০১. কত দেরি হয়ে গেল

কত দেরি হয়ে গেল ভুলো তবু বাড়ি এল না, সন্ধ্যে হয়ে গেল, রাত হয়ে গেল। দাদু তাস খেলতে যাবার আগে বললেন, খুঁজতে যাবার কিছু দরকার নেই, কেউ তোদের নেড়িকুত্তো চুরি করবে না, খিদে পেলে সুড়সুড় করে নিজেই বাড়ি ফিরবে দেখিস।

রুমুর গলার কাছটা কীরকম ব্যথা ব্যথা করছিল; কখন ভুলোর খাবার সময় হয়ে গেছে, বারান্দার কোনায় ভুলোর থালায় দুধরুটিগুলোকে নীলমতো দেখাচ্ছে, পিঁপড়েরা এসেছে।

জানলার শিকের সঙ্গে ভুলোর চেনের আগায় কলারটা আটকানো ছিল। খুব মজার দেখাচ্ছিল। ভারি দুষ্টু ভুলো। কলার আঁটবার সময় কান খাড়া করে গলা ফুলিয়ে রাখে; তারপরে যেই-না সবাই চলে যায়, কান চ্যাপটা করে, গলা সরু করে, কলারের মধ্যে থেকে সুড়ুত করে বেরিয়ে পড়ে দে ছুট।

কেন ভুলো পালিয়ে যায়?

দাদা চেন কলার আর একটা বেঁটে লাঠি হাতে নিয়ে গেটের কাছে দূরে রেলের লাইনের ওপারের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। রুমুকে দেখেই রেগে গেল।

যা, ঘরে যা, এখানে কেন এসেছিস? যা ভাগ।

দাদা, বোধ হয় সে সাঁওতাল গ্রামে গেছে। ওরা যদি মারে?

বেশ হবে, ঠিক হবে, আমি খুব খুশি হব, পালানো বেরুবে, আসুক-না বাড়ি, পিটিয়ে মজা বের কচ্ছি। যা, পালা, ছিঁচকাঁদুনে!

রুমু আবার পিছনের বারান্দায় গেল।

এমনি সময় ভুলো বাড়ি এল। অন্যদিনের মতো সামনের গেট দিয়ে দৌড়ে দৌড়ে নয়। রান্নাঘরের পেছন দিয়ে, দেয়াল ঘেঁষে ঘেঁষে ল্যাজ নামিয়ে, কান ঝুলিয়ে, আড়চোখে তাকাতে তাকাতে, স্রেফ একটা চোরের মতো এসেই রুমুর পায়ে মুখ রেখে ল্যাজ নাড়তে লাগল। রুমুর মুখে কথাটি নেই, গা শিরশির করতে লাগল। জানলা দিয়ে খাবার ঘর থেকে আলো এসে ভুলোর গায়ে পড়েছে, সেই আলোতে রুমু দেখতে পেল ভুলোর ঠোঁটের কোণে ছোট্ট একটা হলদে পালক গুঁজে রয়েছে। সোনার মতো জ্বলজ্বল করছে।

রুমুর বুকটা ধড়াস করে উঠল, এক দৌড়ে দাদার কাছে গেল।

দাদা, ভুলোর ঠোঁটের কোনায় সেইরকম হলদে পালক।

যাঃ, দূর, হলদে পাখি ঝগড়ুর বানানো।

না, দাদা, তুমি দেখবে এসো।

ভুলো মাটির ভাঁড় থেকে জল খাচ্ছিল। হলদে পালকটা ভাঁড়ের জলে ভাসছিল। ভিজে একটু চুপসে গিয়েছে, কিন্তু তখনও সোনার মতো জ্বলজ্বল করছে। বোগি পালকটা তুলে, মুছে, পকেটে রেখে দিল।

কারো মুখে কথা সরে না। কোথাও একটু আওয়াজ নেই, শুধু মাথার উপর একটা রাতের পাখির ডানা নাড়ার ঝটপটি, আর দূরে কুসিদিদিদের পোড়ো জমির ঝাউ গাছের পাতার মধ্যে দিয়ে শোঁ শোঁ করে বাতাস বইছে, আর রুমু বোগির বুকের ধুকপুকি। এবার তবে তো ঝগডু মিথ্যা কথা বলেনি। দারুণ গাঁজাখুরি গল্প বলে ঝগড়ু। দুমকায় ওদের গাঁয়ে নাকি হয় না এমন আশ্চর্য জিনিস নেই। সেখানে সীতাহার গাছের পিছনে সূর্য ডুবে গিয়ে যেই তার লাল আলোগুলোকে গুটিয়ে নেয়, অমনি নাকি আকাশ থেকে সোনালি রঙের অবাক পাখিরা বটফল খেতে নেমে আসে। তারা ডাকে না, কারণ তাদের গলায় স্বর নেই। তারা মাটিতে বা গাছের ডালে বসতে পারে না, কারণ তাদের পা নেই। এমনি উড়ে ফল খেয়ে আবার আকাশে চলে যায়। কিন্তু দৈবাৎ যদি একটা পাখির ডানা জখম হয়ে সে মাটিতে পড়ে যায়, আর ঠিক সেই সময় যদি তাকে শেয়ালে কি কুকুরে খেয়ে ফেলে, তাহলে সেই শেয়াল কি কুকুর মানুষ হয়ে যায়। তাই শুনে বোগি বলেছিল, যাঃ, ঝগড়ু যত রাজ্যের বাজে কথা! জানোয়ার কখনো মানুষ হয়?

