাতে ভাতটাত খেয়ে ঘুমাতে এসে জিজ্ঞেস করে, কইগো মাইয়ারা, ভূতের কিচ্ছা হুঁনতে চাও? নীলু ভীতু সে শুনবে না, কিন্তু যেহেতু আমি শুনি কাজেই তাকেও শুনতে হয়। আকবরের বাপের গপটা কই। শাইলের মইধ্যের লোম খাড়া হইয়া যায় বুঝছনি মাইয়ারা। শীতের সময়। খুব জার। আকবরের বাপের মাছ মারতে যাওনের কথা। আমারে কইল তামুক দে…

নীলু গল্পের মাঝখানে জিজ্ঞেস করে, তুই করে বলত?

তা ঠিক। গরিব মাইনষের কথাবার্তা তুই-তুকারি দিয়া।

আকবরের মার ভাষা ঠিক বোঝা না গেলেও গল্প ধরতে কোনো অসুবিধে হয় না। সব গল্পের শেষে আকবরের বাবা। যার সাহসের কোনো সীমা নেই, একটা ভূতের গলা সাপ্টে ধরে কুমড়ো গড়াগড়ি করবে। এবং সব শেষে ভূতটা জঙ্গল ভেঙে ছুটে যাবে। যাবার সময় বলবে, এঁই বাঁর ছাঁইরা দিলাম। বুঁঝছস? জাঁনে বাঁচলি।

গল্প শেষ হলেই নীলু বলবে, দূর, ভূত আবার আছে নাকি?

আকবরের মা চোখ কপালে তুলে বলবে, এইটা কেমুন বেকুবের মতো কথা কইলা? দেশটা ভর্তি ভূত আর পেত্নীতে। আমার সাথে একবার যাইও আমরার নীলগঞ্জের বাড়িত। নিজের চউক্ষে ভূত দেখবা।

আকবরের মা শুধু যে আমাদের ভূতের গল্প শোনাবার চেষ্টা করে তাই না, মাকেও শোনাতে চেষ্টা করে। সুযোগ পেলেই একটা গল্প টেনে আনতে চায়, বুঝছেন আম্মা, একবার হইল। কি…। মা এক ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন। আজেবাজে গল্প মা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। শুধু আকবরের মা নয় বাবাকেও এমনিভাবে থামানো হয়, যা বলতে চাও সরাসরি বলতে পার না? এত ফেনও কেন?

ফেনাই নাকি?

হ্যাঁ, ফেনাও। বেশি রকম ফেনাও। যা বলার তা সহজভাবে বলতে পারা উচিত।

ও।

রাগ করলে নাকি আবার?

না। আমি এত সহজে রাগ করি না।

বাবার এই কথাটি খুব সত্যি। বাবা রাগ করতে পারেন না। নীলুর ধারণা বাবা মোটা বলেই রাগ করতে জানেন না। মোটা মানুষদের এই একটা বড় অসুবিধে। কথাটা হয়ত সত্যি। আমাদের স্কুলের মোটা আপাগুলিকে কিছুতেই রাগানো যায় না। আর চিকনা। আপাগুলি কারণ ছাড়াই চিড়বিড়, করছে। আমাদের মা নিজেও রোগা বলেই বোধহয় তার রাগ বেশি। তিনি রাগেন না। শুধু আমাদের প্রেসের ম্যানেজার বাবুর সঙ্গে। তার নাম প্রণব বসু। এর অনেক রকম গুণ আছে। চমৎকার গান গাইতে পারেন। এবং চমৎকার গল্প করতে পারেন। তারচে বড় কথা চমৎকার রসিকতা করতে পারেন। এবং রসিকতাগুলি করেন গম্ভীর মুখে।

যেমন একদিন নীলুকে বললেন, এই নীলু কাল কি হয়েছে জানিস?

না তো কি হয়েছে?

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের যে ওস্তাদ আছেন মুনসি মীর আলি, তিনি কাল জিলা স্কুলের মাঠে রাগ জয়জয়ন্তী গেয়ে দুটি মেডেল পেয়েছেন। একটা বড় মেডেল। একটা ছোট মেডেল। ছোটটা পেয়েছেন গান গাওয়ার জন্যে আর বড়টা পেয়েছেন গান থামানোর জন্যে।

প্রণব বাবুকে আমরা ডাকি ম্যানেজার কাকু। মা ডাকেন ম্যানেজার। বাবা ডাকেন বোস। ভাল কিছু রান্নাটান্না হলে বাবা বলবে, দেখি বোসকে একটা খবর দাও তো। খাওয়া-দাওয়ার পর একটু গান-বাজনা হবে।

ম্যানেজার কাকু অবশ্যি সহজে গান-বাজনা করেন না। তবে যদি ধরে-বেঁধে একবার বসানো যায় তখন গান চলে গভীর রাত পর্যন্ত। আমরা অবশ্যি এত রাত পর্যন্ত থাকতে পারি না। ধমক দিয়ে মা আমাদের নিচে পাঠিয়ে দেন। তবে অনেক রাত পর্যন্ত আমরা জেগে গান শুনি। আমাদের নিজের গান শেখার খুবই সখ। মাকে বেশ কয়েকবার বলতে মা ম্যানেজার কাকুকে বললেন, ওদের একটু গান শেখান না।

ম্যানেজার কাকু গম্ভীর গলায় বললেন, বৌদি ওদের বয়স কম।

কম বয়স থেকেই তো শুনেছি গান-বাজনা শুরু করতে হয়।

উঁহু, সংগীতের জন্যে মমতা ছাড়া কিছু হয় না। সেই মমতোটা অল্প বয়সে হয় না। আপনি যদি শিখতে চান শেখাতে পারি।

রক্ষা কর, এই বয়সে আর আঁ আঁ করতে পারব না।

ম্যানেজার কাকুকে একমাত্র নীলু ছাড়া আমরা সবাই বেশ পছন্দ করি। নীলু। যদিও ম্যানেজার কাকুর রসিকতায় সবচে উঁচু গলায় হাসে কিন্তু আড়ালে বলে, আমার ম্যানেজার কাকুকে ভাল লাগে না।

কেন, ভাল না লাগার কি আছে?

আছে একটা–কিছু। আমি জানি না কি।

নীলু। মাঝে মাঝে এলোমেলো কথাবার্তা বলে এবং সেগুলি সত্যিা হয়ে যায়। সেতারা যেদিন স্ক্রিীড় থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে ফেলেছে সেদিন সকালবেলাতেই নীলু বলেছে, আমি রাতে স্বপ্নে দেখেছি সেতারা খাট থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে ফেলেছে। ম্যানেজার কাকু প্রসঙ্গে নীলুর আশংকাও সত্যি হয়ে গেল।

আমরা স্কুলে গিয়েছি। থার্ড পিরিয়ডে জিওগ্রাফি আপা এসে বললেন, নীলু বিলু তোমরা দু’জন বাসায় যাও তো, তোমাদের নিতে এসেছে। আমরা অবাক হয়ে বাসায় এসে দেখি আকবরের মা সেতারাকে ঘুম পাড়াচ্ছে, বাসায় মা-বাবা কেউ নেই। দোতলার নজমুল চাচা শুধু বসার ঘরে মুখ কালো করে বসে আছেন। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা অদ্ভুত কথা শুনলাম। মা নাকি ম্যানেজার কাকুর সঙ্গে কোথায় চলে গেছেন। আর আসবেন না–এ রকম একটা চিঠি লিখে গেছেন।

বাবা ফিরলেন রাত এগারোটায়। আমরা জেগে বসে আছি। অনেক লোকজন এসেছে। কেউ যাচ্ছে না। সবাই গম্ভীর মুখে বসে আছেন বসবার ঘরে। বাবা ঘরে ঢুকে এমন ভাব করলেন যেন কিছুই হয়নি। হাসিমুখে বললেন, রেণু ঝগড়া করে সকালের ট্রেনে দিনাজপুর তার বাবার বাড়ি চলে গেছে। আমি ছিলাম না। ভাগ্যিস প্রণব বাবু বুদ্ধি করে সঙ্গে গেছেন। নয়তো একা এক মেয়েছেলে এত দূর যাবে, দেখেন না অবস্থাটা। এই মেয়েজাতটার মত রাগ আর কারোর নেই। হা হা হয়। এদের নিয়েও চলে না। না নিয়েও চলে না।

লোকজন সব বারটার মধ্যে চলে গেল। আমরা নিজেদের ঘরে চুপচাপ শুয়ে ছিলাম। বাবা এসে ঘরে ঢুকলেন।

মামণিরা ঘুমাচ্ছ?

আমরা কেউ জবাব দিলাম না। বাবা মৃদু স্বরে বললেন, আজ রাতে তোমরা আমার সঙ্গে ঘুমাবে মামণিরা?

নীলু শব্দ করে কেঁদে উঠল।

সে সময় আমার এবং নীলুর বয়স বার, সেতারার সাত।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *