পটলা সমগ্র ১
পটলা সমগ্র ২

হোঁৎকার দেবসেবা

হোঁৎকার দেবসেবা

পটলাকে নিয়েই ফ্যাসাদে পড়ি আমরা। এমন দু’একজন আছে যারা সব সময়েই নিজেদের বুদ্ধির প্যাঁচে জড়িয়ে পড়ে এক একটা কাণ্ড বাধিয়ে তোলে। আর বিচিত্র সে সব কাণ্ড।

পটলাও তেমনি গোছের। পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের বাকি চারটি, মামা আর ওই পটলাকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি। মাঝে মাঝে মনে হয় ওসব ঝকমারিতে যাব না, রামচন্দ্র হেন অবতার বিশেষ ব্যক্তিও লক্ষ্মণের মত ভাইকে বর্জন করেছিলেন। সেদিন পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের জরুরি মিটিং-এ হোঁৎকাই বলেছিল।

—পটলার এগেনেস্টে এটেপ্ নিতি হবে। কিন্তু ওর এগেনেস্টে এটেপ নেওয়াও যা ডালে সে সেই ডাল কাটাও তাই। তাহলে পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের অস্তিত্বই থাকবে না। পটলা আমাদের কামধেনু। ক্লাবের ঝালমুড়ি-চা, নকুড়ের দোকানের চপ, কাটলেট, রামখেলাওনের ফুচকা, কালুয়ার কুপি মালাই প্রভৃতির বিল মেটায় সে। মাঝে মাঝে গ্র্যান্ড ফিস্টও হয় তার দৌলতে; আউটিং অর্থাৎ দেশভ্রমণও হয়ে যায় তার সুবাদে। এ হেন পটলাকে হটানো যায় না চট্ করে।

ইদানীং অবশ্য ক্লাবের একটা জবরদখলি জায়গায় রীতিমত পাথর-নুড়ি সাজিয়ে তেলসিন্দুর মাখিয়ে একটা শিশু বটের চারা লাগিয়ে জল দিয়ে একটা মিনি মন্দির করা হয়েছে। ফটিক-এর বাবা এ পাড়ার নামী পূজারি বামুন, তস্যপুত্র ফটিক সেখানে ফি শনিবার শনিপুজোর পত্তন করেছে।

জায়গার মালিক শাহজির বিরাট পুরোনো লোহা-লক্করের কারবার, সে এসে দেখে জায়গা আর নেই এখন দেবস্থান। ফলে চেষ্টা করে ও আর উৎখাত করতে পারেনি। ইদানীং ফি শনিবার বেশ আমদানিও হয়। প্রণামী পড়ে। অবশ্য প্রণামী পড়াটা খানিকটা ছোঁয়াচে রোগের মত। ওটাকে একবার সংক্রামিত করে দিতে হয়। চালু হয়ে গেলে প্রণামী তখন আপনা হতেই পড়ে।

শনিবার বড় পিতলের থালায় ফটিক আগেকার সঞ্চিত কিছু দশ নয়া—পাঁচ নয়া—দু চারটে সিকি ফেলে রাখে, মাঝে মাঝে আমরাও কিছু ফেলি, দেখাদেখি পথচারীরাও ফেলতে থাকে রাত্রিতে। পুজোর যখন হিসাব হয় দেখা যায় শশা বাতাসা কলার ঘটা খরচ দিয়েও বেশ কিছু থাকছে।

হোঁৎকা বলে—শনি ঠাকুর খুব জাগ্রত দেবতা। তয় মন্দির একখান্ বানাতি লাগবে।

আমি অবাক হই সে তো অনেক কাণ্ড । ফটিক বেশ ঝকঝকে পাথর বাঁধানো মন্দিরের স্বপ্ন দেখছে, সে বলে বাবার কৃপায় হয়ে যাবে রে! আর ওদিকে গানের ক্লাস খুলে ভজন টজন ও শেখানো হবে।

ফটিক গানও গায়, কি যে গায় বুঝি না—তবে গলা ফাটানো চিৎকার প্রায়ই শুনি। পটলাকেও দিনকতক তালিম দেবার চেষ্টা করেছিল। পটলারও মাঝে গাইয়ে হবার শখ চেপেছিল, কিন্তু ওর জিভটা মাঝে মাঝে টাকরায় আটকে গিয়ে বিতিকিচ্ছিরি কাণ্ড বাধে, সেবার রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে বসেছিল কুলেপাড়ার ফাংশনে। বেশ মানজা দিয়ে বসে সবে গান ধরেছে—তুমি কেমন ক্ করেগান ক্ রোহে গু—ব্যস তারপরই ব্রেক ফেল করে ‘গুণী’ অবধি আর পৌঁছতে পারে নি গু-গু-গু-

বারকতক পবিত্র আসরে ওই অপবিত্র নোংরা ব্যাপারটার কথা এক নাগাড়ে বলে যেতে পাবলিক ঘোর প্রতিবাদ করে তাকে উঠিয়ে দিল, কোনো বেরসিক পাবলিক পচা টমেটো ও ছুড়ে দেয়, ফলে কাজকরা ওর পাঞ্জাবিটা রঞ্জিত হয়ে ওঠে। সে এক কাণ্ড !

সেই থেকে পটলা ফটিকের কাছে নাড়া বেঁধে রীতিমত কালোয়াতি গান শিখতে থাকে। ওতে ভাষা টাষার বিশেষ ঝকমারি নেই ।

পটলাও বলে—ত—তা মন্দ হয় না। গোবরা বলে—তাহলে ডোনেশন তুলতে হবে, না হয় একটা যাত্রা গান লাগিয়ে দে মন্দির নির্মাণকল্পে স্ট্যাম্প দিয়ে পোস্টার করে। গোবরা যাত্রার দলের খুব ভক্ত। ক্লাবের থিয়েটারে রাজপুত্র, নায়ক টায়কের পার্ট করে।

হোঁৎকা বলে—এপিমেট কইরা আনছি। কি করে পটলা—মন্দির হইবো? পটলা আমাদের শেষ আশ্রয়। মন্দির, বিদ্যালয় — সঙ্গীত কলালয়টয় করবে পঞ্চপাণ্ডব ক্লাব—। পাড়াতেও এর মধ্যে খবর ছড়িয়ে যায়।

কুলেপাড়ার ক্লাবের ছেলেদের হিংসে ছিলই আমরা দিব্যি কায়দা করে জায়গা—মিনিমন্দির শনিপূজা করে ক্লাবের আমদানি বাড়িয়ে এবার বিদ্যালয়-টিদ্যালয় গড়ার কথা ভাবছি, তারা ব্যাপারটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করে—ওসব ফোরটোয়েনটি ব্যাপার।

এই নিয়ে সেদিন গোলকবাবুর রকে হোঁৎকা—ওদের সঙ্গে দুচারটে কথা কাটাকাটি করে। পটলাও ছিল। তারও প্রেস্টিজে বাধে, অবশ্য কথা বেশি বলতে পারেনি সে। জিবটা ব্রেক ফেল করেছিল।

তবু বলে সে—সিওর হবে বি-বিদ্যালয় মন্দির! ওরা বলে-দ্যাখা আছে। ফোরটোয়েনটি করে জায়গা দখল করেছিস, লোক ঠকাচ্ছিস পুজোর নামে।

আমাদের ক্লাবের চত্বরে রীতিমত আলোচনা হয়। আমি বলি ছেড়ে দে ওদের কথা। আর ওসব করাও অনেক খরচার ব্যাপার ।

হোঁৎকা বলে—ওল্ড কজ, এর জন্যে ডোর টু ডোর ভিক্ষা করুম? গোবরা বলে—কোটো নাচাতে পারব না? ওতে আমি নাই।

মন্দির তাহলে হবে না। পটলাই আবার সেই ঝামেলা বাধিয়েছে। সে ওদের সামনে ঘোষণা করেছে—ওসব সিওর হবে।

ক’দিন চুপচাপই থাকি—হঠাৎ সেদিন পটলা, যেন খুশিতে বেলুনের মত ফুলে ফেঁপে উড়ে এসে পড়ে বলে সে।

—লা-লাইন কি-কিলিয়ার? মন্দির হবে সিওর। হোঁৎকা চুপসে গেছল। ফটিক তো আমাদের সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিয়েছে। কেবল কণিষ্ক জোর মন্তর আওড়ায়। গোবরা বিরসবদনে বসে থাকে। পটলার কথা শুনে হোঁৎকা বলে দেশজ ভাষায়।

—ইস্টপ! চুপ কর পটলা। আমাগোর গাছে তুইলা মই কাড়ছিস তুই? তর লগে নো কনেকশন্ ।

আমরা অবাক হই। পটলা বলে।

—ফটিক, ঝালমুড়ি নিয়ে আয়। আর ম-মন্দিরের ব্যাপার ও স্–স

আমি বলি-স্টপ হয়ে গেল ? পটলা এবার মরিয়া হয়ে বলে- নো! সেটেলড়। প-পাক্কা । ম-মন্দির হবে? ইউথ বি-বিদ্যালয়। পিসিমা রাজি—

ফটিক জয়ধ্বনি দেয়—জয় বাবা শনিমহারাজ। সবই তোমার কৃপা

পরে শুনে খেয়াল হয় তার। বলে সে।

-সুখবর শুনে ঝালমুড়ি স্রেফ –কি রে হোঁৎকা ?

হোঁৎকা বলে—যা রতনের দোকান থেকে গরম সিঙ্গাড়া আর টু পিস্ কইরা নলেনগুড়ের সন্দেশ আন্। সাথে চাও আনবি। প্যাট ঠান্ডা কইরা সব ভাবতি হইব।

পটলার এক পিসিমা থাকেন মেমারিতে। নেমে মাইল দশেক ভিতরে কোনো গ্রামে। বিরাট জমি জায়গার মালিক—আলু হয় পাহাড় প্রমাণ, নিজেদের কোল্ড স্টোরেজও আছে। বিরাট দিঘিও কয়েকটা। মাছ বিক্রি হয় বছরে পঞ্চাশ হাজার টাকার মত।

টাকার নাকি হিসেব নেই। পিসেমশাই মাটির মানুষ। পিসিমাই সব। আর খুব ভক্তিমতী তিনি। এর আগে গুরুদেবের মন্দির বানিয়ে দিয়েছেন, বৃন্দাবনের মঠে যত চাল আলু লাগে তামাম সাপ্লাই করেন। তিনি নাকি আশা দিয়েছেন পটলাকে—এসব করে দেবেন।

হোঁৎকা বলে—তর যাবার লাগবো। প্ল্যান-হিসাবপত্র লইয়া চল গিয়া হেই পিসিমার কাছে । ফটিক এহেন নৌকা ছাড়তে রাজি নয় ।

সে বলে—শুভস্য শীঘ্রম। মঙ্গলে ঊষা বুধে পা, আজই চল তাহলে ফিরে এসে জোর করে মহারাজের পুজো দেব ।

…ইদানীং শনিমহারাজের ভক্ত হয়ে উঠেছে ফটিক। বেলপাতায় সিন্দুর তেল এর পেস্ট—কপালেও কিছুটা লাগিয়েছে সে। আমরা পঞ্চপাণ্ডব চলেছি মেমারির দিকে।

ইস্টিশনে নেমে বাস মেলে, বরাত ভালো থাকলে ট্যাক্সিও মিলবে। তবু শুধাই, —ইস্টিশান থেকে এত দূর, অচেনা জায়গা—রাত হয়ে যাবে, কাল সকালেই চল— হোঁৎকা গর্জে ওঠে—কাওয়ার্ড! একটুকু পথ—হ্যোঁৎকার হঠাৎ মনে পড়ে ভাবার্থ সম্প্রসারণের একটা কবিতা। কবিতাটা বলে সে।

—ক্যান পান্থ ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ তারপরেই যথারীতি ভুলে গেছে। বললে-পারেন কি র‍্যা? পটলা সুর করে উদ্যম বি-বিহনে ক্ ক্

বাস তখন কুলেপাড়া ছাড়িয়ে শিয়ালদা চত্বরে এসে গেছে। আমার প্রপোজাল ওরা ভেবেও দেখল না, পটলার কবিতা তখনও হয়নি।

হোঁৎকা আউড়ে দেয়—নাম! বলি হাওড়া থেকে মেমারি হোঁৎকা বলে কথা কবি না! নো টক্! শিয়ালদহ ওই নৈহাটি দিয়া ব্যান্ডেল গিয়া ট্রেন ধরুম।

বৈকাল তখন হয় হয়! আষাঢ় মাসের দিন একটু বড়ই হয়। ব্যান্ডেল স্টেশনে নেমেছি তখনও বেলা একটু আছে। বর্ষায় মেঘগুলো ঘুরছে আকাশে, চারিদিকে মেঘভাঙা রোদ মাঝে মাঝে উঁকি মারে। আবার ঢেকে যায় মেঘের আড়ালে সূর্যের আলোটুকু।

মেমারি যাবার গাড়ির দেরি আছে। এদিকের প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে বসে আছি, হোঁৎকা বলে।—ফটিক! চা বিস্কুট আন গিয়া, আর এহানের কলাও ফাকেলাস! কিছু লইয়া আয়

গিয়া ।

মন দিয়ে কলা খাচ্ছি, পটলা বলে,—রাতে গিয়ে পি-পিসিমার পু-পুকুরের তাজা রুই মাছ এর ঝোল দিয়া গ-গোবিন্দ ভোগ চালের ভাত।

খিদেও লেগেছে। রুই মাছের মুড়িঘণ্ট—কালিয়া দিয়ে সুগন্ধি গোবিন্দভোগ চালের অন্ন-বাড়ির ঘৃত সহযোগে—কথাটা ভাবতে জিবে জল আসে। আর আশা আছে মন্দির বিদ্যালয় তৈরি হবে ।