বিশ্বাস না করতে পার, বোগিদাদা, কীই-বা জান তুমি? জানলে কী আর রোজ রোজ মাস্টারমশাইয়ের কাছে বকুনি খেতে। কিন্তু আমাদের দুমকাতে ওইরকম অনেক মানুষ আছে। তাদের দেখলেই চিনতে পারা যায়। কারণ সবটা মানুষের মতো হলেও, চোখটা হয় পাটকিলে রঙের, আর কানের উপরদিকটা হয় একটু ছুঁচলো। নেই ও-রকম মানুষ তোমাদের এখানেও? কেউ চোখে দেখে না ও পাখি, কিন্তু ওই মানুষদের দেখলেই সব বোঝা যায়।

পণ্ডিতমশাইয়ের গিন্নি রোজ সন্ধে বেলায় দাদুর বাড়ির পাঁচিলের তলা থেকে আমরুল পাতা তুলতে আসেন। মাঝে মাঝে আমরুল তুলতে তুলতে চোখ উঠিয়ে রুমুকে বলেন, আয় তুলে দে, আমার গেঁটে বাত, এসব তোদের কচি হাড়ের কাজ। ততক্ষণে সূর্য তাল গাছের গুঁড়ির কাছে নেমে গেছে, ছায়াগুলো লম্বা হয়ে গেছে। পণ্ডিতমশাইয়ের গিন্নির চোখে আলো পড়ে, চকমকি পাথরের মতো ঝকঝক করে; পাটকিলে রঙের চোখের মণি, তার মধ্যে সোনালি রঙের সবুজ রঙের ডুরি ডুরি কাটা মনে হয়; মাথার কাপড় খসে যায়, ঝিনুকের মতো পাতলা কান, উপর-দিকটা গোল না হয়ে খোঁচামতন।

ও-রকম লোক এখানেও আছে।

দিদিমা এসে বলেন, ওঃ, চাঁদের তাহলে বাড়ি ফেরার মর্জি হয়েছে! কে জানে হয়তো এবার এ বাড়ির অন্য লোকদেরও পড়াশুনো খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি হবে। মেজো মামা সরভাজা এনেছে, জানিস তোরা?

ধোঁয়া ধোঁয়া গন্ধ সরভাজা। রুমু তখুনি চলে গেল। বোগি অনেকক্ষণ ভুলোর নাক, মুখ, চোখ পরীক্ষা করে দেখল। কই, কিছু তো হয়নি। তারপর খুব আঁটো করে কলার লাগিয়ে সরভাজা দেখতে গেল।

রাতে শোবার সময় মশারি টানাতে টানাতে ঝগড়ু বলল, বোগিদাদা, ভুলো কিছু খেল না, চটের উপর শুয়ে খালি ঘুমুচ্ছে।

বোগি রুমু একবার ঝগড়ুর দিকে তাকাল, কিন্তু কিছু আর বলা হল না। ঝগড়ুটা ভারি বাজে বকে, এখনি দাদু-টাদুকে বলে একাকার করবে।

ঝগড়ু বলল, কে জানে, যা পাজি কুকুর, ঘরের ভাত মুখে রোচে না, কোত্থেকে কী খেয়ে এসেছে কে জানে!

বোগি শুধু বলল, থাক চেনে বাঁধা। আজ রাত্রে ছাড়িস না ওকে।

রুমু বলল, কিন্তু রাতে যদি ক্যাঁওম্যাঁও লাগায়? দাদু যদি রাগ করে?

ঝগড়ু, মশারির দড়িটাকে দাঁত দিয়ে কামড়ে টান করে ধরে, দু-হাতে গিঁট বাঁধতে বাঁধতে বলল, কম বদমাশ ওই কুত্তো! সব বাড়ির কুকুর সারাক্ষণ বাঁধা থাকে, আর এনাকে একটু বাঁধলেই পাড়া মাত করবেন! ইদিকে ছাড়লে আবার একে কামড়ে, ওকে কামড়ে একাকার করবেন!

রুমু বলল, আহা, রুটিওলা যে ওর ল্যাজ মাড়িয়ে দিয়েছিল।

তোমাদের দাদুর বন্ধু অনিমেষবাবুও ল্যাজ মাড়িয়েছিল?

বোগির বিরক্ত লাগছিল।দেখো ঝগড়ু, বাজে বোকো না। অনিমেষবাবু কালো জোব্বা গায়ে দিয়ে এসেছিলেন। জানোই তো কালো জোব্বা দেখলে ভুলো রেগে যায়।

বেশ, বোগিদাদা, বেশ! তোমাদের কুকুরের জন্য তোমাদের হাতে হাতকড়া পড়লে আমার আর কী হবে, বলো!

ঝগড়ু চলে গেলে, বোগি অনেকক্ষণ চুপ করে শুয়ে রইল। তারপর একবার উঠে, টেবিল থেকে টর্চটা নিয়ে, গুটিগুটি গিয়ে ভুলোকে দেখে এল। ভুলো নাক ডাকাচ্ছে!

আবার এসে শুতেই রুমু চাপা গলায় ডাকল, দাদা!

চুপ কর। ঘুমো। ঠিক আছে।

পরদিন সকালে দাঁত মাজতে মাজতে পিছনের বারান্দায় গিয়ে রুমু বোগি দেখে, জানলার শিকের সঙ্গে ভুলোর চেন বাঁধা, তার আগায় কলার আটকানো, কিন্তু ভুলো নেই।

নেই তো নেই। চা খেতেও এল না। বোগি সে-বিষয় কোনো কথা না বলে বাড়ির চারপাশটা একবার খুঁজে এল। রুমু রান্নাঘরের পিছনে ঝগড়ুকে একটু বলতে গিয়েছিল। ঝগড়ু চেঁচিয়ে মেচিয়ে এক কাণ্ড করে বসল। আমি যেতে পারি নেড়িকুত্তো খুঁজতে এই সাত সকালে, যদি তোমরা দুজন কুয়ো থেকে জল তুলে স্নানের ঘরের চৌবাচ্চা ভরে, রান্নাঘরের ট্যাঙ্কি ভরে, চারাগাছে জল দিয়ে–দিদিমাও রান্নাঘর থেকে ডেকে বললেন, আচ্ছা, নেড়িকুত্তো কখনো পোষ মানে শুনেছিস? হাজার চান করিয়ে, পাউডার মাখিয়ে, কানা-তোলা থালায় করে খেতে দিস, সেই এর বাড়ি ওর বাড়ি আঁস্তাকুড়ের সন্ধানে ঘুরে বেড়াবে–যা দিকিনি এখন, সকাল বেলাটা হল গিয়ে সংসারের চাকায় তেল দেবার সময়।

রুমু ঘরে ফিরে এল। বোগি কোলের উপর বই নিয়ে বসে আছে।

দাদা, হলদে পালকটা দেখি।

অদ্ভুত পালকটা। অন্য পালকের রোঁয়াগুলো একসঙ্গে সেঁটে মোলায়েম হয়ে থাকে। হলদে পালকটার রোঁয়াগুলো কোঁকড়া, রোদ লেগে ঝকমক করছে, হাওয়ায় ফুরফুর করছে। গোড়াটা সাদা কাচের একটা ফুলের মতো।

রুমুর একটু ভয় ভয় করতে লাগল। এমনি সময় ওরা হাসিটা শুনতে পেল। ঝগড়ুর ঘরের ওদিক থেকে খিলখিল করে কে হাসছে। বোগি রুমু তখুনি এক দৌড়ে সেইখানে।

ঝগড়ুদের দাওয়ায় একটা ছেঁড়া মাদুরের উপর একটা ছোট্ট কালো ছেলে বসে আছে। এত মোটা যে পেটে ভাঁজ ভাঁজ পড়ে গেছে, মাথায় কয়েকগাছি কোঁকড়া চুল, খালি গা, একগাল হাসি, পাটকিলে রঙের চোখ আর বড়ো বড়ো দুটো কান, মাথা থেকে পাখনার মতো আলগা হয়ে রয়েছে, উপর দিকটা একটু ছুঁচলো।

ঝগড়ুর বউ তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ছেলেটাকে টপ করে কোলে তুলে নিয়ে বলল, আমার ভাইয়ের ছেলে, এখেনে কয়েক দিন থাকবে। তোমাদের এখন পড়ার সময় না?

রুমু জিজ্ঞেস করল, কখন এল? কাল তো ছিল না। কোত্থেকে এল?

বউ বলল, আজ ভোরে এসেছে দুমকা থেকে। তোমরা যাও, তোমাদের দিদিমা রাগ করবে। চাকর-বাকরদের সঙ্গে বেশি মেলামেশা ভালো নয়।

বোগি দাওয়ার উপর বসে পড়ল। কেন ভালো নয়?

বউ একটু রেগে গেল। দেখ, বোগিদাদা, এখন আমার রাঁধাবাড়ার সময়। অন্য সময় এসো।

ছেলেটাকে দাও, এক্ষুনি চলে যাচ্ছি।

অ মা! ছেলে নিয়ে তুমি কী করবে?

না দিলে কিছুতেই যাব না।

ঝগড়ুর বউ রেগেমেগে দুম করে ছেলেটাকে মাটিতে বসিয়ে দিয়ে ঘরে চলে গেল।

বোগিও অমনি তাকে তুলে নিয়ে দে দৌড়।

বারান্দায় তাকে ছেড়ে দিতেই সে হামাগুড়ি দিয়ে সটান ভুলোর থালার কাছে গেল। তারপর খালি থালা দেখে তার রাগ দেখে কে!

রুমু একটু রুটি এনে দিতে তবে থামল। বোগি আস্তে আস্তে ডাকল, ভুলো, ভুলো, ভুলো!

ছেলেটা খিলখিল করে হেসে, হামা দিয়ে কাছে এসে, ভিজে ভিজে জিব দিয়ে বোগিকে চেটে দিল।

রুমু কাঁদতে লাগল। গোলমালের মধ্যে ঝগড়ু এসে ছেলেটাকে বারান্দা থেকে নামিয়ে মোমলতার তলায় ছেড়ে দিল।

তোমরা এইখেনে খেলা করো দিদি। বারান্দার উপরে দিদিমা দেখলে রাগ করবে।

ঝুরঝুর করে মোমলতার ফুল ঝরে পড়ছে, তাই দেখে ছেলেটা আহ্লাদে আটখানা। মুঠো মুঠো তুলে মুখে পুরতে চায়! শিশু গাছে দলে দলে বুনো হাঁস এসে বসেছে, দেখে মনে হয় বুঝি বড়ো বড়ো সাদা ফুলে গাছ ভরে গেছে। তাই দেখে খিলখিল করে ছেলেটা হেসে ওঠে।

অমনি যেন নিশানা পেয়ে হাঁসের ঝাঁক একসঙ্গে আকাশে উড়ে পড়ে। আকাশের দিকে দুই হাত তুলে ছেলেটা কাঁদতে থাকে।

রুমু বলল, দাদা, আগেই তো ভালো ছিল।

বোগি ছেলেটাকে খুব আস্তে একটা ঝাঁকি দিয়ে বলে, কেন খেইছিলি হলদে পাখি? কে বলেছিল খেতে?

ছেলেটার কান্না থেমে যায়, এই বড়ো বড়ো ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে।

রুমু হঠাৎ উঠে পড়ে, ওকে বুকে জাপটে ধরে একেবারে ঝগড়ুর ঘরে বউয়ের কাছে দিয়ে আসে।

বউয়ের হাঁড়িতে টগবগ করে ভাত ফুটছে, বুদবুদ উঠছে, ফেটে যাচ্ছে, ফুটন্ত জল ছিটুচ্ছে, বউ ভারি খুশি!

কী, এরই মধ্যে শখ মিটে গেল? আগেই জানি।

ওখানে আর দাঁড়ানো নয়। ঘরে এসে দেখে বোগি পালকটাকে কুচি কুচি করে ছিঁড়ে ফেলেছে। বোগি বলল, ধেত। নেড়িকুকুর পুষতে হয় না। ওদের জাত খারাপ, পোষ মানে না, যা-তা খায়। তার চেয়ে বিলিতি কুকুর ঢের ভালো। সেজো মামা একটা দেবে, চাইলেই দেবে। তার জন্য নতুন লাল কলার কিনব। এটাকে ফেলে দে।

রুমু অমনি জানলা গলিয়ে কলারটা বাইরে ফেলে দিল। নেড়িকুত্তোর কলার আবার কে পরবে?

বোগি উঠে দাঁড়াল।

দেখ রুমু, তারপর যদি কখনো ভুলোটা ফিরে আসে, খবরদার ঢুকতে দিবিনা কিন্তু। ঠেলে বের করে দিবি।

দাদা, ভুলোকে ঠেলে দিলে যে আবার দৌড়ে দৌড়ে ফিরে আসে! মনে হয় ঠেলে দিলে খুশি হয়।

তা হলে বেঁটে লাঠি দিয়ে মেরে তাড়াবি।

ওকে মারলে ও নিশ্চয় আমাকে কামড়ে দেবে। কক্ষনো যাবে না। দেখ, কলারটা বরং আবার তুলে নিয়ে আয়। ছেলেটার গলায়ও মন্দ দেখাবে না। ও কী, এ-সময়ে শুয়ে পড়লি যে? সর, আমিও সোব, আমার শরীর খারাপ লাগছে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *