নবগ্রামে ট্রেন এসে যায়। আর এক ইস্টিশান পরেই জলেশ্বরী, এ লাইনের শেষ। বিলকিস যাবে জলেশ্বরীতে। ঢাকা থেকে তোরসা জংশনে এসেছে বেলা এগারোটায়। তারপর তিনটেয় পাওয়া গেছে। জলেশ্বরীর গাড়ি। সাধারণত সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায়। কিন্তু এখন কোনো কিছুই নিয়মিত নয়। কেউ তা আশাও করে না।
এমনিতেই তোরসা থেকে জলেশ্বরী অবধি ট্রেন চলে খুব ধীর গতিতে। ছেলেবেলায় বাবার কাছে বিলকিস। শুনেছিল, এই লাইনটি আসলে পুরনো ডিস্টিক বোর্ড সড়কের ওপর পাতা রয়েছে। তাই বাক বেশি, মাটিও পাকা নয়, ট্রেন চলে ধীর গতিতে। নইলে উল্টে পড়ে যাবে।
তবুও তোরসা থেকে জলেশ্বরী এক ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায়। নবগ্রাম আসতে আজ দুঘণ্টা কাবার হয়ে যায়।
ট্রেনে ওঠার পর থেকেই যাত্রীদের ভেতরে কেমন একটা ফিস-ফ্যাশ সে শুনে আসছিল অনেকক্ষণ ধরে। শহুরে এক মহিলার উপস্থিতিতে মানুষগুলো বড় একটা সপ্রতিভ ছিল না। তাছাড়া সময়টাই এমন যে, মানুষ নিচুকণ্ঠ ছাড়া কথা বলে না, অপরিচিত দূরে থাক, পরিচিতকেও বিশ্বাস করে না।
বরাবর দেখে এসেছে বিলকিস, নবগ্রামে ট্রেন দুই মিনিটের বেশি থামে না।
নির্ধারিত সেই দুমিনিট পেরিয়ে যায়। অধিকাংশ যাত্রী ট্রেন থামবার সঙ্গে সঙ্গে নিঃশব্দে দ্রুতগতিতে নেমে পড়ে। ইস্টিশানের বাইরে ঘন বুনো ঝোঁপের ভেতর সরু পথ দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে তারা কে কোথায় মিলিয়ে যায়। আর যারা বসে থাকে, যাদের গন্তব্য জলেশ্বরী, তারা দুমিনিট পরেও যখন ট্রেন ছাড়ে না, ঢিল খাওয়া অবোধ পশুর মতো তারাও কামরা ছেড়ে অন্তর্হিত হয়ে যায়।
মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যায়। সারা ট্রেন।
জানোলা দিয়ে একবার বাইরে তাকায় বিলকিস। কিছু বোঝা যায় না। ট্রেনের পুরনো ইনজিনটার বাষ্পীয় শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না।
হাত ঘড়িতে বিকেল এখন পাঁচটা দশ।
বিলকিস নামে। তার সঙ্গে তার ছোট একটা সুটকেস। এ সময় কুলির ওপর নির্ভরতা কমাবার জন্যেই সে ঢাকা থেকে বহনযোগ্য সুটকেসের বেশি আনে নি। সুটকেসটা নিয়েই সে নামে।
গার্ডকে দেখা যায়। সে খুব দ্রুত পায়ে ইস্টিশান ঘরের দিকে যাচ্ছিল। বিলকিস তাকে ধরে। আমি জলেশ্বরী যাব।
গার্ড তার মুখের দিকে খানিকক্ষণ। হতভম্ভ হয়ে তাকিয়ে থাকে। যেন জলেশ্বরীর নাম সে এই প্রথম শুনেছে অথবা উজ্জ্বল রোদের ভেতরে নবগ্রামের মতো ঘোর পল্লীর ইস্টিশানে, বিলকিসের মতো চটপটে মহিলাকে দেখে গার্ড নিশ্চিত হতে পারছে না। দৃষ্টির বিভ্রম কিনা! এ এমন একটা সময় যখন যা কিছু সম্ভব অথচ মানুষ তার মৌলিক বিস্ময়বোধ থেকেও মুক্তি পায় নি।
বিলকিস ব্যাকুল হয়ে আবার বলে, গাড়ি তো জলেশ্বরী পর্যন্ত যাবে!
আরো কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থাকে গার্ড। লাল নীল নিশান দুটিকে সে অনাবশ্যকভাবে হাত বদল করে নেয়। তারপর কোনো উত্তর না দিয়ে অথবা একটা কিছু দেয়, বোঝা যায় না, শোনা যায় না, সে ইস্টিশানে খড় ছাওয়া নিচু চালার ভেতর ঢুকে যায়। আর কাকে জিগ্যেস করবে। খুঁজে পায় না বিলকিস।
এখন সে কী করে?
ঢাকা থেকে জলেশ্বরী, কতবার যাতায়াত করেছে সেই ছেলেবেলা থেকে। কতবার সে নবগ্রামের ওপর দিয়ে এসেছে, গেছে। কিন্তু কখনো নামা হয় নি। ইস্টশানের ঝোঁপের ওপারও দেখা হয় নি।
এখানে করা থাকে? কিছুক্ষণের জন্যে অচেনা এবং অপহৃত বোধ করে সে।
তাঙ্গু চোখে পড়ে ইস্টশনের ঠিক বাইরে মাটির চাকি বুসানো কুয়োর পেছনে একটি ছেলে। সতেরো আঠারো বছর বয়স। বিলকিসের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে চোখ পড়তেই ছেলেটি চোখ ফিরিয়ে নেয়। মুহূর্তে সে ঝোঁপের আড়ালে কোথায় চলে যায়।
হয়তো একে কিছু জিগ্যেস করা যেত, ট্রেনের বিষয়ে কিছু জানা যেত না সত্যি, কারণ ছেলেটি দৃশ্যতই ইস্টশানের কেউ নয়, অন্তত একটি মানুষ পাওয়া যেত। সারা প্ল্যাটফরমে একটি প্ৰাণীও এখন নেই, বিলকিসের মনে হয় চারদিকের এই অচেনা গাছ এবং ঝোপগুলো দুৰ্বোধ্য কী একটা ষড়যন্ত্রে অবিরাম সরসর ফিসফিস করে চলেছে।
ইস্টিশান ঘরের ভেতর ঢোকে বিলকিস।
তাকে দেখেই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে টেবিলের ওপারের লোকটি। নিশ্চয়ই ইস্টশান মাস্টার। গার্ডকে দেখা যায় দুহাতের ভেতর মাথা রেখে টেবিলে কনুই ঠেকিয়ে বসে থাকতে। সেও এখন তাকায়, দ্বিতীয়বার তাকে দেখা যায় বিহবল চোখে তাকাতে।
আমি জলেশ্বরী যাব। ইস্টিশান মাস্টার তার দিকে কিছুক্ষণ শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। কোথা থেকে আসছেন?
ঢাকা থেকে।
ওদিকে গাড়ি চলেছে?
হাঁ চলছে। আমি তো এলাম।
ইস্টিশান মাস্টার দৃষ্টি ফিরিয়ে গার্ডের দিকে তাকান। ঠিক তখন ইনজিন ড্রাইভার এসে হাজির হয়।
খবর কী মাস্টার সাহেব?
আর খবর! এখন তোরসায় ফিরে যান। ট্রেন আর যাবে না।
ড্রাইভার গজগজ করে ওঠে। আগে থেকে বললে হতো। তোরসার মাস্টার সাহেব কিছু বললেন না। ইনজিন ব্যাক করে চলে আসতাম, সোজা বেরিয়ে যেতাম এখন।
গার্ড রুষ্ট হয়ে ওঠে। এখন ব্যাক করে যেতে অসুবিধা কোথায়?
আবার সেই তোরসায় গিয়ে ইনজিন ঘুরিয়ে, তিন মাইল চক্কর দিয়ে যে রাখতে হবে, সে আপনি রাখবেন, কি আমি রাখব? তোরসার খবর রাখেন? যে-কোনোদিন যে-কোনো সময়ে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে।
এতক্ষণ উদ্বিগ্ন হয়ে কথাগুলো বিলকিস শুনছিল। শুনে না বোঝার কিছু নেই, তবু তার মনে হচ্ছিল। আরো খানিকটা না শুনলে সে ঠিক বুঝতে পারবে না প্রসঙ্গটা। এবার সে বলে, ট্রেন এখন জলেশ্বরী যাবে না?
তিনজন নীরবে তার দিকে তাকায়।
ইস্টিশান মাস্টার উত্তর দেন, না।
কেন?
নীরবতা।
যাবে না কেন?
তার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ইস্টিশান মাস্টার গার্ডকে বলেন, আর দেরি করবেন না। অর্ডার আছে ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাক করে দিতে। পথে সন্ধে হয়ে গেলে, বলা যায় না, কী হয়।
গার্ড চকিতে মাস্টারের দিকে তাকান। দুজনের ভেতর অর্থপূর্ণ দৃষ্টি বিনিময় হয়। আর সে দাঁড়ায় না। নিশান দুটো তুলে নিয়ে সোজা ট্রেনের দিকে ধাবিত হয় সে। ইনজিন ড্রাইভার হয়তো আরো কিছু বিরক্তি প্ৰকাশ করতে চায়। সে সঙ্গে সঙ্গে নড়ে না। ইতস্তত করতে থাকে।
যান, যান, আপনি আর ঝামেলা বাড়াবেন না।
ড্রাইভার বেরিয়ে যায়।
ইস্টিশান মাস্টারও উঠে দাঁড়ান। তিনি ড্রাইভারের পেছনে পেছনে দরোজা পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকেই গলা বাড়িয়ে ট্রেনটিকে দেখতে থাকেন।
বিলকিস বসবে কি দাঁড়িয়ে থাকবে বুঝতে পারে না। ক্ষণকালের জন্যে তার এমনও মনে হয় এই ট্রেনে ফিরে যায়। কিন্তু সে ভালো করেই জানে, ফিরে যাওয়া নয়, জলেশ্বরীতেই তাকে যেতে হবে।
হঠাৎ সে দেখতে পায় ইস্টিশান ঘরের পেছনের জানালায় একটি মুখ। সেই ছেলেটির মুখ। আবার চোখ পড়তেই মুখটি সরে যায়।
ইনজিনের দীর্ঘ হিস শোনা যায়। বঁশি বাজে না। চাকা নড়ে ওঠে। ঘরের ভেতর থেকে বগিগুলো সরে যেতে দেখা যায়। সবশেষে ইনজিন। পেছন থেকে ঠেলে নিয়ে তোরসায় ফিরে যাচ্ছে। সে যে ঘরের ভেতর আছে ইস্টিশান মাস্টার হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন। ট্রেন বেরিয়ে যাবার পর তিনি ঘরের ভেতরে মুখ ফিরিয়ে মুহূর্তের জন্য নিশ্চল হয়ে যান। ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, কে বসে আছে। তাকে দোষ দেওয়া যায় না। ঘরটি এত নিচু, ঘরের জানোলা এত ছোট যে যথেষ্ট আলো আসে না। দুপুরবেলাতেও সন্ধ্যাভাষ ফুটে থাকে।
আপনি ঢাকা থেকে আসছেন?
হাঁ।
জলেশ্বরী যাবেন?
আমার যাওয়া দরকার। ইস্টিশান মাস্টার চিন্তিত মুখে চেয়ারে বসে পড়েন। হাত উল্টে বলেন, আমার কিছু করবার নেই। তারপর হয়তো তার মনে হয়, একজন বিপন্ন মহিলাকে এভাবে সরাসরি নিরাশ করাটা উচিত হলো না। কিন্তু আশা দেবারও আলো তার হাতে নেই। পুষিয়ে দেবার জন্যে তিনি সহানুভূতিশীল গলায় জানতে চান, জলেশ্বরীতে আপনার কেউ আছে?
আছে। মা আছে। ছোট ভাই আছে, রংপুর কলেজে পড়ে। আমার বড় বোন বিধবা, সে আছে, তার দুটো ছেলেমেয়ে আছে।
জলেশ্বরীতে কী হয়েছে? নিজের খবর দ্রুত গলায় দিয়ে যে প্রশ্নটি এতক্ষণ মনের ভেতরে কঠিন মুষ্ঠির মতো চেপে বসেছিল, বিলকিস। উচ্চারণ করে।
সরাসরি সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মাস্টার সাহেব বলেন, কিন্তু আপনি এখন যাবেন কী করে? পাঁচ মাইলের পথ!
চোখের সমুখে হঠাৎ যেন আগুন জ্বলে ওঠে দাউ দাউ করে। বিলকিস দেখতে পায় জলেশ্বরী পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। আবার দেখতে পায় সে আগুন নিভে গেছে। জলেশ্বরীর বাড়িগুলো বীভৎস ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সারা শহরে একটিও প্রাণী নেই। বিকট জন্তুর মতো স্তব্ধতা হামা দিয়ে শহরটিকে খাবলে খাবলে খেয়ে চলেছে। ধড় ফড় করে উঠে দাঁড়ায় বিলকিস। তার ঠোঁট থেকে ভয়ার্ত প্রশ্ন গড়িয়ে পড়ে।
জলেশ্বরীতে কি যাওয়া যাবে?
কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে মাস্টার সাহেব উত্তর দেন–ঠিক বলতে পারছি না।
আপনি কী শুনেছেন?
খুব ভালো না।
কী ভালো না?
ভাই বোন, মায়ের জন্য তীব্র ব্যাকুলতা তার কণ্ঠ ফুটে বেরোয়। একবার মনে হয়, আর কখনো তাদের মুখ দেখতে পাবে না। যেমন, সে তার স্বামী আলতাফের মুখ আর কখনো দেখতে পাবে আশা করে না।
মাস্টার সাহেব বলেন, ভালোই তো ছিল সব। এতদিন কোনো গোলমালই ছিল না।
আমিও তো চিঠি পেয়েছি মায়ের গত বুধবার।
বললাম তো, এদিকে কোনো গোলমালই ছিল না।
ইস্টিশান মাস্টার আড় চোখে একবার বিলকিসকে ভালো করে দেখে নেন। অচেনা একজনকে এত কথা বলা ঠিক হবে কি না, মীমাংসা করতে পারেন না। কোনো পুরুষ হলে হয়তো তিনি রূঢ়ভাবে বিদায় দিতেন, মহিলা বলে ইতস্তত করেন।
আবার সুশ্ৰী শহুরে একজন মহিলার সঙ্গে কথা বলবার সুযোগটা এই আতংকশাসিত সময়ের ফাটলে অবিরাম পতনোনুখ অবস্থার ভেতরও একেবারে সংক্ষেপে ছেড়ে দেবার ইচ্ছা তিনি বোধ করেন না।
এদিকে এই চার মোস সব চুপচাপ ছিল। মার্চ মাসে ঢাকার ঘটনার পর, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রংপুর থেকে মিলিটারি আসে।
তখন সবাই জলেশ্বরী থেকে চলে যায়, আমার ভাই লিখেছিল।
এখান থেকেও অনেকেই সরে গিয়েছিল। শুধু জলেশ্বরী কেন? আধিকোশা নদী পার হয়ে সব ঐ পারের গ্রামে যায়। মিলিটারি ফিরে যাওয়ার পর, বিহারীদের লুটের ভয়ে, তারপর মিলিটারি বলে যায়–যারা ঘরে ফিরবে না। তাদের ঘর জ্বলিয়ে দেওয়া হবে, সেই ভয়ে আস্তে আস্তে লোকেরা ঘরে ফিরে আসে। তারপর এই কয় মাস একেবারে কিছু না। মাঝে মাঝে শোনা যায়, ইন্ডিয়া যারা গেছে, তারা যুদ্ধ করতে আসছে। কিন্তু সে রকম কিছু দেখা যায় না। হঠাৎ আজ খুব ভােরবেলায়, আমি যা শুনলাম, জলেশ্বরী ডাকবাংলা, তার ঠিক আগে যে খাল আছে, আধিকোশায় গিয়ে পড়েছে, সেই খালের ওপর রেল-পুল, সেখানে ডিনামাইট ফাটে। তারপর আর কিছু শুনি নি।
অনেকে বলে মিলিটারি জলেশ্বরীতে গুলি করেছে।
মিলিটারি ছিল ওখানে?
গত মাসে তারা একটা ক্যাম্প করে। এর আগে ছিল না।
লোকজন?
কেউ কিছু বলতে পারে না।
বুকের ভেতরে শীতল বরফ অনুভব করে বিলকিস। আলতাফের কথা একবার মনে পড়ে যায়। এই কমাসের অনুপস্থিতিতে আলতাফের চেহারার চেয়ে তার অস্তিত্বটাই প্রথম উজ্জলতরভাবে মনে পড়ে।
মা ভাই বোনকেও সে আর কোনোদিন কি দেখতে পাবে না?
সুটকেস হাতে নিয়ে বিলকিস উঠে দাঁড়ায়।
ইস্টিশান মাস্টার হাত তুলে যেন বাধা দেবার চেষ্টা করেন। পরমুহূর্তেই আবার হাত ফিরিয়ে নেন তিনি।
তা হলে কী করবেন?
জলেশ্বরীতে যাব।
পাঁচ মাইল হাঁটা।
আমাকে যেতেই হবে। মাস্টার সাহেব একই সঙ্গে উদ্বেগ এবং বিস্ময় বোধ করেন। হেঁটে যেতে পারবেন?
দেখি।
একা আপনি!
একটু থমকে যায় বিলকিস। কী করব?
একটা লোকটোক না হয়, কিন্তু জলেশ্বরীতে এ অবস্থায় কেউ যেতে চায় কি না, সন্ধ্যাও হয়ে আসছে।
এই কমাসে নিজের সাহস এত বড় গেছে, বিলকিস আর অবাক হয় না।
আমি যেতে পারব।
প্লাটফরমে দাঁড়িয়ে রেললাইনের উত্তর যাত্রার দিকে সে ক্ষণকাল তাকায়। এখনো রোদের উজ্জ্বলতা আছে। ঘন গাছপালার ভেতরে লাইনটা হঠাৎ বাক নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। লাইনের ভেতরে দুপা দিয়ে স্থির হয়ে আছে শাদা একটি গরু। আকাশে এক চিলতে খাড়া ধূসর মেঘ। বারুদের ধোঁয়ার মতো মনে হয়।
বিলকিস রেলের পাশে সরু পায়ে চলার পথ দিয়ে জলেশ্বরীর দিকে এগোয়।