গাড়ি আসছে। বর্ধমান লোকাল-ট্রেনে উঠতে যাব হঠাৎ পটলার চিৎকার শুনে চাইলাম। বেঞ্চের উপর ব্যাগটা ছিল-তাতে আমাদের জামা-প্যান্ট, টাকা পয়সা মায়, ট্রেনের টিকিটও ছিল, সবশুদ্ধ ব্যাগটাই হাওয়া হয়ে গেছে।

ব্যান্ডেল জংশন-এর এত মহিমা জানা ছিল না। এখানের চোরদের শিক্ষা কলকাতার চোরদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ওরা তাক্ বুঝে ঠিক মাল হাপিস্ করেছে। ওদিকে ট্রেন ছাড়ে ছাড়ে।

হোঁৎকা উঠে পড়েছে ট্রেনে—ওকে নিয়েই বোধহয় ট্রেন চলে যাবে। পটলা ওকে কি বলবে চেষ্টা করে। বোধহয় নেমে আসতেই বলছে, কিন্তু জিবটা ঠিক সময়েই বিটে করে টাকরায় সেঁটে গেছে।

পটলা তখন ছুটে গিয়ে ট্রেনে উঠেছে ওকে নামাবার জন্যই। আমরাও ফলো করেছি ট্রেনের কামরার মধ্যে। ইলেকট্রিক ট্রেনটা সিটি বাজিয়ে ফুলস্পিডে স্টেশন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বের হয়ে গেছে।

নামার কোনো পথই নেই। পটলা বলে কোনোমতে স-সব্বোনাশ হয়ে গেছে। ব-ব্যাগটা কে নিয়ে গেল।

আমরা ভাবছি। হোঁৎকা গর্জে ওঠে—তরে এ্যাক্ লাথি মাইরা ফ্যাইলা দিমু ট্রেন থেকে। ম্যাডাগাস্কার কোথাকার। এহন

পটলা সান্ত্বনা দেয়—পিসিমার ওখানে পৌঁছিলে স-সব ম্যানেজ হয়ে যাবে।

পাঁচজনের পকেট এর অবস্থা নিদারুণভাবে শূন্য। কুড়িয়ে বাড়িয়ে মোট সাড়ে চার টাকা একস্ট্রা ছিল, তাই বেরুলো ।

পটলা বলে—বাস ভাড়া হয়ে যাবে। তারপর পিসিমার ওখানে স-সব পাবি । আমি বলি–ট্রেনে যদি ধরে?

হোঁৎকা ক্রমশ ভেবেচিন্তে পথ করেছে। বলে সে।

—এ ট্রেনে চেক্‌ হইব না। চল গিয়া। ট্রেন তখনও দুদিকের সবুজ পাটক্ষেত—সদ্য কার্তিক ধানক্ষেতের বুক-চিরে চলছে। সন্ধ্যা নামছে—মেঘঢাকা আকাশ ছেয়ে এবার বৃষ্টি নেমেছে অঝোর বৃষ্টি।

—টিকিট? যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। টিকিট নেই আর এই সময় কি না হানা দিয়েছে টিকিট চেকার। হোঁৎকা বলে।

—ছিল স্যার? টিকিট চেকার পাঁচজনকে দেখছে। ফটিকের কপালে সিন্দুরের দাগ, পরনে গেরুয়া ধুতি—পাঞ্জাবি। ইদানীং শনি মহারাজের রেগুলার পুজো করে ও আধা সন্ন্যাসী হয়ে গেছে—-তাছাড়া পিসিমাকে মন্দির টন্দিরের কাজে নামাতে হবে তাই ফটিক এমনি জব্বর মেআপ নিয়ে বসেছে। টিকিট চেকার গুঁতোয়।—টিকিট ছিল তা গেল কোথায়? কি হে ছোকরা—তোমাদের মত টিকিটের কি ডানা পালক গজিয়েছিল? এ্যাঁ-

পটলা বলে—চ-চ-চ টিকিটচেকার গর্জে ওঠে—আবার ভেংচানো হচ্ছে? টিকিট বের করো—না হলে সিধে রেলওয়ে পুলিশের গারদেই পুরে দেব বর্ধমানে।

কোনো যাত্রী বলে।—দেখে তো ভদ্রঘরের ছেলে বলেই মনে হচ্ছে। অন্যজন বলে— পকেটে সার্চ করুন দাদা, ট্রেন ডাকাতির মতলবে ঘুরছে কি না? ছুরি—ভোজালি—বোমা -পিস্তল না বেরুয় ।

হোঁৎকা বলে—বিশ্বাস করুন চোর আমরা নই, চোরেই আমাগোর সব লইয়া গেছে ব্যান্ডেল ইস্টিশানে।

সে।

টিকিটচেকার গর্জে ওঠে ব্যান্ডেল ইস্টিশানের চোরদের এহেন অপবাদ শুনে। ধমকে ওঠে

– মিথ্যে কথা। নিজেরাই চোর কি না ঠিক নেই আবার ব্যান্ডেলের বদনাম দিচ্ছ। লজ্জা করে না। আমিও ব্যান্ডেলে থাকি।

সামনে স্টেশন আসছে। টিকিট চেকার বলেন।—নামো এখানেই। চলো—না হলে বর্ধমানে নিয়ে গিয়ে হাজতে পুরে দেব ।

কে বলে—তাই করুন দাদা। না হলে ডব্লু-টির যাত্রীদের সিধে করা যাবে না।

স্টেশনে গাড়ি থামতে চেকার সাহেব আমাদের টেনে নামিয়ে এবার বলে—কি আছে বের করো ?

হোঁৎকা বলে—ছোরা পিস্তল নেই স্যার। পটলা বলে—বি-বিলিভ মি স্যার চোর নই। চেকার সাহেব বলে—ওসব না, টাকা কি আছে বের করো জলদি। নাহলে—

ফটিক আমাদের সমবেত ফান্ডের চারটাকা পঞ্চাশ পয়সা বের করতেই ব্যান্ডেলের চেকার সাহেব ঘপ্ করে সব কটা টাকা পয়সা হাতের মুঠোয় পুরে ধাবমান ট্রেনে উঠে পড়ে, চোখের সামনে দিয়ে ট্রেনটা কর্তব্যপরায়ণ চেকারকে নিয়ে বের হয়ে গেল।

হোঁৎকা এবার ব্যাপার বুঝে গর্জন করে! —হালা ব্যান্ডেলের চোরও য্যামন— চেকারও তেমনি। দুইডাই এক কেলাসের। লাস্টপাই অবধি নিয়া গ্যালো গিয়া। তবু ঠাকুরের কৃপা, যেখানে নামিয়েছে সেইটাই মেমারি ইস্টিশান।

পটলা বলে—তবু এখানেই এসেছি। হোঁৎকা গর্জায়–স্বর্গে আইছি! চা খাবার পয়সা ও নাই—দশমাইল কইছিস, বাসভাড়াও নাই। যামু ক্যামনে?

ভাবার কথা। রাত্রি হয়ে আসছে। স্টেশনের বাইরে এসে দেখি মল্লিকপুরের স্টেটবাস তখন চলেছে, কাদা ভরা রাস্তা—বাস-এর সর্বাঙ্গে মানুষ। ছাদে বসেও কাকভেজা হয়ে ভিজছে লোকজন। কণ্ডাক্‌টার হাঁকছে।

লাস্ট বাস মল্লিকপুর কুসুমগাঁ! খালি গাড়ি বোঝাই বাসটা টলতে টলতে বের হয়ে গেল। আমরা পথে দাঁড়িয়ে আছি।

বেলা এগারোটায় বাড়িতে ভাত খেয়ে ক্লাবে এসে দল বেঁধে বের হয়েছি। ব্যান্ডেলের কলা পাউরুটি কখন হজম হয়ে গেছে মানসিক, দৈহিক ধকলে। এবার বুঝতে পারি খিদের জ্বালাটা ।

হোঁৎকার খিদে পেলে মেজাজ বিগড়ে যায়। অচেনা জায়গা সঙ্গে টাকাপয়সাও নেই । ওদিকে দোকানের শোকেসে কদবেলের সাইজ রাজভোগ, সন্দেশ, কালো ঘৃতপক্ক ল্যাংচা রসে হাবুডুবু খেয়ে যেন ডাকাডাকি করছে। বাদলার রাতে গরম আলুর চপের খদ্দেরের অভাব নেই। আমাদের পেটের নাড়িগুলো পাক দিচ্ছে খিদের জ্বালায় ।

পটলাই বারবার এমনি সব দারুণ দারুণ বিপদে ফেলে। আর প্রত্যেকবারই বলি তোর সঙ্গে আর নেই। কিন্তু বরাত দোষে ও জুটবেই আর ফ্যাসাদে ফেলবে। তবু পটলা সান্ত্বনা দেয় । —পিসিমাকে চিঠি দিইছি। গরম খিচুড়ি-মাছভাজা মাছের কালিয়া—হোঁৎকা গর্জে ওঠে—তরেই কলিয়া বানাইমু পটলা! এহন দশমাইল পথ যামু ক্যামনে! উঃ ক্ষুধায় চক্ষে অন্ধকার দেহিরে! শেষ মার মাইরা গেল ব্যান্ডেলের চেকার? খাসা জায়গাখান্–হালায় জামা প্যান্টুল সব লই গেল—যামু ক্যামনে তর মল্লিকপুর !

এমন সময় সিটকে মত ছেলেটা এগিয়ে আসে! মল্লিকপুর যাবেন ট্যাক্সিতে—

বাসের ভাড়া নাই আর ট্যাক্সিতে চাপবে? পটলা বলে মল্লিকপুর চৌধুরীদের বাড়ি যাবে। ছোঁড়াটা বলে বেশ তো চলেন। পাঁচজনে পঞ্চাশ টাকা দিবেন। দুমাইল রাস্তা কিনা—বর্ষার

রাত !

আমি শোনাই—পটলা! টাকার কি হবে?

পটলা অভয় দেয়—পিসিমার বাড়ি যাচ্ছি—পৌঁছলে নো ফিয়ার ওখান থেকেই পিসিমা সব ম-ম্যানেজ করে দেবে।

তবু দরাদরি করে রফা হ’ল তিরিশ টাকায় ৷

শুধোয় গাড়ি কোথায় তোমার ?

ছেলেটা দেখায়—ওই তো!

দূরে দেখি একটা যেন মানুষের স্তূপ দাঁড়িয়ে আছে। মাথার উপর ক্যাম্বিসের ছাদটা পিছনে ফেলা। সাবেকি আমলের হুডওয়ালা গাড়ি হুডটা নাই, মুক্ত আকাশের নীচে দুটো সিটে জনা চৌদ্দ মানুষ অলরেডি জড়াজড়ি করে আছে, পাদানিতে দুদিকে দুটো বাঁশ ফিট করা, তাতে দুপাশে ব্যালেন্স করে জনা আষ্টেক ঝুলছে পাদানিতে ঠ্যাং রেখে।

ছোড়াটা সামনে কুন্তলীভূত ড্রাইভারকে শোনায়। মল্লিকপুরের পাঁচখান মাল পেইছি, ড্রাইভার বলে—পেছনে সেঁটে দে!

আর কোন উপায় নেই। পেছনে হুড-এর উপর জালে রাখা মাছ-এর মত বসেছি। ছেলেটা বলে।—পথে সব খালি হয়ে যাবে তখন সিট্ পাবেন। এখন চলেন—

বিচিত্র বাহন এবার নেচে কুঁদে হেলেদুলে চলেছে, আমরা হুডের ক্যানভাসের ফাঁকে উল্টি পাল্টি খেতে খেতে চলেছি তপ্ত খোলাই ভাজা খই-এর মত অবস্থা আমাদের। হোঁৎকা গজগজ করে, কি বিপদেই না পড়েছি—হালায় শনি ঠাকুরের মন্দিরের কাম নাই, থাউক বিদ্যালয়ের কতা-নাইমা পড় ।

নামবার উপায়ও নাই। পয়সা কিছুও দিতে হবে তাহলে, তাও নেই। পটলা বলে—ম-মল্লিকপুর অবধি যে যেতেই হবে।

হোঁৎকা কাতরস্বরে জানায় ডেডবডি খান ই লইয়া যাবি মনে লয়। হুড-এর ভাঁজ করা লোহার রডের মধ্যে পড়ে আমি চাপা খেয়ে কাতর স্বরে আর্তনাদ করছি। ড্রাইভার গর্জন করে চুপ করে থাকুন।

গাড়ি লম্ফ দিয়ে যেতে যেতে এবার থেমেছে কোনো গ্রামের ধারে। হঠাৎ পথের ধারে চায়ের দোকানে হ্যাজাক নিয়ে কারা অপেক্ষা করছিল।

সমবেতভাবে চিৎকার করে-এসে গেছে। ঢোল কাঁসিও বেজে ওঠে। গাড়ির ওই মানুষের পিণ্ডগুলো বরযাত্রীর দল, বরও ছিল তাতে গুনে গুনে দেখি তেইশজন উইথ বর নামল গাড়িখানা থেকে।

ফটিক বলে—উঃ! বিয়েবাড়ির খাওয়াও জোর হবে। এদের সঙ্গেই নামবি নাকি?

বুদ্ধিটা ভালোই, কিন্তু টাকা কই! আমরা যেন পোস্টাপিসের ভিপিতে চলেছি। ঠিকানা পৌঁছে টাকা দিলে তবে ছাড়া পাব। না হলে ছাড়া পাবার উপায়ও নেই। পটলার পাল্লায় পড়ে আবার কি ঘটে কে জানে।

—সিট এ বসেন। গাড়ি খালি হয়ে গেছে। এবার আরাম করে সিটে বসেছি। বর বরযাত্রীরাও চলে গেছে। আঁধার নেমেছে, পিটি পিটি বৃষ্টি বন্ধ ছিল আবার পড়তে শুরু করে। আমি বলি—গাড়ির হুডটা টেনে দেবেন? হেলপার ছেলেটা বলে—হাওয়ায় ইস্পিড কমে যাবে লাগালে। কি গো গনুদা লাগাব?

–না!

শুধোই—মল্লিকপুর আর কতদূর ?

ড্রাইভার ছোটকথা কানে তোলে না, হেলপার ছেলেটা—সিগ্রেট আছে? দাও না একটা । জানাই ওসব খাই না। ছেলেটা গুম হয়ে যায়, মল্লিকপুরের হদিশও জানায় না রেগেমেগে নির্জন মাঠের মধ্য দিয়ে গাড়ি চলেছে লম্ফ ঝম্প করে।

এবার পিচরাস্তা শেষ হয়ে খোয়াফেলা আধকাঁচা রাস্তা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির মেঘের ফাঁক দিয়ে চাঁদও উঠেছে। মনে হয় মল্লিকপুরের কাছে এসে গেছি। রাতে ভরপেট মাছের ঝোল ভাত পাবো। বিছানা পাবো। ঘুম যা হবে ভাবতেই চোখ বুজে আসে আরামে।

হঠাৎ গাড়িটা ঝড়াং করে থেমে গেল। ড্রাইভার গাড়িতে বসেই বলে—গাড়ি আর যাবে না। ওই গ্রামটার ওপারে মল্লিকপুর। হেঁটে চলে যান। রাস্তা খারাপ–বিলে এদের পঁয়ত্রিশ ট্যাকা না—

ঘুম ছুটে গেছে। এবার হোঁৎকা নিজমূর্তি ধরেছে। বলে সে—মল্লিকপুর লই যাবা কইছো—তয় গাড়িতে উঠছি। এহন মাঝপথে কও যাবে না রসিকতা পাইছ?

ড্রাইভারও গর্জে ওঠে—বললাম তো রাস্তা খারাপ।

আমি বলি—সঙ্গে টাকা নাই। মল্লিকপুর চৌধুরীবাড়ি গেলে তবে ভাড়া পাবে।

ড্রাইভার এবার হুঙ্কার ছাড়ে–ভাড়া দেবে না? বিলে ছোঁড়াটা ফস্ করে গাড়ির হ্যান্ডেল বের করেছে। ড্রাইভার গজরায়।—ভাড়া না দিলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব। দেও টাকা। —টাকা সত্যিই নাই ?

ড্রাইভার হুঙ্কার ছাড়ে—মামার বাড়ি পেয়েছ ?

পটলা আন্তরিকভাবে বোঝাতে চেষ্টা করে-পি-পিসার ব-ব-

-চোপ! ড্রাইভার ওকে এক ধাক্কা দিতে পটলা ছিটকে পড়ে রাস্তায়। ওরা দুজন আমরা পাঁচজন। হোঁৎকাও গর্জে ওঠে—শ্যাষ কইরা দিমু। কইছি ট্যাকা সাথে নাই ।

সেই-ই এবার রডটা হাতিয়েছে। হেলপার ছোঁড়াটা কুঁইকাই করছে। ড্রাইভার বলে—এতখানি তেল পুড়িয়েছি, কিছু দ্যান। না হয় ঘড়িটাই দিতে হবে ।

পটলা এক পটকান্ খেয়েই টের পেয়েছে ব্যাপারটা। এবার দুই পক্ষই যুদ্ধমান। হেলপার বিলে সিটের নীচে থেকে এবার হাঁসুয়া বের করেছে। আমিও ঘাবড়ে যাই। কে জানে হাঁসুয়া চালাবে কি না।

পটলার জন্মদিনের উপহার এইচ-এম-টি ঘড়িটা খুলেই ওকে বলে।—এইটাও নাও ? থ্-থামদিকি তোরা।

ড্রাইভার এত সহজে দাবির চেয়ে বেশি আদায় হতে দেখে গাড়ি ঘোরাবার চেষ্টা করছে, সরু রাস্তা। দুদিকে নিচু খাদ–

হঠাৎ একটা কলরব শুনে চাইলাম। ওদিকের গ্রামের দিক থেকে কয়েকটা টর্চের আলো পড়ে। কলরব উঠছে কারা অন্ধকারে ছায়া-মূর্তির মত দৌড়চ্ছে—দু’একটা বোমের শব্দ ওঠে।

–ডাকাত! ডাকাত !…

গ্রামে বোধহয় ডাকাত পড়েছিল। তাড়া করেছে ওদের গ্রামের লোকজন। হঠাৎ পথের উপর জনা দশেক ছায়ামূর্তি ছুটে আসছে, গাড়িটার দিকে। অবাক হই ড্রাইভার দু’একবার সাইড লাইটটা জ্বেলে কিসের সংকেত করছে। আমাদের বলে সে।—চলে যাও, ওদিকে। ওই আলপথ ধরে। যাও বলছি।

ছায়ামূর্তির দল একজন আহত রক্তাক্ত লোককে ধরাধরি করে এনে গাড়িতে তোলে। আমাদের দেখে গর্জে ওঠে একজন। ভোজালি তুলে তেড়ে আসে—ফিনিশ্ করে দেব। চল গজা—ওরা আমাদের ফেলেই গাড়ি হাঁকিয়ে পালাতে চায়। মনে হয় গাড়িটা গজা এখানেই আনত এদের নিয়ে যাবার জন্য। পথে কিছুটা দমকা রোজগার করেছে মাত্র ।

এবার বেশ মোটা মাল রোজগার করেই ফিরছে। একটা সুটকেশ—বস্তায় জড়ানো কি সব হাতে অস্ত্রশস্ত্রও রয়েছে। বাধ্য হয়েই সরে গেছি আমরা ওদিকে।

গাড়িটা স্টার্ট করেই চিৎকরে করে ওঠে ড্রাইভার। গাড়ি নড়ে না। স্টিম ইঞ্জিন গজরাচ্ছে কিন্তু গাড়ি চলে না। ওরা নেমে পড়েছে দু’একজন, চমকে ওঠে ড্রাইভার।

হোঁৎকাও তৈরি। সে বলে—শালারা ডাকাত, ওই গাড়ির তিনটে চাকার হাওয়া আমিই খুইলা দিছি-হালায় শয়তানিটা দেখ এবার।

লোকগুলো বিপদে পড়েছে। আমরাও চিৎকার করছি—ডাকাত! ডাকাত! হুঁশিয়ার—। গ্রামের লোকজন ভাবেনি যে ডাকাতরা এখানে আছে। আমাদের চিৎকার শুনে তারাও দৌড়ে আসে। ডাকাতরাও বিপদের গুরুত্ব বুঝেছে—তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে তাদের। দু’একজন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালাতে যাবে সেই কেড়ে নেওয়া হ্যান্ডেল হাতে হোঁৎকা দুই ঘায়ে দুটোকে কাদায় ফেলেছে, ওদিকে এসে পড়েছে গ্রামের লোকজনও। পলায়মান ড্রাইভার এর লম্বা চুলের মুঠো ধরেছে গোবরা; কয়েক মিনিটের মধ্যে লড়াই শেষ। সারা গ্রাম যেন ভেঙে পড়েছে, ডাকাতরা হানা দিয়েছিল পটলার পিসিমার বাড়িতেই। সোনা দানা—টাকাকড়ি মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজারের উপর নিয়ে পালাচ্ছিল, আর পড়বি তো পড় আমাদের সামনেই। কয়েক মিনিটের মধ্যে গ্রামের শ খানেক জনতা এসে ডাকাত-ড্রাইভারদের ধরে ফেলে, দু তিনজন বেশ আহতই। থানার দারোগাও এসে পড়েন পুলিশ বাহিনী নিয়ে।

পিসেমশাই অবাক হন পটলাকে দেখে, সেও কমবেশি ঝাড় খেয়েছে মরিয়া ডাকাতদের হাতে। কপালটা ফুলে গেছে, জামাটা ফর্দাফাঁই। হোঁৎকা রেগেছিল ব্যান্ডেল থেকেই চোর নামক প্রাণীদের উপর, শেষ ঘা মেরে গেছে ব্যান্ডেলের চেকার, আর সর্বশেষ ঘা মেরেছে ড্রাইভার। পটলার ঘড়ি কেড়ে নিয়েছে। সব রাগ সে ঝেড়েছে ওই ডাকাতদের উপর তাদেরই গাড়ির হ্যান্ডেল দিয়ে।

পিসেমশাই বলেন—পটলা। তোরা এসে পড়েছিলি তাই এসব রক্ষা হল রে। চল বন্ধুদের নিয়ে বাড়ি চল। মল্লিকপুরের বাকি পথটুকু আর কষ্ট করে যেতে হয়নি। ওরাই শোভাযাত্রা করে নিয়ে গেল।

চারিদিকে সাড়া পড়ে গেছে। এতদিন ধরে আশপাশের গ্রামে, এই এলাকায় এরাই ডাকাতি করছিল, এবার জালে পড়েছে।

ফটিক বলে—সবই শনি মহারাজের ইচ্ছে বুঝলি। পিসিমাও ভক্তি গদগদ চিত্তে বলেন—সত্যিই রে। দেখছি এবার কি করা যায় তোদের ইস্কুলের জন্যে, মন্দিরও তৈরি করিয়ে দেব বাবার?

হোঁৎকার সময় নেই। সে বলে।—এ্যাহন খ্যাতি দ্যান পিসিমা। বাবার কাম বাবায় বোঝাব ক্ষুধায় এহন জ্বলতিছি।

হোঁৎকার ওই এক চিন্তা। গঠনমূলক কাজ—যে ব্যাটারা করবে তার দিকে নজর নাই, খাওয়াটাই বড়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *