হেস্তনেস্ত – তারাপদ রায়
বিখ্যাত উকিল মিস্টার এইচ. এন. চৌধুরীর নাম যে হেস্তনারায়ণ চৌধুরী এবং বিখ্যাত ডাক্তার ডক্টর এন. এন. চৌধুরীর নাম যে নেস্তনারায়ণ চৌধুরী, একথা খুব বেশি লোক জানে না। ওঁরাও যথাসাধ্য ওঁদের নামের আদ্যক্ষরের মাধ্যমেই পরিচিত থাকতে চেয়েছেন, কারণ ওই হেস্ত ও নেস্ত ছাড়া ওঁদের আর খারাপ-ভালো কোনো নামই নেই। কিছু আত্মীয়স্বজন, স্কুলজীবনের কিছু বন্ধু এইরকম পুরোনো দু-চারজন ছাড়া সব্বাই এইচ. এন. চৌধুরী এবং এন. এন. চৌধুরীই জানেন।
হেস্ত-নেস্ত হলেন যমজ ভাই। ওঁদের যমজ জন্মানোর সুসংবাদ পেয়ে ওঁদের ঠাকুরদা সূর্যনারায়ণ চৌধুরী দুজনের নাম দিলেন হেস্ত আর নেস্ত। বড়োনাতির নাম হেস্তনারায়ণ, ছোটোনাতির নাম নেস্তনারায়ণ। কে বড়ো, কে ছোটো—এ-সমস্যা অবশ্য চিরকালই ছিল, এখনও আছে। আগেও সংশয় ছিল এবং এখনও চলছে, এখনও মধ্যে মধ্যে হেস্তনারায়ণ নিজেকে নেস্তনারায়ণ ভাবেন এবং নেস্তনারায়ণ নিজেকে হেস্তনারায়ণ ভাবেন।
সূর্যনারায়ণ বেশ নাম করা পাগল ছিলেন। দশটা গাঁয়ের লোক তাঁকে চিনত। তিনি যখন যমজ নাতিদের নাম হেস্ত-নেস্ত রেখেছিলেন কেউ বিশেষ গুরুত্ব দেননি। সবাই ভেবেছিলেন বুড়ো ভুলে গেলে ভালো দেখে দুটো নাম দিয়ে দিলেই হবে ছেলে দুটোকে। কিন্তু তা হল না, অন্নপ্রাশন থেকে স্কুলে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত বুড়ো নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হেস্ত-নেস্ত নাম দুটো চালু রাখলেন। এই নামকরণের দ্বারা উনি কীসের যে হেস্তনেস্ত করতে চেয়েছিলেন কে জানে?
হেস্তনারায়ণ এবং নেস্তনারায়ণের কাহিনি অতিজটিল এবং দীর্ঘ। সেই কাহিনিতে ম্যাট্রিকে অঙ্কে লেটার কে পেয়েছিল, হেস্তনারায়ণ না নেস্তনারায়ণ; কাকে গঙ্গার ধারে দাঁড়কাকে কামড়িয়ে দিয়েছিল হেস্তকে না নেস্তকে ইত্যাদি বহুবিধ কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
সুতরাং এই জটিল পৌত্রদ্বয়ের কথা এখন থাক; তার চেয়ে আমরা তাদের পিতামহ সহজ-সরল পাগল সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর দু-একটা কথা বলি।
সূর্যনারায়ণ চৌধুরী ছিলেন গানের ভক্ত। কিন্তু এর মধ্যেও তাঁর ছিল প্রচণ্ড পাগলামি। এক গান কখনও বেশিবার শুনতেন না। এমনকি যে গান কখনও শুনেছেন এমন গানও তিনি শুনতেন না। রেডিয়ো বা রেকর্ডের গান দু-কানে সইতে পারতেন না। সবসময়ে তাঁর চাই নতুন ও টাটকা গান, তিনি বলতেন, ‘ওইসব এঁদো, বাসি সংগীত আমার চলবে না।’
নতুন গান লেখার জন্যে, সেই গানে সুর দেওয়ার জন্যে আলাদা-আলাদা লোক রেখেছিলেন তিনি। মধ্যে মধ্যে একঘেয়ে বোধ হলেই লোক বদলিয়ে ফেলতেন, তাঁর খামখেয়ালিপনার জন্যে কত নিরীহ লোকের বিনা কারণে চাকরি গেছে।
হেস্তনেস্ত জন্মানোর সময় সূর্যনারায়ণের গীতিকার ছিলেন রামগোবিন্দ সান্যাল। হেস্তনেস্তকে নিয়ে অসামান্য গান বেঁধেছিলেন
হেস্ত যদি নেস্ত হতো,
নেস্ত হতো হেস্ত
তোমরা তবে খুশি হতে
বলতে ‘আচ্ছা, বেশতো’।
পাঁচালির সুরে খোল-করতালের সঙ্গে এই গান গাওয়া হত। একসঙ্গে দশ-বারোজন গায়ক এই গান গাইতেন, যাকে বলে রীতিমতো সমবেত সংগীত। সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর খুবই ভালো লেগেছিল এই গান, খুব খুশি হয়েছিলেন তিনি। জীবনে যে সামান্য ক-টি গান তিনি একাধিকবার শুনেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল এই হেস্তনেস্ত জন্মগীতি।
আরও অনেক ভালো গান লিখেছিলেন রামগোবিন্দবাবু। তার দু-একটি তো রীতিমতো স্মরণীয়। একবার তাঁর পুকুরের শোভাবর্ধনের জন্যে, সূর্যনারায়ণ কয়েকজোড়া রাজহাঁস কিনেছিলেন, সেই রাজহাঁসগুলিকে নিয়ে একটি অসামান্য সংগীত রচনা করেছিলেন রামগোবিন্দ সান্যাল। পাঠশালার ছেলেরা যেভাবে সুর করে ভাঙা গলায় নামতা পড়ে, ঠিক সেইভাবে সেই গানটি গাওয়া হত। পাঠকদের কৌতূহল নিরসনের জন্যে সেই গানটির কয়েকটি ইতস্তত বিক্ষিপ্ত পঙক্তি এখানে উদ্ধৃত করছি। আসলে গানটি ছিল অতিদীর্ঘ, প্রায় পাঁচশো লাইন। গায়কেরা গাইতে গাইতে হাঁফিয়ে যেত। সূর্যনারায়ণ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘এ গানটিতে যত গায়কের গলা শুকিয়ে যাবে, যত সে হাঁসফাঁস করতে থাকবে ততই প্রকৃত পরিবেশে সৃষ্টি হবে, গানটি সাংঘাতিক জমবে।’
ফলে গাইতে গাইতে গলা শুকিয়ে দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেও এ গান বন্ধ করা যেত না, প্রত্যেক গায়ককেই শেষপর্যন্ত গাইতে হত। চারশো লাইনের মাথায় একবার একজন অজ্ঞান হয়ে যায়, সেই অজ্ঞান অবস্থাতেই তাকে চাকরি থেকে ডিসমিস করেন সূর্যনারায়ণ। এই মর্মান্তিক গানটির কিছু কিছু অংশ এইরকম ছিল :
রাজহাঁস রাজহাঁস
পুকুরের আশপাশ।
রাজহাঁস হাঁসফাঁস।।
বাবাপিসি মামামাসি।
সকলেই পাশাপাশি।।
রাজহাঁস রাজহাঁস
পুকুরের আশপাশ।
জোড়া জোড়া বসবাস।।
রাজহাঁস রাজহাঁস
তারা নয় দাসদাসী।
জলে জলে যায় ভাসি।।
রাজহাঁস রাজহাঁস
পুকুরের আশপাশ।
রাজহাঁস হাঁসফাঁস।।…
এই হাঁসফাঁসের জায়গাটা বারবার ঘুরেঘুরে গাইতে হত, গায়কেরাও সাংঘাতিক হাঁসফাঁস করত, তাদের মুখ দিয়ে ফেনা বেরিয়ে যেত, চোখ গোল্লা হয়ে যেত। সূর্যনারায়ণ চৌধুরী আনন্দে উত্তেজিত হয়ে গান শুনতে শুনতে বিশাল রামদা নিয়ে বড়োবড়ো পেঁপে, কলাগাছ কাটতেন।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সূর্যনারায়ণের আনন্দের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ ছিল কলাগাছ কাটা। এর জন্যে তাঁর বাড়ির পিছনের নাবাল জমিতে হাজার হাজার কলাগাছ লাগানো ছিল, আর সেই কলাবাগানের সামনেই ছিল নাটমন্দির, যেখানে সংগীতচর্চা চলত। একদিকে সমবেত কণ্ঠে উচ্চগ্রামে গান হতে থাকত, আর একদিকে ডুগি তবলার তালেতালে রামদা হাতে নাচতে নাচতে একের পর এক কলাগাছ ধরাশায়ী করতেন সূর্যনারায়ণ।
অসীম শারীরিক শক্তি ছিল সূর্যনারায়ণের। একেকটা বড়োবড়ো কলাগাছ একেক কোপে কেটে ফেলতেন। যেদিন হেস্তনেস্ত জন্মগ্রহণ করেছিল, তিনি পঞ্চাশটি কলাগাছ ‘হেস্ত যদি নেস্ত হত’ গানের সঙ্গে তালেতালে কেটেছিলেন।
তবে সূর্যনারায়ণ চৌধুরী সবচেয়ে বেশি কলাগাছ কেটেছিলেন সেবার, যখন তাঁর চিরশত্রু এবং পাশের গ্রামের ধানের ব্যবসায়ী বদরিকা পালের নাকি কী একটা ফোড়া উঠে বদরিকাবাবুর নাকটি রবারের বলের মতো ফুলে যায়। একজন কর্মচারীর মুখে এই খবর শুনে সূর্যনারায়ণ ধেই ধেই করে নাচতে লাগলেন। তখনই রামগোবিন্দবাবুকে এত্তেলা দিলেন সংগীত রচনার জন্যে।
রামগোবিন্দবাবুও ছিলেন বাহাদুর ব্যক্তি। পনেরো মিনিটের মধ্যে তিনি রচনা করলেন।
বদরিকার নাক,
ফোলে তো ফুলে যাক।
কমুক হাঁকডাক,
বাজাও জয়ঢাক।
যেমন গান, তেমনি জয়ঢাকের বাদ্য আর সঙ্গে সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর কলাবাগানে রামদানৃত্য। সেদিন মাত্র দেড়ঘন্টায় সত্তরটি কলাগাছ ভূপতিত করেছিলেন তিনি। আজকালকার দিন হলে এ দৃশ্য পঁচিশ টাকার টিকিট কেটে লোকে দেখত। সেকালেও ভিড় কিছু কম হয়নি। দশ গাঁয়ের কয়েকশো লোক ভরদুপুরে রোদ মাথায় করে এই গান শুনেছে, নাচ দেখেছে।
এমন যে কৃতবিদ্য রামগোবিন্দ সান্যাল, তার কিন্তু চাকরি গিয়েছিল নিতান্ত সামান্য কারণে, বলা উচিত সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর খামখেয়ালিতে।
নানা মানুষ নানা কারণে অথবা নিতান্ত অকারণে খেপে যায়। অনেক সময় সে নিজেও জানে না তার খেপে যাওয়ার কী কারণ। সূর্যনারায়ণকে কী এক অজ্ঞাত কারণে ছেলেবেলায় তাঁর বন্ধুবান্ধব দেখা হলেই বলত, ‘কী হে সূর্য, জানো তো একমাঘে শীত যায় না?’ সঙ্গে সঙ্গে সূর্যনারায়ণ ক্ষিপ্ত হয়ে যেতেন।
অনেকদিন আগের কথা এসব, প্রায় ভুলে গিয়েছিলেন। সূর্যনারায়ণ সে-বার বাড়ির সামনের বাগানটায় একটা নতুন দালান তুলেছেন, যথারীতি রামগোবিন্দ সান্যালকে আদেশ করলেন গান বাঁধতে এবং যথারীতি রামগোবিন্দবাবু অতিতাড়াতাড়ি একটি খুব চমৎকার গান রচনা করে ফেললেন,
চড়ুই থাকে ঘুলঘুলিতে
কাকের বাসা মাথায়,
বাবুই পাখি মাঘের শীতে
ঘাসের বাসা বানায়।
‘মাঘের শীতে’ শুনেই সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর মাথায় রক্ত উঠল। চোখ রক্তবর্ণ করে তিনি চটিজুতো হাতে সান্যালমশায়কে তাড়া করে গেলেন, ‘নিমকহারাম, এত বড়ো সাহস তোমার!’
ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে পালিয়ে কোনোরকমভাবে রামগোবিন্দ সান্যাল আত্মরক্ষা করলেন। সেই তাঁর শেষ সংগীত রচনা, তিনি জানতেও পারলেন না, তিনি কী অন্যায় করেছেন অথবা তাঁর কী দোষ?
এই গল্প যদি রামগোবিন্দ সান্যালকে নিয়ে লিখতাম, তাহলে হয়তো এখানেই শেষ করা যেত। কিন্তু মনে রাখতে হবে এ গল্প সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর পাগলামি বা সংগীতপ্রিয়তা বিষয়ে, সুতরাং সে সম্পর্কে আরও কিঞ্চিৎ লেখা দরকার।
সূর্যনারায়ণবাবুর গান নিয়ে পাগলামি একেক সময় সবরকম মাত্রা ছাড়িয়ে যেত। একবার তাঁর বিলিতি গানের দিকে বিশেষ ঝোঁক দেখা দিয়েছিল। সূর্যনারায়ণের ধারণা ছিল তিনি খুব ভালো ইংরেজি জানেন। এতে কোনো দোষ নেই, কারণ নিজের সম্বন্ধে এরকম ধারণা অসংখ্য বাঙালিই মনে মনে পোষণ করে। এই ভালো ইংরেজি জানা ধারণার বশবর্তী হয়ে, সূর্যনারায়ণ নিজেই সংগীত রচনা শুরু করলেন।
একটি মোটা বেড়াল ও একটি দুঃখিত ইঁদুরকে নিয়ে তিনি একটি বিষাদমধুর সংগীত প্রণয়ন করেন। গানের প্রথম দুই পঙক্তিতে বলা হয়েছিল মাদুরে একটি বেড়াল এবং টুপির মধ্যে একটি ইঁদুরের কথা।
স্যাড র্যাট ইন হ্যাট
ফ্যাট ক্যাট অন ম্যাট
তারপর ইঁদুরটি পালানোর চেষ্টা করল, বেড়ালটি ধরার চেষ্টা করল, তারপর ইঁদুর পালাল, বেড়াল দুঃখিত হল, ইঁদুর ধরা পড়ল বেড়ালের থাবায়। এইরকম করে অবশেষে,
ফ্যাট ক্যাট ফ্যাটার
স্যাড র্যাট নো ম্যাটার।
এই শেষের দিকে অবশ্য গানে একটু ছন্দ-বৈষম্য ছিল, কিন্তু মোটা বেড়াল আরও মোটা হয়ে গেল আর দুঃখী ইঁদুরের অস্তিত্ব রইল না, এই বেদনার্ত শেষাঙ্কটি যখন বিলিতি ব্যাগপাইপের তালেতালে গীত হত, অনেকেই চোখের জল আটকিয়ে রাখতে পারত না। সত্যি কথা বলতে কী, এই গানটি রচনার সময় সূর্যনারায়ণ নিজেও খুব হাউ-হাউ করে কেঁদেছিলেন।
সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর শুধু গান বেঁধে বা গান শুনেই সময় কাটত তা নয়, তিনি উপার্জনের জন্যে নানা ফন্দিফিকিরও করতেন। মাঝে-মাঝেই নানা ধরনের ব্যাবসা শুরু করে দিয়ে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে, তার মধ্যে জড়াতে চাইতেন। একবার তিনি তাঁর মামা ও পিসেমশায়কে সঙ্গে করে এক পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আরম্ভ করেন। প্রতিষ্ঠানটির নাম দিয়েছিলেন মামা-পিসা অ্যান্ড নেফিউ কোম্পানি। এরকম নাম কেন, এ প্রশ্ন কেউ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দিতেন, ‘নাম দেখে লোকেরা ভাববে জাপানি কোম্পানি।’
এই ব্যাবসাটি অবশ্য কোনো নতুন জাতের ব্যাবসা ছিল না। ব্যবসাটি খুবই পুরোনো, গভীর রাতে দরজা বন্ধ করে সরষের তেলে ভেজাল মেশানো। তাই করতেন সূর্যনারায়ণ, প্রতি রাতে পিপে পিপে ভেজাল তেল ও আসল তেল মামা ও পিসেমশায়ের সঙ্গে নিজের হাতে মেশাতেন। একদিন ভেজাল মেশানোর সময় মামা ও পিসেমশায়ের মধ্যে ভেজাল তেলের অপকারিতা নিয়ে ভীষণ কথা কাটাকাটি থেকে মারামারিতে গড়াল। সূর্যনারায়ণ একবার পিসের পক্ষ নেন, একবার মামার পক্ষ নেন। শেষরাত নাগাদ মামাপিসা অ্যান্ড নেফিউ কোম্পানি ভেঙে গেল। রাত্রিশেষের সামান্য আলোয় ভেজাল তেল মেশানোর গোপন কক্ষ থেকে সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর শ্রদ্ধেয় মাতুল ও পিসেমশায় রক্তাক্ত শরীরে খোঁড়াতে খোঁড়াতে চিরদিনের মতো বেরিয়ে গেলেন।
আমাদের এই গল্পে এই ঘটনা অপ্রাসঙ্গিক কিন্তু, তবু উল্লেখ করতে হচ্ছে এই কারণে যে. এই বিষয়টিকে নিয়েও সূর্যনারায়ণ চৌধুরী গান করেছিলেন এবং মাতৃভাষায় সেটি তাঁর একমাত্র সংগীত—
নিশাতে নিশাতে
কী সাথে কী সাথে
মিলাতে মিলাতে
সে কী মারামারি
মামা যদি হারে
আমি তবে হারি
পিসা যদি হারে
আমি তবে হারি
মামারে পিসারে
ভেজাল মিশারে।
এই অল্প একটু পড়েই অনায়াসে অনুমান করা যায় কী উচ্চস্তরের প্রতিভা ছিল সূর্যনারায়ণ চৌধুরীর।
সূর্যনারায়ণ চৌধুরী আজ বহুদিন হল মারা গিয়েছেন, কিন্তু তাঁকে অনেকেই এখনও মনে রেখেছেন। সম্প্রতি তাঁর দুই পৌত্র মি. এইচ. এন. চৌধুরী এবং ডক্টর এন. এন. চৌধুরী ঘোষণা করেছেন যে সূর্যনারায়ণের জীবনী যদি কেউ রচনা করতে চান তাঁকে দশ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হবে।
এই গল্পে সূর্যনারায়ণের পাগলামি বা প্রতিভার সম্পর্কে যে সামান্য বর্ণনা দেওয়া হল তাতে এই মহৎ কাজে কেউ যদি ব্রতী হয়, এই জীবনী রচনায় উৎসাহিত বোধ করে তাহলে আমরা খুবই খুশি হব। হেস্তনেস্ত চৌধুরীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হবে, তবে একটা গোপন পরামর্শ, ওঁরা যেন ঘুণাক্ষরেও টের না-পান যে তাঁদের ঠাকুরদা পাগল ছিলেন।