ব্রাহ্ম পর্ব
মধ্য পর্ব
প্রতিসর্গ পর্ব
1 of 3

হোমাবসানে ষোড়শোপচার বর্ণন

।। হোমাবসানে ষোড়শপচারবর্ণনম্।।

।। হোমাবসানে ষোড়শোপচার বর্ণন।।

এই অধ্যায়ে নিত্য ও নৈমিত্তিক হোমাবসানে ষোড়শোপচার বর্ণনা করা হয়েছে।।

নিত্যনৈমিত্তিকং চৈব যাগাদৌ চ সমাপ্তকে। হোমাবসানে প্রজপেদুপচারাংঞ্চ ষোড়শ।।১।।

শ্ৰী সূতজী বললেন, যাগাদি সমাপ্ত হলে নিত্য ও নৈমিত্তিক জপ করবে এবং হোমাবসানে ষোড়শোপচারের দ্বারা জপ করা উচিৎ।।১।।

দদ্যাৎ সমীরণং পশ্চাৎ পীঠপূজাং সমাচরেৎ। গৃহীত্বা রক্তপুষ্পং চ ধ্যায়েদ্বহ্নি যথাবিধি।।২। ইষ্টং শক্তিস্বস্তিকাভীতি মুচ্চৈদীঘৈদোভিধারয়ন্তং বরাত্তম। হেমাকল্পং পদ্মসংস্থং ত্রিনেত্র ধ্যায়ে বহ্নি বদ্ধমৌলিং জটাভিঃ।।৩।। পূর্বাদিদ্বারদেশে কামদেবং শতক্রতুম্। বরাহং যন্মুখং চৈব গন্ধাদ্যৈঃ সাধু পূজয়েৎ।।৪।। আবাহ্য স্থাপয়েৎ পশ্চাদষ্টো মুদ্রাঃ প্ৰদশয়েৎ। দত্ত্বাসনং স্বাগতং চ দদ্যাৎপাদ্যাকিত্রয়ম্।।৫।। অতঃ পূর্বাদিপাত্রে, মাবতা চ হুতাশনম্। সুবর্নবর্নমমলং সমিদ্ধং সর্বতোমুখম্।।৬।। মহোদবং মহাজিহুমাকাশেত্বেন পূজয়েৎ। তারকাদীন সমাপ্তে চ গন্ধৈঃ পুষ্পেঃ পৃথগবিধৈঃ।।৭।।

পবন পূজা করে পশ্চাতে পীঠ পূজা করবে। এরপর রক্ত পুষ্প গ্রহণ করে অগ্নির যথাবিধি ধ্যান করবে।।২।।

অগ্নিদেবের ধ্যান হল এইরূপ–অগ্নিদেব তাঁর দীর্ঘ হস্তে ইষ্ট, শক্তি, স্বস্তিক এবং অভীতি ধারণ করে আছেন। বরদানকারী, স্বর্ণ দ্বারা সজ্জিত, পদ্মাসন, ত্রিনেত্রযুক্ত এবং বদ্ধমৌলি অগ্নিদেবের ধ্যান করা উচিৎ।।৩।।

পূর্বাদি দিবা সকলের মধ্যে কামদেব, শতক্রতু, বরাহ, যন্মুখ প্রমুখ দেবগণকে গন্ধাদি দ্বারা পূজা করা উচিৎ।।৪।।

প্রথমে আবাহন করে পরে তাঁদের স্থাপনা করে, পুনরায় অষ্টমুদ্রা প্রদর্শন করা কর্তব্য। আসন ও স্বাগত জানিয়ে অর্ঘ্যপাদ্য ও আচমনীয় তিন দেবতাকে প্রদান করবে।। ৫।।

এই জন্য পূর্বাদি পাত্রে সুবর্ণবর্ণের অমল হুতাশন সর্বতোমুখ সমিদ্ধ মহোদর এবং মহাজিহ্বা অগ্নিদেবকে আকাশত্বের দ্বারা পূজন করতে হবে এবং নানাবিধ গন্ধ ও পুষ্পের দ্বারা তারকাদির পূজাও করতে হবে।।৬-৭।।

তত্রৈব জিহ্বাস্ত্রিবিধা ধ্যায়েন মন্ত্র পুরঃসরা। বক্ষ মাত্ৰেন মন্ত্ৰেন উপচারৈরনন্তরম্।।৮।। ত্বমাদি সর্বভূতানাং সংসারার্ণবতারকঃ। পরমজ্যোতীরূপস্তুমাসনং সফলী কুরু।।৯।। দদ্যাদাসনমেতেন পুষ্পগুচ্ছয়েন তু। পুটাজ্ঞলিং ততো বদ্ধা প্‌চ্ছেৎ কুশলপূর্বকম্।।১০।। বৈশ্বানর নমস্তেহস্ত নমস্তে হব্যবাহন। স্বাগতং তু সুরশ্রেষ্ট শান্তি কুরু নমোহস্তুতে।।১১।। নমস্তে ভগবন দেব আপোনরায়নাত্মক সর্বলোকহিতার্থায় পাদ্যং চ প্রতিগৃহ্যতাম্।।১২।। নারায়ন পরং ধাম জ্যোতীরূপ সনাতন। গৃহাণাধ্যং ময়া দত্তং বিশ্বরূপ নমোহস্তু তৈ।।১৩।।

সেখানে তিনপ্রকার জিহ্বামন্ত্র অগ্রে ধ্যান করতে হবে। পূর্বে বর্ণিত মন্ত্রের দ্বারা ধ্যান করবে এবং এরপর উপাচারের দ্বারা ধ্যান করবে।।৮।।

এরপর অগ্নিদেবের উদ্দেশ্যে বলবে, হে অগ্নিদেব আপনি সমস্ত প্রাণীদের আদি স্বরূপ এবং এই সংসার সাগরের পারকারী। আপনি পরমজ্যোতি স্বরূপ। আপনি কৃপাপূর্বক এই আসন সফল করুন। এই মন্ত্রে অগ্নিদেবকে আসনদান পূর্বক পুষ্পের দ্বারা তিনবার পুষ্পাঞ্জলি প্রদানপূর্বক কুশল জিজ্ঞাসা করতে হবে।।৯-১০।।

হে বৈশ্বানর, হে হব্যবাহন, আপনাকে প্রণাম জানাই। হে সুরশ্রেষ্ঠ, আপনাকে, স্বাগত। আপনি শান্তিবিধান করুন।।১১।।

হে ভগবান্, হে দেব, হে ভগবান্, আপনি নারায়ণাত্মক। আপনি সমস্ত লোকের হিতের জন্য এই পাদ্য গ্রহণ করুন।।১২।।

হে জ্যোতি স্বরূপ, হে সনাতন, আপনার নারায়ণপর। আপনি আমার দ্বারা সমর্পিত এই অর্ঘ্য গ্রহণ করুন। আপনার প্রতি আমার প্রণাম স্বীকার করুন।।১৩।

জগদাদিত্যরূপেন প্রকাশয়তি যঃ সদা। তস্মৈ প্রকাশরূপায় নমস্তে জাতবেদসে।। ১৪।। ধনজ্ঞয় নমস্তেহস্তু সর্বপাপপ্ৰনাশন। স্থানীয়ং তে ময়া দত্তং সর্বকামার্থ সিদ্ধয়ে।।১৫।। তিাশনং মহাবাহো দেবদেব সনাতন। শরণং তে প্রযচ্ছামি দেহি মে পরমং পদম্।।১৬।। জ্যোতিযাং জ্যোতীরূপস্তুমনাদিনিধনাচতে। ময়া দত্তমলং কারমলং কুরু সমোস্তু তে।।১৭।। দেবীদেবা মুদং যান্তি যস্য সম্যবং সমাগমাৎ। সর্বদোষোপশান্তয়র্থং গন্ধোহয়ং প্রতিগৃহ্যতাম্।।১৮।। ত্বং বিষ্ণুস্ত্বং হি ব্ৰহ্মা চ জ্যোতিষাং গতিরীশ্বর। গৃহান পুষ্পং দেবেশ সানুলেপং জগদভবেৎ।।১৯।। যিনি সদা আদিত্য স্বরূপ এই জগতকে প্রকাশিত করেন, সেই প্রকাশরূপ জ্যোতিকে আমার প্রণাম।।১৪।।

হে ধনঞ্জয়, হে সর্বপাপনাশকারী আপনাকে আমার প্রণাম। সর্বকামনা সিদ্ধির জন্য এই স্নানীয় আপনাকে সমর্পিত করছি।।১৫।।

হে হুতাশন, হে মহাবাহো, হে দেবদেব, হে সনাতন, আমি আপনার শরণ গ্রহণ করছি। আপনি আমাকে পরমপদ প্রদান করুন।।১৬।।

হে অনাদি নিধনচ্যুত, আপনি জ্যোতির জ্যোতিস্বরূপ। মৎ প্রদত্ত এই অলংকার গ্রহণ করে অলংকৃত হোন। আপনাকে আমার প্রণাম।।১৭।।

যাঁর সমাগমে দেব-দেবীগণ প্রসন্নতা প্রাপ্ত হন, সমস্ত দোষের উপশান্তিকারী অগ্নিদেব এই গন্ধ গ্রহণ করুন।।১৮।।

হে ঈশ্বর, আপনি বিষ্ণু, ব্রহ্মা এবং আপনি জ্যোতির গতি। হে দেবেশ এই পুষ্প গ্রহণ যাতে এই জগৎ সানুলেপন হয়ে যায়।।১৯।।

দ্বেবতানাং পিতৃনাং চ সুখমেকং সনাতনম্। ধূপোহয়ং দেবদেবেশ গৃহ্যতাং মে ধনজ্ঞয়।।২০।। ত্বমেকং স্বভূতেষু স্থাবরেষু চরেষু চ। পরমত্মা পরাকারঃ প্রদীপঃ প্রতিগৃহ্যতামা।।২১।। নমোহস্তু যজ্ঞপতয়ে প্রভবে জাতবেদসে। স্বলোকহিতার্থায় নৈবেদ্যং প্রতিগৃহ্যতাম্।।২২।। দৃতাসন নমস্তুভ্যং নমস্তে রূক্মবাহন। লোকনথ নমস্তে হস্ত নমস্তে জাতবেদসে।।২৩।। ইত্যানেনতু মন্ত্রেণ দদ্যাদ্দিব্যেহপ্যধীতকম্। সর্বস্বং যজ্ঞসূত্রং চ পরমান্নং সমাক্ষিকম।।২৪।।

হে দেবেশ, হে ধনঞ্জয়, দেবতাও পিতৃগণকে সুখপ্রদানকারী এই সনাতন ধূপ গ্রহণ করুন।।২০।।

এই প্রাণীসকলের মধ্যে স্থাবর ও জঙ্গম যাই হোক না কেন আপনিই এক পরমাত্মা ও পরাকার। আপনি আমার দ্বারা নিবেদিত এই প্রদীপ গ্ৰহণ করুন।।২১।

হে যজ্ঞপতি প্ৰভু জাতবেদা আপনাকে আমার প্রণাম। আপনি সমস্ত লোকের হিত সম্পাদনকারী আমার এই নৈবেদ্য গ্রহণ করুন।।২২।।

হে হুতাশন, আপনাকে আমার প্রণাম। হে রুক্মবাহন, আপনাকে আমার নমস্কার। হে ত্রিলোকপতি আপনাকে আমার নমস্কার। হে জাতবেদা আপনি আমার প্রণাম গ্রহণ করুন।।২৩।।

এই প্রকার মন্ত্রের দ্বারা দিব্যতে অধীতক দেওয়া উচিৎ। সর্বস্ব এবং যজ্ঞসূত্র এবং সাক্ষিকের সহিত পরমান্ন সমর্পিত করা উচিৎ।।২৪।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *